কুঁড়েঘর পর্ব -০১

ভার্সিটিতে ঢুকে কয়েক পা এগিয়ে আসতেই সামনে থেকে কেউ একজন এক বালতি পানি ঢেলে তার পুরো শরীর ভিজিয়ে দিয়েছে।
ভার্সিটিতে ঢুকতেই এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পরেছে ভেবে রিধিশা হতভম্ব হয়ে রয়েছে এখনও।
কি থেকে কি হলো কিছুই বুঝতে পারছে না সে। রিধিশা চোখ বড় বড় সামনে বালতি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকটির দিকে তাকিয়ে আছে। রিধিশার হুশ আসতেই চেঁচিয়ে বলে উঠে
” হোয়াট দ্যা হেল ইজ দিজ ?”

বালতি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটিও ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছে। রিধিশার কথা কর্ণপাত হতেই ছেলেটি তার চোখ সরিয়ে আশেপাশে একবার তাকিয়ে আবার রিধিশার দিকে দৃষ্টিপাত করে, উত্তরে শান্ত স্বরে বললো
” সরি, আসলে আমি আমার ফ্রেন্ডকে পানি ছুড়েছিলাম কিন্তু এখানে আপনি কিভাবে এসে পড়েছেন জানি না।”
রিধিশা রাগে রি রি করে বিক্ষিপ্ত স্বরে বললো
” এটা আপনার বাড়ি না যে যেখানে সেখানে পানি ছুড়াছুড়ি করবেন আর অন্যের গায়ে পড়লে সরি বলে মিটমাট করে নেবেন।”

ছেলেটা বালতিটা নিচে রেখে দুই পা এগিয়ে এসে গম্ভীর গলায় বললো
” এই যে মিস. জুনিয়র বেশি বাড়াবাড়ি করতে যাবেন না একদম। সিনিয়র হয়ে সরি বলেছি এটাকেই অনেক কিছু ধরে নিন। আপাতত আপনার এখান থেকে চলে যাওয়াই ভালো হবে।” রিধিশা কিছু বলতে গিয়েও থেকে গেলো কারণ এখন তার অবস্থা এতোটা ভালো না যে এখানে দাঁড়িয়ে ঝগড়া করে যাবে।
ক্ষিপ্ত স্বরে বললো
” আপনাকে তো পড়ে দেখে নেবো।”
পানির কারণে শরীরের কাপড় ভিজে ছিপছিপ হয়ে রয়েছে। রিধিশা ভার্সিটির গার্লস হোস্টেলের দিকে যেতে যেতে গায়ের ওড়না দিয়ে নিজেকে যথাসম্ভব ঢেকে নেওয়ার চেষ্টা করে। মাঠে উপস্থিত সবাই ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রয়েছে।

নিশাদ অগ্নিদৃষ্টিতে পেছনে নিজের বন্ধুদের দিকে তাকায়। সবাই থমথমে মুখে চেয়ে রয়েছে নিশাদের দিকে। রেহান রিধিশার পেছনেই দাঁড়িয়েছিল। রিধিশা চলে যাওয়ায় নিশাদের কাছে এগিয়ে এসে বললো
” তোর সরি বলার কি দরকার ছিলো ? সরি বলেছিস দেখেই এতো ভাব দেখিয়ে কথা শুনিয়ে গেলো। দুটো ধমক দিকে বলতি যে র‍্যাগিং ছিলো তাহলে আর তোকে অপমানিত হতে হতো না।” নিশাদ হনহনিয়ে এগিয়ে এসে রেহানকে মারতে মারতে রেগে বলে
” শা*লা তোর জন্যই এমন হয়েছে। তোর দোষে মেয়েটার গায়ে পানি পড়েছে। সরিটা তোর বলা উচিত আর তুই ধমক দিতে বলছিস ! তুই কি করেছিস একটু আগে ? আমার হয়ে লাভ লেটার লিখে যাকে তাকে দিয়েছিস ! তোকে তো !”
রেহান কোনো রকমে নিজেকে ছাড়িয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে গেলো ভার্সিটির বাইরে। একে তো একটু আগে নিশাদকে খেপিয়েছে আবার এখন ! নিশাদ আজ সামনে পেলে নির্ঘাত মেরে কবরে পাঠাবে তাকে।

নিশাদ দুই কোমড়ে হাত দিয়ে রাগে ফুঁসছে। সামনে একটা মেয়ে একটা কাগজ হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। নিশাদ রামধমক দিয়ে বললো
” এই মেয়ে কি চাই এখানে ? এখনও দাঁড়িয়ে আছো কেনো ?” মেয়েটা কাগজটা ফেলেই দৌঁড়ে পালালো। নিশাদ গায়ের জ্যাকেট টেনে ক্যান্টিনের দিকে চললো। সাথে তার দুই বন্ধু সাদি আর সূর্যও তার পিছু ছুটলো।

নিশাদ এবং আর বন্ধুরা সকালে ভার্সিটিতে আসতেই সেকেন্ড ইয়ারের একটা মেয়ে একটা চিঠি এগিয়ে দিয়ে লাজুক হাসির সাথে নিশাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলো
” আমিও আপনাকে ভালোবাসি। এই চিঠিতে আমার সব মনের কথা লিখে জানিয়েছি। নিশ্চই পড়বেন।”
সাদি, নিশাদ আর সূর্যের চোখ কোঠর থেকে বেরিয়ে আসার মতো অবস্থা হয়েছিলো তখন। তারপর মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারে গতকাল রেহান মেয়েটাকে নিশাদের নামে একটা চিঠি দিয়েছে। নিশাদ রেহানের কাজে রেগে বোম হয়ে যায় তাই রেহার আসতেই পানি নিয়ে ছুটেছিলো।
ক্যান্টিনের চেয়ারে বসে পানি খেয়ে নিশাদ বিড়বিড় করে বললো
” বন্ধু হয়ে বন্ধুর পিঠকে পিঠেপুলি বানিয়ে দিয়েছে।” সূর্য আর সাদি হেসে দেয় নিশাদের কথায়।

গার্লস হোস্টেলের একটা রুমে গিয়ে বসতেই রিধিশার ফ্রেন্ড জোতি এগিয়ে এসে অবাক স্বরে বললো
” কি রে তোর এই অবস্থা কেনো ?” রিধিশা মুখ ফুলিয়ে বললো
” আর বলিস না। ভার্সিটিতে ঢুকতে না ঢুকতেই এক ছেলে এসে পানি ছুড়ে দিয়েছে।” জোতি হেসে বলে উঠে
” আচ্ছা ঠিকাছে। ফ্যানের নিচে বস জলদি শুকিয়ে যাবে কাপড়। একটু পর ক্লাস শুরু হবে।”
রিধিশা রুমের দরজা লাগিয়ে হাত পা ছড়িয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। জোতি টেবিল থেকে বই নিতে নিতে বললো
” আচ্ছা আমার সাথে হোস্টেলে উঠে গেলে কি হতো ? দুজন একসাথে থাকতে পারতাম। এমনিতেও তো একাই থাকবি বাসায় এরচেয়ে হোস্টেলে উঠে গেলেই ভালো হতো।”
রিধিশা বিরক্তের সাথে বললো
” এই প্লিজ তোর এই প্রতিদিনের ঘ্যান ঘ্যান থামা। তুই নিজেও ছিলি আমার সাথে যখন আমি ফরম দিয়েছিলাম। সিট খালি নেই তাই এপ্রুব হয়নি আমার এপ্লিকেশন। ভার্সিটির অথোরিটিকে রিকোয়েস্ট করলে যদি সিট পেয়ে যেতাম তাহলে কি আমি আসতাম না হোস্টেলে? তোর কি মনে হয় আমার একা থাকতে ভালো লাগে ?”
জোতি মুখ বাঁকিয়ে বললো
” আমার সাথে তো আর দিস নাই যে কিছু বলবো না। আমি সিট পাওয়ার ১সপ্তাহ পর এপ্লিকেশন দিয়েছিস। তখন কি তোকে বলবে ওরা, দেখো রিধিশা তোমার জন্য সিট খালি রেখে দিয়েছি আমরা।” রিধিশা জানলার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো
” হ্যা, এরকম করাই উচিত ছিলো তাদের।” জোতি চোখ বাঁকিয়ে তাকিয়ে আবার নিজের কাজে লেগে পড়ে।

জোতির সাথে কথা বলতে ক্লাসে যাওয়ার পথে নিশাদ আর তার বন্ধুদের দেখতে পেলো রিধিশা। রিধিশা দাঁতে দাঁত চেপে বিরবির করে বললো
” ফালতু ছেলেপেলে সব।”
নিশাদ পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু রিধিশার বিরবির করে বলার কথাটা শুনতে পেয়ে নিশাদ ঘুরে রিধিশার দিকে তাকায়।
নিশাদ রাগি গলায় বলে উঠলো
” এই যে মিস. জুনিয়র দাঁড়ান।”
রিধিশা চুপচাপ দাঁড়িয়ে গেলো। নিশাদ এগিয়ে এসে ভ্রু কুঁচকে বললো
” আমাকে কি বললেন আপনি ? ফালতু ছেলে পেলে? আমাকে দেখে আপনার ফালতু ছেলে মনে হচ্ছে ?”

রিধিশা বুকে হাত গুঁজে শান্ত গলায় বললো
” ভালো ছেলেও তো মনে হচ্ছে না।”
সূর্য কিছুটা ধমকি গলায় বললো
” এই মেয়ে, এই তুমি চেনো বা জানো নিশাদকে ? একজনকে না চিনে তার ব্যাপারে কম্পলিমেন্ট করছো কি করে ? তার উপর প্রথম দিনই অকারণে একজন সিনিয়র স্টুডেন্টের সাথে বেয়াদবি করে যাচ্ছো !”
নিশাদ তাচ্ছিল্যের সাথে বললো
” এসব মেয়েদের স্বভাবই বেয়াদবি করা। তখন সরি বলাই ঠিক হয়নি। সরি বলায় আরো নিজেকে বড় মনে করছে।”
রিধিশা দাঁতে দাঁত চেপে বললো
” এসব সরিকে বলা হয়, জুতা মেরে গরু দান করা।
এমন সরি তো আমার দরকার নেই।”
নিশাদ ভ্রু কুঁচকে বললো
” আপনার দরকার নেই সেটা আগে বললেই হতো তাহলে আর সরি বলতাম না আমি। শুধু শুধু ঝগড়া করছেন কেনো ?” সাদি দাঁত কেলিয়ে বললো
” আরে ঝগড়া না করলে সবাইকে বুঝাবে কি করে যে নিজে একজন ঝগড়াটে !”

রিধিশা রেগে বললো
” হেই, মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ !” নিশাদ ধমক দিয়ে বলে
” চুপ! বেয়াদব মেয়ে, বড় ভাইদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানো না ? না জানলে আমাকে বলবে খুব ভালো করে শিখিয়ে দেবো। আর আমার সরি আমি ফিরিয়ে নিচ্ছি ঠিকাছে ?”
রিধিশা ভাবুক হয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকায় নিশাদের কথায়। নিশাদ সূর্যর হাত থেকে পানির বোতলটা কেড়ে নেয়। হাতে পানি ঢেলে রিধিশার চোখে মুখে ছুড়ে মারে। রিধিশা চমকে চোখ বড়বড় তাকিয়ে থাকে। কিছু বলার জন্য মুখ খোলার আগেই নিশাদ বললো
” মিস. বেয়াদব জুনিয়র!” নিশাদরা তাদের ক্লাসের উদ্দেশ্যে চলে যায় হাসতে হাসতে।

রিধিশা নিশাদকে ইচ্ছে মতো বকতে বকতে ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে মুখ মুছে নেয় নিজের। জোতি এতোক্ষণ নিরব দর্শকের মতো সব দেখেছে। রিধিশার দোষ রয়েছে তাই রিধিশার হয়ে কথা বললো না। জোতি মুখ কুঁচকে বললো
” সিনিয়রদের সাথে এমন করার কোনো মানে আছে ? যদি কোনো ঝামেলা করে পরে?” রিধিশা ভেংচি দিয়ে বললো
” করলে কি আমি ছেড়ে দেবো নাকি? ওদের লাইফকে লাইফবয় বানিয়ে দেবো ওদের ” জোতি বিরক্তের সাথে বললো
” সত্যি ! ছোট একটা ব্যাপারে এতো রাগ কিসের তোর? তারা তো নিজেদের ভুলের জন্য সরি বলেছিলোই। এখন ঝগড়া করে তোর ঝামেলা তুই বাড়িয়ে দিলি বলে দিচ্ছি আমি।” রিধিশা গটগট পায়ে ক্লাস রুমে চলে গেলো।

_______________

ক্লাস শেষ হলে জোতির থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসে। ভার্সিটির বাইরে যেতে যেতে বটগাছের দিকে চোখ পড়লে দেখে নিশাদসহ আরো অনেকজন বসে রয়েছে সেখানে। রিধিশা মুখ বাঁকালো তাদের দেখে।
ভার্সিটির বাইরে এসে রিকশা নিয়ে নিজের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে।

বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের রান্না বসিয়ে দেয় রিধিশা। ফোন বেজে উঠতেই আবার রুমে ছুটে গেলো মেয়েটা। মায়ের ফোন দেখে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে রিসিভ করে কানে ধরলো। কেমন আছো জিজ্ঞেস করতেই মায়ের কাতর কন্ঠ শুনতে পেলো।
“কেমন আর থাকবো? দূড় শহরে একা পড়ে রয়েছিস। কবে আসবি বাড়িতে?”
“ইন্টারের পরীক্ষা দিয়েই তো আসলাম ঢাকা। ভার্সিটির ক্লাস শুরু হয়েছে বন্ধ ছাড়া আসা হবে না হয়তো।” রিধিশার শান্ত কন্ঠ শুনে তার মায়ের বুক ভারি হয়ে আসে।
” বাবা আর বাকিরা কেমন আছে?”
লিমা বেগম শান্ত গলায় বললো
” সবাই ভালো আছে। খেয়েছিস দুপুরে?”
“না রান্না বসিয়েছি। রান্না হলে খাবো।” রিধিশার কথায় লিমা বেগমের চোখ পানিতে টলমল করতে থাকে। মেয়েটা খিধে সহ্য করতে পারতো না। খাওয়ার সময় খাইয়ে দিতে হতো আর সে এখন রান্না করে খাচ্ছে। রিধিশা মায়ের অবস্থা হয়তো বুঝতে পেরেছে তাই বললো
” আচ্ছা এখন রাখি পড়ে কথা বলবো। রান্নাঘরে লাজ আছে।” লিমা বেগম সম্মতি জানিয়ে বললো
” ঠিকাছে, ভালো করে খাওয়া দাওয়া করিস।”

কল কাটতেই রিধিশার চোখ বেয়ে পানি পড়লো। বাবার একটা ভুলের জন্য আজ অভিমান করে পরিবার থেকে দূড়ে এসে পড়েছে। চাইলেও মনের এক বাধার কারণে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা নেই আর সেখানে।
রিধিশা নাক টেনে চোখ মুছে রান্নাঘরে ছুটলো। রান্না বসালে তার দাঁড়িয়ে থাকতে হয় নাহলে রুমে আসলেই ভুলে যায়। আগে কতো বার ভুলে যাওয়ার কারণে খাবার পুড়ে যেতো আর জোতি রিধিশাকে বকতে বকতে মাথা চিবিয়ে খেতো তার। কথাটা ভেবেই হাসলো রিধিশা। হঠাৎ ভার্সিটির ঘটনার কথা মনে পড়লো রিধিশার। নিশাদের কথা ভেবে বিড়বিড় করে বকলো তাকে।

দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করতেই ফ্ল্যাটের দরজা খুলে বসে পড়ে রিধিশা। কিছুক্ষণ পর দুটো ছেলে মেয়ে আসলো ব্যাগ কাধে নিয়ে। দুজন ঢুকে সালাম দিয়ে নিজেদের জায়গায় বসে পড়লো। রিধিশা যেই বাড়িতে থাকে সেই বাড়িরই দ্বিতীয় তলায় থাকে দুই ভাই,বোন আর রিধিশা তৃতীয় তলায় থাকে।
রিধিশা পড়াতে পড়াতে খেয়াল করলো তীর্ণ বারবার ড্যাবড্যাব করে তাকাচ্ছে তার দিকে। রিধিশা ভ্রু কুঁচকে বললো
” কি তীর্ণ বারবার এভাবে তাকাচ্ছো কেনো ?” তীর্ণ লাজুক হাসি দিয়ে বললো
” আজকে তোমাকে দেখতে খুব মিষ্টি লাগছে মিস।”
রিধিশা আর তীর্ণর বোন তারা হেসে উঠে কথা শুনে।
রিধিশা হাসি থামিয়ে বললো
” ধন্যবাদ। ঠিকাছে, এবার পড়ো মন দাও। আমাকে তো টিউশনি পড়াতে যেতে হবে।” দুজন মাথা নেড়ে পড়ায় মন দেয়।
.

পরদিন ভার্সিটিতে আসতেই নিশাদ আর তার বন্ধুদের সাথে মুখোমুখি হয় রিধিশা। রিধিশা তাদের পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
নিশাদ রিধিশাকে খেয়াল করেনি। সে ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত।

১২টায় ব্রেক টাইমে সবাই ক্লাস থেকে বেরিয়ে ক্যাম্পাসের চারপাশে নিজের মতো করে খাচ্ছে, কেউ হাটছে, আড্ডা দিচ্ছে আবার কেউ বই পড়ছে, প্রেম করছে।
রিধিশা আর জোতি ঘাসের উপর বসে রয়েছে। কয়েকদিনই হয়েছে রিধিশা ক্যাম্পাসে আসছে। যখনই এখানে এসে বসে একটু প্রশান্তি পায়। ভার্সিটিটা খুবই সুন্দর। গাছগাছালির সাথে সবুজ ঘাস পুরোটা মাঠ জুড়ে রয়েছে। রিধিশার মনে হয় গাছগুলোর জন্যই যেনো ভার্সিটিটা আরো বেশি ভালো লাগে তার কাছে। জায়গাটা ঠান্ডা হয়ে থাকে বাতাসে।

জোতি বিরবির করে কিসব বলছে খেয়াল করলো রিধিশা। রিধিশা ভ্রু কুঁচকে বললো
” কিরে তুই কি বিরবির করিস?”
” জিজ্ঞেস করিস না আমাকে কিছু। আমার রুমমেট প্লে গার্ল মেয়ে এমটা। সারারাত কয়টা ছেলের সাথে যে বকবক করেছে বলে শেষ করা যাবে না। বজ্জাত মেয়ের জন্য আমি ভালো করে পড়তেও পারিনি আর ঘুমাতেও পারিনি।”
” তো তুই এতোদিকে কান দিস কেনো নিজের পড়া নিজে পড়বি। এখানে থাকলে এসব তো সহ্য করতেই হবে। সবাই তো আর সবার অসুবিধা দেখে না।”
জোতি মুখ ফুলিয়ে বললো
” আমি কি করবো। মেয়েটা কথা বলার সময় চাইলেও আমার পড়তে পারি না। শুধু মেয়েটার কথা শুনতে ইচ্ছে করে। আজকেও যদি এমন করে তাহলে মেয়েটাকে কথা শুনিয়ে দেবো।” রিধিশা হাসলো জোতির কথায়

দুজনের কথার মাঝে হঠাৎ জোতির ফোন আসতেই জোতি দূড়ে সরে যায়। রিধিশা বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। হাটতে হাটতে ভার্সিটির পেছনে চলে আসে। ভার্সিটির পেছন দিকটাও যথেষ্ট নিরব। এখানের কাছ গুলো বিশাল বড়বড়। হাটতে হাটতে হঠাৎ গলার ওড়নায় টান পড়তেই রিধিশা পেছনে ঘুরে তাকায়। নিশাদকে দেখতে পেলো রিধিশা। গায়ে পড়া থাকা জ্যাকেট টেনে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। রিধিশা কিছু না ভেবেই নিশাদের গালে থাপ্পড় মেরে দিলো। নিশাদ হতভম্বের মতো রিধিশার দিকে তাকালো।
” লজ্জা করেনা এসব করতে? ভার্সিটিতে এসব অসভ্যতামো করতে আসেন? নিরব জায়গা দেখে জুনিয়রদের ডিস্টার্ব করছেন ! আপনাকে তো এখন সত্যি সত্যি একজন অসভ্য ছেলে মনে হচ্ছে।”

#কুঁড়েঘর
#লেখিকা– মার্জিয়া রহমনা হিমা
। সূচনা পর্ব।

নতুন গল্প, সবাই রেসপন্স করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here