কুড়িয়ে পাওয়া ধন পর্ব -০১ |জাওয়াদ জামী

#কুড়িয়ে_পাওয়া_ধন
#সূচনা_পর্ব
জাওয়াদ জামী

” আইবুড়ো বোনকে কতদিন এভাবে বুকের উপর বসায় নিয়া খাওয়াবে? তোমার বাপ-মা মরে শান্তি পাইছে। কিন্তু আমার ঘাড়ে বোঝা চাপায় দিয়া গেছে। তিন বছর ধরে এই বোঝা আমারই টানা লাগছে। তোমার ছোট ভাই তো সাপের পাঁচ পা দেখছে। ভালো চাকরি করে, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ইনকাম করে, কিন্তু বোনের খোঁজ নেওয়ার সময় তার নাই। তাও যদি হা’রা’ম’জা’দি একটু ভালো হইত। না আছে রুপ, না আছে গুন। কাজের মধ্যে জানে শুধু মুখে মুখে তর্ক করতে। আমার সংসারডা তছনছ করে দিল এই অলক্ষ্মী। ” বড় ভাইয়ের বউয়ের মুখে কথাগুলো শুনে কান্তা ফুঁসে ওঠে। জবাব দিতে পিছপা হয়না।

” আমি এখন পর্যন্ত আমার বাপের খাই বড় ভাবি। তোমার স্বামীকে আমার পেছনে একটা টাকাও খরচ করতে হয়না। আর তাছাড়া তোমার সংসারে বসে খাইনা আমি। আর অলক্ষ্মী কাকে বলছ? একজন কাজের মেয়ের মত বাড়ির সমস্ত কাজ আমিই করি। আমি যদি একদিন কাজ না করি তবে সেদিন হেঁসেলে হাড়ি উঠবেনা, এটা তুমিও জান, আমিও জানি। ” কান্তার কাটকাট জবাব শুনে ওর বড় ভাবি শিখা তেলেবেগুনে জ্ব’লে উঠে।

” তোমার বোনের কথার তেজ দেখছ? সে যদি তার বাপেরই খাবে, তবে তুমি তার জন্য এতদিন যা করছ, সেগুলো কি? তোমার ম’রা বাপ তার মেয়ের জন্য কি গুপ্তধন রেখে গেছে? আজ এর একটা বিহীত তোমাকে করতেই হবে। যত বড় মুখ না, তত বড় কথা! তারে আমরা কাজের মেয়ের মত রাখি? এতদিন খাওয়ায়-পড়ায় আজ এই কথা শুনতে হচ্ছে! আজ এর বিচার না হওয়ার পর্যন্ত আমি মুখে এক ফোঁটা পানিও তুলবনা। ” দ্বিগুণ তেজে বলে উঠে শিখা। আজ সে পণ করেছে কান্তাকে মা’র খাওয়ানোর।

” কান্তা তুই থামবি? বড়দের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তা ভুলে গেছিস? তুই এতবড় বেইমান হয়েছিস, যে আমি তোর জন্য কি কি করেছি, সেসব অস্বীকার করছিস? তুই এক্ষুনি তোর ভাবির কাছে মাফ চাইবি। ” কান্তার ভাই জাবেদ বোনের দিকে তেড়ে আসে।

” সত্যি কথা বললেই বেইমান হয়ে যায় বুঝি! কি করেছ তুমি আমার জন্য? আমি টিউশনি করে নিজের যাবতীয় খরচ চালাই। আর তোমরা যে জমিজমা ভোগ করছ, সেখানে আমিও অংশীদার। তাই নিজের জমির ধানের ভাত আমি খাই। বছরে একবারও আমার জন্য একটা পোশাক এনেছ? কিন্তু ভাবির ভাই-বোনের জন্য ঠিকই নিয়ে আস। কোনদিন দশটা টাকা হাতে দিয়েছ? কলেজে যাই নিজের টিউশনির টাকায়। প্রাইভেট পড়ি নিজে টিউশনির টাকায়। কাপড়চোপড় কিনি টিউশনির টাকায়। তুমি কখনও জিজ্ঞেস করেছ, এই কয়টা টাকায় আমি কিভাবে চলি? আমি এতদিন জানতাম, তুমি বউভক্ত, কিন্তু আজ জানলাম তুমি বউয়ের গোলাম হয়েছ। ” কান্তার কথা শেষ হতে না হতেই জাবেদ ওর গালে পরপর কয়েকটা থা’প্প’ড় বসিয়ে দেয়। থা’প্প’ড়ে’র তোড়ে কান্তা দুই কদম পিছিয়ে যায়। ওর চোখের সামনে কালো পর্দা পরে। মাথা বনবন করে ঘুরতে লাগলো। চোখ দিয়ে ঝরছে অশ্রুধারা। বড় ভাইয়া এভাবে মা’র’তে পারল! কি অন্যায় করেছিল ও। সারাদিন কাজ করে শরীর ক্লান্ত ছিল, এছাড়া সকাল থেকে পেটে দানাপানি যায়নি। তাই ভাবির কাছে একটু ভাত চেয়েছিল। ভাবি কোন উত্তর না দিয়ে নিজের ঘরে ঢুকলে, কান্তা রান্নাঘরে এসে গামলার তলায় ছড়িয়ে থাকা কয়েক মুঠো ভাত, আর বাটিতে থাকা তরকারি নিয়ে খেতে শুরু করে। উঠানে ছড়িয়ে দেয়া ধান হাঁস-মুরগি এসে ছিটাচ্ছে সেদিকে নজর যায়না কান্তার। বড় ভাবি ঘর থেকে বেরিয়ে ধানের এমন অবস্থা দেখে রান্নাঘরে তেড়ে আসে। গালিগালাজ করতে থাকে কান্তাকে। কান্তার ভাই বাইরে থেকে আসলে তাকেও এসবের মধ্যে জড়ায়।

” থামলে কেন? আরও কয়েকটা দিতে পারলেনা। কতবড় সাহস বাপের জমির ভাগ চায়! তার বাপে মনে হয় তালুক রাইখা গেছে। নি’ম’ক’হা’রা’ম মেয়ে আমার সংসারে আ’গু’ন জ্বা’লা’য় , আবার আমার ভাই-বোনকে হিং’সা করে। মনে চাচ্ছে চুলের মুঠি ধরে একে বাড়ি থেকে বের করে দিই। ঐ বুড়ি ম’রা’র সময় একেও নিয়ে গেলে আজ আমার সংসারে আ’গু’ন লাগাতে পারতনা। ”

নিজের মা’কে নিয়ে কটুকথা কান্তার সহ্য হয়না।
চোখ মুছে নিজেকে ধাতস্থ করে।

” তুমি আমাকে যা খুশি বলতে পার। কিন্তু আমার মা’কে নিয়ে একটা বাজে কথাও বলবেনা। আমার মা’কে বুড়ি বলতে তোমার একটুও বাঁধছেনা! এতটা খারাপ তুমি। ” কান্তার চোখমুখে ঘৃ’ণা ফুটে উঠেছে।

” কি বললি তুই আমি খারাপ? তুই খারাপ, তোর চৌদ্দ গোষ্ঠী খারাপ। কলেজে যাওয়ার নামে যে নাগরের সাথে ফ’ষ্টি’ন’ষ্টি করতে যাস তা কি আমি জানিনা। আর তুই আমাকে খারাপ বলিস? আমার সংসারেই গাণ্ডেপিণ্ডে গিলবি, আর আমাকেই খারাপ বলবি? ” কান্তার চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে উঠানে ছড়ানো ধানের ওপর ছুঁ’ড়ে ফেলে শিখা।
কান্তার সারা শরীরে ধান লেগে যায়। ও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে।

” কি গো বউ, কান্তারে এভাবে মা’র ক্যা? ছাওয়ালডা সারাদিন ধরে কাম করছে, ইকটুও বসপার পারেনি। সেই ছাওয়ালেক তুমি এরমভাবে আছাড় মারলে? তোমার কি দুখ দরদ কিছুই নাই? ” শিখার উচ্চস্বরে আওয়াজ শুনে ছুটে এসেছে পাশের বাড়ির বৃদ্ধা।

” আমার বাড়ির বিষয়ে আপনাকে মাথা ঘামাতে কে বলেছে? খালি অন্যের বাড়িতে মাতব্বরি করতে আসা। আপনি নিজের চরকায় তেল দেন। ” শিখা বৃদ্ধাকে তিরস্কার করে বলে।

” বাড়ির কতা যখন আশেপাশের মানুষের কানেত যায়, তখন সেইডা কি আর বাড়ির কতা থাকে? তোমার গলার আওয়াজ সারা পাড়ার মানুষের কানে গেছে, তারা গলির মুখে আইসা উঁকিঝুঁকি দিচ্চে। এরপরও তুমি কও তোমার বাড়ির বিষয়! তোমার বাপ-মায়ে কি তোমাক ইকটুও শিক্ষা দেয়নি? বড়রে সাতে কতা কতেই জানোনা তুমি। ” বৃদ্ধা কান্তাকে উঠান থেকে টেনে তুলে।

” এই বুড়ি মুখ সামলায় কথা ক। আমার বাপ-মা তুলে কথা বলিস তুই। এক্ষুনি আমার বাড়ি থেকে বের হ। আমার বাড়িতে যদি আর আসিস, তবে তোর ঠ্যাং ভা’ঙ্গ’ব। ”

” খুব যে আমার বাড়ি, আমার বাড়ি করিচ্ছ, বাড়ি কি তোমার বাপে বানায় দিয়া গেছে? এই বাড়ি কান্তার বাপ সাইদুল বানাছে। আর এই বাড়িত আসার জন্য আমি কান্দিচ্ছিনা। কি দেকে যে এই মিয়ের সাথে কান্তার মা ব্যাটার বিয়া দিছিল আল্লাহই জানে। ” বৃদ্ধা কান্তাকে বারান্দায় উঠিয়ে দিয়ে নিজের বাড়িতে চলে যায়।

কান্তা নিজের ঘরে যেয়ে কাপড়চোপড় নিয়ে কলপাড়ে যায়। সারাদিন ধরে কাজ করে শরীরে ধুলাবালি লেগে আছে।

সারাদিন ভার্সিটি আর কোচিং-এ কাটিয়ে রাত আটটার দিকে বাসায় ফিরে আরমান।
বাসায় ঢুকেই ড্রয়িংরুমে দাদিকে বসে থাকতে দেখল। কিন্তু ও দাদির সাথে কোন কথা না বলেই সোজা নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়।

” আমি যে জলজ্যান্ত একটা মানুষ এখানে বসে আছি, তা কি তোমার চোখে পড়ছেনা, আরমান? গুরুজনকে সম্মান দিতেও ভুলে গেছ দেখছি! যে নিজেই অন্যকে সম্মান দিতে জানেনা, সে আবার ছাত্র-ছাত্রীদের কি শিক্ষা দিবে! খালি পোশাকআশাকে ফিটফাট হলে হয়না, শিষ্টাচারও কিছু জানতে হয়। ” দাদির এমন বাঁকা কথায় আরমানের পা থেমে গেছে।

” সম্মান চাইলেই পাওয়া যায়না। সম্মান অর্জনের কাজ করলেই তবে সম্মান পাওয়া যায়। আর আমার ছাত্র-ছাত্রীরা আমাকে যথেষ্ট সম্মান করে। তাদের পরিবার থেকেই তাদের যথেষ্ট শিক্ষা দিয়ে পাঠিয়েছে। আমি শুধু তাদের সঠিক পথ দেখাই। কিন্তু আজকাল তুমি আমার পোশাকআশাক নিয়ে পরলে কেন! পোশাকআশাকের সাথে শিষ্টাচারের সম্পর্কও আছে! তাইতো বলি তুমিও তো ভালো পোশাক পর, তবে তোমার মধ্যে কোন শিষ্টাচারই দেখতে পাইনা কেন! অবশেষে নিজেকে চিনলে! যাহোক নিজেকে চেনার জন্য ধন্যবাদ। ” গটগটিয়ে নিজের রুমে প্রবেশ করে আরমান।

ওর যাওয়ার পানে দাদি রাজিয়া খানম কটমটিয়ে চেয়ে থাকে।
রান্নাঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে সবটাই লক্ষ্য করল আরমানের মা আকলিমা খানম। সেই সাথে তার আরমানের ওপর ভিষণ রা’গ হয়। ছেলেটা গুরুজনদের সম্মান করতেই চায়না।

রাতে কান্তার আর খাওয়া হয়না। রান্না করে নিজের ঘরে এসে শুয়ে আছে।
পাশের ঘরে ভাই-ভাবি খাচ্ছে, এটা বেশ বুঝতে পারছে কান্তা। কিন্তু কেউই ওকে ডাকলনা। অবশ্য ওদের কাছে এত আদিখ্যেতা কোন সময়ই আশা করেনা কান্তা। ওরা স্রেফ নিজেদের প্রয়োজনে কান্তাকে কাছে রেখেছে। তা নাহলে কবেই ওকে ছুঁড়ে ফেলত, এটা কান্তা ভালো করেই জানে।
চোখের কোন বেয়ে অনর্গল অশ্রুকনারা ঝরতে থাকে।
কান্তা ভাবছে কতইবা বয়স ওর। এই বয়সে বাবাকে হারাল, মা’কে হারাল। ভাইদের দয়ায় দিনকাল কাটছে। কাজ করলেই তবে খেতে পায়। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই ভাগ্যে জোটে লাথি ঝাঁটা। আরও কতদিন এভাবে চলবে?
জানালার কপাটে টোকার শব্দ শুনে ওর ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটে। এইরাতে কে টোকা দিচ্ছে। একটু ভয় পায় কান্তা। চুপচাপ বিছানায় বসে থাকে। জানালা খোলার সাহস হয়না।

” কান্তারে, জানলা খুল বইন। আমি খাড়া হয়া থাকপার পারিচ্চিনা। ” প্রতিবেশি বৃদ্ধা দাদির পরিচিত আওয়াজে হাঁফ ছাড়ে কান্তা।
ধীরে ধীরে জানালার কপাট খুলে দেয়।

” দাদি, তুমি এত রাতে এখানে এসেছ কেন? ভাবি দেখলে তোমাকে আবার অপমান করবে। আমার জন্য তুমি বারবার কেন অপমানিত হও বলত? ”

” চুপ কর ছুঁড়ি। আমি দুইডা রুটি আনিছি, খায়া নে। আমি জানি ওরা তোক খাবার দেয়নি। খায়া নিয়া ঘুমায় যা। কম তো মার খালুনা। ”
দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে বৃদ্ধা তড়িঘড়ি করে নিজের বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।
কান্তাও আওয়াজ না করে জানালার কপাট বন্ধ করে।
বৃদ্ধা একটা কাগজে মুড়ে দুইটা রুটি আর একটু আলু ভাজি এনেছে। কান্তার ঠোঁটে হাসি ফুটে ওঠে। এই অনাথ জীবনে প্রতিবেশি দাদি যেন এক চিলতে সুখের আলো হয়ে এসেছে। অকারনেই সে কান্তাকে অনেক ভালোবাসে। কান্তা সময় নিয়ে রুটি দুইটা খায়। এরপর উঠে কলপাড়ে যায়। এশার নামাজ আদায় করতে হবে।

সকালে খাবার টেবিলে বসে আছে আরমানের বাবা শহিদ আহমেদ। তিনি আরমানের জন্য অপেক্ষা করছেন। আরমান নিজের রুম থেকে বেরিয়ে সোজা ড্রয়িংরুমের বাহিরে যেতে লাগলে শহিদ আহমেদ তাকে ডাক দেন।

” আরমান, আমি তোমার জন্য এখানে অপেক্ষা করছি। তুমি না খেয়ে বেরিয়ে যাচ্ছ কেন? এদিকে এস, একসাথে খাব। ”
আরমান বাবার ডাক শুনে ডাইনিং টেবিলের কাছে আসে।

” কি বলবেন বলুন? আজ আমার সকাল সকাল ক্লাস নিতে হবে। এখন খাওয়ার সময় নেই। ”

” তোমার কখনোই আমার সাথে বসে খাওয়ার সময় হয়না। আমি খেতে ডাকলেই তুমি নানান বাহানা দাও। তুমি কি লক্ষ্য করেছ, দিনদিন তুমি আনসোসাল হয়ে যাচ্ছ? রুডলি বিহেভ করছ পরিবারের লোকজনদের সাথে। এগুলো একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে বলে তোমার কাছে মনে হয়না? ”

” আমি শুধু নিজের মত করে চলতে চাইছি। এতে যদি আপনার মনে হয় আমি আনসোসাল, রুড বিহেভ করি, তবে তাই। কোনটা বেশি কোনটা কম এগুলো দেখার সময় আমার নেই। আপনি আর কিছু বলবেন? আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। ”

” তোমার সাথে কথা বলাই বৃথা। তা নাহলে নিজের বাবার এতবড় কোম্পানি থাকতে, একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ানোর চাকরি নাও! ” শহিদ আহমেদ উত্তেজিত হয়ে গেছেন।

” আহা, ভাইজান, আপনি এই সাত সকালে আরমানের সাথে রাগছেন কেন! ছেলেটা বললই তো তার ক্লাস আছে। আজ একসাথে খেতে পারছেননা তো কি হয়েছে, কাল দুজনে একসাথে খাবেন। বাবা, আরমান তুমি ভার্সিটিতে যাও। ” শহিদ আহমেদের মামাত ভাই রশিদ বেগ দুজনের মাঝে হস্তক্ষেপ করে।

” চাচা, তুমি উনাকে বলে দিও, আমি নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছি। তাই এই চাকরিই আমি করব। নিজের নামে আমি মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই, বড় হতে চাই। বাবার সাহায্যের আমার কোন প্রয়োজন নেই। ” কাউকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আরমান হনহনিয়ে বেরিয়ে আসে।

শহিদ আহমেদ গমনোদ্যত ছেলেকে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। ছেলের আর তার মাঝের সাত সমুদ্র তেরো নদীর ব্যবধান, আরও একবার তাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, তিনি পিতা হিসেবে অযোগ্য।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here