#খেয়া_ঘাটের_প্রেম
#লেখনী_আলো_ইসলাম
#পর্ব_১৫
–” আয়ান সহ সবাই বাইরে এসে দেখে অনেক মানুষ জমিদার বাড়ির সামনে। সেখানে রায়হান শেখ আফজাল শেখ সহ সবাই আছে। আর সামনে দাঁড়িয়ে আছে দুজন ছেলে মেয়ে মাথা নিচু করে।
— মেয়েটা কান্না করছে। চোখ মুখ দেখে মন হচ্ছে অনেক কান্না করেছে যার জন্য চোখ লাল আর ফোলা ফোলা হয়ে আছে। পাশ থেকে অনু বলে আজ আরেকটা ভালবাসার পতন হবে। নুসরাত বলে আর ভালো লাগে না এই গুলা। খুব কষ্ট হয় জানিস। এদের প্রেম ভালবাসায় যে কেনো এতো অনিহা বুঝিনা বাপু।
— তাসনু নুসরাতের মাথায় টোকা দিয়ে বলে এতখন স্টোরি শুনলি না বলদি মায়া কেন এই গ্রামে ভালবাসা হারাম।
— আয়ান সব শুনতে ছিল ওদের কথা। বোঝার চেষ্টা করছে আসলেই কি হচ্ছে এখানে। রিক তুর্য দুজন চাওয়া চাওয়ি করছে দুজনের দিকে। এর মধ্যে একটা লোক বলে জমিদার সাহেব এই দুজন গ্রাম থেকে পালিয়ে যেতে ছিল। হাতেনাতে ধরেছি আমরা। এদের বিচার করুন। এই গ্রামে প্রেম ভালবাসা বারন তারপরও তারা অনেক দিন ধরে এই রঙ্গলিলা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকবার সাবধান করেছি কিন্তু শুনেনি।
— এবার মেয়ের বাবা বলে। জমিদার সাহেব আমার মেয়ের কোনো দোষ নাই।। সব দোষ এই ছেলের। আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছি আমি ভালো ঘর দেখে। আর এই ছেলে আমার মেয়েকে ভুলভাল বুঝিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর বিচার করুন আপনি।
— আয়ান সব দেখছে শুনছে আর বোঝার চেষ্টা করছে। রিক জানে আয়ান চুপ থাকবে না। তাই রিক আগেই আয়ানের হাত ধরে বলে ভাই দেখ তুই এই সবের মধ্যে যাবি না। এমনি এখানে কেউ আমাদের সহ্য করতে পারছে না।। এরপর আরো খারাপ হয়ে যাব আমরা। আয়ান রিকের হাত সরিয়ে দিয়ে বলে তাই বলে তো অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না।
— রায়হান শেখ কিছু বলবে তার আগে আয়ান মেয়েটার উদ্দেশ্যে বলে আচ্ছা তোমাকে কি ওই ছেলে জোর করে নিয়ে যাচ্ছিল। মেয়েটা কোনো কথা বলছে না। শুধু চুপ করে কেঁদেই চলছে।
— আয়ান বলে দেখো এই ভাবে চুপ থাকলে হবে না এখন। তুমি যদি সত্যি ভালবেসে থাকো তাকে তাহলে এখন চুপ থেকো না অন্তত। নাহলে কিন্তু তোমার জন্য অনেক বড় শাস্তি পাবে সে। তুমি নিশ্চয় চাওনা কেউ বিনা দোষে শাস্তি পাক। সেটা যদি আবার হয় ভালবাসার মানুষ। ভালবাসা কিন্তু কোনো অন্যায় না। তাই তোমরা কোনো অন্যায় করোনি। সত্যিটা বলো দয়া করে।
— তাসনু আয়ানের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। আর ঠোঁটের কোণে আছে হাসি। এইদিকে রায়হান শেখ আর আফজাল শেখ রেগে আগুন। আফজাল শেখ বলে তোমাকে কে কথা বলতে বলেছে এর মধ্যে। মেহমান, মেহমানের মতো থাকো। আমাদেএ গ্রামেএ কোনো বিষয়ে নাক গলাতে এসো না।
— একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ হয়ে যদি কোনো অন্যায় দেখার পরও চুপ থাকি তাহলে সেটা আমার করা অন্যায় হবে মামা। তাই আমি এই ব্যাপারে চুপ থাকতে পারব না। যে-কোনো জায়গায় আমি অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করব।
— আফজাল বলে কিসের অন্যায়। অন্যায় তো করেছে ওরা। ভালবেসে অন্যায় করেছে। আমাদের গ্রামে কেউ কখনো প্রেম ভালবাসা করে না। আর যে করে তার জন্য থাকে কঠিন শাস্তি। আমাদের গ্রাম পবিত্র একটা স্থান কোনো নষ্টামি করার জায়গা না।
— প্রেম কোনো অন্যায় বা পাপ না মামা। প্রেম আসে মনের গহীন থেকে। যা সব সময় পবিত্র হয়ে থাকে। দুটি মনের মিল হলে তবেই ভালবাসার সৃষ্টি হয়। আর মন কখনো পাপি হয় না। ভালবাসা একটা পবিত্র বন্ধন যা মানুষ যুগ যুগ ধরে বহন করে আসছে। ভালবাসা আছে বলে আজও পৃথিবী এত সুন্দর। ভালবাসা আছে বলে মানুষ এক সাথে অনেক বছর পাশাপাশি থেকে কাটিয়ে দিতে পারে কোনো সংকোচ ছাড়া।
— রায়হান শেখ এবার হুংকার দিয়ে বলে। থামাও তোমার নীতি বাক্য। আমার গ্রামে আমার করা নিয়ম চলবে। আর কারো কথা না। এরা দোষ করেছে তাই শাস্তি পেতে হবে যা এযাবদ চলে আসছে আজও তার ব্যতিক্রম হবে না। আফজাল তোমার লোকদের বলো এই ছেলেকে ন্যাড়া করে মাথায় কালি ঢেলে সারা গ্রাম ঘুরিয়ে গ্রাম থেকে বিদায় করতে। আর এই মেয়েও যেহেতু অন্যায় করেছে একে ২০ টা বেতের বারি দিয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হোক আর বাবা মায়ের দেখা অনুযায়ী ছেলের সাথে বিয়ে হবে।
— তাসনু অনু নুসরাত রিক তুর্য আয়ান সবাই করুণ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। কেউ মানতে পারছে না এমন নিয়ম। তাসনুরা তো ছোট থেকে এই সব দেখে আসছে তাই সব কিছুতে অভ্যস্ত তারা কিন্তু আজ যেনো তাদেরও অনেক কষ্ট হচ্ছে ওই ছেলে মেয়ের জন্য। তারাও এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছে না আজ।
— তখনই ওই মেয়েটা বলে না৷ আমি খুব ভালবাসি তামিমকে ( ছেলেটার নাম) আর তাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করব না। আমি নিজ ইচ্ছেতে ওর সাথে ঘর ছেড়েছি। আমাকে কেউ জোর করেনি। দয়া করে এমন শাস্তি দিবেন না আমাদের৷ দরকার হয় আমাদেএ দুজনকে গ্রাম থেকে বের করে দেন তবুও আমাদের আলাদা করবেন না।
— আয়ানের মুখে এবার হাসি আসে, সাথে তাসনু, অনু, নুসরাত, রিক, তুর্য সবাই হাসে। এতখন যেনো দম বন্ধ করে ছিল তারা। এবার যেন একটু স্বস্তি পায়।
— আয়ান বলে সাবাশ বোন। এতখনে তুমি একদন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছো। তুমি তো কোনো অন্যায় করোনি। ভালবেসেছো একজনকে মন থেকে তাই সংকোচ না মাথা উঁচু করে বলবে সবাইকে তুমি। এটা কোনো অন্যায় না যে তোমাকে মাথা লুকাতে বা সবার থেকে পালিয়ে বেড়াতে হবে। গ্রামের সবাই এবার এক সাথে বলে এটা অন্যায় আর আমরা এই সব মানি না। আমাদের গ্রামে এতদিন যা চলে আসছে আজও তাই হবে।
— রায়হান আর আফজাল শেখ এবার ডেভিল হাসি দেয়।
— আয়ান মেয়ের বাবার কাছে গিয়ে বলে। চাচা কিছু কথা বলি দয়া করে আমার কথা গুলো শুনবেন তারপর যা সিদ্ধান্ত নিবেন আমি আমরা সবাই মেনে নেব।
— তারপর আয়ান বলতে শুরু করে।
— আপনি তো আপনার মেয়েকে ভালবাসেন আর আপনি নিশ্চয় চান আপনার মেয়ে খুব ভালো থাকুক। তার জন্য হয়ত আপনি ভালো ঘর ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিচ্ছেন আপনার মেয়ের। আচ্ছা ধরুন আপনার মেয়ে আপনার মত অনুযায়ী বিয়ে করে নিল। কিন্তু আপনার মেয়েকি সুখি হবে? আপনি তো তার সুখের জন্য ভালো ঘর টাকা পয়সা দেখেই বিয়ে দিতে চাচ্ছেন কি তাই না?
— লোকটা মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ বলে।
— আয়ান এবার হেসে বলে আচ্ছা৷ আপনার মেয়ের প্রাণ তো ওই ছেলের মাঝে। সুখ,শান্তি যাই বলুন সব কিছু কিন্তু ওই ছেলের কাছেই খুজে পাবে আপনার মেয়ে। তাহলে আপনি অন্য জায়গা কিভাবে সুখের আশা করেন বলতে পারবেন। আপনি তো বাবা আপনার মেয়ের ভালো মন্দ জানি আপনি বুঝেন কিন্তু ছেলে মেয়ে কিসে সুখি হবে এটাও দেখার দায়িত্ব বাবা মায়ের নয়কি?
— আপনি যে ছেলে দেখেছেন তার হয়ত অনেক টাকা আছে কিন্তু আপনার মেয়েকে প্রকৃত সুখি রাখার ক্ষমতা কিন্তু তার নেই। এবার তামিমকে সামনে নিয়ে গিয়ে বলে এর হয়ত টাকা নেয় কিন্তু আপনার মেয়েকে ভালবেসে আগলে রাখার ক্ষমতা আছে৷ সুখী রাখার ক্ষমতাও তার মাঝে আছে। তাই দয়া করে ভেবে দেখুন সব কিছু একবার। আয়ান এবার সরে আসে সেখান থেকে।
–” তাসনু আয়ানকে যত দেখছে তত মুগ্ধ হচ্ছে। রিক তুর্য বলে যা দিয়েছিস না ভাই তুই। কিন্তু এরা কি বুঝবে এইসবের মানে। আয়ান বলে জানি না ভাই তবে আমার মতো আমি চেষ্টা করেছি বাকিটা এখন তাদের হাতে মলিন মুখ নিয়ে বলে।
– অনু বলে আহ ভাইয়া যা বলেছে না। মন ছুয়ে গেছে প্রতিটা কথা। এখন এই মুর্খ গুলো কি বুঝবে আল্লাহ জানে।
— মেয়েটা বলে বাবা আমি তামিমকে ভালবাসি আর তামিমকে ছাড়া বাঁচব না। আমি ওকে ছাড়া কখনো মন থেকে সুখী হতে পারব না। মেনে নাও বাবা সব কিছু। মেয়েটার বাবা বলে কিন্তু ওতো বেকার। তোকে নিয়ে গিয়ে খাওয়াবে কি তোমার দায়িত্ব পালন করবে কি করে। আবেগে দুনিয়া চলে না। তাই তোর মতো আমি আবেগে গা ভাসিয়ে দিতে পারছি না।
— আচ্ছা বেকার বলে সমস্যা তাই তো আয়ান বলে। তারপর তামিমকে বলে আচ্ছা তুমি পড়াশোনা কতদুর জানো। অনার্স শেষ করে আর পড়াশোনা করার সুযোগ হয়নি তামিম বলে। আয়ান বলে বেশ তো এতেই চলবে। আমি তোমাকে চাকরি দিচ্ছি আমাদের কোম্পানিতে আর ভালো পোস্টে তোমার চাকরির ব্যবস্থা করছি আমি। বাবাকে আমি ফোন দিয়ে বলে রাখছি তুমি কাল দিয়ে সব কাগজপত্র জমা দিয়ে এসো।
— এবার তো আর কোনো সমস্যা নেই আপনার চাচা। মেয়ের বাবা হাসি মুখে চাকরি যখন পেয়েছে আর আমার মেয়ে যখন চাই আমার আর কি বলার আছে। আমার আর কোনো আপত্তি নেই।
— জমিদার সাহেব মাফ করবেন বিরক্ত করার জন্য। আমার মেয়ের সুখ আগে তাই আমি আমার অভিযোগ তুলে আমার ভুলের ক্ষমা চাচ্ছি আপনার কাছে। দয়া করে আমাদের অনুমতি দেন।
— রায়হান শেখ রাগে গজগজ করতে থাকে। আফজাল শেখ বলে নিজেরাই যখন সব সিদ্ধান্ত নিবে তে এখানে আসার কি দরকার ছিল। আর তোমরা ভুলে যাচ্ছো এই গ্রামে প্রেম ভালবাসার কোনো মুল্য নেই।
— লোকটা বলে কিছুই ভুলিনি জমিদার সাহেব কিন্তু এই ছেলে আমার চোখ খুলে দিয়েছে। আমরা সত্যি এতদিন অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে ছিলাম। সত্যি আমাদের মা বাবা হিসেবে সবার আগে উচিত সন্তান কিসে সুখী হবে সেটা দেখার। ক্ষমা করবেন আপনার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারলাম না। এই চলো সবাই তাই বলে সবাই চলে যায়।
— তাসনু অনু নুসরাত তো খুশিতে লাফিয়ে উঠে জোরে ইয়েয়য় বলে। তারপর যখন মনে পড়ে আফজাল শেখ আর রায়হান শেখের কথা। সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে দেখে অগ্নি চোখে তাকিয়ে আছে তাসনুদের দিকে তারা। ওরা আর কিছু না ভেবে সোজা বাড়ির মধ্যে দৌড় দেয়। এতে রিক তুর্য আয়ান ফিক করে হেসে দেয়।
— আফজাল শেখ রেগে আয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে। কি ভেবেছো ক’টা নীতি কথা বলে গ্রামের সবাইকে বুঝিয়ে হাত করে নিবে। সবার মন জয় করে নিতে পারবে। একটা কথা কান খুলে শুনে রাখো। সবার মন জয় করতে পারলেও এই জমিদার বাড়ির কারো মনে কখনো জায়গা করতে পারবে না। এখানে শুধু আছে তোমারদের জন্য একরাশ ঘৃণা। তাছাড়া আর কিছু কখনো পাবে না।
“” আয়ান বলে আমি একদিন ঠিক ঘৃণাকে সরিয়ে ভালবাসার বীজ রোপণ করবো দেখে নিও তুমি৷ আফজাল আর কিছু না বলে চলে যায়। রায়হান শেখও আয়ানের দিকে কিছুখন তাকিয়ে থেকে চলে যায়।
– রিক একটা টানা শ্বাস নিয়ে বলে উফফ বাঁচলাম বাবা। এতখন দম বন্ধকর একটা পরিবেশের মধ্যে ছিলাম। সব কিছু যে ভালো হয়েছে এটাই শান্তি। তুর্য বলে এইদিকে যে আগুনে আরো ঘি ঢালা হলো সেদিন খেয়াল আছে। না জানি আরো কত ঘৃণা জমা হলো তোদের উপর আয়ান।।
— আয়ান কি করতাম বল। এছাড়া যে আর কোনো উপায় ছিল না আমার। আজ যদি মুখ বুজে সব মেনে নিতাম তাহলে যে দুটো জীবন নষ্ট হয়ে যেতো। কি করে মেনে নিতাম বল।
— একদম ঠিক কাজ করেছিস দোস্ত তুর্য বলে। রিক বলে সব ঠিক হয়ে যাবে এবার চল ভেতরে আর আংকেল
কে বলিস আবার চাকরির ব্যাপারে। আয়ান বলে ওহ হ্যাঁ আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম চল চল বাবার সাথে অনেক কথা আছে তাই বলে ওরাও ভেতরে চলে যায়….
চলবে#খেয়া_ঘাটের_প্রেম
#লেখনী_আলো_ইসলাম
#পর্ব_১৬
–“ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে মন খারাপ করে বসে আছে তানু। কিছুই ভালো লাগছে না তার। কারণ আজ দুইদিন হলো তাদের প্রজেক্টের কাজ শেষ হয়েছে। আর তার জন্য তুহিন এখন আর আসে না। চেষ্টা করেও তুহিনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি তানু।
— সামিরা এসে বলে কি রে ড্রামাকুইন। এখন আবার কোন ড্রামা প্লে করছিস শুনি। প্রেমে ছ্যাঁকা খাওয়া এক বিশ্ব প্রেমিকা নাকি দেবদাসের পারু তাই বলে হাল্কা ধাক্কা দেয় তানুকে। তানু সামিরার কথার কোনো জবাব দেয় না। চুপচাপ বসে থাকে। সামিরা বুঝতে পারে তানুর মন সত্যি ভীষণ খারাপ। অন্য দিন তানু অনেক কথা শুনিয়ে দিত সামিরাকে কিন্তু আজ চুপচাপ শুনে যাচ্ছে।
— সামিরা এবার তানুর পাশে বসে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে, সত্যি ভালবাসিস তুহিন ভাইয়াকে? তানু সামিরার মুখের দিকে তাকায় কিন্তু কিছু বলে না। সামিরা ভ্রু নাচিয়ে আবার জিজ্ঞেস করে। তানুর চোখে পানি টলমল করছে। তা দেখে সামিরা যা বোঝার বুঝে গেছে।
— সামিরা এবার মজা করে বাব্বাহ আমাদের দ্যা গ্রেট ড্রামাকুইন ফাজিলের ডিব্বা যে কিনা ছেলেদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাই নিয়ে বেড়াতো৷ সে এখন নিজেই একটা ছেলের প্রেমে বিরহের অনলে পুড়ছে😱। ভাবা যায়। নাহ একদম ভাবা যায় না।
— তানু বলে মজা করিস না ভালো লাগছে না কিছু তাই বলে উঠে চলে যেতে নেয়। সামিরা তানুর হাত ধরে ফেলে। আবার বসিয়ে দেয় তানুকে তারপর বলে, তুই ভুল জায়গায় ভালবাসা দিয়ে ফেলেছিস। তোর ভালবাসা হয়ত তোর মাঝেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে। আমি তো তুহিন ভাইয়াকে যতটা হোক চিনেছি। সে কোনো মেয়েকে পাত্তা দেয় না। আর না এই সবে তার কোনো ইন্টারেস্ট আছে। তাই বলি ভুলে যা সব কিছু। এই ভাবে ধুকে ধুকে কষ্ট পাওয়ার চেয়ে এখনই সব গুছিয়ে নেওয়া ভালো হবে।
— তানু বলে কি করে ভুলব বল আমি যে সত্যি ভালবেসে ফেলেছি তাকে। প্রথম যেদিন দেখি বিশ্বাস কর আমার হার্টবিট সেকেন্ডে সেকেন্ডে জানান দিচ্ছিল এটাই আমার প্রিয়জন আমার ভালবাসার মানুষ। কিন্তু পাত্তা দেয়নি আমি। পরে ওই মানুষটাকে জ্বালাতে গিয়ে কখন যে নিজেই জ্বলে উঠেছি বুঝতে পারিনি রে।
— তাহলে কি করবি এখন?
— অপেক্ষা। আমার এখন অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নাই। শুনেছি ভালবাসা যদি সত্যি হয় তাহলে নাকি ঠিক ফিরে আসে সেই ভালবাসার টানে। আর যদি না আসে সে ফিরে তাহলে বুঝব আমার ভালবাসায় খাদ ছিল আর নাহলে আমার ভাগ্যে ছিল না সে।
– আচ্ছা অনেক কথা হয়েছে চল ক্লাসে যায়। সামিরা তানুর দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে সেও চলে যায় ক্লাসে।
— তুহিন বই সামনে নিয়ে বসে আছে। তার মুলত এটাই কাজ। এই ছেলে এত পড়ে কিভাবে মাথায় আসে না।
” তুহিনের মা মাঝে মাঝে তুহিনকে বলে আচ্ছা তুই কি আমার ছেলে বাবা। আমার পরিবারে এমন তো কেউ ছিল না। তুই এত পড়ুয়া কেন হয়েছিস। একটু হাসি মজা করলে তো পারিস””
– তুহিন তার মায়ে কথা শুনে শুধু মুচকি হাসি উপহার দেয় একটা কিন্তু কিছু বলে না।
— তুহিন বই নিয়ে বসে আছে আজ ঠিকই কিন্তু তার নজর বা মন কোনটাই বইয়ের দিকে নেই। তুহিন নিজেও জানে না এর কারণ। কিন্তু আজ দুইদিন সে খুব করে লক্ষ্য করছে কিছু একটা মিস করছে সে ভীষণ ভাবে মিস করছে।
–আচ্ছা আমি কি কোনো ভাবে ওই মেয়েটাকে… না না কি সব ভাবছি। যে ডেঞ্জারাস মেয়ে বাবা তার থেকে দূরে থাকাই ভালো। বাজে চিন্তা বাদ দিয়ে পড়াই মন দিই নিজেকে নিজে বলে তুহিন তারপর পড়তে শুরু করে আবার।
—————————
–” আফজাল শেখ হন্তদন্ত হয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে নুরজাহান বিবিকে ডাকে। নুরজাহান বিবি সবে একটা পান নিয়ে মুখে দিতে যাচ্ছিল আফজালের ডাক শুনে সে পান রেখে বাইরে এসে বলে, এইভাবে চিক্কর দিস ক্যান বাড়িতে তো কাক চিল একটাও বসবে না তোর ভয়ে। দিনদিন কেমন রুক্ষ হয়ে উঠছিস তুই।
— আফজাল শেখ বলে আহ মা থামো তো। যে জন্য ডাকলাম শুনো। তাসনুর জন্য যে ছেলের আসার কথা ছিল আগামী পড়শু তার ফ্লাইট চেঞ্জ হয়েচে। আসতে পারছে না এখন তাই বলে চিন্তিত হয়ে বসে পড়ে আফজাল।
— নুরজাহান বিবি ভ্রু কুচকে বলে হঠাৎ দিন বদলায়লো ক্যান।
— আর বলো না৷ দেশে আসবে বলে তার কি উত্তেজনা। আমাদের সবার জন্য মার্কেট করতে গিয়েছিল। সকালেও কথা বললাম কার কি পছন্দ সব জেনে নিল আমার থেকে। একটু আগে আমার বন্ধু ফোন দিয়েছিল সে বলল রনি নাকি মার্কেট যাওয়ার পথে এক্সিডেন্ট করেছে। আর গুরুতর আহত হয়েছে। তাই সুস্থ হয়ে দেশে আসবে।
— নুরজাহান বিবি ইসস রে। ছেলেটা কত সখ করেছিল দুদিন পর দেশের আসবে। কত আনন্দ নিয়ে ছিল বল। আর এখন অসুস্থ হয়ে বিসানায় পড়ে। খারাপ লাগছে শুনে।
— আফজাল বলে আমারও খুব খারাপ লাগছে ছেলেটার জন্য। কত খুশি ছিল জানো ছেলেটা। দেশে হলে তাও নাহয় দেখতে পেতাম। কিন্তু ওইখান থেকে তো আর দেখা সম্ভব না তাই আরো বেশি খারাপ লাগছে।
— নুরজাহান বিবি বলে আচ্ছা চিন্তা করিস না৷ ঠিক হয়ে যাবে সব। দোয়া কর ভালো হয়ে উঠে যেনো তাড়াতাড়ি।
— সেটাই এখন একমাত্র কাজ। আচ্ছা আমি ভাইরে গেলাম। খবরটা পেয়ে তোমাকে জানাতে এসেছিলাম। তাসনুকেও বলে দিও আর হ্যাঁ ওকে মন খারাপ করতে বারন করো। তাই বলে চলে যায় আফজাল।
এইদিকে তাসনু আড়ালে দাঁড়িয়ে সব কথায় শুনে। খুশিতে আত্বহারা হয়ে যায়। তাসনু নাচতে নাচতে পিছে ঘুরে কোনো দিক তাকিয়ে পিছে থাকা ব্যাক্তিকে জড়িয়ে ঘরে লাফাতে থাকে। এত খুশি আর আনন্দ লাগছে তার কাকে ধরেছে আর কি করেছে সেদিকে লক্ষ্য নেয়।
— কিন্তু সামনে থাকা মানুষটা ভীষণ ভাবে চমকে আর অবাক হয়ে তাসনুর কাজ দেখছে।
— তাসনুর এবার খেয়াল আসে সে কাউকে একটা জড়িয়ে আছে কিন্তু কে সে। মাথা তুলে আয়ানকে দেখে সেও চমকে যায় আর সাথে সাথে ছিটকে দূরে সরে যায়।
— তারপর মনে মনে বলে আল্লাহ একি করে ফেললাম আমি। ধুর এত খুশি লাগছে যে সব কিছু ভুলে খেয়েছি যেন 🤦♀️। এবার কি করব। একা একা বকতে থাকে তাসনু আয়ান তাসনুর দিকে তাকিয়ে আছে। আর তাসনু লজ্জায় মাথা তুলে তাকাতে পারছে না। আয়ান বুঝতে পেরে মুচকি হাসে। তারপর সেখান থেকে চলে যায়। আয়ানেরও খুব আনন্দ লাগছে আজ। কারণ তাসনুর সাথে সেও সব শুনেছে।
— তাসনু কিছুক্ষণ ওইভাবে থাকার পর সামনে তাকিয়ে দেখে কেউ নাই। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে নাহ নেই কোথাও। কোথায় গেলো বিস্ময় নিয়ে ভাবে তাসনু তারপর সেও চলে যায় সেখান থেকে।
— নুসরাত ফোনে কথা বলাতে এতো মগ্ন ছিল যে কেউ একজন যে তার কথা শুনছে সেদিক খেয়ালই নেই। তখনই তাসনু ঘরে আসে। অনুকে ওইভাবে নুসরাতের পিছে দাড়িয়ে আড়িপাততে দেখে বলে কি রে কি করিস তুই ওইখানে।
— প্রেমালাপ শুনি আনমনে বলে অনু।
— কথার আওয়াজ পেয়ে নুসরাত চমকে পিছে ঘুরে দেখে অনু আর তাসনু। তাড়াতাড়ি করে ফোন কেটে একটা শুকনো ঢোক গিলে নুসরাত। অনুও জিভ কেটে ভাবে কি বলতে কি বলে দিল সে। আর তাসনু দুজনের কান্ড দেখেই সেই অবাক সাথে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে
— অনু একটা মেকি হাসি দিয়ে এয়ে আপু আমি আসছি একটু কাজ আছে। নুসরাত ওয়াসরুমে ভেতরে যেতে নেয় তাড়াহুড়ো করে। তাসনু দুজনকেই বলে এই থাম তুরা। একটাও নড়বি না এখান থেকে। অনু নুসরাত ভয়ে ঢোক গিলতে থাকে ঘনঘন।
— তুই কি যেনো বললি। প্রেমালাপ শুনছিস। কার প্রেমালাপ হচ্ছে এখানে শুনি৷ ভ্রু উঁচিয়ে বলে তাসনু।।। — ঠিক এই ভয়টাই পাচ্ছিলাম। ধুর ভাল্লাগেনা নিজের কথায় নিজ ফাসি হয়ে দাঁড়ায়।
-” কি হলো বল কি বলছিলি।কার প্রেমালাপ হচ্ছিল এখানে।
— অনু জানে আর কিছু বলে লাভ হবে না তাই এক নিশ্বাসে বলে তুর্য ভাইয়া আর নুসরাতের প্রেমালাপ। অনুর কথায় নুসরাত তাসনু দুজনেই চমকে উঠে….
#খেয়া_ঘাটের_প্রেম
#লেখনী_আলো_ইসলাম
#পর্ব_১৭
–“আয়ান অনেক কষ্টে তার হাসি আটকায় রেখছিল। ঘরে এসে তাসনুর মুখের ভঙ্গি ভাবছে আর তাসনুর করা সকল কাজ মনে করে আয়ান এবার জোরেই হেসে দেয় হো হো করে। ঘরে রিক, তুর্য ছিল। বসে ফোন স্ক্রল করছিল তারা। হঠাৎ কারো হাসির শব্দ শুনে দুজনেই চমকে উঠে। সামনে তাকিয়ে দেখে আয়ান দম ছেড়ে হাসি দিয়ে চলেছে। আয়ানকে খুব কমই এমন করে হাসতে দেখেছে তার।
— আয়ান এমনিতেই হাসি খুশি একটা মানুষ। কিন্তু তার হাসিটা ছিল চাপা। তাই এমন করে হাসতে আজ প্রথম দেখছে তারা বলতে। রিক তুর্যের দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে। তুর্য ঠোঁট উঁচিয়ে জানায় সে কি জানে।
— কি রে পাগল হয়ে গেছিস নাকি ভাই তুই। এমন উন্মাদের মতো হাসতে তো এর আগে দেখেনি। ভাই তুই ঠিক আছিস তো রিক বলে। আয়ানের এতখনে খেয়াল আসে তার ঘরে সে ছাড়াও আরো দুজনের অবস্থান। আয়ান সঙ্গে সঙ্গে হাসি থামিয়ে দেয় তারপর নিজের মাথায় বাড়ি মেরে বলে সত্যি পাগল হয়ে গেছি মনে হয় খুশিতে।
— ওই ভাবনার বিদ্যাসাগর। কি ভাবছিস এতো শুনি। বল এমন দাত কেলিয়ে হাসার কারণ কি তুর্য বলে।
— কি আবার কিছু না। এমনি হাসতে পারি না নাকি। আমার এমনি হাসি পাচ্ছিল তাই হাসলাম৷ তোরা আমার ঘরে কি করছিস আয়ান বলে।
— না না না। কথা ঘুরালে চলবে না। ঝেড়ে কাশ ভাই। ব্যাপার কি হুম রিক বলে।
–“আয়ান বুঝে গেছে এদের থেকে আজ রিহায় নেয়। তাই কোনো ভণিতা ছাড়ায় বলে তাসনুর বিয়ে আপাতত বাদ। আয়ানের কথায় রিক তুর্য খুশি হয়ে অতি আগ্রহ নিয়ে বলে মানে। কেমনে কি বুঝায় বল।
— মানে কিছু না। যে ছেলে আসার কথা ছিল সে এখন আসতে পারছে না৷ তার নাকি এক্সিডেন্ট হয়েছে। তাই সুস্থ হয়ে আসবে।
— রিক আর তুর্য একসাথে বলে উঠে ওওওও। আবারও আসবে। কোথায় আমরা ভাবলাম একবারে হয়ত বিয়ে 🙃।
— এর জন্য এতো হাসি বুঝি আপনার প্রেমিক বাবু বলে দাত কেলিয়ে হাসে তুর্য।
– শালা তুই ঠিক হওয়ার না। তবে এটা ঠিক একটু ভালো লাগছে শুনে তবে আমি হাসছি অন্য কারণে। অন্য কারণ। আবার কি কারণ বল শুনি। আয়ান মুচকি হেসে সব খুলে বলে ওদের।
— আচ্ছা আচ্ছা। এবার বুঝলাম সাহেবের এত হাসির কারণ। ভাই তুই যে প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিস এটা কি বুঝতে পারছিস। আয়ানের মুখ মলিন যায় এবার। রিক বলে আরে তুর্য শুননা প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে সে ঠিক আছে কিন্তু তুই। তুই তো ভাই একদম ডুবে গেছিস প্রেম সাগরে তার কি হবে।
– ” তুর্যের মুখ এবার ছোট হয়ে যায় আর চোখ মুখে ফুটে উঠে ভয়। আয়ান বলে প্রেমে ডুবে গেছে মানে। ও আবার কার প্রেমে পড়ছে 🤨🤨।
———————
– অনুর কথায় নুসরাত চমকে উঠে আমতা আমতা করে বলে কি যাতা বলছিস। কিসের প্রেমালাপ হ্যাঁ। আর আমি কার সাথে করতে যাব। তুই না সব সময় মজা করিস তাই বলে হাসার চেষ্টা করে নুসরাত। অনু ড্যাবডেবে চোখ করে একবার তাসনু আরেকবার নুসরাতের দিকে তাকাচ্ছে। নুসরাত ইশারা করে বলে বল তাই বলে কটমটে চোখ করে তাকায় অনুর দিকে।
— অনু একটা ঢোক গিলে বলে। হ্যাঁ হ্যাঁ তাই তো আমি মজা করছিলাম। আমিও না যখন তখন মজা করি শুধু বলে অন্য দিকে তাকায়।
– জানতাম অনু মজা করছে দেখেছো আপু নুসরাত বলে। তাই বলে সেখান থেকে চলে যেতে নেয় তখনই তাসনু বলে এই দাড়া এক পা নড়বি না এখান থেকে। অনু আমার দিকে ফির। অনু মনে মনে বলে কি ঝামেলায় পড়লাম রে বাবা। জীবনে আর কারো প্রেমালাপ শুনব না। ধুর ভাল্লাগেনা 😤
— তারপর অনু তাসনুর দিকে তাকিয়ে দাত বের করে হাসতে থাকে। এমন গাধীর মতো বিহেভ করছিস কেনো। মুখ বন্ধ করে চুপচাপ দাড়া আর আমার প্রশ্নের সোজা জবাব দিবি যদি এইদিক ওদিক হয়েছে তাহলে বুঝতে পারছিস। অনু জোরে জোরে মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ বলে।
–” নুসরাত ঘন ঘন ঢোক গিলছে আর মনে মনে অনুকে একশটা গালি দিচ্ছে।
— কি চলছিল এখানে তাই বল তাসনু বলে অনুকে।
— অনু আর কোনো কিছু না ভেবে বলতে শুরু করে। নুসরাত আর তুর্য ভাইয়া দুজন দু’জনকে ভালবাসে। ওদের মধ্যে একটা সম্পর্ক চলছে। বলেই মাথা নিচু করে ফেলে। আর নুসরাত চোখ খিচে বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে।
– চোখ খোল নুসু আর আমার দিকে তাকা। নুসরাত মাথা নাড়িয়ে না বলে। তাসনু বলে শেষবারের মতো বলছি চোখ খুল একটু জোরে বলে। নুসরাত এবার ভয়ে ভয়ে চোখ খুলে কিন্তু তাসনুর দিকে তাকানোর সাহস হয়না। নিচের দিকে তাকিয়ে পায়ের আঙ্গুল দিয়ে মাটি খুচরাচ্ছে।
– কবে থেকে চলছে এই সব একটু কঠিন ভাবে বলে তাসনু। নুসরাত এবার ভয়ে কেঁদে দেয়। তারপর বলে আপু আসলে তেমন কিছু নয় আমরা এমনি কথা বলি এই যা। কান্নার জন্য ঠিক ভাবে কথাও বলতে পারছে না নুসরাত। কান্না আর ভয় একসাথে যোগ দিয়ে তার অবস্থা খারাপ। অনু মনে মনে আফসোস করছে তার জন্য আজ এই পরিস্থিতি এই ভেবে।
— আর তাসনু সে বেশ মজা পাচ্ছে এই সব দেখে। কঠিন মুখ রেখেই বলে শুধু কথা নাকি আরো কিছু হুম😕।
— নুসরাত চুপ
— ওই বল শুধু কথা নাকি আরো কিছু আছে৷ সত্যি বলবি কিন্তু।।
–” আসলে তুর্য ভাইয়াকে আমার ভালোও লাগে মাথা নিচু রেখেই বলে।
– ওও ভালো লাগে। বুঝলাম তার মানে ভালবাসিস না শুধু ভালো লাগা। বুঝলি রে অনু ভালো লাগা ভালবাসা না৷ আর তুই না কি না কি বলছিলি। আচ্ছা একটা কথা বলি তোদের গোপন কথা। ওই যে হাবু চাচার মেয়ে ঝর্ণা আছে না সে নাকি তুর্যকে ভালবাসে। আমাকে তো বলছিল তাসনু রে একটু ঠিক করে দে না খুব ভালবেসে ফেলেছি তাকে। তাই ভাবছি ওর সাথে..
— নায়ায়ায়া জোরের সাথে বলে নুসরাত। অনু তাসনু ভ্রু কুচকে তাকাই ওর দিকে.। তাসনু মুখ চেপে হেসে বলে কি না? কি সমস্যা তোর।
–” আমি তুর্য ভাইয়াকে ভালবাসি বলে জোরে কেঁদে দেয় নুসরাত। তাসনু বলে আরে কান্না করছিস কেন আমি তো মজা করছিলাম তোর মুখ থেকে সত্যিটা বের করার জন্য। আর দেখ কেমনে সত্যি চলে আসলো।
— তার মানে তুমি….
— হ্যাঁ আমি কি? সত্যি টা বের করলাম এই জাস্ট। আমার চোখ ফাঁকি দেওয়া এত সহজ নয় চান্দু।
— তুমি কি সব জানতে আগে থেকে আপু অনু বলে। সব জানতাম না তবে সন্দেহ করেছিলাম আর আজ সব পরিস্কার হয়ে গেলো। আচ্ছা তোরা কি ভেবেছিলি আমি জানলে অন্যদের মতো বলব এটা মানি না। ঠিক করিস নি ভুলে যা। আরে ইয়ার চিল। আমি তোদের তেমন বোন না। প্রেম খারাপ কিছু না৷ তবে যাই করবি ভেবে আর মন থেকে। নুসরাতের মুখে এবার হাসি আসে দৌড়ে গিয়ে তাসনুকে জড়িয়ে ধরে বলে তুমি আমার সন থেকে ভালো বন্ধু, বোন উম্মাহ।
— ও আচ্ছা এই জন্য বুঝি এই বন্ধু বোনের থেকে সব লুকিয়ে যাচ্ছিলি।
— নুসরাত মাথা চুলকিয়ে বলে তুমি যেমন ভাবছো তেমন কিছু না। আমরা তো কেউ কাউকে এখনো বলিই নাই ভালবাসি। তবে বুঝতে পারি তুর্য ভাইয়াও আমাকে পছন্দ করে। বলে লজ্জায় মাথা নুয়ে দেয় নুসরাত
— এখন আমি কাবাব মে হাড্ডি তাই না। আমি যে তোর এত বড় উপকার করলাম একটা ধন্যবাদ তো দে বইন অনু বলে নুসরাতকে।
— দূর হ ছেড়ি। তোর জন্য আমার এতখন জান যাই যাই অবস্থা ছিল। যদি আপু উল্টো কাজ করতো তাহলে কি হতো।
— অনু 😒😒😒😒
— তাসনু ওদের কথায় হেসে বলে আচ্ছা হয়েছে শুন একটা খুশির খবর আছে। নুসরাত অনু দুজন উৎসুক হয়ে বলে কি খবর বলো।
– আমার সাথে যে ছেলের বিয়ে হওয়ার কথা৷ সে এখন আসবে না। উল্লাস নিয়ে বলে তাসনু। নুসরাত অনু তাসনুর কথায় ইয়ে বলে নাচতে থাকে। তাসনু হস যোগ দেয় ওদের সাথে।
———————–
— তুই আবার কার প্রেমে পড়লি শুনি। রিক বলে আমাদের নুসরাত রাণীর প্রেমে পড়েছেন আমাদের সেনাপতি মশাই। তাই বলে হাসতে থাকে রিক কিন্তু আয়ান গম্ভীর মুখ করে আর তুর্যেরও মুখে হাসি নেই আয়ান যদি ভুল বুঝ বা কিছু বলে এই ভেবে।
— তুই নুসরাতকে ভালবাসিস? আয়ান বলে।
-“তুর্য কিছু না বলে চুপচাপ থাকে। কি রে বল ভালবাসিস।
— আমার নুসরাতকে ভালো লাগে। ওর আশেপাশে থাকতে ইচ্ছে করে। জানি না এটা ভালবাসা কিনা কিন্তু আমি ওর থেকে দূরে গেলে পাগল পাগল লাগে উতলা হয়ে উঠে মন।
— নুসরাতকে বলেছিস তোর মনের কথা? আয়ান জিজ্ঞেস করে তুর্যকে। তুর্য মাথা দুলিয়ে না বলে।
— যদি ভুল করে থাকি মাফ করে দিস ভাই। জানি তোদের সমস্যা অনেক এখানে। তাও মন মানে নি কখন যে ভালবেসে ফেলেছি নিজেও জানি না৷ সরি দোস্ত।
— থাক হয়েছে আপনার ইমোশনাল ড্রামা রাখেন। ড্রামাকিং একটা। আমি কি বলেছি যে আমি কিছু মনে করেছি বা আমার সমস্যা। চালিয়ে যা। আমি তো আছি নাকি।
– তুর্যের মুখে এবার আনন্দের ধারাবয়। লাফ দিয়ে বলে সত্যি বলছিয়া তুই। আমার সাথে থাকবি।
আয়ান হ্যাঁ বলে ইশারা করে চোখ নাড়িয়ে। রিক বলে তাহলে রাস্তা ক্লিয়ার এবার প্রপোজ করে দে ভাই…
চলবে…..
(