গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন পর্বঃ২০

গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন
পর্বঃ২০
লেখাঃ Shakil
..
..
..
— তার মানে মিতু আবারো আমাকে এভাবে ফাসিয়ে দিলো,,,!!
আসলে মিতুকে এভাবে বিশ্বাস করাটা আমার মোটেও ঠীক হয় নি।
— এক ঘন্টা না যেতেই মিতুসহ আমার আপু আব্বু ও অনু আসলো।
মিতুঃ ভাইয়া আবির কে ছেড়ে দাও
— কি বলিস বোন ও নাহ তোকে…??
ভাইয়া অনেক হয়েছে আর নাহ। আমি যা বলেছি সব মিথ্যা আবির আমার কিডন্যাপ করে নি। তাই তুমি ওকে ছেড়ে দাও প্লিজ।
—- মিতুর কোথায় ওর ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দিলো।
আমি জেল থেকে বের হয়ে মিতুকে বললাম,,, আশা করি বাকিটুকুও তোমার ভাইয়াকে বলে দিবা। আমরা সবাই তোমার ভাইয়ার আশায় পথ চেয়ে থাকবো।
—- আমরা সবাই বাসায় চলে আসলাম।
আপু মিসকাত কে পেয়ে অনেক খুশী৷
অনুকে সবাই যেনো পারছে নাহ মাথায় তুলে আদর করতে।
—- আমার সৎ মা তো বলেই বসলো এমন একটা লক্ষী মেয়ে আবিরের বউ হবে। অনেক মিষ্টি তুমি।
আমি চেয়ে চেয়ে শুধু অনেকে দেখছি। অনু জেনো লজ্জায় লাল করে ফেলেছে ওর মুখটি।
— অনু এবার বললো আচ্ছা আমি আশি এবার।
আপু আমায় অনুকে এগিয়ে দিয়ে আসতে বললো।
আমি অনুকে এগিয়ে দিতে ওর সাথে সাথে যাচ্ছি। দুজনেই চুপচাপ হেঁটে চলেছি। আজ আমার অনেক ইচ্ছেই হচ্ছে অনুকে কিছু বলার।
— কিন্তু কথাগুলো পেটে আসলেও যেনো মুখ দিয়ে আর বার হচ্ছে নাহ। অনুর বাসার কাছাকাছি চলে এসেছি আর মাত্র এক মিনিটের রাস্তা। এবার বুকে সাহস করে বলেই দিলাম অনুকে….
অনু একটা কথা বলার ছিলো তোমায়
—- হুমমম বলো কি কথা
অনু আসলে আমি আমার মন কে যতবারই প্রশ্ন করেছি সে উত্তর দিয়েছে তোমার মনটাকে সে গ্রহণ করতে চাই।
— আমার কথা শুনে অনু দাঁড়িয়ে গেলো।
আমিও কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম।
অনু কিছুটা রোমান্টিক ভাব নিয়ে বললো….দেখো আবির আমি ওসব শুনতে চাই না এক কথায় আমি সোজা ঔ তিনটা শব্দ শুনতে চাই বলবে কী??
—- হুমমম
আমি তোমাকে ভালোবাসি অনু।
আমিও তোমাকে ভালবাসি আবির।
দুই মিনিটের জন্য আমার আর অনুর চোখের ভাষায় কিছুটা কথা চললো।
যদি ভালোই বাসো তাহলে ঐদিন দুইটা চড় মারায় এভাবে হারিয়ে গিয়েছিলে কেনও অনু,,,,??
— কই হারিয়ে যাবো কেনও,,, শুধু বুকভরা বিশ্বাস ও আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা নিয়ে তোমার পথ চেয়ে বসে ছিলাম। আমি শুধু একটা কথাই ভাবতাম আমি যদি সত্যিই তোমাকে ভালবেসে থাকি তাহলে একদিন না একদিন তোমাকে আমি পাবই। আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে শুধু তুমি ছিলে আবির।
—- তাই অনু…?? সত্যিই আমায় এতটা ভালোবাসো…??
হুম সত্যিই আবির আমি তোমাকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি৷
— অনুকে জরিয়ে ধরতে সাহস পাচ্ছি নাহ তবে অনেক ইচ্ছে করছে অনুকে বুকের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরি। তবে আমার সেই সাহস যেনো হচ্ছে নাহ।
—- আচ্ছা আবির এবার আমি আশি তাহলে।
হুমমম
অনু বাই বলে ওর বাসায় চলে গেলো। আমিও বাসায় চলে আসলাম। এসে আমার রুমে গিয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবছি অনুকে বউ করতে পারলে সত্যিই আমি অনেক ভাগ্যবান হবো। ওর ভালোবাসায় আমার জীবনটা সুখে ভরে যাবো।
—- নিজের সুখের কথা ভাবতে গিয়ে যেনো বুকের ভেতর কিছু একটা নাড়া দিয়ে উঠলো।
কল্পনার বেশে মনে হলো কেউ যেনো আমায় বলছে,, নিজের সুখের, সংসার ও বউয়ের কথা ভাবচিস তোর বোনের সংসারটা নিয়ে ভাব। তোর বোনের সুখ নিয়ে ভাব।
—- আমার সুখ যেনো হারিয়ে গেলো।
আমিই বা আর কী করবো,,। এতো চেষ্টার পরও মাসুদ ভাইয়া যদি আপুকে মেনে না নেই তাহলে আর কী করবো। আর কী করতে পারি.. আপু আমি কি করতে বাদ রেখেছি। কত পথই না অবলম্বন করলাম তবুও কাজ হলো নাহ। একটিবারের জন্যও উনি যেনো আপুর কথা ভাবেন নি। ভাবেন নি উনার এমন একটা নিষ্পাপ সন্তানের কথা।
— তবে আমার মনে হয় মিতু এবার সব কথা মাসুদ ভািয়া কে খুলে বলবেন। উনি এবার আসবেন আমার আপুকে নিতে । আমার ভাগ্নে কে নিজের সন্তান পরিচয় দিয়ে উনি কোলে তুলে নিবেন।
—- একটুপর অনু ফোন দিলো…
এই বাবু কী করছো….??
বাবু মানে বাবু কে অনু…?? আরে তোমাকে আদর করে বাবু নাম বলে ডাকলাম আরকি।
—- আমি হাসবো না কাঁদবো বুজছি নাহ। বাবু বলে বিএফ কে কেউ ডাকে নাকি,,,?? বাবু বলে তো নিজের সন্তান কে বলে ডাকে। হায়রে যুগ হায়রে ভালোবাসা।
—- এই বাবু কী হলো তোমার কথা বলছো নাহ কেনো তুমি…??
অনু দেখো এসব ভাষায় আমায় ডাকবা নাহ তো। এটা শুনতে আমার ভালো লাগছে নাহ। আমাকে আর বাবু বলে ডাকবা নাহ তুমি।
—- আচ্ছা আচ্ছা ঠীক আছে। তুমি তাই বলে রাগ করো নাহ আমি আর পরবর্তীতে তোমায় বাবু বলে ডাকবো নাহ কেমন।
—- হুমমম ধন্যবাদ
অনুর সাথে আমার কিছুক্ষণ কথা চললো।
রাতে সবার সাথে খাবার খেতে বসলাম। খাওয়া শেষ হলে ভাগ্নের সাথে একটু মজা করলাম। একটুপর রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে হাল্কা নাস্তা করে অফিস গেলাম।
—- সারাদিনে অফিসে থাকা অবস্থায় অনু যে কতবার আমাকে ফোন করলো তার হিসাব নেই। বাসায় ফিরে অনুকে ফোন করতে ও আমাকে কিছু কথা শোনালো। একে সাড়াদিন অফিসে থাকা আবার বাসায় না আসতেই জিএফ এর বকা।
— ফোন কেটে দিয়ে আমি ফোনটা বন্ধ করে রেখে দিলাম।
আপুর রুমে গিয়ে দেখি ভাগ্নে বসে থেকে খেলা করছে। ওকে কোলে তুলে নিলাম।
ভাই কখন ফিরলি,,?? এইতো আপু এখনি।
ওহ যা ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার বাড়ছি। আম্মু কোথায় রে আপু,,,??
— এইমাত্র রান্না সেরে রুমে গিয়েছে মনে হয়।
আচ্ছা আপু তুই তাহলে খাবার বাড়তে থাক আমি একটু আম্মুর কাছ থেকে আসছি,, । আচ্ছা ভাই
— আসলে এই কয়েকটা দিন আম্মুকে আমি সময়ই দিইনি। ঠীক মতো উনার সাথে কথা হয়নি। মনটা কেমন যেনো করছিলো তাই আজ উনার রুমে গেলাম। কিন্তু রুমে গিয়েই একটা বোকার পরিচয় দিলাম যাতে মনে হয় উনি কিছুটা কষ্ট পেলো।
— আমিঃ- আসবো আম্মু??
উনি কিছু না বলে আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো বাবা তোর মায়ের ঘরে আসতে পারমিশন লাগবে তোর,,,??
নাহ মানে আসলে আম্মু
তোমার সাথে বেশি সময় কথাই হয় না। তাই আসলাম গল্প করতে ।
—- অফিস হতে কখন এসেছিস,,,?? খাওয়া-দাওয়া হয়েছে..??
এখনি আম্মু। আপু খাবার বাড়ছেন খাবো একটুপরেই।
চল আগে খাবি তারপর গল্প করবো। আম্মুর সাথে খাবার টেবিলে চলে গেলাম। সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া সাড়লাম।
— খাওয়া শেষ হলে সবাই বসলাম গল্প করতে।
গল্প করা শেষ হলে আমি আমার রুমে আসলাম। ফোনটা অন করতে দেখি অনু ২৫ টি মেসেজ করেছে। শুধু সরি সরি।
—-অনুকে ফোন দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়াসরুমে গিয়ে আমি ফ্রেশ হচ্ছি।
আম্মু আমাকে ডাক দিয়ে বললো দেখতো আবির বাইরে কে এসেছে দরজা খুলে দে।
— আমি গিয়ে দরজাটি খুলতেই আমার চোখ আকাশে উঠলো…
মাসুদ ভাইয়া ও তার বোন মিতু আজ প্রথমবারের মত এসেছে আমাদের বাসায়।
আমাকে কিছু না বলে মাসুদ ভাইয়া মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলো।



চলবে,,,??
..
(গল্পটি ভালো লাগলে জানাবেন প্লিজ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here