গুমোট অনুভুতি পর্ব ৩৭+৩৮

গুমোট_অনুভুতি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্ব_৩৭

সায়ানের এই অনুভুতি শুন্য দৃষ্টি দেখে সামনের মানুষটি ক্ষেপে গেলো তারপর খুব জোরে দরজা ভেতর থেকে আটকালো। সায়ানের এবার মাথা গরম হয়ে গেলো,রুশির বর্তমানে হুশ নেই কিন্তু ভারী শব্দ আর চেঁচামেচি ওর শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই সায়ান দাঁতে দাঁত চেপে বললো

“এই রুমে যদি আর একটুও শব্দ হয় তবে আমি বাধ্য হবো তোমাকে এই রুম থেকে বের করে দিতে। সো প্লিজ বি কোয়াইট!”

সায়ান কঠোর শব্দ শুনে চন্দ্রিকা দমে গেলো, এতোটা কর্কশ ভাষায় সায়ান ওর সাথে কোনদিন কথা বলেনি অথচ আজ!চন্দ্রিকা না চাইতেও হচকিয়ে গেলো। সায়ানের মুখ দেখে বুঝাই যাচ্ছে যে ও যা বলছে তা করে ছাড়বে কিন্তু সায়ান ওর উপর ক্ষেপে আছে কেনো? যেখানে ওর রেগে যাওয়ার কথা!

সকালের ঘটনা!আজ সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে ওর, তাই ফ্রেশ হয়ে রুমে আসতেই আওয়াজ শুনতে পায়। কিসের আওয়াজ তা প্রথমে বুঝে উঠতে না পারলেও পরে বুঝতে পারে যে এই বিল্ডিং এ আগুন লেগেছে! কিছু সময়ের জন্য ও পুরা ব্ল্যাংক হয়ে যায় আর কি করবে বুঝে উঠতে পারেনা। দ্রুত দরজার কাছে গিয়ে তা খোলার চেষ্টা করলো কিন্তু অদ্ভুত ভাবে তা খুললো না। কয়েকবার চেষ্টা করতে বুঝতে পারলো কেউ ইচ্ছে করে ওর ফ্লাটের দরজা বাইরে থেকে লক করে দিয়েছে। ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসে পড়লো, এখান থেকে হতে না পারলে ওর মৃত্যু নিশ্চিত! হাতের ফোন খোঁজা শুরু করলো আর একসময় পেয়েও গেলো, কাঁপা হাতে সায়ানকে ফোন দেয়া শুরু করলো কিন্তু যথারীতি নাম্বারটা ব্যস্ত দেখালো অর্থাৎ ব্লক লিস্টে আছে। এই কয়মাসে সায়ানকে ও ফোন করেনি কারণ দরকার পড়েনি, নিজের মতো ভালোই ছিলো! আজ এই সময়ে সায়ানকে পাশে পাবে না এটা ও ভাবতেই পারেনি, ওই মেয়েটার জন্য সায়ান ওকে ছেড়ে দিলো! ও আর উপায়ন্তর না দেখে শাহেদের ফোনে ফোন দিলো, যদিও শাহেদ ওর ফোন ধরেনা যখন নিজের দরকার হয় শুধু তখনি ফোন দেয়।তবুও একটা শেষ চেষ্টা করতে ক্ষতি কি?

ও কাঁপা হাতে শাহেদকে ফোন দেয়ার পর তা রিং হতে থাকলো, ঘরে ততক্ষণে ধোয়া ঢুকে পড়েছে। চন্দ্রিকা রিতীমত খুকখুক করে কাশছে।কিছু সময় রিং হওয়ার পর আশ্চর্যজনক ভাবে সে ফোন পিকাপ করলো! চন্দ্রিকা কাঁপা গলায় বললো

“শা্ শাহেদ আ্ আমি…”

“যেখানে আছো সেখানেই থাকো, রুম থেকে বের হয়োনা। ভরসা রাখো আমার উপর তোমার কিচ্ছু হবে না, আমি আসছি!”

চন্দ্রিকা না চাইতেও শাহেদের কথা দরজা আর নক করলো না, ধোয়ায় ওর দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। কোনরকম সেই অবস্থাতেই পড়ে রইলো সেখানে, ধীরেধীরে শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়াতে নুইয়ে পড়ে একদম! শরীরের সমস্ত শক্তি যেনো অসাড় হয়ে গেছে, ও নেতিয়ে পড়লো ফ্লোরে। আচমকা বুঝতে পারলো কেউ একজন ওকে টেনে তুলে নিজের কোলে নিয়ে নিলো আর কিছু একটা দিয়ে তার সাথে বেঁধে নিলো। ধোয়া থেকে দূরে সরতেই চন্দ্রিকা চোখ মেলে তাকালো আর দেখলো ও অলমোস্ট হাওয়ায় ভাসছে! নিচে নামিয়ে ওকে রাস্তার পাশে বসানো হলো, সবমিলিয়ে বুঝতে পারলো যে ওকে ফায়ার সার্ভিসের রেসকিউ গাড়ি দিয়ে জানালা দিয়ে বের করে আনা হয়েছে আর শাহেদ ওকে বের করে এনেছে।

ও কিছুক্ষণ সেখানে চুপচাপ বসে থাকলো তারপর শাহেদের দেয়া পানি খেলো, তারপর গাড়িতে এসে এলিয়ে দিলো। শাহেদ সম্পুর্ণটা সময় চুপ ছিলো, একটা টু শব্দও করেনি। ও ভাবতেই পারেনি এই কঠোর মনের ছেলেটি ওকে বাঁচাতে আসবে তাও নিজের জীবন রিস্কে ফেলে! সব থেকে বড়ো কথা শাহেদ এতো দ্রুত ওর কাছে পৌঁছালো কি করে?ওকি আগে থেকেই এই আগুনের খবর জানতো? আর এটাও জানতো যে চন্দ্রিকা ফ্লাটে ফেসে আছে?চন্দ্রিকা আর কিছু ভাবতে পারছেনা, প্রচণ্ড মাথায় যন্ত্রণা করছে! ও সেই অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়লো। যখন চোখ খুলে তখন নিজেকে গাড়িতে পায়, গায়ে একটা কোর্ট দেয়া। ও আশেপাশে তাকিয়ে বুঝতে পারলো যে ওরা একটা ব্রীজের উপর আছে। পাশে শাহেদকে না দেখে ও খুঁজতে লাগলো আর অদুরেই দেখতে পেলো। ব্রীজের রেলিং ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে আর চারপাশে ধোঁয়া উড়ছে হয়তো সিগারেট খাচ্ছে!

চন্দ্রিকা গাড়ি থেকে বেরিয়ে শাহেদের পাশে দাঁড়ালো কিন্তু ধোঁয়ায় আবারও খুকখুক কেশে উঠলো যা দেখে শাহেদ বিরক্ত হয়ে সিগারেট ফেলে দিলো নিচের পানিতে কিন্তু ভুলেও চন্দ্রিকার দিকে তাকায়নি!চন্দ্রিকা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললো তারপর আলতো করে বললো

“আজকের জন্য থ্যাংকস! আমি ভাবতেও পারছিনা আপনি না থাকলে আজ আমার কি হতো!”

“থ্যাংকস দেয়ার মতো কিছু করিনি আমি, যা করেছি করার দরকার ছিলো তাই করেছি। এনিওয়ে কোথায় যাবে এখন?”

চন্দ্রিকা জবাব দিলো না, কোথায় যাবে এখন? সায়ান ব্যতীত ওর যাওয়ার কোন জায়গা নেই। ফ্লাটের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে এমনকি পুরো বিল্ডিং হয়তো! তাই সায়ানের সাথে যোগাযোগ না হওয়া পর্যন্ত ওর যাওয়ার কোন স্থান নেই। চন্দ্রিকার স্তব্ধতা দেখে শাহেদ হাসলো তারপর বললো

“ওই ফ্লাটে আর ফিরে যাওয়া সম্ভব নয় তোমার আর দেখে বুঝা যাচ্ছে আপাদত যাওয়ার জায়গা নেই। তাই কিছুসময়ের জন্য আমার ফ্লাটে আসতে পারো তারপর নাহয় তোমার সায়ান তোমার ব্যাবস্থা করে দিবে!”

চন্দ্রিকা প্রত্যকটা শব্দে তাচ্ছিল্য খুজে পেলেও রেগে গেলো না,যা বলেছে তাতে যে একদণ্ডও মিথ্যে নেই। ও আকাশের দিকে তাকালো, ওর জীবনে সায়ান ছাড়া আর কিছুই নেই যেনো চন্দ্রিকার জন্মই সায়ানের জন্য!সায়ানের জন্যই ওর বেঁচে থাকা আর সায়ানের সাথে থাকতে না পারলে মরে যাওয়া! যেমন আজকে…মৃত্যুর সাথে প্রায় সাক্ষাৎ হয়ে গিয়েছিলো ওর, শাহেদ না আসলে হয়তো…কিন্তু ওকে বেঁচে থাকতে হলে সায়ানের কাছে ফিরে যেতে হবে, তার সাথে থাকতে হবে এবং একসাথে বাঁচতে হবে!সায়ান ছাড়া ওর জীবনের আর কোন লক্ষ্য নেই, ওর শুরু সায়ানকে দিয়ে না হলেও শেষটায় সায়ানকে থাকা চাই!

চন্দ্রিকা মাথা নিচু করে বললো

“আমি আপাদত সায়ানের খোঁজ জানিনা, আপনি কি জানেন সে কোথায় থাকতে পারে?আমার তার সাথে কথা বলা প্রয়োজন”

শাহেদ এইবার চন্দ্রিকার দিকে তাকালো, চোখদুটো অসম্ভব লাল হয়ে আছে যেনো ভয়ংকর রেগে আছে তবে ঠোঁটের কোনায় অদ্ভুত হাসি। যে কেউ কনফিউজড হয়ে যাবে যে ওকি রেগে আছে নাকি নেই!শাহেদ চন্দ্রিকার দিকে কিছুটা ঝুঁকে বললো

“অবশ্যই,আমি জানি সে কোথায় আছে কারণ জানতাম কেউ একজন ঘুম থেকে উঠেই সবার আগে সায়ান জামিল খানের নাম নিবে। তোমার সায়ান বর্তমানে হসপিটালে আছে তার প্রিয়তমা স্ত্রীর পাশে।গেস হোয়াট! তুমি ফায়ার প্লেসে আটকে পড়েছো জেনেও সে আসেনি তোমার কাছে কারণ প্রয়োজন বোধ করেনি, তার স্ত্রী আর তোমার মধ্যে সে কিন্তু তাকে চুজ করেছে!অবশ্য তাতে তোমার কি যায় আসে?সায়ানকে তো তোমার চাই!”

সায়ানের এমন আচরণে চন্দ্রিকার না চাইতেও খারাপ লাগলো,ওর প্রতি সায়ানের সিমপ্যাথিও কাজ করেনি?যেখানে ওর সবকিছুর খেয়াল রাখতো আজ মাঝপথেই ছেড়ে দিলো! অন্য কাউকে পেয়ে?এর জবাব তো ওর পাওয়া দরকার তাইনা?ও শাহেদকে বললো

“আমাকে একটু হসপিটালে দিয়ে আসুন, দরকার আছে খুব”

শাহেদ সেই আগের মতো তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো তারপর গাড়িতে উঠে বসলো। হসপিটালে আসা পর্যন্ত তাদের মাঝে কোন কথা হয়নি, চন্দ্রিকা গাড়ি থেকে নেমে ছোট্ট করে থ্যাংকস বলে চলে এলো। চেয়েছিলো একবার পিছনে তাকাবে কিন্তু সাহস হয়ে উঠেনি, কেবিনে এসেই সায়ানকে রুশির হাত ধরে বসে থাকলে দেখলো যাতে ওর মাথা গরম হয়ে গেলো, সায়ানকে ভালোবাসে কিনা ওর জানা নেই তবে শুরু থেকেই এতোটুকু জানতো সায়ান শুধু ওর আর কারো নয়। সময়ের সাথে সেই পসেসিভনেস বেড়েছে তাই আজ সায়ানের পাশে রুশিকে একদম সহ্য করতে পারছে না ও।

বর্তমানে ও সায়ানের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে আর সায়ানের চোখের কঠোরতা বুঝার চেষ্টা করছে। ও সায়ানের দিকে কিছুটা এগিয়ে বললো

“আমাকে বেঁচে থাকতে খুশি হওনি মনে হচ্ছে!ভেবেছিলে মরে গিয়েছি তাইনা? আর তুমি ফ্রি হয়ে গেছো?আর কিছু না হোক তোমার যে জীবন বাঁচিয়েছি তার জন্য কি আমার জীবন বাঁচানোর কথা মাথায় আসেনি?”

“নাহ আসেনি, কারণ তুমি যা করেছো তা ক্ষমার যোগ্য নয়। প্রাণের বদলে প্রাণ কথাটা নিশ্চই জানা আছে?তুমি ঠিক ভাবতেও পারছো না এই মুহুর্তে আমার তোমাকে ঠিক কিভাবে মারতে ইচ্ছে করছে কিন্তু আমি মারবো না কারণ একসময় তুমি আমার প্রাণ বাঁচিয়েছো।আর তাছাড়া আমি তোমাকে বাঁচানোর জন্য লোক পাঠয়েছি তবে তার পুর্বেই তোমার প্রেমিক তোমাকে বাঁচিয়ে নিয়েছে। সো ইউ আর সেফ”

“বাহ লোক পাঠয়েই তোমার দায়িত্ব শেষ?নিজে এসেছো বাঁচাতে আমাকে?যে তোমার প্রাণ বাঁচিয়েছে তার প্রাণের কোন মুল্য নেই তোমার? তুমি কি সেই সায়ান যার কাছে ওয়াদার মুল্য অনেক বেশি ছিলো অথচ নিজেই ওয়াদা রক্ষা করলে। কি বিচার তোমার!”

“যার কাছে আমার সন্তান আর অনাগত বাচ্চার জীবনের মুল্য নেই তার জীবনের মুল্য আমার কাছে থাকবে তুমি ভাবলে কি করে?আমার সন্তানের যে ক্ষতি করতে চেয়েছে তাকে যে আমি খুন করে ফেলিনি সেটাই তো অনেক মিস.চন্দ্রিকা!
বরং আমার জীবন বাচানোর জন্য তার উপর আমি বড্ড দয়া করেছি তাইনা?”

চন্দ্রিকা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো,ও ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে আছে। কাঁপা কাঁপা গলায় বললো

“মা্ মানে?”
#গুমোট_অনুভুতি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্ব_৩৮

চন্দ্রিকা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সায়ানের দিকে আর সায়ান এখনো রুশির দিকে তাকিয়ে!ঠোঁট জোড়া শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে,ঠোঁট জুড়ে বিরাজমান গোলাপি আভা অনেকটা হাল্কা হয়ে আছে। সায়ান নিজের বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে আলতো করে ছুয়ে দিলো তারপর শান্ত স্বরে বললো

“সেটা তো তোমার খুব ভালো করে জানার কথা চন্দ্রিকা! আমি কি বিষয়ে কথা বলছি তা তোমার থেকে ভালো আর কে জানে?”

“আমি জ্ জানি মানে কি?সায়ান তুমি যা শুনেছো তা ভুল শুনেছো, কেউ হয়তো আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে! সব মিথ্যে বিশ্বাস করো সব!”

“তুমি এখনো জানোই না আমি কি নিয়ে কথা বলছি কিন্তু তুমি বলছো সব মিথ্যে! আচ্ছা কোনটা মিথ্যে?সেদিন স্ক্যান্ডাল এর বিষয়টি নাকি সেখানে রিপোর্টার পাঠানোর বিষয়টি?নাকি আমার বাড়িতে আমার বউকে দিনের পর দিন ড্রাগস দেয়ার ঘটনাটি মিথ্যে? আর সবচেয়ে বড় কথা আমার স্ত্রী আর অনাগত সন্তানের ক্ষতি করার চেষ্টা সব মিথ্যে?”

“তুমি স্ সব জানতে তাইনা?”

“হাহ কি মনে হয় তোমার?তুমি আমার নাকের নিচে দিয়ে সব করে যাবে আর আমি জানবো না?ভুলে গেছো আমি কে?সায়ান জামিল খান! তুমি সব করে যাবে আর আমি কিছুই জানবো না সেটা তোমার বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে তুমি এমন কাজ করলে কি করে?একসময় আমার মনে হতো যে চন্দ্রিকা আর যাইহোক খারাপ কিছু করবে না বাট আই ওয়াজ রং! তোমার থেকে জঘন্য কাজ আর কারো পক্ষে করা সম্ভব নয়। মাঝেমাঝে মনে হয় আমি তোমাকে চিনিনা, খুব অচেনা কেউ তুমি!তুমি আমার ছোট্ট পরী হতেই পারো না, তুমি অন্যকেউ!অপরিচিত কেউ!কারণ সেই মেয়েটি অবুঝ থাকা সত্ত্বেও অন্যকারো প্রাণ বাঁচানোর মতো পদক্ষেপ নিয়েছিলো কিন্তু তুমি?তুমিতো বুঝদার হয়েও মানুষের ক্ষতি ছাড়া অন্যকিছু করলে না, তুমি আর সে একই মানুষ কি করে হতে পারো। মাঝেমাঝে মনে হয় আমি হয়তো সঠিক জনকে খুঁজেই পায়নি আর যদিও পেয়েছি তবে সে আর আমার ছোট্ট পরী ছিলো না, ততদিনে সে অন্যকেউ হয়ে গিয়েছো!”

“কি বলতে চাইছো তুমি সায়ান আমি মিথ্যে বলছি?আমার সে নই যাকে তুমি খুঁজছিলে? এখন ওই মেয়েটিকে পেয়ে আমার অস্তিত্বকেও অস্বীকার করবে তুমি?ও আমার নামে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলেছে আর তুমি বিশ্বাস করেছো। সায়ান তুমি আমাকে বিশ্বাস করছো না কেনো? তোমার মনে হয় আমি এমন কিছু করতে পারি?”

“বিশ্বাস! এই শব্দটার সাথে আদোও তোমার কোন সম্পর্ক আছে চন্দ্রিকা?তুমি এই শব্দটার মানে বুঝ?তুমি জানো কখন একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে বিশ্বাস করে?জানোনা তাই এই শব্দটা তোমার মুখে মানায়না আর রুশির কথা বলছো তো!ও বানিয়ে মিথ্যে বলবে আমায়?হাসালে আমাকে যেখানে ও নিজেই নিজের হুশে ছিলো না এন্ড থ্যাংকস টু ইউ। তুমি কোনটাকে মিথ্যে বলবে?তুমি রুশির বিষয়ে স্ক্যান্ডাল ছড়াও নি?তাকে হেনস্তা করার জন্য ভার্সিটিতে রিপর্টার পাঠাওনি? আর সবথেকে বড় কথা হচ্ছে তুমি আমার আর রুশির ঘনিষ্ঠ ছবি দেয়ালে লাগিয়ে দিয়েছো যাতে সবাই ভাবে রুশি অন্যের সংসার ভাঙছে!”

সায়ান হাত মুঠ করে ফেললো তারপর উঠে দাঁড়িয়ে চন্দ্রিকাকে নিয়ে বারান্দায় চলে এলো, এই মুহুর্তে রুশির রেস্টের প্রয়োজন আর সায়ান যতোটা হাইপার হয়ে গেছে! ওইখানে থাকলে চেঁচামিচি হবে যা রুশির জন্য খারাপ। ও চন্দ্রিকার হাত ছেড়ে ওর দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাঁকালো কিন্তু ঠোঁটের কোনায় বাঁকা হাসি ঝুলছে যাতে ওকে ভয়ংকর দেখাচ্ছে। ও দাঁতে দাঁত চেপে বললো

“একজন নারী হয়ে আরেকজন নারীর সম্মানে আঘাত করতে তোমার এইটুকু বাধেনি? হাউ কুড ইউ?একটা মেয়ের জন্য মিস্ট্রেস শব্দটা শুনা কতোটা কষ্টের তা নারী হিসেবে তোমার থেকে ভালো আর কে জানবে?তোমাকে সাহস দিয়েছে কে এমনটা করার?”

“তুমি কি করে জানলে এসব?কে বলেছে তোমাকে?”

“যাদের তুমি টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছিলে তারা বলেছে তাও খুবই অল্প সময়ের মাঝে। কি বলোতো পাওয়ার আর প্রপার্টি দুটোয় আমার বেশি তাই সায়ান জামিল খান পারেনা এমন কিছু নেই তা তুমিও জানো!”

“তারমানে তুমি সবই জানতে! তাইতো এতো হট নিউজ হওয়া সত্ত্বেও সেটা দুদিনের মাঝেই গায়েব হয়ে গেলো! নো ওন্ডার ইউ ডিড দেট”

“তো আর কি আশা করছিলে?আমার স্ত্রীর অপমান আমি মুখ বুঝে সহ্য করবো? ভাবলে কি করে তুমি?আনফর্চুনেটলি আমার এক্সিডেন্ট হয়েছে বলে ওই স্ক্যান্ডাল দুদিন পর্যন্ত ছিলো নাহয় ওইটা বের হওয়ায় আগেই শেষ হয়ে যেতো!আমার স্ত্রীর দিকে আঙুল তুলার সাহস পেতো না কেউ”

“স্ত্রী?বাহ সে তোমার স্ত্রী হয়ে গেলো এখন সায়ান?তবে আমি কি তোমার?ওই দুদিনের মেয়ের জন্য আমি এখন পর হয়ে গেলাম?ওই কেরেক্টারলেস মেয়ের জন্য এতো দরদ তোমার?যে কিনা নিজের পুরোনো প্রেমিকের সাথে এখনো সম্পর্ক রাখে!তুমি জানো পুরোনো প্রেমিক কে?তোমার বোনের হবু জামাই ইনান! এক ছাদের নিচে থেকেও কিভাবে মানুষ স্বাভাবিক আচরণ করতে পারে?নিশ্চিত সম্পর্ক এখনো আছে আর তাইতো এমন ভান করতে পারছে যেনো চিনেই না।হাহ হোয়াট আ ট্যালেন্ট! ঘরের টাও ঠিক রাখছে আর বাইরের টাও সামলা…”

আচমকা শব্দে চন্দ্রিকা চমকে উঠে নিচে তাকালো আর দেখলো সায়ানের ফোন ভেঙে চৌচির হয়ে আছে আর সে চোখ বন্ধ করে হাত মুঠো করে দাঁড়িয়ে আছে। ও বুঝতে পারছে যে ওই ফোনের স্থানে ও থাকতো হয়তো! চন্দ্রিকা চুপ হয়ে গেলো আর সায়ান চোখমুখ শক্ত করে বললো

“আমার মা আমাকে নারীদের অসম্মান করতে শিখায় নি নাহয় যে মুখ দিয়ে তুমি আমার স্ত্রীকে ইন্সাল্ট করেছো তা ছিড়ে ফেলতে আমার এক সেকেন্ড সময় লাগতো না, ট্রাস্ট মি একসেকেন্ডও না! তবে আর একটা শব্দ বললে আমি ভুলে যাবো তুমি একজন নারী! আর কেরেক্টার নিয়ে বলছো তো?কেরেক্টারের কি জানো তুমি?তোমার নিজের কেরেক্টার দেখেছো? আচ্ছা সেটা বাদ দাও এটা বলতো দুইমাস পুর্বে তুমি হসপিটালে কেনো গিয়েছিলে?”

“নর্মাল চেকয়াপ ক্ করানোর জন্য আর ক্ কি জন্য?”

“হাহ নর্মাল চেকয়াপ? নাকি অন্যকিছু! আমিই বলছি কেনো গিয়েছিলে,আচ্ছা তোমাকে একটা গল্প শুনাই! একটা মেয়ে একটা ছেলেকে বারবার ভালোবাসি ভালোবাসি বলতো আর ছেলেকে মেয়েটিকে ভালোবাসতে না পেরে খুব গিল্টি ফিল করতো! হঠাৎ একদিন সেই মেয়েটি প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলো আর চারমাস পর্যন্ত মেয়েটা বুঝতেই পারেনি! যখন বুঝতে পারলো তখন মেয়েটা ওই বাচ্চাটিকে মেরে ফেললো কিন্তু অপারেশন সাকসেসফুল না হওয়াতে মেয়েটি সারাজীবনের জন্য মা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেললো! ঘটনা চেনা চেনা মনে হচ্ছে না?জানতে চাইবে না মেয়েটা কে?সেই মেয়েটি হচ্ছো তুমি! এম আই রাইট?”

“তুমি ক্ কি বলছো আ্ আমি বুঝতে পারছিনা”

“বুঝতে ঠিকই পারছো কিন্তু মানতে পারছো না, ভাবছো আমি কি করে জানলাম এইসব! মনে আছে আমি একদিন বাসায় গিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম হসপিটালে কেনো গিয়েছিলে?তুমি বলেছো নর্মাল চেকয়াপ কিন্তু আমি ওইদিনই সব জানতাম তবে কিছু বলিনি কারণ অপমান করতে চাইনি তোমায়। তবে আজ বলেছি কারণ আমার স্ত্রীর দিকে আঙুল তুলেছো! ইনান আর রুশির মাঝে যা সম্পর্ক ছিলো তা শুধু বন্ধুত্বের! আর যদি অন্যকিছু থেকেও থাকতো তবে সেটা অতীত আর অতীত নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই। আমি ওর বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ তাই ও যতোদিন আমার সাথে থাকতে চাইবে ততদিন শি ইজ মাইন!”

সায়ান এই টুকু বলে থামলো তারপর আবারও বলা শুরু করলো

“আর রইলো তোমার কথা! তুমি খুব বলো আমায় ভালোবাসো? তাহলে যখন অন্যের সাথে সম্পর্কে জড়াচ্ছিলে তখন সেই ভালোবাসার কথা মনে পড়েনি?মনে পড়েনি আমি চিট করছি?তারউপর কি করলে প্রেগন্যান্সির খবর জানার সাথে সাথে তুমি সেটা এবর্শন করাতে গেলে, ডাক্তার বললো এটা রিস্কি তবুও তুমি করালে নিজের স্বার্থের জন্য! আর অপারেশন সাকসেসফুল হলো না, তুমিও আর মা হতে পারবে না। তাই তুমি একটা গেম খেললে! তুমি একটা মেয়েকে আমার রুমে পাঠালে যাতে সে আমার বেবি ধারণ করে এজ আ সারোগেট মাদার! যাতে আমি সারাজীবন গিল্টি ফিল করি আর তুমি আমার জীবনে সারাজীবনের জন্য জায়গা করে নাও। আর শুরুতে তাই হয়েছিলো!আমি গিল্টি ফিল করেছি আর তাই রুশিকে ভালোবাসা সত্ত্বেও তাকে নিজের থেকে দূরে রেখেছি তোমার কথা ভেবে যে তোমাকে হয়তো ভালোবাসি না কিন্তু তাই বলে ঠকাতে পারবো না কিন্তু ওইযে ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যার থেকে দূরে থাকা যায় আর আমিও থাকতে পারিনি। আই ফল ইন লাভ উইথ রুশি আর আমি তাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছি!”

সায়ান এবার চন্দ্রিকার দিকে ঝুকে বললো

“ভাগ্য ভালো আমি তোমার মতো মেয়েকে ভালোবাসিনি নাহয় তোমার এই রুপ দেখে বড্ড কষ্ট পেতাম। ভাগ্য ভালো যে আমার রুমে ওইদিন রুশি ছিলো যে তোমার মতো স্বার্থপর নয়। থ্যাংকস টু ইউ, আমি আমার লাইফে সত্যিকারের মানুষটাকে পেয়েছি!আম গ্ল্যড দেট শি ইজ মাই ওয়াইফ!”

“সে তোমার ওয়াইফ হলে আমি কি?তুমি তোমার ওয়াদার কথা ভুলে গেছো সায়ান?তুমি আমাকে এভাবে ধোঁকা দিতে পারো না”

“প্রথমত শুরু থেকেই তুমি আমার দায়িত্ব ছিলে আর কিছুই না আর ওয়াদার কথা বলছো তো? একটা ওয়াদার উপর ভিত্তি করে সারাজীবন থাকা যায়না। আমি আমার বাবা নই যে নিজের ঘরে স্ত্রী রেখে অন্যনারীর সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত হবো!তাই এই ওয়াদার কোন মুল্যেই নেই যেখানে তুমি সেই মানুষই না যাকে আমি চিনতাম। আর ধোঁকা তো তুমি আমাকে দিয়েছো! আমি তো ঠিকই ছিলাম কিন্তু রুশিকে তুমি আমার জীবনে এনেছো আর আমি তার জন্য শুকরিয়া আদায় করি। আর তোমার প্রেগন্যান্সি?এটা তুমিও জানো আর আমিও জানি যে তোমাকে আমি কিস পর্যন্ত কোনদিন করিনি, ছোয়া তো অনেক দুরের কথা!তুমি জোর করে দুই একবার জড়িয়ে ধরলেও আমি ছাড়িয়ে নিয়েছি নিজেকে। তাই বেবিটা আমার তো নয়ই তাহলে বেবিটা কার?তোমার ওই প্রেমিকের নাকি অন্যকারো?”

চন্দ্রিকার মুখটা চুপসে গেলো, জবাব দেয়ার মতো কিছু নেই ওর! সায়ান যা বলেছে সব সত্যি! কিন্তু বেবির ব্যপারটা?ও নিজেও চাইনি বেবিটাকে মারতে কিন্তু এ ছাড়া কোন উপায় ছিলো না ওর কাছে! ও বাধ্য ছিলো সম্পুর্ণটা সময়!চন্দ্রিকার চোখদুটো টলমলে করে উঠলো তা দেখে সায়ান ওর দিকে ঝুঁকে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো

“এবার বলুন মিস চন্দ্রিকা! আসলে কেরেক্টারলেস কে?আমি তোমাকে এসব বলে অপমান করতে চাইনি কিন্তু বাধ্য করেছো আমাকে। আমি তারপরোও সবকিছু ক্ষমা করে দিতাম কিন্তু রুশি তখন আমার লাইফে ছিলো,তাই ওকে ছেড়ে আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব ছিলো না তাই অনেকদিন দোটানায় ছিলাম!পরে যখন বুঝতে পারলাম রুশিকে ছাড়া আমার চলবে না তখন চেয়েছিলাম তোমার দায়িত্ব নিতে কিন্তু তুমি কি করলে আমার স্ত্রীকে ড্রাগস দেয়া শুরু করলে যাতে সবাই ওকে ভুল বুঝে আর আজকে? তুমি তাদের মেরে ফেলতে চেয়েছো?যদি আমি এটা আগে জানতাম তবে তোমাকে বাঁচাতে লোক পাঠানো তো দুরের কথা আই উইশড তুমি মরে যেতে!”

“আমি ম্ মরে গেলে তুমি খুশি হতে?”

“অবশ্যই খুশি হতাম!তুমি স্ত্রী আর অনাগত সন্তানকে মারতে চেয়েছো তোমাকে যে আমি এখনো মেরে ফেলিনি সেটাই অনেক!তুমি যে আমার সামনে স্বশরীরে দাঁড়িয়ে আছো তা নিয়ে শুকরিয়া আদায় করা উচিৎ নয়?বাট নাউ উই আর ইভেন। তুমি আমার প্রাণ বাঁচিয়েছিলে আর তাই আমি এখন তোমার প্রাণ নিবোনা, কিন্তু আজকের পর থেকে তোমার আর আমার কোন সম্পর্ক নেই, দায়িত্বেরও না। আজকের পর যদি তোমাকে আমার সামনে দেখি তবে তোমাকে খুন করতে আমার হাত কাঁপবে না। ট্রাস্ট মি একটুও না! নাউ গেট আউট।”

পরের কথাটা চিল্লিয়ে বললো সায়ান যাতে চন্দ্রিকা কেঁপে উঠলো আর চোখের কোনে থাকা জল গড়িয়ে পড়লো। ও সায়ানকে ভালো বাসেনা এটা ও জানে কিন্তু এতোগুলো বছরে সায়ানের প্রতি মায়া জমে গেছে তাইতো সায়ানকে মরতে দেয়নি, সকল কিছু ভেস্তে দিয়েছিলো। সায়ান সবসময় ওর ভরসার জায়গা ছিলো তাইতো আজ ওই ফায়ারে আটকে পড়ার পর সবার আগে সায়ানকে কল দিয়েছিলো কিন্তু সে উঠায়নি। সায়ানের এই ব্যাবহারে অনেক কষ্ট লাগছে ওর, বুকের মাঝে তীব্র ব্যথা হচ্ছে। মায়া জিনিসটা হয়তো এমনি বড্ড কষ্ট দেয়, এইযে ও ভাবতেই পারছেনা সায়ানের সাথে আজকের পর থেকে আর দেখা হবে না! কিন্তু ও বুঝতে পারলো এখানে থেকে লাভ নেই, আগে হোক আর পরে হোক একসময় না একসময় সায়ানের জীবন থেকে ওর যেতেই হতো কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি হচ্ছে বলে হয়তো মানতে পারছে না। চন্দ্রিকা সায়ানের দিকে তাকিয়ে শান্ত স্বরে বললো

“আমি জানিনা তুমি বিশ্বাস করবে কিনা তবে সকল ঘটনার সাথে আমি জড়িত থাকলেও আজকের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না!আমি কখনোই রুশি বা তার সন্তানের ক্ষতি করতে চাইনি। সেই ড্রাগস শুধু ওকে খিটখিটে করে দিবে এ ছাড়া আর কিছুই না বাকি ওদের ক্ষতি করার ইচ্ছে আমার কোনদিনই ছিলো শুধু চেয়েছি তারা তোমার জীবন থেকে চলে যাক। আজকের ঘটনায় আমার কোন হাত নেই!”

“যে নিজের সন্তানকে মারতে পারে সে সব করতে পারে, তুমি নিজের সন্তানকেই রেহাই দিলে না অন্যের সন্তানের প্রতি তোমার দরদ কাজ করবে কি করে। এর আগে আমি আমার কথা ফিরিয়ে নেই আর তোমাকে এখানেই শেষ করে দেই প্লিজ গো ফ্রম হেয়ার!দ্বিতীয়বার দেখলে আমি সত্যিই তোমাকে বাঁচতে দিবো না এন্ড ট্রাস্ট মি এই উইল ডু ইট”

চন্দ্রিকা আর দাঁড়ালো না, পিছনে ফিরে চলে গেলো। খুব ইচ্ছে ছিলো শেষবারের মতো সায়ানকে আরো একবার দেখবে কিন্তু সাহস জুগিয়ে উঠতে পারে নি। সায়ান সেই বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে,ও নিজের রাগ থামানোর চেষ্টা করছে!

পাশেই দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রুশি, চোখের কার্নিশ বেয়ে পানি পড়ছে। ও অনেক আগেই উঠে গিয়েছিলো যখন চন্দ্রিকা দরজা বাড়ি দিয়েছিলো কিন্তু ও কিছু বলেনি বরং চোখ বন্ধ করে ছিলো। সায়ান বেরিয়ে আসাতে ও দরজার পাশে দাঁড়ায় আর সব শুনতে পেয়েছে কিন্তু তাতে ওর বিশেষ মাথা ব্যথা নেই। ও শুধু এইটুকু ভাবছে যে সায়ান! ওর আর ইনান সম্পর্কে সব জানতো কিন্তু ওকে কোনদিন প্রশ্ন করেনি বরং ওকে কাঁদতে দেখে সেদিন শান্তনা দিয়েছিলো আর এমন ভান করেছিলো যে কিছু শুনেই নেই।সায়ান ওর ব্যক্তিত্বকে সম্মান করেছিলো আর আজও করছে! রুশি সায়ানকে ভালোবাসে অনেক আগে থেকেই কিন্তু কোনদিন সাহস করেনি বুঝানোর কারণ ও ভাবতো সায়ান চন্দ্রিকাকে ভালোবাসে! আজ যখন জানতে পারলো যে সায়ান ওকে ভালোবাসে তখন ও ঠিক কতোটা খুশি ও বুঝাতে পারবে না, ও কারো জীবনে তৃতীয় ব্যাক্তি নয় বরং সায়ানের জীবনের ফার্স্ট প্রায়োরিটি!

রুশি আস্তে করে চোখ মুছে নিজের স্থানে গিয়ে শুয়ে পড়লো। সায়ানকে বুঝতেই দিবেনা ও সব শুনেছে, এতোদিন ভালোবেসেও প্রকাশ করেনি এর শাস্তিতো পেতেই হবে। যতোদিন না সায়ান নিজের অনুভুতি প্রকাশ করবে ততদিন ও সায়ানকে নিজের অনুভুতির জানান দিবে না। রুশি বিড়বিড় করে বলতে লাগলো

“দেখি জনাব কতোদিন না বলে থাকতে পারে!আমাকে তো চিনেনা?মনের কথা যদি মুখ পর্যন্ত না এনেছি তবে আমার নামও রুশানি আনাম নয়!”

#চলবে
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here