চিলেকোঠায় অনুরক্তির ছোঁয়া পর্ব -০১

.১
বেসিনের সামনে দাড়িয়ে রক্ত মাখা হাত পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে করতে ফারহা তার ছোট ভাই রাফিদকে চেঁচিয়ে বলতে লাগলো,” ছোটু আমি ভার্সিটিতে যাচ্ছি তুই ঠিক টাইমে কলেজে চলে যাস৷” রাফিদ মুখে খাবার গুজে দিয়ে খেতে খেতে ফারহাকে বলতে লাগলো,” ওকে দি আমি টাইমলি চলে যাবো আর আমার আজ ফিরতে লেট হবে৷ আজ আরও দুটো নতুন টিউশনি পেয়েছি৷”

ফারহা তার ছোট ভাইয়ের কথা শুনে দীর্ঘশাস ফেলে হাত পরিষ্কার করে রেডি হয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্য বেড়িয়ে গেল৷ যুদ্ধের আমলের পুরনো ভাঙাচোড়া বাড়িটার চিলেকোঠার রুমটা খুব কম রেন্টে ভাড়া নেই ফারহা রাফিদ৷ এই শহরে বলতে গেলে এই দুই ভাই-বোনের দুজন দুজনের ছাড়া আর কেউ নেই৷ তবে তাদের বাড়িওয়ালা দাদু আর দিদা তাদের নিজের নাতি নাতনীদের মত করে ভালোবাসে খেয়াল রাখে৷

ফারহা হেটে ভার্সিটিতে চলে যায় কারণ ফারহার বাড়ি থেকে তার ভার্সিটির দূরত্ব পনেরো মিনিটের তাই তাকে আর আলাদা করে রিকশা নিতে হয়নি৷

ফারহা ভার্সিটি পৌছাতে চারজন ছেলে মেয়ে ছুটে আসে ফারহার কাছে, আর এসেই একজন বলতে লাগলো,” এই এসেছেন আমাদের মহারানী ভিক্টোরিয়া৷ তা ম্যাম আপনার আজ এতো লেট করে আশার কারণ টা জানতে পারি?” মুখ বাকিয়ে বললো তনু যা দেখে ফারহা মুচকি হেসে বলে ,” দুপুরের রান্না টা সেরে আসতে একটু লেট হলো তনু৷”

ফারহার কথা শেষ হতে নেহাল ফারহার হাত ধরে তনু আর নিখিলের থেকে একটু দুরে নিয়ে গিয়ে বললো,” ফারহা সত্যি করে বল তোর আজ এত লেট হলো কেন? ” ফারহা তার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে রেগে নিখিলকে বলে,” বেশি বাড়াবাড়ি করছিস নিখিল৷ আমি আগেই বলেছি দুপুরের রান্না করতে একটু লেট হয়ে গেছে৷”

নিখিল আবারও ফারহাকে কিছু বলতে নিয়েও বললো না৷ ফারহা রেগে লিখিল কে রেখে তনু নেহাল এর কাছে এসে দাড়িয়ে বললো,” ক্লাসে চল নাহার ম্যাম এর ক্লাস আছে আর এক মিনিট যদি লেট করি তাহলে ক্লাসে ঢুকতে দিবে না৷” ফারহার কথা শুনে সবাই তড়িঘড়ি করে ক্লাসের দিকে ছুট লাগালো৷

(২)
বিভৎস আগুনে পোড়া টুকরো করা লাশ দেখে উপস্থিত সব পুলিশ অফিসারের বমি আসার উপক্রম৷ এতটা নৃশংস ভাবে এই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে যে লাশের টুকরো গুলো গুনে বোঝার উপায় নেই যে ঠিক কত গুলো টুকরো লাশটির করা হয়েছে৷ মেঘ মুখে মাক্স পড়ে টুকরো করা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাশের কাছে গিয়ে খুনিকে ধরার ক্লু খুজতে থাকে৷ শহরে এই নিয়ে সতেরোটি খুন হয়েছে একি পেটেন্ট একই ভাবে তাই এই থেকে পুলিশ অফিসাররা ধারণা করে নিয়েছে যে বা যারা এই খুন গুলো করেছে তারা একই ব্যক্তি৷ তবে তাদের টার্গেট হচ্ছে তারা যাদের কালো জগতের সাথে সংযোগ আছে৷ তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রমান না থাকায় মেঘ তাদের কে এরেস্ট করতে পারেনি৷ তবে কে বেছে বেছে তাদের টার্গেট করছে? এর উওর মেঘের জানা নেই৷

মেঘ খুব ভালো করে খুজেও খুনির কোন ক্লু না পেয়ে রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে এলো মেঘের তা দেখে হাবিলদার মুশফিক বলে ওঠে,” স্যার আবারও আজকে খুন হলো কে করছে এই খুন গুলো? আর খুনিটা কে? এটা যদি সল্ভ করতে না পারেন তাহলে হয়তো আপনার চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়বে৷” মেঘ অনেক কষ্টে তার রাগটা কন্ট্রোল করে হাবিলদার মুশফিককে বলে,”

“লাশটার পোস্ট মোর্টেম এর জন্য নিয়ে যান আর রিপোর্টারদের সরে যেতে বলুন৷ ক্রাইম সিনের আসে পাশে যেন কেউ না আসে আমি এখুনি আসছি৷” এই বলে মেঘ সেখান থেকে পুলিশের গাড়ি নিয়ে চৌধুরী ভিলায় চলে আসে৷ বাড়িতে ঢুকতে ড্রইং রুমে বসে থাকা মেঘের বাবা শাফায়াত চৌধুরী বলে ওঠেন৷ ” মেঘ এবার নিজের হার মেনে নেও আর ইস্তফা দিয়ে আমাদের ফ্যামিলি বিজনেসে জয়েন করো৷ দেখছোই তো একের পর এক মার্ডার হচ্ছে অথচ তুমি একজন পুলিশ অফিসার হয়ে খুনিকে ধরতে পারছো না৷ কারণ এই প্রফেশন তোমার জন্য না৷” মেঘের বাবার কথা শেষ হতে মেঘ বলে ওঠে ,” ডোন্ট ওয়ারি আব্বু এবার তোমার ছেলে খুনিকে ঠিক ধরে ফেলবে কারণ খুনি তার নিজের অজান্তে লাশের পাশে তাকে ধরার ক্লু ফেলে গেছে৷” মেঘের কথা শুনে চমকে ওঠে শাফায়াত চৌধুরী৷

মেঘ আর কিছু না বলে স্টাডি রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়৷ মেঘকে এভাবে দরজা বন্ধ করতে দেখে মেঘের মা মিসেস মায়রা তার স্বামীর উদ্দেশ্য বলে ওঠে,” শাফু তুমি আমার ছেলের উপর ম্যান্টালি প্রেসার একদমি ক্রিয়েট করবে না৷ তুমি জানো তো মেঘ কতটা জেদি ছেলে৷ ও যেটা ঠিক মনে করবে ও সেটাই করবে৷”

” এই ভয়টাই তো আমি পাচ্ছি মায়রা কারণ এই কেসটা উপর থেকে যতটা না সহজ মনে হচ্ছে এই কেসটা তার থেকেও হাজার গুন জটিল৷ এতে যে আমাদের একমাত্র ছেলের প্রাণনাশের শংকা আছে৷”

” চিন্তা করো না শাফু আল্লাহ ঠিক আমাদের সন্তানকে রক্ষা করবে৷ ওহ যেটা বলতে এসেছিলাম আগামিকাল বেলা মামুনি কানাডা থেকে এখানে আসছে৷ আর আমাদের সাথে এখানে থাকবে৷”

” তাহলে তো কাল এয়ার্রপোর্টে মামুনিকে আনতে গাড়ি পাঠাতে হয়৷ সে নিয়ে তুমি চিন্তা করো না আর শোন শাহিন ভাই ফোন করে জানিয়েছেন অতি শিগ্রই তারাও বাংলাদেশে আসবে৷ ”

” তাহলে ওদের রুম গুলো সার্ভেন্টদের বলে ক্লিন করিয়ে নিয়ো৷ কারণ ওরা এত বছর পর দেশে ফিরছে আমি চাই না আমার ছোট ভাই তার বউ আর মেয়ে এখানে কোন প্রব্লেম ফেস করুক আর হ্যাঁ নিজের ছেলেকেও বুঝাও যাতে এই দুই টাকার চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিজনেসে জয়েন করে৷ ” মেঘের বাবার কথা শুনে মিসেস মায়রা বলে ওঠেন ,” ছেলে শুধু আমার একার না আর না আমি বাপের বাড়ি থেকে ছেলেকে নিয়ে এসেছি তাই বুঝানোর হলে তুমি নিজে গিয়ে বুঝাও৷ ” কথা গুলো বলে মিসেস মায়রা উঠে কিচেনের দিকে চলে যায় মেঘের জন্য কফি বানাতে৷

অন্যদিকে মেঘ দেয়ালে পিন দিয়ে লাগানো আগের ষোলটি লাশের ছবি গুলো খুব ভালো করে দেখতে লাগলো৷ আগের খুন গুলোর মত নিক্ষুত ভাবে এই খুনটাও করা হয়েছে৷ মেঘ একটা ছবির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভেবে হুট করে আবার বেরিয়ে পরে৷

(৩)

ক্লাস করতে করতে তনু নেহাল ক্লাসের মধ্যে কথায় কথায় ঝগড়া শুরু করে দেয়৷ আর তা দেখে নাহার ম্যাম পুরো গ্রুপটাকে ক্লাস থেকে বের করে দেন৷ ক্লাস থেকে বের হয়ে ফারহা রাগী চোখে তনু আর নেহালের দিকে তাকিয়ে থেকে রেগে ক্যান্টিনের দিকে চলে যায়৷ ফারহাকে রাগতে দেখে নেহাল তনুর দিকে তাকিয়ে দাঁত কটমট করে তাকিয়ে বলে,” শাকচুন্নি তোর জন্য ফারহা দোস্ত রেগে চলে গেল৷ এত কি খেয়ে তুই ঝগড়া করিস হাহ! তোর মাথায় কি বুদ্ধিসুদ্ধি বলতে কিছুই নেই টোটালি মাথার ভেতর টা ফাঁকা! ” তনু আর সহ্য করতে পারলো না নেহালের কথা গুলো ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলো আর তা দেখে নেহাল হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থেকে এদিক ওদিক তাকিয়ে তনুর কান্না থামানোর চেষ্টা করে৷

” এই তনুর বাচ্চা এভাবে পোলাপাইনের মত কান্না করস ক্যান৷ দুনিয়ার সব পানি কি তোর ওই ট্যারা চোক্ষু দুইটায় জমা হয়ছে?”

নেহালে কথা শুনে তনু কান্না থামিয়ে দাঁত কটমট করে নেহালের দিকে তাকিয়ে বললো,” সালা বজ্জাত , অকম্মার ঢেকি কি কইলি তুই? আর এত শিক্ষিত ছেলে হয়েও তোর মুখের ভাষার এই ছিড়ি ছিঃ আর কি যেন বললি আমার মাথার ভেতর টা ফাঁকা? আমার চোখ ট্যারা? আমি শাকচুন্নি? দারা আজ তোর একদিন কি আমার একদিন …” অবস্থা বেগতিক দেখে নেহাল আর ওখানে দাড়িয়ে থাকার রিক্স না নিয়ে দৌড়ে ক্যান্টিনের দিকে দৌড় লাগায় আর পেছন পেছন তনু নেহালকে ধরার জন্য দৌড় লাগায়৷
মাঠে থাকা কয় একজন স্টুডেন্ট দাড়িয়ে সবটা দেখে আবার নিজেদের কাজ করতে লাগলো৷ কারণ এই স্টার গ্রুপের নিত্যদিনের কান্ড কারখানা দেখতে দেখতে এরা অভ্যস্ত ৷ ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্ট হয়েও টিনএইজারদের মত বিহেবিহার দেখে কেউ কেউ খুব বিরক্ত এই গ্রুপের উপর তবুও মুখের উপর কিছু বলার সাহস তাদের নেই৷ তনু, নেহাল, নিখিল, এরা তিনজন শহরের বড় বিজনেসম্যান এর ছেলে মেয়ে আর আয়মান হলো কলেজের এমডির ছেলে৷ প্রত্যেকে খুব ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট তবে ফারহা সবার থেকে এগিয়ে পড়াশুনা নিয়ে সব সময় সিরিয়াস৷ তবে এদের বন্ধুত্ব অনার্স প্রথম বর্ষ থেকে… এরা যেন একে অন্যের জান কারও সাহস হয় না এই গ্রুপটা নিয়ে কিছু বলার৷

ক্যান্টিনে বসে গান আর হইচই করছে ফারহার সব বন্ধুরা৷ তনু মুখ ফুলিয়ে বসে আছে নেহালকে কিছু বলতে পারেনি বলে৷ অবশ্য সেটা ফারহার জন্য সম্ভব হয়েছে৷ ক্যান্টিনে আসা মাত্র ফারহার চোখ রাঙানিতে দুজনে শান্ত হয়ে বসে পড়লো৷ নিখিল ফার্স্ট ইয়ারের একটা ছেলের থেকে গিটার এনে ফারহা কে বলে,” দোস্ত অনেক দিন তোর গান শুনি না আজ একটা গান শোনা প্লিজ৷ নিখিলের কথার তালে নেহাল আয়মান দুজনে জোর করে ফারহা মাথা নেরে সম্মতি জানিয়ে চোখ বন্ধ করে গাইতে লাগলো………

তোমার নামের রোদ্দুরে,আমি ডুবেছি সমুদ্দুরে
জানিনা যাবো কতদূরে এখনো,
আমার পোড়া কপালে,আর আমার সন্ধ্যে সকালে
তুমি কেন এলে জানিনা এখনো,
ফন্দি আটে মন পালাবার,বন্দি আছি কাছে এসে তোমার
যদি সত্যি জানতে চাও তোমাকে চাই, তোমাকে চাই
যদি মিথ্যে মানতে চাও,তোমাকেই চাই

হলো শুরু সাতদিনের,এই খেলাধুলো রাতদিনের
জানি বারণ করার সাধ্যি নেই আর আমার,
তোমার নামের মন্দিরে,আর তোমার নামের মসজিদে
আমি কথা দিয়ে এসেছি বারবার
বিন্দু থেকে সিন্ধু হয়ে যাও,তুমি ইচ্ছেমতো আমাকে সাজাও..
যদি সত্যি জানতে চাও তোমাকে চাই,তোমাকে চাই
যদি মিথ্যে মানতে চাও,তোমাকেই চাই

মনের গভীরে,ঘুমের শরীরে তোমাকে নিয়ে ডুবে যাবো
আমার কাছে কারণেরা আছে,নিজেকে আমি খুঁজেই নিবো
যদি সত্যি জানতে চাই তোমাকে চাই,তোমাকে চাই
যদি মিথ্যে মানতে চাও তোমাকেই চাই।

ফারহার গলায় গান শুনে উপস্থিত সবাই করতালি বাজিয়ে প্রশংসা করে তবে এতে ফারহার মুখের ভাবভঙ্গি তেমন ভাবে প্রকাশ করলো না বিষয়টা নেহাল খেয়াল করে।ফারহার গলায় গান বরাবরই সবারই বেশ ভালো লাগে।এদিকে নেহাল ফারহার থেকে চোখ সরাতেই পারছে না।ফারহার গাওয়া গান শেষ কিন্তু এখনো একমনে ফারহার দিকে তাকিয়ে আছে।তনু পাশে তাকিয়ে নেহালকে এখনো স্থির থাকতে দেখে মাথায় গাট্টা মারে।নেহাল ধ্যান থেকে বের হয়ে আশেপাশে তাকিয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে হাততালি দেয়।নেহাল মনে মনে ভাবছে ফারহা এটা তাকেই উদ্দেশ্য করে গাইলো তাই সে মনে মনে একটু খুশি।ফারহাকে নিয়ে মনে মনে তার একটা ভালোলাগা কাজ করে কিন্তু সেটা ফারহাকে কখনোই বুঝতে দেয় না।এদিকে আরো একজন ব্যক্তি ফারহার গান দূরে থেকে শুনে মুগ্ধ বিমোহিত।সে আর কেউ নয় মেঘ।মেঘ এখানে এসেছিলো কেসের তদন্ত করতে কিন্তু ফারহার সমধুর কন্ঠের গান শুনে তার পা ওখানেই স্থির হয়ে যায়।অবাক নয়নে ফারহার দিকে তাকায় আর ফারহার গাওয়া গান শুনতে থাকে।সবাই যখন ক্যান্টিনে বসে ছিলো হালকা নীলাভ চোখের অধিকারিণী কৃষ্ণ কালো কোমর ছড়ানো চুল৷ আর ঠোটের কোণে এক চিলতে মিষ্টি হাসি৷ ফারহাকে দেখে একদমি বাংলাদেশি মেয়ে মনে হয় না৷ মেঘ ফারহাকে দেখতে দেখতে এতটাই বিমহিত হয়ে পরে যে ফারহাকে দেখতে দেখতে ক্যান্টিনে প্রবেশ করে মেঘ৷ফারহা বাদে ক্যান্টিনে উপস্থিত সব মেয়ে মেঘের লুক দেখে বড়সড় একটা ক্রাশ খায়।মেঘ একটা সাদা শার্ট কালো প্যান্ট ইন করে রেখেছে।হাতে রিচ ওয়াচ পায়ে লোফার আর সানগ্লাসটা শার্টে ঝুলিয়ে রেখেছে আর তাতেই সব মেয়ে ফিদা।মেঘকে কেউই চিনে না উপস্থিত সবাই।সবাই ভাবছে হয়তো ভার্সিটির নতুন স্টুডেন্ট।মেঘকে দেখে ফারহার কোনো হেলদোল নেই।মেঘ সোজা ফারহার কাছে গিয়ে ফারহাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো,

“মিস আপনার নাম?”ফারহার কিছু বলার আগে নেহাল দাড়িয়ে মেঘকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো,”সেটা জেনে আপনি কি করবেন?নতুন কলেজে এসেছেন তাই জুনিয়র জুনিয়রের মতো থাকবেন সিনিয়রদের সাথে কোনো কথা নয়।”নেহালের কথা শেষ হতেই মেঘ মুচকি হেসে ওয়ালেট থেকে নিজের কার্ড টা সবার সামনে তুলে ধরে।সবাই কার্ডটা দেখে অবাক হয়ে যায়।কারন মেঘ হচ্ছে পুলিশ অফিসার।সবার ভুল ধারণা নিমেষেই ভেঙে গেলো।মেঘ কার্ডটা পকেটে রেখে আবারও ফারহার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো “তো মিস বলুন আপনার নাম কি”?

“ফারহা!আমার নাম ফারহা রহমান।”

“বাহ খুব সুন্দর নাম তো আপনার।তা আপনি তো বেশ ভালোই গাইতে পারেন।এছাড়া অন্যকিছু কি ভালো করতে পারেন?”বাঁকা হেসে কথাটা বললো মেঘ।ফারহা মেঘের কথা বুঝতে না পেরে ভ্রু কুচকে ফেলে।তনু মেঘকে জিজ্ঞেস করলো,

“স্যার হঠাৎ আপনি আমাদের ভার্সিটিতে?কিছু কি হয়েছে?”মেঘ কিছু বলতে যাবে তার আগেই হঠাৎ তার ফোন কল আসে।মেঘ কিছু না বলেই ওখান থেকে বের হয়ে যায়।কেউ কিছুই বুঝতে পারলো না মেঘের কি হলো।সবাই আর বেশি না ভেবে নিজেদের মতো ইনজয় করতে থাকে।কেউ না বুঝলেও ফারহা মেঘের চলে যাওয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷ মেঘ ফারহার চোখের আড়াল হতে ফারহা তার বন্ধুদের বলে ,” তনু আমি ওয়াশরুম থেকে আসছি৷”

” ওকে তাড়াতাড়ি আসবি নাহলে কিন্তু তোর ভাগের চিকেন বার্গার আমি খেয়ে ফেলবো৷” তনুর কথা শুনে নেহাল মুখ ফসকে বলে ফেলে,” রাক্ষসী৷”

__________

মেঘ তার গাড়িতে উঠে বসতে একটা পাগলের সাজে একজন লোক এসে মেঘের গাড়ির জানালায় নক করে৷ মেঘ তার ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে জানালা খুলতে লোকটি একটা পেনড্রাইব গাড়ির ভেতরে ফেলে মেঘের হাত থেকে টাকা নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়৷ লোকটাকে চলে যেতে দেখে এক রহস্যময় হাসি দিয়ে গাড়ি স্ট্রাট দেয়৷ মেঘ চলে যেতেই আড়াল থেকে কেউ বেড়িয়ে এসে কাউকে কল করে সবটা বলে তখন ফোনের ওপাশ থেকে কেউ একজন সেই ব্যাক্তিকে ফোনের ওপাশ থেকে বলে ওঠে, “যাস্ট কিল হিম৷”
.
.
.
#চলবে…..
#চিলেকোঠায়_অনুরক্তির_ছোঁয়া
#ফারহানা_আক্তার_ছবি ও রাফি
||সূচনা পর্ব ||

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here