চুপি চুপি ইচ্ছেরা পর্ব -০১

চুপি চুপি ইচ্ছেরা
লেখনী – সাইমা ইসলাম প্রীতি
১.

পাঁচটা বেজে দু’মিনিট। ভোরের ছন্দময় পরিবেশ হালকা কুঁয়াশা আর অন্ধকারের আবছা ছায়ায় মাখামাখি! মেঘের আড়ালে ধীরে ধীরে লাল আভা ছুঁইছুঁই করছে আকাশ। টিপটিপ পায়ে দৌড়ে ছাদে চলে এলো তিতির। ছাদের সিক্ত শীতল মেঝেতে পা রাখার সাথে সাথে মনে হলো সারা শরীরে যেন একটা ঝাকুনি খেয়ে গেলো। শিহরণে কেঁপে ওঠলো তিতির পাখি। এক ঝাপটা মিষ্টি বাতাস ছুঁয়ে গেল তিতিরের চোখ, মুখ, ঠোঁট,সব। অজান্তেই ঠোঁট জোড়া কেঁপে ওঠলো তার। শর্ট শুভ্র ফ্রগ পরিহিত তিতির। চুলগুলো অবিন্যস্ত পড়ে আছে ঘাড়-কাধ বেয়ে। অলস পায়ে হেটে ছাদের রেলিং এর ধার ঘেঁষে দাড়িয়েছে মেয়েটা। এ মুহুর্তে যে কেউ তাকে দেখলে ঘুমন্তপরীর সঙ্গে তুলনা করতে এক সেকেন্ড সময়ও নেবে না।

প্রচন্ড ঠান্ডার মাঝেই হাত-পা মুড়িয়ে দাড়িয়ে আছে তিতির। রোজ সকালেই সে করে এমনটা, ভালোলাগে খুব। একদম অন্যরকম একটা অনুভূতি হয়। খুব ফ্রেশ ফ্রেশ লাগে নিজেকে। তবে আজ কেনো যেনো ভালোলাগার মাত্রাটা বরাবরের চেয়ে বেশি। মামার কাছে চট্টগ্রাম ক্যান্টেরমেন্টে এসেছে দু’দিন হলো। এটাই একমাত্র জায়গা যেখানে সে বুক ভড়ে একটু শ্বাস নিতে পারে। প্যারা দেয়ার কেউ নেই। তিতিরের মামা মি. আব্রাহীম ইবনাত আর মামনি শায়লা প্রচন্ড ভালোবাসে তিতিরকে। মামাতো ভাই নিঝুমেরও চোখেরমনি সে।
তিতির সবে মাত্র এইচ.এস.সি. পরীক্ষা দিলো। পুরো নাম জেহরাতুল তিতির। তিতির বেশ চঞ্চল স্বভাবের মেয়ে। দেহের রং শ্যামলা হলেও অত্যন্ত মায়াবী চেহারার অধিকারিনী।

নিজের রঙহীন বাড়ি থেকে মামনির সাজানো-গোছানো ছোট্ট সংসারটাই বেশ প্রিয় তিতিরের। এর সর্বোচ্চ অবদানটা সে তার মায়ের নতুন স্বামীকেই দিতে ইচ্ছুক। বাবার মৃত্যুর পর মা তার পুরনো প্রেমিক রাইবুর হোসাইলকে বিয়ে করে নেয়। ‘মা’ শব্দটার হয়ত সবার কাছে গভীর অর্থ আছে। ভালোবাসা মিশ্রিত অর্থ। কিন্তু তিতিরের কাছে তা হাস্যকর। বাবাকে হারানোর পর জীবন যখন প্রায় থমকে গেছে তিতিরের তখন তাকে আগলে রেখেছেন এই মামা মামনি। মা বাবার অভাব বুঝতে দেয়নি একমুহূর্তে জন্য ও।

সকালের নামাজ আদায় করে কফি হাতে ছাদে চলে এলেন মিসেস শায়লা। তার মনিকে যে এখানে পাওয়া যাবে তা খুব ভালো করে জানেন তিনি। ছাদের কর্ণারে রেলিং ঘেঁষে তিতিরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মুচকি হাসেন শায়লা। তারপর তিতিরের কাছে গিয়ে এগিয়ে দিলেন কফি মগ। তিতির মামনিকে দেখে ঠোঁটে একটা মুচকি হাসি ফুটিয়ে তুলে বলে,

– ‘ উহুম, এখন খাবো না কফি। ঘুরবো। ‘

– ‘ এই সাঝঁ সকালে ঘুরতে যাবি মানে? এমনিতেই এই ঠান্ডাতে খালি পায়ে, সোয়েটার ছাড়া এসছিস ছাদে। ‘

– ‘ না না না। আমি কিচ্ছু জানিনা। এখনি যাবো। এখানে তো অনেক মাঠ। শিশির ভেজা সকালে খালি পায়ে হাটবো সবুজ ঘাসে। শিহরিত হয়ে ওঠবে প্রত্যেকটা শিরা-উপশিরা। মনের মাঝে…। ‘

তিতিরকে আটকে দিয়ে মিসেস শায়লা বললেন,
– ‘ বাপরে বাপ। তোদের অত সব কথার মানে-টানে আমি বুঝিনারে বাপ। তুই যা নিঝুমের সাথে যা বাহিরে। ও তো জগিং যাবে এখন। ‘

তিতির মনে মনে বেশ খুশি হয়ে গেলো। এটাই তো চাইছিলো সে। কাল সকালে জানালা দিয়ে দেখেছিল নিঝুমকে বের হতে। অনেক করে মন চাইছিলো যেতে ওর সাথে। কিন্তু ঘুম এমনভাবে চেপে ধরেছিলো যে খাট থেকে ওঠতেই ইচ্ছা করছিলো না। আজ যখন সে সুযোগ হয়ে গেলো তখন তার খুশি আর দেখে কে! তবুও একটু ভাব নিয়ে মামানিকে বললো,

– ‘ কেনো কেনো কেনো? কে নিঝুম যে আমি ওর সাথে যাবো!’

এই কথা শুনে মিসেস শায়লা কান টেনে দিলেন তিতিরের। মৃদুস্বরে বলেন,

– ‘বেশ পাকনি হয়ে গেছিস না!যা এক্ষণি। ‘

– ‘ আহ মামানি লাগছে তো ছাড়ো ছাড়ো যাচ্ছি তো! ‘

এক দৌড়ে নিঝুমের রুমে চলে এলো তিতির। ইশঃ কি জোরেই না ধরেছে কানটা ব্যাথা করছে এখনো। নিঝুমের রুমে এদিক ওদিক চোখ বুলাচ্ছে তিতির। নিঝুম তো নেই!

তাহলে কি চলে গেলো নাকি? ধ্যাত এমন কেন ছেলেটা। কই ভাবলো জগিং এর বাহানায় ওর সাথে একা একা সময় কাটাবে তা না ছেলেটা তার আগেই উধাও। তিতির মন খারাপ করে রুম থেকে বের হতে যায় তখন হঠাৎ কেউ ওকে এক ঝাপটায় নিয়ে ফেলে দেয়ালের মাঝে। খুব কাছ ঘেঁষে দাড়ায় ওর। ঘটনার আকষ্মিকতায় ভয় পেয়ে যায় তিতির। চোখ দু’টো খিচে বন্ধ করে নেয়।
নিঝুমের পরশ পায় কপালে। শরীর কেঁপে ওঠে ওর।
কিভাবে করলো এটা নিঝুম? ওর যে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম! লজ্জায় দুহাত প্রশস্ত করে মুখ ডেকে নিলো তিতির। নিঝুম মুচকি হেসে মুখের থেকে হাত সরিয়ে দেয় ওর। চোখ বুজে আছে পিচ্চি মেয়েটা। সামন্য একটুতেই কেমন লজ্জা পেয়ে যায়। নিঝুমের একদম ভালোলাগে না এতো লজ্জা পাওয়া। ও কি তিতিরের পর নাকি? অত লজ্জা পাওয়ার কি আছে? একটু বিরক্তির সুরে জিজ্ঞেস করলো নিঝুম,

‘ এই মেয়ে আমার ঘরে এভাবে লুকিয়ে কি খুঁজছিলি? ‘

‘ কই ছিলা তুমি। আমি যাবো তোমার সাথে আজ। ‘

নিঝুম মনে মনে বেশ খুশিই হলো তিতিরের কথা শুনে। কিন্তু তা বুঝতে না দিয়ে রাগী গলায় বলল,
‘ যাবি মানে কই যাবি? আমার সাথে তোরে কেন নিবো? ‘

‘ কারণ আমি তোমার ভবিষৎ বউ তাই। ‘

খুব সহজ কন্ঠে কথাটা বলে ফেলল তিতির। ফিক করে হেসে ফের বলল,
‘ তোমার মতো বদমাইশ ছেলে অন্য কোনো মেয়ের সাথে লাইন মারে নাকি দেখতে হবে না? ‘

তিতিরের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেলো নিঝুম। বলে কি এই পিচ্চি? ওর মতো ছেলে নাকি অন্য মেয়ের সাথে মারবে লাইন! বিরক্তির রেখা কপালে টেনে ব্যস্ত হয়ে নিঝুম বলল,

‘ এই তুই দেখছিস আমাকে আর অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাতে কোনো দিন? খালি এক তোকে দেখলেই মাথা ঠিক থাকে না আমার। ‘

এর আগ পর্যন্ত তিতির যাও ঠিক ছিল এ কথা শোনার পর তো পুরোই মাটিতে তলিয়ে যেতে মনটায় চাইছে ওর। নিঝুমকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে নিঝুমের ঘর থেকে বের হয়ে গেলো মেয়েটা। নিঝুম তো পুরোই তাজ্জব বনে গেলো। এমন কেন মেয়েটা। ধরার আগেই পালিয়ে যায়? না জানি ওর বিয়ে পর কপালে কি লিখা আছে।

নিঝুম তিতিরের মামাতো ভাই। পুরো নাম নিঝুম হোসেন। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে নতুন যোগদান করেছে। মাত্র পাঁচ দিন আগেই ট্রেনিং শেষ হয়েছে।এখনো রেঙ্ক দেয়া হয়নি। সতের দিন বাদে প্রোগ্রামে দেশের প্রধান মন্ত্রী এসে নিজ হাতে অস্ত্র দিবেন তাদের হাতে সাথে রেঙ্ক। পাইলট অফিসার হিসাবে যাত্রা শুরু হবে নিঝুমের।

একটু পরেই হাটতে বের হওয়ার সময় তিতিরকে আর খুঁজে পেলো না নিঝুম। একা একাই নাকি চলে গেছে হাঁটতে। মেয়েটাকে বোঝা দয়, এই এক কথা তো পরক্ষণেই অন্য চাহিদা। তাই অতো পাত্তা না দিয়ে জগিং করে এসে তৈরি হয়ে চলে গেলো অফিসে। গিয়েও আরেক বিপত্তি। তিতির ফোন দিচ্ছে বারবার। এক প্রকার বিরক্ত হয়ে কল রিসিভ করে নিঝুম। সঙ্গে সঙ্গে অপর পাশ থেকে মেয়েলি কন্ঠ ভেসে আসে,

‘ এই কোথায় তুমি? ‘

‘ এই একটু বিজি আছি পিচ্ছিটা। তুমি বাড়ি যাও তিতির। মা চিন্তা করছে। ‘

‘ না না না। যাবো না কোথাও। তুমি আসো না প্লিজ। এসে নিয়ে যাবে বাসায়। ‘

নিঝুম একটু রুক্ষ স্বরে বললো,
‘ এমন পাগলামি কেনো করো বলতো। তুমি জানো আমার কাজ কতোটা ইম্পরটেন্ট। এট ইজ ডিফেন্স তিতির। একটু উল্টা-পাল্টা কিছু হলেই চাকরিটা থাকবেনা আমার। ‘

‘ হুম বুঝি তো,সব বুঝি। আমার জন্যই যত সময় নেই তোমার। ‘

কথাটা বলেই হুট করে ফোন কেটে দিলো তিতির।
অত কিসের কাজ বুঝেনা ও। সারাক্ষন খালি এটা নয়তো ওটা। আরে তিতির নামের কেউও যে ওকে চায় প্রতিটা মুহুর্তে, প্রতি নিশ্বাসে-প্রশ্বাসে তার নাম লিখে বসে আছে সে খবর রাখে কি সে? অভিমান করেই বা লাভ কি?যার জন্য করবে সে কি আদো জানবে না বুঝবে ওর অভিমান?

কর্ণফুলী নদীর পারে মেরিন একাডেমির এরিয়াতে চুপচাপ দাড়িয়ে আছে তিতির। নিখুঁত জোয়ার এসছে তখন। পানি ঝড়ের বেগে আছড়ে পড়ছে পাড়ে।বঙ্গপোসাগরের সাথে সংযুক্ত এই কর্ণফুলী নদীটাতে দিনে চব্বিশ ঘন্টায় চার বার জোয়ার ভাটার পানি ডুকে। জোয়ার বা ভাটার সময় বিশাল একালা জুরে ডুকে পানি।বাংলাদেশে একমাত্র জোয়ার ভাটার নদী কর্ণফুলীর অনেকটা অংশই ডিফেন্স এরিয়ার ভেতরে। সাধারণের প্রবেশ নিষেধ।

একদৃষ্টিতে নদীর জলে চেয়ে আছে তিতির। ওর কাছে মনে হয় একটা ছন্দ মেনে চলে এই স্রোত। কেমন শপাৎ করে এসে বারবার বাড়ি খাচ্ছে। মুচকি হাসছে তিতির। পানির খেলা দেখতে এতোটাই ব্যস্ত সে যে খেয়ালই করেনি দূর থেকে দুটো চোখ খেয়াল করছে তিতিরে নয়নাভিরাম হাসি। হাসলে ঠোঁটের ঠিক পাশেই গর্তের সৃষ্টি হয়।

টোল গালে না পড়ে ঠোঁটের পাশে পড়লে খুব সুন্দর লাগে ষশ্মিথের। তিতিরেরটাও ঠিক তেমনি।
নৌবাহিনীর একটা বিশাল শিপ ভিড়ল মাত্রই। ষশ্মিথ সেখান থেকেই দেখেছে তিতিরকে। ঘাটে ভিড়ার সাথে সাথে নেমে এলো ছেলেটা। তিতিরকে আরেকটু কাছ থেকে দেখাল বদলে দ্রুত পা ফেলে স্থান ত্যাগ করলো সে।

বাসায় ফিরেই বড় বড় শ্বাস ফেলছে ষশ্মিথ। এর আগে এমনটা লাগেনি অন্য কোনো মেয়ের জন্য। বুকের ভেতরের ধিপধিপটা অনেক বেড়েগেছিলো যখন তিতিরে পাশ দিয়ে আসছিল ষশ্মিথ। একটা অদ্ভুত অনুভূতি! মনের মাঝে চুপি চুপি ইচ্ছেরা অবাধ্যই হয়ে চলছিল মুহূর্তে। পুরো নাম ষশ্মিথ শাহরিয়ার।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছে ষশ্মিথ। বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে আছে মেজর ষশ্মিথ শাহরিয়ার। বাবা মি. ষাহবাব শাহরিয়ার বিমানবাহিনীর চিফ এয়ার মার্শাল। ছোটবেলা থেকেই খুব পানচুয়াল এবং হাই পার্সোনালিটি সম্পন্ন ষশ্মিথ।মেয়েদের থেকে দূরে থাকতেই একটু বেশি পছন্দ। এর পেছনেও লম্বা একটা কাহিনী আছে। লাইফে একটা মেয়েকেই ভালোবেসেছিল ষশ্মিথ। বন্ধুরা বলত মেয়েটা খুব ভাগ্যবান। কিন্তু যেটা হয়েছিল তাতে কারোরই মন সাধলো না। তার সোজাসাপটা কথা, ভালোলাগে তার অন্য কাওকে। ছেড়ে গেছে সে ষশ্মিথকে।
হয়ত আজও মনের কোনো এক কোণে চুপি চুপি রয়ে গেছে সে। তাই অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকানোর পর্যন্ত ইচ্ছা বোধ হয়নি কখনো। কিন্তু আজকে ফিলিংসটাই অন্যরকম ছিল। অস্থির অস্থির লাগছে খুব তার।

মিসেস ইলমি খুব ব্যস্ত হয়ে কিছু একটা ভাবছেন। সমাধান কিন্তু ঠিকই পাচ্ছেন না। মেয়েকে কিভাবে আনবেন ওনি এবাড়িতে? আর ক’দিন বাদেই সতের পেরিয়ে আঠারোতে পা দিবে জেহরাতুল তিতির। তখন কিভাবে কি?
রেজাউন হোসাইন, তিতিরের মায়ের দ্বিতীয় স্বামী একটি ফাইল হাতে ডুকলেন ইলমির ঘরে। ডুকেই বলতে লাগলেন,

‘ এই ফাইলেই দুটো সাইন লাগবে তিতিরের। ‘

ইলমি চমকিত কন্ঠে বলেন,
‘ আমি কোথা থেকে পাবো সাইন? ‘

‘ তিতির তোমার মেয়ে। পছন্দ না করলেও মায়ের অসুস্থতায় নিশ্চয়ই আসবে। শুধু সঠিক অভিনয় দরকার। ‘

‘ কম চেষ্টা তো করলাম না আমরা এতদিন। আসবে না তিতির। ‘

‘ কোনো ভাবেই না এই বিশাল সম্পত্তির ভাগ ও একা পাবে কেনো? এই সবটাই আমার চাই। ‘

সতের দিন পর যথারীতি নিঝুমকে রেঙ্ক দেয়া হলো। প্রথম পোষ্টিং পরলো খাগড়াছোড়ি। তিতিরের প্রথমে এই নিয়ে খুশির অন্তঃ ছিল না। বায়না করছে ও যাবে নিঝুমের সাথে। কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব না। দুদিনের মাথায়ই চলে যায় নিঝুম।
তিতির বেশ কিছুটা একাই হয়ে যায় এতে। এদিকে চিটাগাং এ এডমিশন কোচিং এ ভর্তি করে দেওয়া হয়েছে ওকে। তিতিরের বাবার খুব ইচ্ছা ছিলে মেয়ে ডাক্তারি নিয়ে পড়বে। তিতিরের ও তাই এখন লক্ষ্য বাবার স্বপ্ন পূরণ করা। তিতিরের মাও খুব চেষ্টা করছেন মেয়েকে দিয়ে যাওয়া স্বামীর সকল সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে। বরাবর বিফলে গেছেন নিঝুমের জন্য।

আজ পেরিয়ে কাল তিতিরের জন্মদিন। নিঝুম আসতে পারবে না শুনেই মন খারাপ হয়ে গেলো তিতিরের। এতটা দূরত্ব কি আর নেওয়া যায়? এমনিতেই নিঝুম ওর কাছে নেই। একটা দিন কি দিতে পারতো না ওকে? দিতে পারতো না নিজের ভালোবাসাকে। এতটাই কি মূল্যহীন তিতির নিঝুমের কাছে। বুঝে ওঠার আগেই এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো তিতিরের চোখ থেকে। কাল সন্ধ্যায় মামা, মামি মিলে অনেক বড় পার্টা এরেন্জ করেছে। কিন্তু নিঝুম ছাড়া তো সবই শূণ্য। এসব কিছু না হলেই ভালো হতো।

ক্যান্টরমেন্টের ভেতরেই পার্টি হাউজে এরেন্জমেন্ট করা হয়েছে সবকিছুর। রাত প্রায় পনে-বারোটা হবে। নিঝুম প্রত্যেকবার ওর পাশে থাকতো। ঠিক বারোটায় ওয়িশও করতো ওকে। কিন্তু এবার তেমনটা হলো না। কয়েকবার নিঝুমের ফোনে কলও দিয়ে ফেলেছে তিতির, বন্ধ।
ঠিক বারোটা বাজতে না বাজতেই ফোনটা একবার বেজে ওঠলো টুং করে।

তিতির প্রায় হুমরি খেয়েই পড়েছে ফোনের উপর। নিঝুমপর মেসেজ ভেবে দ্রুত মোবাইল চেক করে হতাশ হয়ে পরে সে। আননোন নম্বর থেকে একটা মেসেজ।নিঝুমের না। এক রাশ কৌতূহল নিয়ে মেসেজটা পড়া শুরু করলো তিতির।

“তোমার জন্য যখন একগুচ্ছ ফানুস উড়াবো তুমি হয়তো জানবে না, শুধু আকাশে চেয়ে দেখবে এর সৌন্দর্য। দুয়াড়ে একটা ভেজা গোলাপ নিয়ে যখন দাড়াবো তখন বদ্ধ তোমার দোপাট, বুঝবেনা আমি এসছি, শুধু এক নিঃশ্বাস ভড়ে সুভাষ নিবে। বৃষ্টি হয়ে যখন ভেজাবো তোমায় বুঝবে না আমি কে, মাখাবে আমায় তোমার শরীরের প্রত্যেকটা অংশে। যখন ভালোবাসা হয়ে তোমার প্রত্যেকটা নিশ্বাসে হারিয়ে চুপি চুপি আটকে যাবো তোমার হৃদমাঝারে, খুঁজবে না আমায়, আবদ্ধ করে রাখবে নিজের উষ্ণ আঁচলে।
প্রেমময়ীর এক প্রেমময় সময় বিধাতার কাছে চেয়ে নিলো আজ আমার চুপি চুপি ইচ্ছেরা শুধু তোমার জন্য।
ভালোবাসায় কাটুক তোমার সময়। আমার আয়ু তোমার আয়ু হোক। শুভ জন্মদিন প্রিয়।
ইতি,
তোমার ষশ্মিথ ”

ষশ্মিথ নামটা শুনে চমকে ওঠে তিতির। খুব চেনা এই নাম তিতিরের। তাহলে মানুষটাও কি এক? দরজায় বেল বাজাতে অন্যমনষ্ক তিতিরের ধ্যান ফিরল।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে একটু ইতস্তত বোধ করলো তিতির। এতরাতে কে আসব? আর বেল ও এমনভাবে বাজাচ্ছে মনে হয় বাহিরে কেয়ামত শুরু হইছে।

মামা-মামির ঘুম ভাঙ্গতে পারে ভেবে তাড়াতাড়ি ওঠে চলে এলো তিতির। ভুলে ওরনা ছাড়াই চলে আসছে দৌড়ে। দড়জা খুলতেই তিতিরের ঠোঁট দুটো আপনা আপনি আলাদা হয়ে গেলো একে অপরের থেকে। অপর পাশের মানুষটা সুরেলি কন্ঠে বলতে শুরু করলো,

‘ হ্যাপি বার্থ ডে, হ্যাপি বার্থ ডে, হ্যাপি বার্থ ডে ডেয়ার তিতির, হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ! ‘

তিতির বিড়বিড় করে বলে উঠলো,
‘ নিঝুম! ‘

চোখ দুটো পানি দিয়ে ভরে গেছে তিতিরের। তার মানে নিঝুম ওকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য করেছে এমনটা! ঝাপটে পড়লো তিতির নিঝুমের বুকে। শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে নিঝুমকে। নিঝুম ও বাহুডোরের সাহায্যে লুকিয়ে নিলো তিতিরকে সকল মলিনতা থেকে। যেনো এই বুকেই ওর পরম স্থান।

বিকেলের শেষ দিকে তিতির সহ সবাই চলে এলো পার্টি হলে। তিতিরের জন্মদিনের এই সকল আয়োজন নিঝুম একা হাতে সামলেছে। পুরো হলরুমটাই তিতিরের পছন্দ মতো সাজানো হয়েছে। তিতির পৌঁছানোর আগেই প্রায় সকল গেস্টরা পৌঁছে গেছে বার্থডে সেলিব্রেটিং প্লেসে।কিন্তু এখনো মেইন চিফ গেস্ট মি.ষাহবাব শাহরিয়ার আর তার ফ্যামিলি আসেননি। নিঝুম আর মি. আব্রাহীম ইবনাত আগে থেকেই ছিলো সেখানে গেস্টদের ওয়েলকাম করার জন্য। অনুষ্ঠান শুরুর কিছু সময় পরই মি. ষাহবাব এসে পৌঁছান। সাথে স্ত্রী মিসেস. শৈলী হোসমাম, বড় ছেলে ষান্দ্র, ছেলের বউ ইরিনা আর আর ছোট ছেলে ষশ্মিথ।

আসার পর থেকেই ষশ্মিথের চোখ যে শুধু এদিক ওদিক ঘুরছে, তা ভালোমতই চোখে পড়েছে ইরিনার।
ষশ্মিথের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো ইরিনা। একটু ফাজলামি সুরে বলল,

‘ কি ভাই কাকে খুঁজেছেন এতো মন দিয়ে? ‘

ষশ্মিথ মুচকি হেসে বলল, ‘ওফ ভাবি তুমি ও না! কাকে আবার খুজবো! ‘

‘ দেখেতো মনে হলো অন্য কিছু। ‘

‘ কিছুই না। ‘

যথা সময়ে শায়লাও পৌঁছে গেলেন তিতিরকে নিয়ে। বেশ সুন্দর লাগছে আজ তিতিরকে। শাড়ি পড়েছে আজ তিতির। সাধারণত জন্মদিনে কেউ শাড়ি পড়েনা। কিন্তু তিতির প্রত্যেকবারই পড়ে। তিতিরের বাবা শাড়ি পছন্দ করতেন খুব তাই। গাঢ় কালো একটা শাড়ি পড়েছে তিতির। সাথে কালো কাঁচের চুড়ি, লাল লিপস্টিক, হালকা সাজ। কোমর পর্যন্ত বিস্তৃত চুলগুলো পড়ে আছে আপন খেয়ালে।

নিঝুমের তো তিতিরকে দেখে যায় যায় অবস্থা। কি ভয়ংকর সুন্দরী মেয়েকে ভালোবেসেছে আজ তার কিছুটা ধারণা হয়ত পেয়েছে সে। নিঝুমের কিছুটা দূরে দাড়ানো ষশ্মিথ হারিয়েছে নিজেকে তিতিরের ওই কাজলহীনা চোখে। কতোটা মায়ায় মুড়িয়ে আছে তিতিরের মুখখানিতে! এই মেয়েটাই সে যে কিনা কয়েক মুহুর্তের ব্যবধানে একদম শূন্য করে দিয়েছে তাকে। খুন করে ফেলেছে তাকে! এমন ভয়াবহ মায়াময় কেউ কি করে হতে পারে? অস্ফুটন স্বরে বলে ওঠলো ষশ্মিথ,
‘ এই মায়ামানবী শুধুই তোর ষশ্মিথ! ‘
তারপর তাচ্ছিল্য হাসলো সে। যে হাসি অর্থহীন, রং বিহীন তবুও চমৎকার।

নিঝুম খানিকের মধ্যেই সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগল তিতিরকে। সবাই এর আগে জানতো তিতির মি. আব্রাহীমের মেয়ে। মি. আব্রাহীম নিজে তিতিরকে ষাহবাব শাহরিয়ারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে নিয়ে গেলে অনেকটা রেগেই মি.ষাহবাব পার্টির ছেড়ে চলে যান। পরিবেশ হঠাৎই থমথমে হয়ে যায়। মি.আব্রাহীম বেশ অবাক হোন বিষয়টাতে, কেননা মি.ষাহবাব যতোই বড় মাপের মানুষ হন না কেন এমনটা করার লোক তিনি না। তবে অনুষ্ঠানের সকল গেস্টকে কিছু বুঝতে না দিয়ে নিজেই পরিবেশটা সামলে নেয় নিঝুম। কিন্তু ষাহবাব আঙ্কেল কেন এমন করলো বিষয়টা তার অজানা। ব্যাপারটা ভাবাচ্ছে তাকে।

তবে তিতিরের জানা ছিল এমনটাই হবে, যখন পার্টিতে ডুকেই একজনের দিকে চোখ পরপ তার। আর যাই হোক যে আঘাতটা ও ষাহবাব শাহরিয়ারের পুরো ফ্যামিলিকে দিয়েছেন তা কখনোই মাফ যোগ্য নয়। তিতির মনে প্রাণে শুধু একই প্রার্থণা করে চলেছে পুরো ব্যপারটা আর যাই হোক নিঝুম যেন জানতে না পারে। অন্ততপক্ষে ওদের বিয়ের আগ পর্যন্ত না! এর মাঝেই নিঝুম ষশ্মিথের সাথে পরিচয় করাতে নিয়ে যায় তিতিরকে। তিতিরের জানা না থাকায় সেও চুপচাপ যায় নিঝুমের সঙ্গে।

‘ স্যার আসসালামু আলাইকুম। গুড ইভিং স্যার। ‘

‘ ওয়ালাইকুম আসসালাম এন্ড গুড ইভিং। ‘

তিতিরের দিকে তাকিয়ে কথাটা বলল ষশ্মিথ। তিতির ষশ্মিতের মুখোমুখি হওয়াতে ভয় পেয়ে চুপচাপ চোখমুখ নিচু করে দাড়িয়ে আছে। এক হাতের আঙ্গুল দিয়ে অন্য আঙ্গুল ঘঁষছে।

‘ স্যার, সি ইজ…’
নিঝুমকে কথা শেষ করতে না দিয়েই ষশ্মিথ বলে ওঠলো,
‘ তিতির, রাইট? ‘

‘ ইয়েস স্যার, কিন্তু আপনি তিতিরকে…’

‘ ওকে কি আমি ভুলতে পারি নাকি? বাকিটা নাহয় তিতিরের কাছেই শুনে নিও। ‘
কথাটা বলে মুচকি হাসলো ষশ্মিথ।

এখন কাছ থেকে ভালো করে পরখ করে নিলো তিতিরকে ষশ্মিথের চোখ দুটো। সব একদম ঠিকঠাক।শাড়িতে সদ্য বিয়ে হওয়া দু’তিন দিনের নতুন বউ লাগছে তিতিরকে। তিতিরের হাতের ছোঁয়া পেয়ে চুড়িগুলোর সৌন্দর্য অনেকগুন বেড়ে গেছে। হঠাৎ নিউরনে সাড়া দিয়ে ওঠলো এই চুড়িগুলো সেদিনও পড়েছিল তিতির, যেদিন ষশ্মিথ ওকে প্রথম দেখে।
তিতিরে চোখের দিকে তাকাতেই ষশ্মিথ হুমড়ি খেয়ে পড়লো প্রেম সাগরের দুয়াড়ে। কি সাংঘাতিক ভয়ংকর চোখদুটো এই মেয়ের! গাঢ় খয়েড়ি রঙ্গের কাজলহীনা চোখগুলো এতো ভয়ংকর! এই মুর্হূতে পৃথিবীর সকল কাজলকে বৃথা সৃষ্টি মনে হচ্ছে ষশ্মিথে। যে কাজল তিতির চোখ অবদি উঠতে পারেনি তা তো বৃথাই।

নিঝুম তিতিরের হাত ধরে মুচকি হেসে বলল,
‘ স্যার এনজয় দ্যা পার্টি। ‘

নিঝুমকে তিতিরের হাত ধরতে দেখে চোখ দুটো ছোটছোট হয়ে গেলো ষশ্মিথের। মনের ভেতর লুকানো সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো যেন মানতে চাইছিলো না তিতিরের হাত অন্য কারো হাতে। ওর তিতির কেনোই বা দাড়াবে পরপুরুষের পাশে?

অস্থিরতায় ভরে গেছে তিতিরের সারা শরীর। বদ্ধ রুমটার খাটের চাদর ভালোভাবে মুষ্ঠিবদ্ধ করে ধরে বসে আছে সে। তাও কাঁপছে সমস্ত শরীর। বারবার চোখ বুলাচ্ছে কাল রাতে আসা মেসেজটাতে। একহাতে ফোন আর আরেক হাতে বুক চেঁপে ধরে বসে কাঁদছে তিতির। বাস্তবতা এতো কঠিন কেনো হয়? প্রত্যেকটা মানুষকেই তার জীবনের সব পাপ-পূণ্যের হিসাব দিতে হবে বিধাতার কাছে। তা দুনিয়াতে এবং পরকালে। যে পাপ ও করেছে, যে অন্যায় ও আজ অবদি করছে ষশ্মিথের সাথে তার পরিনামের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানা নেই তিতিরের। শুধু এতটুকু জানা আছে, বাবা সন্তানের পর এই সম্পর্কটা ওর কাছে সবচেয়ে মূল্যবান কিন্তু বাস্তবতার অমার্ধুয্যপূর্ণ পরিহাসে সে শুধু ষশ্মিথকে না, ঠঁকিয়েছে সবাইকে।

অমর্যাদা করেছে এই সম্পর্কের। এই এতো বড় পাপের বোঝা দু’বছর ধরে বহন করছে। আর কতো? আসলেই কি দোষটা ওর ছিল? কেন ইউজ করেছে ওকে ওর মা।
কষ্টে চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে গেল। বুকের বাম পাশটা অবশ হয়ে আসছে। শ্বাস নিতে প্রবল কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে ভেতর থেকে উগলে যাবে সব। বুকে চাপ দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো তিতির।
না ওর পক্ষে সম্ভব নয় নিঝুমকে এভাবে ঠকানো। এতদিন নিঝুমকে হারানোর ভয়ে বলতে পারেনি কিছু ওকে। কিন্তু এখন তো বলা উচিত। নিঝুমের জানার অধিকার আছে পুরোটা।

দৃঢ় পায়ে হেটে নিঝুমের রুমের সামনে চলে এলো তিতির। কয়েকবার ভিতরে ঢুকতে গিয়েও আটকে নিলো নিজেকে। সাহস হচ্ছে না কোনোভাবে। নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো অসম্ভবভাবে কাঁপছে হাতটা। কতক্ষন দড়জার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে নিজের রুমে চলে এলো সে। অত সাহস নেই ওর যে সবটা বলবে। আস্তে করে বারান্দায় গিয়ে বেতের মোড়ায় বসে তাকিয়ে রইলো আকাশের দিকে। সঙ্গে ভয় জড়ানো অসংখ্য অশ্রুকণা।

কান্নার সাথে চিৎকারের আওয়াজটা কেমন গুলিয়ে গেলো। তিতির চিৎকার করে বলতে লাগলো,
‘ বাবা, ও বাবা, দুনিয়াটা এতো নিষ্ঠুর কেন? তুমি কেন গেলা তোমার মামনিটারে একা ফেলে? ওই মহিলা যে আমার পুরা জীবনটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে। কেমনে একা গেলে আমাকে তুমি? ‘

নিঝুমের ফেসবুক প্রফাইলে স্ক্রল করে দেখছে ষশ্মিথ।হাজারো ছবি তিতিরের সাথে। নিজেকে কন্ট্রোল করতে কষ্ট হচ্ছে। একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে এক দৃষ্টিতে সিলিং ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে রইলো সে। আল্লাহ্ কেনো এমন একটা মেয়ের প্রতি ওকে দুর্বল করে দিলো, যে কিনা অনেক আগে থেকেই অন্য কারোর! উদ্ভট ব্যাপারটা। আসলে ষশ্মিথ কিংবা তিতির কারো হাতে তো কিছুই ছিলনা। সবই ভাগ্য!

ওর আর তিতিরের মধ্যাকার সম্পর্কটাই এমন যে না চাইতেও একে অপরের প্রতি মায়ার সৃষ্টি হবেই। এখন ওর হয়েছে, তবে তিতিরও একদিন ভালোবাসবে ওকে। এই কথাটা কেনো যেনো খুব করে বিশ্বাস হয় তার

সহজ কন্ঠে নিঝুম বলল,
‘ তোর না চাঁদ ভালোলাগে না। আজ চাঁদ উঠেনি। তারা অনেক আকাশে। তাই নিয়ে এলাম ছাদে। কেমন লাগছে? ‘

‘ ভালো। ‘

নিঝুম খেয়াল করলো তিতির কাঁপছে। চেহারাতেও একটা অদ্ভুত কালোমেঘের ছায়া দেখা যাচ্ছে। চিন্তিত হয়ে গেলো নিঝুম।

‘ তিতির? ‘

‘ হুহ। ‘

‘ কি হয়েছে তোর? ‘

‘ কি হবে? ‘

‘ এভাবে কাঁপছিস কেন? শরীর খারাপ করেছে নাকি? ‘

তিতির চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো এবার। দম আটকে কাঁপাকাঁপা গলায় বলে ফেললো,

‘ ষশ্মিথ আমার স্বামী। ‘

চলবে.

(বি.দ্র.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here