ঝরা ফুলের বাসর ২পর্ব ১

#ঝরা_ফুলের_বাসর
#Season_02
#Part_01&2
#Mst_Liza

বাসর ঘরে বসে আছে নূর।তল পেট চেপে ধরে শরীর উল্টানো ব্যাথায় গুটিশুটি মেরে পরে আছে।লাল শাড়িটায় লালচে রক্তের ছাপ।আর সাদা বিছানার চাদরটায় ছোপ ছোপ রক্তের দাগ লেগে আছে।নূর চাইছে শাড়ির আচঁল দিয়ে দাগগুলো ঢেকে রাখার কিন্তু পারছে না।হঠাৎ দুম করে দরজা বন্ধের আওয়াজ।ভয় পেয়ে কেঁপে ওঠে নূর।সামনে তাকিয়ে দেখে হৃদ।

হৃদ আজ বড্ড খুশী।কারণ আজ তার ভালোবাসার মানুষটা খুব কাছে।আজ হৃদ পারবে তাকে আপন করে নিতে।হৃদ খুশি মনে এক’পা, দু’পা করে নূরের দিকে আগাতে থাকে।হৃদ এবার নূরের খুব কাছে চলে এসেছে।হৃদ নূরের পাশে বসে নূরের মুখটা তুলে নিজের দিকে নেয়।দেখে নূরের চোখদুটো খুব শক্ত করে বন্ধ করা।হৃদ মুচকি হেসে নূরের দুই চোখে আলতো ঠোঁটের পরস ছুঁয়ে দেয়।তারপর নূরের গলায় আর বুকে ঠোঁটের পরস দিতে থাকে।অন্যদিকে চিটচিটে, গা ঘিনঘিনে আর ব্যাথা ও অস্বস্তিবোধ হতে থাকে নূরের।হৃদের এখন কোনো হুস নেয়। কোনো দিকে নজরও নেই।নূরের শরীরটা নেশা ভরা দৃস্টিতে কিছুক্ষণ দেখে নেয়।হৃদ এবার নূরের শাড়ির আচঁলটা টেনে বুকের উপর থেকে নামিয়ে দেয়।তারপর নূরের ব্লাউজের হুকগুলো খুলতে যাবে এমন সময় হৃদের এক হাত নূরের পেটের উপরে পরায় হৃদ থেমে যায়।নিচু হয়ে নূরের নাভির নিচে তল পেটে একটা গভীর চুম্বন করে।নূর এবার ব্যাথা সইতে না পেরে জোরে একটা চিৎকার দিয়ে ওঠে।আর নূরের এমন হঠাৎ চিৎকার শুনে হৃদের হুশ আসে।নূরের দিকে তাকিয়ে দেখে নূর কাঁদছে।হৃদ তারাতাড়ি করে নূরের বুকে শাড়ির আঁচলটা পূণরায় উঠিয়ে দিয়ে নূরের মুখটা আকড়ে ধরে জানতে চায়, এই পাগলি কাঁদছো কেন কি হয়েছে? তুমি না আমাকে ভালোবাসো? তাহলে…ভয় করছে তোমার?

নূর কি বলবে হৃদকে বুঝে উঠতে পারছে না।শুধুই কেঁদে চলেছে।তাই দেখে হৃদ অভিমানী স্বরে বলে, যাও বলবা নাতো।আমি আর তোমার কাছেই আসবো না।কথাটা বলে মুখটা ঘুরিয়ে নেয় নূরের থেকে।

নূর কাঁদতে কাঁদতে বলে, হ্যাঁ যাও যাও। কাছে আসতে হবে না আমার। কিচ্ছু বোঝে না।শুধুই ভুল বোঝে।

আরে না বললে বুঝবো কিভাবে? কথাটা বলে হৃদ ঘুরে তাকায় নূরের দিকে।তারপর নূরের মাথাটা শক্ত করে চেপে ধরে বলে, আজকের দিনটার জন্য আমরা কতো স্বপ্ন দেখেছি, কতো অপেক্ষা করেছি নূর।এই কি হয়েছে তোমার আজ? আমার সাথে এমন কেন করছো? একটু ভালোবাসতে দাও না আমায়।কথাটা বলে হৃদ নূরের ঠোঁটের দিকে আগাতে যাবে এমন সময় নূর দু’জনের ঠোঁটের মাঝে নিজের ডান হাতটা রাখে।তারপর হৃদকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে অনেক লম্বা সময় নিয়ে আমতা আমতা করে বলে, পিললললিজ হৃদদদ এই সসব কি তিনদিইইন পর হতে পাআরে না?

কথাটা শুনে হৃদ কেবলার মতো মুখ করে নূরের দিকে তাকিয়ে থাকে।হৃদ ভাবে নূর ইচ্ছা করে ওর কাছ থেকে দূরে থাকার সময় চাচ্ছে।এজন্য হৃদ মজা করে নূরের মতোই লম্বা সময় নিয়ে টেনে বলে, না আআআআহ।এ হতে পারে না আআআআহ।আমার তোমাকে আজই চায় জানেমান।পাঁচ বছর সময় লেগেছে তোমার মন পেতে।আর আজ তোমায় এতো কাছে পেয়েও আদর করবো না। এটা কি ঠিক বলো? কথাটা বলে হৃদ জোড়িয়ে ধরে নূরকে।

আর নূর জোড়ে জোড়ে কাঁদতে থাকে। হৃদ নূরকে ছেড়ে দিয়ে বলে, মহা মুশকিল তো! আবার কাঁদে?

নূর কাঁদতে কাঁদতে আস্তে করে শাড়ির আঁচলটা সরিয়ে দিয়ে হৃদকে বিছানার চাদরের দিকে ইশারা করে।

হৃদ বিছানার চাদরটা দেখে চুপ হয়ে যায়।বুঝতে পারে নূর কেন এতোক্ষণ এমন করছিলো।হৃদ কিছুক্ষণ পর নিরবতা ভেঙে নূরের দিকে তাকিয়ে বলে, পিরিয়ডের দাগ?

নূর কাঁদতে কাঁদতে বলে, হ্যাঁ হৃদ।ছরি।প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও।

হৃদ মুচকি হেসে নূরের মুখটা আকড়ে ধরে দু’চোখের পানি মুছিয়ে দেয়।তারপর বলে,ধূর পাগলি এর জন্য কেউ ছরি বলে? আর বাসর রাত? তার জন্য তো সারাটা জীবন, যৌবন পরে আছে।আমি বুড়ি বয়সেও তোমাকে ছাড়বো না কিন্তু বলে দিলাম।

নূর আবার কাঁদে। আর কাঁদতে কাঁদতে বলে, আর কতোক্ষণ এইভাবে বসে থাকবো হৃদ?

নূরের কথায় হৃদ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত ১টা বাজে।এমন সময় কোনো দোকানই খোলা পাওয়া যাবে না তাহলে কি করা যায়? আইডিয়া ফুলঝুরি!

[ফুলঝুরি হৃদের খালাতো বোন।ভালোবেসে সবাই ফুল বলে ডাকে।ফুলের বয়স যখন পাঁচ বছর তখন ফুলের বাবা ফুলকে আর ওর মাকে মেরে বাড়ি থেকে তারিয়ে দিয়ে নতুন বিয়ে করে নেয়।আর তারপর থেকেই ফুল আর ফুলের মা এবাড়িতে থাকা শুরু করে।কিছুদিন আগে ফুলের মাও মারা যায়। যার কারণে ফুলের নিজেকে এখন বড্ড একা লাগে।]

হৃদ চুপিচুপি ফুলের রুমের সামনে গিয়ে দরজাটা নক করে।বাইরে থেকে ফিসফিসয়ে ফুলকে ডাকে।ফুল রুমের মধ্যে কারও ছবি বুকে নিয়ে কাঁদছিলো।যাকে সে সারা জীবনের জন্য হারিয়েছে ফেলেছে।হঠাৎ দরজার বাইরে থেকে হৃদ ওকে ডাকছে বুঝতে পেরে ছবিটা বালিশের নিচে লুকিয়ে ছুটে গিয়ে দরজাটা খুলে দেয়। হৃদ ফুলের চোখ, মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।অনেক ফুলে আছে মনে হচ্ছে অনেক কেঁদেছে।

হৃদ কিছু বলতে যাবে তার আগেই ফুল বলে উঠলো, হৃদ ভাইয়া তুমি এখানে? এতো রাতে কোনো সমস্যা?

হৃদ মাথা ঝাকিয়ে ফুলের হাতটা ধরে বসে আর বলে হ্যাঁ রে ফুল। এখনতো মা ঘুম তুই হেল্প করতে পারিস আমার।

নিজের হাতটা ফুল হৃদের থেকে সরিয়ে নেয়। আচ্ছা বলো কেমন হেল্প?

হৃদ বলতে গিয়েও থেমে যায়। ফুল তাই দেখে বলে, কি হলো ভাইয়া বলো?

হৃদ কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর বলে, তুই একটু তোর ভাবির রুমে যা।দেখ ওর কি প্রয়োজন।

ফুল ভাবে সিরিয়াস কিছু হয়েছে হয়তো।তাই ছুটে হৃদের রুমে যায়। দেখে নূর ফুলে সাজানো বিছানার উপরে বসে পরে কাঁদছে। ফুলকে দেখে নূর স্বাভাবিক হয়ে আপন মনে সমস্যাটা খুলে বলে।আর সব শুনে ফুল নূরকে হেল্প করে।এই বাবদে নূরের সাথে ফুলের সম্পর্কটাও গাঢ় হয়।সারা রাত নূর আর ফুল গল্পগুজব করে কাটায় আর রুমের বাইরে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে করতে হৃদ ওখানেই ঘুমিয়ে পরে দরজার সাথে হেলান দিয়ে।

চলবে,,,,,

(সিজন ১ যারা পড়েন নি পড়ে নিয়েন। আর না পড়লেও সমস্যা নেই। সিজন টু আপনারাও পড়তে পারবেন।😊😊😊এখন তারাবির সময় তাই বেশি বড় করতে পারলাম না পার্টটা।)
#ঝরা_ফুলের_বাসর
#Season_02
#Part_02
#Mst_Liza

সকালে দরজা খুলতেই হৃদ ঘুমন্ত অবস্থায় পরে যেতে লাগে ফুল সঙ্গে সঙ্গে হৃদের মাথাটা জড়িয়ে ধরে বসে।নিজের কোলের উপরে হৃদের মাথাটা রেখে ঘুমন্ত হৃদকে এক অপলক দৃষ্টিতে দেখে যায় ফুল।কত মায়া, কত টান এই মানুষটা মাঝে।যে কিনা আজ অন্যের স্বামী।হে আল্লাহ! কি করলে তুমি এটা? আমি তো জীবনে আর কিছুই চাইনি তোমার কাছে! আমার তো আপন বলতেও কেউ নেই।যাকে ভালোবাসলাম।যাকে নিয়ে এতো স্বপ্ন দেখলাম।তোমার উপর ভরসা করে এতো অপেক্ষা করলাম।আজ সে অন্যের বাসরে।ভাবতেই বুকটার মধ্যে এক চিনচিনে ব্যাথা অনুভব হচ্ছে ফুলের।ফুল চোখ বন্ধ করে এই মুহূর্তে শুধু হৃদকে অনুভব করছে।এখন ফুলের ইচ্ছে করছে সময়টা এখানেই থেমে যাক।সে হৃদকে নিয়ে এভাবেই অনন্ত্যকাল পার করে দেবে।

ফুলের ভাবনার ছেদ ঘটালো হৃদ।ঘুমন্ত অবস্থায় ফুলের হাতটা ধরে হৃদ নিজের মুখের কাছে নিয়ে আসে আর নাকে, মুখে ছুঁইয়ে দিয়ে বিরবির করে বলে, আমাকে একটু আদর করো না নূর? সঙ্গে সঙ্গে ফুল ছিটকে হৃদকে দূরে ঠেলে দিয়ে উঠে দাড়ায়। আর কাঁদতে কাঁদতে সেই মুহূর্তে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। হৃদের ঘুম এতো শক্ত যে ওর কিছুই হুস নেই।এখনো মেঝেতে শুয়েই ঘুমোচ্ছে।

নূর এতোক্ষণ ওয়াশরুমে সাওয়ার নিচ্ছিলো।ভেজা চুল তোয়াল দিয়ে মুছতে মুছতে বের হয়।রুমে এসে হৃদকে ওইভাবে নিচে শুয়ে থাকতে দেখে নূরের হাত থেকে তোয়ালেটা নিচে পরে যায়। আর নিজের জ্বিব কামড়ে ধরে।ভাবে, আহরে আমার স্বামীটা।কাল রাতে তো ওর কথা ভাবলামই না।নূর এগিয়ে এসে হৃদের পাশে বসে।আর হৃদের নগ্ন বুকটায় আলতো হাত ঠেলে ডাকে।এই হৃদ ওঠো না।দেখও সকাল হয়ে গেছে।এখন সবাই জেগে যাবে।তুমি এইভাবে নিচে শুয়ে থাকলে লোকে আমায় কি বলবে? এই তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো?

হৃদের কানে নূরের কন্ঠ পৌঁছালে নূরকে হৃদ নিজের বুকে টেনে নেয়। আর ঘুম জড়ানো ঠোঁটে আস্তে করে নূরের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে, জানেমন আমার বুকে একটু ঘুমোও না! হৃদের এক হাত নূরের কোমড়ে আর অন্য হাত নূরের ভেজা চুলের ভাজে।নূরের কিছু চুল হৃদের নাকের উপরে এসে পরেছে।নূরের চুল থেকে টপটপ করে পানি পরছে হৃদের মুখে, বুকে।আর হৃদ নূরের চুলের মাতাল করে দেওয়া শ্যাম্পুর স্মেইল নিচ্ছে।নূর চেস্টা করছে হৃদের বুক থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে আসার আর হৃদ ঘুমন্ত অবস্থায় নূরকে আরও শক্ত করে টেনে নিচ্ছে।দুজনের মধ্যে ছুটাছুটি চলছে।নূর আমতা আমতা করে বলছে, এইই হৃদ।সোনা স্বামীটা আমার কত্ত ভালো। ওঠো না প্লিজ! দরজাটা খোলা কেউ দেখে ফেললে কি ভাববে? বিছানায় গিয়ে ঘুমাও।

হৃদ তবুও উঠছে না এজন্য উপায় না পেয়ে নূর হৃদের বুকের উপর একটা আলতো ঠোঁটের পরস এঁকে দেয়।বুকের পশমে একবার আলতো করে হাত বুলিয়ে নেয়। তারপর “ছরি হৃদ” বলেই খুব জোড়ে হৃদের বুকের পশমে দেয় এক টান।হৃদ ব্যাথা পেয়ে ওমাগো বলেই নূরকে ছেড়ে দিলে সেই সুযোগে নূর উঠে দাড়ায় আর হৃদও উঠে বসে বুকে হাত বুলিয়ে বলে কি হলো এটা? ঘুমের মাঝে কে আমাকে মারলো? হৃদ সামনে তাকিয়ে দেখে নূর দাড়ানো।সঙ্গে সঙ্গে নিজেও দাড়িয়ে পরে। জানেমান তুমি করেছো এটা? সো ব্যাড! ব্যাথা পেলও না তোমার স্বামীটা?

নূর নিচের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে আহ্লাদী স্বরে বলে, তো কি করবো তুমি উঠছোই না। ঘুমের মধ্যেও দুষ্টুমি করা লাগে তোমার?

হৃদ মুচকি হেসে নূরের কোমড় জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নেয়। ব্যাথা পেয়েছি না আমি?

নূর হৃদের বুকে হাতের আঙুল নাড়িয়ে আহ্লাদী স্বরে বলে, তো কি করবো? তোমারই তো দোষ।এমন সময় ফুল এসে দরজার কাছে দাড়িয়ে দরজার পর্দাটা উঠিয়ে বলে, হৃদ ভাইয়া…ফুল স্তব্ধ…হৃদকে আর নূরকে এতো কাছাকাছি দেখে কিছু বলার বোধশক্তিটুকুই ও হারিয়ে ফেলেছে।ফুলকে দেখেই নূর আর হৃদ দুজন দুজনের থেকে কিছুটা ছিটকে দূরে সরে আসে।আর ফুল সেভাবেই দাড়িয়ে থাকে।হৃদ ফুলকে বলে, কিছু বলবি ফুল? ফুলের কানে সেই কথা পৌঁছাচ্ছে না।ফুল নিথর হয়ে পরে আছে।ফুলের ভেতরটা যেন দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।বাইরে থেকে চোখের পানি অনেক কস্টে বেঁধে রেখেছে।হৃদের ঝাঁকুনিতে ফুল কেঁপে ওঠে।কি হলো ফুল? কিছু বলতে এসেছিস? ফুল এক ঝটকায় হৃদকে দূরে সরিয়ে দেয়। আর মাথা নাড়িয়ে না অর্থ বুঝিয়ে সেখান থেকে কিছু না বলেই বেড়িয়ে যায়।

হৃদ উহ্ আজব! কথাটা বলে আবার নূরের কাছে আসে।তখন ফুল ওইভাবে দুজনকে দেখে নেওয়ায় অনেক লজ্জা পেয়ে আছে নূর।লজ্জায় হৃদের উল্টোদিকে মুখ ঘুরিয়ে দুই হাত দিয়ে মুখটা ঢেকে দাড়িয়ে আছে।হৃদ গিয়ে পেছনের থেকে নূরকে জোড়িয়ে ধরে আস্তে করে নূরের মুখ থেকে হাত দুটো নামিয়ে নেয়।নূরের দুই হাতের আঙুলে নিজের আঙুল চেপে নূরের পেট জোড়িয়ে ঘাড়ে থুতনিটা রেখে আয়নার সামনে দাড়িয়ে বলে, কি হলো? লজ্জা পেয়ে গেলে নাকি?

নূর কিছু বলছে না।শুধুই অনুভব করছে।নূর চোখদুটো বন্ধ করে আছে আর হৃদ নূরের ঘাড়ে আর গলায় আলতো ভাবে নিজের নাকের ডগা ঘষছে।এমন সময় হৃদের মা এসে দরজায় নক করে হৃদকে ডাকে।হৃদ কিছু বলতে এসেছি।তোরা কি ঘুম থেকে উঠেছিস? মায়ের ডাক শুনে হৃদ নূরকে ছেড়ে দিয়ে দূরে এসে দাড়ায় আর নূরও শ্বাশুড়ি মার কন্ঠ শুনে মাথায় শাড়ির আঁচলটা টেনে ঘোমটা দিয়ে দাড়ায়।হৃদের মা দরজা খোলা পেয়ে ভেতরে চলে আসে।নূর এগিয়ে শ্বাশুড়ি মাকে সালাম করে।

থাক থাক বৌমা সালাম করতে হবে না।এদিকে এসো তো… বিছানার উপরে নিয়ে নূরকে বসিয়ে আলমারি থেকে কিছু গহনা বের করে নূরকে পরিয়ে দিতে থাকে।বাইরে এলাকার মুরব্বিরা এসেছে আমার ছেলের বউ দেখতে একটু গহনা না পরালে কেমন হয়? গহনা পরানো হলে নূরের থুতনিটা ধরে বলে, বাহ রাজরানী দেখতে লাগছে তো আমার বৌমাকে।কারও নজর যেন না লাগে। চোখের থেকে আঙুলে করে কাজল নিয়ে নূরের ঘাড়ের পিছনে লাগিয়ে দেয়।আচ্ছা ফুল কোথায় রে? ওনা তোদের রুমে আসলো তাহলে গেলো কোথায়?

কথাটা শুনে হৃদ আর নূর একে অপরের দিকে তাকায়।অনেকটা লজ্জা লাগছে দুজনেরই যে ফুল তাদের রোমান্স করতে দেখে নিয়েছে।হৃদ ভাবছে ফুল লজ্জায় চলে গেছে।আর নূর ভাবছে ফুলের সামনে এবার কিভাবে যাবে।মনে মনে হৃদের উপর অভিমানও হচ্ছে নূরের। কি দরকার ছিলো দরজা খোলা রেখে এমনটা করার?

ওদিকে,
নিজের রুমের দরজাটা বন্ধ করে কাঁদতে থাকে ফুল।নিঃশব্দে বিছানার উপর থেকে বালিশ, চাদর, তোসক সব টেনে নিচে ফেলে দেয়। তারপর দুই হাত দিয়ে মাথার চুল খামচে ধরে মেঝেতে বসে পরে।ফুল চিৎকার করতে পারছে না কেউ যেনে যাবে বলে।তাই একান্তেই নিজের কস্টটা নিজের মধ্যে দমিয়ে রেখেছে।ফুলের কান্নাগুলো কেউ দেখার নেয়।তাই তো ফুল রুমের লাইট অফ করে খাটের নিচে গিয়ে চোখটা বন্ধ করে শুয়ে আছে।আর অনুভব করছে এই অন্ধকার রুমের মতোই তার জীবনটাও অন্ধকার।কালো মেঘে ঢাকা ফুলের জীবন।যেখানে কেউ নেই ফুলের।আর ভালোবাসা? সেটাতো ফুলের কখনো ছিলোই না।

হৃদ ভালো থাকুক ওর ভালোবাসাকে নিয়ে আমি ভালো আছি হৃদ আমার এই নিস্ব অন্ধকার জীবন নিয়ে। আরও অনেক সুখি হও তুমি। দূর থেকে এটাই দেখে যাবো।আর এটাও দেখবো কি আছে আমার ভাগ্যে।হিচকি তুলে মনে মনে ঠোঁট কাঁপিয়ে কথাটা বলছে ফুল।

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here