ঝিলের ওপারে পদ্মফুল পর্ব -০৫

#ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল
তন্বী ইসলাম -০৫

পদ্ম খিলখিল করে হাসছে। পদ্ম’র এই হাসিমুখটা দেখে শ্রাবণের মুখেও হাসির আভা দেখা গেলো। কয়েক সেকেন্ড বাদে শ্রাবণ বললো
“তোর স্কুলে দেরি হচ্ছে না পদ্মফুল?
পদ্ম’র খেয়াল হলো সত্যিই দেরি হয়ে যাচ্ছে। সাথে সাথেই মুখের হাসি মিলিয়ে গেলো তার। কপালে ভাজ এনে শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে কিঞ্চিৎ রাগী গলায় বললো
“তোমার লাইগা আমার দেরি হইলো শ্রাবণ ভাই। সরো তো এখান থেইকা।
কথাটা বলে শ্রাবণের হাত থেকে নিজের ব্যাগটা নিয়ে একটা দৌড় দিলো পদ্ম। শ্রাবণ হতবাক হলো, বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলো পদ্ম’র দৌড়ে যাবার দিকে।

বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে এসে দেখলো সেলিম ভাই তার বউকে নিয়ে শশুর বাড়ি যাবার জন্য রওনা করেছে। পদ্ম ব্যাগটা ঘরে রেখে দৌড়ে এলো তাদের কাছে। শাপলা আর আলেয়া বেগমও তাদের কাছে উপস্থিত। পদ্ম ভাবি’কে জরিয়ে ধরে বললো
“খুব তারাতাড়ি আইসা পরবা ভাবি।
ভাবি মাথা নাড়ালো। মুচকি হেসে বললো আচ্ছা। পরক্ষণে তিনি আবারও বললেন
“তুমি আমাদের সাথে যাইবা পদ্ম?
ভাবীর কথার পদ্ম’র মন নেচে উঠলো। যাবার জন্য মন আকুপাকু করছে তার। সেলিমও তালে তাল মিলিয়ে বললো
“হ্যাঁ পদ্ম লইয়া লো আমাগো সাথে। আমার নিজের বোইন থাকলে তো ঠিকই যাইতো।
পদ্ম আকুতিভরা চোখে মায়ের দিকে তাকালো। মায়ের কড়া দৃষ্টি বলেই দিচ্ছে পদ্ম’র কোথাও যাওয়া যাওয়ি নেই। পদ্ম মলিন মুখে ভাবির দিকে তাকালো। বললো
“তোমরা যাও ভাবি, আমার স্কুল আছে।

পদ্ম’র কথায় বাধ সাধলো সেলিমের মা। মুখভর্তি পান তার মুখে। গ্রামের আগের মহিলা উনি, শাড়িটাও কোনোরকমে পেচিয়ে আছে। সেই প্রথম থেকেই উনি কোনোরকমে পেচিয়ে কাপড় পরেন। পদ্মকে তিনি বললেন
“এতোবার কইতাছে, যা না পদ্ম।
আলেয়া বেগম এবার মুখ খুললেন। বললেন
“না আপা, পদ্ম’র এমনিতেই এই কয়দিন স্কুল কামাই হইছে। আর স্কুল বাধা দেওন যাইতো না।
পদ্ম’র মুখভার হলো, মায়ের মুখে মুখে কথা বলার সাহস তার নেই, কিন্তু রাগ করার অধিকার তো আছে। সে হনহন করে ঘরে চলে এলো। বালিশে মুখ গুজে উপুর হয়ে শুয়ে পরলো পদ্ম। ভালো লাগছে না কিছুই। ইচ্ছে করছে বাড়ি ঘর ছেড়ে চলে যাক, মায়ের উপর অভিমান হচ্ছে খুব।

বোনের মন খারাপ সেটা বুঝতে পারলো শাপলা। সকলের সামনে থেকে আলেয়াকে একপাশে টেনে নিয়ে এলো সে। আলেয়া চিন্তিত গলায় বললেন
“আমাকে এখানে নিয়া আইলি কেন শাপলা?
শাপলা কিছুক্ষণ ইতস্তত বোধ করলো। মাকে কি করে বলবে ভাবতে লাগল। আলেয়া আবারও তাড়া দিয়ে বললো
“ওরা দাঁড়াইয়া রইছে, লো বিদায় দিয়া আহি। যা কওনের পরে কইস শাপলা।
শাপলা এবার সাহস করে বলেই ফেললো
“পদ্ম’রে ওগো সাথে যাইতে দেও আম্মা। দুইটা দিনেরই তো ব্যাপার।
আলেয়া ভ্রু বাকালেন। বললেন
“এই কথা বলার লাইগা আমারে এখানে আনছিস?
“হু! ছোট্র করে বললো শাপলা।
আলেয়া কিছু সময় নিরব থেকে ঠান্ডা গলায় মেয়েকে বললেন
“অন্যের বাড়ি কি কইরে এতো বড় মাইয়ারে পাঠাই। পরে যদি কিছু হয়।
শাপলা মাকে আস্বস্ত করে বললো
“কিচ্ছু হইবো না আম্মা। ওইখানে তো ভাবী থাকবো, সেলিম ভাই থাকবো। ওরা তো পদ্ম’র খেয়াল রাখবো বলো। আর পদ্ম কিন্তু এখনো এতোটাও বড় হয় নাই আম্মা। ছোট্র একটা মেয়ে, সাধ হইছে বেড়ানোর। দেও আম্মা যাওয়ার লাইগা।

আলেয়া কিছুক্ষণ কি ভাবলো। এরপর মৃদুহেসে বললো
“যা, তোর বোইনেরে গিয়া কো তৈরি হইতে।
শাপলা হাসলো, সে আর একদন্ড না দাঁড়িয়ে দৌড়ে চলে গেলো ঘরে। পদ্ম মুখ ভার করে বিছানায় শুয়ে আছে। শাপলা ঘরের দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছে, পদ্মকে উদ্দেশ্য করে সে বলছে
“আম্মা কইছে শোয়া থেইকা উঠার লাইগা।
পদ্ম কোনো উত্তর দিলো না। শাপলা মৃদু হেসে বললো
“আমি আবারও বলতেছি, আম্মা কইছে শোয়া থেইকা উঠার লাইগা।
পদ্ম এবার খানিক রাগলো। শোয়া অবস্থাতে থেকেই শাপলাকে উদ্দেশ্য করে বললো
“আমার সাথে ফাইজলামি করলে কিন্তু এক উস্টা দিয়া ঝিলের মইধ্যেখানে ফালাইয়া দিমু। যা এইখান থেইকা।
শাপলা এবার পদ্মকে খেপানোর জন্য বললো
“উঠবি না যখন তয় আর কি করার, আম্মারে গিয়া বলি পদ্ম সেলিম ভাইয়ের শশুর বাড়ি যাইবো না। ওর বদলে নাহয় আমিই যাই।

শাপলার বলা কথাটা শেষ হওয়া মাত্রই লাফ দিয়ে উঠে বসলো পদ্ম। বিস্ময়ে শাপলার দিকে তাকিয়ে অবিশ্বাসের সাথে বললো
“আম্মা রাজি হইছে আমি ভাবিগো বাড়ি যাওয়ার লাইগা?
“হইছিলো তো, এখন তুই যখন যাইবিই না তো আর কি করার। যাই, আমি গিয়া আম্মারে বলি।
শাপলা দুষ্টমি করে ঘরের বাইরে যাবার জন্য পা বাড়ালো। পদ্ম এক লাফে খাট থেকে নেমে এসে শাপলাকে আটকালো। হাসিমুখে বললো
“এইসব কথা কইতে হয় না বনু। তুই আম্মারে গিয়া বল আমি রেডি হইয়া আসতেছি।।
শাপলা হাসলো। পদ্ম’র মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে বললো
“তারাতাড়ি আয়।

পদ্ম’কে ঘরে রেখে শাপলা চলে গেলো মায়ের কাছে। ওদিকে উঠোনে অনেকগুলো চেয়ার পেতে সেগুলোতে বসে আছে সবাই। শ্রাবণ গেছে সিএনজি আনতে। সিএনজি আসার অপেক্ষাতেই সকলে বসে। পদ্ম নাচতে নাচতে গেলো শোকেসের কাছে। সেখান থেকে তার প্রিয় ড্রেস টা বের করে নিলো খুবই যত্ন সহকারে। পুরো ড্রসটাই সাদা। পাজামা ওড়না, আর মাঝারো সাইজের সাদা ফ্রগ। পুরোটাই সুতি। পদ্ম কলপাড় থেকে কোনোরকমে হাত মুখ ধুয়ে এসে ঝট করে ড্রেস টা পরে নিলো। মুখে একটু ক্রিম আর চোখে কাজল, চুলটা সুন্দর করে বেধেই তার রেডি হওয়া কমপ্লিট হয়ে গেলো। পদ্ম শোকেসের উপর রাখা ছোট্র আয়নাটা হাতে নিয়ে আরেকবার পরখ করে নিলো নিজেকে। বেশ সুন্দর লাগছে। শোকেস থেকে আরো দু’সেট নর্মাল জামা একটা শপিং এ করে নিয়ে বেরিয়ে পরলো সে। ভাবী তাকে দেখে হাসলো। বললো
“মাশাল্লাহ, খুব সুন্দর লাগছে দেখতে।
পদ্ম হাসলো। শাপলা বোনের কাধে হাত রেখে মৃদু গলায় বললো
“সত্যিই তোকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে রে পদ্ম।
আলেয়া বেগম মেয়ের কাছে আসলেন। পদ্ম’র মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন
“সাবধানে থাকিস মা। কিছু লাগলে তোর ভাবি রে বলিস। একলা একলা বাইরে বেরোবি না। বাথরুমে যাওয়ার দরকার পরলেও আসমা’রে ডাকবি।
পদ্ম বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নাড়ালো। মনটা আকুপাকু করছে তার, কতক্ষনে সে যাবে। বেড়াতে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা তার। মামার বাড়ি একই গ্রামে থাকায় বেড়ানো হয়ে উঠেনি তার। নিজের কোনো ফুফুও নেই যে মন চাইলেই যাবে৷ এই প্রথম তার কোথাও বেড়াতে যাবার সুযোগ হয়েছে।

কিছুক্ষণ বাদে শ্রাবণ এসে উপস্থিত হলো সেখানে। সেলিম উঠে দাঁড়ালো, শ্রাবণের কাছে এগিয়ে গিয়ে বললো
“এত সময় লাগাইলি একটা সিএনজি আনতে?
শ্রাবণ ঘেমে একাকার। ক্লান্ত গলায় সে বললো
“সিএনজি কি আমার বাপ দাদার সম্পত্তি নাকি যে যখন চাইবো তখনই পেয়ে যাবো। এটা গ্রাম, চাইলেই সহজে এইসব খুঁজে পাওয়া যায় না। যাও দু একটা পাই, সেগুলো যাবে না বলে দেয়, নয়তো অনেক ভাড়া চায়। সেলিমের কপালে চিন্তার ভাজ। দুশ্চিন্তা নিয়ে সে বললো
“তাহলে কি সিএনজি পাস নাই? এখন যামু কেমনে আমরা?
শ্রাবণ সেলিমকে চিন্তা করতে না বলে বলল
“চিন্তা করিস না ভাই। সিএনজি পাইছি। ওই মোড়ে দাড়িয়ে আছে, রাস্তা খারাপ তাই এদিকে আসবেনা৷ তোদের কষ্ট করে হেঁটে যেতে হবে ঐটুকু।
সেলিম উত্তপ্ত নিশ্বাস ছেড়ে বললো
“তোর আর কি করা! তুই লাগেজটা হাতে নে। লাগেজটা শ্রাবণের হাতে দিয়ে সেলিম তার বউ এর দিকে তাকালো। নাম ধরে ডেকে বললো
“আমার সাথে আসো আসমা।
এরপর পদ্ম’র দিকে তাকালো সেলিম। বললো
“তুইও আয় পদ্ম।

এবারে পদ্ম’র দিকে নজর গেলো শ্রাবণের। ব্যস্ততা আর ক্লান্তির চোটে এতক্ষণ পদ্ম’কে খেয়াল করেনি সে। পদ্ম’র দিকে তাকাতেই সে হতবাক। তার পদ্মফুলটাকে আজ যেনো পরীর চেয়েও সুন্দর লাগছে, চোখ ফেরানো দায়। এ রুপে পদ্মকে সে আগে কখনো দেখেনি। শ্রাবণ যেনো পদ্ম’র দিকে তাকিয়েই নিজ যায়গায় জমে গেলো, দৃষ্টি পদ্ম’তেই আটকে আছে। ব্যাগ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নাম নেই। সেলিম শ্রাবণকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ডাকলো, সাড়া না পেয়ে সামান্য ধাক্কা দিলো। থতমত খেয়ে ভাইয়ের দিকে তাকালো শ্রাবণ। এখনো সে পদ্ম’র ঘোরেই আটকে আছে। সে আবারও পদ্ম’র দিকে তাকালো। পদ্ম’ সবটাই বুঝতে পারলো, তার ঠোটেও মৃদু হাসি। সেলিম আবারও শ্রাবণকে তাড়া দিতেই শ্রাবণ বিস্ময়ে বলে উঠলো
“পদ্মফুল কোথায় যাচ্ছে?
সেলিম হেসে বললো
“আমার শশুরবাড়িতে যাইতেছে। তোর বিয়ার সময় তোর শশুরবাড়িতেও নিয়া যাইস।

শ্রাবণের মুখটা হঠাৎ মলিন হয়ে গেলো। বাড়িতে আছে শুধুমাত্র আজকের দিনটায়। এ দিনটা সে পদ্ম’কে না দেখে কি করে থাকবে? সবচেয়ে বড় কথা যাবার আগে যদি পদ্ম’র মুখটা সে নাই দেখতে পারে তাহলে সেখানে গিয়ে টিকবে কি করে?
ঘোরের মধ্যে থেকেও ব্যাগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে শ্রাবণ। একটা মাঝারি সাইজের আইল পেরিয়ে রাস্তায় উঠা লাগে। সেলিম আগে, তার পেছনে আসমা। আসমার পিছু হেঁটে যাচ্ছে পদ্ম। সবার পিছনে ব্যাগ নিয়ে হাঁটছে শ্রাবণ। রাস্তায় উঠে আরো কিছুটা দূর এগুতেই দেখা গেলো মোড়। একটা নতুন সিএনজি দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। কারো বুঝতে বাকি রইলো না এটাই সে সিএনজি যেটা দিয়ে তারা আজ যাবে। শ্রাবণের নজর তখনও সেই সাদা পরীটার দিকে। আজ পদ্ম’র দিক থেকে যেনো চোখ ফেরানো দায় হয়ে যাচ্ছে। তবে যতটা না তাকে দেখে মুগ্ধ হচ্ছে তারচেয়েও বেশি সে হতাশ, পদ্ম চলে যাচ্ছে বলে। সিএনজি তে গিয়ে একে একে উঠলো সবাই। একপাশে বসলো সেলিম আর একপাশে পদ্ম। মাঝখানে আসমা। ড্রাইভার সিএনজি তে বসে গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পদ্ম এবার শ্রাবণের দিকে তাকালো। শ্রাবণের মুখটা বড্ড অসহায় দেখা যাচ্ছে। পদ্ম’র মন খারাপ হলো খুব, তবে বেড়ানোটাও সে মিস করতে চাইছে না। শ্রাবণের গভীর চাহনিই বলে দিচ্ছে সে পদ্মকে কতটা ভালোবাসে। গাড়ি যখন স্টার্ট দিবে ঠিক তক্ষুণি বাধা দিলো শ্রাবণ। সেলিম অবাক হলো, শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে বললো
“কি হইতো তোর? গাড়ি ছাড়তে দিলি না কেন?
শ্রাবণ আরেকবার পদ্ম’র দিকে তাকালো। এরপর সেলিমের দিকে তাকিয়ে বললো
“পদ্ম’ফুলের একটা দরকারি জিনিস বাড়ি রয়ে গেছে। একটু দাঁড়া, আমি এনে দিতেছি।
সেলিম অবাক হয়ে পদ্মের দিকে তাকালো। বিস্ময়ে বললো
“তুই আবার কি ফেলে এলি রে পদ্ম?
পদ্ম অবাক হয়ে তাকালো শ্রাবণের দিকে। নজর ওদিকে রেখেই সেলিমের কথার উত্তরে সে বললো
“আমিতো কিছু রাইখা আসি নাই শ্রাবণ ভাই।

শ্রাবণ পদ্ম’র কথায় বাধ সেধে বললো
“তুই চুপ থাক পদ্মফুল। ফেলে এসেছিস কি আসিস নাই সেটা তুই কি করে জানবি! আমি জানি তুই ফেলে যাচ্ছিস তোর খুব প্রিয় একটা জিনিস। একটু সময় অপেক্ষা কর, আমি এক্ষুনি নিয়ে আসছি।
পদ্মকে আর কিছু বলতে না দিয়ে দৌড়ে বাড়ির দিকে চলে গেলো শ্রাবণ। গাড়িতে বসে থাকা সবাই হতভম্ব। পদ্ম বেশ মাথা খাটিয়ে চিন্তা করতে লাগলো সে কি এমন জিনিস ফেলে এসেছে যেটা সে নিজেই জানেনা অথচ শ্রাবণ ভাই জানে!

কিছুক্ষণ বাদে ফিরে এলো শ্রাবণ। তবে ওকে দেখে অবাক সবাই। আগের জামাকাপড় ছেড়ে নতুন প্যান্ট শার্ট পরে সে এসেছে। ছোট্র একটা ব্যাগও এনেছে সাথে। শ্রাবণকে এরুপে দেখে সেলিম অবাক হয়ে বললো
“তুই আবার কোথায় যাচ্ছিস?
“তোর শশুড়বাড়ি।
পদ্ম অবাক হয়ে তাকালো শ্রাবণের দিকে। সেলিম হতবাক। আসমা বিস্ময়ে বললো
“তোমারে তো আগেই বলছিলাম আমাদের সাথে যাবার জন্য, তখন তো রাজি হইলা না। এখন হঠাৎ কাউরে কিছু না বইলা রেডি হইয়া আসলা যে।
শ্রাবণ ভাবির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো বললো
“সারপ্রাইজ দিলাম ভাবি
সেলিম অদ্ভুত ভাবে বললো সত্যিই আমি সারপ্রাইজড।

এদিকে মুচকি মুচকি হাসছে পদ্ম। শ্রাবণের পাগলামো তার কাছে বেশ লাগছে। সে জানে শ্রাবণ ওর জন্যই ওখানে যাচ্ছে। কিন্তু শ্রাবণ ভাইতো বলেছিলো আগামীকাল তাকে শহরে চলে যেতে হবে! খানিক চিন্তিত হলো পদ্ম।

পদ্ম দুষ্টুমির ছলে শ্রাবণকে ডেকে বললো
“তুমি না বললা আমার কি প্রিয় জিনিস রাইখা আইছি, তুমি বললা সেইটা আনতে গেছো!
শ্রাবণ হেসে বললো
“এনেছিই তো।
পদ্ম মুখ বাকিয়ে বললো
“কই আনছো? আমিতো দেখিনা।
শ্রাবণ হাসলো। ধীরপায়ে এগিয়ে এলো পদ্ম’র কাছে। পদ্ম’র দিকে কিছুটা ঝুকে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো
“আমাকে দেখিস না রে পদ্মফুল? আমিই তো তোর সেই প্রিয় জিনিস।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here