তবুও_তুমি💖 পর্ব ৫

#তবুও_তুমি💖
#পর্ব_০৫
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
রোদ ছোঁয়াকে ভিজতে দখছিল এমন সময় আকাশে বিশাল আলোর ঝলকানি।
রোদ তৎক্ষনাৎ দৌড়ে ছোঁয়ার কাছে যায় ছোয়া বিদ্যুৎ চমকানো টাকে ভিশন ভয় পায়।
আলোর ঝলকানির পরেই ভিশন শব্দে বজ্রপাত হয় ছোঁয়া ভয়ে পেছন ফিরে রোদ কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
★★★
রোদের বুক পর্যন্ত আমার উচ্চতা।
আমার মাথাটা ঠিক ওর বুকে পরেছে।
ওর হৃৎস্পন্দন শুনতে পাচ্ছি।
ভেতর থেকে ইচ্ছে আসছে কেন না সময় টা এখানে থেমে যাক।
ওর বুকে এভাবে মাথা গুঁজে থাকতে আমার খুব ভালো লাগছে
★★★
অনেকটা সময় কাঁটার পর যখন ছোঁয়া রোদকে ছাড়ছে না তখন রোদের একটু সন্দেহ হয়।
রোদ ছোঁয়ার হাতটা ধরে,
বুঝতে পারে ছোঁয়ার জ্বর আসছে।
কিন্তু ছোঁয়ার জ্ঞান নেই।
রোদ তখনি ছোঁয়াকে কোলে করে রুমে আসে,
ছোঁয়া তো পুরোই ভিজে গেছে।
ওকে শুঁকনো কাপড় পরাতে হবে।
রোদ ছোঁয়ার জ্ঞান আনার চেষ্টা করে কিন্তু ছোঁয়ার ভিশন জ্বরের কারনে সে চোখ ই খুলতে পারছে না।
রোদ চিন্তিত হয়ে পরে।
তখনি রোদের মনে পড়ে এ বাড়িতে একটা কাজের মহিলা আছে যাকে দিয়ে সে ছোঁয়ার কাপড় পাল্টে দিতে পারে।
রোদ দৌড়ে নিচে আসে কিন্তু সেখানেও কাজ হয় না সেখানে দেখা যায় মহিলা তার স্বামী কে রেখে কিছু দিন গ্রামে গেছেন।
রোদ নিরুপায় হয়ে ছোয়ার কাপড় পাল্টে শুঁকনো কাপড় পরিয়ে দেয়।
মেয়েটাকে ভিজতে দেওয়া উচিত হয় নি ভিজে জ্বর টা আসছে।
রোদ ছোঁয়াকে কম্বল জড়িয়ে দেয়।
ছোঁয়া বাচ্চাদের মতো নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে।
রোদ ছোঁয়ার কপলে হাত বুলাতে থাকে।
আজ কেন জানি ন কোন রাগ করতে পারছে না রোদ।
পারছে না অভিমান করে দুরে চলে যেতে।
পারছে না রোদ ছোঁয়াকে কিছু বলতে।
ছোঁয়ার আজকের ছোঁয়া টা একটা অন্য রকম অনুভূতি দিয়েছে রোদ কে।
এর আগে ছিল এমন কিন্তু বিদেশ থেকে আসার পর এই প্রথম ছোঁয়ার ছোঁয়াতে রোদ এমন অনুভূতি ফিল করছে।
রোদের কাছে সব কিছু কেমন রহস্য হয়ে আসছে সব কিছু ঘোলাটে হয়ে আসছে।
বাইরে ভিশন বৃষ্টি নেমেছে।
ঠান্ডা বাতাস আসছে জানালা দিয়ে।
একটু পর পর বিদ্যুৎ ও চমকে উঠছে।
ছোঁয়া প্রতিবার কেঁপে উঠছে।
রোদ ছোঁয়া কে ভয় পেতে দেখে ছোঁয়াকে জড়িয়ে ধরে।
রোদের বুকের মাঝেই গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে ছোঁয়া।
এতো মায়া এতো মমতা এতো ভালোবাসা।
,
সে রাতে কারোর খাওয়া হলো না।
রোদ ওভাবেই ছোঁয়াকে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে ছিল সারা রাত।
কতো দিন পর রোদ শান্তিতে ঘুমোতে পারলো তা রোদ নিজেও জানে না।
ছোঁয়া হচ্ছে রোদের প্রশান্তি,,
রোদের শান্তনা, রোদের আকাঙ্খা, রোদের ভালোবাসা।
সব কিছু ছোঁয়াকে নিয়েই।
সকলের মিষ্টি রোদ ছোঁয়ার মুখে পরতে ছোঁয়া টিপ টিপ করে চোখ খোলে।
নিজেকে রোদের বুকের মাঝেই আবিষ্কার করে।
কিন্তু মাথাটা তার ভিশন ভার।
চাইলেও উঠতে পারছে না।
অসুস্থতা এখনো পুরো কাটে নি।
রোদ বুঝতে পারে ছোঁয়া উঠে গেছে তাই রোদ ছোঁয়া থেকে সরে উঠে পরে।
সোজা ওয়াসরুমে চলে যায়।
কিছু সময় পর বেরিয়ে এসে
–তুমি বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি চুপচাপ বসে থাকো নড়বা না।
রোদ নিচে চলে যায়।
★★★
আমি টুপ টুপ করে উঠে ওয়াসরুমে যাই।
কিছু সময় পর রোদ ফিরে এসে ছোয়াকে না দেখে ছোঁয়াকে ডাকতে শুরু করে,
–ছোঁয়া ছোঁয়া।
–জি আসছি।
ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে আসি।
উনি খাবার হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি আসতে আমাকে খাইয়ে দেয়,
–আপনি খাবেন না।
–হুম খাবো।
তুমি ঔষধ খেয়ে নেও।
রোদ আমাকে ঔষধ দিয়ে জানলার পর্দ খুলে দেয়।
এটা একটা গ্রাম এই বাড়ির বেলকনি থেকে প্রায় সবটা দেখা যায়।
আমি বেলকনি তে গিয়ে দাঁড়ালাম।
সত্যি কি সুন্দর দেখাচ্ছে।
চারি দিকে সবুজ ধান খেত।
এক পাশে গ্রাম বাড়ি বাড়ি সব কিছু কতো গোছালো।
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো প্রচুর পরিষ্কার।
আমার খুব ভালো লাগছে।
মেঘ এখনো আকাশে মিষ্টি বাতাস বইছে।
বৃষ্টির পরে মাটির একটা মিষ্টি ঘ্রাণ আসে সেটা পাচ্ছি আমি।
★★★
রোদ ছোঁয়া কে দেখছে আকাশ থেকে একটা পরি নেমে তার বাসার বেলকনি তে দাঁড়িয়েছে।
মিষ্টি বাতাসে পরিটার চুল গুলো উড়ছে।
শাড়ির আঁচল টাও উড়ছে।
কি যে মিষ্টি দেখাচ্ছে তাকে তা বলার মতো ক্ষমতা রোদের নেই।
রোদ ছোঁয়ার দুরত্ব বুঝি এখন কমবে।
হয়তো এখন ওদের মধ্যে ভালোবাসর সম্পর্ক টা গভীর হবে।
–ছোঁয়া।
–জি।
–আজ বাইরে যাবো ঘুরতে।
আমার মনটা খুশি হয়ে যায় আপনা আপনি মুখে হাসি চলে আসে।
–আমি ওই খানটায় যেতে চাই।
আমি আঙুল দিয়ে দেখলাম।
রোদ আমার কাছে এগিয়ে আসে,
–কই।?
–ওই দেখুন ওই যে ঘের মনে হচ্ছে।
–ওহ ওটা আচ্ছা নিয়ে যাবো কিন্তু ওখানে যেতে গেলে নৌকাতে উঠতে হবে।
কালকের বৃষ্টি তে পুরো বিল পানি পানি হয়ে গেছে।
নৌকার কথা শুনে আমার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেল।
পানিতে প্রচুর ভয় আমার।
রোদ মিষ্টি হেসে বলল।
–আমি তো থাকবো পড়তে দিবো না তোমায়।
–ওটা কাদের ঘের?
–তুমি ঘের চিনো।
–হ্যাঁ চিনি তো আন্টি তো গ্রামের ছিল ওনার থেকে ছোট থাকতে অনেক গল্প শুনেছি।
আর আমি সবি চিনি।
অন্তত এটা বলব না ধান গাছে কি ফার্নিচার হয়।
আমার কথা শুনে রোদ হেসে দিলো শব্দ করে।
আমি ওর দিকে তাকালম
ওর হাসিটা মন কাড়া।
–আচ্ছা ওটা একটা চাচার ঘের ওখানে প্রায় সব গাছ আছে কিন্তু ওর মাঝেও কিন্তু পানি মাছ চাষ হয় বুঝেছো।
–হুম।
আমি এখানে বসে থাকি?
–খুব ভালো লেগেছে জায়গা টা।
–হুম।
–আচ্ছা বসো বাজার করে আসি এখানে খাবার মতো কিছু নেই।
–আচ্ছা।
রোদ চলে গেল আমি বেলকনি তে বসে রইলাম।
–যদি তোমায় জানাতে পারতাম সব সত্যি রোদ তবে আমাদের মাঝে কোন দুরত্ব থাকতো না।
থাকতো না কোন সমস্যা একটা সুন্দর সংসার হতো তোমার আর আমার।
ছোঁয়ার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়লো পানি।
মিষ্টি এই সুন্দর পরিবেশ আর প্রিয় জনের সাথে কাটানো প্রতিটা মুহুর্ত ছোঁয়া উপভোগ করতে চায়।
একটা মুহুর্ত ওয়েস্ট করতে চায় না।
দুপুরে,
রোদ বাজার করে নিয়ে আসে।
ঔষধ এর জন্য ছোঁয়ার জ্বর পরে গেছে।
রান্না করার জন্য এখানে কোন লোক নেই রোদ পড়লো মহা চিন্তায় বাজার তো করেছে কিন্তু রান্না কে করবে ছোঁয়া অসুস্থ ওকে কি বলা ঠিক হবে।
★★*
রোদের চিন্তা মাখা মুখটা দেখে আমি বুঝতে পারছি সমস্যা টা কি হয়েছে।
তাই গিয়ে রোদকে বললাম,
–রান্না টা আমি করি।
–না তুমি অসুস্থ।
–জ্বর পরে গেছে আমি পারবো।
–না দরকার নেই।
–আরে আমাকে একটু হেল্প করবেন তাতেই হবে সরুন আপনি।।
ওনাকে সরিয়ে কিচেনে গেলাম।
কাজ শুরু করলাম।
এখানে সবি আছে কিন্তু থাকার মতো মানুষ নেই।
যাক সময় গুলো ভালোই কাটছে।
আমি একে একে সব রান্না শেষ করি।
রোদ আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে সব হেল্প করে দেয়।
আমিও তার হেল্প পেয়ে সব রান্না ই শেষ করে ফেলেছি।
সব ধরে টেবিলে রাখবো তখনি রোদ আমার হাত ধরে বসে।
–তুমি গিয়ে গোসল করে নেও আমি এগুলে করছি।
–আচ্ছা।
আমি চলে এলাম।
চলবে,
(ডেয়ার পাঠক বিন্দ আইডি চেঞ্জ করাতে রেসপন্স চান্দে পাঠায়ছো তোমরা এটা মানা যায় না 🥺💔। গঠন মূলক মন্তব্য আসা করছি❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here