তুই যে শুধুই আমার পর্ব ১

ঠাস….ঠাস…ঠাস
” সাইন কর বলছি,, তা না হলে তোর সাথে ঠিক কি কি হবে তা তুই ভাবতেও পারবি না”

সায়রাঃ করবো না আমি সাইন,, আপনার যা ইচ্ছা তা করতে পারেন,,
নিজের গালে হাত রেখে কাদতে কাদতে বললো সায়রা,,থাপ্পড়ের ফলে সায়রার গাল লাল হয়ে গিয়েছে সাথে বেশ ফুলেও গিয়েছে,,
কিন্তু আরুশ সেই সব তক্কোয়া না করে সায়রার চুলের মুঠি ধরে বলে,,,

আরুশঃ কেন সাইন করবি না শুনি,, রিসাবকে বিয়ে করবি বলে,,

সায়রাঃ যদি বলি তাই,,

আরুশঃ তাহলে তা তুই ভুলে যা,, কেন না #তুই_যে_শুধুই_আমার,, তুই আমার ছাড়া আর কাউরো হতে পারিস না,, আমার বাদে অন্য কাউরো হওয়ার চিন্তা ভাবনা করলে তোকে জ্যান্ত পুতে দিব,,

সায়রাঃ আমি আপনার কেউ না শুনেছেন,, আমি আপনার কেউ নই আর না আপনি আমার কেউ,, আমি কোনদিনও আপনার হবো না,,

আরুশঃ ভালোই ভালোই বলছি সাইন করে দে,, তা না হলে এই লোক দেখানো বিয়ের আগেই তোকে আমি আপন করে নিতে বাধ্য হবো,, আর তা যে অবৈধ হবে না তা তুইও জানিস আর আমিও,, কিন্তু তা যে এই সমাজ জানে না,, তাদের চোখে যে এইটা অবৈধ হবে,, কেন না তারা আসল সত্যিটা জানে না,, তখন নাম তোরই খারাপ হবে,, তোর পরিবারকে দেখলে সবাই ছি ছি করবে,, তাই বলছি সুন্দর ভাবে সাইনটা করে দে,,

সায়রাঃ করবো না আমি সাইন,,পাগল হয়ে গিয়েছেন নাকি আপনি,, কিসব যা তা বলছেন,, মানি না আমি ওইসব,, আমাদের মধ্যে আগে কিছু থেকে থাকলেও বর্তমানে আমাদের মধ্যে কিছু নেই,, আছে শুধু ঘৃণার সম্পর্ক,, তাই এইসব পাগলামো বন্ধ করেন,,

আরুশঃ বাহ রে,, বললেই হলো যে আমাদের মাঝে কিছু নেই,, ভুলে যাস না তুই আমার বউ,, কিন্তু তার প্রমাণ আজ নেই বলে এই ভাবিস না যে সত্যিটা পাল্টে যাবে,, এই বিয়াটা আমি শুধু লোক দেখানোর জন্য করছি,, আর প্রমাণ করার জন্য তুই লিগালি আমার ওয়াইফ বুঝলি,, তা না হলে এই বিয়ের কোন দরকারই ছিল না,,

সায়রাঃ মানি না আমি সেই বিয়ে,, মানি না আপনাকে স্বামী,,কেন না যাকে আমি ঘৃণা করি তাকে নিজের স্বামী হিসাবে আমি কোন মতেই মানতে পারবো না,,, যে নাকি আমার বাবার অপরাধী তাকে আর যাই হোক স্বামী বলে মানা যায় না,,

আরুশঃ সায়রা শেষ বারের মত বলছি সাইন করে দে,, তা না হলে আমি যা করতে চাচ্ছি না তা করতে আমি বাধ্য হবো,,,

সায়রাঃ এছাড়া আর পারেন কি আপনি,, আপনার কথায় যদি কেউ অবাধ্য হয় তাহলে তার সর্বনাশ যে নিশ্চিত,, আর তার জীবন্ত প্রমান আমার বাবা আর আমি,,

আরুশঃ যা জানো না তা নিয়ে কথা কেন বলো,, তুমি যে আসল সত্যিটা জানো না,,,

সায়রাঃ থাক আপনাকে আর আসল সত্যিটা বলতে হবেনা,, বরং আসল সত্যিটা কি তা আমি বলছি,, আর সত্যি এইটাই যে আপনার জন্য আজ আমার বাবা আমার পাশে থেকেও নেই,, আমার কাছে থেকে অনেক দূরে,, আজ আপনার জন্য আমার উপর বাবার ছাঁয়া নেই,,

আরুশঃ তোমায় এখন সত্যিটা বললেও তুমি বিশ্বাস করবে না,, তাই এখন তোমায় তা বলতেও আমি ইচ্ছুক নই,, যখন সময় হবে তুমি আপনা আপনি সত্যিটা যেনে যাবে,, এখন চুপচাপ সাইন করো,,

সায়রাঃ করবো না,,

এইবার আরুশ রেগে যায়,, সে সায়রার চুলের মুঠি আরও শত করে ধরে বলে,,

আরুশঃ ভেবে বলছিস তহ,, যদি তুই এখন সাইন না করিস তাহলে শুনে রাখ আমি তোর আর তোর পরিবারের মান সম্মান সব ধূলোয় মিশিয়ে দিব,, সমাজে তুই আর কাউকে মুখ দেখাতে পারবি,, কলঙ্কিত হবি তুই সকলের কাছে,, আর এইদিকে তোর বাবার চিকিৎসাও অফ হয়ে যাবে,, চিকিৎসার অভাবে তোর বাবা এমনেই মরে যাবে,, কেউ তোদের সাহায্য করবে না,, এমন কি ফিরেও তাকাবে না,,
আর আমাদের মধ্যে যে পবিত্র সম্পর্কটি আছে তা সকলের কাছে অপবিত্রতে পরিনত করতে আমি বাধ্য হবো,,

সায়রাঃ না আপনি এইসব করতে পারেন না,, আপনি এত নিচে নামতে পারেন না,,

আরুশঃ তুই ভালো করে জানিস আমি কি করতে পারি তা তুই ভালো করেই জানিস,, তাই সাইন জলদি সাইন কর,,

সায়রা নিচের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ নিজের চোখের জল ফেলেই চলেছে,, মানুষ এতটা নিচ হতে পারে তা সায়রার জানা ছিল না,,
সায়রা এখন ভালো করেই জানে যে এখন যদি আরুশের কথা অনুযায়ী সাইন না করে তাহলে আরুশ যা বলছে সে ঠিক তাই করবে,, আর সায়রা যাই হোক নিজের বাবাকে হারাতে পারবে না,, বাবার জন্য যদি নিজের জান দিয়ে দিতে হয় তাহলেও সে খুশি খুশি দিয়ে দিবে,, সেখানে নরমাল একটা সাইন তহ কিছুই না,,
সায়রা নিজের চোখের জল মুছে রেজিস্ট্রার পেপার হাতে নিয়ে সাইন করে দেয়,, সাইন করার সাথে সাথে আরুশ পেপারটি নিয়ে নেয়,, আর এক বিশ্ব জয়ের হাসি দেয়,,

আরুশঃ আগে সাইনটা করে দিলে এত ড্রামা করা লাগতো না,, সে যাই হোক কনগ্রেচুলেশন মিসেস খান,, তুমি এখন পুরো পুরি ভাবে আমার হয়ে গিয়েছ,, এখন কেউ চাইলেও আমাদের আলাদা করতে পারবে না,,

সায়রাঃ আমাকে পাওয়ার জন্য এত নিচে না নামলেও পারতেন,, সেই যাই হোক যদি মনে করে থাকেন এই কাগজের জোরে আমি আপনাকে স্বামী মানতে বাধ্য হবো তাহলে আপনি ভুল,, কেন না আমি আপনাকে স্বামী হিসাবে মানি না,, আর না কোন দিন মানবো,, আমার সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই এক্সেপ্ট ঘৃণার,,

আরুশঃ ভালবাসা হোক আর ঘৃণারই হোক আমাদের মধ্যে যে সম্পর্ক আছে এইটা মেইন ফ্যাক্ট,, আর তুমি চাইলেও কি আর না চাইলেও কি তুমি আমার,,, আর আজীবন আমারই থাকবা,, তাই আমার থেকে দূরে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা মাথা থেকে ঝেরে ফেলে দাও,, #তুই_যে_শুধুই_আমার কথা একদম মাথায় গেথে নাও,,, এতেই তোমার মঙ্গল,,

এই বলে আরুশ দরজা লাগিয়ে হনহনিয়ে চলে যায়,, আর সায়রা নিচে বসেই কাদতে থাকে,,
সায়রা আজ সেইদিনকে দোষারোপ করছে যেইদিন ওর আর আরুশের পরিচয় হয়,, না আরুশের সাথে ওর দেখা হতো,, না আরুশ ওর জীবনে আসতো আর না আজ পরিস্থিতিটা এমন হতো,, সায়রার ডুব দিচ্ছে সেই ২ বছর আগের স্মৃতিতে,,, যেখান থেকে এই গল্পের সূচনা,,


🍂🍂 ফ্ল্যাশব্যাক 🍂🍂
.
.
🌻🌻 ২ বছর আগে 🌻🌻
.
.
নিশিঃ সজিব এই ফুল গুলো এইখানে কেন,, এইগুলা তহ স্যারের কেবিনে থাকার কথা,, যাও জলদি তার কেবিনে রেখে আসো,,,

সজিবঃ জ্বী ম্যাম,,

নিশিঃ আর এইখানে এত ময়লা কেন,, রহিম কাকা,, রহিম কাকা,,

রহিম কাকাঃ জ্বী ম্যাম বলেন,,

নিশিঃ দেখ এইখানে কত ময়লা,, স্যার যদি এইসব দেখে তাহলে তহ আমার খবর করে ছাড়বে,, তুমি প্লিজ এই জায়গাটা আবার পরিষ্কার করে দাও না,,

রহিম কাকাঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,

নিশিঃ রিমি স্যারের ওয়েলক্যামের জন্য ফুল রেডি তহ,,

রিমিঃ ওইটা তহ সায়রা আনতে গেছে,,,

নিশিঃ হোয়াট,, আর কাউকে পাও নি ফুল আনার জন্য,, এই মেয়ে তহ নির্ঘাত কোন না কোন গন্ডগোল করবে,, তুমি ভালো করেই জানো স্যার কতটা রাগি তার উপর কোন রকমের ভুলঝুক মাফ করে না,, প্লাস তিনি অনেক পাঙ্কচুয়াল,, তার মধ্যে সায়রা হচ্ছে লেট লতিফের নানীর বড় মা,,
আজ তহ ওর খবর আছে,,

রিমিঃ সরি ম্যাম আমি বুঝি নি,,

নিশিঃ যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে,,, এখন আল্লাহর কাছে দোয়া কর যাতে সায়রা ঠিক টাইমে চলে আসে,, তা না হলে ওর ভাগ্যে শুক্র শনি রবি সোম সব এসে ঝেঁকে বসবে,,

এই বলে নিশি মাথায় হাত দিয়ে বসে,,


🍂🍂 এইদিকে 🍂🍂


#চলবে
.
.
#তুই_যে_শুধুই_আমার [ ❤You are only mine❤]
🌼 #সিজন_২ 🌼
#Part_1
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat [ Tanzin Islam Ishika ]
.
.
[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here