তুমিময় বেদনা পর্ব -১২ ও শেষ

#তুমিময়_বেদনা~
#Mst_Nafisa~
#Part_12 (এবং শেষ পার্ট)

(নিচের লেখা গুলো পড়বেন অবশ্যই)

রাত ১১ টা বাজে ঘড়িতে একটা গোডাউনে হাত পা বা/ধা অবস্থায় দুই জন চাইরে বসে আছে। তার সামনে শয়তানি হেসে পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে জিসান খান। মুখে শয়তানি হাসি থাকলেও চোখ দিয়ে যেনো আগুন ঝরে পরছে। জিসানের এই রুপ দেখে সামনে বা/ধা অবস্থায় থাকা মানুষ দুটি ভয়ে কাপছে। জিসানের এই রুপ তাদের চেনা তাড়া এটাও বুঝতে পারছে আজ তাদের শেষ দিন আবুল ভয়ে বেশ লজ্জাজনক একটা কাজ করে বসলো। আরিয়ান খান ভয়ে ভয়ে জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে সে যেনো কিছু বলতে চাইছে কিন্তু মুখ বা/ধা থাকায় বলতে পারছে না শুধু উম উম আওয়াজ করছে। জিসান একজন বডিগার্ড কে ইশারা করে, বডিগার্ড বুঝতে পেরে আরিয়ান খানের মুখ খুলে দেয়। আরিয়ান মুখ ছাড়া পেয়ে হাপাতে লাগে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে উঠে।

“আমাদের তো পুলিশে দিয়েছিলে আবার এখানে কেন নিয়ে এলে।”

জিসান শয়তানি হাসি দিয়ে বলে।

“ভাবলে কি করে ছোট আব্বু তুমি আমার আব্বু কে খুন করবে আর আমি তোমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য পলিশের হাতে তুলে দিবো? ”

আরিয়ান বেশ ভয় পেয়ে বলে।

“দেখো বাবাই আমি তোমার ছোট আব্বু হয় আমাকে শেষ বারের মতো মাফ করে দাও আমি তোমার আর ভাবির পায়ে পরে ক্ষমা চাইবো।”

“তোর মতো মানুষের ক্ষমা পাওয়ার ও যজ্ঞ না, তোকে আমি সব সময় বাবার যায়গা দিয়েছি ভালোবেসেছি আর তুই কি করলি? তোর বে/চে থাকারই অধিকার নেই মিস্টার আরিয়ান।” (রেগে বলে জিসান)

আরিয়ান আরও কিছু বলতে নিচ্ছিলো কিন্তু তার আগেই জিসান বু/লে/ট ভর্তি গা/ন সব আরিয়ানের বুকে গিয়ে মারে। সঙ্গে সঙ্গে প্রানপাখি বেরিয়ে যায়। একি কাজ করে আবুকের সঙ্গে।

“এদের লা/শ ও যেনো কেউ খুঁজে না পায় কেউ এমন ব্যাবস্থা করো।”

বলেই চলে যায় জিসান সেখান থেকে। এখান থেকে বাসায় গিয়ে যে রুমে ঢুকেছে আর বের হয়নি। ভিষণ ভাবে আঘাত পেয়েছে জিসান আপন মানুষের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা পেয়ে। আরিয়ানকে আব্বুর মতো দেখতো কখনো পর ভাবে নি অথচ সেই মানুষ টাই জিসানের জীবনের একমাত্র কাল সাপ। নিজের হাতে খু/ন করে রাগ মিটালেও জিসানের খুব খারাপ লাগছে।

এই নিয়ে পাচ বারের মতো ডেকে গেছে মিহু তবুও জিসান আসেনি। এবার বেশ রেগেই দরজায় বারি দেয় মিহু কিন্তু জিসান আগেই দরজা টা খুলে দিয়েছিলো এবার তাই মিহু জরে ধাক্কা দেওয়ায় দরজা খুলে যায় আর মিহু নিজেকে সামলাতে না মেরে রুমের মেঝেতে পরে। জিসান গোসল করে মাথা মুচতে মুচতে বের হয়ে মিহুকে পরে যেতে দেখে থমকে যায়। গিয়ে যে ধরবে সেই সুযোগ টাও পেলো না জিসান। মিহু রাগি চোখে জিসানের দিকে তাকায় জিসান মিহু কাছে এসে হাত বারিয়ে দেয় উঠানোর জন্য কিন্তু মিহু হাত না ধরে নিজেই উঠে দাঁড়ায়। রাগি গলায় বলে,,

“খেতে চাইলে নিচে এসে খেয়ে নিবেন।”

বলেই হনহনিয়ে চলে যায় রুম থেকে এই দিকে জিসান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সে বুঝলোই না মিহু এমন করলো কেন কিছুক্ষন পরে যখন বুঝলো তখন নিজেই হেসে দিলো জিসান।

রাগ খুনশুটি ভালোবাসা নিয়ে কেটে যায় কিছুদিন। জিসান আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে আরিয়ানের বিষয় টা ভুলে গেছে। এখন অফিস টু হোম, হোম টু অফিস করে জিসান আর মাঝে মধ্যে মিহুকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া। বেশ ভালোই যাচ্ছিল দিন তাদের,, জিসানের মিহুর প্রতি ভালোবাসা দিন দিন বারতেই থাকছে।

মিহু আজ বায়না ধরেছে জিসানের কাছে সে ঘুরতে যাবে। জিসান ও মিহুর কথা রাখে বিকেলের দিকে দুই জনে ঘুরতে বের হয়।

জিসান ড্রাইভিং করছে কথায় যাচ্ছে সে নিজেও জানে না,, কারণ মিহু বলেছে গাড়ি না থামাতে। জিসান জিজ্ঞেস করেনি কথায় যাচ্ছি সে শুধুই ড্রাইভ করছে, জিসান বেশ বুঝতে পারছে মিহুর মন ভালো নেই। দুই জনে চুপ করে আছে এবার আর চুপ থাকতে না পেরে জিসান নিজেই বলে।

“আর ইউ ওকে মিহু?”

জিসানের কথায় মিহুর ধ্যান আসে এতোক্ষন জানালার বাইরে তাকিয়ে ছিলো।

“কখনো যদি বুঝতে পারেন আমি আপনাকে মিথ্যে বলেছি তাহলে কি করবেন আপনি?”

“আমি জানি তুমি কখনো মিথ্যে বলতেই পারো না।” (জিসান হেসে বলে)

“কাউকে এতো বেশি বিশ্বাস করতে নেই জিসান, আপনার ছোট আব্বুকেও আপনি অনেক বেশি বিশ্বাস করতেন অথচ সে কি করলো? ”

“তুমি আর ছোট আব্বু সম্পুর্ন আলাদা মিহু,, ছোট আব্বু আগে থেকেই সব কিছু প্লান করে সাজিয়ে রেখেছিলো,, আমাকে জাস্ট তার এই নোংরা খেলায় গুটি হিসেবে রেখেছিলো তারই শাস্তি ও পেয়েছে। কিন্তু তুমি আমার কাছে আলাদা তুমি আমার সঙ্গে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করবে না এটা আমি জানি।”

জিসানের কথা শুনে খুব কান্না পেলো মিহুর কিন্তু মিহু কান্না করলো না। জিসানের বুকে মাথা রাখলো মিহু জিসান ও মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। বেশ কিছুক্ষণ পরে মিহু বলে উঠে।

“শপিংমল নিয়ে চলুন আমার কিছু কেনার আছে।”

জিসান ও কথা বারালো না শপিংমল নিয়ে গেলো,, জিসান মিহু শপিংমলে ঢুকতেই জিসানকে দেখে আসে পাসের লোক ভয়ে একটু জড়োসড়ো হয়ে গেলো। জিসান ব্যাপার টা খেয়াল করলো কিন্তু কিছু বললো না,, মিহুও দেখলো তখন মিহুর মাথায় একটা প্লান আসে আর তাই করতে লাগে। মিহু জিসানের হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় আচমকা এমন করাই জিসান অবাক হয়। আর আসে পাসের মানুষ ও হা করে তাকিয়ে আছে। তাড়া হয়তো ভাবছে এতো বড়ো মাফিয়া কে এমন টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

মিহু একের পর এক শপিং করেই যাচ্ছে আর সব জিসানের হাতে দিচ্ছে। জিসান আসে পাসে তাকিয়ে দেখে সবাই ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে। জিসান বুঝতে পারছে না মিহু করছে টা কি। একের পর এক শপিং ব্যাগ জিসানের হাতে জিসান ঠিক ভাবে হাটতেও পারছে না। এবার আসে পাসের লোক জন ভয় না পেয়ে মিটিমিটি হেসে যাচ্ছে। জিসান সেটা বুঝতে পেরে চোখ রাংগিয়ে তাকায় আর সবাই নিজের কাজে লেগে যায়। এতো খনে সবাই বুঝতে পেরে গেছে এই রাগি মাফিয়ার ওপরেও কেউ আছে আর সেটা হলো মাফিয়া জিসানের বউ।

সব শপিং শেষ করে বাসায় ফিরে তাড়া, জিসান রুমে এসে ঠাস করে বেডে পরে যায়। অনেক ক্লান্ত সে,, মিহু ফ্রেশ হয়ে আসে। তারপর জিসান যায়, জিসান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে শপিং ব্যাগ গুলো আলমারি তুলছে মিহু। জিসান মিহুর পিছনে গিয়ে জরিয়ে ধরে বলে।

“আজ পাব্লিকে বুঝিয়ে দিলে তো কলকাতার মাফিয়া ও একজনের কথায় উঠে বসে। ”

“হ্যাঁ দিলাম কেন সবাই আপনাকে ভয় পাবে? আপনি মাফিয়া ছেরে দিবেন স্বাভাবিক হয়ে থাকবেন সবাই আপনাকে দেখে ভয় না যাতে সম্মান করে।”

“বুঝলাম ম্যাডাম, আচ্ছা আমি সব ছেরে দিবো শুধু তোমার জন্য। ভালোবাসি বউ পাখিটা।”

।।

কিছুদিন স্বাভাবিক দিন কাটার পর হুট করে একদিন জিসান বাসায় ফিরে মিহু দেখতে পায়না। এদিক সেদিক খুঁজে তবুও পায়না। বাড়ির কাজের লোক, মাহিরা খান সবাই কে জিজ্ঞেস করে তাদের একটাই কথা “সকালে বের হয়েছিলো এখনো ফেরেনি”। জিসানের রাগ বেরে যায় সকালে বের হয়েছে আর এখন রাত ৮ টা বাজে বাড়ি ফিরেনি। আর জিসান কে কিছুই বলা হয়নি। কাজের লোক দের বকাবকি করতে লাগে জিসান। মিহুর নাম্বারে ফোন লাগায় বার বার কিন্তু মিহুর ফোন বন্ধ। মিহু সকাল থেকে নিখোঁজ জেনেও মাহিরা খানের কোন হেলদল দেখতে পেলো না কেউ। জিসানের অবস্থা পাগলের মতো রেগে বাসার জিনিসপত্র ছুড়ে মারছে। ফোন করে বডিগার্ড পলিশ সবাইকে মিহুর খোজে লাগিয়ে দেয়। জিসান নিজেও বেরিয়ে যায় মিহুর খোজে। পাগলের মতো খুঁজে চলেছে জিসান মিহুকে কিন্তু কথাও পায়না। হুট করে জিসানের মনে হলো মিহু তার মামার বাসায় যায়নি তো আবার। কিন্তু জিসান তো মিহুর মামার বাসার ঠিকানা জানে না মিহু বলেনি কখনো আর জিসান জানতেও চাইনি। রাগে গাড়ি তে এক লাত্থি দেয় জিসান,, নিচে রাস্তায় বসে পরে কান্না করে জিসান আর নিজে নিজে বলে।

” কথায় গেলে মিহু প্লিজ ফিরে এসো তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না প্লিজ কাম ব্যাক।”

বেশ কিছুক্ষণ কান্না করে জিসান ভাবতে লাগে আর কে তার শত্রু আছে। আর কে এমন আছে যে জিসানের খারাপ চাই। জিসান মনে করতে পারছে না এমন কে আছে। মাফিয়া তে কাজ করে তো কম শত্র তৈরি হয়নি তার কাকে ধরবে সে। খুব অসহায় লাগছে জিসানের নিজেকে হারিয়ে ফেললো না তো তার তেজপাতা কে। কি করে থাকবে মিহু কে ছাড়া জিসান।

পরের দিন সকাল ১০ টা,, ডালি জিসানের রুমে এসে জিসান কে ডাক দিয়ে বলে।

“স্যার মিহু এসেছে উঠুন।”

জিসান ধরফিরিয়ে উঠে বসে,, কাল রাতে কান্না করতে করতে রাস্তায় জ্ঞান হারিয়ে ছিলো জিসান। সঙ্গে থাকা কিছু বডিগার্ড জিসানকে বাসায় নিয়ে আসে। জিসান রুম থেকে বেরিয়ে তাড়াতাড়ি নিচে নেমে আসে, নিচে এসে দেখে মিহু দাঁড়িয়ে আছে জিসান ছুটে গিয়ে মিহুকে জরিয়ে ধরে আর বলে।

“কথায় চলে গিয়েছিলে তুমি? তুমি জানো আমি তোমাকে কতো খুঁজেছি। আমার প্রান বেরিয়ে যাচ্ছিলো তোমাকে না পেয়ে এমন কেন করলে আমাকে না বলে বাসা গেলে কেন? তুমি জানো না তুমি দূরে গেলে আমার কতটা কষ্ট লাগে। আমি কাল এক বারের জন্য ভেবেই নিয়েছিলাম আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি। ভালোবাসি বউপাখি এমন আর করো না প্লিজ।”

মিহু জিসানকে এক ধাক্কায় দূরে সরিয়ে দেয়। জিসান কিছুটা দূরে সরে যায় অবাক হয়ে মিহুর দিকে তাকায়। এবার জিসান খেয়াল করে মিহুকে,, আগের মতো শাড়ি সালোওয়ার পরে নেই মিহু। মিহুর পরনে কালো জিন্স সাদা শার্ট পরা। আগের মতো চুল খোলা বা বেনি করা নেই, উচু করে ঝুটি বাধা। মিহুর এমন রুপ দেখে অবাকের সাত আসমানে উঠে গেছে জিসান। এবার জিসান মিহুর আসে পাসে খেয়াল করে। মিহু পিছনে দাঁড়িয়ে আছে আরও তিন টা মেয়ে আর চারটা ছেলে। পাসে দাঁড়িয়ে আছে পুলিশ। জিসান কিছুই বুঝতে পারছে পলিশ কেন এসেছে আর মিহুর এমন রুপ কেন? কিন্তু মিহু এবার যা করলো তাতে জিসান আরও বেশি অবাক হলো। মিহু জিসানের কাছে হ্যান্ডকাফ নিয়ে গিয়ে বলে।

“ইউ আর আন্ডার অ্যারেস্ট মিস্টার আহনাফ জিসান খান।”

জিসান অবাক হয়ে বলে।

“মিহু তুমি….(জিসান কে থামিয়ে)

” পি.এ অরফে প্রাচী অরোরা।” (মিহু জিসানের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে।)

জিসান যেনো এবার নিজেই একটু ধাক্কা খায়। এতো দিন যার খোজ চারিদিকে লোক লাগিয়েও কেউ দিতে পারি নি সে কি না তার বাসায় তারই বউ। জিসান বলে,,,

“তুমি মজা করছো তাই না? আমি জানি তুমি সে না তুমি আমার মিহু আমার বউ তুমি আমাকে ভালোবাসো।”

“ওহ শাট আপ মিস্টার জিসান খান! বোকার মতো কথা বলবেন না আমি আপনাকে ভালো কখনোই বাসি নি। আমি জাস্ট আমার কাজের জন্য আপনাকে ব্যবহার করেছি।”

“মিথ্যে বলছো তুমি আমি এসব বিশ্বাস করি না। তুমি চাও তো আমি ভালো হয়ে যায়? হ্যাঁ আমি ভালো হয়ে যাবো সব কিছু ছেরে দিবো পুলিশের কাছে নিজে গিয়ে সালেন্ডার করবো। তবুও প্লিজ তুমি এসব বলো না আমি তোমাকে বিশ্বাস করি আমার বিশ্বাস ভেজ্ঞে দিও না প্লিজ।”

“এই আপনি মাফিয়া? আপনার ব্যাপারে যা শুনেছিলাম আপনাকে ধরা নাকি অসম্ভব দেখুন আমি সম্ভব করে দিলাম। আপনার বাসায় আপনার খেয়ে আপনারই বিরুদ্ধে প্রমান জোগার করলাম। তারিফ তো করতেই হয় আমার তাই না? অবশ্য এই কাজ সাকসেসের জন্য আমাকে গোয়েন্দা টিমের হেইড মানানো হবে।”

ডালি বলে।

“তার মানে তুমি প্লান করে এই বাসায় এসেছো মিহু?”

মিহু মুচকি হেসে জবাব দেয়।

“হ্যাঁ প্লান করেই এসেছি, আমি অনাথ না আমার আব্বু আম্মু আছে মামা মামি ও আছে কিন্তু তাড়া এতো খারাপ না যে আমাকে বুড়োর সঙ্গে বিয়ে দিবে। ছোট থেকেই গোয়েন্দা হওয়ার আমার খুব ইচ্ছা আর বড়ো হয়ে হয়েও গেলাম,, জিসান মাফিয়ার নাম অনেক শুনেছি তাই আমার প্রথম কেইস জিসান খান কে দিয়েই শুরু করি। প্রথমে ভেবেছিলাম জিসান খানের কাছে আসতে আমাকে অনেক কাঠখড় পোহাতে হবে। কিন্তু সেদিন যখন আমাকে তার বাসায় নিয়ে এলো তখন তো আমার জন্য মেঘ না চাইতে জল পাওয়ার মতো অবস্থা ছিলো। তখন থেকেই এই বাসায় থাকি আর এই বাসার মালিকের বিরুদ্ধে প্রমান খুঁজতে লাগি। একসময় বুঝতে পারি জিসান খান মিহু মানে আমার প্রতি দুর্বল। যদিও আমি প্রথমে চাইনি যে জিসান আমার প্রতি দুর্বল হোক কারণ আমি তার মন নিয়ে খেলতে চাইনি তাই। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম জিসানের সঙ্গে প্রেমের নাটক করলে আরও কিছু তথ্য জানা যাবে সহজে। তাই আমি সাই দিলাম, কিন্তু এই জিসান খুব ফাস্ট আমাকে বিয়েই করে নিলো। তারপরে একে একে সব প্রমান বের করি। যদিও এই গেইমের লিডার ছিলো আরিয়ান খান জিসান খান মাত্র গুটি। তাই আরিয়ান খান কেই আগে ধরলাম। কিন্তু এই জিসান কে আমি বলেছিলাম আরিয়ান খান কে পুলিশের হাতে তুলে দিতে কিন্তু না উনি নিজেই শাস্তি দিবে। আবার দুটো খু/ন করে জিসান তার ভিডিও ফটো ও আছে আমাদের কাছে।”

মিহু কথা শেষ করতেই জিসান এবার রেগে এসে মিহুর গলা টিপে ধরে বলে।

“বিশ্বাসঘাতক তুইও আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলি। তুই যদি আমাকে এসে বলতি পুলিশের হাতে সালেন্ডার হতে আমি হাসি মুখে হয়ে যেতাম। তুই জানিস ও না এই জিসান এই খারাপ লোক তোকে কতটা ভালোবাসে আর তুই তার ভালোবাসা কে নিয়ে এভাবে খেল্লি।”

মিহু জিসানকে ছাড়িয়ে বলে।

“আপনি নিজে থেকে মাফিয়া দলে জগ না দিলেও আপনি অন্যাই করেছেন। যেটা পুলিশের কাজ সেটা আপনি নিজে করেছেন সত সত খু/ন করেছেন। এটার জন্যও আপনাকে শাস্তি পেতে হবে।”

জিসান আর কিছুই বলে না চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। মিহু পুলিশ কে ইশারায় বুঝিয়ে দেয় জিসান কে নিয়ে যেতে। পুলিশ জিসানকে ধরবে তার আগে জিসান ডালির কাছে গিয়ে বলে।

“আম্মুর খেয়াল রেখো আমি খুব তাড়াতাড়ি ফিরবো।”

এই বলে জিসান মিহুর কাছে আসে আর মিহুকে বলে।

“এই বিশ্বাসঘাতকতার ফোল তোমাকে পেতেই হবে মিস মিহু উফ সরি মিসেস প্রাচী অরোরা। জিসানের সঙ্গে ভালোবাসার নাটক করার ফল তোমাকে পেতে হবে। বাট একটা কথা বুঝলাম না ভালোবাসার নাটকের খেলাই এতোই মত্ত ছিলে যে একটা আসামির সঙ্গে শুয়েও পরলে ব্যাপার টা মজার তো।” (শয়তানি হেসে বলে জিসান)

মিহু রেগে মুখ ফিরিয়ে নেয় জিসানের থেকে। জিসান মিহুর মুখ ধরে আবার জিসানের সামনে এনে বলে।

“এখন আমি যাচ্ছি তবে আমি খুব জলদি আসবো ফিরে। আমাকে আটকিয়ে রাখা এতো সোজা না,, এই মাফিয়ার থেকে পুরো কলকাতা তো মুক্তি পাবে কিন্তু তুমি, তুমি আমার কাছ থেকে মুক্তি পাবে না চরম শাস্তি পাবে তুমি। আবার দেখা হবে আল্লাহ হাফেজ। ”

এই বলে জিসান পুলিশের সঙ্গে চলে যায়। মিহু আর নিজেকে শক্ত রাখতে না পেরে ছুটে যায় মাহিরা খানের রুমে। সেখানে গিয়ে মাহিরা খান কে জরিয়ে ধরে হাও নাও করে কেদে দেয় মিহু। মাহিরা খান কিছুই বলে না শুধু মিহুর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। সে সব টাই জানে আগে থেকে আর এটাও বুঝে তার ছেলে ইচ্ছে করে হক আর অনিচ্ছাই হক অনেক পাপ করেছে তার শাস্তি পাওয়া জরুরি।

জিসান হয়তো তার ছোট আব্বুর কথায় মাফিয়া জগতে এসেছে কিন্তু খু/ন সে নিজেই করেছে অনেক মানুষের। হয়তো তাড়া ভালো মানুষ ছিলো না কিন্তু তাদের শাস্তির জন্য পুলিশ ছিলো পুলিশের হাতে না দিয়ে জিসান নিজেই মে/রে ফেলেছে তাদের। কাউকে খু/ন করার অধিকার জিসানের নেই এমন কি কারোর নেই। মিহু জিসানকে ভালোবাসে কিন্তু মিহু একজন গোয়েন্দা টিমের মেম্বার। ওর ডিউটি ছিলো এটা জিসানকে ধরিয়ে দেওয়া পুলিশের কাছে ও সেটাই করেছে। যেকোনো পাপের শাস্তি হবেই হক সেটা বড়ো বা ছোট।

—————- সমপ্ত ——–

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here