#তুমিময়_বেদনা~
#Mst_Nafisa~
#Part_9
(নিচের লেখা গুলো অবশ্যই পড়বেন)
সকালে নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা করছে জিসান মামনি আরিয়ান খান। মিহু পাসে দাঁড়িয়ে আছে, মিহুকে জিসান বলেছিল বসতে কিন্তু মিহু বসেনি পরে খাবে বলে। আরিয়ান খান এক টুকরো মুখে পরটা পুরি জিসানকে উদ্দেশ্য করে বলে।
“আমাকে কিছু দিনের জন্য বাইরে যেতে হবে তুমি এই দিকটা সামলে নিতে পারবে?”
জিসান পানি খেয়ে বলে।
“কথায় যাবে তুমি?”
“তুমি তো জানো বাবাই আমাকে তোমার বিদেশের কাজটা দেখতে হয় তাই ওখানেই যেতে হবে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে নাকি।”
“ওহ! ঠিক আছে যাও।”
বলেই জিসান উঠে গেলো জিসানের খাওয়া শেষ তাই। রুমে যাওয়ার আগে ইশারায় মিহুকেও বলে রুমে আসতে, মিহু ও গেলো জিসানের পিছু পিছু। জিসান মিহু চলে যাওয়ায় মামনিও চলে যেতে নিচ্ছিলো ঠিক তখন আরিয়ান বলে উঠে।
“তোমার আদরের ছেলের শেষ দিনের ব্যাবস্থা করতে যাচ্ছি আমি, তার পর থেকে এই খান বাড়ি কোম্পানি সব কিছু আমার।”
“আমার ছেলের শেষ দিনের ব্যাবস্থা করতে গিয়ে না নিজের শেষ দিন চলে আসে, অনেক পাপ করেছো তুমি এবার তোমার শেষ দিন ঘনিয়ে আসছে।”
কথা গুলো আরিয়ানকে শুনিয়ে বলার ইচ্ছে থাকলেও বলতে পারলো না মামনি, মনে মনে বললো আরিয়ান খানের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে থেকে। মামনি চলে যায় সেখান থেকে, আরিয়ান খান অবাক হয় তার কথায় ভয় না পেয়ে তেজ নিয়ে চলে যাওয়ায়।
“এতো কিছু হয়ে গেলো এতো বছর বেডে ফেলে রাখলাম এখন পর্যন্ত কথা বলতে পারছো না তবুও তেজ কমেনি তোমার মাহিরা। আগেও তেজ দেখিয়ে আমাকে অবহেলা করেছো আর এখনও। একবার সব কিছু আমার হাতে চলে আসুক তোমাকে আমি উচিত শিক্ষা দিবো।” (নিজে নিজে বলে বেরিয়ে যায় আরিয়ান খান)
জিসান রুমে এসে মিহুকে জড়িয়ে ধরে, মিহু জিসানকে ছাড়িয়ে বলে।
“আপনার ছোট আব্বু আপনার কোন কোম্পানি দেখা শুনা করে?”
“সুইডেনে আমার একটা কোম্পানি আছে সেটাই দেখাশুনা করে ছোট আব্বু তাই বেশির ভাগ ওখানেই থাকতে হয়। আর ওটা এখন তোমার ও ছোট আব্বু হয় তাই ছোট আব্বু বলে ডাকবে। ”
জিসানের কথায় বুঝলো মিহু জিসান এই খারাপ লোকটাকে অনেক সম্মান আর বিশ্বাস করে। মিহু মুচকি হেসে বলে।
“আচ্ছা বলবো।”
“হুম এখন আমাকে আদর করো একটু বাইরে যেতে হবে।”
“পাগল আপনি সব সময় আদর কিসের যান আপনি আপনার কাজে।”
জিসান মিহুকে জাপ্টে ধরে বলে।
“শুধু পালিয়ে পালিয়ে যাও কেন আমার থেকে বলো তো, এখন আমাকে কিস না দিলে আমি ছারবো না বাইরেও যাবো না সারাদিন এমন করেই ধরে বসে থাকবো।”
মিহু পরে মহা বিপদে, এই জিসানের অত্যাচার দিন দিন বারতেই থাকছে। রোমান্টিক অত্যাচার যাকে বলে, আজ বিয়ের পাচ দিন এই পাচ দিনে জিসান মিহুকে কতো রকমের বাহানায় কাছে এনেছে। মিহু জানে জিসানকে কিস না করলে ছাড়বে না তাই উঁচু হয়ে কিস করে জিসানকে। কিছুক্ষণ পরে জিসান ছাড়ে মিহুকে, মিহুর কপালে চুমু দিয়ে মুচকি হেসে বাই বলে চলে যায়।
।।।
“খবর নাও জিসান খানের সুইডেনে কোনো কোম্পানি আছে না-কি।”
“এক ঘন্টার মধ্যে যানাচ্ছি।”
একঘন্টা পরে আবার ফোন ভেজে উঠে, তাড়াতাড়ি রিসিভ করে বলে।
“হুম বলেন কি খবর?”
“জিসান খানের পাচ বছর আগে সুইডেনে কিছু কোম্পানি কিন্তু সেটা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে পাচ বছর আগে। এখন জিসান খানের সুইডেনে কোনো কোম্পানি নেই।”
“আগেই বুঝেছিলাম আমি, যাই হক আপনি আরিয়ান খানের দিকে নজর রাখুন উনি বলে গেছে উনি সুইডেনে যাচ্ছে তবে উনি যে সেখানে যাচ্ছে না সেটা আমি জানি। উনি কথায় যাচ্ছে সব খবর আমাকে দিবেন। আমাদের কাজ সফল হওয়ার আর বেশি দিন নেই খুব কাছেই চলে এসেছি। এর মধ্যে কোনো ঝামেলা আমি চাইনা এই খেলার শেষ পর্যায়ে এসে আমি এলিমেট হতে চাই না। দেখে শুনে কাজ করেন।”
“সব ঠিক আছে পি.এ তবে একটা খবর পেলাম মিস্টার জিসান আপনার খোজে বের হয়েছে। এতো দিন তার লোক দিয়ে খোজ নিলেও এখন উনি নিজেই খুঁজে বেরাচ্ছে আপনাকে। আজ পর্যন্ত কেউ এভাবে থাকতে পারেনি যতটা আপনি পেরেছেন আপনি সাবধে থাকুন।”
“জিসান আমাকে ধরতে পারবে না যতক্ষণ না আমি নিজে তার সামনে যাচ্ছি, উনি খুঁজে বেরাচ্ছে তো খুঁজতে দেন বাকিটা আমি দেখে নিবো। জাস্ট কিছু দিনের অপেক্ষা এই আরিয়ান খান ফিরে আসলেই তার রুপ সামনে নিয়ে আসবো সবার।”
ফোনের ওপাস থেকে রাসেল বলে উঠে।
“আরেকটা কথা পি.এ এই জিসান খানকে যেমন ভেবেছিলাম উনি কিন্তু তেমন না। জিসান খানের নামে যত গুলো বেয়াইনি গোডাউন, নারী পাচারকারী দের সঙ্গে মিল, এসবের মাস্টার্স মাইন্ড কিন্তু আরিয়ান খান। এই লোক বড্ড চালাক জিসান খানকে জাস্ট ব্যাবহার করছে আর কিছুই না আমার তো মনে হয় জিসান খান জানেই না তার পিছুনে তারই ছোট আব্বু এতো কিছু করে বেরাচ্ছে তার নামে। আরিয়ান খান শুধু সুজগ নিচ্ছে জিসানের এই কলকাতার সব লোক জিসান খানকে মাফিয়া বলে ভয় পায় সেই ভয় টাই কাজে লাগাচ্ছে আরিয়ান খান।”
“জানি আমি এসব, আগেই খবর নিয়ে রেখেছি আর প্রমান ও আছে আমার কাছে, খুব বড়ো প্রমান আছে। আচ্ছা এখন রাখি পরে কথা হবে বাই।”
।।
জিসান খুব রেগে বসে আছে নিজের অফিস রুমের চাইরে। রাগে তার শরীর কাপছে, এতো দিন এই একটা লোককে খুঁজে বের করতে পারেনি কেউ। ডালি সহ আরও কিছু লোক মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে ভয়ে কাপছে জিসানের রাগ দেখে। ডালি কাপাগলায় বলে উঠে।
“স্যার এই পি. এ কোন ছেলে না এটা একটা মেয়ে।”
ডালিকে থামিয়ে জিসান রেগে বলে।
“মেয়ে হয়ে এতো দূর কি করে আসতে পারে ডালি? আজ পর্যন্ত কেউ আমার ব্যাপারে এতো কিছু বের করতে পারেনি আর এই মেয়ে কি করে পারছে, পুরো নাম কি এই মেয়ের জানতে পেরেছো?”
ডালি সুকনো এক ঢক গিলে বলে।
“প্রাচী অরোরা।”
জিসান এই নাম টা দুই তিন বার বললো আর মনে মনে ভাবে।
“কথায় লুকিয়ে আছে এই মিস প্রাচী অরোরা এই মধ্যে এতো সাহস আসে কই থেকে। যাই হক আমি তোমাকে বের করেই ছারবো মিস প্রাচী অরোরা।” (মনে মনে)
।।
ভিষণ ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে জিসান। রুমে এসে ফ্রেশ হতে চলে যায়। মিহু জিসান এসেছে দেখে কফি করে রুমে নিয়ে যায়। বাইরে থেকে এসে কফি খাওয়ার অভ্যাস জিসানের। রুমে এসে দেখে জিসান ওয়াশরুমে আছে, কফিটা টি টেবিলে রেখে রুম টা ঠিক করতে লাগে মিহু। বেড ঠিক করার সময় মিহুর চোখে পরে জিসানের ফোন সেখানে একটা মেসেজ এসেছে তাই আলো জ্বলে উঠেছে। মিহু ফোনটা হাতে নিয়ে মেসেজ টা দেখতে যাবে তার আগেই জিসান মিহুকে পিছুন থেকে জড়িয়ে ধরে মিহু চট করে ফোন টা আগের যায়গায় রেখে দেয়। জিসান ক্লান্তি জরানো ভয়েসে বলে।
“আই লাভ ইউ তেজপাতা।”
মিহু উত্তর না দিয়ে বলে।
“আপনাকে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে আজ কি খুব বেশি কাজ ছিলো? ”
“হুম অনেক।”
“আচ্ছা এই কফিটা খেয়ে নিন ভালো লাগবে, ঠান্ডা হয়ে যাবে নয়তো।”
জিসান মিহুকে ছেরে কফি হাতে নিয়ে কফি খাওয়া শুরু করে আর ফোনটা হাতে নেয়। মিহু নিচে চলে যায় ডিনার রেডি করতে।
চলবে?
(