তুমি নামক অক্সিজেন পর্ব -০৭

#তুমি_নামক_অক্সিজেন
#পর্ব_৭
Tahrim Muntahana

আমি কিন্তু কোনো লেহেঙ্গা শাড়ি এইসব পড়তে পারবো না -হৃদিতা

কেন হৃদপরী -হৃদান

আমি এইসব পড়তে পারি না। সামলাতে পারি না। পরবো না মানে পরবো না -হৃদিতা

হৃদপাখি তোমার যেটা ইচ্ছা সেটা পরো -পরশ

হৃদান কিছু বললো না কিছু মনে করে বাঁকা হাসি দিলো।

আমরা সবাই হলুদে শাড়ি পড়বো মেহেন্দিতে লেহেঙ্গা আর বিয়েতেও লেহেঙ্গা -রাইসা

আমার তো ভাবেতেই কেমন কেমন লাগছে কত কত মানুষ আসবে সবার থেকে আমাদের কেই ভালো দেখাবে -রাহি

দেখতে পেত্নির মতো তাকে নাকি সবার থেকে ভালো মানাবে হুমম -সোহান

কি বললেন আপনি কি শালা খাটাস খারুচ রাক্ষস। দেখতেই লাগে নাপিতের মতো -রাহি

Whatttt নাপিত আর আমি। আরে আমার পিছনে কত মেয়ে পড়ে থাকে জানো -সোহান

আপনিও যেমন মেয়েগুলোও তেমন ওদের রুচি দেখলে আমার তো মাথা ঘুরায় -রাহি

You…. -সোহান

হইছে থাম তোরা এত ঝগড়া করিস কেমনে -নাশিন

আমি কিন্তু রুমেই থাকবো। আমাকে কেউ জোর করবে না -রিয়া

কেন সবাই আনন্দ করবে বর দেখবে তুমি রুমে একা বসে কি করবে -সোহা

আমার আর আনন্দ। চোখেই তো দেখতে পাই না বর দেখবো কেমনে -রিয়া

রিয়ার কথায় সবার মনটা খারাপ হয়ে গেল। রিয়া উঠে চলে গেল ওইখান থেকে। অনেকবার থাকা হয়েছে বলে বাড়ির সব কিছুই চেনা। হৃদিতার চোখ দিয়ে টুপ করে একটা ফুটা পানি পড়ল। কেউ দেখার আগেই মুছে ফেলল কিন্তু হৃদান ঠিক লক্ষ্য করলো। কারণ সে তার হৃদপরীকেই দেখছিলো। হৃদিতাও উঠে চলে গেল। সোহার খুব খারাপ লাগছে ওই কথা টি বলার জন্য। হৃদিতাও উঠে চলে গেল। তার দেখাদেখি হৃদানও হৃদিতার পিছু পিছু গেল তার হৃদপরীর মনটা যদি ভালো করতে পারে একটু চেষ্টা করতে ক্ষতি কি। কলিজার টুকরো দুই বোনকে এমন ভাবে দেখে কোন ভাইদের ভালো লাগে। একে একে সবাই ঘুমাতে চলে গেল। কালকে গায়ে হলুদ। সকালে রীতিমতো সবাই উঠে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছে। রিয়ার হঠাৎ মনটা খুব ভালো। কালকে যখন রিয়া সিড়ির শেষ মাথায় যায় তখন একজোড়া হাত টান দিয়ে একটা ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। রিয়া তো খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলো যখন নিজের খুব কাছে একজন ছেলেকে অনুভব করে তখন আতকে উঠে রিয়া। ছেলেটি শুধু কানে কানে স্লো ভয়েসে বলে,

কেন ব্যাথা পাবে তুমি?
কোনোদিন বেদনা কি দিয়েছি হৃদয়ে
যেদিন পৃথিবীতে তোমার
আমার সাথে হয়েছিল দেখা,
তারপর আমি চলে গেলে
পরে মনে করো যদি
একা একা হয়ে গেছ তুমি-
ভাবো যদি কোথায় সে ঘাসের আশ্রয়ে চলে গেল- ভালোবেসে।
আমিও বিস্ময় এক পেয়েছি যে টের গভীর বিস্ময় এক শুধু তার
ম্লান হাত চুল চোখ দেখে।
কুয়াশা হতাশা নিয়ে সরে আসি নাই
তুমি নামক পৃথিবী থেকে!
থেকে যেতে চায়
তুমি নামক অক্সিজেন এর মাঝে!

এই কথাগুলোই শুধু রিয়ার কানে বাজছে। শুধু ভাবছে আচ্ছা তাহলে কি আমার জীবনেও সে আসলো যাকে ধরে হাটতে হুচট খাবো না আগলে নিয়ে বুকে চেপে রাখবে। তাহলে কি সত্যিই আমার জীবনে তুমি নামক অক্সিজেনের দেখা মিললো। যাকে সামনে রেখে নিশ্চিন্তে নিশ্বাস নিতে পারবো। তাই হঠাৎ মন ভালো হয়ে গেল রিয়ার। আর ভাবছে নিজের এই একটা সমস্যার কারণে আর সবার আনন্দ মাটি করার কোনো মানেই হয়না। বিশেষ করে তার হৃদরানী আর ভাইয়াদের। সকাল থেকে সবাই বিন্দাস মুডে কাজ করে একটু আগে গিয়েছে ফ্রেশ হতে। হলুদের অনুষ্ঠান একটু পরেই শুরু হবে।

হৃদিতাকে ঘিরে সবাই দাড়িয়ে আছে। সবাই বলছে শাড়ি পড়তে কিন্তু সে মানতে নারাজ। পরবে না মানে পরবে না। সবাই প্রায় রেডি হয়ে গেছে। ছেলেরা হলুদ আর বাসন্তি মিশ্রনে পাঞ্জাবি পাজাবা সাথে উড়না। আর মেয়েরা হলুদ আর বাসন্তীরে পাড়ের শাড়ি। সবাইকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। ওরা তেমন ভাবে কেউই মেইকআপ করেনি। শুধু হিয়া বাদে। সে তো হাতা কাটা ব্লাউজ এর উপর পাতলা শাড়ি পড়ে মুখে এক পাউন্ড মেইক আপ দিয়ে বসে আছে। সবাই যখন এতকরে বলার পরেও রাজি হলো না তখন হৃদান আসলো। এসেই সবাইকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলল। সবাই মুখ টিপে হেসে বেরিয়ে পড়লো। হৃদিতা পড়ল ফেসাদে। যতই স্ট্রং থাকুক না কেন ভালোবাসার মানুষটার কাছে সব সময় দূর্বলতা প্রকাশ পায় ই। হৃদিতাও ভয় পাচ্ছে। হৃদান হৃদিতার কাছে এগিয়ে গেল

শাড়ি পড়বে না

না আমি সামলাতে পারি না

মিথ্যে বলছ কেন হৃদপরী আমি জানি তুমি শাড়ি সামলাতে পারো

হৃদিতা ভাবছে এই ব্যাটা জানলো কেমনে

আমি জানলাম কেমনে সেটা না ভাবলেও চলবে। তুমি কি করে ভাবলে যাকে নিজের থেকেও বেশী ভালোবাসি তার এইটুকু খবর রাখবো না। তুমি আমার অক্সিজেন হৃদপরী যাকে ছাড়া আমি নিজেকে কখনোই ভাবতে পারি না

তাহলে কেন চলে গিয়েছিলে হৃদরাজ। যাকে এত ভালোবাসো তাকে ছাড়া এত এত বছর কেমন করে থাকলে বলো -মনে মনে হৃদিতা বলছে

জানো হৃদপরী কখনো এমন সিচুয়েশন আসে তখন যেকোনো একটাকে বেছে নিতে হয়। তখন খুব ভালো ভাবে না ভেবে কোনো ডিশিসন নিতে হয় না। আচ্ছা এসব বাদ দাও। প্লিজ শাড়ি টা পড়ে আসো। আমার জন্য

আপনার জন্য কেন পড়বো। আপনি ভালোবাসলেও আমি তো আপনাকে ভালোবাসি না

হৃদানের বুকটা ধক করে উঠল। তার ভালোবাসার মানুষটা তাকে ভালোবাসে না ভাবতেই মনটা পুড়ে যাচ্ছে।

আমাদের দুজনের জন্য আমার একার ভালোবাসায় যথেষ্ট হৃদপরী। তুমি চাইলেও আমার কাছে থাকতে হবে না চাইলেও আমার কাছে থাকতে হবে। আমি ছাড়া তোমার জীবনে দ্বিতীয় কোনো অপশন নেই। যাও পড়ে আসো নাকি আমি পড়িয়ে দিবো

হুমম দিন না। আমি পড়তে পারি না তো

আচ্ছা তুমি বসো আমি কাউকে পাঠিয়ে দিচ্ছি

হৃদানের কথাটি শুনে হৃদিতার খুব ভালো লাগলো যে বিয়ের আগে তার হৃদরাজ তাকে অবৈধ ভাবে স্পর্ষ করবে না। এটা ভেবেই সম্মানটা দ্বিগুন বেড়ে গেল। মানুষ বলে বিদেশ গেলে বা বড়লোকের চরিত্রের বালাই থাকেনা কিন্তু আমার হৃদরাজ ওরকম ই না। হৃদান রুম থেকে বেরুতেই দরজার অপরপাশে উকি দেওয়া লোকটা চলে গেল। এতক্ষন এসব দেখে রেগে ফেটে পড়ছে। ভাবতে ভাবতেই একটু পর রুমে রাইসা রোহানী রাহি প্রবেশ করল মুখে দুষ্ট হাসি লেগেই আছে।

কি গো বান্ধুপী আমরা এতবার বললাম পাত্তাই দিলা না সে একবার বলছে আর ওমনি হুমম হুমম -রাহি

ভালোপাসা গো ভালোপাসা বন্ধুপী -রোহানী

এই আমার ননদিনী কে আর জ্বালাস নাতো। তাড়িতাড়ি শাড়ি পড়ে নি তোর জন্য সবাই অপেক্ষা করছে -রাইসা

তাড়াতাড়ি শাড়ি পড়িয়ে হালকা ভাবে সাজিয়ে দিলো। কোনো মেইক আপ নেই মুখে। সাজাতে সাজাতেই রুমে রিদিমা চৌধুরী আর পরশী চৌধুরী প্রবেশ করল।

তোদের হলো। আলো কে স্ট্রেজে নিয়ে যেতে হবে তো -রিদিমা চৌধুরী

এই তো কমপ্লিট আন্টি -রাইসা

বাহ আমার মেয়েগুলোকে তো দেখে আজকে চোখ ই ফেরানো যাচ্ছে না -পরশী

শাশুড়ি মম তোমার ছেলেরতো কম বয়স হলো না। ওমন বুড়ো ছেলেকে কে বিয়ে করবে। আমি বলেই আছি তাই যত তাড়াতাড়ি পারো ঘরে তুলো ছেলের বউ করে নাহলে পরে দেখা যাবে ছেলের জন্য কোনো মেয়ে খুঁজে পাবে না। পরে মন ভরে আমাকে দেখো চোখ ফেরাতেই হবে না -রাইসা

আমার ছেলে বুড়ো। আচ্ছা যা তোকে ছেলের বউ করবই না আমার তো অরনী মেয়েটাকে খুব পছন্দ হয়েছে। ওকে বলে দেখি -পরশী

এএএএএএএএএএ শাশুড়ি মম তুমি এটা বলতে পারলে। আমি এই জীবন রাখবই না। তোমার ছেলের জন্য আমি এই পর্যন্ত বিয়েই করলাম না অথচ ঠিক সময়ে বিয়ে হলে এখন পাঁচ ছয়টা বাচ্চা থাকতো। তুমি আমাকে এইভাবে ধোঁকা দিতে পারলে। আমি পানি খেয়ে মাতলামি করমু আর ওই অরনী শাকচুন্নী কে তো দেখে নিবো আমার জামাইয়ের পিছে ঘুরলে ওর মুখ আমি বাঁকা করে দিবো -রাইসা

রাইসার কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে দিলো। রাইসার সামনে যে অরনী আছে তা খেয়াল ই করে নি।

নারে বাচ্চা আমি তোকেই আমার ছেলের বউ করবো আমি তো মজা করলাম কাঁদে না বাচ্চা কাঁদে না -পরশী

না তোমার ওই বুড়ো ছেলেকে আমি বিয়েই করবো না কাউকে করতেও দিবো না -রাইসা

আমি বুড়ো -পরশ

পরশ ওদের ডাকতে এসে ওদের কথা শুনে দাড়িয়ে পড়ে দরজায়। এতক্ষন মিটিমিটি হাসলেও বুড়ো শুনে চেতে গেছে। পরশ কে রাগতে দেখে রাইসা একটা কেবলার মতো হাসি দিলো বাকিরা তো মুখ টিপে হাসছে।

আরে কি যে বলেন না আপনি বুড়ো হবেন কেন বুড়ো তো আমার শশুড় পাপা। আপনাকে দেখতে হিরোর মতো লাগে আমি কি আপনাকে বুড়ো বলতে পারি -রাইসা

ওই মাইয়া তুই আমার বরটাকে বুড়ো বানিয়ে দিলি দাড়া আজকে তোর হচ্ছে -পরশী

আরে হইছে হইছে এবার থাম যেমন মা তেমন মেয়ে আবার বউমাও পাবি তেমন। এখন নিচে চল সবাই ওয়েট করছে -রিদিমা চৌধুরী

রিদিমা চৌধুরীর কথায় সবাই নিচে নেমে গেল। হলুদের স্ট্রেজ সাজানো হয়েছে বাগানে। দুই বাড়িতেই হবে হলুদ। এতক্ষনে ছেলের বাড়ির লোকেরা হলুদ নিয়ে রওনা দিয়ে দিয়েছে কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে পড়বে। ছেলেরা একপাশে দাড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিল। বউ এসেছে শুনে যখনি উপরে তাকাবে। একেকজনে হার্ট ব্লক হয়ে গেছে। হৃদান তো ফোনে কথা বলছিলো হৃদিতাকে দেখে এমন টাসকি খাইছে অপর পাশ থেকে যে সমানে হ্যালো হ্যালো করছে শুনতেই পাচ্ছে না। তার পাশেই সাগর ছিলো ফোনটা নিয়ে বলল

আপনাকে পরে কল ব্যাক করবে সে আবাদত এই দুনিয়ায় নেই

সাগরের কথা শুনে অপর পাশের লোকটা কিছুই বুঝলো না। হ্যাবলার মতো ফোনটা কেটে দিলো। কেটে দিয়ে সাগর উপর দিকে তাকাতেই ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠল। পরশ যখন উপরে গিয়ে ছিলো তখন ভালোভাবে লক্ষ্য না করলেও এখন বেশ বুঝতে পারছে যে নাহ বিয়েটা তাড়াতাড়িই করতে হচ্ছে। পিয়াস তো রোহানীর পিছে ঘুরঘুর করছে পাছে না কেউ নজর দেয়। নাশিন অনেকক্ষন ধরে এদিক ওদিক চোখ ঘুরাচ্ছে কিন্তু তার কাঙ্খিত ব্যক্তি টি আসছে না। অবশেষে আসলো। আনহাকে শাড়ি পড়ে কেমন বড় বড় লাগছে। নাশিন তো থমকে দাড়িয়ে আছে। এইভাবে কোনোদিনই নাশিন আনহাকে লক্ষ্য করেনি নি। কিন্তু আজ শুধু চেয়েই থাকতে ইচ্ছে করছে। হৃদান তো রিয়েকশন দিতে ভুলে গেছে দূর থেকে এই দৃশ্যটা পিয়ানির চোখে পড়লো কারণ সে হৃদানের দিকেই তাকিয়ে ছিলো। ওইভাবে দেখাতে পিয়ানির চোখ দিয়ে টপ করে কয়েকফুটা পানি গড়িয়ে পড়ল। নিজের ভালোবাসার মানুষটার চোখে অন্য কারোর জন্য গভীর ভালোবাসা দেখলে কার ভালো লাগে বলুন। পেছন থেকে অরনী আর সোহা পিয়ানির কাঁধে হাত রাখলো। পিয়ানি তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে নিলো।

আমাদের থেকে লুকিয়ে লাভ নেই -সোহা

কষ্ট পাস না পিয়ু তোকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা জানা নেই তবুও বলবো পিছে সরে আয় কারণ হৃদানের চোখে যে শুধু হৃদিতা। ওর চোখে হৃদিতার জন্য গভীর ভালোবাসা দেখতে পাই আমি। যে ছেলে কোনো দিন মেয়েদের পাশে ঘেসতো না। আমরা যে বন্ধু তাও যথেষ্ট দূরত্ব রেখে চলতো সেই ছেলে একটি মেয়ের দিকে হ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছে। দেখলেই বুঝা যায় এই মেয়েটি হৃদানের অক্সিজেন যেটা সেদিন বলল। তাই আমি বলব -অরনী

হ্যাঁ আমি কাঁদছি নাতো। আসলেই তিন বছর ধরে ভালোবাসি তো তাই একটু কষ্ট হচ্ছে। একটা আফসোস থেকে গেল তিন বছর পাশে থেকে আমি হৃদানের ভালোবাসা পেলাম অথচ হৃদিতাকে সেদিন দেখেই ভালোবেসে ফেলল -পিয়ানি

আমার তেমন মনে হয় না। এখানে রহস্য আছে -সোহা

পরে জানতে পারবো। এখন একটু হাসি দে। তোকে এইভাবে দেখলে আমাদের ও খারাপ লাগে। আর একটা কথা মনে রাখবি যেখানে মায়া বাড়িয়ে লাভ হয় না সেখানে মায়া কাটাতে শিখতে হয় -অরনী

হ্যাঁ কাটিয়ে ফেলবো চিন্তা করিস না শুধু একটু সময় লাগবে চল ওইদিকে যাই -পিয়ানি

ওরা চলে গেল। অন্যদিকে সোহান রাহির পিছনে পড়েই আছে। একেকটা কথা বলছে রাহি ঝগডা করছে।

একদম পেত্নির মতো লাগছে এইসব কি সেজেছ -সোহান

ওই ব্যাটা আমাকে যেমন মনে হয় তেমন দেখাক তোর কি যা সর এইখান থেকে -রাহি

তুই তুই করছো কেন -সোহান

আরে তুই এমন একটা চিজ জানলে ক্রাশ নামক বাঁশ টা ভুলেও খাইতাম না। সত্যিই বলতেছি -রাহি

তুমি আমাকে দেখে ক্রাশ খাইছো কিন্তু আমি তো তোমাকে সেই অনেক আগে থেকেই ভালোবাসি -সোহান

কিহহহহ -রাহি

আববব না কিছুনা -সোহান

বলেই আর এক মুহূর্ত দেরী করল না চলে গেল রাহী একটি মুচকি হাসি দিয়ে সেও চলে গেল স্ট্রেজের দিকে । হৃদিতা আড় চোখে হৃদানকে দেখে চলছে। কিউটের ডিব্বা লাগছে পুরো। হৃদান তো আড় চোখে কি সরাসরি ড্যাবড্যাব করে চেয়ে আছে তা দেখে হৃদিতার সাথে সবাই মজা নিচ্ছে হৃদিতাও আড়ালে লাজুক হাসছে। বরের বাড়ির লোক হলুদ নিয়ে চলে এসেছে। হৃদান নাশিন পিয়াস সাগর সোহান আধির সাহিল গেছে বরণ করতে। ওদের কে দেখে তো বরের বাড়ির মেয়েগুলো টাসকি খাইছে। বিশেষ করে হৃদানকে দেখে। সবাই কে বসতে বলে হৃদান চলে এসেছে হৃদিতার কাছে। হৃদপরীকে এত সুন্দর লাগছে কাছ থেকে সরতেই ইচ্ছে করছে না। হিয়াকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। হয়ত সাজতে ব্যস্ত। রিয়াও স্ট্রেজে বসে আছে চুপচাপ। আনহা নাশিন কে খুঁজছে। কিছু একটা ভেবে বাঁকা হাসি দিলো।
বর পক্ষের পাঁচ ছয়টা ছেলে আর সাত আটটা মেয়ে এসেছে। ছেলেগুলো হরেক রকমের সুন্দরী মেয়ে দেখে দিনদুনিয়া ভুলে গেছে। একসাথে তিনজন মেয়ে হৃদানের দিকে তাকিয়ে কথা বলছে। মেয়েগুলো হলো বরের কাজিন সুমনা আদিবা দিয়া

ওফফ দেখ হৃদান চৌধুরী ইশশশ কি দেখতে লাগছে রে। দেখতো আমাকে মানাবে তার সাথে – দিয়া

হুমম তোকে পাত্তা দেওয়ার জন্য বসে আছে সে – সুমনা

আমাকে নিশ্চয় মানাবে – আদিবা

ওই তোরা দেখতে পারছিস না হৃদিতা চৌধুরীর পাশে কেমন করে বসে আছে -সুমনা

তো কি হইছে পাশে বসলে -দিয়া

কেমন করে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে দেখতে পাচ্ছিস -সুমনা

আয় ওই ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করি হৃদান চৌধুরীর সাথেই ছিলো তো -আদিবা

ভাইয়া একটু শুনবেন -দিয়া

নাশিন কে ডাক দিলো মেয়ে গুলো। আনহা এতক্ষন নাশিনকেই দেখছিলো। মেয়েগুলোর ডাকা দেখে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে তাড়াতাড়ি হাটা ধরল। একটু দূরে এমন ভাবে দাড়িয়ে আছে কেউ যেন বুঝতে না পারে। হৃদিতা দেখে একটা রহস্যময়ী হাসি দিয়ে মনে মনে ভাবলো কাজ হয়েছে তাহলে।

চলবে….?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here