#তোকে_অনেক_ভালোবাসি (পর্ব ১৭)
#মেঘা_আফরোজ
·
·
·
ছাদের এক কোনে দাড়িয়ে আছি আর চোখের পানি মুছছি। চোখের পানি যেনো বাধ মানছে না আজ। নিজের ভালোবাসার মানুষের বুকে অন্য কোনো মেয়েকে দেখার যন্ত্রণা অতি বেদনা দায়ক। আদ্র তো আমাকে ভালোবাসে তাহলে নিশা আপু কেনো উনার বুকে ছিলো? তাহলে কি এতদিন আদ্রর বলা সব কিছুই মিথ্যে ছিলো,আমার প্রতি উনার ভালোবাসাটা ও কি মিথ্যে ছিলো? নাকি আমার ভুল হচ্ছে কোথাও?
হঠাৎ কাধে কারো হাতের স্পর্শ পেলাম। চোখ মুছে ঘুরে তাকাতেই আদ্রর মলিন মুখটা দেখতে পেলাম। মুহুর্তেই আমার চোখে আবার পানি জমে গেলো,ওখান থেকে চলে আসতে নিলে আদ্র আমার হাত ধরে নিলো। আমার কাছে এসে দুহাত আমার মুখ উপরে তুলে বললো…….
আরু আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখ তোর প্রতি আমার ভালোবাসা এক বিন্দুও মিথ্যে নয়। আরু সব সময় চোখের দেখাটা সত্যি হয় না। তুই শুধু দেখলি নিশা আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। কিন্তু আমাদের মাঝে কি কথা হয়েছে সেগুলো শুনিস নি? সবটা না শুনে কেনো ভুল বুঝছিস আমাকে।
আদ্রর গলা কাপছিলো কথা বলার সময়। আমি নিজেকে ছাড়িয়ে দূরে এসে দাড়ালাম…….উনি তো ভুল কিছু বলেনি কথাটা তো সত্যি সব সময় চোখের দেখাটাও সত্যি হয় না। তাহলে কি এর পেছনে অন্য কিছু আছে? কি কথা হয়েছিলো উনাদের মাঝে এসব তো শুনিনি আমি। মন চাইছে আদ্রর থেকে সবটা শুনতে কিন্তু পারছি না চাপা অভিমান জমা হয়েছে মনে।
আদ্র এবার আমার সামনে এসে হাটু গেড়ে বসে পড়লো উনার চোখেও পানি জমে গিয়েছে আমার হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো…….আরু আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিস না। তুই আমাকে ভুল বুঝে দূরে সরে গেলো আমি নিজেকে সামলাতে পারবো না। আমি তোকে সবটা খুলে বলছি তার আগে একবার কথা বল আমার সাথে।
কি বলবো বুঝতে পারছি না চোখের পানি গাল বেয়ে আদ্রর হাতে গিয়ে পড়লো। আদ্র উঠে দাড়িয়ে আবারো বলতে লাগলো……..
আরু কাঁদিস না তুই কাঁদলে আমার সহ্য হয় না। বুকের মাঝে চিনচিন ব্যাথা অনুভব করি তোর চোখের পানি দেখলে। এই আরু কথা বলনা একটু। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে চুপ করে আছিস কেনো কিছু তো বল। আমি তোকে অনেক ভালোবাসি আরু। বিশ্বাস কর তোর জায়গাটা আমি কখনো কাউকে দিতে পারবো না।
আমি মাথা নিচু করেই ভাবছি…….সত্যি আমার দেখার ভুল ছিলো। উনার কোনো কথাই আমার মিথ্যে বলে মনে হচ্ছে না। উনি কেমন যেনো পাগলের মতো বিহেব করছে। আদ্রর প্রতিটি বাক্যতে বুঝিয়ে দিচ্ছে কতটা ভালোবাসে উনি আমাকে। নিজের উপরেই রাগ হচ্ছে আমার কেনো এই মানুষটাকে ভুল বুঝলাম আমি। কেউ কাউকে কতটা ভালোবাসলে চোখের থেকে পানি ঝড়ায় নিজের সব আবেগ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করে তার ভালোবাসা কতটা গভীর।
আদ্রর বুকে মাথা রেখে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলাম উনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো…….
আরু প্লিজ কান্না থামা। আমার কথাটা শোন সবটা না শুনে ভুল বুঝিস না আমাকে।
আদ্রর বুকে মাথা রেখেই বললাম…….তোমাকে ভুল বুঝে আমি কি করে থাকবো বলো। নিশা আপুকে তোমার বুকে দেখে সহ্য হচ্ছিলো না আমার। হ্যা একটু ভুল বুঝেছিলাম তোমাকে কিন্তু সে ভুলটা তোমার ভালোবাসার কাছে ক্ষুদ্র একটা বিষয়। তোমাদের মাঝে কি কথা হয়েছিলো আমি জানতে চাইনা শুধু এটাই চাই তোমার বুকে যেনো বাকীটা জীবন কাটাতে পারি। তোমার ভালোবাসা নিয়ে বাচতে পারি।
আদ্র শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো……আমিও তোকে আগলে রাখবো এ বুকে কখনো দূরে সরাবো না।
আরুকে ছেড়ে আদ্র ওর কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিলো। চোখে পানি ছলছল করছে ঠোঁটে লেগে আছে মুচকি হাসি। আদ্র আরুকে নিশার ব্যাপারে সব বললো,যদিও আরু আর কিছু শুনতে চাইছিলো নয়। তারপরেও আদ্র বলেছে ও চায় না আরুর মনে কোনো ক্ষুদ থাকুক।
.
.
ছাদের সিঁড়ির সামনে দাড়িয়ে নিশা এতক্ষণ ওদের দেখছিলো ওদের মাঝে কি কথা হয়েছে সবটাই শুনেছে। নিশা ঠোঁট কামড়ে কেঁদে চলেছে। আদ্র আরু ওকে দেখার আগেই নিচে চলে এলো। আরুর রুমে গিয়ে ব্যাগ গুছাতে লাগলো। নিশা নিজে নিজে বিড়বিড় করে বলছে…….আদ্র আমি সত্যি তোকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু এটা তো একতর্ফা ভালোবাসা সেটা শুধু আমার দিক থেকেই। তোর মনে আমি না অন্য কেউ আছে। সবার ভালোবাসা তো পূর্ণতা পায় না আমি না হয় দূর থেকেই তোকে ভালোবেসে যাবো। আরিশা খুব ভালো মেয়ে তুই ওকে নিয়ে সুখে থাক আদ্র আমি তোদের মাঝে কোনো বাধা হয়ে থাকবো না। আমি কাল সকালেই চলে যাবো।
নিশা ব্যাগ গুছানো শেষ করে আরু রুমে আসার আগেই অথই এর রুমে চলে গেলো। এখন অনেক রাত তাই সকালে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।
আমি রুমে এসে নিশা আপুকে না পেয়ে অথই এর রুমে গেলাম। দরজা খোলা ছিলো অথই ঘুমিয়ে পড়েছে আর নিশা আপু বেডের এক পাশে গুটুশুটি মেরে বসে আছে। উনার চোখ লাল হয়ে ফুলে গিয়েছে,গালে আঙ্গুলের ছাপ বসে গেছে। আমি ধীর পায়ে নিশা আপুর কাছে গিয়ে ডাকলাম……
নিশা আপু
আমার কন্ঠ শুনে নিশা আপু চমকে উঠলো আমার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করে বললো……
আরিশা তুমি,কিছু বলবে?
আপু আমি বুঝতে পারছি তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে তুমি…..
আমাকে থামিয়ে নিশা আপু বলতে লাগলো……আরিশা আমি এসব নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাইনা। আমি তোমাদের মাঝে থাকবো না চলে যাবো। আদ্রকে আমি যেমন ভালোবাসি তুমিও ভালোবাসো কিন্তু আদ্র আমাকে নয় তোমাকে চায় তোমাকে ভালোবাসে। ওকে তুমি ভালো রেখো।
এই মুহুর্তে আমার কি বলা উচিত কিছুই মাথায় আসছে না। নিজের ভালোবাসার ভাগ কেউ দিতে চায় না আমিও পারবো না। ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যা মানুষকে খুব সহজেই সার্থপর বানিয়ে দেয়। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে নিশা আপুকে শান্তনা ছাড়া কিছু দিতে পারবো না।
.
.
আদ্রর সামনে নিশা আর যায়নি খুব সকালেই আদ্রর মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেছে,বুকে একরাশ চাপা কষ্ট আর ভালোবাসা হারানোর ব্যাথা নিয়ে।
কেটে গেলো আরো কিছুদিন। আদ্র এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আরুকে কোচিং এ ভর্তি করাবে ভার্সিটিতে এডমিশন দেওয়ার জন্য।
আমাকে নিয়ে আদ্র উনার পরিচিত একটা কোচিং এ যাচ্ছে। গাড়িতে পাশাপাশি বসে আছি উনি ড্রাইভ করছে। আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম……
এতো তাড়াতাড়ি ভর্তি হওয়ার কি খুব দরকার ছিলো?
হুম অবশ্যই আছে তোকে আরো আগে ভর্তি করালে ভালো হতো।
রেজাল্টের তো এখনো দেরি আছে আরো কিছুদিন পর থেকে কোচিং করতাম।
শুধু শুধু তো বলি না তোর মাথায় বুদ্ধি নেই। আগে থেকে পড়লে যে ভালোভাবে সবটা বুঝতে পারবি,একি বিষয়ে বারবার পড়তে পারবি এটা বুঝিস না? আগে থেকে পড়লে প্রবলেম টা কোথায়? বাড়িতে বসে সারাদিন ফোন আর টিভি নিয়ে বসে না থেকে মাথার মধ্যে বই পুস্তকের শিক্ষাটা ঢুকানোর চেষ্টা কর কাজে আসবে।
আমি সারাদিন ফোন আর টিভি নিয়ে থাকি??
তাছাড়া আর কি। ওহ আরো আছে তো সুযোগ পেলেই অথইকে নিয়ে আড্ডা দেওয়া খাওয়া আর ঘুম,এসবই তো।
আমি ভেংচি কেটে বিড়বিড় করে বললাম……..এ সব কিছুর মাঝে যে তোমাকেও সময় দেই সেটা বলতে বাদ রাখলে কেনো।
আদ্র মুচকি হেসে বললো…….ওপস সরি আরু সোনা তুই যে আমাকেও সময় দিস এটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। আসলে কি বলতো তুই আমার আশেপাশে থাকলে সব গুলিয়ে ফেলি আমি।
আমি অবাক চোখে উনার দিকে তাকিয়ে ভাবছি……আমি তো কথাটা জোরে বলিনি উনি শুনে ফেললো!!
এতো ভাবাভাবির কি আছে হুম,তুই বিড়বিড় করে বললে আমি শুনতে পারবো না? আমি তোর মুখের কথা না শুনেও তোর চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে পারবো তোর মনে কি চলছে।
আমি মনে মনে কি ভাবছি এটাও বুঝে গেলে!!
ইয়েস,আরু সোনা এটাকেই তো বলে মনের টান।
আমি মুচকি হেসে বাইরে তাকালাম,ভালোবাসার হয়তো কোনো রং হয়না আর যদিও হয়ে থাকে আমার জানা নেই। তবে আমার আর আদ্রর ভালোবাসার রং হবে সাদা কালো। এ রং দুটির মাঝে পার্থক্য অনেকটা হলেও এর মিলবন্ধন অটুট। সাদা কালো খুব সহজেই মিশে যেতে পারে একে ওপরের সাথে।
.
.
কোচিং এ ভর্তি করিয়ে আদ্র আমাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে কোনো একটা কাজ আছে বলে চলে গেলো। বাড়িতে ঢুকে দেখি ড্রয়িংরুমে আরিফ আঙ্কেল আর একটা ছেলে বসে আছে। আমাকে দেখে আরিফ আঙ্কেল হেসে বললো…….
ওই তো আরিশা মামনি চলে এসেছে।
আমি এসেছি শুনে মা কাকিমা ঘুরে তাকালো সাথে ছেলেটিও। আব্বু বললো……আরিশা এখানে এসে বসো।
আমি একবার মায়ের দিকে তাকাচ্ছি আবার কাকিমার দিকে। কাকিমা আমার কাছে এসে আস্তে করে বললো…….
আরিশা তোকে যা বলেছে শোন যা বস ওখানে।
কিন্তু কাকিমা আরিফ আঙ্কেলের সাথে ছেলেটি কে?
তোকে দেখতে এসেছে।
কিহ! এটা কেমন কথা আমাকে না জানিয়ে একটা ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে এসেছে! আমি বসবো না এখানে রুমে যাচ্ছি।
আরিশা এমন করে না তোর আব্বু ও জানতো না হঠাৎ করেই এসেছে। তুই কোনে চিন্তা করিস না তোদের ব্যাপারে তোর বড় চাচ্চু আজই কথা বলবে তোর আব্বুর সাথে। এখন চুপ থেকে সামলে নে।
আব্বুর পাশে বসে আছি মাথা নিচু করে। আমার চোখ নিচের দিকে থাকলেও বেশ বুঝতে পারছি ছেলেটি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এখানে এখন আদ্র থাকলে কি যে হতো কে জানে। আমি কিছুক্ষণ বসে থেকে মায়ের দিকে তাকালাম মা হয়তো বুঝেছে আমার অস্বস্তি লাগছে তাই আব্বুকে বলে আমাকে রুমে পাঠিয়ে দিলো।
আদ্র দুপুর পরে বাড়িতে এসে অথই এর থেকে শুনে মনমরা হয়ে বসে আছে। আমিও রুমেই বসে আছি আর ভাবছি চাচ্চু আব্বুকে বলার পর কি হবে।
রাতে চাচ্চু বাড়িতে এসে আব্বু মা কাকিমা আদ্রকে ড্রয়িংরুমে যেতে বললো। আমি রুমেই বসে আছি আর ভাবছি কি হতে চলেছে।
ড্রয়িংরুমে……….
আব্বু চাচ্চুকে বললো……..
ভাইজান সবাইকে ডাকলে কেনো এখানে??
আদনান,আরিফ নাকি আজ একটি ছেলে নিয়ে এসেছিলো আরিশাকে দেখাতে??
হ্যা ভাইজান। আরিফ আমাকে না জানিয়েই এনেছে। জানলে তোমাকে বলে তারপর আসতে বলতাম।
ওহ, থাক ওসব কথা আসল কথায় আশা যাক।
কি কথা ভাইজান?
আদনান আমি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কিছু বলবো না,কথাটা হলো আরিশা মাকে অন্য কোথাও নয় এবাড়িতেই রাখতে চাই আদ্রর বউ করে। এতে বাড়ির মেয়ে বাড়িতেই থাকবে। এখন তুই ভেবে আমাকে তোর ডিসিশন জানা আর অনু আরিশা যেহেতু তোমার মেয়ে তোমার কিছু বলার থাকলে বলো?
আরিশার আব্বু আর ওর মা অবাক হয়ে একে ওপরের দিকে তাকাচ্ছে,উনারা হয়তো কল্পনাও করতে পারেনি আদ্রর বাবা আরিশাকে ছেলের বউ করতে চাইবে। আদ্র কারো দিকে তাকাচ্ছে না নিচের দিকে তাকিয়ে আঙ্গুল নাড়ছে।
আরুর মা হঠাৎ করে বলে উঠলো……..ভাইজান আমার কোনো অমত নেই। কিন্তু আদ্র বা আরিশা ওদের ও মতামত থাকতে হবে।
আদ্র চোখ তুলে ওর মায়ের দিকে তাকালো আদ্রর মা মুচকি হেসে বললো……..আদ্র আর আরিশা ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে।
আরিশার মা চোখ বড় বড় করে ফেললো আরিশার আব্বু বিষ্ময় চোখে তাকিয়ে বললো……..ভাবি তুমি ঠিক বলছো তো?
আদ্রর বাবা বলে উঠলো………আদ্রর মা ঠিকি বলেছে।
আরিশার আব্বু চুপ করে বসে আছে উপস্থিত সবাই উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার মতামত কি জানতে।
আরিশার আব্বু মুখে হাসি ফুটিয়ে বলে উঠলো……..ভাইজান আমার কোনো আপত্তি নেই। যদিও ভেবেছিলাম এটা ঠিক হবে না কিন্তু পরক্ষণে ভেবে দেখলাম আমার মেয়ে আমার সামনেই থাকবে এ বাড়িতেই।তাছাড়া আরিশা আদ্রকে ভালোবাসে আমি ওর বাবা হয়ে ওর মুখের হাসিটা কেড়ে নিতে পারি না।
আদ্র নিজের চাচ্চু দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে ভাবছে…… সে এতো সহজে মেনে নিলো!
আদ্র ভেবেছিলো হয়তো রাগারাগি করবে বলবে এ সম্পর্ক সে মানবে না কিন্তু আদ্রর ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করে সে রাজি হয়ে গেলো।
সবাই খুব খুশি এখন নিজেদের মধ্যে আবার নতুন সম্পর্ক গড়তে যাচ্ছে। অথই উপর থেকে দৌড়ে নিচে এসে বললো…….
তোমরা এখানে বসে হাসছো, তারমানে খুশির খবর আছে তাইনা? ওদিকে আরিশা আপু মন খারাপ করে বসে আছে কি হবে ভেবে।
আরিশার মা উঠে দাড়িয়ে বললো…….দুপুর থেকেই ওর মন খারাপ ছিলো কিন্তু কেনো জানা ছিলো না এখন বুঝতে পারছি। আমি যাচ্ছি ওর মন ভালো করে দিয়ে আসি।
আরুর মা সামনে পা বাড়াতেই আদ্র বলে উঠলো…….কাকিমা আমি যাই আরুর কাছে?
আদ্রর মা মুচকি হাসছে আরুর মা হেসে বললো……ঠিকআছে যা।
আদ্র খেয়াল করলো ওর মা কাকিমা অথই মুখটিপে হাসছে ও মাথা চুলকে মৃদু হেসে উপরে চলে গেলো।
·
·#তোকে_অনেক_ভালোবাসি (পর্ব ১৮)
#মেঘা_আফরোজ
·
·
·
রাত তখন ১০:১৫ বাজে ছাদের ঠিক মাঝখানে দোলনায় পা ঝুলিয়ে বসে আছি আর আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে আদ্র। আকাশে চাঁদ আর মেঘের লুকোচুরি খেলা চলছে। চাঁদটা যখনি একটু আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে তখনি মেঘেরা তার উপর গিয়ে আছড়ে পড়ছে। আচ্ছা মেঘেরাও কি চাঁদকে হিংসে করছে?
আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে আনমনে ভেবে চলছি আদ্রর ডাকে হুস এলো
এই আরু কখন থেকে ডাকছি কি ভাবছিস এতো মন দিয়ে হুম??
কই কিছু ভাবছি নাতো।
ভাবলেও বলবি না জানি। থাক ওসব এখন বল তুই কতটা খুশি হয়েছিস সবাই আমাদের সম্পর্ক মেনে নেওয়াতে??
অনেক অনেক অনেক বেশি খুশি হয়েছি আমি। আমি না ভাবতেও পারিনি আব্বু রাজি হয়ে যাবে!
আমিও তো ভাবিনি। যাক ভালোই হয়েছে আমাদের মধ্যে কোনো বাধা এলো না। সবাই মেনে নিয়েছে। এখন শুধু আমার আরু সোনাকে বউ করে নিতে হবে। তবে তার জন্য আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বাবা বলেছে আমার মাস্টার্স কমপ্লিট করার পর আমাদের বিয়ের কাজটা সারবে।
আমি কিছু না বলে আদ্রর চুলের মাঝে হাত বুলাচ্ছি উনি আবারো বলতে লাগলো…..
জানিস তো আরু তোর প্রতি আগে এমন ফিলিংস ছিলো না তারপরেও কেনো জানি তোকে বোন ভাবতে ইচ্ছে করতো না মন থেকেই আসতো না ওটা। তুই যখন ক্লাস টেন এ পড়তি তখন হয়তো তোর এস এস সি এর টেস্ট পরীক্ষা চলছিলো। তোর পরীক্ষা যখন শেষ হয় আমি একটা কাজে তোর স্কুলের সামনে গিয়েছিলাম। হঠাৎ চোখ পড়েছিলো রাস্তার ওপাশে তুই একটা ছেলের সাথে হেসে হেসে কথা বলছিলি তখন আমার তোর ওই ছেলেটির সাথে কথা বলাটা মটেও পছন্দ হয়নি। আমি খুব রেগে চলে আসি সেখান থেকে কিন্তু তখনো আমি সে রাগের কারন বুঝতে পারি নি। তবে কোনো ছেলেকে তোর আশে পাশে সহ্য করতে পারতাম না। কেমন যেনো ব্যাথা অনুভব করতাম বুকে। খেয়াল করতে লাগলাম তোর চলা ফেরা কথা বলা বলতে গেলে তোর সব কিছুতেই আমি ফলো করতাম। তারপর থেকেই তোকে ভালোলাগতে শুরু করলো আর এই ভালোলাগাটা আস্তে আস্তে ভালোবাসাতে রুপ নিলো। ভেবেছিলাম এ ভালোবাসার পরিনতি হয়তো খারাপ হবে কিন্তু না সব ঠিকআছে। আমি তোকে নিয়ে বাঁচতে চাই আরু কখনো আমাকে একা ছেড়ে যাস না প্লিজ। তোকে আমি আমার বুকের মাঝ খানটায় আগলে রাখবো দূরে যেতে দেবো না তোকে। তোকে ছাড়া যে একটি মুহুর্ত চলবে না আমার তোকে অনেক ভালোবাসি আরু।
আমি এতক্ষণ আদ্রর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে শুনছিলাম সব উনার প্রতিটি কথাতে ছিলো আমার জন্য অসীম ভালোবাসা। আমি মুচকি হেসে উনার হাতটি আমার হাতের মুঠোয় নিলাম। আদ্র শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। মেঘ সরে গিয়ে চাঁদের আলোটা আদ্রর মুখে পড়েছে। কতটা মায়া জড়ানো এই মুখে তার চোখ দুটো যেনো টানছে আমাকে খুব করে টানছে। আদ্র আমার কোল থেকে উঠে আমার চিবুকে হাত রেখে বললো………
সব তো আমিই বলছি তোর কি কিছু বলার নেই?? আচ্ছা এটা বল আমাকে নিয়ে তোর অনুভূতি কতটা??
সব অনুভূতি জানতে নেই। আমার অনুভূতি গুলো হয়তো তোমার মতো হবে না। তাই না জানাটাই ভালো কিন্তু আবার এটা ভেবো না যে আমি তোমায় ভালোবাসি না।
আদ্র মুচকি হেসে আমাকে বুকে জড়িয়ে বললো……..ঠিকআছে তোর অনুভূতি আমি জানতে চাইবো না। তোর মনের গভীরে যে আমি আছি এতেই আমি ধন্য।আর আমি এটাও জানি আমার আরুও আমাকে অনেক ভালোবাসে।
.
.
দেখতে দেখতে কেটে গেলো আরো কয়েক মাস। এইস এস সি তে আমার রেজাল্ট খুবই ভালো হয়েছে। আর ভালো ভার্সিটিতেও চান্স পেয়েছি। এর সবটাই আদ্রর জন্য সম্ভব হয়েছে উনি আমাকে গাইড না করলে হয়তো ভালো ভার্সিটিতে চান্স পেতাম না তার কারন হলো সে সময় টাতে আমি আদ্রর প্রেমে পড়ে পড়াশোনাটা ভুলেই যাচ্ছিলাম।
টিভি দেখছিলাম অথই দৌড়ে এসে আমার হাতে ফোন ধরিয়ে বললো…….
ফোনটা রুমে না রেখে নিজের সাথে রাখতে পারো না বারবার কল আসছিলো।
কে কল দিয়েছিলো??
মনিকা আপু। কল ব্যাক করো।
আমি সোফা থেকে লাফিয়ে উঠলাম মনিকা কল দিয়েছে শুনে। আগের মতো এখন আর ওর সাথে কথা হয় না এইজন্যই বেশি আনন্দ হচ্ছিলো। আমি কল ব্যাক করতেই মনিকা চেঁচিয়ে বলে উঠলো……..
ওই হারামি কত্তো বার কল দিয়েছি তোরে ধরছিস না কেনো?
আমি জোরে হেসে উঠে বললাম…….এ আমি কাকে ফোন দিয়েছি! আপনি আমার বেস্টু মনি তো?? আমার বেস্টুটা তো এতো রেগে কথা বলতো না কখনো।
আরু ফাজলামি রাখ। ১৬ বার তোর নাম্বারে কল দিয়েছি কই ছিলি তুই ফোন রেখে?
আমি তো নিচে টিভি দেখছিলাম অথই এনে দিলো ফোন বললো তুই কল করেছিস। সরি জানু রাগ করিস না প্লিজ।
ঠিকআছে করলাম না রাগ। যার জন্য ফোন দিয়েছি শোন আমি আজ সকালে বাড়িতে এসেছি তুই সন্ধায় চলে আয় খুব মিস করছি তোকে।
কিহ তুই বাড়িতে এসেছিস! কিন্তু সন্ধায় কি করে যাবো যেতে দিবে না। আমি বরং কাল সকালে আসবো।
সন্ধায় আসতে বলেছি সন্ধায় আসবি ব্যাস। আন্টিকে মানে তোর মাকে আমি বলে ম্যানেজ করবো তুই ঠিক সময়ে চলে আসবি।
মাকে না হয় ম্যানেজ করবি কিন্তু আদ্র উনাকে কি বলবো??
মনিকা হেসে বললো……..হুম এবার বুঝলাম তোর আসতে না চাওয়ার কারন। ভাবিস না আদ্র ভাইয়াকে আমি আগেই বলেছি উনি নিজেই তোকে নিয়ে আসবে বলেছে।
মনি তুই আগে বলবি না! আমি রেডি হচ্ছি তুই মাকে ফোন দিয়ে বল।
.
.
আদ্র আমাকে মনিকাদের বাড়িতে পৌছে দিয়ে গেছে। অনেক দিন পর মনিকাকে পেয়ে খুব ভালো লাগছিলো। দুজনে আড্ডা দিতে দিতে রাত সাড়ে ১১ টা বেজে গিয়েছে। এর মাঝে আদ্র কয়েক বার ফোন দিয়েছে।
রাতে মনিকার পাশে ঘুমিয়ে আছি হঠাৎ আদ্র বলে চিৎকার করে উঠলাম। হাত পা কাঁপছিলো সারা শরীর ঘামছে। বেডশীট খামচে ধরে ফুপিয়ে কেদে চলেছি।মনিকা চিৎকার শুনে ওর ঘুম ভেঙে গিয়েছে মনিকা তাড়াহুড়া করে উঠে বসে আতংকিত হয়ে বললো…….
আরু কি হয়েছে এভাবে চিৎকার করলি কেনো কাঁদছিস কেনো তুই??
আমি কিছুই বলতে পারছিলাম না শুধু আদ্র বলে মনিকাকে জড়িয়ে ফুপিয়ে কাঁদছি।
আরু কাঁন্না থামা বল আমাকে কি হয়েছে? আদ্র ভাইয়া ফোন দিয়েছিলো কিছু বলেছে তোকে??
মনি আ আদ্র চলে যাচ্ছে আমাকে অন্ধকারে রেখে উনি চলে যাচ্ছে।
আদ্র ভাইয়া তোকে ছেড়ে কোথাও যায় নি তুই সপ্ন দেখেছিস। দেখি চোখ খোল ভয় পাস না আমি এক্ষুণি কথা বলিয়ে দিচ্ছি আদ্র ভাইয়ার সাথে।
মনিকা আমাকে একহাতে জড়িয়ে রেখেই আদ্রকে ফোন দিলো ৩ বার রিং হওয়ার পর ফোন রিসিভ হলো ওপাশ থেকে কিছু বলার আগেই মনিকা বললো……..
ভাইয়া আপনি কোথায় এখন??
আমি তো বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলাম। কিন্তু তুমি এতো রাতে ফোন দিলে যে আরু ঠিকআছে তো??
ভাইয়া আরু ঘুমের মাঝে হয়তো আপনাকে নিয়ে কোনো খারাপ সপ্ন দেখেছে হঠাৎ করেই চিৎকার করে উঠলো। তারপর থেকেই কাঁন্না করছে আর বলছে আদ্র আমাকে অন্ধকারে রেখে চলে যাচ্ছে।
আদ্র অনেকটা ভয় পেয়ে গেলো আরু হঠাৎ এমন কি দেখলো যে এটা বলছে!
আদ্র বললো…….মনিকা তুমি আরুকে সামলাও আমি আসছি।
রাত আড়াইটা বাজে ভাইয়া এতো রাতে না এসে আপনি সকালে আসুন। আরু এখন একটু শান্ত হয়েছে।
ঠিকআছে ফোনটা আরুর কাছে দাও।
আমি ফোন ধরতেই আদ্র চিন্তিত কন্ঠে বলে উঠলো…….এই পাগলি কি হয়েছে হুম সপ্ন দেখে কেউ এভাবে কাঁন্না করে? আমি তোকে রেখে কোথাও যাবো না। আর ভয় পাস না কেমন আমি সকালেই আসবো তোকে নিতে। এখন লক্ষি মেয়ের মতো ঘুমিয়ে পড়।
তুমি আমাকে অন্ধকারে রেখে যাবে নাতো কখনো??
আদ্র খানিকটা হেসে বললো…….আমার আরু আমাকে এতো ভালোবাসে! না আরু সোনা তোকে রেখে আমি কোথাও যাবো না আর অন্ধকারে তো কখনোই রাখবো না। ঘুমিয়ে পড় এখন।
হুম তুমি সকালেই আসবে কিন্তু।
ফোন রাখতেই মনিকা হেসে বললো…….এতো ভালোবাসিস তুই আদ্র ভাইয়াকে! আচ্ছা কি দেখেছিলি সপ্নে ভয় পাচ্ছিলি কেনো এতো??
মনি আমার খুব মাথা ব্যাথা করছে কাল বলবো।
আচ্ছা ঠিকআছে এখন ঘুমিয়ে পড় মাথা ব্যাথা কমে যাবে।
ওদিকে আদ্র ভাবছে…….আরু হঠাৎ কি দেখলো সপ্নে এতো ভয় পাচ্ছে কেনো? অন্ধকারে রেখে যাবো কেনো আমি ওকে? এ সপ্নের মাঝে কি কোনো সত্যতা আছে? নাহ এ ভাবছি আমি সপ্ন কখনো সত্যি হয় না। তবে পুরোটা জানতে হবে আরু কি দেখেছে।
.
.
সকালে ঘুৃম ভাঙতেই আদ্রকে দেখলাম আমার পাশে বসে আছে। উনার মুখটা মলিন দেখাচ্ছে মনে হচ্ছে রাতে ঘুমায় নি। আমি উনার দিকে তাকাতেই মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো…….
গুড মর্নিং আরু।
হুম গুড মর্নিং। তুমি কখন এসেছো? তোমার চোখে মুখের এই অবস্থা কেনো ঘুমাও নি তাইনা??
তুই যেভাবে কাঁন্না করছিলি রাতে ভাইয়া কিভাবে ঘুমাবে বল। ভোর সাড়ে পাঁচটার পরেই ভাইয়া চলে এসেছে। এসেই তোর পাশে বসে তোর ঘুম ভাঙার অপেক্ষা করছে।
মনিকা রুমে ঢুকে কথা গুলো বলে বেডের ওপর পাশে বসলো আমি অবাক চোখে আদ্রর দিকে তাকিয়ে আছি। এই মানুষটা আমাকে এতো ভালোবাসে!
আদ্র বললো……..আরু কেনো এতো ভয় পেয়েছিলি বল তো??
আদ্রর মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আমিও না কি আজেবাজে সপ্ন দেখে কাঁন্না কাটি জুরে দিয়ে উনাকে কষ্ট দিলাম।
মনিকা বলে উঠলো…….কি হলো আরু বল।
আমি আদ্রর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম……..আমি দেখলাম আদ্র আর আমি দূরে কোথাও ঘুরতে গিয়েছি সেখানে অনেক মানুষ ছিলো কিন্তু আমাদের দুজনের থেকে দূরে ছিলো তারা। আমরা একটা রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম আশে পাশে তেমন ঘরবাড়ি ছিলো না হঠাৎ রাস্তার পাশে একটি ছোট্ট ঘরের ভেতর থেকে বাচ্চার কাঁন্নার আওয়াজ আসছিলো। আমি আদ্র সেখানে গেলাম ঘরের ভেতর যেতে নিলে আদ্র আমার হাত আকড়ে ধরছিলো আর উনার চোখ থেকে পানি পড়ছিলো তখন। আমি নিজের হাত ছাড়িয়ে মুচকি হেসে ঘরের ভেতর ঢুকলাম উনি দরজার বাইরেই দাড়িয়ে ছিলো। হঠাৎ করেই পুরো ঘরটা অন্ধকার হয়ে আসছিলো আমি জোরে জোরে আদ্রকে ডাকতে লাগলাম কিন্তু উনি কোনো সাড়া দিলো না দরজার দিকে চোখ পড়তেই দেখলাম উনি চোখের পলকে দূরে চলে যাচ্ছে। আমি বারবার কাঁন্না করে ডাকছিলাম কিন্তু উনি শোনে নি। আর তখনি দরজাটা বন্ধ হয়ে পুরো ঘরটা অন্ধকার হয়ে গিয়েছিলো।
আমার চোখ থেকে আবারো পানি পড়তে লাগলো। আদ্র আমাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নিলো……..আরু এমন একটা সপ্ন দেখে কাঁদতে হয়? আমি তো বলেছি তোকে ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না। ওসব ভুলে যা সপ্ন তো সপ্নই হয় এর কোনো বাস্তবতা নেই সবটাই মনের ভুল। তুই হয়তো আমাকে নিয়ে একটু বেশি ভাবিস তাই এসব দেখেছিস।
মনিকা বলে উঠলো…….ভাইয়া আরিও মনে করি এসব শুধুই মনের ভুল কিন্তু আপনার এই পাগলি টাই তো বুঝছে না। কিভাবে বাচ্চাদের মতো কাঁদছে।
মনিকা তোমার বেস্টু বড় হয়েছে নাকি মাঝে মাঝে যা করে। এইযে দেখো কাঁদছে আর আমার বুকে বাচ্চাদের মতো নাক ঘষছে।
আমি সাথে সাথে উনার বুক থেকে উঠে অভিমানি স্বরে বললাম…….ঠিকআছে আমি যখন কাঁন্না করবো তখন তোমার বুকে নিয়ো না আমাকে।
আমার আরু সোনাটা অভিমাম করেছে। ঠিকআছে আর বলবো না তোর যতো ইচ্ছে আমার বুকে কাঁন্না করবি।
কথাটা বলেই আদ্র আমাকে টেনে বুকে জড়িয়ে নিলো। মনিকা হেসে বললো…….ভাইয়া এখানে আমি আছি কিন্তু।
তাতে কি হয়েছে আমার বউ এর বেস্টু মানে আমারো বেস্টু তাইনা। আর বেস্টুর সামনে কোনো বাধা নেই। দরকার হলে তোমার সামনেই……..
আমি আদ্রর বুকে মেরে নিজেকে ছাড়িয়ে বললাম……দয়া করে নিজের মুখটা বন্ধ রাখুন।
ওকে বন্ধ রাখলাম।এখন রেডি হ বাড়ি যেতে হবে তো।
ভাইয়া আরু আজ বিকেল পর্যন্ত থাকনা আমার সাথে।
না মনিকা মা চিন্তা করছে হয়তো ভোরে আসার সময় মা দেখে বারবার জানতে চাইছিলো কি হয়েছে। আমি কোনো ভাবে মাকে বুঝিয়ে চলে এসেছি। এখন আরুকে না নিয়ে গেলে একের পর এক প্রশ্ন করবে।
ওহ ঠিকআছে নিচে চলুন মা হয়তো নাস্তা রেডি করে ফেলেছে আরু তুই ফ্রেস হয়ে নে।
মনিকাদের বাড়ি থেকে নাস্তা করে বেড়িয়ে পড়লাম। গাড়িতে উঠে আদ্র একহাতে ড্রাইভ করছিলো আর অন্য হাতে আমার এক হাত ধরে রেখেছিলো।
আরু খুব ভয় পেয়েছিলি তাইনা??
হুম কিছুসময়ের জন্য মনে হয়েছিলো তোমাকে হয়তো আর দেখতে পাবো না।
ওসব আর মনে রাখিস না আমি তোর পাশে আছি আর সব সময় থাকবো। শোন বাড়িতে কাউকে বলিস না অযথা চিন্তা করবে।
হুমম বলবো না।
·
·
·
চলবে…………………………..
·
চলবে………………………….