তোমার নামের বৃষ্টি পর্ব ২২+২৩

#তোর_নামের_বৃষ্টি
#পর্ব:২২
জাবিন মাছুরা (লেখিকা)
,,
তিন ঘণ্টা হয়ে গেছে ত্বকি একা রুমের মধ্যে বন্ধি। মেঘার দেখা মিলেনি। মেয়েটা বেড়াতে এসে তাকে ভুলেই গিয়েছে। ত্বকি শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগল মেঘার কথা। তার বলা কথাগুলোর কি প্রভাব মেঘার উপর পড়ে? নাকি মেয়েটা তাও কিছু বুঝে না?
,,

মিমিমা আপুর রুমে চুপ করে বসে আছি। ত্বকি ভাইয়া বলা প্রত্যেকটা কথার রিয়েকশন শুরু হয়ে গিয়েছে। তার এমন অদ্ভুত কথা, বিশ্বাস করতে পারছি না।যে লোকটা আমার সাথে ভালো ভাবে কথা বলতে পারে না। সে কিনা বলছে, ‘আমি তাকে ভালোবাসি না’।

মেঘাকে গভীর চিন্তায় মত্ত দেখে মিমমা তাকে হাল্কা ঝাঁকি দিয়ে বলল,

-কিরে? মেঘু রানী কী ভাবছিস। (মিমমা)

-নিশ্চুপ (মেঘা)

-মেঘু (মিমমা)

মিমমা আপুর দ্বিতীয় ডাকে আমার চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটল। বিরক্ত নিয়ে বললাম,

-হুম,বলো। (মেঘা)

-মেঘু রে, জিজু না তোকে অনেক ভালোবাসে। (মিমমা)

মিমিমা আপুর কথাই আমি লজ্জা পেলাম। আমতা আমতা করে বলে উঠলাম,

-না, একটুও তো ভালোবাসে না। (মেঘা)

-কে বলছে তোকে? (মিমমা)

-নিশ্চুপ (মেঘা)

-গাধী, তুই আজীব বোকাই রয়ে গেলি। (মিমমা)

আপুর কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে আপুর দিকে তাকালাম।

-কিছুই বুঝিস না তুই? (মিমমা)

কোন কথা না বলে চুপ করে আপুর দিকে তাকিয়ে রইলাম,

-তোকে যখন টেনে নিয়ে এলাম তখন কি জিজুর মুখের দিকে তাকিয়েছিস? (মিমমা)

-না তো। (মেঘা)

মিমমা মেঘার কথা শুনে বাঁকা হেঁসে বলে উঠলো,

-তাকালি দেখতি, তোকে নিয়ে আসার সময় জিজুর মুখ দেখার মতো ছিল। একদম অসহায় পথিকের মতো আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। (মিমমা)

আপুর কথা শুনে নিজের অজান্তেই লজ্জা পেয়ে উঠলাম। লজ্জায় আপুর দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারছি না।

মেঘাকে লজ্জা পেতে দেখে মিমমা হেঁসে দিয়ে বলল,

-হয়েছে আর লজ্জা পেতে হবে না। এখন আসল খবর বল? (মিমমা)

-মানে? (মেঘা)

আপুর ‘আসল খবর’ কথাটার মানে বুঝতে পারলাম না। চোখ দুটো ছোট ছোট করে আপুর দিকে প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।

মেঘার অদ্ভুত দৃষ্টি দেখে মিমমা দাঁত বের করে হেঁসে উঠলো।

-বুঝিস নি? (মিমমা)

– না তো। (মেঘা)

-আমাকে খালা বানাবি কবে? (মিমমা)

মিমিমার কথাই মেঘা খিলখিল করে হেঁসে বোকার মতো বলে উঠলো,

-তুমি যখন হতে চাও। (মেঘা)

মিমিমা কিছু বলার আগেই মেঘার চাচি রুমের ভিতরে চলে এলেন। মিমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

-এই তোরা গল্প করা বাদ দে। তাড়াতাড়ি রেডি হ। সীমা, সারা, নিঝুম ওরা কোথায়? (মেঘার চাচি)

-আম্মু, ওরা তো গোসল করতে গিয়েছে? (মিমমা)

-আচ্ছা। মেঘা শোন, তুই গোসল করবি না? (মেঘার চাচি)

মেঘার চাচির কথাই মিমমা বলে উঠলো,

-ইশ, তোমার কী মনে হয় ও গোসল করবে? (মিমমা)

-কেন করবে না? (মেঘার চাচি)

আপুর দিকে বিরক্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম। আপু কি বলে শোনার জন্য।

মেঘার তাকানোর ধরন থেকে মিমমা মিটিমিটি হেঁসে বলল,

-যেই মেঘা, হাল্কা বাতাস বইলে গোসল করে না। তোমার কি মনে হয়? সেই মেয়ে কি এই ঠান্ডার মধ্যে গোসল করবে। তাও বাইরে হাল্কা বৃষ্টি হচ্ছে।(মিমমা)

আপুর কথা শুনে না হেঁসে পারলামন। কথাগুলো হাঁসির মনে হলেও সত্য। আমার অনেক ঠান্ডা লাগে। একটানা বৃষ্টি পরলে তিনদিন ও গোসল করা হয় না। সবসময় একটু বেশিই শীত লাগে। কিন্তু আজে শীত করলেও গোসল করব। বিয়ে বাড়ি এসেছি বলে কথা। তাছাড়া ভাইয়াও আমাকে নোংরা বলবে।

মিমিমাকে মজা করতে দেখে মিমমার মা ধমক দিয়ে বলে উঠলো,

-মেয়েটা এভাবে বলছিস কেন? ও কি আর ইচ্ছে করে গোসল না করে থাকে নাকি। দেখিস না কি ভাঙা শরীর। মেয়েটার পুষ্টির অভাবে শীত করে।বুঝছিস?

-আরে আম্মু আমিও জানি। কিন্তু এই মেয়েটা খাই না কেন? (মিমমা)

-আমার খেতে ভালো লাগে না। (মেঘা)

-কথা বাদ দে। এখন ফ্রেশ হয়ে রেডি হ। একটু পরে দেখবি সবাই চলে এসেছে কিন্তু তোরাই রেডি হতে পারিস নি। (মেঘার চাচি)

অন্যদিকে,

বিরক্ত নিয়ে ক্লাসে বসে আছে তিথি। সামনে দাঁড়িয়ে লেকচার শোনাচ্ছে সাদ। তিথি হাজার চেষ্টা করেও লেকচারে মনোযোগ দিতে পারছে না। কারন তার পাশে দুটো মেয়ে বসে সাদকে নিয়ে আলোচনা করছে। মেয়ে দুইটি একজন আরেকজনকে বলছে,

-নিলা, দেখ না স্যার আমাদের দিকে তাকাচ্ছেন। (তোরি)

-কার দিকে তাকাচ্ছে রে? তোর দিকে নাকি আমার দিকে। (নিলা)

-দেখ, মনে হয় তোর দিকে তাকাচ্ছে। (তোরি)

-সত্যি? আজকে আমি সাদ স্যারের ক্লাস থাকাতে মুখে বেশি করে ল্যাশ মেখে এসেছি। যাতে মুখ চিকচিক করে। আর স্যারেকেই কও সুন্দর লাগছে দেখছি? কি সুন্দর চুলগুলো। একটু পেকে গেছে তো কি হয়েছে কালার করতে কি যে সুন্দর লাগবে। ভেবেই বুকটা কেমন যেন করে। (নিলা)

নিলার কথা শুনে তোরি মন খারাপ করে বলল,

-ওহ তাই। স্যারের মনে হয় অনেক বয়স। যদি বিবাহিত হয়। তাহলে তোর সব সাজ তো পানিতে যাবে। (তোরি)

-তোর কি মনে হয় আমি না জেনে স্যারকে পটাতে চেষ্টা করছি? বাবাকে দিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি স্যার অবিবাহিত। (নিলা)

নিলা আর তোরির ফিসফিস করা কথা শুনে তিথির মাথায় রাগ উঠে গেল। রাগে তার সারা শরীর কাঁপতে লাগল। দাঁতে দাঁত চেপে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করতে লাগল।

সাদ লেকচার দিচ্ছিল আর কিছুক্ষণ পর পর তিথির দিকে তাকিয়ে দেখছিল। হঠাৎ তিথিকে রাগতে দেখে সাদ চিন্তায় পড়ে গেল। কি এমন হলো যে, মেয়েটা হঠাৎ রেগে গেল কেন?।

এদিকে,
মিমিমা আপু জোর করে আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিলেন। তাও আবার নীল রংয়ের শাড়ি। শাড়িটা অনেক সুন্দর হলেও খুব পাতলা। জীবনে দ্বিতীয় বারের মতো শাড়ি পড়েছি। কেমন যেন অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। মিমমা আপুর মামাতো বোন সারা আপুও আমার মতো নীল রং এর শাড়ি পড়েছে। তাকেও দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে।

মিমামা আপুকে সাজিয়ে দিচ্ছে তার মামাতো বোনেরা। আমি কিছু পারি না তাই চুপচাপ দেখে যাচ্ছি। প্রচুর খিদে পেয়েছে। তাই আপুকে না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে পড়লাম। তাছাড়া ভাইয়া খবরও নেওয়া হয় নি। নিশ্চই সে আমার উপর রেগে আছে। দূর, ব্যাস্ততার কারনে তার একটু খোঁজ ও নেওয়া হলো না।
,,
ত্বকি ফ্রশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। ঘুম থেকে উঠেই মেঘাকে দেখতে না পেয়ে প্রচুর রেগে গেল সে। মেয়েটা কি পেয়েছে? একবারও তার সাথে দেখা করতে এলো না। বেশি সাহস হয়ে গিয়েছে বোধহয়। কথাগুলো চিন্তা করতে করতে ত্বকি রুম থেকে বেরিয়ে পড়ল।
,,
বাড়িতে অল্প আয়োজনের বিয়ে হলেও মানুষের অভাব নেই। শাড়ির কুচি ধরে হাঁটছি উদ্দেশ্য ভাইয়ার কাছে যাব। শাড়িটা অতিরিক্ত পাতলা হওয়া নিজের কাছে লজ্জা লাগছে। মাথায় ঘোমটা দিয়ে হাঁটছি যাতে কেউ আমার না দেখতে পারে। এমন অবস্থা হঠাৎ পেটের উপর,, #তোর_নামের_বৃষ্টি
#পর্ব:২৩
জাবিন মাছুরা (লেখিকা)
,,
হঠাৎ পেটের উপর কারো ছোঁয়া পেয়ে আমি থমকে দাঁড়ায়ে পড়লাম। মনে হচ্ছে কেউ গুটি গুটি হাত দিয়ে আমার পেট চেপে ধরে আছে।

কিছুক্ষণ নিরব রইল চারপাশ। আমি মুচকি মুচকি হাসছি। পিছনে থেকে হাতের বাঁধনটা আরো শক্ত হয়ে এলো। আমি না দেখলেও বুঝতে পারলাম, যে এটা কার কাজ। সামনের দিকে ফিরে, হাতের বাঁধনটা ছাড়িয়ে হাঁটু ভাঁজ করে বসে পড়লাম। মিষ্টি করে হেসে দিয়ে বললাম,

– কেমন আছো ভাইয়া? (মেঘা)

আমার কথার উত্তরে আমার সামনে থাকা সানাফ গাল ফুলিয়ে উওর দিল,

– ভালো নেই। (সানাফ)

-কেন ?

-কারন তুমি আমাকে রেখে বিয়ে করে ফেলেছ। তুমি পচা। (সানাফ)

-কে বলেছে যে আমি তোমাকে রেখে বিয়ে করে ফেলেছি?(মেঘা)

-আম্মু বলেছে। (সানাফ)

সানাফের অভিমান সুরে টেনে টেনে বলা কথাগুলো শুনে আমার খুব হাসি পাচ্ছে। নিজের হাসি কন্ট্রোল রেখে সানাফের দিকে তাকালাম। সানাফ কান্না মাখা মুখ করে বলল,

-তুমি শুধু আমার বউ। আমার সাথে থাকবে। আমাকে আদর করবে। চলো না আমার সাথে। (সানাফ)

বলেই সানাফ কান্না শুরু করে দিল। আমি কি করে ওর কান্না থামাবে বুঝে উঠতে পারলাম না। সানাফের দিকে ঝুঁকে ওর মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বললাম,

-কান্না করে না ভাইয়া। (মেঘা)

সানাফ আমার কথা শুনল না বরং জোরে জোরে কাঁদতে লাগল। ওর কান্না দেখে একটু ও বিরক্ত লাগছে না। হাসি পাচ্ছে। সানাফ হলো আমার ছোট ফুপুর একমাত্র ছেলে। বয়স বেশি না মাত্র চার বছর। যখন থেকেই ছেলেটা কথা বলা শিখছে , তখন থেকেই আমাকে বউ বউ করে ডাকে। আমার তো মাঝে মাঝে মনে হয় ও সর্বপ্রথম বউ ডাকাটাই ওর মুখে থেকে বেরিয়েছে। এই ছেলে যে বড় হয়ে কি হবে আল্লাহ ভালো জানে।

সানাফ কাঁদছে আর বলছে,

-মেঘা আপু ,তুমি শুধু আমার বউ। (সানাফ)

সানাফের কান্না আমি থামাতে পারলাম না। হয়তো কোলে নিলে চুপ হয়ে যেত। কিন্তু আমি কোলে নিতে পারব না। কারন শাড়ির যে অবস্থা ,যে কোন সময় খুলে যেতে পারে। আর যদি ওকে কোলে নেই তাহলে বোধহয় এখুনি আমি শেষ।
অবশেষে উপায় না পেয়ে আস্তে করে ফুপিকে ডাক দিলাম। আমার ভাগ্য ভালো ছিল তাই ফুপিও চলে এলো। ফুপিকে দেখে সানাফ চুপ হয়ে গেল। ফুপি আমাকে দেখে আমার কাছে এসে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো,

-কেমন আছিস মেঘু। (মেঘার ফুপি)

-আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো ?(মেঘা)

-আমি ও ভালো আছি। তুই তো দেখি অনেক অনেক সুন্দর হয়ে গিয়েছিস। একদম বড়োদের মতো লাগছে। (মেঘার ফুপি)

ফুপির কথা শুনে আমি হেসে দিলাম। ফুপি আমার নাক টেনে আফসোস শুনে বলল,

-ইশ, আমার যদি তোর থেকে বড়ো কোন ছেলে থাকত। তাহলে তোকে আমি আমার ছেলের বউ করে রাখতাম। (মেঘর ফুপি)

ফুপির কথা শুনে লজ্জা পেয়ে চুপ করে রইলাম।

অন্যদিকে,

ক্লাস শেষ করে বাইরে বেরিয়েছে তিথি। মিনিট পাঁচেক আগে সাদা ও ক্লাস থেকে বের হয়ে গিয়েছে। তিথি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে এলোমেলো পায়ে হেঁটে চলছে। সে কোথায় যাচ্ছে নিজেই জানে। প্রচুর রাগ হচ্ছে নিলা নামের মেয়েটির উপর।

হঠাৎ করে তিথির পা থেমে গেল। স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল সে। তার সামনে একদল মেয়ে দাড়িয়ে আছি। মেয়েগুলোর দিকে না তাকিয়ে সে আবার হাঁটতে শুরু করল। এমন অবস্থায় একটা মেয়ে এসে তিথির হাত টেনে ধরল।

হাতে টান অনুভব করতেই তিথি চুপ করে দাঁড়িয়ে পড়ল। পিছনে দিকে ঘুরে নত দৃষ্টি সরিয়ে মেয়ে গুলোর দিকে মাথা উঁচু করে তাকিয়ে দেখল। একজন ব্যতীত কাউকেই সে চিনতে পারল না। বিরক্ত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইল সেই চেনা মেয়েটি অর্থাৎ নিলার দিকে।

নিলা তিথির দিকে পৈশাচিক হাসি দিয়ে তাকাল। সবগুলো মেয়েই তিথির দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ, মেয়ে গুলোর মধ্যে থেকে সাদা জামা পড়া একটা মেয়ে জোর গলায় তিথি কে বলে উঠলো,

-এই মেয়ে তোর নাম কি রে ? (মেয়েটি)

তিথি মেয়ে টির কথায় ভদ্র ভাবে উওর দিল,

-জী আমার নাম তিথি। আপনারা আমাকে ডেকেছেন কেন? আমাকে কি আপনাদের প্রয়োজন?(তিথি)

তিথির কথা শুনে মেয়েটি জোরে জোরে হাসতে লাগলো।

-হ্যা দরকার। তোমাকে একটা কাজ করতে হবে।(নীলা)

তিথি বিরক্ত নিয়ে বলল।

-জি বলুন কি কাজ? যদি সম্ভব হয় তাহলে করার চেষ্টা করব।(তিথি)

তিথির কথা শুনে সাদা জামা মেয়েটি রাগী কন্ঠে বলে উঠলো,

-চেষ্টা করবি মানে? কান খুলে শুনে রাখ আমারা তোর সিনিয়র তাই আমারা যা বলব তোকে তাই করতেই হবে। বুঝেছিস?

সিনিয়র নামক শব্দটা শুনে তিথির বুকের ভিতরে ধক করে উঠলো। তার আর বুঝতে বাকি রইল না যে ,সে আজকে রে্গ এর স্বীকার হতে চলেছে। তিথি ভয় পেয়ে চুপ করে রইলো। এই প্রথম সে রে্গের স্বীকার তাই ভয়ে কান্না চলে এলো তার।

সাদা জামা পড়া মেয়ে টি তিথির দিকে একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বলল,

-এই মেয়ে এই প্রেম পত্র টা ধর। (তিথি)

তিথি কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠি টি নিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে মেয়ে টির দিকে তাকলো।

মেয়েটি তিথি কে কাঁপতে দেখে হাসতে লাগল। কিছুক্ষণ হেসে কঠিন গলায় ধমকের সুরে বলল,

– জানিস এই চিঠি টা তোকে কাকে দিতে হবে?(মেয়ে টি)

-নিশ্চুপ (তিথি)

-ওহ সরি,তোর তো জানারই কথা না। আমিই বলছি।(মেয়েটি)

তিথি মেয়ে টির দিকে ভীত দৃষ্টিতে তাকাল। মেয়েটি তিথিকে বিনা দ্বিধায় বলে উঠলো,

-আমাদের ভার্সিটির সাইকোলজির টিচার সাদ স্যার কে। ক্লিয়ার? (মেয়েটি)

তিথি মেয়ে টির কথা শুনে অবাক হয়ে উঠলো। শেষমেশ কিনা সাদকে প্রেম পত্র দিতে হবে তার। এক বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও যেই মানুষটার সাথে দরকারের বেশি কথা হয় না। এখন কিনা সেই মানুষটি কে প্রেম পত্র দিতে হবে। ভেবেই তিথির সারা শরীর শিউরে উঠলো।

-এই মেয়ে কি এত ভাবছিল? এত ভেবে কোন লাভ নেই। যখন সাদ স্যার আসবে তখন আমাদের সামনে তুই স্যার কে প্রপোস করবি। আর যদি না করিস তাহলে তোর কপালে দুঃখ আছে বুঝতে পেরেছিস? (মেয়েটি)

এদিকে,
একা একা রুমে বসে থাকতে ভালো লাগছিল না ত্বকির তাই সে কিছুটা সময় মেঘার চাচাদের কাজে সাহায্য করেছে। ত্বকির হেল্প ফুল ব্যবহার দেখে সবাই মুগ্ধ। তার ব্যবহারে সবাই তো আবাক। ছেলেটা যে এত মিশুক হতে পারে তা সবার ধারনার বাইরে। সাবাই খেতে বলেছিল কিন্তু ত্বিক খাইনি।

,,
খিদে পেটে মেঘাকে খুঁজে চলছে ত্বিক। কিন্তু কোথাও মেঘাকে দেখতে না পেয়ে রেগে গেল সে। মেয়েটার সত্যি সাহস বেড়ে গিয়েছে। ত্বকি কানে ফোন নিয়ে কারো সাথে কথা বলতে বলতে হেঁটে চলছে।

মিমমার খালাতো বোন সারা নামের মেয়েটা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ স্তব হয়ে থেমে গেল। নীল পাঞ্জাবি পরিহিত ত্বকিকে দেখে থমকে দাঁড়ায়ি পড়ল সে। আজকে সারা শেষ হয়ে গিয়েছে। ত্বকিকে দেখে মনে মনে বলে উঠলো,

-আমার এই কিউট লোখটাকে চাই। প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে গম্ভীর কিউটি বয়। আই মাস্ট নিড ইউ। (সারা)
,,
শাড়ি পড়ে ভাইয়াকে খুঁজে চলেছে। রুমে গিয়েও তাকে পায় নি। তাকে না দেখতে পেয়ে কেমন যেন লাগছে। ভালো লাগছে না। খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তাকে। হাঁটার সময় হঠাৎ মেঘার পায়ের সাথে শাড়ি বেঁধে গেল। মেঘা নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারল। শাড়ির পিন খুলে,,,
(চলবে)

[যানিনা কত ওয়াড হয়েছে। যে ফোন দিয়ে লিখি সেই ফোন দিয়ে লিখতে পারি নি। তাই ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]
(চলবে)

[জার্নি করে বাসায় এসেছি। দেরি হওয়ায় জন্য দুঃখিত]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here