দহন পর্ব ৭

#দহন
#পর্ব_৭
#লেখা_মিম

-” ভাই একটু স্পষ্ট করে বল কি বলতে চাচ্ছিস।”
-” অন… অনেক ভালোবাসি”
-” কার কথা বলছিস মুহিব?”
-” ঐ যে ও… ওর কথা বলছি।”
-” ও কে? নাম বল?”
-” ও তো দ…দূ….রে চলে গে…ছে।”
-” মুহিব, কার কথা বলছিস তুই কিছুই তো বুঝতে পারছি না। স্পষ্ট করে বল না ভাই?”
মুহিবের বাবা ছেলের এক হাত ধরে পাশে বসে আছেন। দিশেহারা হয়ে যাচ্ছেন উনি। ছেলের অস্পষ্ট কথাগুলো শোনার পর থেকে উনার পর থেকে উনার মাথা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছেন অনিমের দিকে। অনিম আরও কিছুক্ষন শোনার চেষ্টা করলো আসলে মুহিব বলতে চাচ্ছেটা কি? কাকে সে ভালোবাসে? নামটা জিজ্ঞেস করেছে বহুবার। কোনোমতেই নামটা মুখে আনছে না মুহিব। নাকি বলার পরও অনিম নামটা বুঝতে পারছে না সেটা নিয়েও একপ্রকার দ্বিধা-দ্বন্দে আছে সে। মুহিব যে ডক্টরের অধীনে ছিলো সে ডক্টর ঝসেছে। অবস্থা বেগতিক দেখে ডিউটি ডক্টররা তাকে এই সকালে হসপিটালে আনিয়েছে। গতরাত সাড়ে তিনটার পর থেকে তাকে জ্বর কমানোর কয়েক ডোজ মেডিসিন দেয়ার পরও তার জ্বর কমেনি। ঘুমের ইনজেকশন দেয়া সত্ত্বেও বিশেষ কোনো কাজ হয়নি। মুহিবের ডক্টর এসে তাকে আরও হাই পাওয়ারের ঘুমের ইন্জেকশন দিলো। সাথে আরও কিছু জরুরি ঔষধপত্র লিখে দিয়ে নার্সদের বুঝিয়ে দিয়ে গেলো সময় মত যেনো মেডিসিনগুলো তাকে দেয়া হয়। সাথে করে এটাও বলে গেলো তাকে যেনো ঘন্টায় ঘন্টায় মুহিবের আপডেট দেয়া হয়। ১০-১৫ মিনিটের মাথায় মুহিবের শরীর অনেকটা নিস্তেজ হয়ে আসলো। এখন সে আর কিছু বলছে না। কিছু মূহূর্ত পরই গভীর ঘুম ঘুমিয়ে পড়লো। মুহিবের বাবা অনিমের হাত ধরে টানতে টানতে কেবিনের বাইরে নিয়ে আসলেন।
-” কি হয়েছে আমার ছেলের?”
-” আংকেল আমি জানিনা।”
-” দেখো অনিম, কথা লুকাবে না আমার কাছে। তুমি ওর বেস্ট ফ্রেন্ড। ও তোমাকে সব কথা বলে। এখন বলো মেয়েটা কে?”
-” বিশ্বাস করুন আংকেল আমি সত্যিই কিছুই জানিনা। আমি আজই ওর মুখে প্রথম শুনলাম ও কাকে ভালোবাসে।”
-” তুমি বললেই কি আমি বিশ্বাস করবো নাকি?”
-” কি যন্ত্রনায় পড়লাম! আংকেল আমারই মাথা ভনভন করছে ওর কথা শুনে। ও কাউকে ভালোবাসে অথচ সেটা আমি জানি না এই ব্যাপারটা হজম করতে পারছিনা। তার উপর আপনি অবিশ্বাস করছেন আমাকে। আপনার কি মনে হয় আংকেল ও কোনো মেয়েকে পছন্দ করবে আর সেই মেয়ে ওকে ছেড়ে চলে যাবে এটা আমি শুনেও চুপচাপ বসে থাকবো? আমি জানলে ঐ মেয়েকে ওর সাথে বিয়ের ব্যবস্থা করতাম। আপোষে না হলে জোর করে হলেও বিয়ে দিতাম।”
-” তুমি জানো আজ ভোরে আমার ছেলেটা প্রচন্ড জ্বরে কিভাবে কাঁপছিলো? ওর দুচোখ বেয়ে পানি ঝড়ছিলো আর ও বিড়বিড় করে বলেই যাচ্ছিলো লাগাতার, ” ও আমাকে ভালোবাসেনা। ও আমার ভালোবাসা বুঝে না।” আমার কলিজাটা ছিড়ে যাচ্ছিলো ওর অবস্থা দেখে। আমার এত আদরের ছেলেটা। আমি আর তোমার আন্টি সবসময় ওকে মাথায় তুলে রেখেছি। কোনোদিন ওকে কষ্ট দিয়েছি তুমিই বলো?”
-” জ্বি না আংকেল।”
-” অথচ ঐ মেয়ের কত বড় সাহস আমার ছেলেকে কষ্ট দেয়! কি নেই আমার ছেলের? ঢাকায় বাড়ি আছে, গাড়ি আছে, ওর বাবার ক্ষমতা আছে। রাজনীতিতে আমার ছেলেটাও যথেষ্ট নাম কামিয়েছে। আমার এতবড় ব্যবসা, টাকা-পয়সা সব তো আমার ছেলেটারই। দেখতে-শুনতে কি আমার ছেলে কোনো দিক দিয়ে কম? আমি তো বলবো ঐ মেয়ের চৌদ্দ গোষ্ঠির কপাল যে আমার ছেলের নজর ওর দিকে পড়েছে। আর ঐ মেয়ে কিনা আমার ছেলেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে?”
-” আংকেল আপনি শান্ত হোন।”
-” কি শান্ত হবো? তোমার আন্টিকে এখনও কিচ্ছু জানাইনি। এটা সেটা বলে মুহিবের কথা এড়িয়ে যাচ্ছি। সে যদি জানে তাহলে তাকে সামাল দিবো কিভাবে বুঝতে পারছো?”
-” আংকেল আপনি এত অস্থির হয়ে গেলে তো অসুস্থ হয়ে যাবেন।”
-” আমার ছেলেটা মরে গেলে আমি বেঁচে থেকে কি করবো?”
-” ছিঃ আংকেল এসব কি বলছেন? মুহিব মারা যাবে কেনো? ”
-” তুমি দেখোনি আমার ছেলেটার কি হাল হয়েছে?”
-” হ্যা আংকেল তা তো দেখেছিই। গতকাল রাতেও তো ওকে বেশ স্বাভাবিক দেখলাম। হঠাৎ ছয় সাত ঘন্টার ব্যবধানে ওর কি হয়ে গেলো বুঝলাম না। ”
-” শুনো আমি এতকিছু জানি না। আমি আমার ছেলেকে সুস্থ দেখতে চাই। ঐ মেয়েকে খুঁজে বের করো। দরকার পড়লে ঐ মেয়ের পুরো ফ্যামিলি সহ তুলে এনে আমার ছেলের সামনে হাজির করো। ঐ মেয়ের পরিবার তাদের মেয়েকে আমার ছেলের কাছে দেয়ার বিনিময়ে যা চাইবে আমি তাই ই দিবো।”
-” আংকেল দেনা-পাওনার হিসেব পরে হবে। মুহিব একটু সুস্থ হোক। আমি ওর সাথে কথা বলবো। সব ঠিক হয়ে যাবে আংকেল।”
মুহিবের বাবা কপালে হাত রেখে বসে আছেন। তার পাশে বসে আছে অনিম। শিমুল ফোন করেছে অনিমের মোবাইলে। একটু দূরে সরে যেয়ে অনিম ফোনটা রিসিভ করলো,
-” হ্যা শিমুল বলো।”
-” মুহিব ভাইয়ের অবস্থা কি?”
-” ঘুমুচ্ছে। ডক্টর হাই পাওয়ারের ইনজেকশন দিয়ে গেছে।”

-” আচ্ছা শোনো, দুপুরে আমি খাবার নিয়ে আসবো। তুমি হসপিটালেই থেকো।”
-” হ্যাঁ আমি আছি। তুমি জলদি এসো। জরুরি কথা আছে তোমার সাথে।”
-” কি ব্যাপারে?”
-” আহ্ আগে আসো তো।”
দুপুর আড়াইটার দিকে শিমুল হসপিটালে এলো খাবার নিয়ে। মুহিবের ঘুম তখনও ভাঙেনি। অনিম এই ফাঁকে শিমুলের সাথে সকালে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো বললো। শিমুলেরও মুহিবের জন্য খারাপ লাগছে। সে অনিমকে বললো,
-” এখন বুঝতে পারছি মুহিব ভাই গতকাল রাতে কেনো এই কথা বলেছিলো?”
-” কোন কথা?”
-” ঐ যে বললো না তুমি মুহিব ভাইকে ভুলে যাবে উনি মরে গেলে।”
-” হুম বেচারা ডিপ্রেশনে ভুগছে।”
-” তুমি জানো উনি গতকাল সকালে আমাদের ছবিতে কমেন্ট করেছিলো মনের সুতো নাকি কৌশলে টান লাগলে ছিঁড়ে যায়। তখন উনার কথার মানে বুঝিনি। এখন বুঝতে পারছি কেন এই কথা বলেছিলো। অনিম যেভাবে পারো মেয়েটাকে খুঁজে বের করো। আমরা সবাই মিলে বুঝিয়ে শুনিয়ে দেখি ওদের সম্পর্কটা আবার ঠিক করতে পারি কি না।”

মুহিবের ঘুম ভেঙেছে। চোখ মেলেই সে শিমুলকে দেখতে পেলো। অনিম গিয়েছে ওয়াশরুমে হাত মুখ ধুতে। শিমুল মায়াভরা এক হাসি দিয়ে মুহিবকে জিজ্ঞেস করলো,
-” কি অবস্থা মুহিব ভাই? কেমন আছেন আপনি এখন?”
-” আমার আর ভালো থাকা! দেখতেই পাচ্ছো নিজের চোখে কেমন আছি।”
-” না মুহিব ভাই। পুরোপুরি দেখতে পাচ্ছিনা। কারন আপনি আপনার ভেতরের অবস্থাটা দেখতে দিচ্ছেন না। শুধু বাহিরেরটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি।”
-” ভেতরের অবস্থা মানে?”
-” হুমমমমম,,,,, মানে তো আপনি আমাদের বুঝাবেন।”
-” তোমার কথার আগা-মাথা কিছুই বুঝতে পারছি না।”
অনিম ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে হাত-মুখ মুছতে মুছতে মুহিবের পাশে এসে বসলো।
-” কেমন লাগছে তোর এখন।”
-” হুম আছি কোনোরকম। মাথা ব্যাথা করছে প্রচুর।”
-” তো এই মাথা ব্যাথার মেডিসিনটা কোথায় গেলে পাওয়া যাবে?”
-” ফার্মেসী তে গেলেই তো পাবি। গতকাল রাতে ডক্টর প্রেসক্রাইব করে গিয়েছিলো।”
-” বুঝেও না বুঝার ভান কেনো করছিস বলতো মুহিব?”
-” কি শুরু করেছিস তোরা দুজন? সেই কখন থেকে কিসব ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলছিস। ঠিক করে বল কি বলতে চাচ্ছিস।”
-” উহুম….. আমরা বলবো না। আমরা জিজ্ঞেস করবো আর তুই বলবি। আগে আয় খাওয়া শুরু করি। বেলা হয়েছে অনেক।”
-” আমার দুই হাত তো ছিলে গেছে। আমার পক্ষে নিজে খাওয়া সম্ভব না। তুই আগে খা এরপর আমাকে খাইয়ে দিস।”
-” আমি খাওয়া শেষ করে তোকে খাওয়াতে গেলে দেরী হয়ে যাবে। এক কাজ করো শিমুল তুমি ওকে খাইয়ে দাও।”
মুহিব বেশ দৃড় কন্ঠে শিমুলকে নিষেধ করলো সে যেনো তাকে না খাইয়ে দেয়। অনিম মুহিবকে বললো,
-” এমন ভাবে বলছিস মনে হচ্ছে শিমুল তোকে খাইয়ে দিলে কতবড় অঘটন ঘটে যাবে।”
-” না, প্লিজ অনিম বুঝার চেষ্টা কর। আমি খাবো না শিমুলের হাতে।”
-” মুহিব ভাই, আমার হাতে খেলে কি আপনারও কি রাগ করবে?”
-” আমার ও?”
-” হয়েছে আর ঢং করতে হবে না। আমি আপনাকে এখন খাইয়ে দিবো। আপনারও যদি এই কথা শুনলে রাগ করে তাহলে আপনাকেও আমি বুঝিয়ে বলবো যে একটা ছোটবোন তার বড়ভাইকে খাইয়ে দিয়েছে।”
-” শিমুল….”
-” একটা কথা বলবেন না আপনি। এই অনিম তুমি ভাইকে তুলে বসাও।”
শিমুল মুহিবকে খাইয়ে দিচ্ছে। মুহিব একটু একটু করে খাচ্ছে। শিমুল মুহিবকে জিজ্ঞেস করলো,
-” মুহিব ভাই আপনি তো চুপচাপ খেয়েই যাচ্ছেন। একবারও তো বলছেন তরকারিগুলা কেমন হয়েছে?”
-” হুমম ভালো হয়েছে।”
-” শুধু ভালো?”
-” তোমার রান্না বরাবরই ভালো হয়। নতুন করে আর কি প্রশংসা করবো বলো?”
-” বারবার প্রশংসা করবেন। প্রশংসা শুনতে খুব ভালো লাগে আমার।”
-” প্রশংসা করার জন্য মানুষ তো তোমার আছেই।”
-” কে? অনিম?”
-” হ্যা অনিম। ও তোমার প্রশংসা করে না?”
-” হুম ওতো সারাদিনই করে।”
-” তাহলে তো হলোই। আমি আর প্রশংসা করে কি করবো?”
-” হুমম…. বুঝতে পারছো না শিমুল ও তোমার প্রশংসা করলে তো মুহিবের ও মুহিবকে সন্দেহ করবে।”
-” আচ্ছা সেই কখন থেকে তোরা কার কথা বলছিস?”
-” আপনি জ্বরের ঘোরে যার কথা বলে কেঁদেছেন, আপনার ভালোবাসা বুঝেনা, আপনাকে রেখে দূরে চলে গেছে আমরা তার কথা বলছি।”
মুহিবের আত্মার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। কি বলেছে সে জ্বরের ঘোরে? চোখ বড় করে শিমুলের দিকে তাকাচ্ছে একবার অনিমের দিকে তাকাচ্ছে একবার।
-” মুহিব ভাই চোখ বড় করে তাকিয়ে লাভ নেই। আপনি সব সত্যি কথা বলে ফেলেছেন শুধুমাত্র মেয়ের নাম ঠিকানা বাদে। এখন দেরী না করে বাকি তথ্যগুলোও বলে ফেলেন।”
-” তথ্য থাকলে তো বলবো।”
-” কি রে মুহিব? আমি তোর বেস্ট ফ্রেন্ড কথাটা তো আমাকে বললেও পারতি। প্রেম করলি, আবার ব্রেকআপ ও হয়ে গেলো অথচ আমাকে কিছুই জানালি না। নিজে নিজে এত কষ্ট পাচ্ছিস।”
-” মুহিব ভাই, একবার মেয়ের নাম ঠিকানাটা বলেন।”
-” নাম, ঠিকানা বলে কি হবে শিমুল? তুমি এনে দিতে পারবে ওকে আমার জীবনে?”
-” পারবো না কেনো? যেভাবে পারি ওর সাথে আপনার বিয়ের ব্যবস্থা করবো।”
-” এটা কোনোদিনও সম্ভব না শিমুল। ও অনেক দূরে চলে গিয়েছে। হাজার কিছু করেও ওকে আমার করে নেয়া সম্ভব না।”
-” আপনি এমন হাল ছেড়ে দিলে কিভাবে হবে?”
-” হাল ছাড়বো না তো কি করবো? যদি হাল ধরে রাখি তাহলে ওর সংসার ভেঙে ওকে নিয়ে আসতে হবে।”
-” মেয়ের কি বিয়ে হয়ে গেছে নাকি রে মুহিব?”
-” হ্যা”।
-” মুহিব ভাই সত্যিই কি মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে?”
-” শোনো শিমুল এত কথা বলে লাভ নেই। ও এখন অন্য কারো। সেখান থেকে ওকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না।”
-” বললেই হলো সম্ভব না? মেয়ে অন্য কারো হলে হয়েছে। সেখান থেকে আমরা মেয়েকে নিয়ে আসবো। ঐ মেয়ে আপনার হবে এটাই ফাইনাল।”
মুহিব শিমুলের কথা শুনে মুচকি হেসে বললো,
-” তুমি জানো তুমি কি বলছো?”
-” হ্যা জানি। একটা মেয়ে আপনার সাথে প্রেম করবে এরপর আপনাকে ছেড়ে অন্য কারো হাত ধরে চলে যাবে এটা কেমন কথা? আর সে যেতে চাইলেই আপনি দিবেন কেনো? যাকে ভালোবাসেন তাকে আগলে রাখতে হয় সেটা কি জানেন না? যাকে ভালোবাসেন সে শুধুমাত্র আপনার।”
-” শিমুল তোমাকে যদি নামটা বলি তাহলে এখন কি হবে তুমি জানো?”
-” কি হবে?”
-” তুমি কল্পনাও করতে পারবে না কি থেকে কি হয়ে যাবে। অতএব এই ব্যাপারে কথা না বললে আমি খুশি হবো। আর তোমরা দুজন আমার কাঁটা ঘায়ে নূনের ছিঁটা দিচ্ছো। প্লিজ এই নূনের ছিঁটা দেয়া বন্ধ করো।”
-” মুহিব বল না ভাই।”
-” দেখ এমনিতেই আমার শরীরটা ভালো না। এসব কথা বলে আমার মাথা ব্যাথা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছিস। প্লিজ আপাতত থাম। আমি সুস্থ হই এরপ যা জিজ্ঞেস করবি আমি উত্তর দিবো।”
-” সত্যি তো?”
-” হুম”।

– বিকেল পর্যন্ত শিমুল অনিম হসপিটালেই ছিলো। মুহিবের বাবা আসরের নামাজ পড়ে কেবিনে এসেছেন। উনি আসার আধাঘন্টা পর অনিম শিমুল বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে। ওরা চলে যাবার পর কেবিন থেকে অন্যান্য লোকদের বের করে দিয়ে মুহিবকে জিজ্ঞেস করলেন,
-” মুহিব আমি তোর বাবা। তোর কষ্ট আমার আর সহ্য হচ্ছেনা। ভোরে তুই যে সমস্ত কথা বলেছিস সেগুলো শোনার পর থেকে আমার মাথাটা খারাপ হয়েছিলো সারাদিন। সারাদিন ভেবেছি কে এই মেয়ে? কিছুক্ষন আগে খুব সম্ভবত আমার উত্তরটা আমি পেয়ে গেছি। তবুও শিউর হওয়ার জন্য তোকে জিজ্ঞেস করছি। সামনাসামনি উত্তর দিবি আমাকে। তুই কি শিমুলকে ভালোবাসিস?”
মুহিব হা করে ওর বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। কোনো উত্তর দিচ্ছে না। মুহিবের বাবা আবার বলতে শুরু করলেন,
-” মুহিব আমি সত্যটা শুনতে চাচ্ছি। উত্তর দে আমাকে। তুই একদম ভয় পাস না। বিশ্বাস কর, এই কথা শুধুমাত্র তোর আর আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। বল মুহিব।”
-” হ্যা আব্বা, আমি শিমুলকে ভালোবাসি। অনেক আগে থেকেই ভালোবাসি।”

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here