ধূসর প্রেমের অনুভূতি পর্ব -৩৩

#ধূসর_প্রেমের_অনুভূতি
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব_৩৩
.
.
আদিল রাফির কথায় বিরক্ত হয়ে চোখ পাকিয়ে বলে উঠলো ,” বেশি কথা না বলে আমার সাথে আয়৷ সূর্য ডুবে যাচ্ছে এই সময় আমাদের ভিতরে ঢুকতে হবে৷ ”

” কিন্তু কেন?”

আদিল এবার দাঁতে দাঁত চেপে কটমট করে রাফির দিকে তাকিয়ে বলল,

” আর একটা এক্সট্রা কথা বলবি তো তোকে আমি,,,” বাকিটা বলার পূর্বে রাফি বাচ্চাদের মতো ফেস করে আদিলকে বলল,” স্যরি ভাই আর কোন এক্সট্রা প্রশ্ন করবো না৷ এবার অন্তত ক্ষমা কর আমায়?”

” ওকে বাট আর একটা এক্সট্রা কথা বলবি তো মেরে তোকে চান্দে পাঠিয়ে দিবো৷ এখন মুখ বন্ধ করে আমার সাথে আয়৷”

রাফি ভালো ছেলের মতো আদিলের পেছন পেছন যেতে লাগলো৷ সন্ধ্যেবেলা তার উপর চারিদিকে অন্ধকার হয়ে আসছে৷ আদিল ফোনের ফ্লাশ জ্বালিয়ে খুব সাবধানে যেতে লাগলো বিল্ডিংয়ের ভেতরে৷

দশ তালা বিল্ডিং অথচ পাঁচ তালা ফ্লোর পর্যন্ত প্রত্যেকটা ফ্লাট খালি৷ আদিল রাফি খুজে কোন ক্লু না পেয়ে বাকি ফ্লোর গুলো দেখার জন্য সিড়িঁ ব্যবহার করতে রাফি খেয়াল করে পাশে লিফ্ট আর সেটা চলছে৷ পরিত্যাক্ত এমন একটা বিল্ডিংয়ের লিফ্ট চলছে৷

” ভাই স্টপ৷”

” কি হয়েছে?”

” ভাই ওই দেখ লিফ্ট চলছে৷”

আদিল খেয়াল করে দেখে রাফি যা বলছে সেটা সত্যি৷

” রাফি দ্রুত চল আমার মনে হচ্ছে উপরের বাকি ফ্লোরে কোন একটাতে আমাদের কাঙ্খিত জিনিস রয়েছে৷ ”

” ওকে দ্রুত চল৷”
.
.
.

” হেই হ্যারি কখন থেকে না খেয়ে বসে আছি কিন্তু ওই নার্সদের তো কোন খোজ নেই৷”

” হ্যাঁ লিও আমারও প্রচন্ড খিদে পেয়েছে৷ কিন্তু কি করার মেয়ে গুলো কে তো ঠিক সময়ে পাওয়া যায় না৷ জেসিকা তো আমাদের এখানে রেখেই উধাও৷”

” হ্যারি আমরা তো প্রায় সুস্থ এখন তাহলে কি আমরা এবার এখান থেকে বের হতে পারি না?”

“তোমার কি মনে হয় লিও এখান থেকে বেড়িয়ে আমরা সুস্থ থাকবো? যদি এটা ভেবে থাকো তাহলে ভুল ভাবছো কারণ আরু মারু আর ওই অফিসার মেঘ আমাদের ছেড়ে দিবে? না লিও এখান থেকে বের হওয়ার পর ওরা আমাদের জানে মেরে দিবে৷ ”

” তাহলে কি আমরা এভাবে এই চার দেওয়ালের মাঝে বন্দি থাকতে হবে?”

” না লিও আর যাস্ট কিছুদিন অপেক্ষা কর৷ তারপর না হয় আমরা দেশে ফিরে কিছু একটা ব্যবস্থা করবো৷ এখানে আমাদের ক্ষমতা অতি সামান্য আরু মারুর থেকে তাই বলছি ধৈর্য ধরো৷ ”

” কিং ফায়ার কি বলছে হ্যারি?”

” কিং ফায়ারের অবস্থা এখনো ভালো নয় লিও৷ কিং ফায়ারের সুস্থ হতে সময় লাগবে৷”

এদিকে রাফি আদিল আটতলায় এসে সব ফ্লাট খোলা পেলেও একটা ফ্লাট বন্ধ দেখে আদিল রাফির সন্ধেহ হয়৷ হঠাৎ রাফি আদিল লিফ্টের দিকে চোখ পড়তে দ্রুত অন্য একটা খালি ফ্লাটে ঢুকে পড়ে৷

লিফ্ট থেকে এক সুন্দরী নার্স বের হয়৷ হতে তার অনেক গুলো ব্যাগ৷ এতো কম সময়ে এতো কিছু কিনে কি করে আনলো মেয়েটি? ভেবে পাচ্ছে না আদিল৷

মেয়েটি সেই বন্ধ দরজার লক খুলে ভেতরে ঢুকে দরজা লক করে দেয়৷ আদিল রাফির সন্ধেহ সত্যি হলো৷ দুজনে খুব সাবধানে লিফ্ট ব্যবহার করে বিল্ডিং থেকে বেড়িয়ে আসলো৷

(৬১)

রুমে এসে তনু বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লো৷ কোমর হাত দুটোতে ভিষণ ব্যথা করছে৷ নরতে চরতে পর্যন্ত পারছে না তনু৷ রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে তনু বিড়বিড় করে বলতে লাগলো৷

” আমার,, এই আমার প্লানে জল ঢেলে দিলো কে? ফারু নাকি মেঘ? নাকি অন্য কেউ? যেই হোক না কেন ছাড়বো না তাকে কিছুতেই ছাড়বো না৷ আর ফারিহা অর্নিল ওরা আজ বেঁচে গেছে তাতে কি হয়েছে ফারু? এর পরের বার আর বাঁচবে না ওরা৷ এক এক করে সবাইকে শেষ করে দিবো৷ তারপর তারপর হা হা হা ” বাকিটা না বলে পাগলের মতো হাসতে লাগলো তনু৷

মেঘ ফারহার রুমে বসে অর্নিল ফারিহা কথা বলছে৷ ফারিহা সবটা ফারহাকে খুলে বলে৷ কিন্তু সেই আগন্তক যাকে দেখে ফারিহা ভয় পেয়েছিলো তার কথাটা মেঘ এবং অর্নিলের কাছ থেকে স্কিপ করে গেল৷

মেঘ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ভেজা তোয়ালে ব্যালকনিতে মেলে দিয়ে এসে ফারিহাকে বলে,

” ফারিহা এখন থেকে তোমাকে এবং অর্নিলকে আরো কেয়ার ফুল থাকতে হবে৷ আজকে তোমাদের উপর এট্যাক হওয়াটা বুঝিয়ে দিচ্ছে তোমাদের উপর থেকে বিপদ এখনো কাটেনি৷ ”

” জানি জিজু কিন্তু আমি এটা বুঝতে পারছি না কে আমাদের উপর এট্যাক করলো?”

” আমি জানি কে তোমাদের উপর এট্যাক করেছে৷ তবে চিন্তা কর না খুব শীগ্রই তাদের প্রত্যেকের ব্যবস্থা আমি করবো৷ আর একটা কথা তোমরা কেউ ওই বাড়িতে ফিরে যাবে না কারণ আজ থেকে এখানে তোমরা থাকবে৷ যতোদিন না ওদের কে আমি নিজ হাতে শাস্তি দিতে পারছি৷”

ফারহার কথা শুনে মেঘ তৎক্ষনাৎ বলে উঠলো,” ফারুপাখি আইন নিজের হাতে তুলে নিবে না৷ আইন ওদের ব্যবস্থা করবে৷”

” ওহ রিয়েলি মেঘ! তাহলে তোমার এই আইনের চোখে ধুলো দিয়ে দিয়ে কি করে কিং ফায়ার লিও হ্যারি পালিয়ে গেল?”

মেঘ নিরুত্তর ৷ ফারহা আবার বলতে লাগলো৷

” লিসেন মেঘ আমি আমার শত্রুদের নিজের হাতে শেষ করবো৷ তোমার আইন কানুন মানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়৷ একান্ত যদি তোমার সমস্যা থাকে তাহলে বলবো, আমার কাজ শেষ হওয়ার পর তোমার বসের অর্ডার পালন করো৷ ”

মেঘ সন্ধেহের দৃষ্টিতে ফারহার দিকে তাকিয়ে বলে,” উপর মহল থেকে আশা ওডার্রের কথা তুমি কি করে জানলে ফারুপাখি?”

ফারহা মেঘের দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি দিয়ে ফারিহার দিকে তাকিয়ে বলল,” ফারিহা তনুর রুমের বা দিকের রুমটায় গিয়ে তোরা রেস্ট কর৷ আমি সারভেন্টকে বলে দিচ্ছি আর একটা গেস্টরুম অর্নিলে জন্য ক্লিন করে দিতে৷ ”

” ওকে আপু৷”

অর্নিল ফারিহা রুম থেকে বের হতে মেঘ ফারহাকে জড়িয়ে ধরে বলে,” সত্যি করে বলো তো ফারুপাখি তোমার মাথায় কি চলছে? তনুর সাথে তুমি যা করলে আর এখনকার বলা কথা গুলো আমার কাছে ভিষণ গোলমেলে লাগছে৷ সত্যিটা বলো প্লিজ তুমি ঠিক কি করতে চাইছো?”

ফারহা মেঘের গলা জড়িয়ে ধরে মেঘের নাকে নাক ঘষে বলে ,” এখন আমি আমার বরের আদর খেতে চাইছি বরসাহেব৷ ” কথাটা বলে দুষ্টুমি হাসি দিলো ফারহা৷ মেঘ ফারহার রাগ জেদ সম্পর্কে অবগত তাই আর জোর করলো না৷ ফারহাকে পাজা কোলে তুলে নিয়ে মেঘ ফারহার কপালে ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে বলল,” ইউ নো ওয়াট ফারুপাখি, উইথ আউট ইউ , আই এ্যাম নাথিং, উইথ ইউ , আই এ্যাম সামথিং. টুগেদার, উই আর এ্যাভরি থিং.

ফারহা পরম আবেশে মেঘের বুকে মাথা রেখে বলল, ” ভালোবাসি মেঘরাজ৷ বড্ড বেশি তোমায় ভালোবাসি ৷”

মেঘ মুচকি হেসে ফারহাকে বেডে শুইয়ে দিয়ে লাইট অফ করে ফারহার কানে কাছে ফিসফিস করে বলে উঠলো, ” তৈরি তো মিসেস চৌধুরী? এই মেঘের ভালোবাসার স্পর্শে মাতাল হতে প্রস্তুত তো?”

ফারহা লজ্জায় মেঘের বুকে মুখ গুজে ফেলে ৷ তা দেখে মেঘ চমৎকার এক ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে তার ফারুপাখির ভালোবাসার অথৈ সমুদ্রে ডুবে গেল ৷

রাতে ডিনার টেবিলে প্রত্যেকে হাজির হলেও তনু মেঘ আর ফারহা অনুপস্থিত ৷ মেহরীমার নির্দেশে সারভেন্ট গিয়ে তনু এবং মেঘ ফারহার রুমের সামনে গিয়ে নক করে৷ তনু আগে বলে দেয় সে ডিনার করবে না৷ কিন্তু এদিকে মেঘ ফারহা দুজনে এক সাথে শাওয়ার নেওয়ার পর দুজনের প্রচন্ড খিদে পেয়েছে৷ কিন্তু ভিজে চুল নিয়ে নিচে যেতে ফারহার বড্ড লজ্জা লাগছে৷ মেঘ ফারহাকে ডিনার করার জন্য নিচে যেতে বললে ফারহা না করে দেয়৷ ফারহারও যে প্রচন্ড খিদে পেয়েছে এটা মেঘ ও বুঝতে পারছে কিন্তু আসল সমস্যাটা কোথায় সেটা বুঝতে পারছে না৷ মেঘ ফারহাকে কোলে বসিয়ে বলে,” জান কি হয়েছে তুমি ডিনার করবে না কেন? কোন সমস্যা হয়েছে?”

” না মেঘ আমার খিদে নেই৷ তুমি গিয়ে ডিনার করো৷”

” হুসস আমি জানি আমার বউয়ের এখন বড্ড খিদে পেয়েছে কিন্তু কোন এক কারণবসত তুমি নিচে যেতে চাইছো না৷ আর আমি সেই কারণটা জানতে চাইছি৷”

” আসলে মেঘ সবার সামনে যেতে আমার কেন যেন খুব লজ্জা করছে ৷”

মেঘের বুঝতে বাকি নেই ফারহা কি বলতে চাইছে৷ মেঘ ফারহাকে তুলে নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে ফারহার চুল গুলো শুকিয়ে দিয়ে চুল গুলো সুন্দর করে সেট করে দিলো৷ ফারহা হতভম্ব হয়ে নিজেকে মনে মনে একরাশ গালি দিতে লাগলো,” কি পরিমান গাধী হলে এই সামান্য সমস্যার সমাধান করতে পারলি না ফারহা? কবে থেকে এতো বোকা গাধী হয়ে গেলি? মেঘ কি ভাবলো তোকে? তুই তো পুরাই একটা বলদি৷”

মেঘ ফারহার মুখের ভাব ভঙ্গি দেখে বলে উঠলো ,” নিজেকে গালি দেওয়া হয়ে গেলে আমরা নিচে যেতে পারি মহারানী?”

ফারহা হুট করে মেঘের গালে চুমু দিয়ে বলে” একদম৷ ”

রাতে ডিনার শেষে আদিল রাফি দুজনে ফারহাকে কিছু বলতে চায় কিন্ত মেঘ থাকায় তা বলে উঠতে পারছে না বিধায় মেঘ রুম থেকে বেরিয়ে যায়৷

” দি তাদের খোজ পেয়ে গেছি৷ তোর ইনফরমেশন অনুযায়ী তারা সত্যি ওখানে ছিলো৷ ”

” হ্যাঁ আপু রাফি ঠিক বলেছে তবে ওখানে ওরা একা নেই সাথে আরো কেউ আছে৷”

” জানি ৷ যারা আছে তারা ওদের দেখাশুনা করে পিচ্চি৷ তোদের কে ওরা দেখতে পাইনি তো?”

” না আপু৷ ”

“ভেরি গুড৷ ওদের উপর ভালো করে নজর রাখ যেন পালিয়ে যেতে না পারে৷”

” তাই হবে দি৷ কিন্তু শুধু নজরদারি করবো?”

” হু এখন শুধু তোদের এই টুকু কাজ বাকি কাজটা আমি নিজের হাতে করবো খুব শীগ্রই৷”

রুমের বাহিরে দাড়িয়ে আছে মেঘ৷ ফারহা আদিল রাফির প্রত্যেকটা কথা শুনতে পেয়েছে মেঘ ৷ সবটা শুনে আসলামকে ফোন করে মেঘ৷ আসলাম সারাদিন মেঘের কাজ গুলো করে যাস্ট ঘুমিয়ে পড়েছিলো কিন্তু ফোনের কর্কশ আওয়াজে সেই মহামূল্যবান ঘুম ভেঙে যাওয়ায় আসলাম বেশ ক্ষেপে যায়৷ কিন্তু ফোনে হাতে নিয়ে ফোনের স্কিনে মেঘের নাম্বার দেখে চোখে মুখে ভয়ের ছাপ ফুটে ওঠে৷ দ্রুত কল রিসিভ করে কানে ধরতে মেঘ ওপাশ থেকে ধমকের সুরে বলতে লাগলো,” এতোক্ষণ সময় লাগে কল রিসিভ করতে ইডিয়েট?”

” স্যরি স্যার যাস্ট একটু চোখ লেগে গিয়েছিলো৷”

আসলামের কথা শুনে মেঘ একটু নরম গলায় বলে উঠলো ,” ওহ! আসলাম আগামিকাল থেকে আদিল আর রাফির উপর তোমাকে নজর রাখতে হবে চাইলে জ্যাকেও তোমার সাথে রাখতে পারো৷”

জ্যাকের নাম শুনে আসলাম চোখ মুখ কুচকে বলে,” নো স্যার আমি এনাফ এই কাজের জন্য; জ্যাককে কোন প্রয়োজন নেই৷”

” এ্যাজ ইউর উইস ৷ নাও গুড নাইট , এ্যাভ এ সুইড ড্রিম৷” বলে কল ডিসকানেক্ট করে দিলো মেঘ৷ এদিকে আসলাম ফোনে এলার্ম সেট করে একা একাই বক বক করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লো৷

(৬২)

সূর্যের তীর্যক রশ্মি মেঘের চোখের উপর পড়তে কপাল কুচকে অন্য দিকে ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে৷ পাখির কিচিরমিচির সাথে সূর্যের তীর্যক গা জ্বালানো রশ্মির জন্য মেঘের ঘুম ভাঙতে বাধ্য হয়৷ মেঘ চোখের পাতা মেলে অনুভব করে তার বুকের উপর কেউ মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে৷ মেঘের ঠোঁটের কোণে তৃপ্তিময় হাসি ফুটে ওঠে কারণ তারপর প্রিয়তমা তার অর্ধাঙ্গিনী তার প্রেয়শী ফারুপাখি বুকের মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে৷ ভালোবাসার মানুষটাকে বুকে জরিয়ে ধরতে খুব কম মানুষই পারে৷ এমনটা নয় কেউ পারে না কিন্তু কজন পারে তার ভালোবাসার মানুষটাকে ভালোবেসে নিজের সারাটা জীবনের সাথে জড়িয়ে নিতে! কজন পারে সেই ভালোবাসার মানুষটাকে হালাল ভাবে স্পর্শ করতে? কজন পারে তার ভালোবাসার মানুষটাকে ভালোবেসে হাজারটা আঘাত সহ্য করতে? সকল বিপদ অতিক্রম করে ভালোবাসার মানুষটার হাত জোড়া আকড়ে ধরে বাঁচতে?

মেঘ ফারহার কপালে এলোমেলো চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে এক গভীর চুম্বন দিলো৷ ফারহা একটু নরেচরে আবার মেঘকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে৷

গেস্ট রুমের ছোট্ট ব্যালকনিতে কফি হাতে দাড়িয়ে আছে ফারিহা৷ বাগানে ফোটা নানা রকমের ফুল আর প্রকৃতি দেখায় ব্যস্ত ফারিহা৷ এতো বছর প্রকৃতি দেখা বা সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো মন বা ইচ্ছে কোনটাই ছিলো না ফারিহার তবে কয়েকদিন ধরে ফারিহা এই প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখায় প্রত্যেকটা মুহূর্ত ভিষণ উপভোগ করে৷

অর্নিল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে ফারিহার রুমে এসে ফারিহাকে দেখতে না পেয়ে ব্যালকনিতে এসে ফারিহাকে দেখতে পায়৷ ফারিহা এতোটাই প্রকৃতি দেখায় ব্যস্ত যে পাশে অর্নিল দাড়িয়ে আছে সেটা খেয়াল করেনি৷ হঠাৎ পেছন থেকে অর্নিল ফারিহাকে জড়িয়ে ধরতে ফারিহা চমকে ওঠে৷ ফারিহা স্পর্শে বুঝতে পারে জড়িয়ে ধরা মানুষটা যে তার একান্ত নিজের মানুষ৷ অর্নিল পেছন থেকে ফারিহাকে জড়িয়ে ধরে বলে ,” গুড মরনিং সুইটহার্ট ৷”

” গুড মরনিং ৷ ”

ফারিহা অর্নিল দুজনে ব্যালকনিতে দাড়িয়ে নিজেদের ভেতর কথা বলতে লাগলো৷ এদিকে অর্নিল কথা বলার চেয়ে ফারিহার সাথে দুষ্টুমি করে যাচ্ছে ৷ আর ফারিহা অর্নিলকে বকে যাচ্ছে৷

ফারিহা বা অর্নিলের কারোর চোখে এখন অব্দি পড়লো না পাশের ব্যালকনিতে দাড়িয়ে থাকা মানুষটাকে৷ ফারিহা আর অর্নিলের সুন্দর মুহূর্ত গুলো দেখে ভেতরে ভেতরে অগ্নিদগ্ধ হচ্ছে আর ভাবছে কি করে এই সুন্দর মুহূর্ত গুলোয় আগুনের ফুলকি ছিটিয়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারে৷
.
.
.
#চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here