নিশীথচিত্র পর্ব ১৮+১৯

‘নিশীথচিত্র'(১৮)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে

_____________

পৌছাতে পৌছাতে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলো।হঠাৎ ডিসিশন নেয়ার কারণে ডিরেক্ট বাস পায় নি।ভেঙে ভেঙে বাড়ি পৌছাতে হয়েছে তার।অনেক দিন বাদে অতি পরিচিত গ্রামটাকে দেখে তার শরীরের পশম দাঁড়িয়ে গেছে।গ্রামের বাতাশ এক আলাদা প্রশান্তির জোগান দিচ্ছে।কিছুক্ষণ বাদেই বাবা মা বোনের মুখগুলো দেখবে সে।সে এক আলাদা রকম প্রতীক্ষার অনুভূতি। তবে মন খারাপের কারণ বুকের শূন্য স্থানটাকেও ঢের টের পাচ্ছে সে।একবার কি বলে আসা উচিত ছিলো রিনিকে? রাগে কি বেশি হয়ে গেলো? পরক্ষণেই দিহানের মনে হলো নাহ যা করেছে একদম ঠিক করেছে।ফুটবল, ক্রিকেট, আড্ডা দেখে দিহানের মাথা ঝনঝন শুরু হয়ে গেছিলো।তাজিম ভাইয়া তাজিম ভাইয়া অসহ্য!

অসহ্য বলতেই দিহানের নাক মুখ কুচকে এলো।রিনির কারণে তাজিম যে তার অকারণেই কতোটা অপছন্দের ছিলো তার ভাবনার বহির্ভূত ব্যাপার স্যাপার।এসব ভাবতে ভাবতেই ঘরের দরজায় পা পরলো তার।বাসার কেউই জানে না যে দিহান আসবে।

ফিরোজ বাসায় নেই সে ফিরতে ফিরতে নয়টা বাজবে। দিহানের মা হাফসা নামাজ শেষ করে নামাজের পাটিতে দোয়া দুরুদ পরছে।দরজায় কড়া নাড়তেই দিপ্তি ছুটে এসে দরজার সামনে দাড়ায়।বেশ কয়বারই “বাইরে কে? কে? “বলে প্রশ্ন করলেও ওপাশ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায় না।

দিহান শুধু মুখ টিপে হাসছে।কারণ তার বোন কে কে প্রশ্ন করে ধৈর্যের সীমা লঙ্ঘন করার পরই বলে উঠবে ” নাম না বললে কিন্তু দরজা খুলবো না” আর দিহানের অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো দিপ্তি জোরে জোরেই বলতে লাগলো “নাম না বললে দরজা খুলবো না”।দিপ্তির হাক ডাকে হাফসাও তার রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে বার কয়েক প্রশ্ন করলো।

দিপ্তির মাথায় কিছু একটা খেললো।সে ফট করে দরজা খুলে দিলো।তার সন্দেহই সঠিক। তার ভাই ই এসেছে।

— মা ভাইয়া এসেছে। দেখো।দরজার সামনে দাঁড়িয়ে একমাত্র ও ছাড়া এমন আর কেউ করে না।

দিহান দিপ্তির কান মলে দিয়ে ঘরে ঢুকে পরলো।আফসার চোখের পানি বিনা নোটিসে গড়িয়ে পরলো।দিহান শক্ত করে মাকে জড়িয়ে ধরলো।এই যুগে এসেও তার মা খুবই সাধারণ,সহজ,সরল, নির্ভেজাল একজন মানুষ। এক মুখ হাসি নিয়ে ছেলে মেয়ে স্বামীর জন্য অপার ভালোবাসা ঢেলে দেয় সে।হাফসা কাদলেও তার মুখে হাসি লেগে আছে।দিহান মায়ের আঁখি পল্লবে চুমু খেয়ে বলে
— মা একদম কান্না করবে না।

_____________

দিহান গোসল সেড়ে বেড়িয়েই দেখে তার বোন ফোন গুতাগুতি করছে।তার মানে এতোক্ষণে তার ব্যাগের সব কিছু দেখা হয়ে গেছে দিপ্তির।নিশ্চয়ই দিপ্তির জন্য আনা জামাটাও দিপ্তির ওয়ারড্রবে স্থান পেয়ে গেছে।এই মেয়েকে সারপ্রাইজ দেয়া আর না দেয়া দুইটাই সমান বলে মনে হয় দিহানের।।

–এই ভাইয়া ফোনটা কার রে?

দিহান পাল্টা প্রশ্ন ছোড়ে

— আমি কি অন্যের ফোন চুরি করে আনবো দিপ্তু?

— তা না মানে তোর মতো কিপ্টা দামি ফোন কিনবে?
দিহান দাত খিটমিট করতে করতে বললো

— আমি কিপ্টা?আমি কিপ্টা? যাহ তোরে আর কিছু দিবোই না

— না দিলে নাই।তবে তুই যে কিপ্টা সেটা মানতে হবে বস।

— আমি মোটেও কিপ্টা না তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কখনও খরচ করি না।আর এমনই হওয়া উচিত। তোর মতো যা পাবো ফু দয়ে উড়িয়ে দেবো নাকি?

— ক্যান আমি উড়াই নাকি?

— আমার থেকে তো বেশি উড়াও।

দিপ্তি ঠেস মেরে বললো
— কালে কালে যে কতো কি দেখবো রে বাবা।

— ক্যান কি এমন দেখলি? বাইরের জগতে তো গেলিই না।এর মধ্যেই কি এমন দেখে ফেললি?

— বাইরের জগতে না গেলেও কতো কি দেখা যায়।বেশ টান দিয়ে বললো দিপ্তি।আবার বললো “ধরো মানুষে ফোনের ওয়ালপেপারে, একসাথে, চিপকাইয়া… থেমে থেমে শব্দ গুলো বলছিলো দিপ্তি।

দিহান দিপ্তির কথা শেষ করতে দিলো না। মুখ চেপে ধরে হাত দিয়ে ছো মেরে ফোনটা নিয়ে নিলো।তার একদমই ওয়ালপেপারে রিনির সাথে দেয়া ছবি টা চেঞ্জ করতে মনে নেই।।দিপ্তি নিজের মুখ ছাড়া পাওয়ার জন্য দিহানের হাতে কামড় বসালো

দিহান হাত ঝারতে ঝারতে বললো
— শালি কুত্তি জানি কোথাকার।

— তুই তো ডাকাইত।মইররা যাইতাম যদি?তাইলে আমার জামাই আমারে কই খুইজ্জা পাইবো হু?

— মরুক। সে তোর মতো বউয়ের মুখ দেখতে না পাইরা নিজেরে ভাগ্যবান মনে করবে। তুই হুদাই তার জন্য কষ্ট পাইস না

— আচ্ছা পাইলাম না।এইবার বলো মেয়েটা কে?কি সুন্দর পাইলি!!!! কই ভাইয়া? দিপ্তি বেশ উচ্ছ্বাস নিয়ে প্রশ্ন করলো

দিহান টি শার্ট গায় পরতে পরতে পাল্টা প্রশ্ন করলো

— পছন্দ হইছে?

— খুব

— ভাবি হিসেবে?

— সত্যিইইই ভাইয়া??? দিপ্তির কন্ঠে চাপা উচ্ছ্বাস। চাপা কারণ মায়ের কান অব্দি না যায় এই জন্য।

— না মিথ্যা

দিপ্তির মুখখানা ফাটা বেলুনের ন্যায় চুপছে গেলো।
আবার প্রশ্ন করলো

— মিথ্যা হলে তোর সাথে ছবি কেন? তাও আবার কোনো ঘরের মধ্যে? তার উপর তোর দিকে কি ভালোবাসা সিক্ত চোখে তাকানো? কেন? কেন? উত্তর দে

— হুহ সে আমার বার্থ ডে তে সারপ্রাইজ দিছিলো শাড়ি পরে।

দিহান একে একে দিপ্তিকে সব বললো।তবে বোনের কাছে লজ্জাজনক বেশ কিছু কথাই বাদ দিয়ে গেলো।যাই হোক ছোট বোনকে এসব বলা যায় না তাই না?

দিপ্তির মাথায় হাত একটা শহুরে মেয়ে মানে তার কাছে বিশাল কিছু।আর সে তার সহজ সরল ভাইটার জন্য এতো পাগলামি করছে? তাও আবার তার নিজের বয়সী।দিপ্তিকে কোনো ছেলে প্রপোস করলেই হাটুতে কলিজা কাপে তার আর এই মেয়ে রাত্তির বেলা শাড়ি পরে গাছ বায়? কি আশ্চর্য। ভালোবাসা কি এতো সহজ? লজ্জা লাগে না? সে নিজেই লজ্জায় দুইমাস ধরে একজনকে ভালোবেসেও তার প্রপোজালে রাজী হতে পারছে না।মনে মনে ভালোবাসা ঠিকরে পড়ছে তবুও কারো কাছে বলতে পারছে না সে লজ্জাত । চাপিয়ে রাখা সহ্যের বাইরে হয়ে গেছে তবুও ভালোবাসির পাল্টা জবাব আমিও ভালোবাসি বলা হয়ে ওঠে নি শুধু মাত্র লজ্জায়।এছাড়াও গ্রামে এসব প্রেম ট্রেমে অনেক নাম হয়ে যায় তাই বাবার মাইরের ভয়েও কিছুটা পেছানো সে।তবে রিনির কথা শুনে ভালোবাসা জিনিসটা দুধভাত মনে হলো তার কাছে।তার এখন মনে হচ্ছে ভালোবাসা চাপিয়ে রাখতে নেই।তাকে ওই আকাশের বিশাল পরিসরে উড়তে দেয়া উচিত।এটা ভালোবাসার নিজস্ব অধিকার।আধমরা কবুতরের মতো ভিতরে ভিতরে ছটফট করতে তার একদমই ভালো লাগছে না।কিন্তু লজ্জার সাথে হেস্তনেস্তই তো করতে পারবে বলে মনে হয় না।

— যা তো চা নিয়া আয়

— না আমার শোনা এখনও বাকি

— আচ্ছা শুনবি আগে চা আন

–বলবি তো?

— আরে হ মাতারি যা চা আন

দিপ্তি চা এনে দিহানের পাশে বসতে বসতে বললো

— ভাইয়া মেয়েটা কি একটুও লজ্জা পায় না? না মানে তুই ওর থেকে কতো বড়। সেম এইজ হলেও মনটারে সান্ত্বনা দেয়া যাইতো কিন্তু তুই ওর কত্ত বড় তবুও…

দিহান হাসলো

— লজ্জা ক্যান পাবে না? খুব লজ্জা পায়।লজ্জায় লাল হয়ে যায় তবুও নাক মুখ খিচিয়ে বলবে আপনার সামনে আমি লজ্জা পেতে চাই না।

দিহান হো হো করে হাসলো কিছুক্ষণ। দিপ্তি বিস্ময়েরর চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে দিহানের দিকে।এমনও লজ্জা হয়???

— ওই ভাইয়া তুই সব মিথ্যা বলতেছো তাই না?

— তাহলে তো ছবি টাও মিথ্যা

দিপ্তি মাথা চুলকাতে চুলকাতে জবাব দিলো

— তাই তো। না মানে ভালোবাসি বলে দেয়া এতো সহজ?

— সবাই একরকম হয়?

দিপ্তি ঠোঁট উল্টে জবাব দেয়
— তা ঠিক।ঘুরতে গেছো কই কই ভাইয়া?

— কোথাও না।কেনই বা ঘুরবো আমি কি ওর সাথে প্রেম করি নাকি?

— এতো কিছু করো… না জানি আরও কি কি চাপাইয়া গেছো আমার কাছ থেকে। সত্যি করে বল আমাকে

— মিথ্যা বললে এতো কিছু কেনো বললাম?

দিপ্তি দাত কামড়ে জবাব দেয়

— তাও ঠিক। কিছুক্ষন থেমে আবার প্রশ্ন করে আচ্ছা তুই রাজী কেন হচ্ছিস না?

দিহান দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।রাশভারি কণ্ঠে বলে
— ওরা অনেক বড়লোক আমাদের সাথে যায় না ওদের।

— তাতে কি? চাকরি করলে তো তুই তো উপযুক্ত হয়ে যাবি

— তখনই না হয় ভালোবাসি বলে দেবো।দরকার পরলে ওর বাবা মায়ের পায়ে পরবো তখন কিন্তু কৃতজ্ঞতা ভঙ্গ করতে পারবো না এই মুহুর্তে ।কেউ সুযোগবাদী ছেলে বলবে আমাকে, বলবে সসম্পত্তি লোভে এসব করছি!!! তা একদম শুনতে পারবো না রে।

— উহু ভাইয়া রিনিকে বলে দিবা “ভালোবাসি” ওর বাবা মা কে তো বলবা না।মেয়েটা না জানি কতো কষ্ট পায়।

— ওরে বলা মানে এক বুক আশা দেয়া।ভালোবাসি বললে ওর পাগলামো বাড়বে তার থেকে এইভাবেই থাক।ও যে পাগল টাইপ তুই ওরে বুঝবি না একদম।বলার পর যদি পরিস্থিতি বিপরীত হয় তখন বুঝাতে পারবো না ওকে কিছুতেই।ঘাড়ত্যাড়া কাজ করার সম্ভবনা আছে ওর থেকে।তার থেকে এমন থাকাই ভালো

দিপ্তি ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললো
— তোমার কি কষ্ট হচ্ছে ভাইয়া?ভালোবাসো তবুও পরিস্থিতির শিকার হয়ে বলতে পারছো না।

বিষন্ন মুখ করে জবাব দেয়
— জানি না বাদ দে। দিহান আবার চকিতে বলে ওঠে “ও খুব ভালো।তাই আমি খারাপ থাকি না বেশি কষ্টও হয় না। খারাপ লাগে যখন ভবিষ্যৎ ভাবি তখন”

— তবুও দমবন্ধ অনুভূতি হয় না? বুকটা আটকা আটকা লাগে না? হাসফাস লাগে না?

— তুই বুঝিস কিভাবে রে দিপ্তু?
কাহিনী কি? চৌকস চোখে তাকিয়ে

দিপ্তির চোখ দুটো বড় হয়ে যায়
— কিছু না ভাইয়া।আমার কি বোঝার বয়স হয় নি নাকি হ্যা?

দিহান সরু চোখে বলে
— রিনির ছেলেদের লাইন মারার বুঝ হলে তোর মনে মনে ভালোবাসার বয়স হয়েছে। এইবার বল ছেলেটা কে? এতো হাসফাস কার জন্য লাগে?

দিপ্তি ছোট্ট করে উত্তর দেয়

— তোমাদের সাথে মানবিক শাখায় পড়তো

— নাম টা কি?

— মেম্বার কাকার ছেলে

— তনয়?এমন লজ্জা নিয়ে বলছিস মনে হয় জানো স্বামীর নাম মুখে নিতে নেই এমন একটা ভাব করছিস।নামটাই উচ্চারণ করতে পারছিস না।কিন্তু আমার জানা মনে তনয় এখন বরিশাল ইউনিভার্সিটিতে পরে তোর পিছনে কখন থেকে ঘোরে নাকি তুই ঘুড়িস?

দিপ্তি মাথা নুয়িয়ে হাতে ওড়নার এক কোণ নিয়ে আঙুলে প্যাচাতে প্যাচাতে বলে
— ধুর আমি কেন ঘুরবো?সে ঘুরতো অনেক আগে থেকে কিন্তু কিছু বলতো না শুধু দূর থেকে দাড়িয়ে থাকতো।আমি তখন কিছু বুঝতাম না।তবে বরিশালে চলে যাওয়ার আগে আমায় একটা চিঠি দিয়ে গেছিলো।সেখান থেকে সব জেনেছি।সে তো এক সপ্তাহ দুই সপ্তাহ পর পরই গ্রামে আসে।স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে।কিন্তু কিছু বলে না।মাঝে মাঝে লুকিয়ে চিঠি পাঠাতো।আগের বার যখন এলো তখন একটা মুঠোফোনও পাঠিয়েছে আমি এখন পর্যন্ত প্যাকেট টাই খুলি নি চিঠি টা পরে জানতে পেরেছিলাম কি পাঠিয়েছে।এখনও হয়তো বাড়িতেই আছে।আমি কিছু করি নি ভাইয়া আমায় ভুল বুঝো না তার সাথে কথাও হয়নি

দিহান বেশ মনযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনছিলো দিপ্তির শেষ কথা শেষ না হতেই চকিতে বলে উঠলো

— কথা হয় নি তবে ভালোবেসে ফেলেছিস এই তো?

দিপ্তি দুপাশে মাথা দুলায় যার মানে সে জানে না

— আমাকে মিথ্যা বলার কি আছে? যদি ভালো না ই বাসতি তাহলে নাই বলতি জানি না বলতি না।তুই কিছুটা পসিটিভ ওর ব্যাপারে তাই ই না বলতে পারিস নি আর আমার সামনে সরাসরি হ্যা ও বলতে পারিস না।

দিপ্তির গলা আটকে আসে
–আমায় ভুল বুঝো না ভাইয়া

— না তোকে ভুল বোঝার কি আছে?তবে ওর সাথে আমার ঝগড়া বিবাদের বিষয়টা মনে আছে তো?

দিপ্তির গলা আটকে আসে চোখ দুটো ছোট হয়ে আসে।সহসা চোখ দুটো বন্ধ করে মাথা নুয়িয়ে ফেলে। আস্তে করে জবাব দেয়
— হু’নিশীথচিত্র'(১৯)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে

______________

দিন থেকে রাত তো রাত থেকে দিন এখন সবটাই রিনির কাছে একরকম । এক্সাম না থাকলে হয়তো কখন দিন কখন রাত সেটাও টের পেতো না।অজানা নয় যে দিহান ফিরে আসবে কিন্তু তবুও মানতে পারছে না এই অল্প কিছুদিনের দূরত্ব । বুকটা শূন্যতায় ভেসে যাচ্ছে। দিহানকে না দেখতে পারার পিপাসায় চোখ দুটোর পদ্মপুকুরে জোয়ার বয়ে যাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণেই। কিছুতেই তার পূর্ণতা মিলছে না।পড়ার টেবিল, পড়া, এক্সাম দিতে যাওয়া আসা ছাড়া কিছুই ঠিক মতো করছে না সে।খাওয়া যে শরীরের জন্য দরকার বেচে থাকতে দরকার তার প্রয়োজন টুকু অনুভব করে না সে।খুব কষ্ট হলে ব্যালকুনিতে বসে দিহানের থাকার ঘরের দরজার দিকে তাকিয়ে সময় পার করে।বড্ড একা লাগে তার নিজেকে।ভাবতেই তার অবাক লাগে একসময় এই মানুষটাকে চিনতো না অব্দি আর আজ তার শূন্যতায় ভেসে যাচ্ছে সব?

দিহানের সাথে সে থাকতো না সর্বক্ষন। তবে দিহানের অস্তিত্ব অনুভব করতে পারতো খুব করে পারতো।নিজে নিজে হাজার বার আন্দাজ করতো দিহান ভাই এখন পড়ার টেবিলে বসে আছে,এখন ঝিমুচ্ছে, এখন ঘুমাচ্ছে, এখন খাচ্ছে, এখন গোসল করছে একরকম ভাবতে থাকতো সে আনমনেই।আর তাতেই মনে হতো দিহান ভাই তার সাথেই আছে।সব থেকে বেশি খারাপ লাগে ফোন কল যখন ঢুকে না। সেই প্রথম দিন কল ঢুকলো আর তো ঢুকলো না।ফোন ঢুকবে না জেনেও কত-শত বার ফোন করে রিনি তার হিসেব নেই।।ফেসবুক আইডিটাও খুব সম্ভবত ডিএক্টিভ করে রেখে দিয়েছে যাওয়ার পরের দিনই,এমন করার মানে হয় কোনো?আদোও মানে হয়?।রিনি ভাবে একটু ফোন দিয়ে কথা ই তো বলতাম খেয়ে তো ফেলতাম না।

রিনি চোখের কোণে সবসময় পানি জমেই থাকে। রিনির কিশোর মনের ছটফটানি বাড়ছেই।কখন চোখ দিয়ে পানি পরে নিজেই টের পায় না সে। তার সন্ধান পায় যখন আয়নার সামনে দাড়ায়।প্রত্যহ চোখের কোণে শুকনো পানির আস্তরণ তার বুক ভরা সীমাহীন কষ্টের প্রমাণ দেয় ।যোগাযোগ না রাখুক একবার বলে গেলে কি ই বা হতো?কি হতো?

রিনির মনে বার বার প্রশ্ন জাগে দিহান ভাই কি তাকে একটুও ভালোবাসে না? কিভাবে পারছে উধাও হয়ে থাকতে? কীভাবে? বোকা কি সে শুধু নিজেই?বুক কি শুধু তার ধরফর করে দিহান ভাই দিহান ভাই বলে? রিনি রিনি করে কারো বুক ধরফর করে না?যাওয়ার সময় একটা বার বলতো বা একটা মেসেজ দিতো।রিনি আর কিছু ভাবতে পারছে না।সে শুধু জানে এক্সাম ভালো দিতে হবে।চোখের নিচের হালকা কালির আস্তরণও গা চাড়া দিয়ে উঠছে দিন দিন।

______________

রিনির চতুর্থ পরীক্ষার দিন দিহান চলে গিয়েছিলো।গুনে গুনে রিনির সব সাবজেক্টের এক্সাম শেষ হয়েছে।তাজিম তিন দিন আগেই চলে গেছে ভার্সিটি খুলেছে তার।দিহান চলে যাওয়ার পরে রিনি মোটেই তাজিমের সাথে একদন্ড গল্প বলে নি।এড়িয়ে চলেছে তবে তা দিহানের জন্য মোটেও না।মন ভালো না তাই সে এড়িয়ে চলেছে।কারণ সে তো জানেই না তাজিম যে তার গালে হাত দিয়েছিলো তা দিহান দেখে ফেলছিলো।তাই দিহানের এতো রাগ।অবশ্য রিনির বোধবুদ্ধির যা ধাড় সে জানলেও এটাও যে রাগ হওয়ার কারণ হতে পারে তা তার মোটামাথার পক্ষে একদমই বোধগম্য হতো না।

তবে রিনি মনে মনে কঠিন শপথ করে বসেছে।দিহান আসলেও সে মোটেই কথা বলবে না,পড়তেও যাবে না। খুব সেধেসুধে নিলে যাবে নইলে যাবেই না। দাম নেই নাকি হ্যা? তবে একবার সাধলেই যাবে না সে। দিহান যখন সাধতে সাধতে হাপিয়ে উঠবে তখন যাবে সে।তার আগে একদম না! উহু একদমই না।

_____________

দিহান এলো রিনির পরীক্ষা শেষ হওয়ারও দুইদিন পরে। তুমুল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বেলা এগারোটার কিছু পরে।দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তালা খোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পরলো।রিনি রেলিংটাকে পেট ঠেকিয়ে সামনের দিকে কিছুটা ঝুকে বৃষ্টির ছাট গায় মাখছিলো নির্বিকারে।দিহান যখন এলো রিনি চোখজোরা নির্বিকার ভঙ্গিতে দিহানের পানে চেয়ে রইলো।মুখে হাসি নেই, চোখে খুশির ঝলকানি নেই। রিনির নির্বিকার ভঙ্গি দেখে দিহান ভারী অবাক হলো।তার রিনির চোখে সে আসায় উচ্ছ্বাস থাকার কথা কিন্তু তা মোটেও নেই, মুখে হাসি টুকু নেই।

দিহান রিনির ব্যালকুনি থেকে চোখ সরিয়ে দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে গেলো কিন্তু রিনির আচরণ দেখে নিজেকে কিছুতেই প্রবোধ করতে পারলো না।তদুপরি সে তো রিনির সাথে খুব একটা ভালো কাজ করে নি মেয়েটা নিশ্চয়ই আবেগ, অনুভূতির, কষ্ট, ক্লেশের বাইরে নয়।নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট পেয়েছে।

মেয়েটাকে বড্ড বোকা ভাবতো দিহান কারণ যে অবহেলাগুলো গায় মেখেও একটা মুখ ভরা হাসি দিয়ে সব পানির ন্যায় সহজ বানিয়ে ফেলতো তার এই ভঙ্গিমা কিছুতে এই রিনিতে যায় না।তবে এটাও মানতে হবে রিনি বড় হচ্ছে আর তার সাথে তার আবেগ, অনুভূতি, বোঝার ক্ষমতাও বাড়ছে বৈকি!

দিহানের অবচেতন মন বার বার চাইছিলো সে ফিরে আসায় রিনির আকুলতা দেখতে,পাগলামি দেখতে।দিহান বুঝে গেছে তা আর হচ্ছে না খুব বেশি হার্ট করে ফেলেছে সে রিনিকে।

______________

দুপুরে খাওয়ার সময় রিনির দ্রুতগামী খাওয়া দেখে সামনের সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে দিহানও তার প্রতিকূলে নয়।এই বুঝি ট্রেন ছুটে গেল এমন একটা অস্থিরতা, তাড়াহুড়া বিরাজমান ছিলো রিনির আচারণে।গোগ্রাসে গিলছে সে আর সাথে পানি গিলছে।এক লোকমার পরিমাণে তার প্রতিদিনের খাওয়ার ধরণ অনুসারে পাঁচ লোকমার ভাত ধারণ করছে।দিহান ভাবছে এতো কিসের তাড়া?আমার কাছ থেকে পালানোর?রিনি আমার সামনে থাকতে চায় না তাহলে?

— কি অবস্থা রিনি? এভাবে কেন খাচ্ছ? তোর কি ট্রেন ছুটে যাচ্ছে যে এভাবে খেতে হবে?আস্তে ধীরে খা।
রেহানা ধমকে উঠলেন।তাতেও রিনির পরিবর্তন নেই সে একভাবেই খাচ্ছে।দশ মিনিটের মাথায় খাওয়া শেষ করে উঠে পরলো রিনি।দিহান আস্তে করেই বললো

— রিনি কাল থেকে পড়তে এসো। চাইলে আজ বিকালেও আসতে পারো আমি ফ্রি আছি।

রিনির কানে কথা গেলো কি নিলো না তা বোঝা বড্ড দায় হয়ে পরলো।সে কোনোদিকে না তাকিয়েই চলে গেলো।

_____________

দিহান পাঁচদিন ধরে তিন বেলা খাবারের শেষে রিনিকে পড়তে আসতে বলে দিচ্ছে কিন্তু রিনি কিছুতেই পড়তে যাচ্ছে না।রেহানা রিনিকে জিজ্ঞেস করেছিলো পড়তে কেন যাচ্ছে না সে?

রিনি চড়া গলায় বলেছে “এক্সাম শেষ হয়েছে মা। আমি কি একটু রেস্ট ও নিবো না নাকি??”

পরের খাবার টেবিলে দিহানকে রেহানা জানালো যে রিনি রেস্ট চায়।

দিহান বললো
— আন্টি ক্লাস নাইনে পড়লেও মানতাম যে পরীক্ষার পরে রেস্ট নিচ্ছে।এটা ক্লাস টেন আন্টি এখানে রেস্ট নেয়ার সুযোগ নেই এটা তো বুঝতে হবে।

রেহানা রিনির দিকে তাকিয়ে বললো
— শুনলি তো এটা রেস্ট নেয়ার সময় না।অযথা ক্যান যে ঘাড়ত্যাড়ামি করিস তুই।কাল থেকে পড়তে যাবি।

রিনি পড়তে গেলো না।সে গেলো দুইদিন পরে আগুনের গোলা হয়ে দিহানের দরজার সামনে। দরজায় বিরতিহীন ধাক্কা, লাথি, টাকাটাকিতে দিহান দরজা খুললো।ভাগ্যিস রেহানা, মনির নামাজ পরে ঘুম দেয় সকালে নইলে নিশ্চয়ই এই শব্দে চলে আসতো।দিহান টিপ টিপ চোখে দরজা খুলে তাকালো রিনির দিকে। রিনির চোখ মুখ ভীষণ লাল।ঘুম থেকে উঠায় বাইরের আলো বেশ চোখে লাগছে দিহানের। দিহান ভাবছে এতো সকালে সূর্যিমামা কড়া রোদ কেন দিচ্ছে? সূর্য আর রিনি একসাথে ক্ষেপে গেলো নাতো? রিনি যে ফুসছে তা দিহান শ্বাস প্রশ্বাসের চড়া শব্দেই বুঝতে পারছে।দিহান তার পরহিত কালো ট্রাউজারটা একটু টেনে উপরে উঠানোর মতো করলো,গায়ের স্যান্ডল গেঞ্জিটাও টেনে টুনে সোজা করলো।চোখ পিটপিট করতে করতে বললো

— তোমার বই কই রিনি?খালি হাত যে?

ব্যাপারটা পরক্ষণেই আগুনে ঘি ঢালার মতো হয়ে গেলো। রিনি রাগে জলন্ত মুখটা দেখে দিহান ঘাবড়ে গেল।রিনি দিহানের পেটে দুহাত ঠেকিয়ে জোরে ধাক্কা মারলো।দিহান কিছুটা পিছিয়ে গেলো।রিনি দরজা আটকে তেড়ে আসলো।

— শালা তিন বেলা খাবার খাওয়ার সময় ছাড়া আমায় আলাদা ভাবে একবার বলতে পারলি না যে পড়তে আসো রিনি।পারলি না বলতে???

রিনি রীতিমতো কাপছে আর চিল্লাচ্ছে।ফরসা গলার দুই তিনটা নীল রগ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।।একই কথা বার বার আওড়াচ্ছে সে আর ধাক্কা দিচ্ছে।একপর্যায়ে দিহানের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলো

— কি হচ্ছে রিনি এরকম আচারণ করছো কেন?

— তোর ফোন ভাঙবো আমি।কোন মেয়ের সাথে এতো কথা বলতে হয় যে আইডি ডিএক্টিভ করে অন্য আইডি অন করে রাখতে হয়।ফোনে আমাকে ব্লক করে কেন রাখবি? কেন?আমি এতই খারাপ সব সময় এড়িয়ে যেতে হবেই সব সময়?ভালোবাসির উত্তর দিস নি মেনে নিয়েছি।আমার সাথে কথা বলিস না মেসেজ দিলে দেখেও রিপ্লাই দিস না সব মানলাম।

রিনি থামলো আবার বললো

— গ্রামে কে আছে তোর হ্যা? যার জন্য আমায় ব্লক রাখতে হবে?? কি করেছি আমি যে আমায় এতো কষ্ট দিতে হবে।আমায় মানুষ মনে হয় না? আমার কষ্ট নেই? আমি দেখতে বাদরের মতো? জানি তোর চেহারা অনেক সুন্দর আমিও তো কম সুন্দর না। একেবারে তো খারাও দেখায় না!!!! কেন আমাকে একবার ফোন অথবা মেসেজ দিয়ে বলা গেলো না রিনি পড়তে এসো।কেন?তুই জানিস না আমি রাগ করেছি তাই পড়তে আসছি না তবুও কেন আমায় একবারও ভালোবেসে ডাকলি না?? উত্তর দিচ্ছিস না কেন?? দ্যাখ কেমনে ড্যাব ড্যাব করে তাকায় আছে!! চোখ গেলে দেবো কিন্তু এক্কেবারে, উত্তর দে!!!

রিনি দাত কিড়মিড় করতে করতে শেষ বাক্য দুইটা বললো।দিহান তখনও রিনির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।সে নির্বিকার এমন একটা ভাব ধরে আছে যেন কানেই নিচ্ছে না কিছু।রিনির নিজের প্রতি রাগ হলো বুক ভেঙে কান্না পেলো।চোখ দিয়ে দু ফোটা নোনা জল গড়িয়েও পরলো।কান্নারত ভেজা কণ্ঠে বলে উঠলো

— আমি চলেই যাবো থাকবো না আর, আসবো না আর।খুব জ্বালাই তাই না? তাই না বলে হারিয়ে গেছিলেন তাই না? আমিই বোকা, আসলে আমিই বোকা। আমিই বুঝি নি আপনাকে। নাহ আপনার দোষ নেই”!
আসলেই তো আপনি আমাকে ভালোবাসি কথাটুকুও কখনও বলেন নি।সেখানে ব্লক করে রাখেন, আইডি বন্ধ করে রাখেন তা আপনার ব্যাপার। এসব আমার জিজ্ঞেস করাও ভুল তাই না? তাহলে সরি মাফ করে দিবেন।

রিনি কান্না করছে। চোখ দিয়ে মোটা মোটা পানির ফোটা গড়িয়ে পরছে।কিছুক্ষণ বাদেই দিহান সজোরে থাপ্পড় বসালো রিনির গালে।রিনির কান্নার শব্দ থেমে গেল স্তব্ধ হয়ে গেলো সে।এই মুহূর্তে তার দিহান ভাই তাকে মারলো মানতেই কষ্ট হচ্ছে।

— আমাকে তুই করে বলার সাহস কোথায় পেলে তুমি????

দিহানের ধমকে রিনির কর্ণকুহরে বাজ পড়ার মতো বিশ্রি অনুভূতি সৃষ্টি করলো।এই মুহুর্তে তুই বলছি নাকি তুমি বলছি এই ভুলও ধরতে হবে দিহান ভাইয়ের?রিনি নিচের দিকে তাকিয়ে থাপ্পড় দেয়া গালের ডান হাত চেপে ধরে চোখের পানি ফেলছে আর বুড়ো আঙুল দিয়ে ফ্লোলের প্লাস্টার খোটাখুটি করে তুলে ফেলার বৃথা চেষ্টা করছে।ঠোঁট উল্টে কান্না থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। দিহান আরও বার কয়েক রিনিকে একই প্রশ্ন করলো ঝাঝালো কণ্ঠে ।কিন্তু উত্তর পেলো না।

অবশ্য দিহানের উত্তর চায় ও না।প্রয়োজন ছিলো রিনিকে থামিয়ে দেয়ার আর তাতে সে সফল।নিজের ফিচলেমিতে নিজেই হাসলো।এভাবে না করলে এই রিনি থামতো না।

দিহান নিজের গলায় গান ধরলো।

পরে না চোখের পলক
কি তোমার রূপের ঝলক

দিহানের গানের গলা বেজায় বেখাপ্পা, সুর নেই, তাল নেই, ছন্দ নেই মোট কথা কিচ্ছু নেই।তবুও গান গাওয়ার প্রয়াস করছে সে।তার গান শুনলে যে কেউ হেসে ফেলে। তার আলাভোলা গলা শুনলে হাসতে বাধ্য হয় সবাই।লেখাপড়া বাদেও এইজন্য সে বিখ্যাত ছিলো।

রিনি একেবারে থেমে গেছে, কান্না নেই নাকের ফ্যাচফ্যাচ শব্দও থেমে গেছে।অবশ্য থেমে যায় নি ফ্যাচফ্যাচ করতে ভুলে গেছে সে।।শুধু চোখজোড়া অক্ষিকোটর থেকে বের হয়ে আসার উপক্রম হচ্ছে তার ক্ষণে ক্ষণেই।দাত চেপে হাসি থামানোর তীব্র প্রয়াস চালালেও ব্যর্থ হলো।

হাসির শব্দে চোখ খুলে তাকায় দিহান। রিনির হাসি থামছেই না।

— আপনি গান গাইলেন এটা দিহান ভাই?
এই কথা বার বার বলে সে কি হাসি রিনির।দিহান নির্বিকারে মুগ্ধ চোখে রিনিকে দেখছে।

রিনি দুই হাতে মুখ ঢেকে হাসছিলো।দিহান একটা হাত টেনে নিজের হাতের মধ্যে নিলো।রিনি এখনও হাসছে। তার কাছে এখন হাসিটাই মূখ্য। দিহান তার হাত ধরেছে এতে তার হৃদপিণ্ড থেমে যাবে? একদমই না সেই বুঝ তার আসেই নি।দিহান পাগল মেয়েটা কে দেখছে, অপলকে দেখছে।সে যে হাত ধরলো এতে রিনি এই তীব্র হাসির মাঝে যে বিচলিত হবে না তা তার জানা।

রিনির গালে হাত ছোয়ালো দিহান।কানের পাশে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো

— আমার নিনিটার কি রাগ হয়েছে?মায়াবতীটার কি খুব কষ্ট হয়েছে?

রিনির হাসি থামলো, অভিমানের কথা মনে পরে গেলো।দিহানের উল্টো দিকে ফিরলো পরক্ষণেই। দিহান পিছন থেকেই দুইহাতে গলা জড়িয়ে ধরলো রিনির।রিনির কানের সাথে ঠোঁট ছোয়াতেই রিনি কেপে উঠলো।ছাড়িয়ে নেয়ারও চেষ্টা করলো কিন্তু দিহানের জন্য কোনোটাই সম্ভব হলো না।দিহান রিনির কানের সাথে ঠোঁট মিলিয়েই ফিসফিস করে বললো
— সরি

পরক্ষণেই কান কামড়ে ধরলো দুই ঠোঁট দিয়ে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here