নিয়তি পর্ব -০৬

#নিয়তি
#সেলিনা আক্তার শাহারা
#পর্ব–৬
______________

তুর্জের পশ্ন এরিয়ে জাওয়ার মত নয়, তবে উওর কি দিবে তাও নন্দিনির জানা নেই বালিশে হেলান দিয়েই চোখ বুজে থাকা উওম মনে হল,

তুর্জ আর কথা বাড়ালোনা হয়তো ওর শরিলটা বেশি খারাপই লাগছে,
কিছুক্ষন পর নন্দিনিকে তুর্জের বাড়িতে নিয়ে জাওয়া হল,
অবশ্য সালাম সাহেব বহু জোর করেছিলো নন্দিনিকে নিজের বাড়িতে রাখার তবে তুর্জ সায় দেয় নি,

তার বাড়ি জেতেই হবে আরজেন্ট কাজ পরেছে আর তুলি নন্দিনিকে ছারা থাকতে পারবেনা, আর আমি তুলিকে ছারা,

তুর্জের কথাও সালাম সাহেব ফেলেন নি তাই চুপচাপ মেয়েকে জেতে দিলেন, কি করবে মেয়ে তো এখন পরের ধন তাই উনার জোর খাটানো এখানে বেমানান,

ইতি মধ্যে তুর্জের বাড়িতে খবর পৌছে গেছে, নন্দিনির একসিডেন্ট করেছে,

তুর্জ নন্দিনিকে নিয়ে বাসায় চলে আসে,
নন্দিনির শাড়িটা সেই আগের মত পরিপাটি নেই অগুছালো হয়ে গেছে,

কিন্তু এখন এই অবস্থায় বাড়ি কি করে নেই!! ১ জন কাজের ছেলে আছে আবার ভাইয়াও বাসায়,

নন্দিনিকে গাড়ি থেকে আস্তে করে নামিয়ে দিলো আর নিজেই তার পায়ের কাছে বসে কুচি গুলো ঠিক করে দিলো, এতে নন্দিনির কোন খেয়াল নেই সে মাতা পেচে দারিয়ে আছে।

তুর্জের মা বেল বাজানোর আগেই উপস্থিত দৌড়ে আগে নন্দিনিকে ধরে ভিতরে আনে, আর তুর্জ তুলিকে কোলে নিয়ে চলে আসে।

সোজা নিজের রুমেই পৌছে দিলো শিলা বেগম, কারন এত হাটা হাটির দরকার নেই মেয়েটার আরাম দরকার,

নন্দিনিকে আধশোয়া করে দিয়ে মাথার খোলা চুল গুলো পিছনে দিয়ে দিলো শিলা বেগম।

তুর্জ এসে তার মাকে বললো মা ওর খবার টা””
আর কিছু বলতে দেয়নি শিলা বেগম হাত দিয়ে তুর্জকে থামিয়ে বললো রুমে পাঠিয়ে দিতে হবে এই তো,
আচ্ছা সপ্না খাবার আনতে গেছে তুই হাত মুখ ধুয়ে আয়, আর ওরও তো হাত মুখ ধুতে হবে , তা তুই!!!

আর কিছু বলবে তার আগেই তুর্জের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে বেচারা মুখ দেখার মত, তাই আর কিছু না বলে ভেজা তোয়ালে দিয়ে হাত পা হালকা হালকা করে মুছে দিলো।

সপ্না খাবার এনে তুলিকে নিয়ে নিলো তুর্জের কাছ থেকে, কারন তুলিকে আজ নন্দিনি খাওয়াতে পারবে না,

শিলা বেগম আর সপ্না চলে গেলো,
তুর্জের আর নন্দিনির খাবার রেখে গেছে, তুর্জ চুপচাপ খাচ্ছে দুপুরেও খাওয়া হয়নি,

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে নন্দিনি, সেতো তুর্জের দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে,
কি করে খাবে হাতটা নাড়াতেই পারছেনা, খাওয়াতো দূরের কথা,

তুর্জের নজর এবার নন্দিনির দিকে পরল,

সত্যি কতটা অপদার্থ আমি,মেয়েটা খাবে কি করে?

তু্র্জ এবার নিজের প্লেট থেকেই খাবার হাতে নিয়ে বললো তোমার সমস্যা না থাকলে আমি খা মানে খাই না মানে ইয়ে,

শুধু আমতা আমতা করেই জাচ্ছে তুর্জ মুখ ফুটে বলতেও পারছেনা,

আর কিছু বলতেও হল না তার আমতা আমতা শেষ হওয়ার আগেই তুর্জের হাতের খাবারটা নিজেই মুখে নিয়ে নেয় নন্দিনি।

তুর্জ হাত এভাবে রেখেই বুকার মত চেয়ে আছে,
নন্দিনি মুখের খাবার শেষ করে বললো মেয়েদের মত এত আমতা আমতা করেন কেন??

আর না খাইয়ে রাখবেন নাকি এখন, খিদে পেয়েছেতো,

তুর্জ এবার সুন্দর করে খাবার নিয়ে নন্দিনিকে খাওয়াচ্ছে আর নিজের মুখেও দিচ্ছে,

খাওয়ানোর পর সুন্দর করে ওর মুখ মুছে দিয়েছে, আর সেই সাথে অনেক আলাপও করছে,

আজ প্রথম বার নন্দিনি আর তুর্জ সোজা মুখে কথা বলছে।

অনেক কথা বললো তবে দরকারি নয় আবল তাবের মতই যা হাবলা তুর্জ, সেটা বুজতে বাকি রয়নি নন্দিনির,

তুলি গুমিয়ে গেছে তুর্জ ওকে শুইয়ে দাও, সপ্নার ডাকে দুজনেই ঘুরে দেখে তুলিকে নিয়ে এসেছে,
তুর্জ তুলিকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো,

সপ্নাকে নন্দিনি ডাক দিয়ে বললো ভাবি একটু আসবেন মানে আমি একটু ফ্রেস হতাম আর কি।

সপ্না হাসি দিয়ে বললো তোমার বর কে বলো আমি গেলাম বলেই দরজা টা বন্ধ করে চলে গেলো,

নন্দিনি চোখ এদিক উদিক ঘুরাচ্ছে কি করবে এখন এই বুড়োটা কে না না,

তুর্জও হা হয়ে রয়েছে, তবে এখন আমতা আমতা করলে তো হবে না ওয়াসরুমে নিতে হবে,
তাই আর কথা না বলে নন্দিনিকে ধরে উঠিয়ে বললো চলো।

নন্দিনি কি বলবে বুঝতে পারছেনা

নন্দিনি এবার মুখ এবার হা হয়ে রয়েছে হা হয়েই শুধু ঢুক গিলছে, চেখ এত বড় বড় করেছে দেখলে যে কেও ভয় পাবে।

তুর্জ হেয়ালি পছন্দ করে না আর সময় অপচয়তো একদমই না,

তাই নন্দিনিকে কোলে তুলে নেয়, কোলে তুলতেই নন্দিনি আওচচচ বলে চিৎকার করে হালকা স্বরে,
তুর্জ শুনেও না শুনার ভান করে নন্দিনিকে সোজা ওয়াস রুমে ডুকিয়ে নামিয়ে পিছন ফিরে রয়,

তাও নন্দিনি হাবলার মতই তাকিয়ে আছে, তাই
তুর্জ বাহিরে চলে এলো, নন্দিনিও আসতে গিয়ে ফ্রেস হয়ে দরজায় ধারাম করে পরে জেতে নিলো, তবে কপাল ভালো পরেনি তুর্জ ধরে ফেলেছে নন্দিনিকে,

নন্দিনি তুর্জের শার্ট খামচে ধরে চোখ বন্ধ করে নিয়েছে, এই পরলো বলে।
তুর্জ আগেন ন্যায় আবার কোলে করে এনে খাটে শুইয়ে দিলো,
আর আলমারি থেকে ব্যাথা কমানোর মলম এনে নন্দিনির কাছে গিয়ে বললো,

“” আর কোথায় ব্যাথা পেয়েছো!”””””””

তুর্জের এই বাক্যে নন্দিনি বাক রুদ্ধ ওর মাথা পন পন করে ঘুরছে এই লোকটা এই মুহুর্তে কি বললো,
তুর্জ আবার এদিক ওদিক চেয়ে বললো কানে কথা জায় নি নাকি,

তবে এবার স্বরটা অন্য রকম/ ধমকাচ্ছে, /

নন্দিনি একটু ভয় পেয়ে গেলো তুর্জের এমন আওয়াজে,
আর ধিরে ধিরে বললো কো কোমোরে একটু খানি আর কি,

তুর্জ কিছু বললোনা নন্দিনির পাশে বসে ওকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দিলো হাতে চেপে,

নন্দিনি আবার চিৎকার করে উঠলো,
তুর্জ নরম স্বরে বললো আহ আস্তে তুলির ঘুম ভেংগে জাবেতো,
আর ব্যাথা হবে না ঔষধ লাগাতে দাও, আর কোন শব্দ জেনো না শুনি,

নন্দিনি নিয়ের মুখটা বন্ধ করেছে নিজের ঠোট চেপে, তুর্জও কোমরের কাছের কাপর টুকু সরিয়ে নিয়েছে,

তবে সেই নেশায় আবার ডুবে গেছে ওর তিলটা খুব কাছে টানছে না চাইতেও ওখানে ছুতে মন চাইছে তবে কেন সে জনেনা নিজেই,
তুর্জ আপন মনে নন্দিনির কোমরে মলম ডলছে অনেকটুক জায়গা কালো হয়ে গেছে,

বার বার সে মলম লাগানোর বাহানায় সেই কোমরের তিলটা ছুইয়ে দিচ্ছে,

নন্দনি তার দুচোখ বন্ধ করে নিয়েছে, এই প্রথম এক পুরুষের ছোয়া পেয়েছে, হালকা মনের আকাশের দোলনায় জেনো দুলছে।

নিলয়ের সাথে সম্পর্ক থাকলেও ছিলো সেখানে পবিত্রতা, ককনো নিলয় এমন আবদার বা কোন উল্টা পাল্টা কাজ করে নি।

তুর্জের মলম লাগানো শেষ, তার পর ইচ্ছা করছেনা ওর কাছ থেকে উঠতে,
তবে আজ না চাইতেও উঠতে হবে,

নন্দিনির কাছ থেকে সরে এসে সোজা বাহিরে চলে গেলো তুর্জ, জাওয়ার সময় দরজাটা আস্তে করে লাগিয়ে গেছে,
নন্দিনি তু্র্জের জাওয়ার দিকে চেয়ে আছে,
এটা কেমন মানুষ আল্লাহ জানেন।

নন্দির চোখ লেগে জায় জায় এমন সময় আবার তুর্জের ডাক,
এই জে উঠো ঔষধ তো খাওনি, আমারও মনে নেই, চলো উঠো খেয়ে নাও,

নন্দিনির মুখ বাচ্চাদের মত করে বললো এই শুনুননা আমার না ঔষধ খেতে ভালো লাগেনা,

তুর্জ আবার ধমক দিয়ে বললো এটা ভালো লাগার জিনিস নয়, ভালো না লাগলেও খেতে তো হবে হয়তো ইচ্ছা করে খাবে নয়তো জোর করে,
এখন ডিসিশন তোমার,

নন্দিনি ঝট করে তুর্জের কাছ থেকে ঔষধ গুলো নিয়ে নিজে নিজেই খেয়ে নিলো,কারন এই লোক টার ভরসা নেই,

হুম গুড গার্ল””
তুর্জের কথায় নন্দিনি বির বির করে বললো ওমা আবার প্রশংসাও করে দেখছি,

তুর্জ নন্দিনির কথা শুনেও আবার বললো কিছু বললে!!!

কই নাতো বলেই আবার শুয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো।

তুর্জও হালকা হাসি দিয়ে তুলির ও পাশটায় শুয়ে পরলো,

~~~~~“

মাঝ রাতে তুর্জের ঘুম ভেংগে গেছে, নন্দিনির হালকা কান্নার শব্দে,
তুর্জ ধরফরিয়ে উঠে ডিম লাইট টা অফ করে, করে পাওয়ার লাইট টা অন করে দেয়।

উঠে দেখে নন্দিনি মাথা ব্যাথায় কুকরিয়ে আছে কান্নাও করছে,তবে ব্যাথা পেয়েছে যখন তা তো হবেই সময় লাগবে সারতে,

তুর্জ নন্দিনির কাছে গিয়ে আর জিজ্ঞাস করলোনা কি হয়েছে, কারন টা তার জানাই,আবার জিজ্ঞাসা করাটা বেহুদা,

তুর্জ উঠে ডাক্তারকে কল করে, এত রাতে কল পেয়ে ডাক্তার রিসিভ করেন কারন কোন ইমার্জেন্সি তো থাকতেই পারে।

ফোন ধরতেই তুর্জ ডাক্তারকে নন্দিনির হাল বলে,

ডাক্তার একটা ঔষধের নাম বলে আর বললো ওটা আরেকটা খাইয়ে দিন, ব্যাথা কমে যাবে।

তুর্জ ঝটপট ঔষধ টা নিয়ে নন্দিনিকে খাইয়ে দিলো তবু সে ব্যাথায় বির বির করে কাদছে,

যা তুর্জের মোটেই সজ্জ হচ্ছেনা,

তুলিকে নন্দিনির ওপাশে শুইয়ে দিলো কারন ওই পাশে দেয়াল আছে তুলির পরে জাওয়ার ভয় নেই,
নন্দিনির হাত ধরে একপাশ করে শুইয়ে মাঝে নিয়ে এলো তুর্জ,

ওর মাথায় হালকা হালকা হাত বুলাচ্ছে, কারন মেয়েটার কষ্ট হচ্ছে,

আচ্ছা ওর কষ্ট হচ্ছে তাতে আমার খারাপ লাগছে কেনো?
আমার ভিতরটা এমন লাগছে কেনো?
তাহলেকি এই ঝগরাটে মেয়েটার মায়ায় আটকে গেলাম নাকি,

একমনে ভাবছে তুর্জ,
নন্দিনির ব্যাথা কমেছে কিনা জানা নেই তবে ঘুম ঘুম ভাব নিয়ো তুর্জে জরিয়ে ধরেছে এক হাতে আর বির বির করছে i love u,, i love uu..প্লিজ আমায় ছেরে যেও না প্লিজ নিল….. আর কিছুই বললো না নন্দিনি ঘুমিয়ে গেছে,

তুর্জ ওর দিকে চেয়ে রয়েছে কি বললো ওও আমায় ভালো বাসে, কেন বাসে আমিতো বাসিনা আমিতো আমার সায়মাকেই ভালোবাসি আর আজিবন বাসবো, তাহলে কেন ও নিজের জীবনে আমায় জরাচ্ছে কেন?? আর নিল টা আবার কি?

তুর্জের হালকা চোখ লাগতেই সপ্নে হারালো পলওর মতই এক চেহারার লোক বের হয়ে ওর সামনে এসে বলছে তুই ভুল করছিস তুর্জ এত বড় উকিল তুই তাও এই মনের ক্যাস টা ধরতে পারছিস না, সায়মা তর অতিত এটা তর বর্তমান, সায়মার ভালোবাসা নাইবা দিলি ওর অধিকার টুকুতো দে মনের অন্য কোথাও হালকা একটু জায়গাতো দে,

তুই তর মেয়ের জন্য নন্দিনিকে এনেছিস তবে নন্দিনি কেন এখানে পরে থাকবে তা ভেবেছিস!!!

ওর চেহারা জা এতে ৮/১০ টা ছেলেকে ঘায়েল করতে পারবে।

তুই ওকে আপন করে না নিলে ও কেন তর মেয়েকে আপন করে নেবে বল বল জবাব দে,

তুর্জ হুট করে উঠে পরে, ঘেমে একাকার কি দেখলো সে,
সত্যিই কি নন্দিনি ওকে আর ওর মেয়েকে ফেলে চলে জাবে।

তুর্জ বড় বড় শ্বাস নিয়ে নন্দিনির দিকেই তাকিয়ে আছে,

কি সুন্দর করে শুয়ে আছে ঘুমন্ত মুখটায় একটু ঠোটটা ছুইয়ে দিতে ইচ্ছাও করছিলে তার,

তবে এটা অপরাধ কারো সোজুগ নেয়া ঠিক নয়, তাই চুপ করে শুয়ে পরলো আর নন্দিনির এক হাত নিজের বুক থেকে সরালোনা তারও বেস মন চাইছিলো এই বুকটা কেও আগলে রাখুক,

~~~~~~~~♪
সকালে ঘুম ভেংগে দেখে নন্দিনি তুর্জের বুকে, ওমা এটা কখন হল তুলি আমার ওপাশে কখন গেলো আমি কখন এলাম,
সব ভাবতে ভাবতেই তুর্জেরও ঘুম ভেংগে গেলো।

তুর্জ চুপচাপ উঠে বসে নন্দিনির দিকে তাকিয়ে আছে,
নন্দিনি এমন ভাবে ওর দিকে চেয়ে আছে জেনো কোন আসামি।

তুর্জের চোখ এদিল উদিক ঘুরছে, আর নন্দিমির চোখ এক ধ্যানে তুর্জের দিকে আটকে আছে।

চলবে……

💓💓আপনাদের মতামত আশা করিছি,
💓💓 যার যেমন লেগেছে বলবেন এতে উৎসাহ পাই লিখার।💓💓

আর প্লিজ আপনাদের গল্প প্রেমি ফ্রেন্ডদের অব্যশই ইনভাই করবেন ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here