নীরবে তুমি রবে পর্ব -১০

#নীরবে_তুমি_রবে
লেখনীতেঃ রিধিমা জান্নাত রূপা
পর্বঃ ১০.

.
মোবাইলের রিংটোনের শব্দের মতোই সুর তুলে দ্রিমদ্রিম শব্দের প্রতিধ্বনিতে সুর তুলছে রূপার বুকে। খানিকক্ষণ আগেও সে স্বাভাবিক ছিলো, তবে মোবাইল বেজে উঠে তাসফির নামটা স্ক্রিনে ভেসে উঠতেই হঠাৎ এই পরিবর্তন তার মাঝে। তাকিয়ে রইলো মোবাইলের দিকে, ভাবতে লাগলো –এই মানুষটা হঠাৎ দু’টো সপ্তাহ পর ফোন দিলো কেন? কি বলতে চায়?
এর মাঝেই কল’টা কেটে গেল, নতুন ভাবে আবারও বাজতে শুরু করলো। এবার আর সময় ব্যায় করলো না রূপা, নিশ্বাস টেনে রিসিভ করলো ফোন। ‘হ্যালো!’ বলতেই অপর পাশ হতে ভেসে আসলো তাসফির গম্ভীর গলার কণ্ঠস্বর।

“থাকো কই? ফোন দিলে পাওয়া যায় না কেন, হু?”

অবাক হলো রূপা। ‘ফোন দিলে পাওয়া যায় না কেন?’ কথাটা এমনভাবে বললো যেন তার ফোনকল প্রতিদিন’ই আসে। কিন্তু এরকম কিছুই নয়। তাসফি ঢাকা যাবার পর প্রায় তিন সপ্তাহের কাছাকাছি, আর আজকেই তার প্রথম কল এলো রূপার ফোনে। যদিও বিয়ের আগে অতিব জরুরি প্রয়োজনই তাকে কল দিয়েছে, কিন্তু বিয়ের পর তো এই প্রথম। কিন্তু তাসফির অধিকার সম্পন্ন কথায় যেন বেশ অবাক’ই মেয়েটা। আস্তে করে জবাবে বললো,

“এখানেই আছি তো।”

“কতবার কল দিচ্ছি, উঠাও না ক্যান তাহলে?”

“কই? সবে একবার দিলেন, পরের বারেই তো রিসিভ করলাম।”

“ওও আচ্ছা! তারমানে ফোন সাথেই ছিলো, আমার কল দেখে রিসিভ করো নাই, তাই না?”

বলেই একটু সময় নিলো তাসফি। সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে আবারও বললো, “এ্যাই মেয়ে, তুমি কি আমাকে ভয় পাচ্ছো?”

“কেন? ভয় পাবো কেন আপনাকে? মোটেও ভয় পাচ্ছি না আমি।”

হাসলো তাসফি। ফোনের অপর পাশ থেকেও রূপা আন্দাজ করতে পারলো তাসফির হাসিটা। রূপার ঠোঁটেও হাসি ফুটে উঠলো। কোন জা-নি হঠাৎই ভালো লাগছে তার, কেন লাগছে তা জানা নেই। সামান্য নীরবতার পর তাসফি বলে উঠলো, “সেটা তো এখানে আসলেই বোঝা যাবে।”

“মানে?”

“মানে’টা তোমার ভাবতে হবে না। মামী কোথায়? সেটা বলো।”

চুপ করে গেল রূপা, সহসায় কিছু বললো না। তার কাছে কল দিয়ে বড়মার খোঁজ নিচ্ছে? না কি সবটাই তার সাথে কথা বলার বাহানা? ঠিক বুঝতে পারলো না রূপা। বললো, “বড়মা? বড়মা তো বাইরে গেছে।”

“ফোন দিচ্ছি ধরে না কেন?”

“কি যে? আমি তো…..”

“আচ্ছা! মামী আসলে আমাকে কল দিতে বলো।”

“হু! কিছু দরকার?”

“না, ঠিক আছে। আমি কথা বলে নিবো।”

বলেই একটু থামলো তাসফি। সামান্যক্ষণ চুপ থেকে আবারও বলে উঠলো, “বাসায় কি তুমি একা আছো?”

“হু! একাই আছি। কেন?”

“না, কিছু না। সাবধানে থেকো। রাখছি।”

“হু!”

ছোট করে জবাব দিলো রূপা। তাসফিও সহসায় কলটা কাটলো না। খানিকটা সময় নিয়েই যেন কাটলো। এদিকে আঁটকে রাখা শ্বাস’টা ফুস করে ছেড়ে দিলো রূপা। বুকের ধিপধিপ শব্দটা খানিক বাড়লো। কই? তাসফির সাথে কথা বলার সময় যে এমনটা হলো না? কিন্তু তার শেষ বলা ‘সাবধানে থেকো’ কথাটা কর্ণপাত হতেই কি হলো তার? কিন্তু কি হলো? উত্তর পেল না রূপা, আর না বুঝতে পারলো। কিন্তু ঠোঁটের হাসিটা যেন প্রসস্থ হলো। অদ্ভুত এক অনুভূতি ঝংকার তুলতে লাগলো মনে। যে অনুভূতির সাথে সে মোটেও পরিচিত নয়।

.
“আপনিইই?”

“কেন? অন্য কাউকে আশা করেছিলে? এভাবে অবাক হচ্ছো কেন?”

কি বলবে রূপা? সে তো সত্যিই অবাক এই মানুষটাকে দেখে, আশাও করে নি তাকে। করবেই বা কিভাবে? তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার তো আসবার কথাও ছিলো না। ধীর গলায় রূপা বলে উঠলো, “না মানে, আমি তো….. ”

“মানে পড়ে শুনবো, সবার আগে ঠান্ডা পানি খাওয়াও। অনেক ক্লান্ত আমি।”

বলেই ভেতরে ঢুকে গেল তাসফি। ড্রয়িং রুমে গিয়ে সোফায় বসে গা এগিয়ে দিলো। তাসফি যেতেই রূপার খেয়াল হলো। দরজাটা আঁটকে দিয়ে রান্নাঘরে এলো। চটজলদি ঠান্ডা পানি নিয়ে চলে এলো ড্রয়িং রুমে, তাসফির সামনে। হাতের গ্লাসটা এগিয়ে দিলো তাসফির দিকে। বিনাবাক্যে তা হাতে নিয়ে তাসফি এক নিশ্বাসে পান করলো। রূপার কেন জানি মনে হলে হলো, এতটুকু পানিতে যেন তাসফির কিছুই হয় নি। বলে উঠলো,
“আর আনবো পানি? খাবেন?”

রূপার দিকে তাকালো তাসফি। অদ্ভুত এক হাসি ফুটে উঠলো তার ঠোঁটে। বললো, “না থাক, আর লাগবে না।”

.
বিকেলের শেষ প্রহর। এই সময়েই এসেছে তাসফি। কিন্তু মোটেও আসার কথা ছিলো না তার। সেদিন তার সাথে ফোনে কথা বলার পর আরও কয়েকদিন কে’টে গেছে। রূপার কলেজে ক্লাস শুরু হবারও সময় হয়ে গেছে। তাকে নিয়ে যাবার কথা তাসফিকে বলতেই জানিয়ে দেয় –সে আসতে পারবে না, ছুটি পাবে না ভার্সিটি থেকে। তাকে যেন বড় মামার সাথে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ তাসফির আগমনে যেন কিছুটা অবাক রূপা। মুহুর্তেই সামলে নিলো নিজেকে, ভাবলো –ফুপি’ই হয়তো পাঠিয়েছে ওনাকে।

শাহনা বেগম তাসফি কে দেখেই ওখানকার কথা জিজ্ঞেস করলেন, ভালোভাবে এসেছে কি না সেটাও জানতে চাইলেন। এতেই যেন রূপা বুঝে গেল বড়মা আগেই জানতেন তাসফির আসবার কথা। আর কথা বড়ালো না সে, চলে আসলো নিজের রুমে। ভাবতে লাগলো তাসফির কথা। এই মানুষটার আগমনে অজান্তেই সে খুশি হয়ছে, সে নিজেও চেয়েছে তাসফি’ই যেন তাকে নিতে আসে। কিন্তু কেন? এর কারণটা তার জানা নেই।
তাহলে কি এর সবটাই তাসফির সাথে বিয়ে নামক এক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কারণ? নিজের কাছেই প্রশ্ন করলো রূপা, সহসায় যেন এর উত্তর’টাও পেয়ে গেল। হ্যাঁ! তাদের বিয়ের পরেই তো সে তাসফি কে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে, তাকে নিয়ে অনুভূতি গুলোর অনুভব করছে প্রতিনিয়ত। হোক না সেটা ফুপির বলা কথায়।

হ্যাঁ! ঢাকা যাবার আগে রেহেনা তাকে বলেছিলো –তাসফি কে নিয়ে একটু ভাবতে, তাদের সম্পর্ক নিয়ে ভাবতে। তবেই তো একে অপরের সাথে সহজ হতে পারবে। না চাইতেও রূপার ভাবনায় তাসফি ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে পড়েছে, সেদিন তাসফির সাথে কথা বলার পর যেন আরও গভীর হয়ে উঠেছে তার ভাবনা।
বেশিক্ষণ রুমে থাকতে পারলো না রূপা, ডেকে উঠলো বড়মা। তাসফি কি লাগে তা দেখতে। কোন প্রকার ভনিতা করলো না রূপা, বেরিয়ে এলো রুম ছেড়ে।

সেদিন রাতে দু’জন আলাদাই থাকলো। পরদিন যাবার কথা থাকলেও যেতে দিলেন না শাহানা বেগম। তাসফিও আর ‘না’ করলো না। এই সুযোগে পরেরদিন গ্রাম থেকেও ঘুরে এলো। তার পরদিন রাতের গাড়িতে তাদের যাবার কথা ছিলো বিধায় সকাল সকাল’ই রূপাকে সবকিছু গুছিয়ে নিতে বললো। রূপাও তাসফি কথামতো সবকিছু গোছাতে লাগলো। কিন্তু এতেই যেন বিপত্তি ঘটলো তার সাথে। রূপার কেন জানি মনে হচ্ছে সবকিছুই তার অতিব প্রয়োজন, আর সবকিছুই তার নিতে হবে। সবকিছু মানে একটা হিজাবের পিনও ফেলে রেখে যাওয়া চলবে না। এসবই ভাবতে ভাবতে পুরো বিছানা সহ ফ্লোরেও জামা কাপড় সহ সমস্ত’টা ছড়িয়ে বসে রইলো।

এর মাঝেই কোন একটা কাজে রূপার রুমে আসলো তাসফি। আশ্চর্য! হলে দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে গেল। অবাকের সুর তুলেই রূপা কে, “এসব কি করছো রূপা?”

“ব্যাগ গোছাচ্ছিলাম। কিন্তু দেখেন না, আমার সবকিছুই লাগবে বলে মনে হচ্ছে, সবকিছুই প্রয়োজন পড়বে।”

তাসফির কথায় সেদিকে তাকিয়ে ধীর কণ্ঠে বলে উঠলো রূপা। একটু থেমে নিশ্বাস টেনে আবারও বলে উঠলো, “কিন্তু সবকিছু মিলে একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে না?”

হতাশার নিশ্বাস ছাড়লো তাসফি। এগিয়ে এলো রূপার সামনে। আস্ত একটা গাধী এই মেয়েটা। তার পুরো রুম উঠিয়ে নিয়ে যাবার প্ল্যান করছে, আর বলে একটু বেশি? তবুও মনে হয়েছে। বলে উঠলো,
“একটু বেশি বলে মনে হলো তোমার? কই? আমার তো মনে হচ্ছে না।”

তাসফির ঠেস মা’রা কথাটা ঠিক বুঝলো না রূপা, মাথা নাড়িয়ে ‘মানে?’ জিজ্ঞেস করলো। সুপ্ত নিশ্বাস ছাড়লো তাসফি। বলে উঠলো,
“পুরো রুম’টাই তো উঠিয়ে নিয়ে যাবার প্ল্যান করছো, আর মানে জানতে চাইছো রূপা?”

“না, আসলে এগুলো আমার প্রয়োজন পড়লে তখন….. ”

“তুমি জাস্ট বাসায় পড়ার জন্য কিছু সুতি জামা–কাপড় নেও, আর সাথে তেমনি কিছু জরুরি জিনিসগুলো।”

“সেই তো, এগুলো সবটাই তো আমার জরুরি। জামা–কাপড়, শাড়ি, হিজাব, জুতা, কসমেটিক, ব্যাগ এগুলো সবটাই তো আমার প্রয়োজন। ওখানে গিয়ে প্রয়োজন হলে আবার আসবো, বলেন? আমার তো সবটাই….. ”

“উফ্! রূপা, থামো এবার। জাস্ট কয়েকটা জামা নাও, ওখানে গিয়ে যা প্রয়োজন হবে তার জন্য আমি আছি।”

“কিন্তু আমি….. ”

“বললাম না আমি আছি।”

চুপ করে গেল রূপা, আর কোন কথায় মুখ ফুটে বের করলো না। কিভাবেই বা করবে? তাসফির বলা ‘আমি আছি’ কথাটা যেন বারংবার তার কানে বাজতে লাগলো। এই ছোট্ট কথায় যেন কিছু একটা হলো তার। সত্যিই তো তাসফি নামের এই মানুষটা আছে তার সাথে, তার সবটা জুড়েই বসবাস করার জোগাড় চলছে।

তাসফির কথা মতো কয়েকটা জামা–কাপড় সহ অতিব জরুরি জিনিস গুলো লাগেজের অর্ধেক টা ফাঁকা করেই নিলো। কিন্তু পরবর্তীতে এটা-ওটা দিয়ে লাগেজ’টা ভর্তি করে দিলেন শাহানা বেগম। আসার সময় বেশ কান্নাকাটিও করলেন। মেয়েটাকে আবার কবে না কবে দেখতে পাবেন বলে। রূপাও বেশ কান্নাকাটি করলো। রূপার বড় বাবাও অশ্রুসিক্ত চোখে তাকিয়ে রইলো তার দিকে। তাসফি কে বারংবার দেখে রাখতে বললো মেয়েটাকে। সবটাই সামনে নিলো তাসফি। মামা মামীকে আশস্ত করলো, সামলে নিলো রূপাকে। সাড়ে দশটার মাঝেই রূপা কে নিয়ে বাসা থেকে বেড়িয়ে এলো তাসফি।

.
বিগত পনেরো মিনিট অতিক্রম হতে চললো, তবুও একই ভাবে হাতের শক্তপোক্ত বাঁধনে রূপাকে জড়িয়ে আছেন তার ফুপি রেহেনা। তাদের দেখলে যে কেউ ভাববে এক যুগ পর তাদের দেখা, অথচ তাদের দেখা হওয়ার ব্যাবধান ছিলো মাত্র দু’ সপ্তাহের।
তাদের দেখে সুপ্ত নিশ্বাস ছাড়লো তাসফি। বিরবির করে বলে উঠলো, “একই বংশের মেয়ে কি না, দুইটাই এক।”

বলবে না ই বা কেন? মাত্র কিছুদিনের ব্যাবধানে দেখা হয়েছে তাদের। তাতেই যেন তার মা হুতাশ করছে, কতদিন পর দেখা বলে। আর এই মেয়েটাও ফুপির আদরে আহ্লাদী হয়ে পড়েছে। সেও ফুপিকে জড়িয়ে বসে আছে। কিছু বললো না তাসফি। ব্যাগটা নিয়ে উপরে চলে গেল।

ফুপিকে জড়িয়ে চুপ করে বসে আছে রূপা, মনে হচ্ছে বহুদিন পর ফুপির আদর পাচ্ছে। এখন থেকে অবশ্য প্রতিদিনই পাবে। সে-সব ভেবেই যেন খানিকটা আবেগি হয়ে পড়েছে। কিন্তু তার মাঝে ভালোলাগাটা যেন অত্যাধিক ছিলো। ভালো লাগার কারণ হিসেবে তার ফুপির বলা একটা কথায় যেন যথেষ্ট ছিলো।
সারারাত জার্নির পর রাতের শেষ প্রহরে এসে ঢাকায় পৌঁছায় তারা। তারপর আবারও সিএনজি তে দেড় ঘন্টার জার্নি করে সকালে বাসায় এসে পৌঁছায়। বাসায় ঢুকেই রেহেনার দেখা পায় তারা, তাদের অপেক্ষা’তেই যেন ছিলো রেহেনা। ভেতরে ঢুকতেই ভালোভাবে আসতে পারছে তো, জানতে চায়। তারপরই রূপাকে জড়িয়ে ধরে, আলতো ভাবে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে উঠে,
“নিজের বাড়িতে, নিজের সংসার আপন করতে অবশেষে আসলি।”

“হু!”

অজান্তেই না কি মন থেকেই বেড়িয়েছিলো রূপার ‘হু!’ শব্দটা। এতেই বেশ আবেগি হয়ে উঠে রেহেনা। রূপাকে জড়িয়ে ধরে বসে পরে ড্রয়িং রুমে।
আরও বেশ কিছুটা সময় নিয়ে এটাওটা বলে রূপাকে ছেড়ে দেয় তার ফুপি। বলে ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিতে। রূপাও ছেড়ে দেয় ফুপিকে, স্বাভাবিক করে নেয় নিজেকে। এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজের ব্যাগটা দেখতে না পেয়ে জিজ্ঞেস করে ফুপিকে। রেহেনা বলে উঠে,
“তোর ব্যাগটা মনে হয় তাসফি উপরে নিয়ে গেছে। যা, গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে।”

“কিন্তু ফুপি উপরে কেন? আমি তো এখানে….. ”

কথার মাঝেই চুপ হয়ে গেল রূপা, বুঝতে পারলো নিজের ভুল। নিজের করা প্রশ্নে কিঞ্চিৎ লজ্জাও পেল। হেঁসে উঠলো রেহানা। রূপামার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠলো,
“এখন তো তাসফির রুম’টায় তোর। ওখানেই তো থাকতে হবে। একদম অন্য রুমে থাকার ভাবনা মাথায় আনবি না।”

“হু!”

“এবার উপরে যা, ফ্রেশ হয়ে নে। আমি খাবার ব্যাবস্থা করছি।”

আবারও মাথা ঝাকালো রূপা, সায় জানালো ফুপির কথায়। বাক্য ব্যায় না করে উঠে এলো সেখান থেকে।

.
অসংখ্য বার এই ঘরে আগমন ঘটেছে রূপার, তবুও যেন অদ্ভুত এক অনুভূতি তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। কিন্তু কেন? সেই উত্তর জানা নেই রূপার। হয়তো আজ থেকে এই ঘর তারও বলে, এই ঘর আর ঘরের মানুষটার প্রতি রূপার অধিকার জন্মেছে বলে। নানান ভাবনায় ঘিরে ধরলো তাকে, টিপটিপ প্রতিধ্বনিতে সুর তুলতে লাগলো তার বুকে।
সেই সুরের তীব্রতা অধিক করেই এগিয়ে যেতে লাগলো রূপা। আধো খোলা দরজার ঠেলে প্রবেশ করলো ভেতরে। বুকের টিপটিপ শব্দের সাথে মুহুর্তেই যেন নিশ্বাসের আনাগোনাও কিছুটা বাড়লো। এর মাঝেই হঠাৎ ভেসে আসলো চিরচেনা সেই কণ্ঠস্বর। বলে উঠলো,

“এতক্ষণ শ্বাশুড়ির আদর খেয়ে এখন হাসবেন্ডের কথা মনে পড়লো?”

.
.
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here