নুর পর্ব ১১+১২

#নূর💔
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-11
পূর্ণ মুসলিম সেই পুরুষ বা নারী যার যবান ও হাত হতে অন্য পুরুষ বা নারী নিরাপদে থাকে।
_____মহানবী হয়রত মুহাম্মদ (সাঃ)
নব মুসলিম মেহেরাব বলল আজ থেকে আমি তোমার হলাম। আমার জীবনে একমাত্র নারী বলতে শুধু তুমি।
মোম মেহেরাবের গাড়িতে বসে আছে।এই প্রথম সে কোন কিছুতে নিজেকে দোষারোপ করলো।
নিজেই নিজের জন্য কুয়ো খুঁড়েছে। ঘুমন্ত সিংহ কে সে জাগিয়ে দিয়েছে। সিংহের হিংস্রতা এবার সহ্য করার পালা।
দেশের বাড়িতে সবাই কে কি বলবে? পরিবার আত্মীয়-স্বজনদের কি বলবে? আর বাবা কে সি বলবে? কি জবাব দেবে?
কাঁচের জানালায় টক টক আওয়াজ হলো।
মোম চোখ মেলে তাকালো।
-কি ভাবছো?
মোম দুচোখ বন্ধ করে ফেললো শক্ত করে।
মেহেরাব হেঁসে ফেললো।
-কিছুক্ষণ ওয়েট করো। কিছু ফরমালিটি বাকি আছে। এখুনি আসছি৷
মেহেরাব আর মোমের বিয়ের সাক্ষ্য হিসেবে প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম স্টুডেন্টরা ছিলো।
মেহেরাবের ক্লাসমেট।
মুসলিম বিয়ে সমন্বয়ে মেহেরবের কোন আইডিয়া ছিলো না। ইমাম সাহেবের কাছ থেকে সে যতটুকু জানার ততটুকু জেনেছিলো। প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের সাক্ষ্য লাগে বিয়েতে। তাহলেই সে বিয়েটা সহীহ্ হয়।
.
.

মেহেরাব বিয়ের সকল ফরমালিটি মিটিয়ে মোমের পাশে বসলো।
মোম কি করবে না করবে কিছুই ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছে না।
মেহেরাব ড্রাইভ করছে।
তাদের মধ্যে চলছে নিরবতা।
মেহেরাবের হার্টবিট ক্রমশ বাড়ছে। কেন তা সে নিজেও জানে না।
একমাত্র মোম আশেপাশে থাকলেই এটা হয়। কি আশ্চর্য! সে এই মেয়েটা কে কিছুদিন আগে পর্যন্ত চিনতো না, জানতো না।যার সমন্বয়ে কোন আইডিয়া নেই। যাকে মেরে ফেলতেও চেয়েছিল মেহেরাব। ঐশ্বরিক ক্ষমতায় সে বেঁচেছে। যাকে যন্ত্রণা দেওয়ায় ছিলো তার লক্ষ্য। আর এখন কিনা তাকে সদা সর্বদার জন্য নিজের কাছে রাখাই তার লক্ষ্য।
মেহেরাব আড়চোখে মোম কে দেখলো একবার।
মোম চুপচাপ সামনের দিকে তাকিয়ে আছে৷
মেহেরাবের কথা সে ভাবতে পাচ্ছেনা। এরপর কি হবে তা ভেবে মাথায় খুব যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। কি করতে চায় মেহেরাব? কেন তাকে বিয়ে করলো।
এতো বড় শাস্তি কেন তার জন্য?
মেহেরাব কে স্বামী হিসেবে সে কল্পনাও করতে পারেনা। সে মুসলিম হয়েছে ভালো কথা। তাই বলে মোমের তাকে বিয়ে করতে হবে এটা কেমন কথা?
সে তো একবারও সপ্নেও ভাবেনি মেহেরবাব কে বিয়ে করবে।
বাবা কে সে একটা কথা দিয়েছিল।
কথাটা রাখতে পারলো না।

হঠাৎ বুকের ভেতর প্রচন্ড যন্ত্রণা অনুভব করলো সে।
সে ভাবতে পাচ্ছে না আরকিছু। মেহেরাব কে সে কিভাবে স্বামী হিসেবে মানবে? যেখানে মেহেরাবের দিকে তাকাতেও ইচ্ছে হয়না মোমের।
মেহেরাব মুসলিম হলেও সে ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞাত। ধরতে গেলে মহা গন্ডগর্দভ। একেবারে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশু।
তার লাইফ স্টাইল আলাদা। যেখানে ধর্ম জ্ঞানের ছিটেফোঁটাও নেই।
একজন ওয়েস্টার্ন জোয়ান কখনো কি সাধারণ জীবন যাপন করতে পারবে?
মেহেরাব তো বিন্দু পরিমাণও জানেনা তাকে পূর্ণ মুসলিম হতে হলে তার এতোদিনের লাইফস্টাইল ঝেরে ফেলতে হবে। যখন জানবে তাকে পুরোপুরি চেঞ্জ হতেই হবে একজন মুসুল্লি হিসেবে। তখন সে কি করবে?
মানুষ চেঞ্জ হয় কিন্তু কখনো তার অভ্যাস চেঞ্জ হয়না।
মেহেরাব কখনো চেঞ্জ হবেনা।
সে ঐশ্বরিক ক্ষমতা কে অনুভব করতো না বাট এখন করছে। নাস্তিক থেকে আস্তিক হয়েছে। সে মুসলিম হয়েছে আল্লাহ তায়ালার কালেমা পড়ে। সাক্ষ্য দিয়েছে আল্লাহ তায়ালা এক অদ্বিতীয়, সর্বোচ্চা ক্ষমতার অধিকারী, তার মুখাপেক্ষী কেউ নেই। তিনি ছাড়া কোন ইলাহি নেই আসমান জমিনে।
প্রত্যেকের নিজের জীবন লিড করার অধিকার থাকে। তেমনি মেহেরাবও তার জীবন লিড করবে।
সে মুসলিম হয়েছে, বিয়ে করেছে, সংসার ধর্ম পালন করবে তাই জন্য সে নিজের অভ্যস্ত লাইফ স্টাইল কারও জন্য চেঞ্জ করবে না। এমনকি শরীয়ত মোতাবেক বিবাহিত স্ত্রী মোমের জন্যও না।
কখনো না।
আচ্ছা মেহেরাব মোমের সাথে কথা বলছেনা কেন?
সবসময় তো সে অনর্গল কথা বলে, অর্ডার করে, নিজের ক্ষমতা জাহির করে।
অনেক্ক্ষণ যাবৎ ড্রাইভ চলছে।
নিজের মস্তিষ্কের ভাবনার জগৎে সে ভাবনা গুলো নিয়ে এতোটা-ই চিন্তিত যে কোথায় ড্রাইভ করছে মেহেরাব সেটাও বুঝতে পাচ্ছে না।
আচ্ছা মোম কে কি মেহেরাব শাস্তি দেওয়ার জন্য কোথাও রেখে আসবে মেহেরাব? নির্জন কোন জায়গায় তাকে ফেলে দিয়ে চলে আসবে? হতেও পারে। মেহেরাবের দ্বারা সবকিছু সম্ভব।
বরং কিছু না করায় অসম্ভব।
মেহেরাব ব্রেক কষলো।
মোম টাল সামলাতে না পেরে মেহেরাবের উপরে পড়তে চাইলো সেই মুহুর্তে মেহেরাব একটু সরে হাত দিয়ে ঠেকালো মোম কে।
-আরে আরে সাবধানে। পরে যাবে তো। ড্রেনের উপর পড়লেও তোমার প্রবলেম নেই বাট এই মেহেরাবের উপর পড়লে তোমার মনে হবে একটা কিটের উপর পড়েছো।
সো সাবধানে মাই কুইন!
মোম অস্বস্তি ভাবে নিজের জায়গায় বসে পড়লো।
মেহেরাব নিজেকে কিট বলে কি প্রমাণ করতে চাচ্ছে?
মোম কে নিয়ে সে পরিহাস করছে বোঝায় যাচ্ছে।
মেহেরাব গাড়ি থেকে বের হয়ে মোমের গাড়ির দরজা খুলে দিলো।
-আসুন মাই কুইন।
আসা করি আপনার যাত্রা শুভ হয়েছে। যাত্রায় মেহেরাব আপনাকে একটুও ডিস্টার্ব করেনি।
মোম গাড়ি থেকে নিজের হোস্টেলের গেইট দেখে স্বস্তি পেলো।
গাড়ি থেকে নেমে বুক ভরে নিশ্বাস নিলো।
এক পা বাড়াতেই মেহেরাব তার হাত ধরে ফেললো।।
মোমের মনে হলো কেউ তার আত্মায় হাত স্পর্শ করলো।
সারা শরীরে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে।
মোম পেছনে একটি বারও তাকালো না।
মেহেরাব কাছে এসে মোমের কানে কানে বলল- আজ থেকে তোমার উপর তোমার থেকেও আমার বেশি অধিকার। মনে রাখবে মাই ডিয়ার বিউটিফুল ওয়াইফ।। ওয়াইফ কথাটা মোমের উপর আরেকটা শিহরণ বইয়ে দিলো।
-আজকের দিনটা একা ছেড়ে দিলাম তোমাকে।
নিজের মন কে প্রিপেইড করো তোমার হাসব্যান্ডের জন্য। মুসলিম হয়েছি বলে ভেবোনা আমি চেঞ্জ হয়েছি। ভেতরে কিন্তু আগের কিং ফায়ার রয়ে গেছে।
আমার অর্ডার মেনে চলবে সদা সর্বদা।আমার অবাধ্য হয়ে আমার ভেতরে চাপা পড়া হিংস্রতা কে জাগিয়ে তুলবে না আশাকরি। তুমি বুদ্ধিমতি মেয়ে! ভেরি ক্লেভার।
যাও গিয়ে রেস্ট নাও! নেক্সট অর্ডারের জন্য ওয়েট করে নিজেকে আমার জন্য প্রিপেইড করো।
আর হ্যাঁ কোন টেনশন নেবে না। জাস্ট ইজি!
মোম একেবারে স্তব্ধ হয়ে হেঁটে গেইটে ভেতর চলে গেলো।
পেছনে তাকাতেই মেহেরাব তাকে ইশারা দিলো। দুই আঙুল নিয়ে তার চোখে ঠেকিয়ে মোমের দিকে ঠেকালো। যার অর্থ আমার নজর তোমার উপর সদা সর্বদা!

.
.
মেহেরাবের বিশাল কামরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন বিখ্যাত বই পুস্তকে। বিজ্ঞানী, দার্শনিক, বিখ্যাত মনিষীরা মানবসমাজের মানবদের উৎপত্তি নিয়ে কি কি মতবাদ দিয়েছেন তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মূল তথ্য বের করছে সে। অক্সফোর্ডের লাইব্রেরি হচ্ছে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ লাইব্রেরির একটি। বিশ্ব জ্ঞান গর্বের বইপুস্তকের একটি।
মানুষকে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে, সেটা কোরাআন শরীফের মাধ্যমে আমরা সাড়ে চৌদ্দশত বছর আগে জানতে পেরেছি। আদম (আ:) ও হাওয়া (আ:) যে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে এসেছিল, মানুষের জীনতত্ত্ব একদিন সেদিকেই ইন্ডিকেট করবে।
বিজ্ঞানী এলিস সিলভারের চাঞ্চল্যকর দাবি : মানুষ পৃথিবীর জীব নয়।
=================================
তাঁর ‘হিউম্যান আর নট ফ্রম আর্থ : এ সায়েন্টিফিক ইভ্যালুয়েশন অফ দ্য এভিডেন্স’ বইটিতে রীতিমতো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন, ‘মানুষ পৃথিবীর জীব নয়’।
বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং অনেক আগেই বলেছিলেন, “এলিয়েন আছে , অবশ্যই আছে।” নাসার গবেষকেরা কেপলার টেলিস্কোপের সাহায্যে এমন ২০টি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন, যাদের মধ্যে সম্ভবত প্রাণ আছে। নাসার প্রথম সারির বিজ্ঞানী অ্যালেন স্টেফান , বিজ্ঞানী সিলভানো পি কলম্বানো , বিজ্ঞানী থমাস জুরবিউকেন বিভিন্ন সময় বলেছেন এলিয়েনদের থেকে নাসা আর বেশি দূরে নেই। কয়েক বছরের মধ্যেই নাসা এলিয়েনদের কাছে পৌঁছে যাবে।
কিন্তু সম্প্রতি নাসার এই বক্তব্যে জল ঢেলে দিয়েছেন এক বিজ্ঞানী। তাঁর চাঞ্চল্যকর মতবাদ নিয়ে ঝড় উঠেছে বিজ্ঞানপ্রেমীদের মধ্যে। তিনি দাবী করেছেন মানুষই এলিয়েন বা ভিনগ্রহের জীব। অথচ বিজ্ঞান বলেছিল, প্রায় ১৮ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকায় সৃষ্টি হয়েছিল প্রথম মানব প্রজাতি হোমো ইরেকটাস।
ডঃ এলিস সিলভার বললেন , মানুষই ভিনগ্রহের জীব
আমেরিকার প্রখ্যাত ইকোলজিস্ট ডঃ এলিস সিলভার। তিনি তাঁর ‘হিউম্যান আর নট ফ্রম আর্থ: এ সায়েন্টিফিক ইভ্যালুয়েশন অফ দ্য এভিডেন্স’ বইটিতে রীতিমতো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন, ‘মানুষ পৃথিবীর জীব নয়’। বহুদিন ধরে গবেষণা করার পর তাঁর সিদ্ধান্ত , অন্য জীবদের মতো মানুষের সৃষ্টি পৃথিবীতে হয়নি।
কয়েক লক্ষ বছর আগে অন্য গ্রহ থেকে মানুষকে পৃথিবীতে ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল। ডঃ সিলভার বলেছেন, মানুষের শরীরে থাকা অনেক ত্রুটি বুঝিয়ে দেয়, পৃথিবী আমাদের নিজের গ্রহ নয়। পৃথিবীর অনান্য উন্নত প্রাণীর সঙ্গে মানুষের শরীরের এত পার্থক্য কেন! এই প্রশ্নটির ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে ডঃ এলিস সিলভারের মতবাদটি।
ডঃ সিলভারের সেই চাঞ্চল্যকর থিয়োরির কিছু ঝলক….
● ডঃ সিলিভারের মতে, পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া থাকা সব প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী পরিবেশ থেকেই সরাসরি তাদের প্রয়োজন মিটিয়ে নেয়। উদ্ভিদ তার গায়ে এসে পড়া সূর্যালোক, বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড আর মাটি থেকে জল নিয়ে নিজের খাবার তৈরি করে নেয়। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীরা সরাসরি উদ্ভিদকে খেয়ে, বা অনান্য প্রাণীকে খেয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকে। কিন্তু মানুষ প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে পাওয়া বা গজিয়ে ওঠা খাবার সরাসরি খেতে অপছন্দ করে কেন!
ডঃ সিলিভারের মতে, সরাসরি পরিবেশ থেকে নেওয়া খাবার হজম করতে পারে না একমাত্র মানুষই। তাই সে অন্যভাবে তার খাদ্যের প্রয়োজন মেটায়। মানুষ যদি পৃথিবীরই জীব হতো, তাহলে সে বাকি প্রাণীদের মতোই পরিবেশ থেকে পাওয়া খাবার সরাসরি খেয়ে হজম করতে পারত।
● মানুষকে এই গ্রহের সবচেয়ে উন্নত প্রাণী বলে মনে করা হয়। কিন্তু ডঃ সিলভারের মতে মানুষই হল পৃথিবীর সবচেয়ে খাপছাড়া জীব। মানুষই হল পৃথিবীর জলবায়ুতে টিকে থাকার পক্ষে সবচেয়ে অনুপযুক্ত জীব। কারণ, পৃথিবীর বাকি সব জীব সারাজীবন খোলা আকাশের নীচে, প্রখর রৌদ্র, তুমুল ঝড় বৃষ্টি সহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে।
মানুষ কেন পৃথিবীর বাকি সব প্রাণীর মতো বৃষ্টিতে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিজতে পারে না! কয়েকঘন্টার বেশি সূর্য্যের প্রখর রৌদ্রে থাকলে একমাত্র মানুষেরই কেন ‘সান স্ট্রোক’ হয়! সূর্য্যের আলোয় বেশিক্ষণ থাকলে আমাদের ত্বকের চামড়া কালো হয়ে যায় কেন! ! কেন সূর্যের আলোয় মানুষেরই চোখ ধাঁধিয়ে যায়! অন্য প্রাণীদের তো তা হয় না। এগুলি কি প্রমাণ করেনা সূর্য রশ্মি মানুষের পক্ষে উপযুক্ত নয় এবং মানুষ থাকত কোনও নরম আলোয় ভরা গ্রহতে।
● মানুষের মধ্যেই প্রচুর দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা ক্রনিক ডিজিজ দেখা দেয় কেন! ডঃ সিলভারের মতে ব্যাক পেন (back ache) হল মানুষের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী রোগ। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ এই রোগে ভোগেন। কারণ মানুষ পৃথিবীর অনান্য প্রাণীর মতো চারপায়ে হাঁটে না। ফলে হাঁটা চলা ও বিভিন্ন কাজে মাধ্যাকর্ষণের সাহায্য পায় না। পৃথিবীর বাকি প্রাণীদের কি ঘাড়ে, পিঠে, কোমরে ব্যাথা হয়! মানুষের এই ‘ব্যাক পেন’ রোগটিই প্রমাণ করে, মানুষের দেহ অন্য কোনও গ্রহে বসবাসের উপযুক্ত হয়ে সৃষ্টি হয়েছিল। যে গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ ছিল পৃথিবীর তুলনায় অনেক কমজোরি।
● পৃথিবীতে থাকা কিছু দীর্ঘজীবী প্রাণী, যেমন আফ্রিকার হাতি, অ্যালডাবরা ও গ্যালাপাগোস কচ্ছপ, বো-হেড তিমি, গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো, গ্রিন-উইং ম্যাকাওদের চোখেও কি চল্লিশের পর চালসে (হাইপার মেট্রোপিয়া) পড়ে! বয়েসের সঙ্গে সঙ্গে তাদের শ্রবণক্ষমতা কমে যায়!
● পৃথিবীর কোনও মানুষই ১০০% সুস্থ নয় কেন! প্রত্যেকেই এক বা একাধিক রোগে ভোগেন কেন!
● মানব শিশুর মাথা বড় হওয়ার জন্য নারীদের স্বাভাবিক উপায়ে প্রসব করতে প্রবল যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। প্রসব করতে গিয়ে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মা ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনও প্রজাতির লক্ষ লক্ষ স্ত্রী প্রাণী ও শাবক প্রসবকালে মারা গিয়েছে কি? মানব শিশু জন্মের পরেই পৃথিবীর উন্নত প্রাণীগুলির শাবকদের মতো হাঁটতে শেখে না কেন?
● মানুষের দেহে কেন ২২৩টি অতিরিক্ত জিন আছে! পৃথিবীর অনান্য প্রাণীদের দেহে অতিরিক্ত জিন নেই কেন!
● মানুষের ঘুম নিয়ে গবেষণা করে গবেষকরা বলছেন পৃথিবীতে দিন ২৪ ঘন্টার, কিন্তু আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি (body clock) বলছে, আমাদের দিন হওয়া উচিত ছিল ২৫ ঘন্টার। মানবজাতির সৃষ্টিলগ্ন থেকেই দেহঘড়িতে একটি দিনের জন্য কেন ২৫ ঘন্টা বরাদ্দ করা হয়েছিল!
বিভিন্ন বিজ্ঞানী ডঃ সিলভারের থিওরিটির বিস্তর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু অনেকে আবার তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা বলেছেন ডঃ সিলভার যে যুক্তিগুলি হাজির করেছেন, সেগুলি কিন্তু একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো নয়। সত্যিই তো পৃথিবীর অনান্য প্রজাতির জীবের চেয়ে আমরাই কেন আলাদা হলাম।
সত্যিই কি আমরা পৃথিবীর প্রাণী! নাকি আমরা ভিনগ্রহের প্রাণী হয়ে পৃথিবীকে শাসন করছি! রহস্যটির উত্তর লুকিয়ে আছে কালের গর্ভে। একটা প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই গেল,মানুষের সৃষ্টি যদি পৃথিবীতে না হয়ে থাকে বা আমরাই যদি ভিনগ্রহ থেকে পৃথিবীতে এসে থাকি, তাহলে কাদের খুঁজতে নাসা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খরচা করছে!
মোম মূল তথ্যটুকু নোট করছে৷ যেখান থেকে প্রমাণ হয় মানব গোষ্ঠী পৃথিবীতে উৎপত্তি হয়নি। তারা পৃথিবীর বাহির থেকে এসে মানবসম্প্রদায় গড়ে তুলেছে বংশবিস্তার দ্বারা।
ইসলাম ধর্মের অনুসারে আদম (আঃ) এবং বিবি হাওয়া প্রথম এবং ২য় মানব- মানবী। তাদের পৃথিবীর বাহির থেকে পৃথিবীতে নামানো হয়েছে। ধর্ম অনুসারে তাদের জান্নাত থেকে পৃথিবীতে দেওয়া হয়েছে যা বিজ্ঞান ভিনগ্রহ থেকে পৃথিবীতে অবতরণ করা কে বলেছে।
মানবসম্প্রদায় টিকেও আছে কল্পনীয় শক্তির দ্বারা। যা ঐশ্বরিক ক্ষমতার দিকে ইশারা দিচ্ছে।
নিশ্চিত একমাত্র সৃষ্টিকর্তা এর পেছনে রয়েছে। কেননা সৃষ্টিকর্তা সকল ক্ষমতার অধিকারী,সর্বজ্ঞানী, সর্বজানতা।
.
.
নোটস গুলো লিখতে লিখতে প্রায় রাত হয়ে এসেছে। কয়েকঘন্টা হয়েছে মেহেরাবের বিয়ে হয়েছে। নিজেকে সে যেন নতুন ভাবে আবিস্কার করেছে আজ। মনে একটা পাথর বসে ছিলো। সেটা আজ নেমেছে। স্বস্তি লাগছে।
সে কেন মোম কে বিয়ে করেছে সেটা নিজেও জানেনা। মোম কে সে একটা সময় শাস্তি দিতে চেয়েছিল।মেহেরাবের সাথে বিয়ে হয়েছে এটাই মোমের জন্য শাস্তি।
মেহেরাব হ্যান্ড ফোন হাতে নিয়ে মোমের নাম্বারে কল দিলো। সেই কখন নতুন বউকে হোস্টেলে নামিয়ে দিয়ে এসেছে। মেহেরাব ধর্মের অজানা নানা বিষয়ক প্রমাণ এবং সত্যতা খুঁজতে ব্যস্ত ছিলো। নতুন বউয়ের উপর একটা দায়িত্ব রয়েছে আফটার অল। নতুন বউয়ের খোঁজ নেওয়া উচিৎ।
মোম হোস্টেলে এসেই বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে।
কি হয়েছে কাউকে কিছুই বললো না।
হল ভরা স্টুডেন্ট, লেকচারারের উপস্থিততে তাকে ভার্সিটি থেকে রেজিস্টার অফিসে নিয়ে গিয়ে নব মুসলিম মেহেরাব তাকে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ করেছে এটা সে কিভাবে কাউকে বলতে পারে?
কিভাবে বলবে সে নব মুসলিম মেহেরাবের আইনত ও ধর্মীয় বউ?
মোম কে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই হোস্টেলে ভীড় জমেছিলো বিশেষ করে মোমদের রুমের সামনে।
মোম আসাতে কিছু জানতে না পেরে সবাই সবার রুমে গিয়েছে। তবে সবার মনে একটাই প্রশ্ন মোমের সাথে কি হয়েছে?
রিংটোন বাজছে। তিন বার বাজার পর মোম ফোন রিসিভ করলো।
ওপাশ থেকে অগ্নিশর্মা হয়ে কেউ বলল-হাউ ডেয়ার ইউ?
মোম চোখ বন্ধ করে ফেললো। শোয়া থেকে উঠে দাঁড়ালো।
ফোন থেকে একের পর এক ইংরেজি ধমক!
-(অনুবাদ)কিছু বলছো না কেন? উওর দাও?
প্রথম বার কেন রিসিভ করলে না ফোন?
আমাকে রাগিয়ে দিতে ভালো লাগে তোমার?
এরপর রাগ সামলাতে পারবে তো?
মোম অস্ফুট স্বরে বলল-ফোন রিসিভ করা ছাড়াও মানুষের আরও কাজ থাকে। তাছাড়া
আমি কি করে বুঝব কলটা কার?
.
.
মেহেরাব নিজেকে সামলে নিয়ে বলল- তোমাকে কি বলেছিলাম? শোন মেয়ে, তুমি এখন থেকে একা নও। তোমার সাথে আরেকজন সর্বদা জুড়ে রয়েছে এটা ভুলে গেলে কিভাবে? তোমার ফোনে আমি-ই একমাত্র কল দিয়ে তোমার খোঁজ নেব এটা তখন বলিনি? প্রথম বার রিংটোনের আওয়াজে বোঝা উচিত ছিলো ওটা তোমার স্বামীর কল।
তোমার ফোনে আমি কল দেব যখন তখন। এবং সব কাজ ছেড়ে তৎক্ষনাৎ রিসিভ করবে। আমার থেকে দূরে থেকে এটাই তোমার প্রধান কাজ।
কথা গুলো এতো জোরালো ছিলো যে মোমের কানে তালা লেগে গেলো।
ফোনটা জানালা দিয়ে ছূরে মারতে ইচ্ছে হচ্ছে!
এমনিতেই মোমের গায়ে কাটা ঘাঁ আর তাতে নুন ছিটানো হচ্ছে সবকিছুর একটা সীমা থাকা দরকার।
ওপাশ থেপে আবারও শোন গেলে -একে তো ভুল করেছো তার আবার সাফাই গাচ্ছিলে। স্বামীর মুখের উপর কথা? এই তোমার শিক্ষা? কেমন মুসলিমা তুমি?
-আর স্ত্রীর কথা বুঝি কথা নয়? আমাকে বকাঝকা করার সময় কোথায় যায় আপনার শিক্ষা? কেমন মুসলিম আপনি?
ওপাশ থেকে হাসির শব্দ শোনা গেলো।
বিয়ের খুশিতে মেহেরাব পাগল হয়ে গেলো নাকি? হতেও পারে।
-আর ইউ ম্যাড?
-ইয়েস ডিয়ার! ম্যাড ফর ইউ!
তাহলে স্বীকার করছো যে আমি তোমার স্বামী এবং তুমি আমার বিউটিফুল ওয়াইফ?
-কথার কথা বলেছি। কি আশ্চর্য!
-এখন কথার কথা বলেছো আর একদিন মনে প্রাণে মেনে নেবে, স্বীকারও করবে মাই ডিয়ার ওয়াইফ।
.
.
মোমের সহ্যের সীমারেখা অতিক্রম হয়েছে এবার৷
মনে মনে বলছিলো, “হে আল্লাহ আমাকে ধৈর্যশক্তি দাও। নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার শক্তি দাও।
বিপদে যখন নিজ থেকে পড়েছি তখন নিজেই বিপদ থেকে সামলে উঠব৷
একটু সময় দরকার শুধু!
.
.
মেহেরাবের রাগে শরীর কাঁপছে। তার কল কেটে দেওয়া। তাকে ইগনোর করা? এতো বড় সাহস তার বিবাহিতা বউয়ের?
আজ মোম বলেই এটা পারলো নয়ত অন্যকারও সাহস হতো না।
এটাই মোমকে সবার থেকে আলাদা করে। মোমের পার্সোনালিটি। মোমের মতো এমন কাউকেই ওর জীবন চলার পথে জীবন সাথী হিসেবে দরকার ছিলো।
মেহেরাবের ইসলাম গ্রহণের পরপরই একটা কথায় মনে বাজছিল, মোম নামের মেয়েটা তার কাছে থাকা চায়। তাকে বিয়ে করা চাই এবং চাই। ঠিক কি জন্যে তা সে জানেনা তবে তবে তার মতো লাগামহীন জীবনে লাগাম লাগাতেই মোম কে দরকার ছিলো।
আল্লাহ তায়ালা তার জন্য সহস্র সমুদ্র পাড়ি দেওয়া ভীনদেশী একটি মেয়েকে রেখেছিলো। এবং এটা জন্য ধার্য্য ছিলো, তার সৌভাগ্য ছিলো।
মোম ভাবনার তল খুঁজে পাচ্ছেনা৷ মেহেরাবের সাথে এক সেকেন্ডও থাকা অসম্ভব। সুস্থ মানুষ তার সাথে থাকতে পারেনা। মুসলিম হয়েছে ঠিকই কিন্তু স্বভাব পাল্টায়নি তিল পরিমাণ। কিছু মানুষ আছে যারা ধার্মিক হলেও একগুয়ে হয়, গোঁড়ামি করে। মেহেরাব একদম সেই ধাঁচের।
.
.
মোম চেঞ্জ করে শুতে গেলো। ফোনটা অফ রেখেছে সেই সাথে স্বামী মেহেরাবের চিন্তাও মাইন্ড থেকে অফ করে রেখেছে।
কিছুক্ষণ পর অনেক শোরগোল শোনা গেলো।
কি হচ্ছে হোস্টেলে?
হোস্টেল কেঁপে কেঁপে উঠেছে। বুটের আওয়াজ হচ্ছে জোরালো ভাবে।কি ভয়ংকর!
মোমের মাথায় তখনও আসেনি স্বামী মেহেরাবের কল কেটে দেওয়া কতটা ভয়াবহ কাজ! মেহেরাব কি করতে পারে তার সমন্বয়েও ধারণা ছিলো না নব বধূ মোম ইয়াসমিনের।

নব মুসলিম মেহেরাব এখন সদ্য জন্মানো শিশুর মতো। শিশু যেমন কিছু বোঝেনা তেমনি মেহেরাবও ইসলাম সম্পর্কে কিছু বোঝেনা।
সে শুধু ইসলামের পথের রাস্তা খুঁজে পেয়েছে। সেই রাস্তার সঠিক দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একজোড়া হাতের প্রয়োজন! হাতজোড়া সময় মতো মেহেরাবের হাত ঠিক সময় ধরবে আল্লাহর ইচ্ছেতে! এখন শুধু অপেক্ষা!!!!!

.
❤আল-কোরআনের ৮১টি উপদেশবাণীর একটি বাণীঃ
১১। রজঃস্রাব কালে যৌনসঙ্গম করো না। [সূরা বাকারা ২:২২২]
.
[নব মুসলিম মেহেরাব সবে ইসলামের পথে এসেছে এখন সবাই দোয়া করুন আল্লাহ তায়ালা যেন শিগগিরই তার জন্য একজোড়া হাতের সন্ধান পায়।মেহেরাবের হাতগুলো খুঁজে নিতে হবে নয়ত হাতগুলো মেহেরাব কে খুঁজে নেবে! আল্লাহ তায়ালা ভরসা! ]
.
চলবে…………..💔💔
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-12

রাসুল (সাঃ) বলেন,
রোজা জাহান্নামের অগ্নি থেকে বাঁচার জন্য ঢাল স্বরূপ, তোমাদের যুদ্ধে ব্যবহত ঢালের ন্যায়।
( নাসায়ী, ২২৩৫)
নব মুসলিম মেহেরাব এখন সদ্য জন্মানো শিশুর মতো। শিশু যেমন কিছু বোঝেনা তেমনি মেহেরাবও ইসলাম সম্পর্কে কিছু বোঝেনা।
সে শুধু ইসলামের পথের রাস্তা খুঁজে পেয়েছে। সেই রাস্তার সঠিক দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একজোড়া হাতের প্রয়োজন! হাতজোড়া সময় মতো মেহেরাবের হাত ঠিক সময় ধরবে আল্লাহর ইচ্ছেতে! এখন শুধু অপেক্ষা!!!!!
মনে হচ্ছে হোস্টেলের বিল্ডিং গুড়িয়ে যাচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে অতল গহব্বরে। হোস্টেল কেঁপে কেঁপে উঠেছে। ভয়ংকর ভুমিকম্প হচ্ছে। বুট পড়ে একটা দল যেন হোস্টেলে দৌড়াদৌড়ি করছে। হৈচৈ শোনা যাচ্ছে। ভয়ে আতঙ্কিত মেয়েদের কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে। কি হচ্ছে তা মোমের বোধগম্য হচ্ছে না।
মোম দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে। দরজা খুলছে না। কয়েকবার নক করা হয়েছে। কাশফিয়া আর ক্যারল ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে আছে৷ দূর দেশে পড়তে এসে একি কান্ড!
মোম বলল- বাহির থেকে কেউ দরজা লক করে দিয়েছে।
দু-জনই চিৎকার দিয়ে উঠলো। এরকম একটা ভয়ংকর সময়ে দরজা বাহির থেকে লক করবে কে?
রুম থেকে বের হতে না পারলে হোস্টেল থেকে কিভাবে বের হবে তিনজন?
হোস্টেলে আটকা পড়লে হোস্টেলের সাথে ওরাও গুড়ো হয়ে যাবে।
কাশফিয়া আর ক্যারল দুজন মিলে গাঁয়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে নক করলো! চিৎকার করে ডাকলো হেল্প হেল্প! আমরা তিনজন এখানে আছি। আঁটকে গিয়েছি। কেউ লক খুলে দাও। বাচাও! বাচাও!
বাহিরে আবারও বিকট আওয়াজ হলো! এবার লোডশেডিং হয়েছে!
কাশফিয়া গলা ফাটিয়ে চেঁচাচ্ছে! ক্যারল দরজা খোলার চেষ্টা করছে।
মোম অন্ধকারে দাড়িয়ে আছে। তার করণীয় কিছুই নেই। চিৎকার চেচামেচির দায়িত্ব ওরা দুজন নিয়েছে।
কাশফিয়া হঠাৎ ফিসফিস করে বলল- এটম বোমা!
ক্যারেল বলল- পারমানবিক বিস্ফোরণ!
মোম বলল- তোমরা কি বলছো?
কাশফিয়া বলল- পারমাণবিক বোমা ব্লাস্ট হচ্ছে আর তুমি শান্ত হয়ে আছো?
ক্যারল বলল- নির্ঘাত চীন অথবা জাপানের কাজ টা করেছে।
কাশফিয়া বলল- রাইট! যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য কে ওরা তো কেউ দেখতে পারেনা।
-উফফ! আল্লাহ কোথায় তুমি!
এরকম কিছুই হয়নি। চীন আর জাপানের খেয়েদেয়ে কাজ নেই যে পারমানবিক বিস্ফোরণ ঘটাবে!
আরেকটা বিস্ফোরণের আওয়াজ হলো।
সাথে সাথে অজস্র চিৎকার চেঁচামিচির আওয়াজ!
মোম বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। ঘুম পাচ্ছে তার। এই ভয়াবহ সিচুয়েশনে তার কেন ঘুম পাচ্ছে সে বুঝতে পাচ্ছেনা! এটাই কি মৃত্যু!
কাশফিয়া মোমের ফোন নিয়ে বলল- কল দাও।
-কাকে?
-তোমার হাসব্যান্ড কে।
-কি বলছো?
-কল দাও।
-না।
ক্যারল বলল -এখনো বুঝতে পাচ্ছো না?
-কি?
-তোমার হাসব্যান্ড ঘটানা ঘটাচ্ছে। সে আন্ডারগ্রাউন্ডের লোক। তাদের কাছে এরকম বিস্ফোরণ কিছুইনা।
মোম ওদের চাপাচাপি তে মেহেরাব কে ফোন করলো।
এই নিয়ে নিরানব্বই টা কল দেওয়া হলো।
রিং হচ্ছে। কল রিসিভ করছে না।
মোম বলল – এখন কি করব?
কাশফিয়া বলল- একবার না পারিলে দেখ শতবার। নিরানব্বই হয়েছে। আরেকটা দিয়ে শতক পূরণ করো।
কল রিসিভ হলো!
ফোনের ওপাশে কারও নিশ্বাসের আওয়াজ হলো।
কেউ যেন হাফ ছেড়ে নিঃশ্বাস নিচ্ছে নিশ্চিন্তে।
-কে ফোন করেছেন?
-আমি।
-আমি কে?
– ক্যান্ডল।
-ক্যান্ডল কে?
-বাড়াবাড়ি হচ্ছে কিন্তু।
-বাড়াবাড়ি আপনি করছেন। একজন ম্যারিড লোক কে এতো রাতে কেন কল করেছেন? আমি আমার ওয়াইফ ছাড়া অন্য কারও সাথে কথা বলিনা। রাখলাম।
মোমের রেগে চোখ বন্ধ করলো। সে জানে মেহেরাব কি মিন করেছে।
কাশফিয়া বলল- তুমি নিজের পরিচয় দাও।
-দিলাম তো।
-ওহ্ এটা নয়।
-তাহলে?
-উনি যেটা শুনতে চাচ্ছেন সেটা বলো।
-কখনো না।
-ক্যান্ডল! এখনো আমাদের বিয়ে হয়নি, আর আমরা মারা যাব? তোমার তো বিয়ে হয়েছে। মারা গেলেও আফসোস নেই।
-মারা গেলেও একবার মরতে হতো! বিয়ে করে বার বার মরতে হবে।
– প্লিজ! তুমি কিং ফায়ারের ওয়াইফ সেটা বলো।
মোম বলল- আমি আপনার…
মেহেরাব বলল- থাক। বলতে হবে না। বলার চেষ্টা করেছো এটাই যথেষ্ট! নিজ থেকে বলবে যেদিন ইচ্ছে হবে। আর সেটা সরাসরি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই। তোমার মুখের এক্সপ্রেসন কি হয় সেটা দেখতে চাই।
মোম কিছু বলল না। শুধু চোখ বন্ধ করলো।
-আমাকে ছাড়া থাকতে পারলে নাতো?
বুঝি বুঝি সব বুঝি! নতুন বিয়ে, নতুন হাসবেন্ড!
– আপনি যা বুঝেছেন তাই।
-থ্যাংকস!
তুমি আমাকে নিজ থেকে ফোন করবে এটাই চেয়েছিলাম। তোমাকে না পেয়ে আমি টেনশনে যতটা ছটফট করেছি ততটা তুমিও করবে এটাই চেয়েছিলাম।
এখন আমি সাকসেস!
যাও ডোরে নক করো।
মোম মেহেরাবের কথা মতো দরজায় একটা টোকা দিল। সাথে সাথেই দরজা খুলে গেলো।
-এবার নিচে তাকাও।
মোম নিচে তাকাতেই কারেন্ট চলে এলো। একটা মিনি সাইজের রেকর্ডার দেখা যাচ্ছে! বিকট শব্দে মোমের কান ঝালাপালা হয়ে গেলো।
মোম রেকর্ডারের সুইচ অফ করলো।
ছোট একটা রেকর্ডার থেকে পারমাণবিক বিস্ফোরণের মতো আওয়াজ! ভাবা যায়!
-এখন ঘুমুতে যাও মাই ডিয়ার লাভলী ওয়াইফ। আর হ্যাঁ মনে রাখবে তোমার হাসবেন্ড যেটা চায় সেটা নিয়েই ছাড়ে। যেকোনো মূল্যে আদায় করে নেয় তার চাওয়াটা! হ্যাভ এ সুইট ড্রিম! গুডনাইট!
-এই নাও তোমাদের পারমানবিক বিস্ফোরণ যেটা চীন জাপান ছূরে মেরেছিল যুক্তরাজ্যের উপর!
কাশফিয়া আর ক্যারল মিনি রেকর্ডার হাতে নিয়ে হতভম্ব!
.
ল্যাপটপ নতুন থিয়রী টায় চোখ বুলিয়ে নিলো মোম।
এখন সে বাংলাদেশ কে ল্যাপটপের স্ক্রিনে দেখছে এবং অনুভব করছে মাতৃভূমি কে। ছোট একটা দেশ বাংলাদেশ! বিশ্বে যা বদ্বীপ হিসেবে পরিচিত। পপুলেশন, পলিউশন,আনএমপ্লয়মেন্ট, পভার্টি, ইল লিটারের, ট্রাফিক জ্যাম সহ অজস্র প্রবলেম।
আর এখানে কোন প্রবলেম নেই। এখানকার লোকজন কতটা সচ্ছল! তবুও নিজের মাতৃভূমির সাথে অন্য ধনী দেশের তুলনা চলেনা। নিজের দেশের মাটির ঘ্রাণ শরীর কে শুদ্ধ করে দেয়। দেশের পূবালী হাওয়া শরীরের সব ক্লান্তি দূর করে দেয়। সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা ছোট একটি দেশ সবুজ বাংলাদেশ!
যেন কোন চিত্রকরের আঁকা কাল্পনিক ছবি।
মোম চোখ বন্ধ করে সোনার বাংলা কে কল্পনা করতে লাগলো। যে সে বাংলাদেশে আছে। চারদিকে নানা রকম চেঁচামেচি! যানবাহনের হর্ণ! পাখির ডাক, নরম হাওয়া! বিস্তৃত নদী!
আহা! কি শান্তি! কি সুন্দর! দ্যাটস অন্ডারফুল!
-থ্যাংক ইউ ডিয়ার!
মোম চোখ মেলে তাকালো।
-ওয়াও! বিয়ের পরের দিন এতোটা চেঞ্জ! হ্যান্ডসাম হাসবেন্ডর হ্যান্ডসাম প্রশংসা। আই লাইক ইট।
-ডিজগাস্টিং!
-বাট আই লাভ ইট।
মোম ল্যাপটপে ভ্রমপূত্র নদী দেখায় মনোযোগ দিলো। মেহেরাব কে সে যেন খেয়াল করলো না।
-কি করছো?
আরে বলো না কি করছো?
আমাকে রেখে ল্যাপটপে কি এমন দেখছো? দেখার মতো জিনিস তো তোমার সামনেই আছে।
মোম ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে উঠে পড়লো।
-দেখি ল্যাপটপ টা দাও তো দেখি।
-ডোন্ট টাচ। আমি আমার জিনিসপত্র কাউকে টাচ করতে দিইনা। এটা শুধু আমার।
– তার মানে তোমাকে টাচ করতে পারব?
হা! হা!হা!। রাগ করো না। কথা তে কথা চলে আসে।
মেহেরাব উঠে দাঁড়ালো। শার্টের হাতা ফোল্ড করে কাঁধ ঝাঁকি দিলো।
চোখের সানগ্লাসটা খুলে মোমের চোখে পড়িয়ে দিতে দিতে বলল-শোন মেয়ে, তুমি আমার, ল্যাপটপ টা তোমার, তোমার ল্যাপটপ টাও তাহলে আমার, বিকোজ তুমি সহ তোমার সকল কিছুও আমার। মাথায় ঢুকেছে? মাইন্ড ইট!
মেহেরাব ল্যাপটপের স্ক্রিনে নদ টা দেখলো।
স্ক্রিনের নিচে লেখা, ভ্রমপূত্র নদ, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।
-মন্দ না। তোমার বাড়ি কি এই নদের ধারে?
-নদের ধারে, রাস্তার ধারে, খোলা মাঠে যেখানে খুশি সেখানে।
-উফফ, তোমার এই কথার পৃষ্ঠে কথা কাটাকাটি কথা খুব জোস! তোমার কাটাকাটা কথা শুনে আমি ইমপ্রেস! রিয়েলি!
মোম সানগ্লাস টা খোলার চেষ্টা করলো না! সে শুধু মেহেরাবের কান্ড কারখানা শুনছে।
-শোন মেয়ে, আমার জানার দরকার আছে আমার শশুর বাড়ি কোথায়! নদে হলে ভালো,আমরা আমাদের বেবিদের নিয়ে সুইমিং করতে পারব। কি মজাই না হবে ভেবে দেখ। আমাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে ছোট একটি পরিবার! পুরো পরিবার ছুটিতে তোমাদের এখানে নদে গিয়ে সাঁতার কাটছি। বাই দ্যা ওয়ে নদ এবং নদীর কি পার্থক্য? এটা কি প্রাণীর মতো লিঙ্গ বিষয়ক কিছু? কোনটা ছেলে? কোনটা মেয়ে?
মোম কি করবে বা বলবে সে নিজেও জানেনা। এসব কি আসলেও তার সাথে ঘটেছে? তার কি এই লোকটার সাথে বিয়ে হয়েছে? তাকে বিয়ে করার জন্য নাস্তিক থেকে আস্তিক হয়ে গেলো কেউ?
না না।সে সপ্ন দেখছে। চোখ মেলে তাকালেই সপ্ন ভেঙে যাবে। সপ্ন! সপ্ন!
মোম ল্যাপটপ গুছিয়ে ক্লাসে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই মেহেরাব পথ আগলে দাঁড়িয়ে লাজুক একটা হাসি দিলো।
-পাগলের মতো হাসছেন কেন?
-আমার লজ্জা লাগছে।
মোম মেহেরাবের পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার দেখলো।
– আমাদের বিয়ের পর এখন প্রথম দেখা হয়েছে।তাই আমার লজ্জা লাগছে। তোমার কি লজ্জা লাগছেনা? শুনেছি প্রাচ্যের নারীরা লজ্জাবতী!
হাসবেন্ড কে দেখে লজ্জা পাওয়াই নাকি ম্যারিড নারীর বৈশিষ্ট্য?
-আপনি বুঝি প্রাচ্যের মেয়ে?
-কেন?
-আপনার লজ্জা লাগছে তো তাই।
-আমার কেন জানি লজ্জা লজ্জা ফিলিং হচ্ছে! তুমি লজ্জা পাচ্ছো না তাই আমি লজ্জা পেয়ে সেটা পূরণ করে দিচ্ছি ডিয়ার ওয়াইফ।
-আরে আরে কোথায় যাচ্ছো?
আমাকে নিয়ে যাও!
মোম দুই হাত জড়োসড়ো করে বলল- হাত জোড় করছি। আমার ক্লাস আছে। লিভ মি!
-তোমাকে ধরলাম কখন যে চলে যেত দেব?

মোম সানগ্লাসটা এতোক্ষণ পড়ে ছিলো। সানগ্লাস এখনো রয়েছে সেটা মনে নেই।
মেহেরাব ভালো ভাবেই বিষয়টি লক্ষ্য করেছে! মেহেরাবের ফেবারিট সানগ্লাস। থাক,পড়ে থাকুক! হাসবেন্ডের সানগ্লাস ওয়াইফ পড়বে সেটা নর্মাল!
মোম ল্যাপটপ, ভ্যানিটি ব্যাগ এবং তার জিনিসপত্র নিয়ে হাঁটা শুরু করেছে।
আপাতত লেকচারার যমের ক্লাস করার কথা ভাবছে সে। নতুন যে লেকচারার জয়েন নিয়েছে তার নতুন নামকরণ যম! প্রফেসর দেখতে নাকি যমের মতো! সবাই দেখে প্রচন্ড ভয় পায় যমের মতো তাই প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট তিনি যম নামে খ্যাত।
মোম ইউনিভার্সিটি চত্বরে আসা মাত্রই মেহেরাব পেছন থেকে হাত টেনে ধরলো!
-এভাবে ঈগলের দৃষ্টি তে দেখোনা ডিয়ার! ভয় লাগে।
সকাল থেকে মনে হয় কিছুই খাওনি মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে না মানে নেকাবের উপর থেকেই বোঝা যাচ্ছে। আফ্টার অল হাসবেন্ড। চলো দুজন খেতে বসি আশেপাশের কোন রেস্টুরেন্টে! কিং ফায়ারের ওয়াইফ কিছুটা সময় লেট করে ক্লাসে ঢুকলে কিছু হবে না। লেকচারার তোমাকে কিছু বলবে না। উল্টো তুমি এটেন্ড না থাকা পর্যন্ত লেকচার স্টার্ট হবে না।
মোম হাতে একটা ঝটকা দিয়ে বলল- রোজার মাস। রোজা রেখেছি! গপগপ করে রোজার মাসে দিনে একশত বার ইফতার করে আপনার মতো লোক দেখানো মুসলিম হিসেবে নিজেকে জাহির করিনা। ইউ আর এ হ্যাডেক! লিভ মি !
রোজা মানে কি মেহেরাব কিছুটা জানে তবে বিস্তারিত জানে না। কিভাবে রোজা করতে হয়!
মোমের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। মোম কয়েকটা জার দেবে তবে শেষে বুঝিয়ে দেবে।
মেহেরাব মোম কে ডাকার আগেই মোম লম্বা লম্বা পা ফেলে চত্বর থেকে প্রায় দৌড়ে দৌড়ে ডিপার্টমেন্ট ঢুকলো। এমন ভাবে ঢুকলো যেন পেছনে কোন হিংস্র দানব তাকে ধাওয়া করেছে।
মেহেরাব তো মোমের স্বামী! সে তো বাঘ, ভাল্লুক, সিংহ চিতা নয় যে মোম দৌড়ে দৌড়ে হাঁটবে বাঁচার জন্য।
-ইউ চিড়িয়াখানার চিড়িয়া।গেট আউট ফর্ম মাই ক্লাস! ঘড়ির কাঁটায় কটা বাজে?
মোম মাথা নিচু করে ডিপার্টমেন্টে দাড়িয়ে আছে। বিশাল হল টা যেন ফাঁকা মাঠ। কোথাও সুচের আওয়াজের মতোও আওয়াজ নেই। সবাই যেন চিতা বাঘের গুহায়! এমন করে ভয়ে কাঁপছে!মুখের এক্সপ্রেসন টা এমন যে চিতা বাঘ কখন সবার উপর ঝাপিয়ে পড়বে এই ভয়ে সবাই নিঃশ্বাস নিচ্ছে না। চোখের পলকও ফেলছে না।
– নিল ডাউন! নিল ডাউনে তুমি কান ধরে এক পায়ে দাড়িয়ে পুরো লেকচার শুনবে। লেকচার শেষে হুবহু আমাকে মুখে মুখে সেম টু সেম কপি করে পুরো লেকচার কপি করে বলবে। আন্ডারস্ট্যান্ড! মোম চোখ বন্ধ করে ফেললো।
এক মেয়ে ধমক শুনে ভয়ে মুখ দিয়ে হালকা চিৎকার দিয়ে ফেললো।
প্রফেসর মেয়েটির দিকে তাকাতেই মেয়েটি ভেউ ভেউ করে কাঁদতে লাগলো!
-মহা যন্ত্রণা! আমি কি যম? তুমি আমাকে দেখে কাঁদছো কেন? তোমাকে কিছু বলিনি।
শান্ত হও।
মেয়েটি স্কার্ফ দিয়ে নিজের মুখ চেপে ধরলো যেন আওয়াজ বের না হয়।
প্রফেসর মোমের দিকে চোখ বুলালো পা থেকে মাথা পর্যন্ত!
অমনি সানগ্লাসে চোখ গেলো।
-নেকাবের উপর ক্লাসের মধ্যে ব্ল্যাক সানগ্লাস পড়ে আছো কেন? তোমার ড্রেসআপের সাথে যাচ্ছেনা। সার্কাসে জব করো? জোঁকার তুমি?
মোম মেহেরাবের সানগ্লাস হাতে নিয়ে হতভম্ব!!
.
মোমের পা ব্যথা করছে। পুরো একটা ক্লাসে নয় যতগুলো ক্লাস ছিলো সবগুলোতে নতুন প্রফেসর তাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলো। নতুন ক্লাস শুরুর সময় মোম বসতেই প্রফেসর কোথা থেকে এসেই তাকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে পাশে দাড়িয়ে থাকতো! নতুন স্যারের নাম আসলাম শেখ!!! জাতীয়তা পাকিস্তানি। মুসলিম।
ইফতার সামনে সাজানো হয়েছে। আজানের কিছুক্ষণ আছে। মোম মহান আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানালো।
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি! রোজাদার ব্যাক্তির নিশ্বাস আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন।
মেহেরাব নামের ঝামেলা থেকে সে মুক্তি পেতে চায়। অধীক শোকে মানুষ পাথরের ন্যায় হয়ে যায়। যেমনটা মোম হয়েছে।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সিয়াম ঢাল স্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মূর্খের মত কাজ করবে না। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে চায়, তাকে গালি দেয়, তবে সে যেন দুই বার বলে, আমি সওম পালন করছি। ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই সওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ্‌র নিকট মিসকের সুগন্ধির চাইতেও উৎকৃষ্ট, সে আমার জন্য আহার, পান ও কামাচার পরিত্যাগ করে। সিয়াম আমারই জন্য। তাই এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশ গুণ।

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৮৯৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
.

রোযা অবস্থায় বিশেষ করে ইফতারের পূর্বে দুআ কবুলের সম্ভাবনা বেশি
(সাথে রয়েছে ইফতারের পূর্বে দুআ কবুলের হাদিসটির ব্যাপারে মুহাদ্দিসদের বক্তব্য)
রোযা অবস্থায় দুআ করলেও তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ মর্মে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
ثلاث دعوات لا ترد : دعوة الوالد لولده ، ودعوة الصائم ودعوة المسافر
“তিন ব্যক্তির দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না। সন্তানদের জন্য পিতার দুআ, রোজাদারের দুআ ও মুসাফিরের দুআ।” (বায়হাকী, সহীহুল জামে হা/২০৩২)

তবে বিশেষকরে ইফতারে পূর্বে দুআ কবুলের সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন:
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
إنَّ للصائمِ عندَ فِطرِه لَدعوةً ما تُرَدُّ قال سمِعتُ عبدَ اللهِ يقولُ عندَ فِطرِه : اللهم إني أسألُكَ برحمتِكَ التي وسِعَتْ كلَّ شيءٍ أن تغفِرَ لي – زاد في روايةٍ : ذُنوبي
“রোজাদারের ইফতারের সময়ের দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না।” তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. কে ইফতার করার সময় বলতে শুনেছি:
اللهم إني أسألُكَ برحمتِكَ التي وسِعَتْ كلَّ شيءٍ أن تغفِرَ لي
”হে আল্লাহ, তোমার সর্বব্যাপী দয়ার ওসিলায় প্রার্থনা করছি, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।” অন্য বর্ণনায়: “আমার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দাও।”
ইমাম বুসীরী তার ইতহাফুল মাহারা গ্রন্থে (৩/১০২) উক্ত হাদিসটির ব্যাপারে বলেন, হাদিসটি সহীহ। আর এর সমর্থনে আরও হাদিস রয়েছে।
ইবনে হাজার রহঃ “রোজাদারের ইফতারের সময়ের দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না।” হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলে সাব্যস্ত করেছেন। [ আল ফাতুহাত আর রাব্বানিয়াহ ৪/৩৪২)]
আহমদ শাকিরও উক্ত হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। [উমদাতুত তাফসীর ১/২২৫)০
তবে ইমাম আলবানী হাদিসটিকে জঈফ বা দুর্বল বলেছেন। (জঈফ ইবনে মাজাহ হা/৩৪৫)

মোটকথা, হাদিসটি সহীহ/জঈফ হওয়ার ব্যাপারে মুহাদ্দিসদের মাঝে দ্বিমত দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ইফতারের সময় মানুষ ক্লান্ত-শ্রান্ত থাকে, ক্ষুধা-পিপাসায় কাতর থাকে। এমন কষ্টকর পরিস্থিতিতে দুআ করলে তা কবুলের সম্ভাবনা থাকে-যেমনটি বলেছেন আল্লামা উসাইমীন রহ.।
সুতরাং রোযা অবস্থায় সারাদিন বেশী বেশী দুআ করার চেষ্টা করার উচিৎ। বিশেষ করে ইফতারে সময়। হতে পারে, দয়াময় আল্লাহ আমাদের দুআ কবুল করবেন। আল্লাহ তাওফিক দানকারী।

উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
মসজিদের এক মুসুল্লি মেহেরাব কে সাওম বা রোজা সম্পর্কে খুব ভালো একটা ধারণা দিলো। মেহেরাব আল্লাহর তায়া’লার কাছে শুকরিয়া আদায় করে ওয়াদা করলো আগামী কাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত সে রোজা রাখবে। যদিও তার প্রতি আধ ঘন্টায় কিছু না কিছু খেতে হয়। অবশ্য মোম পাশে থাকলে সে সবকিছু জয় করতে পারে। রোজাদার ব্যাক্তি কে আল্লাহ তায়ালা অতি পছন্দ করেন। ইফতারে করা দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন। মেহেরাব রোজা রেখে ইফতারের সময় দোয়াতে একটা জিনিস চাইবে ঠিক করে রেখেছে। কাল থেকে প্রতিদিন ইফতার করবে মোমের সাথে। আজ মোম কে একা করতে হবে। সেও অল্প সল্প টুকটাক ইফতারি চিববে।
মেহেরাব তার নব বধূর জন্য নিজে ইফতারির আয়োজন নিয়ে হোস্টেলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। সে রোজা রাখেনি বাট তার ওয়াইফ তো রেখেছে। মোম আজ ইফতার করবে তার স্বামীর আনা ইফতার দিয়ে।
মোম কে ফোনে মেহেরাব অপেক্ষা করতে বলেছে। মোম কয়েকটা জার দিয়ে বলেছে আগেই ইফতার করে ফেলবে। মেহেরাবের বিশ্বাস মোম অপেক্ষা করবে।
.

❤আল-কোরআনের ৮১টি উপদেশবাণীর একটি বাণীঃ
১২। শিশুকে পূর্ণ দুই বছর দুগ্ধপান করাও। [সূরা বাকারা ২:২৩৩]
.
[অনেক দিন পর লিখছি তাই কিছু লাইনে অসঙ্গতি এবং বানান ভুল হতে পারে, নিজ গুনে মাফ করে দেবেন]
চলবে……..💔💔💔

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here