#পূর্ণতা🖤
#part_04
#Writer_Megla (মেঘ)
তূর্য এনজেইঞ্জড কথাটা শুনে তিথির বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। প্রিয় কিছু হারানোর তীব্র আশঙ্কায় তার ভেতরটা ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত! তিথির এখন খুব কান্না পাচ্ছে। শুধু কান্না না রিতিমত হাত-পা ছুঁড়াছুড়ি করে কান্না করতে ইচ্ছা করছে তার। এতো দিন ধরে তূর্যকে নিয়ে দেখা স্বপ্নগুলো এক নিমিষেই কেমন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল! এরজন্য দায়ী কে? তূর্য? অবশ্যই তূর্য। তার আগেই বলা উচিত ছিল সে এনজেইঞ্জড! তাহলেই আর শুধু শুধু তিথি তাকে নিয়ে এতো স্বপ্ন দেখতো না। কিন্তু তূর্যই বা কি করে জানবে যে সে তাকে নিয়ে এতো স্বপ্ন সাজিয়েছে? তিথির এসব এলোপাথাড়ি চিন্তাভাবনার মাঝেই তূর্য তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠলো,
———“আরে তিথি! কেমন আছো?”
———” জি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি ভাইয়া। আপনি কেমন আছেন?”
———-” আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। তা তুমি এখন এই সময় ছাদে কেন আসছো? না মানে কোন দারকারে? তাহলে তুমি থাকো আমি নিচে যাই।”
———-” না ভাইয়া আপনাকে যেতে হবে না। আমি আসলে একটু ফুল গাছগুলোতে পানি দিতে আসছিলাম।”
———“ওহ্। যাই বলো তোমার ফুলের বাগানটা কিন্তু খুব সুন্দর!”
———“থেঙ্ক্রিউ ভাইয়া।”
——–” ধন্যবাদ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এক্চুয়ালি একসময় আমার ও ফুল বাগান করার খুব শখ ছিল।”
———“এখন করেন না?”
তূর্য নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললো,
———“সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় এখন আর সেই ভাবে সুযোগ হয়ে উঠে না।”
তিথি তূর্যর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো,
——–” গাছে পানি দিবেন?”
——–” তা দেওয়াই যায়।”
তিথি তূর্যর দিকে পানির জারটা এদিকে দিয়ে বলল,,, এই নিন। তূর্য নিচের ঠোট হালকা করে কামড়ে ধরে খুব মনোযোগ দিয়ে গাছে পানি দিচ্ছে। আর তার সাথে সাথে তার কপালে পরে থাকা অবাধ্য সিল্কি চুলগুলো বেখেয়ালি হাতে মাঝে মাঝেই নেড়ে দিচ্ছে। তূর্যর এই ছোট্ট ছোট্ট বিষয়গুলোই তিথিকে তার প্রতি আর বেশি আকৃষ্ট করে তুলছে। কিন্তু তূর্যর তো বিয়ে ঠিক হয়ে আছে? কথাটা ভাবতেই তিথির মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল। পরক্ষনেই কিছু একটা মনে পড়তেই তিথির মুখে আবার হাসির রেখা ফুটে উঠল। বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে,,,,তো কি হয়েছে? বিয়ে তো আর হয়ে যায়নি। আর তূর্যর মতো ক্রাশ টাইপ ছেলেদের হাজারটা গার্লফ্রেন্ড থাকলেও সেটা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর তূর্যতো মাত্র একটা গার্লফ্রেন্ড। সেটা তেমন কোন বিষয় না। আর তাছাড়া তিথির নিজের প্রতি যথেষ্ট বিশ্বাস আছে। তূর্য খুব শীঘ্রই তার কদর বুঝতে পারবে। তখন তূর্য নিজে এসে তাকে ভালোবাসি বলবে।
গাছে পানি দেওয়া শেষ করে তূর্য জারটা তিথি হাতে দিয়ে বলল,,,,আমি আসছি। আমার একটা জরুরী কাজ আছে। এই বলে সে আর এক মূহূর্ত সেখানে না দাঁড়িয়ে দ্রুত পায়ে সিঁড়ি দিকে ছুটলো। ব্যাপারটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটলো যে তিথির মাথায় ঢুকলোই না। যখন সে ব্যাপারটা বুঝতে পারলো তখন দেখলো তূর্য প্রায় অর্ধেক সিঁড়ি পার হয়ে গেছে। তিথি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে ভাবতে লাগলো,,,কি হলো তূর্য এভাবে চলে গেল কেন?
🍁
———“কি হয়েছে বাবা? এই ভর সন্ধ্যাবেলা আমাদেরকে এখানে ডাকলে যে?” তূর্যর মামা বললো ।
———” আসলে মামা তোমাদেরকে একটা জরুরী কথা বলার ছিল। পূর্ণতার ব্যাপারে।”
তূর্যর মামা ভ্রু কুঁচকে বললো,
———“পূর্ণতার ব্যাপারে?”
——–” হুঁ পূর্ণতার ব্যাপারে।”
——–” কি কথা?”
———” আসলে আমি ওর ট্রিটমেন্টের ব্যাপারে তোমাদের সাথে কথা বলতে চাইছিলাম। আমার মনে হয় ওর ট্রিটমেন্ট ঠিকঠাক মতো হচ্ছে না। না মানে যে ডাক্তার ওকে দেখছে সে ওর চিকিৎসা ঠিকমতো করতে পারছে না।”
———” কে বললো? আমরা চাচা-চাচী বলে ভেবো না আমরা ওর কোন যত্ন নেই না। আর ওকে যে ডাক্তার দেখে সে তোমার মামার বন্ধু। খুব নাম করা ডাক্তার।”
তূর্য মনে মনে বললো,,, দেখতেই তো পাচ্ছি কতো ভালো ডাক্তার! এতো ভালো ডাক্তার যে গত পনেরো বছরের পূর্ণতার সামান্য একটা ভয়ই কাটিয়ে উঠাতে পারেনি। নাকি সবই ইচ্ছাকৃত কে জানে? তূর্য মায়ের মুখে শুনেছিল এই সব সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী হচ্ছে পূর্ণতা। তাই তার ক্ষতি করার লোকের অভাব না থাকাই স্বাভাবিক! আর পূর্ণতার কোন ক্ষতি করলে তার আত্নীয়-স্বজনরাই করবে। সে হিসাবে তূর্যর মামা- মামীর দিকেই আগে আঙুল উঠে। কারণ পূর্ণতার কিছু একটা হয়ে গেলে তাদেরই সবচেয়ে বেশি লাভ। কিন্তু মুখে বললো,
——-” মামী আমিও কিন্তু একজন সাইক্রিয়াটিস্ট। আর হাজার হলেও পূর্ণতা আমার মামাতো বোন। আর ভাই হিসাবে আমারও একটা দায়িত্ব আছে। তাই তোমাদের যদি কোন আপত্তি না থাকে তাহলে আমিই পূর্ণতার চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে চাই।”
তূর্যর কথা শুনে তো তূর্য মামী খুব খুশি। পূর্ণতার চিকিৎসার সব দায়িত্ব যদি তূর্য নেয় তাহলে তাদের আর টাকা-পয়সা খরচ করতে হবে না। তাই সে গদগদ কন্ঠে বললো,
——–” তা বেশ তো তুমি যখন তোমার বোনের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে চাচ্ছো। তাহলে নাও। পূর্ণতা তোমার কাছে থাকলে আমরাও একটু নিশ্চিন্ত থাকি আরকি।”
———-” তাহলে আমি বরং কাল থেকেই ওর ট্রিটমেন্ট শুরু করি। কিন্তু তার আগে ওর মেডিকেল স্ট্যাটাস সম্পর্কে আমার ভালো করে জেনে নেওয়া উচিত। মামী তুমি আমাকে পূর্ণতার সব রিপোর্ট দেখাও তো।”
তূর্যর কথা শুনে তার মামী আমতা আমতা করতে করতে বললো,,,, রিপোর্ট? কিসের রিপোর্ট?
———-” পূর্ণতার মেডিকেল রিপোর্ট। ওর বর্তমান ফিজিকাল কন্ডিশন সম্পর্কে তো আগে আমার ভালো করে জেনে নিতে হবে। তা না হলে ওর ট্রিটমেন্ট শুরু করবো কিভাবে?”
——–” কিন্তু ওসব কাগজ পত্র তো এখানে নেই।” তূর্যর মামী বললো।
———“তাহলে কোথায় আছে?”
———“কোথায়,,,, হাসপাতালে মানে পূর্ণতার পাগলা গারদে।”
তূর্য তার মামা-মামীর কথা বলার ধরন দেখে স্পষ্ট বুঝতে পারছে,,,তারা মিথ্যা বলছে। কিন্তু কেন? তাহলে কি তূর্যর মাম-মামীই পূর্ণতার এই অবস্থার জন্য দায়ী? নাকি তার পেছনে ও রয়েছে অন্য কোন রহস্য??
🍁
মাঝরাতের দিকে তূর্যর রুম থেকে আসা খিলখিল হাসির শব্দে বেশ অবাক হয় তন্ময়। এতো রাতে এখানে কে এভাবে হাসছে? তূর্যর হাসির শব্দ তো এরকম না। আর সে এতো রাতে কোন কারণ ছাড়া এভাবে হাসবেই বা কেন? মনে হচ্ছে কোন এটা মেয়েলি কণ্ঠস্বর! কিন্তু তূর্যর রুমে এসময় কে থাকতে পারে? তন্ময় কৌতূহল বশত তূর্যর ঘরে উঁকি দিয়ে দেখে,,,, পূর্ণতা হাসছে। আজ অনেক দিন পর তন্ময় পূর্ণতাকে এমন খিলখিল করে হাসতে দেখলো। ছোট চাচ্চু আর কাকিমা আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে তো পূর্ণতা হাসতেই ভুলে গেছে। এর জন্য অবশ্য দায়ী তারাই। আজ পূর্ণতাকে এভাবে প্রাণ খুলে হাসতে দেখে খুব ভালো লাগছে তন্ময়ের। সে মনে মনে বললো,,,,হয়তো তূর্যই পারতো আমার বোনটাকে ঠিক আগের মতো করে দিতে। ছোট বেলার মতো কিন্তু তূর্য তো এনজেইঞ্জড! তন্ময় গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,
——–“ভেতরে আসবো?”
তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে পূর্ণতা আহ্লাদী সুরে বললো,
———” প্রিয় ভাইয়া তুমি? আসো আসো তাড়াতাড়ি আসো।”
———“আসছি। তা আর মিষ্টি বনুটা কি করে?”
———” গল্প শুনি। এই ভালো ভাইয়াটা আমাকে গল্প শোনাইতেছে। তুমি শুনবা?”
——–“না বনু। তুমি শুনো। আমি এখন ঘুমাতে যাবো। আমাকে আবার অনেক সকালে উঠতে হবে তো।”
———“একটু দাঁড়া তন্ময় তোর সাথে আমার একটা জরুরী কথা আছে।” তূর্য বললো
——–” সকালে বলিস। আমি এখন খুব টায়ার্ড দোস্ত।”
——–“আচ্ছা। বাট কথা তোকে বলতেই হবে। যত তাড়াতাড়ি বলতে পারি ততোই ভালো।”
#পূর্ণতা🖤
#part_05
#Writer_Megla (মেঘ)
ফ্রেমে বন্দী কোন ক্যামেরায়
গ্রীষ্মের পড়ন্ত বিকেল তুমি
অথবা বর্ষার আকাশে মেঘের আদলে
লুকিয়ে থাকা ঐ রোদ তুমি
তোমার ঐ মেঘকালো চোখের ভাষায়
মাতাল করা হাসি আর ভেজা চুলে
গোলাপি ঐ ঠোঁটের ব্যালকনিতে
রঙ তুলিতে আঁকা আমার অবসর বিকেল
সব তুলনার উর্ধ্বে তুমি
আজও তোমার স্পর্শ লোভে
খুঁজি তোমায় স্বপ্ন গানে
আজও তোমার অপেক্ষাতে
টুকরো কিছু বাক্যে স্বপ্নে আপন
মাঝখানে অদৃশ্য দেয়াল
খুঁজে ফিরি তোমায় কোন মায়ায়
দাঁড়িয়ে যেন উপহাসে
হারিয়ে সেই সকাল, হারিয়ে সেই বিকেল
বৃষ্টি ভেজা দুপুর, অলস মেঘ রোদ্দুর
আসবে না জানি ফিরে…..
দোস্ত গানটা একদম ফাস্ট ক্লাস হইছে! এমনিতেই তুই যা হ্যান্ডসাম,,,,তার উপর মাইয়া মানুষ তো তোর এই গান শুনে একেবারে হুমরি খেয়ে পড়বে।
——–“বন্ধু সেই চান্স আর নেই! আমাদের তূর্য বাবু অলরেডি বিয়ের পিঁড়িতে বসার জন্য এক পা বাড়িয়েই আছে।” তন্ময় বলল।
তন্ময়, তূর্য, সুভাষ, অর্ণব, আকাশ ওরা সবাই কাজিন হলেও খুব ভালো ফ্রেন্ড। সবাই এখন নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকে। তাই তারা আগের মতো এখন আর আড্ডার আসর জমাতে পারে না। আজ তন্ময়ের বিয়ে অনেক দিন পর সবাই আবার একসাথে হয়েছে। তন্ময়দের বাড়ির ছাদের তাদের আড্ডার আসর বসেছে। ব্যাচেলর পার্টি আরকি! তাদের আড্ডার এক পর্যায়ে সুভাষ তন্ময়কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
——-“মাম্মা আর দুই দিন বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছো। তো আমাদের একমাত্র ভাবিকে তুমি কতটুকু ভালোবাস কিনা সেটা তো একবার পরখ করে দেখতে হয়। কি বল বন্ধুগণ?”
সবাই সুভাষের কথায় সায় দিয়ে বলল, আবশ্যই। সুভাষ তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে বলল,,,কি করা যায়? কি করা যায়? তুই বরং ভাবিকে উদ্দেশ্য করে একটা গান ধর। গানটা যেন রোমান্টিক টাইপের গান হয়!(চোখ টিপে)
——–“ভাই আমি মাপও চাই দোয়াও চাই। তোরা তো জানিসই আমি গান গাইতে পারি না। তাই আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধু হইয়া তোরা আমারে এমন কইরা ফাঁসায় দিস না। হোদাই লাগি তোদের!
তন্ময়ের কথা বলার ভঙ্গি দেখে সবাই ফিক করে হেসে দিল। আকাশ বললো,,, দোস্ত তুই পারিসও বটে! গান গাইতে না পারলেও অভিনয় টা কিন্তু তুই দারুন করিস। কিন্তু আজকে তো এসব বললে হবে না মামু। একটা গান যে আজকে তোমাকে গাইতেই হবে।
——–” প্লীজ দোস্ত।
——–“ওতো দয়ালু আমরা না। তাই আমাদের কাছে প্লীজ ট্লিস বলে কোন লাভ নেই। আমরা গান শুনতে চাই।”
——-“গান শুনতে চাস? তাহলে আমাকে কেন? তূর্যকে বল। ওর গলা সম্পর্কে তো তোদের আইডিয়া আছেই। ছোট বেলায়ই যে সুন্দর গান গাইতো! ওর গান শুনে সিনিয়র আপুগুলোও ওর উপর ফিদা ছিল। একবার এক সিনিয়র তো ওকে প্রেম পত্রও দিয়েছিল।
তূর্য তন্ময়ের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
——-” আবার আমাকে এর মধ্যে টানছিস কেন?”
——-” তূর্যর গান আমরা অবশ্যই শুনবো কিন্তু তার আগে তোর গান শুনবো।”
——-“প্লীজ!”
——-“নো ছাড়।”
——-“আচ্ছা আমি গাইবো। তার আগে তূর্য একটা গান গাক। ওর গান শুনে একটু সাহস সঞ্চার করে নিই। দাঁড়া তূর্য আমি তোর গিটারটা নিয়ে আসি।”
তূর্য তন্ময়ের দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মনে মনে বললো,,, আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়ে আবার ঢং করা হচ্ছে। আর মুখে বললো,
——-” তোর যেতে হবে না। আমি নিজেই আনতে পারবো।”
🍁
তিথি রাগে গজগজ করতে করতে করিডর দিয়ে হাঁটছে। তার এতো রাগের প্রধান কারণ হলো তূর্য। কারণ সারাদিন তূর্যর পিছনে ঘুর ঘুর করেও তূর্যর কোন রূপ পাত্তা পাচ্ছে না সে। তূর্য যেন তাকে দেখেও দেখছে না। তিথির মনে তূর্যকে নিজের করে পাবার যেন ক্ষীণ আশা ছিল তাও ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।
——–” বাব্বাহ! এই মাইয়া তো দেখি হেব্বি সুন্দর হয়ে গেছে।”
হঠাৎ করে তাকে উদ্দেশ্য করে বলা এমন উক্তি শুনে দাঁড়িয়ে পড়লো তিথি। পেছন দিকে তাকিয়ে দেখে তিথির মামাতো ভাই হৃদয় দাঁড়িয়ে আছে। হৃদয়কে দেখেই তিথির মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। তিথি রাগী কন্ঠে বললো,
——-“কি বললে তুমি?”
——-” তুই তো দেখছি দিন দিন পরীর মতো হচ্ছিস। হে হে।”
——-“আর কিছু বলার আছে?”(ভ্রু কুঁচকে)
তিথির ভাবভঙ্গি দেখে হৃদয় খানিকটা ভরকে গিয়ে বললো,
——-“মানে?”
——-“মানে মানে বাদ দিয়ে আসল কথাটা বল। কি দরকার?”
——-” আসল কথা আবার কি?”
——-“নেই বলছো?”
——-“পূর্ণতা কোথায় রে? সারা বাড়িতে ওকে এতো করে খুঁজেও কোথাও পেলাম না। তুই জানিস কোথায় আছে?”
——–“কেন পূর্ণতাকে দিয়ে তোমার কি কাজ!”
——-“সবাইকে দিয়েই কি আর কাজ করানো চলে?”
——-“মানে?”
——-“আগে বল পূর্ণতা কোথায়?”
——–“জানি না।”
——-“তাহলে আমিও জানি না। এবার বলো তো কাহিনী কি?”
——-” না বললে যাও যাও তোমার কেচ্ছা কাহিনী শুনার জন্য আমি বসে নেই।”
🍁
অনেক বছর পর চিরপরিচিত মাটিতে পা দিতেই তূর্যর মায়ের বুকটা হুঁ হুঁ করে উঠলো। কতো দিন পর আবার তার প্রাণের নীড়ে ফিরে এলো সে! শেষ কবে এই বাড়ি এসেছিল ঠিক মনে পড়ছে না তার। প্রায় বছর পনের আগে তূর্যর মামাদের সাথে ওদের একটা ঝামেলা হয়েছিল। তখন থেকেই ওদের মধ্যে সব যোগাযোগ বন্ধ ছিল কিন্তু তূর্য আর তন্ময়ের বন্ধুত্ব আবার সবাইকে এক সুতায় বেঁধেছে। সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সবাই আবার আগের মত হয়ে গেছে। আর আজ তন্ময়ের বিয়ে উপলক্ষে তূর্যর মামা-বাবা এই বাড়িতে এসেছেন। বাড়ির চারপাশে কতো পরিবর্তন এসেছে। তবুও কিছু একটা যেন ঠিক আগের মতই আছে। তার ইচ্ছা করছে,,, কিশোরী বয়সের মতো পুরো বাড়ি লাফিয়ে বেড়াতে। তূর্যর মা ভালোবাসা ভরা দৃষ্টিতে বাড়ি চারপাশটা দেখছিলেন। কিন্তু মুখে একটা ঘরের সামনে আসতেই থমকে দাঁড়ালেন সে। একটা মেয়ে কাঁদছে। কারো ছবি হাতে নিয়ে কি সব যেন বলছে আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। তূর্যর মা একটু এগিয়ে মেয়েটার ঘরের দরজার কাছে আসতেই শুনতে পেল,
———“জানো মাম্মাম? বড় আম্মু আমাকে আজকে খুব পিটিয়েছে। আমি কি ইচ্ছে করে প্লেটটা ভেঙেছি বলো? তিথি আপুর জন্যই তো হাত থেকে পড়ে গেল। আর বড় আম্মু কিছু না শুনেই আমাকে মারলো। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। তুমি খুব পঁচা মাম্মাম। তুমি কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেলে?বলো না কবে নিতে আসবে আমায়?”
#চলবে….
( জানি আজকের পর্বটা একটু অগোছালো আর ছোট হয়েছে। আসলে আমি একটু অসুস্থ। সময় পেলে আজকে আরেকটা পর্ব দেব ইনশাআল্লাহ।)
#চলবে…..?
(আগের পর্বটা ছোট হয়েছিল তাই আজকে সকালেই আরেকটা পর্ব দিলাম। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর গল্প সম্পর্কে গঠন মূলক মন্তব্য করবেন। Nice Next এসব দেখতে দেখতে আমি লেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। তাই প্লীজ ভালো হোক খারাপ হোক আপনারা গঠন মূলক মন্তব্য করুন। ধন্যবাদ সকলকে।)