প্রণয়স্পর্শী পর্ব ২৪+২৫

#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#চতুর্বিংশ_পর্ব

অন্ধকার ঘরে হাত বাধা অবস্থায় বিছানার এক কোনে পরে আছে মেঘলা৷
মাথা ব্যান্ডেজ করা হাত ব্যান্ডেজ করা, কোথায় আছে ও নিজেও জানে না এখন রাত নাকি দিন তাও জানে না৷ সবে মাত্র চোখ খুললো চোখ খুলেই নিজেকে এ অন্ধকার ঘরে পায়৷ চোখ খুলে চারোপাশ অন্ধকার দেখে উঠে বসে হাত দুটো বাধা পা ও হালকা ভাবে বাধা তাই বসতে ওতোটা কষ্ট হয়নি৷ কিন্তু ওকে এখানে কে আনলো? আর কোথায় বা আছে? মাথাটা চিন চিন ব্যাথা করছে, দুটো দিন ঢাকা এক বান্ধুবী ঐশির বাড়িতে ছিলো মেঘলা৷
সে-দিন আজান দিতেই নামাজ পরে শোভনদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলো এই ঐশির পরিচিত লয়ার দিয়েই শোভনকে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়েছিলো৷ আজ চট্টগ্রাম এর উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলো কিন্তু মাঝ পথে কি হলো তাই মনে করতে পারছে না মেঘলা৷
আচ্ছা শোভন কি এখানে এনেছে? কিন্তু শোভন কি করে জানবে ঐশির কথা? শোভনের জানার কথাও না৷ তাহলে এতোদিন যে ভয়টা পেয়েছে তাই হলো? সে এসে পরেছে? যদি সে হয়ে থাকে তাহলে এবার কি হবে? মেরে ফেলবে কি মেঘলাকে? নাকি শাস্তি দিবে? কঠিন শাস্তি৷
এবার নিশ্চয়ই বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠবে সে? আবার বন্ধি করে রাখবে? আবার অত্যাচার করবে৷
ভয় করছে মেঘলার সে আর ওই বন্ধিখানায় যেতে চায় না, সে আর বন্দিনী হতে চায় না৷ বাঁচতে চায় প্রান খুলে বাঁচতে চায়, সব আবার এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে নিজের উপর নিজের রাগ হচ্ছে মেঘলার কেন পালাতে গেলো?
হঠাৎ-ই দরজার আওয়াজে জরোসরো হয়ে বসে মেঘলা, বাধা হাত দুটো গুটিয়ে নেয় শুকনো ঢোক গিলে দরজার দিকে তাকায়৷ অন্ধকার ঘরে আলো পরায় আলোটা চোখে এসে লাগে তাই চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়৷
সে ব্যাক্তিটি কাছে আসছে তা বোধগম্য হলো মেঘলার তবুও চোখ খুললো না আরো খিচে বন্ধ করে বিছানার সাথে হেলান দিয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে রইলো৷
সেই ব্যক্তিটির অস্তিত্ব অনুভব নিজের কাছে করতে পারলো মেঘলা৷ পুরুষালী শরীরি তীব্র চিরো-চেনা সুগন্ধি ঘ্রাণেন্দ্রিয়তে পৌছাতেই হুট করে চোখ খুললো, চোখ খুলে সামনে থাকা অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তিটিকে দেখে ভরকে যায় মেঘলা৷
শোভন? তাহলে ও এখানে এনেছে? কেন আনলো? মেঘলা ভাবেনি আবার শোভনের মুখোমুখি হবে৷
এ ছেলে তো ভারি ধরি বাজ এখানে তুলে নিয়েছে কেন? রাগ উঠছে মেঘলার ইচ্ছে করছে এ ছেলেকে ওর জায়গায় বেধে রেখে ঠুস-ঠাস কয়েকটা গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিতে৷ ইচ্ছেটাকে আর দমিয়ে রাখতে পারলো না বাধা হাত দিয়েই ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না৷
শোভন আরো ঝুকে এসে বাকা হাসির রেখাটা কিঞ্চিত বড় করে বাম হাত দিয়ে ওর কপালে আসা চুল গুলো পিছে ঠেলে দিয়ে বলে,
— ” বাহহ বলতে হবে সবার, আমার বউ আমার মতোই৷ হাত পা বাধা তবুও আমাকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে৷ তোমাকে দেখে বিস্মিত না হয়ে পারলাম না৷ আর আর? ভেরি ব্যাড বউ, হাসবেন্ড এর সাথে কেউ এমন করে? উম্মম আই ডোন্ট লাইক ইট৷ তুমি জানো এই অপরাধে তোমাকে আমি শাস্তিও দিতে পারি? কিন্তু না এরকম ছোট খাটো অপরাধের শাস্তি আমি তোমায় দিবো না কজ আই ম্যাডলি লাভ ইউ৷ ”
বলতে বলতেই আরো নিচু হয়ে টুপ করে চুমু বসিয়ে দিলো মেঘলার গালে৷ তাতে মেঘলা আরো তেলে বেগুনে জলে উঠলো, শোভনের হঠাৎ এতোটা পরিবর্তনে মেঘলা প্রথম থেকেই অবাক হচ্ছিলো আজ আরো বেশি হচ্ছে৷
ওইদিন ভেবে ছিলো যে শোভন বুঝি ডাইরি পরে ওকে দয়া দেখাচ্ছে কিন্তু আজ মনে হচ্ছে সব ধারনা ভুল ছিলো৷ পরক্ষনে পালিয়ে যাওয়ার আগের দিন রাতের কথা মনে পরছিলো৷ ভালোবেসে ও মেঘলাকেও কষ্ট দিয়েছে এ ছেলে স্বার্থপর যে কোনো সময় নিজের স্বার্থে আঘাত লাগলে মেঘলাকে দূরে ফেলে দিতে ও দু’বার ভাববে না৷ আর এসব লোক থেকে দূরে থাকাই ভালো৷
মেঘলা ভিতর থেকে ভেঙে গুরো হয়ে গেছে পুরো শোভনের এমন ব্যবহারে নিজেকে সামলাতে কষ্ট হচ্ছে তবুও বাইরেটা শক্ত রেখেছে৷ ও আর এই স্বার্থপর লোকটির কাছে নিজের আবেগ দেখাতে চায় না৷
মেঘল অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ঝাঝালো গলায় বলে,
— ” দূরে থাকুন আমার থেকে, ভালোবাসি না আমি আপনাকে এমন আদিক্ষেতা করে কি মনে করছেন? আমাকে পেয়ে যাবেন? যদি তা ভেবে থাকেন তাহলে শুনুন ভুল ভেবেছেন৷ হুম আমি আপনার কাছে আর ফিরে যাবো না আমি আবার পালাবো যতই বেধে রাখুন না কেন৷ ”
এ মেয়ে জন্মের ঘাড় বাকা বুঝলো শোভন, এ মেয়েকে ঠিক করতে ওর অনেক কাঠ কয়লা খোয়াতে হবে৷
শোভন এর রাগ হচ্ছে পালানোর কথা শুনে, মেঘলার সাহস দেখে তাজ্জব হাত পা বাধা তবুও পালানোর কথা বলছে? ইচ্ছে করছে থাপ্পড় দিয়ে সব কটা দাঁত ফেলে দিতে তবুও নিজের রাগ সামলে রেখে ঠান্ডা শান্ত গলায় বলে,
— ” দূরে থাকবো কেন? তুমি আমার বউ ইচ্ছে করলে জড়িয়ে থাকবো সারাদিন কে কি বলবে? আর কি বললে আদিক্ষেতা? আর পালাবে? এই মেয়ে তোমার কি এসব আদিক্ষেতা লাগছে? ড্রামা করছো আমার সাথে? কি মনে করেছো আমি ভুল করেছি তাই হাত পা ধরে সরি বলবো, হাত পা ধরে ড্রামা করে আমার কাছে রাখবো? নো ওয়ে, তোমাকে আমার প্রয়োজন বলে এই না আমাকে তোমার কাছে সরি বলতে হবে, তুমি আমায় ক্ষমা না করলে নেই তোমার ইচ্ছে থাকুক বা না থাকুক তুমি আমার কাছেই থাকছো৷ তুমি আমার মানে আমারই তা তুমি চাও বা নাই চাও আমি তোমায় বেধে রাখবো৷ ”
শোভনের কথায় রাগ হলো মেঘলার এ ছেলে যা বলবে তাই হবে নাকি? না কেন হবে? কে ও?
মেঘলা রাগ দেখিয়ে বলে,
— ” ইসস আমায় আপনি বেধে রাখার কে? আপনার লোক দেখানো ভালোবাসা আমার দরকার নেই৷ আর রইলো বিয়ের কথা? আমি আপনাকে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়েছি আর তাতে আমার সাইন ও আছে আর ডিভোর্স পেপারে আমি সাইন করে দিয়েছি মানে আমার দিক থেকে আমি আপনাকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছি আপনি দিন বা নাই দিন আমি তো আপনাকে ডিভোর্স দিয়েছি তাই হবে এখন আপনি আপনার রাস্তায় আমি আমার রাস্তায় আমি আপনাকে ডিভোর্স দিয়েছি মানে আপনি আমার কেউ নন আপনি আমাকে বউ ভাবতেই পারেন এতে আমার দেখার বিষয় না কিন্তু আপনি আমার কেউ নন৷ “।
বলে ফস করে নিশ্বাস ছাড়লো মেঘলা৷ শোভন বোকার মত মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে, কি বলছে এই মেয়ে? ওর দিক থেকে ডিভোর্স হয়ে গেছে শোভন সাইন না করলে নেই? পাগল নাকি এ মেয়ে?
মেঘলার কথা শুনে শব্দ করে হেসে দিলো৷
হাসতে হাসতে বলে,
— ” আচ্ছা সত্যি কি তোমার বয়স তেইশ চলছে? বাচ্চাদের মতো কথা বলছো কেন? দুইজন সাইন না করলে ডিভোর্স হয় না আর তোমার দিক থেকে হয়ে গেছে মানে? সত্যি পাগল তুমি,আমি তো সাইন করিনি ইভেন তা কোর্ট এ ও যাইনি মানে তুমি এখনো আমার বউ বুঝতে পেরেছো? ”
বলে কিছুক্ষন চুপ থেকে মেঘলার কানের কাছে ফিস ফিসিয়ে বলে,
— ” নিজেও পাগল আমাকেও পাগল বানিয়ে দিচ্ছো তা তুমি জানো? এই যে আমাকে এতোটা পাগল বানিয়েছো তার শাস্তি তোমায় কি দিবো বলো তো? ক’দিন পর লোক আমায় পাগল বলবে তা জানো তুমি? আমার রন্দ্রে রন্দ্রে যে নতুন অনুভূতি ক্ষুদ্র করে বড় ভয়ংকর প্রেমনুভুতি তৈরি হচ্ছে৷ ক্ষনে ক্ষনে আমি ভস্ম হচ্ছি, জ্বলে শেষ হয়ে যাচ্ছি তা কি জানো তুমি প্রণয়স্পর্শী? শুধুই মস্তিষ্কে না আমার হৃদয় জুরে তুমিময় অনুভূতির বিচরন তা কি তুমি জানো প্রণয়স্পর্শী??
#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#পঞ্চবিংশ_পর্ব

— ” কোথায় এনেছেন আমায়?”
থমথমে গলায় প্রশ্ন করলো মেঘলা৷ ফোন স্ক্রল করছিলো শোভন৷ মেঘলার প্রশ্ন শুনে মোবাইল থেকে চোখ সরিয়ে বাকা হেসে শোভন বলে,
— ” পাচার করে দিতে এসেছি তোমায়, একটু পর পাচারকারিরা আসবে তাদের হাতে তোমায় তুলে দিয়ে পাওনা গন্ডা নিয়ে তারপর আমি যাবো৷ কি বলো তো ডাক্তারি পেশায় আজ কাল পোষাচ্ছে না হাত একদমই খালি তাই তোমায় বেঁচে দিয়ে কিছু ইনকাম করবো৷ ”
বলেই বড় করে হাই ছাড়লো৷ শোভনের এমন উত্তরে মেঘলা বিরক্ত হলো একটা সোজা প্রশ্নের বাকা বাকা উত্তর না দিলে হয় না৷ সাথে অবাকও হলো মেঘলা ভাবা যায় বদ রাগী ডাক্তারটা আবার সুন্দর হেসে হেসে দুষ্টামিও করতে জানে? মেঘলা তো জানতো এই ছেলে ধমক আর অপমান ছাড়া কিছুই জানে না৷ হাসলো মেঘলা তা ভেবে৷
শোভন মেঘলার ঠোঁট বাকানো হাসি দেখে ব্রু কুচকে বলে,
— ” হাসছো যে?
হাসার কি কিছু বলেছি আমি হুম? ”
মেঘলা ভেংচি কেটে বলে,
— ” আপনার কথা শুনে হাসবো? বয়েই গেছে আমার৷ তা ছাড়া আমার ঠোঁট আমার হাসি আমার ইচ্ছে যখন মন চায় তখন হাসবো তাতে আপনার কি কিছু সমস্যা?? ”
শোভন মেঘলার দিকে এক বার বিরক্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দীর্ঘ-শ্বাস ছেড়ে বলে,
— ” নো ক্যারি অন৷ ”
বলে উঠে দাঁড়ায়, এই মেয়ের সাথে কথা বলাই বেকার কিছু বললেই উলটো উত্তর দিবে উলটো কথা বলে৷ ঘার ত্যাড়া মেয়ে একটা৷

চোখে চশমা ছাড়াও কখনোই চলতে পারে না কিছুক্ষন ঠিক ঠাক দেখলেও পর থেকে সব ঘোলা লাগে৷ এখন প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে হাতটাও বাধা এই ছেলে বাধনটাও খুলছে না৷
মেঘলা এপাশ ওপাশ তাকিয়ে শক্ত কন্ঠে বলে,
— “এই ডাক্তার৷
এই বদ রাগী ডাক্তার আমার চশমা কোথায়? আর হাত এর বাধন খুলে দিচ্ছেন না কেন? খুলুন এসব, আমি চলে যাবো এখান থেকে৷ ”
পাশের ছোট্ট টেবিল এর উপর থেকে চশমাটা হাতে নিয়ে চশমার গ্লাস মুছতে মুছতে বলে,
— ” ফার্স্ট ওফ অল বদ রাগি ডাক্তার মানে কি হুম? আর আমি ভেবে ছিলাম খুলে দিবো কিন্তু এই মূহুর্ত থেকে ভাবনাটা পাল্টালাম৷ তুমি যেই পর্যন্ত তোমার পালানোর ভাবনাটা মাথা থেকে না পাল্টাবে তুমি এভাবে বাধাই থাকবে৷ যদিও বাধন খুলে দিলেও পালাতে তুমি পারবে না তবুও আমি চাই তুমি এসব ভাবনা মাথা থেকে দূর করো৷ ”
মেঘলা কিছু বললো না চুপ রইলো৷ শোভন ওর চোখে চশমাটা পড়িয়ে দিলো এখন মেঘলার শান্তি লাগছে এতোক্ষন সব ঝাপসা ছিলো৷
কিন্তু মনটা খচ খচ করছে কোথায় আছে না জানা পর্যন্ত এমনই লাগবে৷
— ” কোথায় আছি আমরা? ”
রাগী কন্ঠে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো মেঘলা
থম মেরে বসে আছে মেঘলা, ওর সব উলট পালট লাগছে এই ছেলে ওকে পাগল বানিয়ে দেওয়ার চিন্তায় মত্ত আছে হয়তো৷
এমন পাগলামো করলে কোনো দূর্বল মন ঠিক থাকতে পারে? ভিতর থেকে ভেঙে যাচ্ছে উপরটা তবুও শক্ত রেখেছে৷ এই ছেলের সামনে দূর্বল হওয়া চলবে না, পন করেছে মেঘলা ভাঙবে তবুও মচকাবে না এই ছেলের সামনে৷
চুপ করে রইলো মেঘলা আপাদত কটু কথা বলা থেকে মৌনতা শ্রেয় নয়তো এই ছেলের ঠোঁট কাটা কথা বার্তা শুনতে হবে৷
বেশ খানেক সময় পেরিয়ে গেছে মেঘলা চুপই আছে শোভন ফোন স্ক্রল করছে৷ এমন চুপ করে থাকতে একদম ভালো লাগছে না, আর সব থেকে বড় কথা হলো চুপ করে থাকার ব্যাপারটা ওর কাম্য না৷ তাই আমতা আমতা করে বলে,
— ” আপনার হসপিটালে কাজ নেই নাকি? ”
শোভন ফোনের দিকে নজর রেখেই বলে,
— ” কাজ আছে তবে ডাক্তার যদি অসুস্থ থাকে তাহলে তার ও তো চিকিৎসা প্রয়োজন তাই না? ”
বলেই ঘাড় ঘুরিয়ে মেঘলার দিকে তাকালো৷ মেঘলা শোভনের পা থেকে মাথা অব্দি এক বার দেখে ব্রু কুচকে বলে,
— ” আপনাকে দেখে তো ফিট এন্ড ফাইনই লাগছে অসুস্থ তো লাগছে না? আর কিছু যদি হয়েও থাকে আপনি এখানে কি করছেন? ”
শোভন বাকা হেসে পিছন দিয়ে মেঘলার বাহু জড়িয়ে বলে,
— ” আমার মেডিসিন তো আপনিই ম্যাডাম৷ ”
শোভনের কথায় মেঘলা ইতস্ত হয়ে যায়৷ কথা এরিয়ে গিয়ে শক্ত কন্ঠে বলে,
— ” আমায় এটা কোথায় এনেছেন বললেন না যে? ”

— ” বলবো না৷ ”
ছোট উত্তর দিয়ে ফোনে আবার কিছু করতে মত্ত হয়ে পরে শোভন৷ হঠাৎ দূরে আজান এর ধ্বনি শুনতে পেলো কিসের আজান দিচ্ছে বুঝতে পারলো না মেঘলা ঘরে যে জানালা রয়েছে সেটা বন্ধ করে উপরে পর্দা দেওয়া তাই আরো বুঝতে পারছে না৷
আজানের শব্দ পেয়ে শোভন উঠে গিয়ে জানালাটা খুলে দিলো বারান্দার দরজাটাও খুলে দিলো বিছানা থেকেই বারান্দা দেখা যাচ্ছে ছাদের মত বড় বারান্দা৷
উৎসুক হয়ে বারান্দার দিকে তাকিয়ে শোভনকে বলে,
— ” কি সুন্দর!!
আমায় নিয়ে চলুন না ওখানে, হাত টা খুলে দিন না আমি যাবো না কোথাও৷ ”
বলেই মিষ্টি একটা হাসি দিলো৷ শোভন পিছে মুরে তাকালো মেয়ের মুখের মায়াবি হাসিটাতেই নজর পরেছিলো প্রথম-দিনই সে দিন কি জানতো এই মেয়েই ওর প্রান পাখি হবে? বাতাসে উরে আসা মুখের চুল বৃষ্টির পানির ফোটা আর এই মায়াবি হাসিটার দিকে সেদিন বেহায়ার মত চোখ পরেছিলো৷ সেদিন যদি জানতো যে এই মেয়ে ওকে পাগল বানিয়ে দিবে নিজের মায়ায় তাহলে সেদিন তো নিজের পিঞ্জিরায় আবদ্ধ করেই রেখে দিতো৷
কি সুন্দর এই হাসি মুখের পাশে যেমন লেপ্টেই আছে, হাসলে যে মেয়েটাকে সুন্দর লাগে তা কি জানে মেয়েটা? ইস নিজেরই না নজর কেড়ে যায় তা ভেবে চোখ সরালো শোভন৷
মেঘলা শোভনের উত্তর না পেয়ে আবার বলে,
— ” বাধন টা খুলে দিন না?
বললাম তো আমি কোথাও যাবো না শুধু ওই বারান্দাটায় যাবো৷ প্লিজ বাধনটা খুলে দিন৷
মেঘলার বাচ্চামো দেখে ঠোঁট চেপে হাসলো শোভন, মেয়েটার প্রতিটা কাজ বাচ্চামোয় ভরা কে বলবে এই মেয়ের তেইশ বছর চলছে? নিতান্তই বাচ্চা মেয়েটা৷
এ কে ছাড়া শোভনের চলবেই না, এমন বাচ্চামো হুট হাট হাসি বোকা বোকা কথার প্রেমে যে কেউ পরতে বাধ্য৷
শোভন এসে হাত দুটো খুলে দিলো ছাড়া পেয়েই মেঘলা বারান্দার দিকে ছুটে যায়, বারান্দাটা অনেক সুন্দর ছোট খাটো একটা ছাদের মত৷
আকাশে মেঘ জমেছে একটু আগেই সন্ধ্যার আজান দিয়েছে তীব্র হিমেল হাওয়ায় সামনের গাছ গুলো নরছে বৃষ্টি হবে৷
হঠাৎই এক ফোটা দু ফোটা বৃষ্টির পানি পরতে পরতে তুমুল বৃষ্টি শুরু হলো৷ বারান্দার উপরে ছাদ নেই তাই কিছুক্ষনের মধ্যেই দু জনে ভিজে একাকার হয়ে গেছে৷
শোভন টানছে মেঘলাকে কিন্তু এ মেয়েতো যাবেই না তাই আর জোর করলো না শোভন, মেঘলা ঘুরে ঘুরে ভিজছে শরীরের জামা গুলো ভিজে শরীরের সাথে লেপ্টে আছে চোখ সরিয়ে নিলো শোভন৷
কিছুক্ষন চোখ বন্ধ রেখে বড় বিড় শ্বাস ছেড়ে মেঘলার কাছে গিয়ে বাহু চেপে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে কানের কাছে অধর যুগল ছুইয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,
— ” তোমার প্রণয়ের আগুনে আমাকে ভস্ম করে তুমি ক্ষ্যান্ত হও নি? তোমার রুপের মায়ায় মোহিত করে নাশ করে দিতে চাও? তাহলে শুনে রাখো মেয়ে তোমার মায়ায় মোহিত হবো আমি কিন্তু নাশ হবো না আমার ক্ষত মন এর আরোগ্য বানিয়ে পিঞ্জিরাবদ্ধ করে রাখবো তোমায়৷৷৷ ”

চলবে,

(রাইটার ব্লক এ আছি🙂 কিছুতেই কিছু লিখতে পারছিনা যা মাথায় আসছে খাপছাড়া হয়ে যাচ্ছে৷ আশা করি মানিয়ে নিবে)
চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here