প্রণয়স্পর্শী পর্ব ২৬+২৭

#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#ছাব্বিশতম_পর্ব

তোমাকে আলো ভেবে
চোখ চেয়ে থেকেছি আঁধারে
নীরব থেকে
ডেকেছি আমার একা নির্জনে
স্বপ্নগুলো হারিয়ে ফেলে
চেয়েছি ফিরে তোমার আলোকে

তোমাকে যখনই চেয়েছি স্বত্তার অন্তরালে সংগোপনে
তখনই জেনেছি আলো হয়ে আছো তুমি আমার আঁধারে
আর যখনই ভেবেছি বাঁধবো সীমা চারপাশে তোমাকে ঘিরে
তখনই ফেলেছি হারিয়ে তোমাকে
আপন আঁধারে

যেখানে স্বর্গ ভাসে
তোমার আমার আকাশ সেখানে
অন্য রঙে আঁকা আয়নায় মৃত জলছবি
সেই ছবিতে অন্ধ কবি আমি এক
হাতড়ে ফিরি আলোর সিড়ি

নিরব হয়ে বসে আনমনে গান শুনছে আহানা, গাড়ি খালি জায়গায় পার্ক করা অনেক বৃষ্টি তাই স্টার্ট করছে না পাশেই ড্রাইভিং সিট এ রাজ বসে আছে আহানা বুঝে পায় না রাজকে দেখলেই কি ওর গাড়িটা খারাপ হয়ে যায়?
যে মানুষটা থেকে দূরে দূরে থাকতে চায় সে মানুষটার মুখো-মুখি কেন বার বার হতে হয়? এমন একটা বর্ষনের দিনে পাশে প্রিয় মানুষটা থাকতেও মূহুর্তটা তিক্ত লাগছে আহানার৷ খালি মনে হচ্ছে বৃষ্টিটা কখন থামবে আর কখন বাড়ি ফিরবে৷ আহানা যত চায় এই রাজ নামক মানুষটা থেকে দূরে থাকতে ততই যেন আরো জড়িয়ে যায়, কিন্তু এ লোকটা আদৌ কি কখনো ওর মনের কথা বুঝতে পারবে? এক পাক্ষিক ভালোবাসায় কষ্ট আর অবহেলা ছাড়া আর কিছুই নেই, যতই চেষ্টা করে রাজকে ভুলে থাকতে কিন্তু তা আর হয় কই?
আজ রাজ কিছু কারনে রেগে আছে তাও ওকে গাড়িতে তুলেছে এই পর্যন্ত একটাও কথা বলেনি কেউ কারো সাথে৷
আহানা চায় রাজ যেন কোনো প্রশ্ন না করে, হঠাৎই নিরবতায় ফোরন কেটে আহানার ফোনটা বেজে উঠে, কেউ ম্যাসেজ করেছে৷ আহানা প্রথম ফোনটা বের করেনি আবারও বেজে উঠতে রাজ বলে,
— ” কেউ ইম্পর্ট্যান্ট ম্যাসেজ করছে হয়তো দেখে নেi৷ ”
আহানা ফোনটা বের করলো৷ রাজের হঠাৎ আহানার ফোনের দিকে চোখ যায়, ফোনটা আহানার হাতে আহানা জানালার দিকে ফেরা তাই সব কিছুই স্পষ্ট মোবাইলের দিকে কিছুক্ষন তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো পরক্ষনে এই বৃষ্টির মধ্যেই ফুল স্প্রিডে গাড়ি স্টার্ট দিলো৷ আহানা কিছুটা ভরকে যায় পরক্ষনে ভাবে ও হয়তো এমন এখানে বসে থাকতে বিরক্ত হচ্ছে তাই বৃষ্টির মধ্যেই ড্রাইভিং করছে৷ যাক এখন বাড়ি ফিরতে পারবে তা ভেবে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে ঠিক হয়ে বসে৷

বৃষ্টি তখনো তুমুল আকাশ এখনো বেশ মেঘাচ্ছন্ন৷ রাত সারে নয়টা বাজে প্রেমময় মূহুর্ত বটে এমন প্রেমময় মূহুর্তে পাশে প্রান প্রেয়সী থাকলে সময়টা আরো বেশি শোভনীয় তো লাগবেই? কে না চায় এমন বর্ষন মুখর পরিবেশে নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে পাশে?
কিন্তু এই মেয়ে তো তা বুঝে কই? সব সময় দূরে দুরেই থাকে৷ তখন বেশ সময় পরই শোভন টেনে টুনে মেঘলাকে ভিতরে নিয়ে আসে কিন্তু মেঘলা বেশ বিপাকে পরে গিয়েছিলো কি পরবে তা ভেবে পরক্ষনে শোভন একটা ক্রিম কালার শাড়ি এনে ধরিয়ে দেয়৷ প্রথমত অবাক হলেও বিনা বাক্যে তা নিয়ে পরে নেয়৷
জানালার সামনে ঠেস দিয়ে দাঁড়ায় মেঘলা মাত্রই খাবার খেয়ে এসে দাড়ালো কোথায় আছে এখনও জানতে পারলো না৷
এ ছেলের পেট থেকে কথা বের করা মেঘলার মতো মেয়ের কাম্য নয়, আহানাকে খুব মনে পরছে নিশ্চয়ই রেগে আছে খুব?
আর রেগে থাকারি তো কথা? মেয়েটা ঢাকা আসার পর থেকে কি না করেছে? একটা অচেনা অজানা মেয়ে যে নিজের বাড়িতে থাকতে পর্যন্ত দিয়েছে আহানা কে অন্তত বলে আসা উচিত ছিলো তা ভেবে অনুতপ্ত মেঘলা৷ তখন অতো কিছু মাথায় ছিলো কি? তখন তো ভেবেছিলো কখন ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসবে৷
জানালা দিয়ে বৃষ্টির ঝাপটা এসে মুখ চোখ ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে মেঘলার, শোভন সে দিকে আড়ষ্ট হয়ে তাকালো৷ ফর্সা শরিরে ক্রিম কালার শাড়িটা বেশ মানিয়েছে৷ শাড়িতে মেয়েটাকে বাচ্চা দেখায় না বউ বউ লাগে ” শোভনের বউ” এ মেয়েকে ভুলেও বাইরে বের হলে শাড়ি পরতে দেওয়া যাবে না একান্ত ওর সামনেই শাড়ি পড়াবে নয়তো কে কখন দেখে শোভনের মতোই পাগলাটে প্রেমিক হয়ে যায়? আর শোভন চায় না ওর বউ এর রুপ ও ছাড়া কেউ দেখুক৷ আর কেনই বা দেখবে? যে মেঘলার দিকে তাকাবে দরকার পরলে তার চোখ উপরে ফেলবে, মেঘলা একান্তই শোভনের আর কারো নয়৷
জানালার ফাঁকে হাত ঢুকিয়ে বৃষ্টির পানি ছুয়ে দিচ্ছে আর মিট মিট করে হাসছে, মেয়েটার হাসি সর্বদাই নজর কারা যে কেউ এ হাসির প্রেমে পরে যাবে নিশ্চিত ওই অধর যুগল দিয়ে হাসলে যেন পুরো চোখ মুখেও সে হাসি লেপ্টে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়৷ হঠাৎ ই পিছন থেকে কয়েকটা চুল সামনে এসে পরলো৷ এ চুলের প্রতি প্রথম থেকেই শোভনের হিংসে হয় এই বেহায়া চুলটা কিভাবে প্রেয়সীর অধর যুগল ছুয়ে দেয়৷ কিভাবে আটকে থাকে সারা মুখে ঘোর অন্যায় করে এ অন্যায়ের শাস্তি কঠিন থেকেও কঠিন হওয়া উচিৎ৷
পানির ছিটে এসে অধরের পাশে পরতেই চুল গুলো বাতাসে ধোল খাওয়া বন্ধ করে লেপ্টে থাকে একেবারে অধরটিতে৷
এবার উঠে দাড়ালো শোভন একেবারে মেঘলার কাছে এসে জানালার বাইরে থেকে হাতটা ভিতরে নিয়ে এসে মিহি কন্ঠে বলে,
— ” এতক্ষন ভিজেও সাধ মিটেনি তোমার?
এবার ঠান্ডা লেগে যাবে তো?? ”
কথাটা বললেও শোভনের দৃষ্টি মেঘলার অধরেই নিবদ্ধ চোখে এক রাশ মাদকতা জরজরিত৷ এমন মিহি কন্ঠে শিউরে উঠে মেঘলা বুকটা আবার ধক করে উঠলো দূর্বল মন আবার ছুটে যেতে চাইছে৷
এ ছেলে কি ওকে ঠিক থাকতে দিবেই না ভেবেছে? কেন এমন করছে শোভন? ও কি বুঝে না এতে ওর প্রেমিক মন জেগে উঠে বারংবার? আর বুঝবেই বা কি? শোভন নামক বদ রাগী ডাক্তারটা তো চায়ই মেঘলা দূর্বল হয়ে যাক ওর প্রেমে সারা দিক৷
মেঘলা শোভনের দিকে চোখা-চোখি হতেই দৃষ্টি সরিয়ে নেয়৷
শোভন মেঘলাকে বাহু চেপে নিজের অনেক কাছে নিয়ে আসে তাতে তাদের মাঝের দুরত্বটা ঘুচোলো৷ ওদের মাঝে এক ইঞ্চি ফাকাও নেই এক জন এর নিশ্বাস এর শব্দ আরেক জন গুনতে পারছে এমন৷
মেঘলার শরীর শীতল হয়ে যায় হাত পা অবস হয়ে আসছে আজ বোধহয় রক্ষে নেই আজ বোধহয় মরেই যাবে৷ এ ছেলে কি মেঘলাকে মেরে ফেলার ভাবনা এটেছে বাকি? এমন করে নিজেকে আর কতক্ষন সামলাতে পারবে তা মেঘলার অজানা৷ চোখ থেকে এক ফোটা পানি গরিয়ে পরলো মমের ন্যায় যেমন গলে যাচ্ছে তবুও নিজেকে ঠিক এবং শক্ত রাখার চেষ্টায় লেগে আছে কিন্তু আগুন সামনে থাকলে কি মম আস্ত থাকতে পারে? কখনোই না৷
শোভন মেঘলার বৃষ্টি পানির ছিটে লাগা অধর যুগল উপর থেকে অবাধ্য বেহায়া চুল গুলো সরিয়ে কপালে নিজের উষ্ট ছুইয়ে জড়িয়ে ধরে মিনমিনিয়ে বলে,

— ” কখনো অচেনা পথিক হয়ে
কখনো ছন্নহাড়া প্রেমিক পুরুষ হয়ে
কখনো অচীন মনের আগন্তুক হয়ে
বলতে চাই তোমায় ভালোবাসি
তবে তুমি যদি মায়া ময়ী হও
আমিও কাব্য রটিয়ে
ক্ষুদ্র কবি হয়ে
প্রেমের সাগরে বিলিন করবো তোমায়
হবে কি আমার প্রণয় সাগরের প্রণয়স্পর্শী ?
তবে শতোবার বলবো আমি
ওহে প্রাননাশিনী
ভালোবাসি তোমায়❤️ ❞
#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#সাতাশতম_পর্ব

শোভনের বুকে লেপ্টে ঘুমিয়ে আছে মেঘলা, শোভন জোর করেই নিজের বুকে নিয়ে ঘুমিয়েছে৷ মেঘলা কয়েক-বার সরে গেলেও জোর করে নিয়ে শুয়েছে, রাত পৌনে দুই-টা বাজে শোভনের চোখে ঘুম নেই এক ফোটাও মেঘলাকে বুকে নেওয়ার পর ভেবেছিলো আজ ঘুম হবে জম্পেশ প্রেয়সী যে সাথে আছে আজ৷ কিন্তু না চাঁদ যদি নিজের বক্ষঃস্থল এ থাকে তাহলে কি কারো ঘুম হয়? এ চাঁদ দেখার জন্যই তো ব্যাস্ত হয়ে পরে সেই বেহায়া আঁখি যুগোল৷ প্রেয়সীর শরীরি তীব্র মেয়েলি ঘ্রান যে রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে শরীর শীতল করে দিচ্ছে৷ আজ কেন আগামী দু থেকে তিন দিন যে শোভনের ঠিক মত ঘুমই হবে না এক রাতেই অভ্যাস হয়ে গেছে এখন যে প্রেয়সীকে শোভনের বক্ষঃস্থল এই চাই তার ব্যাবস্থাই করতে হবে৷
কি সুন্দর বুকের মাঝে লেপ্টে ঘুমে বিভর হয়ে আছে, অথচ আরেক-জন এর রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে৷ তখন কি জেদ করছিলো শোভনের বুকে শুবে না কিন্তু এখন কি সুন্দর ঘুমাচ্ছে এখন শোভনের ইচ্ছে হচ্ছে ওকে জাগিয়ে ওর পাশেই বসিয়ে রাখতে কিন্তু তা করবে না শোভন৷ মেঘলা যে জেগে গেলেই শোভন এর থেকে দূরে যেতে চাইবে আর শোভন তা কি করে হতে দিবে?
শাড়ির আচল অগোছালো হয়ে আছে পাখার মৃদু বাতাসে চুল হাল্কা নরছে দুজন এর গায়ের উপরি পাতলা একটা কম্বল৷
আলতো ভাবে কপালে ঠোঁট ছোয়ালো শোভন ঘুমের মাঝেও মেয়েটা কেঁপে উঠলো আচ্ছা মেয়েটা কি শোভনের ছোয়া অনুভব করতে পারে?
মেঘলাকে নরে উঠতে দেখে হাসলো শোভন অত:পর দুষ্টুমি করে আবার কপালে সেই স্থানেই ঠোঁট ছোয়ালো তাতে মেঘলা আরেকটু কেঁপে উঠে বুকের মাঝে আরেকটু লেপ্টে বুকে নাক ঘসে আবার ঘুমে বিভর হয়ে পরলো৷
ইসস এখন একে দেখে কে বলবে এতক্ষন বুকে আসতে চায় নি? কি সুন্দর নিজ থেকেই ঝাপটে ধরেছে৷ মেঘলা মুখে যতই বলুক শোভনকে আর ভালোবাসে না কিন্তু শোভন তো জানে মেঘলা এখনো শোভনকে কতটা ভালো বাসে? হঠাৎই মেঘলা কেমন শক্ত হয়ে গেলো সবটাই শোভনের জন্য তা বুঝে এখন অনুতপ্ত শোভন৷ মেঘলা ভিতর থেকে ভেঙে গেলেও উপর থেকে শক্তি থাকবে এ মেয়ে ভাঙবে তবুও মচকাবে না এটা অন্তত আজকের দিনেই বুঝে গেছে শোভন৷
কিন্তু মেঘলা এমন থাকলে যে শোভন নিজের রাগকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না পরে জেদ করে জোর দেখিয়ে কিছু একটা করে নিজের কাছে রাখবে তখন আবার মেঘলার কাছে শোভন খারাপ হয়ে যাবে৷
এক দৃষ্টিতে শোভন মেঘলার দিকে তাকিয়ে থেকে গালে ঠোঁট ছোয়ায় তারপর ঝুকে উষ্ট জোরাতে উষ্ট ছোয়াতে গিয়েও থেমে যায়৷ এটা এখন করা উচিৎ হবে না শোভন মেঘলার স্বামী হলেও মেঘলা এখনো অভিমান করে আছে মেঘলার অভিমান ভাঙিয়ে তারপর না হয় নিজের মত ভালোবাসবে? তা ভেবে মুচকি হেসে মেঘলাকে জড়িয়ে নিজেও চোখ বন্ধ করে৷

রোদের কিরণ চোখে পরতেই চোখ খুললো শোভন, রাতে একটুও ঘুম হয়নি সকালে আজান পরতেই চোখটা লেগে এসেছিলো আর এখনি ঘুমটা ভেঙে গেলো৷ ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে সবে সাতটা দশ বাজে মেঘলা ওপাশ ফিরে শুয়ে আছে, শরীরের শাড়িটা অগোছালো হয়ে আছে তাই পিঠ আর কোমর দৃশ্যমান সেখান থেকে চোখ সরিয়ে কম্বলটা ঠিক করে দিয়ে ওয়াশরুমের দিকে গেলো৷
মেঘলাকে নিয়ে ট্রেনে করেই চট্টগ্রামই এসেছিলো শোভন এটা ওর বন্ধুর বাড়ি সে বন্ধুরা সকলেই কানাডা থাকে কালই ওর বন্ধু এসেছে কিন্তু মেঘলার সাথে দেখা হয় নি এখনও আজই ফিরতে হবে হসপিটালে অনেক কাজ রয়েছে সব কিছু রনিকে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছিলো৷
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে এখনো মেঘলা ঘুমিয়ে আছে৷ সারা-রাত অন্য জনকে ঘুমোতে না দিয়ে নিজে সকাল হয়ে যাওয়ার পর এখনো ঘুমাচ্ছে তা কি করে হতে দেয় শোভন?
এ মেয়ে সারাদিন ওক্র যা জ্বালিয়েছে রাতেও ঘুমোতে পারেনি শোভন এখন মেঘলার সাথে দুষ্টুমি করার তীব্র ইচ্ছে জাগছে শোভনের আর নিজের এখন এর ইচ্ছাটা কিছুতেই দমিয়ে রাখতে পারলো না৷
পাশের টেবিলে গ্লাসে থাকা পানি পুরোটা মেঘলার মুখে আর শরীরে ছিটিয়ে দেয় তাতে মেঘলা ধরফরিয়ে উঠে বসে৷
চোখ এর কচলে আশেপাশে এক বার তাকিয়ে শোভনকে বলে,
— ” ডাক্তার সাহেব বাড়ির ছাদ ফুটো হয়ে গেছে৷ ”
মেঘলার কথায় শোভন শব্দ করে হেসে ওর সামনে থেকে উঠে যায়৷ এ মেয়ে যে বাচ্চা ক্ষনে ক্ষনে প্রমান দেয়, ছাদ কি ফুটো হয় নাকি? তখনি মেঘলার চোখ পরে শোভনের হাতে শোভনের হাত এখনো ভিজা টপ-টপ করে পানি পরছে৷ তারমানে ছাদ ফুটো নয় এই বদ রাগী ডাক্তারটা ওর ঘুম এর বারোটা বাজিয়েছে৷ শোভনের হাত ভেজা তা দেখে বিছানা থেকে নেমে মেঘলা শোভনের কাছে তেরে গিয়ে রেগে দাঁত কটমট করে বলে,
— ” আপনি আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছেন? আপনি জানেন আপনি আস্ত একটা বেত্তমিজ? ”
বলে শাড়ির আচল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে আবার রাগী রাগী কন্ঠে চেচিয়ে বলে,
— ” দিলেন তো সব ভিজিয়ে? এখন আমি কি পরবো? শুধু শুধু আপনাকে আমি অসভ্য ডাক্তার বলি? ”
শোভন বাকা হেসে বলে,
— ” আমি তোমাকে ভিজিয়ে দিয়েছি শুধু মাত্র, অসভ্যতামো করলাম কোথায়? উমম তুমি যদি চাও আমি অসভ্যতামো করতে পারি৷ চাও কি? হুম? কিছু করবো নাকি সুইটহার্ট ? ”
মেঘলার শোভনের কথা শুনে আরো রাগ উঠে যায়, এ ছেলের ঠোঁট কাটা কথা বার্তা দিন দিন কমার বদলে বেড়েই যাচ্ছে মেঘলার ইচ্ছে তো করছে এখন একে নদীতে নিয়ে ডুবিয়ে রাখতে কিন্তু আফসোস এ ইচ্ছে কখনো পূরন হবেই না হয়তো দেখা যাবে সেখানে গিয়ে ওকেই ডুবাবে৷ ধরিবাজ ছেলে একটা, এক তো কোথায় এনে রেখেছে আবার এখন কি পরবে?
এ ভিজে শরীর নিয়ে কতক্ষন থাকা যায়?
শোভনের দিকে কটমটে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,
— ” ইচ্ছে করছে আপনাকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিকে নর্দমায় ফেলে দেই৷ ”
শোভন হেসে বলে,
— ” ফার্স্ট ওফ অল ছাদ থেকে পরলে নর্দমায় পরবো না, বাড়ির পিছনে একটা পুকুর আছে সেখানে পরবো৷ আর একা পরবো না তোমাকে নিয়েই পরবো তুমি আমার এক মাত্র বউ বলে কথা সব কিছুতেই তোমাকে আমার চাই বউউ৷ ”
শোভনের দিকে আবার তেরে এসে বিরক্ত কন্ঠে বলে,
— ” আপনি কি জানেন আপনি দিন দিন নির্লজ্জ থেকেও বড় নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছেন? আপনার ওই কাটা ঠোঁট দিয়ে আমার সাথে কথা বলবেন না বলে দিলাম অসভ্য নির্লজ্জ পুরুষ একটা৷।
আর আমি কি পরবো? ভিজিয়ে দিলেন তো সব এভাবে ভিজে কি থাকা যায়? ”
শোভন মেঘলার পা থেকে মাথা অবদি একবার দেখে ওর হাত চেপে নিজের কাছে ঘুরিয়ে আনে ওর বুকে মেঘলার পিঠ ঠেকিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে দুষ্টুমি ভরা কন্ঠে বলে,
— ” কি পরবে তার চিন্তা করতে হবে না তোমার, আর কি জানি বললে? ও হ্যাঁ অসভ্য নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছি, তাই না? আগেই বলেছি মিস বউ আমি কিন্তু অসভ্যতামো আর নির্লজ্জ পানা দেখাইনি তবে এবার লাইভ দেখাবো তোমার বারনও শুনবো না৷ ”
বলেই পিছন থেকে ঘাড়ে আলতো ভাবে উষ্ট ছুইয়ে জোরে বাইট করে মেঘলা চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলে৷

চলবে,
চলবে,

[ মিলিয়ে দিবো কি শোভন মেঘলাকে নাকি? শাস্তি দিবো কিছু দিন শোভনকে? মতামত জানাবেন অবশ্যই৷ ভালোবাসা রইলো৷ ❤️❤️]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here