প্রণয়স্পর্শী পর্ব ৬+৭

#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#ষষ্ঠ_পর্ব

গধুলির তখন শেষ প্রহর চলছে আকাশে আলোর রেশ একেবারে নিভে নিভে এসেছে আরেকটু পর আকাশ পানে নেমে আসবে ঘন আঁধার মাখা রাত৷
কুম্ভকর্নের মত বেপরোয়া ভাব নিয়ে পকেটে হাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে শোভন৷ নিচেই কোমর চেপে বসে আছে মেঘলা, তখন পরে যাওয়ার সময় শোভনই ধরেছিলো কিন্তু যখন দেখলো মেঘলা ছিটকে নিচে ফেলে দিয়েছিলো৷
ছিটকে ফেলায় অনেকটা ব্যাথা পেয়েছে মেঘলা৷ মেঘলাকে এমন নিচে পরে থাকতে দেখে আহানা এসে বিচলিত হয়ে বলে,
— ” আরে কি হলো তোর পরলি কি করে? ”
বলে বাহু চেপে উঠিয়ে দোলনায় নিয়ে বসায়৷ মেঘলা শোভনের দিকে কটমটে দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আহানাকে বলে,
— ” এই যে তোমার কুম্ভকর্নের মতো ভাইটার জন্য, চোখ পকেটে নিয়ে ঘুরে আশে পাশে তাকায় ও না৷ ”
রাগ হলো শোভনের মেঘলার কথায় এ মেয়েটা সত্যি একটা ঝামেলা,উটকো ঝামেলা৷ যেখানে যায় ঝামেলা বাধায়, নিজে দেখে হাটেনি আবার ওর উপর দোষ চাপাচ্ছে কত্ত বড় ষ্টুপিড৷
শোভন রেগে তেরে এসে মেঘলার সামনে দাঁড়িয়ে বলে,
— ” ম্যানার্সলেস মেয়ে এতো সাহস পাও কি করে আমার ঘাড়ে দোষ চাপাবার? তখন তোমার চোখ কোথায় ছিল? নাকি ছেলে দেখলেই ঘেষা-ঘেষি করতে ইচ্ছে করে?”

শোভনের এমন কথা শুনে এবার আহানার কিঞ্চিত খারাপ লাগলো৷ শোভনের রাগ সম্পর্কে ওর ধারনা আছে কিন্তু এইটুকু ব্যাপারে মেঘলার সাথে এমন করে কেন কথা বলবে? এখানে কারোই দোষ নেই, দুজনেরই বেখেয়াল ছিলো৷ এতোদিন মেঘলার সাথে থেকে এটা অন্তত বুঝেছে মেয়েটা খারাপ নয় বেশ নম্র ভদ্র৷
মেঘলা কিছু বলবে এর আগেই আহানা মেঘলাকে থামিয়ে৷
শোভনকে উদ্দেশ্য করে বলে,
— ” আহ ভাই!!! তুই এমন কথা বলছিস কেন? ও মোটেও এমন নয় এমন করিস না মেয়েটার সঙ্গে৷ ও দেখতে পায়নি হয়তো৷ ”
তারপর একটু থেমে মেঘলাকে বলে,
— ” ব্যাথা করছে তোর? ”
মেঘলা তাচ্ছিল্য কন্ঠে বলে,
— ” এইটুকু আমার জন্য কিছু না আপু৷ ”

আহানা তাও মেঘলার কথায় পাত্তা না দিয়ে চিন্তিত কন্ঠে বলে,
— ” কোমরেও তো ব্যাথা পেয়েছিস আর হাত অনেকটা ছিলেও গেছে৷ ভেবেছিলাম ছাদে বসে আড্ডা দিবো তাই ওকে আনলাম, ওর সাথে তো তোর কথাই হয় নি৷ এমনি সময়ও ব্যাস্ত থাকে পাওয়াই যায় না কিন্তু আজ আসলো কি হয়ে গেলো বলতো, আর তুই ওর কথায় কিছু মনে করিস না ও এমনি৷ ৷ ”

মেঘলা ইতস্ত হয়ে বলে,
— ” আপু আমার কিছু হয়নি তুমি বিচলিত হইয়ো না এইটুকু কিছুই না আমি বরং নিচে চলে যাচ্ছি তোমরা আড্ডা দাও৷ ”
আহানা কিঞ্চিত কন্ঠ উঁচিয়ে বলে,
— ” মোটেও না তুইও থাকবি তুই বস আমি ফার্স্ট এইড বক্সটা নিয়ে আসি৷ ”
বলেই আহানা নিচের দিকে পা বাড়ালো৷
শোভন বিরক্ত নিয়ে অন্য সাইডে গিয়ে দাড়ালো মেঘলার সামনে দাড়ালেই ওর রাগ হয়৷ এই মেয়েটা যেমন আঠার মত চিপকেই আছে সরছেই না ক-দিন পর থেকে আবার সারাক্ষন ওর সাথেই থাকবে ভাবতেই রাগে শরীর রি রি করে উঠছে৷ মেঘলাকে দেখলেই শোভনের সেদিন রাতের কথা মনে পরে রাগ হয়৷ ও বিয়ে নামক সম্পর্কটা অনেক সম্মান করে আর ও কখনই এমনটা চায়নি আর এমন মেয়েকে তো চায়ই নি৷ আর ওর মায়ের কথা ছাড়া কখনো কিছু করেনি আর করবেও না তাই ওইদিন যা হয়েছে ভুলে যেতে চায় কিন্তু পারছে কই? স্টুপিড মেয়েটা তো ওর সামনেই থাকে৷ সেই ট্রেনে আসার দিন থেকে চিপকেই আছে যেমন৷

স্নিগ্ধ বাতাস বইছে ঢেউখেলানো চুলগুলো উরে বার বার মুখের সামনে চলে আসছে মেঘলার৷
শোভন এর হঠাৎ মেঘলার দিকে তাকায়, মেয়েটার চেহারায় বাচ্চা বাচ্চা একটা ভাব আছে আর এই বাচ্চা বাচ্চা চেহারা দেখেই মানুষ ভালো ভাবে মেয়েটাকে কিন্তু ও তো জানে মেয়েটা আস্ত একটা ষ্টুপিড৷ আপদ একটা যেখানে যায় ঝামেলা নিয়ে যায়৷ শোভন আপন মনে ভাবলো৷
সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে বির বির করে বলে,
— ” স্টুপিড মেয়ে কোথাকার৷৷৷ ”
রাউন্ড ব্যান্ডটা ঠিক মতো পড়ে চশমাটা একটু ঠেলে দেয় তখনি শোভনের সাথে চোখা চোখি হয়৷
শোভন এক রাশ বিরক্ত নিয়ে চোখ সরায়, এই মেয়েকে একটুও সহ্য হয় না ওর৷
ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত সামনে থাকা ব্যাক্তিটি ওর স্বামী অথচ কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না, ওদের দেখলে কেউ বলবেই না ওরা স্বামী-স্ত্রী আহানা ও জানে না৷ আড়ষ্ট হয়ে শোভনের দিকে তাকালো মেঘলা,ছাদের লালচে-নীলচে আলো ওর মুখে এসে পরছে৷ মুখে কিছুটা খোচা খোচা দাড়ি উঠেছে মেঘলা একটা ব্যাপার লক্ষ করলো ক্লিন স্যাভ এ ওতোটা ভালো লাগে না শোভনকে এখনি বেশ ভালো লাগছে আগে থেকে৷
শোভন উজ্জ্বল শ্যামলা হলেও চেহারাকৃতি সুন্দর বেশ৷ শুধু গায়ের চামড়া সাদা হলেই মানুষ সুন্দর হয়ে যায় না শ্যামবর্নই ছেলেদের বেশ মানায়৷ কালো পরেছে আজ শোভন৷ কালো টি শার্ট হাতেও কালো কালার ঘড়ি ঘড়ির উপর পেচানো তারের মতো একটা হ্যান্ড ব্যান প্যান্টটাও কালো৷ মানায় লোকটাকে কালোতে অনেক৷
হঠাৎ-ই নিজের কান্ডে অবাক না হয়ে পারলো না মেঘলাও এমন খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে শোভনকে? হাসলো মেঘলা৷ তাচ্ছিল্য হাসি৷

— ” এই মেয়ে হাসছো কেন এভাবে?”
হঠাৎ চেনা পুরুষালী কন্ঠে চমকে উঠে মেঘলা সামনে তাকিয়ে দেখে শোভন পকেটে হাত গুজে নিচের ঠোঁট কামরে এক ব্রু কুচকে দাঁড়িয়ে আছে৷
ফ্যালফ্যাল চোখে তাকালো মেঘলা শোভনের দিকে পরক্ষনে চোখ সরিয়ে নিয়ে বললো,
— ” আমার ঠোঁট, আমার ইচ্ছে৷ হাসবো তো আপনার কি??”
শোভন রেগে যায় মেয়েটা কি সোজা ভাবে কিছু বলতে পারে না? কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায় তারপর আগের যায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,
— ” ইউ যাস্ট ইম্পসিবল৷ ”
মেঘলা কিছু বললো না আবারও হাসলো৷৷
আহানা এসে মেঘলার ছিলে যাওয়া হাতে স্যাভলন লাগিয়ে মলম লাগিয়ে দেয় শোভন ততক্ষনে ছাদের কোনেই ছিলো৷
মেঘলার মাঝে মাঝে ডাউট হয়, আসলেই এই মানুষটা ডক্টর তো?
ছাদের মাঝখানে বসে আড্ডা দিচ্ছে শোভন, মেঘলা আর আহানা,মেঘলা চুপচাপ শুনছেই শোভন আর আহানাই কথা বলছে৷ মেঘলা কখনো শোভনের দিকে তাকাচ্ছে তো কখনো আহানার দিকে৷ আজ শোভন হসপিটালে যায়নি তাই আহানার সাথে সময় কাটাতে চলে এসেছে৷ মেঘলার ওদের দেখে বেশ ভালো লাগছে ওদের দেখে কেউ বলবেই না যে আপন ভাই বোন নয়, শোভনের সাথে যতবার চোখা-চোখি হয়েছে ততবারই শোভন বিরক্ত হয়ে চোখ সরিয়ে নিয়েছে৷
মেঘলা ভেবেছিলো শোভন হয়তো আহানার সাথেও গম্ভীরমুখে কথা বলে কিন্তু না বেশ হাসিখুশি ভাবে কথা বলে৷
কিছু একটা কথা নিয়ে শোভন আহানা হাসছে মেঘলার তখন শোভনের দিকে চোখ পরে৷ কি সুন্দর হাসছে লোকটা কে বলবে লোকটা রাগি?
ড্যাবড্যাব করে শোভনের দিকে তাকিয়ে চশমাটা তর্জনী দিয়ে ঠেলে মৃদু কন্ঠে বলে,
— ” ডাক্তার সাহেব আপনার মতো আপনার হাসিটাও কি সুন্দর৷ ”
#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#সপ্তম_পর্ব

— ” ডাক্তার সাহেব আপনার মতো আপনার হাসিটা কি সুন্দর৷ ”
কর্ণকুহরে মেঘলার এহেন কথা যেতেই আহানা আর শোভন দু-জনেই বিস্ময় চোখে তাকায় মেঘলার দিকে৷ শোভন এর বেশ রাগ হয় মেয়েটা সত্যি ফালতু, নয়তো কোনো ছেলেকে ভালো কোনো মেয়ে এমন কথা বলে?
নিজের কথা শুনে নিজেই নিজের মুখ চেপে ধরে মেঘলা৷ ও সত্যি দিন দিন ঠোঁট কাটা হয়ে যাচ্ছে ভালো মন্দ কোনো কথাই নিজের মাঝে চেপে রাখতে পারে না৷ এমন কারনে আগে অনেক, চাচির কাছে মার খেতে হয়েছে মেঘলার৷ এখন না জানি শোভন কি করে৷
শোভন কিছু বলতে যাবে তখনি আহানা হো হো শব্দ করে হেসে উঠে৷ আহানা জানে মেয়েটা নিজের কথা কখনো চেপে রাখতে পারে না৷ এই তিনদিনে মেঘলা এমন অনেক কথাই বলেছে আহানাকে৷ এখন শোভনকে বললো না জানি এই ছেলে কি করে দেয়৷ তা ভেবে চুপসে বসে আহানা৷
মেঘলা আহানার দিকে একবার অসহায় ভাবে তাকিয়ে শোভনের দিকে মায়া মায়া চাওনি দিয়ে তাকায় শোভন রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে মেঘলা শুকনো ঢোক গিলে বলে,
— ” আপনি আমায় মারবেন ডাক্তার সাহেব?
কিভাবে মারবেন? ছাদ থেকে ধাক্কা দিবেন না প্লিজ আমি আর বলবো না এমন কথা৷ ”
বলেই ফ্যাচ ফ্যাচ করে কেঁদে দেয়৷
অবাক হয় শোভন ভারি অদ্ভুত মেয়ে তো নিজেই এমন ননসেন্স কথা বার্তা বললো আবার নিজেই কিছু মন বানানো কথা বলে নিজেই কেঁদে দিলো? এই মেয়ে এমন কেন? বিরক্ত লাগে শোভনের৷ বড্ড বিরক্ত৷
কিছু বললো না শোভন আহানা মেঘলার হাত বুলিয়ে বলে,
— ” আরে কাঁদছিস কেন তুই? ও কিছু করবেনা৷ ”
শান্ত হলো মেঘলা, চোখ মুছে নিচের দিকে তাকিয়ে বলে,
— ” সরি৷ ”
শোভন এখন এখানে বসলে আরো রাগ হবে তাই উঠে চলে যায় যেতে যেতে আহানাকে বলে,
— ” আহান ওকে বলে দিস কথায় কথায় এভাবে কাঁদলে আমার সামনেও যেতে না৷”
মেঘলা স্বস্থি পায় ভেবেছিলো আজ শোভন মারবেই যাক এই যাত্রায় বেঁচে গেলো মিথ্যে কান্না দেখিয়ে৷ এরপর থেকে নিজের এই কাটা ঠোঁটকে সামলাতে হবে নয়তো সত্যি শোভনের হাতে থাপ্পর খেতে হবে৷

পাখির কিচির মিচির আর গাড়ির তীব্র হর্নে ঘুম ভাঙলো মেঘলার৷ রাতে ছাদে থেকে এসে ডিনার করেই শুয়ে পরেছিলো, কোমড় ব্যাথায় ঘুমোতে পারেনি দু-দন্ড আজানের পর চোখ লেগে আসে আর উঠতে দেরি হয়ে যায়৷
ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে সাড়ে দশটা বাজে এতোক্ষনে নিশ্চয়ই আহানা বেড়িয়ে গেছে ইসস কত দেরি করে ফেললো৷ উঠে ফ্রেশ হয়ে ড্রইংরুমে আসে খাবার টেবিলে চোখ পরতেই দেখে খাবার রেখে ঢাকা দিয়ে গেছে আহানা৷ মৃদু হাসে মেঘলা, আহানা যা করছে ওর জন্য ওর আপন কেউ হলেও হয়তো এতো করতো না৷ কটা দিন বেশ আমেজেই কাটাচ্ছে মুক্ত ভাবে, স্বাধীন হয়ে৷
সোনালী রোদ্দুর এর ছড়াছড়ি আকাশে মেঘের ছিটে ফোটাও নেই পুরোপুরি পরিষ্কার৷ রোদে সব খা খা করছে৷ নাস্তা করে ব্যাগে কিছু টাকা ছিলো তা নিয়ে নামলো মেঘলা ব্যাথাটা ওতো নেই খাবারের পাশে আহানা প্যারাসিটামল রেখে গিয়েছিল৷
এই চারদিনে আজ বাড়ি থেকে বের হলো মেঘলা৷ দোকান থেকে সিম কিনে ছোট ফোনটা ওপেন করে পুরোনো সিমটা রাস্তায় ফেলে দিলো৷ পুরোনো সিম ওপেন করলে কেলেংকারী হয়ে যাবে৷ ও পালিয়েছে শুনে সে হয়তো এতোদিনে দেশে এসে তন্নতন্ন করে খোজা শুরু ও করে দিয়েছে৷
না চায় না ও আগের দিন গুলোতে ফিরে যেতে, মুক্ত ভাবে বাঁচতে চায়৷
বাড়িতে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় মেঘলা৷ কিছুই ভাবতে পারছে না ভাবতে গেলেই হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে কতদিন আর এভাবে পালিয়ে থাকবে? আর এমন পালিয়ে কি থাকা যায়? সারাটা জীবন বুঝি এমন আতংকে আতংকেই কাটাতে হবে সুখের দেখা মিলবেই না৷
হাজার ভাবনায় মগ্ন থেকেও রান্না ঘরে পা বাড়ায় মেঘলা, এসেছে পর্যন্ত আহানাই সব কিছু করেছে কিন্তু এটা একদম মেঘলার ঠিক লাগছে না৷ আহানা ওকে কোনো কাজ করতেই দেয় না আহানা নেই তাই ভাবলো আজকের রান্নাটা ও-ই করবে৷
ইচ্ছে না করলেও শরীর শক্ত রেখে রান্না করলো মেঘলা৷ রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে জামা-কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ঝর্না ছেরে এর নিচে বসে পরে৷
আজ ওর একটুও ভালো লাগছে না কাউকে প্রয়োজন৷ খুব বেশি প্রয়োজন যাকে ঝাপটে ধরে সব কষ্টগুলো বলতে পারবে, কিন্তু কেউ হয়তো নেই তেমন৷ হঠাৎ -ই শোভনের কথা মনে পরলো মেঘলার৷ আচ্ছা যদি শোভনকে জড়িয়ে ধরতে পারতো? শোভন কি মানবে তা? শোভন তো ওকে দেখতেই পারে না৷ কি অদ্ভুত বিয়ে হলো এমন একজন এর সাথে যে ওকে পছন্দই করে না আর মেঘলা-ই বা কি? এতো কেন ভাবছে শোভনকে নিয়ে? এতো কেন ভাবছে এই বিয়েটা নিয়ে? এ বিয়েটা তো শুধু এক্সিডেন্টলি হয়েছে শোভন ভুলে গেছে ও পারছে না কেন ? কখনো শোভন ওকে দাম দিবেই না৷ তাচ্ছিল্য হাসলো মেঘলা৷ নিজের আর নিজের ভাবনার উপর তাচ্ছিল্য হাসলো৷৷৷
প্রায় অনেকক্ষন ঝর্নার নিচে বসে থেকে মাথা ব্যাথা করছে মেঘলার তাই উঠে কৃত্রিম ঝর্নাটা বন্ধ করে কোনো মতো জামাটা পালটে নেয় দরজা খুলে বাইরে পা রাখবে তখনি সব ঝাপসা হয়ে আসে৷ মাথা ঘুরে ওখানে পরে রয়৷

প্রায় অনেকক্ষন ডোরবেল বাজাচ্ছে আহানা কিন্তু খোলার নামই নেই, এবার ওর অনেক চিন্তা হচ্ছে মেয়েটাকে একা রেখে গেছে কিছু হলো না তো আবার? কিন্তু এতোদিন ও তো একা রেখে গিয়েছিলো?
আজ তো শরীর ও ভালো ছিল,না খুব বেশি চিন্তা হচ্ছে এবার আহানার৷ তাই ব্যাগ থেকে খুজে ডুবলিকেট চাবি বের করে লক খুলে ভিতরে প্রবেশ করে৷
ভিতরে এসে ড্রইং রুমে মেঘলাকে পায় না, আর সময় তো এখানে বসেই টিভি দেখে কোথায় গেলো আবার?
মেঘলার রুমে এসে দেখে ওয়াশরুমের দরজার সামন পরে আছে মেঘলা৷ কপালও অনেকটা কেটে গেছে তাই ফোন নিয়ে দেরি না করে শোভনকে ফোন করে৷
শোভন ফোন তুলতে আহানা বিচলিত হয়ে বলে,
— ” ভাই তুই কোথায়? আমি বাইরে গিয়েছিলাম বাড়িতে এসে দেখি ও ওয়াশরুমের সামনে পরে আছে৷ একা আমি তুলতেও পারছিনা ওর গায়ে অনেকটা জ্বর ও আছে প্লিজ তুই আয়৷ ”

শোভন কিঞ্চিত রাগ দেখিয়ে বলে,
— ” ওই মেয়েটা আবার উটকো ঝামেলা বাধিয়েছে? আমি বিজি আছি আমি পারবোনা মুখে পানির ছিটে দে ঠিক হয়ে যাবে৷ মেয়েটা আচ্ছা নাটক জানে দেখ গিয়ে নাটক করছে৷ ”
শোভনের কথায় বিরক্ত হলো আহানা তবুও বললো,
— ” ভাই প্লিজ আয় ওর কপালটাও অনেক কেটে গেছে৷ প্লিজ ভাই আয়৷ ”

শোভন বিরক্ত নিয়ে বলে,
— ” হয়েছে ঘ্যান ঘ্যান করতে হবে না আসছি৷ ”
বলে ফোন রেখে দেয়৷
প্রায় আধা ঘন্টার মধ্যেই শোভন আসে না চাইতেও কোলে করে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে কাটা জায়গা ফার্স্ট এইড করে ওয়ান টাইম লাগিয়ে ইনজেকশন দিয়ে পাশে বসে৷ সত্যি অনেকটা জ্বর এসেছে ফর্সা নাক মুখ লাল হয়ে আছে চোখ ফুলে আছে৷ কিছুর জন্য কেঁদেছে বুঝলো শোভন৷
আহানা শোভনের জন্য কফি করতে গেছে ও মেঘলার জ্ঞান ফিরলেই চেক করে বেরিয়ে যাবে ইম্পর্টেন্ট সার্জারি আছে৷ মেঘলা নিভু নিভু চোখ মেলে আশে পাশে তাকায় জ্বরে পুরোপুরো দূর্বল হয়ে গেছে৷ শোভন ঝুকে মেঘলার জ্বর দেখবে তখনি মেঘলা আচমকা শোভনকে জড়িয়ে দূর্বল কন্ঠে কি যেন বলে৷ মেয়েটা নিজের মধ্যে নেই বুঝলো শোভন, জ্বরের ঘোরে আবল তাবল বলছে তবুও ছাড়ানোর চেষ্টা করে৷ ছাড়ে না মেঘলা এখনো কিছু বলছে শোভন শোনার জন্য কান এগিয়ে নিয়ে যায়৷
মেঘলা মিনমিনিয়ে বলে,
— ” সে আমায় নিয়ে যাবে ডাক্তার সাহেব, আমি বাঁচতে চাই মুক্ত ভাবে৷ আমি যাবো না৷ ”
মেঘলাকে ছাড়িয়ে অবাক হয়ে তাকায় মেঘলার দিকে৷ কি জন্য ভয় পাচ্ছে মেয়ে টা? কার জন্য? কে সে??

চলবে,

[ কাল্পনিক এবং বাস্তবতা ঘুলিয়ে ফেলবেন না আশাকরি৷ কেমন হলো অবশ্যই জানাবেন৷ আর কাল গল্প দিচ্ছি না এসাইনমেন্ট অনেক জমে গেছে আশাকরি আমার দিকটা বুঝবেন৷৷৷ ]
চলবে,

[ কাল্পনিক এবং বাস্তবতা ঘুলিয়ে ফেলবেন না আশাকরি৷ ছোট হলো আজ, কাল বড় দেওয়ার চেষ্টা করবো৷ একটু ঘটনা মূলক কমেন্ট করলে খুশি হবো ধন্যবাদ কেমন হচ্ছে অবশ্যই জানাবেন৷৷ ❤️❤️]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here