প্রণয় প্রহেলিকা পর্ব -৯+১০

#প্রণয়_প্রহেলিকা (কপি করা নিষিদ্ধ)
#৯ম_পর্ব

ফুচকার অর্ডার দিতে একটু দূরেই এলো অনল। সে ধারার প্রশ্নের উত্তরটি হয়তো দিতে পারতো কিন্তু ইচ্ছে হলো না তার। সঠিক সময় আসলে হয়তো দেওয়া যাবে। অর্ডার দিয়ে আইসক্রিম নিয়ে গন্তব্যে যেয়ে দেখলো স্থানটি ফাঁকা, ধারা নেই। জায়গাটি সম্পূর্ণ ফাঁকা। অনল আশেপাশে চোখ ঘোরালো। কিন্তু মেয়েটি যেনো বাতাসে উবে গেছে। বিচলিত হয়ে পড়লো অনল। উদ্বিগ্ন চোখে দেখলো চারপাশটি। আশেপাশের কপোত-কপোতী জোড়াদের অস্থির হয়ে প্রশ্ন করলো,
“আচ্ছা এখানে একটি মেয়ে ছিলো, নীল জামা পড়া, চুল খোলা, উনিশ বছর, গোলগাল। দেখেছেন?”

প্রেমে ব্যাঘাত ঘটায় তারা যেনো বিরক্ত ই হলো। খানিকটা ঝাঁঝালো স্বরে বললো,
“না ভাই, দেখি নি”

অনলের দুঃশ্চিন্তা বাড়লো। মস্তিষ্কটা কাজ করছে না। ঘামছে সে অজান্তেই। হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে গেছে ট্রেনের মতো। বুকের ভেতর এক অদ্ভুত উচাটন তৈরি হলো। কোথায় গেলো মেয়েটি! ও তো এখানের কিছুই চিনে না। নাহ! এভাবে অস্থির হলে চলবে না। অস্থিরতায় মস্তিষ্কের নিউরণ কাজ করে না। তাই তাকে শান্ত হতে হবে। চোখ বন্ধ করে, মুখ ফুলিয়ে বার খানেক জোরে জোরে গরম শ্বাস ফেললো সে। তারপর খুঁজতে লাগলো ধারাকে। দিয়াবাড়ির এক মাথা থেকে খোঁজা শুরু করতে হবে। অনল তাই করলো। আইসক্রিমটা ফেলে পায়ের গতি বাড়ালো সে। আইসক্রিমটা পড়ে রইলো পরম অবহেলায়। সময় অতিবাহিত হতে লাগলো, ধারাকে পাচ্ছে না সে। বুকের ভেতর এক নিকষকালো ভয় জমতে লাগলো! মেয়েটি কি বিপদে পড়লো! কোথায় সে! একটা সময় যখন ক্লান্ত হয়ে পড়লো পা জোড়া, তখন ই একটা চিকন মেয়েলী কন্ঠ কানে আসলো,
“আর করবি চু’রি? বল করবি?”

কন্ঠটি শুনেই চোখ চলে গেলো উৎপত্তিস্থলে। বেশ জনগণের জটলা। অনেক মানুষের ভিড়। কোনোমতে ভিড় ঠেলে ভিতরে যেতেই আক্কেলগুড়ুম অনলের। একটা ছেলের যথারীতি চুল টানছে ধারা, এবং ইচ্ছেমতো মারছে। লোকেরা আশেপাশে জড় হয়ে যেনো ম্যাটিনি শো দেখছে। ধারা তার চুল টানছে আর বলছে,
“আর করবি চু’রি? বল! আর করবি? সাহস দেখে তাজ্জব বলে না, আমার ব্যাগ নিয়ে পালাস”

ধারার রুদ্ররুপ দেখে কেউ সাহস পাচ্ছে না তাকে আটকানোর। কেউ কেউ তো মহাউৎসাহে ভিডিও করছে। অনল কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। হতাশ হয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। এই মেয়ের বিপদের ভয় পাচ্ছিলো সে! অথচ সে এখানে চোর পি’টা’চ্ছে। একজন লোক ভিডিও করতে করতে বললো,
“আপা, জোস তাই না ভাই? এক্কেরে বা/ঘি/নী”
“হু, বহুত জোস”
“চিনেন নাকি?”
“আমার বউ আর আমি চিনবো না, তা কি হয়!”

অনলের কথা শুনে লোকটি আর কথা বললো না। উলটো ভিডিও করা বন্ধ করে দিলো অনলের কড়া চাহনীতে। আর দাঁড়িয়ে রইলো না অনল। এগিয়ে গিয়ে কোনোমতে ধারার দুহাত ছাড়ালো চোরটির চুল থেকে। কোনো মতে ঠেকালো ধারাকে। চোরটি ফাঁক পেয়ে এক দৌড়ে পালালো। অতিউৎসাহী লোকেরা ধাওয়া দিলো, কাজে দিলো না। ধারার চেঁচিয়ে বললো,
“চোর পালালো, ধরো ওকে”
“থাম, ম’রে যাবে বেঁচারা”
“কিসের বেঁচারা, জানো আমার ব্যাগ নিয়ে পালাতে গেছিলো। ভাগ্যিস, ধরতে পেরেছি”

অনল ধারার দুহাত শক্ত করে ধরে রাখলো৷ ধারা এখনো ছটপট করছে। অধৈর্য্য অনল আর নিজেকে শান্ত রাখতে পাড়লো না। কড়া স্বরে বললো,
“তোর কি আক্কেল হবে না? একটা মেয়ে হয়ে চোরের পেছনে ছুটেছিস! যদি লেগে যেতো? ওদের কাছে অ”স্ত্র থাকে জানিস না? তোর কিছু হয়ে গেলে! জানিস, আমি পাগলের মতো তোকে খুজছিলাম। ভয়ে প্রাণের পানি শুকিয়ে গিয়েছিলো। আর জনাবা এখানে ল্যাডি জ্যাকি চ্যাং হয়ে চোর পে’টা’চ্ছে’ন”
“সরি, আসলে আমার ব্যাগ”
“কি আছে ব্যাগে? হিরা নাকি মনিরত্ন?”
“সরি”

মাথা নামিয়ে নিলো ধারা। মুখশ্রীতে আষাঢ়ের কালোমেঘ জমলো তার। ঠোঁট বাকিয়ে রেখেছে সে। হয়তো এখনই কেঁদে দিবে। অনল বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেললো। তারপর ধারার নরম হাতটা নিজের হাতের ফাঁকে নিলো। গম্ভীর স্বরে বললো,
“হাত যেনো না ছাড়া হয়। নয়তো খবর আছে”
“তুমি কি খুব ভয় পেয়েছিলে?”
“হু”
“কেনো?”
“বাসায় একটা হিটলার আছে না। যদি শুনতো তোকে হারিয়ে ফেলেছি৷ আমাকে ত্যাজ্য নাতী করতো। ত্যাজ্য নাতী হতে চাই না”

ঝাঁঝালো কন্ঠে বললো অনল৷ তার কন্ঠ জড়ানো। বেশ হাপাচ্ছে সে। বলিষ্ট বুকখানা এখনো উঠানামা করছে। ধারা নরম গলায় বললো,
“শুধু এটুকুই?”

অনল চুপ করে রইলো। হাতটা আরোও শক্ত করে ধরলো। যেনো ছেড়ে দিলেই পাখি উড়াল দিবে। ধারা অনুভব করলো অনলের হাতটা বেশ উষ্ণ। রুক্ষ্ণ, বিশাল হাতের মাঝেও যে এতো উষ্ণতা থাকবে সেটা আশা করে নি। আড়নজরে তাকালো অনলের মুখের দিকে। শ্যামমুখটা ঘেমে একাকার। ভ্রুযুগল এখনো কুঞ্চিত। চোখে ভীতি, কিসের ভীতি! শুধুই ত্যাজ্য নাতী হবার ভয়! নাকি অন্যকিছু! কে জানে!

পশ্চিম আকাশে রক্তিম সূর্যের আভা দেখা যাচ্ছে। সূর্যটা ডুবন্ত। দিবাকালের সমাপ্তির পর, রাত্রির সূচনা। পাখিরা উড়ছে নিজ গৃহে যাবার তালে। বাতাসটাও ধীর গতিতে বইছে। অনল বাইক চালাচ্ছে, তার ঘাড়ে হাত রেখে বসে আছে ধারা। ধারার আজ বিকেলটা খুব ভালো কেটেছে। অনল গরম দেখালেও তার সাথে বেশি রুঢ় হয় নি। আজ নতুন ভাবে আবিষ্কার করলো সে অনলকে। সে তার হাতটা একটিবারের জন্য ও ছাড়ে নি, ঘেমে গেলেও ছাড়ে নি। তাকে ফুসকা খাওয়িয়েছে, দুটো আইসক্রিম খাওয়িয়েছে। তারপর বেশ কিছু ছবি তুলে দিয়েছে। তখন বেশ হুমড়ি তুমড়ি করেছিলো ঠিক কারণ দোষটা তার ছিলো। ওই সময় মাথায় ই ছিলো না, চোরদের কাছে ছু’রি, চা’কু থাকে। সত্যি ই তো, যদি পেটে ঢু’কি’য়ে দিতো। তখন অপারেশন করতে হতো। ইশ! কি একটা কান্ড হতো! এগুলো কিছুই ভাবে নি ধারা, আসলে ব্যাগটি খুব প্রিয়। এটা ভার্সিটিতে উঠার পর বড় মা কিনে দিয়েছে। তখন থেকে তার কাছেই এটা। কিভাবে চুরি হতে দিলো। সেই ব্যাগে তার মোবাইল, ভার্সিটির আইডি কার্ড, কত কিছু। সেটা হয়তো মনিরত্ন না, কিন্তু দামী তো। অনল সেটা বুঝবে না, সন্তপর্ণে একটা নিঃশ্বাস গোপন করলো ধারা_____

বাইক থামলো বাড়ির গেটে। ধারা নামতেই অনল প্রশ্ন ছুড়লো,
“মন ভালো হয়েছে তো?”
“হু”
“প্লাবণের বিয়েতে যাচ্ছিস তো?”

ধারার মিনিট কয়েক চুপ করে রইলো, তারপর বললো,
“যেতে তো হবেই। আমি যাবো”

বলেই ভেতরে পা বাড়ালো। তখন ই পেছন থেকে অনল ডেকে উঠলো,
“শোন”
“কিছু বলবে?”
“না কিছু না, যা”

বলেই গ্যারেজে বাইকটা রাখতে ব্যস্ত হলো অনল। ধারার কিছু সময় বলদের মতো তাকিয়ে রইলো। লোকটি এমন কেনো! সত্যি একটা প্রহেলিকা অনল ভাই!

*******

বুধবার, সকাল সকাল প্লাবণদের বাড়িতে চলে এলো অনল এবং ধারা। কলেজের বন্ধু বিধায় আগে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলো। অনল ও আপত্তি করলো না। কত বছর পর সব ভার্সিটি এবং কলেজের বন্ধুদের আসর বসবে। আসলে কাজের ব্যস্ততায় কখনো সেই সুযোগ হয় না। রবিন, ইকরাম, সমীর এদের সবার সাথে আজ দেখা হবে। প্লাবণের মা ধারাকে দেখেই বললো,
“বউ মা তো ছোট? এই ছোট মেয়ের কাছে নিজেকে সপে দিলি অনল!”

অনল শুধু হাসলো, উত্তর দিলো না। ধারা কিছুটা শিটিয়ে গেলো, নতুন পরিবেশ, অচেনা সবাই। এর মাঝে নিজেকে মানিয়ে নিতে একটু সময় তো লাগবে৷ প্লাবণ তাকে দেখে বললো,
“যাক তুমি এসেছো দেখে খুব খুশি হলাম জলধারা”

ধারা জোরপূর্বক হেসে বললো,
“আপনার বিয়ে আর আমি আসবো না হয়! আপনি আমার দেবর বলে কথা”

কথাটা শুনতেই বিষম খেলো অনল৷ কোনোমতে হাসি থামিয়ে রাখলো সে। ধারার কথাটা যে স্যাটায়ার ছিলো কেউ না বুঝুক সে ঠিক ই বুঝেছে।

ধারা, অনল নতুন বিবাহিত জুটি বিধায় তাদের জন্য একটা আলাদা ঘরের ব্যাবস্থা করা হলো। এই পুরো বিল্ডিং টি প্লাবণের পরিবারের৷ প্লাবণের ছোট চাচারা থাকে নিচ তলায়, বড় চাচা উপর তালায়। মাঝের এক তালায় ছোট ফুপু থাকেন। ছোট ফুপুর বাসার একটা রুম বরাদ্ধ হলো অনল এবং ধারার জন্য। অনল রুমে এসেই গা এলিয়ে দিলো। স্মিত হেসে বললো,
“বোর হচ্ছিস?”
“না, তবে একটু অস্বস্তি হচ্ছে। সকলে কেমন আমাকে ঘিরে ধরেছে। মনে হচ্ছে আমি চিড়িয়াখানার একটা জ’ন্ত। আর টিকিট দিয়ে আমাকে দেখতে হবে”
“ভুল তো নয়”
“অনল ভাই, ভালো হবে না কিন্তু”

অনল ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো। সুন্দর, স্বচ্ছ হাসি। তারপর বললো,
“প্লাবণকে যেমন ওবাড়ির সবাই ভালোবাসে, এবাড়িতে আমাকেও সবাই ভালোবাসে। আমি যে বন্ধুদের মাঝে সবার আগে বিয়ে করবো, কেউ মানতে পারে নি। তাই এতো আগ্রহ। সয়ে যাবে”
“ওহ! তুমি বুঝি না’রী’বি’দ্বে’ষী ছিলে?”
“এটা কি প্লাবণ বলেছে?”
“না ইকরাম ভাই বলছিলো”
“কানে নিবি না, এসব রটনা”
“নিলাম না, আমার কি!”
“সত্যি ই কিছু না!”

ধারা উত্তর দিলো না। লাগেজটা বের করে বললো,
“তালা খুলে দাও। আমার শাড়ি বের করবো”
“সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান এখন শাড়ি কেনো বের করবি?”
“আজিব! গুছানো লাগবে না। প্রস্তুতির ব্যাপার আছে!”
“যার বিয়ে তার হুস নেই, উনি আসছে সাজতে। পারবো না, আমি ঘুমাবো এখন। আর কোনো আওয়াজ করবি না। যদি আওয়াজ শুনেছি তো দেখিস”
“অনল ভাই”
“চুপ”

বলেই হাতটা চোখের উপর দিয়ে শুয়ে রইলো অনল। ধারার ইচ্ছে করলো কয়েক দফা কথা শুনাতে। কিন্তু কিছু বললো না, এই শোধটা তোলাই থাক।

হলুদের সন্ধ্যে, আলোকসজ্জায় সেজেছে প্লাবণদের বাড়ি। সবাই ছেলের হলুদের অনুষ্ঠানে ব্যস্ত। অনল, ইকরাম এবং রবিনের দায়িত্ব পড়লো খাওয়া দাওয়া এবং ডেকোরেশনের। প্লাবণের ভাইবোনেরা তাদের উপর দায়িত্ব চাপিয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত। কারণ ফেসবুকে দিতে হবে। কেউ কেউ তো টিকটক ও বানাচ্ছে। ফলে এই তিনজনকে গা’ধা খাটুনি খাটতে হচ্ছে। দুপুরে খাওয়ার সুযোগ ও হয় নি। মোটামুটি কাজ এগিয়ে রবিন বললো,
“এই ফলের ডালাটা দেখছিস? আন্টি চাচ্ছে”
“দাঁড়া আমাদের ঘরে ফুপু রেখেছেন হয়তো। এনে দিচ্ছি”

বলেই অনল নিচে গেলো। নিজ ঘর বিধায় নক না করেই ঢুকে পড়লো। রুমে ঢুকতেই তার পা জমে গেলো। ধারা তখন শাড়ি পড়ছিলো৷ এলোমেলো কুচি মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আয়নায় অনলের প্রতিবিম্ব দেখেই কোনো মতে আঁচল টেনে দিলো সে৷ তীব্র আতঙ্কিত স্বরে বলল,
“নক করবে না? এভাবে ঢুকে কেউ?”

অনল কিছুসময় নির্বিকার চিত্তে তাকিয়ে রইলো ধারার দিকে। তারপর আশেপাশে দেখে ফলের ডালাটা তুলে নিলো। তারপর সে বেড়িয়ে যেতে যেতে নির্লিপ্ত স্বরে বললো,
“কেউ যদি এতো বুড়ি হবার পরও দরজায় লক না করতে পারে, সেখানে এভাবেই ঢুকে পড়ে মানুষ”

কথাটা বলেই বেড়িয়ে গেলো অনল। ধারা জিব কাটলো দাঁত দিয়ে। লকটা লাগাতেই ভুলে গিয়েছিলো সে। মাথায় গাট্টা দিয়ে দরজার লক লাগালো। ভাগ্যিস অনল ই ছিলো!

অনল দাঁড়িয়ে আছে স্টেজের পাশে। তার হাতে ফলের ডালা। রবিন তাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বললো,
“কি হয়েছে? তোর কান লাল হয়ে আছে কেনো?”
“কিছু না, এলার্জি হয়তো”

মদু হেসে কথাটা বললো অনল। রবিন অবাক চোখে অনলের দিকে তাকিয়ে রইলো। দুপুরে তো খাবার ই জুটলো না, এলার্জি হবে টা কিভাবে!

হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হলো। ধারা হলুদের বাটি নিয়ে উপস্থিত হলো। হলুদ জামদানি, হালকা রুপার গহনা, হালকা সাজ। সকলের চোখ যেনো তার দিকেই। প্লাবণের একটা বোন তার খোপায় বেলীর মালা বেঁধে দিলো। ফলে আরোও যেনো সুন্দর লাগছে তাকে। নতুন বউ টাইপ একটা ভাইব আসছে তার থেকে। কেউ সুন্দর বললে সেও লাজুক হাসি হাসছে। প্লাবণের মা তার কানের নিচে কাজলের টিপও দিয়ে দিলেন। ধারা হলুদের বাটি রেখে অনলের পাশে এসে দাঁড়ালো। মৃদু স্বরে বললো,
“কেমন লাগছে আমাকে?”
“সং এর মতো”

না তাকিয়ে কথাটা বললো অনল। ধারা পাল্টা বলে উঠলো,
“নিজেকে দেখেছো! সং এর বউ তো সং ই লাগবে”

অনল কিছু বললো না। শুধু ধারার হাতটা নিজ হাতের ফাঁকে গলিয়ে রাখলো। এর মাঝে ঘটলো আরেক বিপদ। বরের পেট খারাপ, সে শুধু বাথরুমে যাচ্ছে আর আসছে। হলুদ লাগাবার জন্য ও বসতে পারছে না। যেই একটু এসে বসছে অমনি পেট গুরগুর করছে আর ছুটতে হচ্ছে তাকে। প্লাবণের এমন অবস্থায় ধারাকে দেখা গেলো মিটিমিটি হাসতে। অনলের চোখ ব্যাপারটা এড়ালো না। তখন সে ধারার কানে মুখ ঠেকিয়ে বললো,
“কাজটা তোর তাই না?”…………
#প্রণয়_প্রহেলিকা (কপি করা নিষিদ্ধ)
#১০ম_পর্ব

এর মাঝে ঘটলো আরেক বিপদ। বরের পেট খারাপ, সে শুধু বাথরুমে যাচ্ছে আর আসছে। হলুদ লাগাবার জন্য ও বসতে পারছে না। যেই একটু এসে বসছে অমনি পেট গুরগুর করছে আর ছুটতে হচ্ছে তাকে। প্লাবণের এমন অবস্থায় ধারাকে দেখা গেলো মিটিমিটি হাসতে। অনলের চোখ ব্যাপারটা এড়ালো না। তখন সে ধারার কানে মুখ ঠেকিয়ে বললো,
“কাজটা তোর তাই না?”

হঠাৎ করে উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শ পেতেই চমকে উঠলো ধারা। স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাত চলে গেলো কানের কাছে। অনলের দিকে তাকাতেই আরেকদফা চমকালো, চোখদ্বয় ছোট ছোট করে তার দিকে কিটমিট করে তাকিয়ে আছে লোকটি। খানিকটা গলা খাঁকারি দিয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে উত্তর দিলো,
“প্রমাণ আছে যে এটা আমার কাজ? যত দোষ নন্দ ঘোষ। যাও যাও! নিজের বন্ধুকে দেখো গে”

বলেই নজর সরিয়ে নিলো। অনল এখনো সূচালো নজরে ধারার দিকে তাকিয়ে আছে। ধারা সামনের দিকে তাকালো, সেখানে বেশ চমৎকার ভাবে লেখা “প্লাবণের গায়ে হলুদ”। লেখাটি দেখে তার ঠোঁটের কোনায় জমে থাকা হাসিটি বিস্তারিত হলো। হ্যা, কাজটি ধারার। একে বলে “ঠান্ডা মাথার প্রতিশোধ”। অবশ্য এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব জমজ বি’চ্ছুদের। এইসব অদ্ভুত শ’য়’তা’নি বুদ্ধি সরল ধারার মাথা থেকে কখনোই বের হয় না। এই তো গত পরশু রাতের কথা, খাবার পর ধারা তার পুরানো ঘরে যায়। এখন এটা তার ঘর নয়, এখন এটা দ’স্যুদ্বয়ের আস্তানা। ধারাকে দেখতেই ওরা ফট করে সোজা হয়ে বসে। এশা আশাকে কনুই দিয়ে গু’তো দিয়ে বলে,
“ধারাপু এখানে মানে তুই কিছু করছিস?”

আশা চোখ উপরে তুলে মিনিট দুয়েক ভাবে। তারপর বলে,
“আজ কিছু করি না, তবে গতকাল ওর একটা ওড়ণা দিয়ে চা মুছছিলাম। তবে আমি প্রমাণ রাখি নি”
“তাইলে মহিলা আসছে কেন?”
“জিজ্ঞেস কর তুই”

আশাকে চোখ রাঙ্গিয়ে বিনয়ী স্বরে এশা প্রশ্ন করে,
“ধারাপু, কিছু বলবা?”

ধারা ধপ করে বিছানায় বসে। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। ফলে জমজদের বুকে ভয় জমে। তারা দুজন দোয়া পড়ে বুকে ফু দেয়। অনল এবং ধারাকে অত্যন্ত ভয় পায় তারা। কেনো পায় নিজেরাও জানে না। যদিও ধারা তাদের অনেক আদর করে কিন্তু শাসন করার সময় পিছপা হয় না। এশা যখন আবার জিজ্ঞেস করে,
“কিছু লাগবে তোমার?”
“আচ্ছা ধর, কারোর উপর শোধ তুলতে চাস কি করবি?”

এশা সন্দীহান চোখে তাকায় ধারার দিকে। তারপর জিজ্ঞেস করে,
“শোধটা কি তুমি নিবা?”
“আরে না, আমার বান্ধবী! বল না”
“অনেক উপায় আছে, তুমি কোনটা নিতে চাও? ইজি, মিডিয়াম নাকি হার্ড?”

বেশ ভাব নিয়ে গা এলিয়ে দিয়ে এশা বলে। এশার কথা শুনে মাথা ঘুরে ওঠার জোগাড় ধারার। অবাক কন্ঠে বলে,
“ক্যাটাগরিও আছে?”
“অবশ্যই আছে, এই ধরো যদি পরিবার বা আত্নীয় বা শিক্ষকদের উপর কোনো শোধ তুলতে হয় আমরা ইজি ওয়েতে যাই। পাশের বাড়ির আন্টি বা পাড়ার ব’দ’মা’ই’শ’দের শায়েস্তার জন্য মিডিয়াম। আর হার্ডটা এখনো এপ্লাই করি নি। এতোটা ক্ষোভ হয় নি কখনো”
“থাক থাক, ইজি, ইজি ই যথেষ্ট”

ধারার কথা শুনে এশা দাঁত বের করে হাসে। তারপর আশাকে বলে,
“ফর্মুলা নম্বর ২০৩ টা দে তো”

আশাও মাথা দুলিয়ে টেবিলের ডেস্কের ভেতর থেকে একটা ছোট কৌটা বের করে এশার হাতে দেয়। এশা কৌটাটা ধারার হাতে দিয়ে বলে,
“এটা স্পেশাল ঔষধ, বেশি ব্যবহার করবা না। আধা চামচ খাবারে আর পাখি এক বেলা বাথরুমে”
“সাইড ইফেক্ট?”
“স্যালাইন খেলেই ঠিক হয়ে যাবে। মাঝে মাঝে বাবার চায়ে মিলিয়ে দেই। কিন্তু শোধ তুলবাটা কার উপর?”

ধারার বিচিত্র ভাবে হাসে। তারপর চোখ টিপ্পনী দিয়ে বলে,
“সিক্রেট”

বিয়ে বাড়ি আসার পর এখানে প্লাবণের মা ফুফুর সাথে বেশ সখ্যতা হয় ধারার। ফলে বিকালে যখন তারা সবার জন্য চা-কফি বানাচ্ছিলো ধারার গল্পের ছলে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে। ফাক তালে প্লাবণের কফির মগে আধা চামচ মিশিয়ে দেয় ফর্মুলা নম্বর ২০৩। যার ফলাফলরুপে প্লাবণকে শুধু বাথরুম টু স্টেজ আর স্টেজ টু বাথরুম ই করতে হচ্ছে। বুকে জমে থাকা ক্ষোভটা আজ বের করে বেশ শান্তি লাগছে ধারার। যদিও এখানে প্লাবণের তেমন দোষ নেই, কিন্তু একেবারেই যে নেই তা কিন্তু নয়। সে বুঝেও অবুঝ ভান করতো! কিশোরীর আবেগকে প্রশয় দিতো। সে কি সত্যি বুঝতো না, কেনো একটা মেয়ে তাকে এতোটা প্রাধান্য দেয়। তবে আজ শোধ তুলে সম্পূর্ণরুমে নষ্ট আবেগকে বিদায় জানালো ধারা। সে আর আবেগে ভাসবে না, কারণ ন্যাড়া বেলতলায় একবার ই যায়_________

প্লাবণের হলুদ অনুষ্ঠান অবশেষে সম্পন্ন হলো। অনুষ্ঠান ঠিক ই হলো কিন্তু তা হলো বড় বিচিত্র ভাবে। বরকে হলুদ লাগানো হলো, কিন্তু তা স্টেজে না, বাথরুমের পাশে চেয়ার বসিয়ে। মিষ্টিমুখের বদলে খাওয়ানো হলো কাঁচা কলা ভর্তা দিয়ে ভাত, আর পানির বদলে স্যালাইন। এই বুদ্ধিটি প্লাবণের মায়ের। যতই হোক একমাত্র পুত্রের গায়ে হলুদ, পেট খারাপ বলে তো সেটা আটকে রাখতে পারেন না। বেচারা প্লাবণ পড়লো বড্ড বিপাকে, মাকে বুঝানোর চেষ্টা করলো তবে কাজে দিলো না। ফলে সব বিনাবাক্যে মেনে নিতে হলো।

হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হলে ছাঁদে আড্ডা জমলো, প্লাবনের কাজিনবর্গ, বন্ধুমহল। অনল এবং ধারাও সেখানে বসলো। প্লাবণ স্যালাইনের বোতল হাতে উপস্থিত হলো। এখন বাথরুমে যাওয়াটা বন্ধ হয়েছে, ঔষধ খেয়ে কিছুটা হলেও এখন স্বাভাবিক। এমন একটা হলুদ কাটবে ইহজীবনে ভাবে নি। প্লাবণকে দেখেই রবিন বললো,
“কি পেট টাইট হলো! নাকি এখনো বেড টু বাথরুম, বাথরুম টু বেড?”

প্লাবণ অগ্নি দৃষ্টি প্রয়োগ করলো৷ একটু লজ্জায়ও পড়লো, ছোট ছোট বোনদের সামনে এমন কথা। এই রবিনের মুখে কখনো কিছুই আটকায় না। সর্বদা মুখড়া সে। হুটহাট কিছু একটা বলে লজ্জা দিয়ে দিবে। শুধু স্বচ্ছ মনের কারণেই পাড় পেয়ে গেলো। ধারা মিটিমিটি হাসলো। অনলের চোখ এড়ালো না সেই হাসি। কথায় কথায় গানের আড্ডা বসলো। রবিন হেরো গলায় গান গাইলো। সেই গান শুনে প্লাবণের এক বোন বলে উঠলো,
“ভাই থামেন, রাস্তার কুকুরগুলোও পালিয়ে যাচ্ছে আপনার গানে”

কিন্তু এতে রবিনের কিচ্ছু যায় আসে না সে গান গাইছেই। এর মাঝে প্লাবণের আরেক বোন বলে উঠলো,
“অনল ভাইয়া আপনি একটা গান গেয়ে শোনান”

কথাটা শুনতেই ধারা তীর্যক চাহনী নিক্ষেপ করলো মেয়েটির দিকে। মেয়েটাকে বহুক্ষণ যাবৎ লক্ষ্য করছে সে, অনলের প্রতি যেনো তার আদিক্ষেতা একটু বেশি। ধারা একটা ব্যাপার মোটেই বুঝতে পারলো না, মেয়েটার সমস্যা কি! একবার ছলে বলে ছবি তুলতে আসে, হলুদ লাগাতে চায়, এখন আবার গানের বাহানা। আরে এই প্রিন্স উইলিয়াম কি মধু নাকি যে মৌমাছির মতো তাকে ঘিরে ধরতে হবে! কথাগুলো মনেই রাখলো! যার যা খুশি করুক তার কি!

সকলের বায়নাকে নাকোচ করতে পারলো না অনল। অনলের গানের গলা যে ভালো এটা অজানা নয়। কিছু মানুষ আছে যাদের অনেক গুন থাকে। অনল তেমন ই, এই গানের জন্য স্কুল কলেজ থেকে কম পুরষ্কার সে পায় নি। ধারাও মুখে হাত দিয়ে মুগ্ধ হয়ে চাইলো তার দিকে। কত বছর পর অনল ভাই গান গাইবে, ব্যাপারটা কি হাতছাড়া করা যায়! অনল প্লাবণের গিটারটা নিলো। টুং টাং করে বাজলো সুর,
“আজ ঠোঁটের কোলাজ থামালো কাজ
মন, তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম
নাম, বুকের বোতাম, হারানো খাম
আজ কেন যে খুঁজে পেলাম

দিন এখনও রঙিন
এই দিন এখনও রঙিন
তাকে আদরে তুলে রাখলাম
আজ ঠোঁটের কোলাজ থামালো কাজ
মন, তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম”

আমাবস্যা বিধায় আকাশে চাঁদ নেই, বিক্ষিপ্ত কালো মেঘের আকাশটা আরোও কালচে লাগছে। ছাঁদের এদিকটাতেও আলো নেই। আঁধারে ডুবন্ত এই মূহুর্তটিকে সুরের জোয়ারে ডুবিয়ে দিলো প্রিন্স উইলিয়ামের মনোমুগ্ধকর কন্ঠ। ধারা যেনো হারিয়ে গেলো সেই সুরের জোয়ারে। তবে একটা ব্যাপার খুব ভাবালো, এতো আঁধারের মাঝেও কেনো যেনো তার মনে হলো অনলের চোখজোড়া তাকেই দেখছে। যেনো তার জন্যই গাওয়া এই গান। এটা কি কল্পনা নাকি বাস্তব জানে না ধারা। যদি অনল তার জন্য ই গেয়ে থাকে, তবে…. বেশি ভাবলো না ধারার। মরীচিকা হলে আবারোও পিছলা খেতে হবে। দরকার কি! থাক না কিছু সুন্দর মূহুর্ত স্বর্ণালী খামে মুড়িয়ে, না হয় কোনো এক সময় উলটে পালটে দেখবে ক্ষণ_________

*******

আজ প্লাবণের বিয়ে, জুম্মার বাদে বিয়ে। জমজমাট অবস্থা। এক দ্বন্দ কারোর শান্তি নেই। ছোটাছুটি, হুড়োহুড়ি লেগেই আছে। অনল রেডি হয়ে গেছে বহু আগে। ধারা এখন তৈরি হয় নি। শাড়ির কুচিটা কিছুতেই সামলাতে পারছে না৷ গতদিন জামদানি শাড়ি ছিলো তবুও তার বহু কষ্ট হয়েছে, আজ তো সিল্কের শাড়ি। শুধু পিছলে যাচ্ছে কুঁচি। কুচি সামলাতে নাজেহাল সে। যখন সকলে বের হতে উদ্ধত হলো তখন দেখা গেলো ধারা নেই। ফলে অনল তাকে খুঁজতে এলো। গতদিনের কাজের পর থেকে রুমে নক না করে ঢুকে না সে। দরজায় নক পড়তেই ধারা বললো,
“কে?”
“আমি, অনল। আর কত দেরি? বরপক্ষের গাড়ি বের হবে। সবাই রেডি তুই বাদে”
“দু মিনিট”
“সেই আধঘন্টা থেকে শুনছি। আর কত দুই মিনিট লাগবে?”

ধারা কিছু সময় চুপ করে রইলো। তারপর দরজাটা খুলে একটু মুখ বের করে বললো,
“একটু হেল্প লাগবে, আন্টি আছে আশেপাশে?”
“না আন্টি ব্যস্ত”
“কেউ নেই মহিলা!”
“না, সবাই নিচে”

ধারা মুখটা চিন্তায় ছেয়ে গেলো! তারপর বললো,
“তুমি কুঁচি ধরতে পারো? আমি বহুসময় চেষ্টা করেছি, ছুটে যাচ্ছে”

ধারার অসহায় মুখখানা দেখে মানা করতে পারলো না অনল। আর দেরিও হচ্ছে। তাও বাধ্য হয়ে গণিতের মাস্টারমশাইকে ছোট বউ এর কুঁচি ধরতেই হলো। অনলের স্পর্শ যখন ই লাগছিলো কেঁপে উঠছিলো ধারার। অনল যতই সংযত রাখতে চাচ্ছিলো কিন্তু একবার না একবার স্পর্শ হচ্ছিলো। রুক্ষ্ণ বিশাল হাতের উষ্ণ স্পর্শগুলো লাগলেই জমে যাচ্ছিলো ধারা। মেরুদন্ড বেয়ে বয়ে যাচ্ছিলো উষ্ণ রক্তের ধারার। একটা সময় শাড়ির কুচি সমস্যার সমাধান হলো। ধারা তাড়াতাড়ি খোপা করে নিলো চুলগুলো। অনল তখন ও সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলো। হঠাৎ তার চোখে বাঁধলো ধারার ঘাড়ের কালো তিলটি। ফর্সা গায়ে যেনো নজরটিকার মতো লাগছে তিলটিকে। নজরটিকাও ঘোরে পড়া যায় জানা ছিলো না অনল। কখন সেটাকে ছুয়ে দেবার অবাধ্য ইচ্ছে তাকে ঘিরে ধরলো নিজেও হয়তো জানে না। অজান্তেই পা জোড়া এগিয়ে গেলো ধারার দিকে। ঘাড়ের উপর উষ্ণ নিঃশ্বাস পেতেই আয়নায় চোখ গেলো ধারার। অনল ঠিক তার পেছনে, ঘোর লাগা মাদক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে। তীব্র লজ্জা অনুভব করলো ধারা। অজান্তেই নরম গালজোড়া উষ্ণ হয়ে উঠলো। দৃষ্টি নামিয়ে নিলো। শাড়ির আঁচলটা চেপে ধরলো। কোনো মতে বললো,
“অনল ভাই”

ধারার স্মিত ধীর স্বর মস্তিষ্কে ঝংকার তুললো। অনলের হুশ ফিরলো। সে যেনো সম্মোহনের ভেতর ছিলো। স্বম্বিত ফিরতেই চোখ সরিয়ে নেয়। আড়ষ্ট কন্ঠে বলে,
“আমি নিচে যাচ্ছি, দুই মিনিটে আয়”

বলেই হনহন করে বেড়িয়ে যায় অনল। ধারা সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। এখনো লজ্জায় চোখ তুলতে পারছে না সে। এতো লজ্জা কেনো লাগছে তার!

বিয়েটা একটা কমিউনিটি সেন্টারে হচ্ছে। অবশেষে বরযাত্রী পৌছালো সেন্টারে৷ স্মৃতির মা বেশ আদরে বরণ করলেন জামাইকে। গেটে চাঁ’দা’বা’জি’ হলো কিন্তু বেশি সুবিধা করতে পারলো না বউ এর বোনেরা। প্লাবণকে বসানো হলো বরের চেয়ারে। ধারা দেখা পেলো নিজ পরিবারের। ইলিয়াস তাকে দেখেই বললো,
“তোর মামীকে বোঝা তো! আমি শুধু বলেছি এতো সাজের কি দরকার ছিলো! তুমি তো এমনেই সুচিত্রা সেন। রেগে ফুলে আছে”

ধারা কিছু বলার আগেই সুভাসিনী বেগমের প্রশ্নের ট্রেন চললো,
“তোকে রোগা লাগছে কেনো? খাস নি নাকি? এই অনল তুই ওর খেয়াল নিস নি?”

ধারা কার কথা ছেড়ে কার কথার উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারলো না। তখন ই অনল বলে উঠলো,
“বিয়ে তে এসেছো, বিয়ে খাও না। এখানে মজলিস বসানোর কি মানে!”

সুভাসিনী বেগম উত্তর দিতেই যাবেন তখন শোনা গেলো, বিয়ে হবে না। বউ নাকি পালিয়েছে………

চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি
চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here