প্রেমনোঙর ফেলে পর্ব ১১+১২

#প্রেমনোঙর_ফেলে
#লেখনীতে: মিথিলা মাশরেকা

১১.

মুখের ওপর অনেকখানি পানি পরায় হুশ ফিরলো খইয়ের। পিটপিটিয়ে চোখ মেলতে শুরু করলো ও। আধারে ডোবা পরিবেশের মধ্যে মোবাইলের টর্চ আর ড্রোনের লাইটদুটোর ক্ষুদ্র আলোর উপস্থিতি টের পেলো। তবে তারচেয়ে ভয়ানক যা ছিলো,উদোমদেহী রাকীন! ওকে এই অবস্থায় দেখে আরেকদফায় চিৎকার করতে যাচ্ছিলো খই। রাকীন আবারো ওর মুখ চেপে ধরলো। খইয়ের মাথা তালগাছে হেলান দিয়ে ঠেকানো। আর খালি গায়ে ওর ঠিক সামনে হাটু গেরে বসে আছে রাকীন। মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে ওর বুকে পরার পর রাকীন কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে দাড়িয়ে ছিলো অনেকক্ষন। এই মাঝরাতে অচেনা জায়গায়,অচেনা অজ্ঞান যুবতীকে নিয়ে এ কোন বিপদে পরলো ও? এভাবে অজ্ঞান অবস্থায় ওকে ফেলে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না! আবার একে নিয়ে এখন কোথায়ই বা যাবে ও? কাউকে যে ডাকবে,তারও উপায় নেই। এ গ্রামের কেউই বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে নেবে না তা নিশ্চিত ছিলো। অতঃপর সিদ্ধান্ত নিলো,মেয়েটার জ্ঞান ফিরিয়ে,বাড়িতে পৌছে দিয়ে তারপরই ফিরবে ও।

তালগাছের সাথে হেলান দিয়ে খইকে বসালো রাকীন। কিছুটা সময় চুপচাপ তাকিয়ে রইলো ওর মুখের দিকে। অন্ধকার বাড়ছিলো ক্রমশ। ফলে চেহারাটাও অস্পষ্টতর হচ্ছিলো খইয়ের। রাকীন ট্রাউজারের পকেট থেকে ফোন বের করে আলো জ্বালালো। ঝলক দিয়ে উঠলো খইয়ের নাকের ছোট্ট নথটা। শ্যামা,মায়াময় চেহারায় একেবারে মানানসই ওটা। আচমকাই খইয়ের স্পষ্ট চেহারা দেখে কিছুক্ষনের জন্য চেনা কোনো অনুভবে থমকে গেলো রাকীন। খইয়ের সাথে সে অনুভবকে মিলানোর সুযোগ না দিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো ও। অপেক্ষা। খইয়ের জ্ঞান ফেরার। হাটুতে কনুই ঠেকিয়ে পাশের ড্রোনটার দিকে তাকিয়ে রইলো রাকীন। মুলত সব দোষ এটার। এটার পিছনপিছনই এসেছিলো খই। ওর মতো জ্বলজ্যান্ত মানুষকে যে জ্বী’ন ভেবে জ্ঞান হারায়,কে জানে এই ড্রোনকে কি ভেবেছিলো ও?

মশার কামড়ে দু দন্ডও বসে থাকতে পারলো না রাকীন। এদিকে খইয়েরও জ্ঞান ফেরার নাম নেই। আবারো তাকালো ওর দিকে। নিশ্চিতে বেহুশ হয়ে পরে আছে সে মেয়ে। মুখ দিয়ে ফু দিয়ে শ্বাস ছাড়লো রাকীন। বুঝলো এ মেয়ের জ্ঞান আপনাআপনি ফেরার নয়। উঠে দাড়ালো পানির উৎস খুজবে বলে। সৌভাগ্যক্রমে দাড়িয়ে যেতেই রাস্তার ঢালুতে পুকুরের পানিতে চাঁদের বিম্ব দেখতে পেলো ও। সাবধানে নিচে নেমে এলো ঢালু বেয়ে। কিন্তু সমস্যা হলো পানি খই অবদি পৌছানো নিয়ে। দুহাতের আজলায় পানি নিয়ে ঢালু বেয়ে উঠতে উঠতে সব পানি পরে যাচ্ছিলো। দুবার এমন ঘটনা দেখে খইয়ের উপর তীব্র আক্রোশ জন্মালো রাকীনের। পারলে খইকে ওই পুকুরে ঢিল ছোড়ে ও। এই পানি ওর অবদি পৌছোনোর চেয়ে ওকে কোলে তুলে পুকুরে ছোড়াই সহজ হবে। কিন্তু তাও করা সম্ভব না! শতহোক! মেয়েটাকে সাহায্য করবে বলেই এখনো এখানে আছে ও। আর সেই মেয়েকেই পুকুরে ছোড়াটা ঠিক হবে না! একদমই না!

কয়েকবার জোরেজোরে শ্বাস ছাড়লো রাকীন। সোজা কথায়,কার্বন ডাই অক্সাইডের সাথে রাগটা বের করার চেষ্টা করলো। রাগটা গেলেও খইয়ের জ্ঞান ফিরলো না। উপায়ন্তর না পেয়ে গায়ের টিশার্টটা খুলে ফেললো প্রথমে। তারপর সেটা পুকুরের পানিতে ভিজিয়ে পানি নিলো। ভেজা টিশার্ট মুড়িয়ে পুরো পানিটুকো খইয়ের মুখের উপর ঝরিয়েছে ও। অতঃপর জ্ঞান ফিরলো খইয়ের।
কিন্তু ওইযে! রাকীনের গা খালি! সেটা দেখে চেচানোর চেষ্টারত খই। আবারো সেই হাত পা ছুড়োছুড়ি শুরু। কোনোমতে ওর মুখ আটকে রেখে পাশের বেতের ঝোপ থেকে কাটা খসিয়ে নিজের হাতে বসিয়ে নিলো রাকীন। বেশ অনেকটা আঁচড় লাগিয়ে নিলো নিজের হাতেই। রক্ত বেরোতে লাগলো ওর হাত থেকে। খই নড়াচড়া থামিয়ে বিস্ফোরিত চোখে তাকালো ওর দিকে। রাকীন শক্ত গলায় বললো,

-চুপপপ! একদম চুপ! ওকে? এইযে দেখো আমার শরীরে রক্ত আছে! কেটে গিয়ে রক্ত ঝরছে দেখো? আমি তোমার মতোই রক্তমাংসের মানুষ! কোনো জ্বী’ন নই! গট ইট? পেয়ে গেছো প্রমান? এবার অন্তত চেচিও না প্লিজ! প্লিজ?

ভাষা পুরোপুরি না বুঝলেও বাস্তবতা বুঝে নিমিষেই পুরোপুরিভাবে নুইয়ে গেলো খই। এটা সত্যিই মানুষ! একটা মানুষকে দেখে অজ্ঞান হয়ে গেলো ও? কি করে হলো এটা? পুঁটিরা জানলে এ গ্রামে ভীতু হিসেবে রটে যাবে খইয়ের নাম! চুপচাপ হাটু জরিয়ে আরো গুটিয়ে বসলো ও। রাকীন তখনো মুখ ছাড়েনি ওর। বরং সন্দেহজনকভাবে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। এ মেয়েকে বিশ্বাস নেই। তখনও এমন চুপচাপ হয়ে গিয়েই জ্ঞান হারিয়েছিলো ও। খই অস্ফুটস্বরে বললো,

-হাত সরান!

-কি?

দ্বিতীয়বার জবাব দেবার প্রয়োজনবোধ করলো না খই। রাকীনের উন্মুক্ত বুকে দুহাত দিয়ে ধাক্কা লাগালো একটা। টাল সামলাতে না পেরে রাকীন মাটিতে পরে গেছে। খই তাড়াহুড়ো করে উঠে দাড়ালো। রাকীনের টিশার্টের পানি বেশ অনেকটাই ছিলো। খইয়ের গায়ে থাকা তাতের শাড়ীটার গলার দিকে ভিজে গেছে অনেকখানি। আঁচলে গলার পানি মুছতে ব্যস্ত হয়ে পরলো ও। আর হতভম্ব হয়ে মাটিতে বসে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো রাকীন। দুমিনিট আগে ওকে দেখে যে জ্ঞান হারালো,সেই মেয়েই ওকে এভাবে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো। ম্যান্ডালিফের জীনতত্ত্ব একটু জলদিই পল্টি মারলো বলে মনে হলো ওর। এরচেয়ে ওর জ্বী’নতত্ত্বই বেশি ভালো ছিলো বোধহয়। খই গলামুখ মুছে তীক্ষ্মচোখে রাকীনের দিকে তাকিয়ে বললো,

-আমার গায়ে পানি ছিটাইছেন ক্যান?

কয়েক সেকেন্ডের জন্য বিরহের একটা চাওনি ছিলো রাকীনের। তবে অন্ধকারের জন্য কারোর কাছে কারো ভাব প্রকাশ পেলো না ঠিকমতো। শুধু বললো,

-না ছিটালে মাঝরাতে মাঝরাস্তায় একাকী এভাবেই অজ্ঞান হয়ে পরে থাকতে!

-থাকলে থাকতাম! এই গেরামের পিঁপড়াডাও খইরে কামড়ায় না! কিছুই হইতো না আমার!

নামটা শুনে রাকীন ঘাড় বাকিয়ে রইলো। এতোক্ষনে মেয়েটার নাম জানলো। তবে এটা কেমন নাম? আর যার এতো আত্মবিশ্বাস যে মাঝরাতে রাস্তায় পরে থাকলে তার কিছুই হবে না,তখন তাকে সজ্ঞানে আনতে এতো সময় কেনো দিলো ও? একটা হতাশার শ্বাস ফেলে,মাথা ঝেড়ে প্রশ্নপর্ব উপেক্ষার চেষ্টা করলো রাকীন। পাশে ঘাসের উপর পরে থাকা ভেজা টিশার্টটা কাধে বাঝিয়ে উঠে দাড়িয়ে বিরবিরিয়ে বললো,

-শুধুশুধু টিশার্টটা ভেজালাম! কোনো দরকার ছিলো না শার্টভেজা পানিতে এর জ্ঞান ফেরানোর। এই মেয়ে তো এমনিতেই খইয়ের মতো ফুটছে! অজ্ঞান থাকতেই‌ ভালো ছিলো মেবি!

খই সেভাবে সবটুকো না শুনলেও বুঝলো ওই শার্টভেজা পানিই ওর মুখে ছোড়া হয়েছে। খালি পায়ের নিচের মাটিটা নিমিষেই গরম হয়ে উঠলো ওর। খিচে উঠে বললো,

-আপনে আপনের গায়ের গেন্জির পানি আমার মুখে ছুইড়া মারছেন?

মোবাইলের লাইট অফ করছিলো রাকীন। চোখ তুলে একপলক খইয়ের দিকে তাকিয়ে আবারো মোবাইলে চোখ দিলো ও। পাত্তাহীনভাবে বললো,

-তোমার কপাল ভালো তোমাকে পুকুরে ছুড়ে মারিনি! যা কান্ড ঘটিয়েছো!

খই এগোচ্ছিলো রাগ নিয়ে। পরে মোবাইলের আলোতেই রাকীনের কাটা হাত দেখে আটকে গেলো। রাকীন বললো,

-যাইহোক,আমাকে জ্বী’ন বলে নামকরনের জন্য অশেষ ধন্যবাদ আর তোমাকে পুকুরে না ছোড়ার জন্য স্বাগতম। আসছি! বাচ্চা মেয়ে! এই রাতেরবেলা আর দস্যি না সেজে,ঘরে ফিরে যাও। নইলে সত্যিসত্যিই জ্বী’ন এসে ধরবে তোমাকে। বুঝেছো?

রাকীন পাশে খড়ের গাদার উপর থাকা ড্রোন তুলতে যাচ্ছিলো। খই একপ্রকার ছো মেরে নিয়ে নিলো ওটা। মুখ বাকিয়ে বললো,

-এইডা আমার!

-তোমার মানে? ওটা আমার!

-আকাশ দিয়া উড়তাছিলো এইডা!

-আমিই উড়াচ্ছিলাম ওইটা!

খই বুঝলো রাকীন কি বোঝাতে চাইছে। যেহেতু আলাদাকরে লাইট বসানো,পাখা ঘোরে,তাহলে কোনো শহুরে প্রযুক্তিই হবে হয়তো ওটা। কিন্তু এটা দেওয়ার কোনো ইচ্ছা ওর নেই। পুঁটিকে ভয় দেখানোর জন্য ওটা দরকার। তাছাড়া লোকটা ওকে বেশ ভয় দেখিয়েছে। তার দায়ে এটা জরিমানা ধরতেই পারে ও। মুখে‌ বললো,

-আপনে আমার মুখে গেন্জির ঘামওয়ালা পানি ছিটাইছেন না? এই উড়তে জানা চেরাগ ওহন আমার! এইডা আর ফেরত পাইবেন না!

উড়তে জানা চেরাগ শুনে সেকেন্ডদুই থেমে রইলো রাকীন। অর্থ বুঝে উঠেই শব্দ করে হেসে দিলো ও। খই কপাল কুচকে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে। অন্ধকার থাকলেও মোবাইলের আলোতে রাকীনের চেহারা স্পষ্ট দেখা যায়। হাসিটা অমায়িক সুন্দর লোকটার। তবে কাজ ততোটাই পচা। ওর মুখে টিশার্টের পানি ছুড়েছে! সরু চোখে তাকিয়ে থেকে রাকীনের হাসি দেখলো কিছুক্ষন। তারপর গা ছাড়া ভাবে,ড্রোন হাতে নিয়ে পা চালালো বাড়ির দিকে। আচমকাই হাত থেকে উচুতে উড়ে উঠলো ড্রোনটা। খই “আল্লা গো!” বলে কয়েকপা পিছিয়ে গেলো। পেছন থেকে রাকীন ড্রোনের রিমোট কন্ট্রোলার দেখিয়ে বললো,

-ওটা জ্বী’নের চেরাগ মেয়ে! এতো সহজে হাতে আসবে না তোমার!

রণমূর্তি হয়ে কোমড়ে দুহাত দিয়ে দাড়িয়ে রইলো খই। রাকীন দাঁত কেলিয়ে ড্রোনটা নিজের কাছে নিয়ে বললো,

-দেখেছো? আমার চেরাগ শুধু আমার কথা শোনে। ও যাবে না তোমার কাছে। ওর আর ওর‌ মালিকের নাম বিকৃতির পরিনতি!

খই এগিয়ে গিয়ে রাকীনের কাধে থাকা টিশার্টটা ছিনিয়ে নিলো। বেতের কাটা ছিড়ে কয়েকটা আঁচড়ে ওটার বুকের দিকটা ছিন্নভিন্ন করে দিলো এক নিমিষে। রাকীন হা হয়ে দাড়িয়ে রইলো শুধু। যেনো ওকে খই ঠিকমতো মোবাইলের আলো ধরতে বলে দাড় করিয়ে রেখেছে। খই কাজ শেষে টিশার্টটা আবারো রাকীনের কাধে ঝুলিয়ে দিয়ে বললো,

-আমার মুখে এইডার পানি ছোড়ার পরিনতি!

হনহনিয়ে অন্ধকার ভেদ করে চলে গেলো খই। যেনো এই ঘুটঘুটে রাত ওর রাগের কাছে কিছুইনা। রাকীন ওর আধারে মিলিয়ে যাওয়া দেখলো স্তব্ধ চোখে। খই‌ চোখের আড়াল হতেই,রোবটের মতো কাধ থেকে টিশার্টটা নামিয়ে সামনে মেলে ধরলো ও। টিশার্টের কাটাছেড়া জায়গাটা আবারো এক পুরোনো স্মৃতিকে জাগিয়ে দিলো যেনো। ঠিক এভাবেই
কেউ একজন ওকে পরিনতি বুঝিয়েছিলো। তাকে আর তার অনুমতিকে উপেক্ষার পরিনতি। রাকীনের গলা দিয়ে শুধু জড়ানো আওয়াজে বেরোলো,

-খেয়া!

সকালসকাল ডোরবেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙলো মিষ্টির। ধরফরিয়ে উঠে বসলো ও। বিছানার সামনেই পিয়ালী পড়ার টেবিলে বসে পড়ছে। মিষ্টির মনে পরলো,আগের রাতে প্রাপ্তর কথায় এ বাসায় এসেছিলো ও। পিয়ালীর সাথেই ঘুমিয়েছিলো। প্রাপ্ত আসা অবদি থাকার কথা ছিলো ওর। এটা নতুন নয়। গতরাতে অনেকক্ষন অপেক্ষা করেছে ও প্রাপ্তর জন্য। আসেনি। তারপর কখন ঘুমিয়ে গেছে,মিষ্টি নিজেও‌ জানে না। পিয়ালী বই থেকে মুখ তুলে বললো,

-দেখেছো মিষ্টি আপু? নবাবপুত্তর এতোক্ষনে এসেছে!

মিষ্টি ঠিকঠাক হয়ে উঠে দাড়ালো। এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলো ও। বাইরে একটা গিটারের ব্যাগ কাধে নিয়ে প্রাপ্ত দাড়িয়ে। কপাল কুচকালো মিষ্টি। প্রাপ্তর হাতে হকিস্টিক,ব্যাট,স্ট্যাম্প ছাড়া গিটারের ব্যাগও শোভা পায়,জানা ছিলো না ওর। প্রাপ্ত ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো,

-খেয়েছিস কিছু?

-ন্ না। কিন্তু তুই…

-আচ্ছা পনেরোমিনিট দে আমাকে। খাবার বানাচ্ছি,খেয়ে একেবারে মিষ্টিঘর বা হসপিটাল,যেখানে যাবার চলে যাস। ওকে?

গিটারের ব্যাগ দেয়ালে ঠেকিয়ে প্রাপ্ত কিচেনে চলে গেলো। এ্যাপ্রোন গায়ে জরিয়ে রান্নায় ব্যস্ত হয়ে পরলো নিজের মতো। মিষ্টি কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলো না। শুধু প্রশ্নবোধক চাওনিতে তাকিয়ে রইলো প্রাপ্তর দিকে। প্রাপ্ত রান্নায় মনোযোগ রেখে বললো,

-রাকা কোথায় থাকে রে মিষ্টি?

রাকা নামটা চেনাজানা মনে হলেও মানুষটা কে,তা ঠিকমতো মনে করতে পারলো না মিষ্টি। বললো,

-কোন রাকা?

প্রাপ্ত চাকুতে টমেটো কাটছিলো। মিষ্টির দিকে একপলক তাকিয়ে আবারো নিজের মতো করে ব্যস্ত থেকে বললো,

-রকস্টার ইচ্ছের ফ্রেন্ড রাকা।

মিষ্টি বিস্মিত না হয়ে পারলো না। প্রাপ্ত ইচ্ছের নাম এখনো মনে রেখেছে? এর কারন কি ওর চড়দুটো? গিটারের ব্যাগের দিকে তাকালো মিষ্টি। ওর মাথায়ই ঢুকছে না ঠিক কি করেছে,বা করতে চাইছে প্রাপ্ত। প্রাপ্ত বললো,

-কিছু জিজ্ঞাসা করলাম তোকে।

-ও মেবি ব্লক টু তে থাকে।

প্রাপ্তর হাত থামলো কয়েক সেকেন্ডের জন্য। সেটা লক্ষ্য করে মিষ্টি বললো,

-হঠাৎ ওর কথা জিজ্ঞাসা করলি যে?

-এমনি।

মিষ্টি চুপ করে প্রাপ্তকে পরখ করলো কিছুক্ষন। কি ভেবে তাচ্ছিল্যে হেসে বললো,

-তোর কোনোকাজ উদ্দেশ্যহীন না,এটা আমি খুব ভালো করেই জানি প্রাপ্ত। তাই তোর এই এমনি কথাটা কয়েকবার ভাবতে হলো আমাকে।
যাকগে! ইচ্ছের সাথে আর কোনো বাজে পরিস্থিতি তৈরী করিস না প্লিজ। মেয়েটা বাইরে যেমনই হোক,মনটা একদম নরম। কেনো যেনো মনে হয়,কোনো এক খোলকে মুড়িয়ে রেখেছে নিজেকে। যেনো আসল রুপটা কাউকে দেখানোর ইচ্ছে নেই ইচ্ছের!

প্রাপ্ত গিটারের ব্যাগের দিকে তাকালো। ওর ভাঙা গিটারের সেইম ডিজাইন এটা। বেশ পুরোনো ডিজাইন বলে খুজে পেতে অনেকটাই ঝামেলা পোহাতে হয়েছে ওকে। তাই‌ রাতে বাড়ি ফিরতে পারেনি। কিন্তু প্রাপ্ত এখনো জানে না কেনো এতোসবকিছু করলো ও? অনুশোচনায়? কিন্তু অনুতপ্ততায় তো ভয় থাকার কথা না। মিষ্টির কথায় কেনো যেনো অদ্ভুত ভয় হতে শুরু করেছে প্রাপ্তর। কোনোভাবে এই ইচ্ছে মেয়েটার আবেগ খুজতে গিয়ে,ওর সে খোলককে ভেদ করে ফেলেনি তো ও?
#প্রেমনোঙর_ফেলে
#লেখনীতে: মিথিলা মাশরেকা

১২.

কাধে গিটারের ব্যাগ নিয়ে খোলা চুলগুলো সিড়ি নাড়াচাড়া করতে করতে সিড়ি দিয়ে নামছিলো ইচ্ছে। ডাইনিং টেবিলে বসে ওকে দেখেই তিক্ততায় ভরে উঠলো নাফিজা বেগমের ভেতরটা। মেয়েটা তেমন আহামরি সাজগোজ করে না কখনোই। করার ইচ্ছে নেই ওর। টপস্,জিনস্,হাইহিল,খোলাচুল,চোকার সাজগোজ বলতে এ অবদিই। তারপরও এ মেয়ের মতো রুপবতী খুব কম মেয়েই দেখেছেন নাফিজা বেগম । মা মারা যাবার পর থেকে ইচ্ছে কোনোদিন নিজেকে নিয়ে ভেবেছে কিনা সন্দেহ আছে। তারপরও বাইরে থেকে দেখে মনে হবে সে তার দুনিয়াতেই মগ্ন। হয়তো এই কঠোরতাই ওকে টিকিয়ে রেখেছে পৃথিবীতে। নওশাদ সাহেব মেয়েকে বেরোতে দেখে বললেন,

-খেয়ে বেরোও ইচ্ছে?

ইচ্ছে চোখ তুলে বাবার দিকে তাকালো। তারপর চোখ বুলালো ডাইনিংয়ে থাকা হরেকরকমের খাবারের দিকে। নাফিজা বেগমের দিকে তাকিয়ে ঠোট টিপে হেসে বললো,

-খাবো এস এম?

-আমাকে জিজ্ঞাসা কেনো করছো ইচ্ছে? এটা তো তোমারই বাসা। না খেয়ে কেনো বেরোবে তুমি? এসো? ব্রেকফাস্ট করে বেরোও?

নাকটা ডলে হাসি আটকালো ইচ্ছে। বাবার সামনে এই মহিলার নাটক দেখলে খুব হাসি পায় ওর। নওশাদ সাহেব বললেন,

-ইচ্ছে? এসো? একসাথে ব্রেকফাস্ট করি আজ আমরা?

ইচ্ছে একটা জোরে শ্বাস ছাড়লো। তারপর কাধের সাইডব্যাগটা থেকে ফোন বের করে কাউকে কল‌ লাগিয়ে বললো,

-রেস্ট্রুরেন্টে দেখা করছি। ব্রেকফাস্ট ওখানেই করবো। আই’ল সেন্ড ইউ দ্যা লোকেশন।

নওশাদ সাহেব বিস্ময়ে বললেন,

-তোমাকে খেয়ে যেতে বললাম ইচ্ছে। আর তুমি রেস্ট্রুরেন্টে কারো সাথে মিট করার কথা বলছো?

ইচ্ছে নাফিজা বেগমের দিকে তাকালো। এই মহিলাকে নাটক করার জন্য সুযোগ করে দিতে বেশ মজা পায় ও। বাবার চোখে ঠিক কতোটা নিচ করতে পারে ওকে,সেটা দেখতেও ওর মজা লাগে। তবে এতোসবের মধ্যেও নওশাদ সাহেব উভয়পক্ষকে সামলে কিভাবে চলেন,সেটাও ওর কাছে আশ্চর্যের বিষয়। ও তো মনেপ্রানে চায় এ বাসা থেকে চলে যেতে। শুধু নওশাদ সাহেবের অনুরোধের জন্যই রয়ে গেছে। টমি দৌড়ে এসে ইচ্ছের পা ঘেষতে শুরু করেছে। ওকে কোলে নিয়ে একটু আদর করে দিলো ইচ্ছে। বাবার দিকে ফিরে বললো,

-টমিকে রাতে খাইয়েছো। ও সকালে খেয়েছে কিনা,খাবে কিনা,সেই খোজ নেওয়া তোমাকে মানায় বাবা। আমি রাতে খেলাম কি খেলাম না সে খোজ না নিয়ে,সকালে ব্রেকফাস্ট করার জন্য জোরাজুরি করা তোমাকে মানাচ্ছে না। আসছি।

ইচ্ছে বেরিয়ে গেলো। বিমুঢ় হয়ে ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলেন নওশাদ সাহেব। কিসের সাথে নিজেকে তুলনা করে গেলো ইচ্ছে? অবশ্য ভুল কিছু বলে গেলো কি? সত্যিই তো! নিজের একমাত্র মেয়ের প্রতি কোন দায়িত্বটা পালন করতে পেরেছেন উনি? না ইচ্ছে সুযোগ দিয়েছে,না উনি কখনো সামলাতে পেরেছেন। নাফিজা বেগম পাশ থেকে বলে উঠলেন,

-ইচ্ছে তো কোনোদিনও আমাকে বোঝে নি নওশাদ। জানিনা তোমার প্রতি কিসের এতো অভিযোগ ওর। বাবার আদর পেয়েও তাকে উপেক্ষা করছে। আর ওদিকে আমার মেয়েটা…

নাফিজা বেগম শক্ত হয়ে বসে। টপটপ করে পানি ঝরছে তার চোখ থেকে। নওশাদ সাহেবের অসহায়বোধ বরাবরের মতো তীব্র থেকে তীব্রতর হতে লাগলো।
বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে বেরোলো ইচ্ছে। ড্রাইভ শুরু করে চেয়েছিলো রাকীনকে কল করবে। তার আগেই ফোন বেজে উঠলো ওর। নম্বরটা রাকার। কানে গোজা ব্লুটুথে কল রিসিভ করলো ইচ্ছে। ওপাশ থেকে রাকা বললো,

-ঘুম থেকে এক্সাক্টলি কয়টায় উঠিস তুই ইচ্ছে? এই মোবাইল ফ্লাইট মোড ঠিক কয়টায় নেটওয়ার্ক কভারেজ এরিয়ায় ল্যান্ড করে রে?

ইচ্ছে হাসলো। বললো,

-কি বলবি বল।

-কোথায় তুই?

-সবে বেরিয়েছি বাসা থেকে।

-কোথাও যাচ্ছিস?

-হুম। মিউজিক একাডেমিতে।

-ওখানে কেনো?

-কিছু সার্টিফিকেটস্ কালেক্ট করার আছে। আর একটা ওপেন কনসার্টও আছে। ওখানে পার্টিসিপেট করবো ভাবছি।

রাকা বিরক্তি নিয়ে বললো,

-ওপেন কনসার্ট? তুই ওপেন কনসার্টে গাইবি?

-কেনো? কোনো সমস্যা?

-তোকে হায়ার করবে বলে অর্গানাইজেশনস্ চেকবুক সাইন করে বসে আছে ইচ্ছে। ওরা তো তোকেই এমাউন্ট বসিয়ে নিতে বলে। আর তুই‌ কিনা যাচ্ছিস ওপেন কনসার্টে গাইতে? যেখানে গানের গ না জানা সাধারন জনগন গাইবে,সেখানে? লাইক সিরিয়াসলি?

ইচ্ছে মুচকি হেসে বললো,

-আমি টাকার জন্য গাই না রাকা। আমি মানুষকে আনন্দ দেবো বলে গাই। ওপেন কনসার্টগুলোতে আমজনতা যতোটা গাওয়া নিয়ে এক্সাইটেড থাকে,তেমনি শোনার জন্যও এক্সাইটেড থাকে। এমন শ্রোতাদের সা‌মনে হুট করে স্টেজে উঠে সারপ্রাইজ দেওয়াই যায়।

মুগ্ধতা নিয়ে রাকা চুপ রইলো কিছুক্ষন। ওর আগেই বোঝা উচিত ছিলো,ইচ্ছে সবার চেয়ে আলাদা। মুখে বললো,

-কনসার্টটা কোথায়?

-ড্রাইভ করছি। পৌছে টেক্সট করছি তোকে। কেমন?

হুম বলে ফোন কাটলো রাকা। একটা ছোট শ্বাস ফেলে পাশে দাড়ানো মানুষদুটোর দিকে তাকালো। একপা উচিয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দুহাত প্যান্টের পকেটে গুজে প্রাপ্ত দাড়িয়ে। আর মাহীম সুন্দরমতো ডাইনিংয়ে বসে আপেল কামড়াচ্ছে। ঘন্টাখানেক আগে ওর বাসায় পৌছে গেছে এরা দুজন। প্রাপ্তকে দেখে রাকা আর ওর মা দুজনেই কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছে। প্রাপ্ত কথা না বাড়িয়ে রাকাকে বলে ইচ্ছেকে কল করে ওর আজকের‌ শিডিউল জানতে। ঘন্টাভর তাই ইচ্ছেকে কল করছিলো রাকা। কল রিসিভ করে লাউডে ছিলো ইচ্ছে। পুরো কথা শুনে প্রাপ্ত সোজা হয়ে দাড়ালো। রাকা নড়েচড়ে বসলো। এই মানুষটার এমন আচরন তার আচরনবিরুদ্ধ। তার উপর বিষয়টা ইচ্ছে। যে কিনা তাকে দু দুটো চড় মেরেছিলো। ভয়টা বেড়েছে রাকার। প্রশ্নগুলোও গলায় দলা পাকিয়ে গেছে। প্রাপ্ত বললো,

-কনসার্ট কোথায় হচ্ছে ম্যাসেজ পাওয়া মাত্রই আমাকে জানাবে। ওকে?

রাকা অতিদ্রুত মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ বুঝালো। প্রাপ্ত বললো,

-আমি তোমার এখানে এসেছি,এটা কে কে‌ জানবে রাকা?

-এক আল্লাহ্ আর আমরা চারজন ছাড়া আর কেউ না প্রাপ্ত ভাইয়া!

তৎক্ষনাৎ উত্তর দিলো রাকা। প্রাপ্ত এগিয়ে টি টেবিলে রাখা রাকার মোবাইলটা নিয়ে কিছু একটা করলো। ডাইনিং টেবিলের পাশে থমথমে হয়ে দাড়িয়ে আছে রাকার মা। প্রাপ্ত গিয়ে টেবিলে সাজানো ফলগুলো থেকে একটা আপেল হাতে তুলে নিলো। রাকার মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো,

-অসময়ে অজ্ঞাতচরে অনাত্মীয়ের আগমনে বিব্রতবোধ করেছেন নিশ্চয়ই? আত্মরিকভাবে দুঃখিত। পরবর্তীতে সময় করে,জানিয়ে,আত্মীয়বেশে আসার চেষ্টা করবো। গুড ডে আন্টি।

কথা‌ শেষ করে প্রাপ্ত ইশারা করলো মাহীমকে। মাহীম বললো,

-আপনার হাতে কাটা আপেল খুব টেস্টি ছিলো আন্টি। আসছি। ভালো থাকবেন।

দুজনে নির্বিকারচিত্ত্বে বেরিয়ে গেলো। অগ্নিচক্ষু করে রাকার দিকে তাকালো ওর মা। চোখ দিয়েই তার উচ্চস্বর ঝরছে। এরা আবার আসবে এ বাসায়? তারচেয়ে বড় কথা,এই ছেলে আত্মীয়বেশ ধরবে কি করে? একই প্রশ্নে রাকা নিজেও হতভম্ব। প্রাপ্তর আত্মীয়বেশ মানে?

বেলা গরাতে শুরু করেছে। আর তার অনুপাতে গাছপালার ছায়া বাড়তে শুরু করেছে চক্রবৃদ্ধি হারে। বেলাশেষে ভ্যাপসা গরম‌ে ক্লান্তদেহ নিয়ে ধুকতে ব্যস্ত সবাই। সেখানে খই আর পুঁটি উঠোনে দাগ কেটে দমছুট খেলছে অতি আনন্দে। সাহেরা গেছে কাছারীবাড়িতে। রাতের রান্না করে দিতে। খেলতে খেলতে পুঁটি বলে উঠলো,

-ও বুবু? জানো? কাছারিবাড়ির পশ্চিমের পুকুরডার ধারে যে গাব গাছডা আছে না? আয়হায় ওই গাছের গাব তো পাইকা হলুদ হইয়া আছে! তুমি ওহনো দেহো নাই ওইগুলান?

খই ভাঙা পোড়ামাটির টুকরো দিয়ে মাটিতে দাগ কাটছিলো খুশিমনে। পুঁটির পা পরেছিলো দাগে। মানে ওর খেলা কাটা যাবে একবার। ওর সে খুশিটা সইলো না পুঁটির। মনে করিয়ে দিলো বাড়ির বাইরের কথা। ওর কথায় খই গাল ফুলিয়ে তাকালো ওর দিকে। বললো,

-মায়ে আমারে কাছাড়িবাড়ি যাইতে বারন করছে। শুনোছ নাই তুই?

-হ! শুনছি তো! আর বুঝছিও! এল্লাইগাই গাবগুলান ওহনো গাছে আছে। তোমার আঁচলার গোছায় না! ভাবতাছি আইজা আমি পর খুশবু মিল্লা যামুনে। যা স্বাদ একেকটা বিচির! আহ্!

তৃপ্তির স্বর তুললো পুঁটি। খই রাগে উঠে দাড়িয়ে গেলো। বললো,

-যাইবি যা! আমারে শুনাস ক্যান?

-ওমা! তোমারে না কইলে কেমনে চলবো? ওই গাছ কাছাড়িবাড়ির কম,তোমারি তো আগে! তো তোমার অনুমতি নেওন লাগবো না? তয় তুমি অনুমতি না দিলেও আমি যায়ুম। সবগুলা ফল আইনা ঘরে তুলুম। কাচাগুলান গুড়ায় মজায়া হলুদ বানামু। তারপর ওগুলান নিয়া…

-পুঁটি! থাম কইলাম!

খই হাতে থাকা মাটির খোপড়া রাগ নিয়ে ঢিল ছুড়লো মাটিতে। কয়েকটুকরো হয়ে গেলো ওটা।পুঁটি যেনো পৈশাচিক আনন্দ পেলো। খইকে আরো খেপিয়ে দিতে দাত কেলিয়ে বললো,

-ও গাছের গাবগুলান এ বছর বুঝি তোমার জিবে জুটলো না গো বুবু। ইশ্ কি…

খই ধাক্কা মেরে পুঁটিকে মাটিতে ফেলে দিলো। ধুলোতে মাখোমাখো হয়ে গেছে পুঁটির সারা শরীর। রাগে কাপতে কাপতে খই বললো,

-ওই গাছের সব গাব আমার! শুইনা রাখ! তর আর খুশবুর আগে যাইয়া যদি সব ফল পাইড়া না আনি,আমিও খই না!

আঁচল কোমড়ে গুজে দিয়ে হনহনিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসলো খই। মায়ের ভয়ে সড়কপথে না গিয়ে আলপথ ধরে সোজা পৌছালো কাছাড়িবাড়ির পেছনের পুকুরপাড়ে।
আশপাশ তাকিয়ে দুচারটে গরুচড়ানো রাখাল ছাড়া তেমন কাউকেই দেখতে পেলো না ও। গাছের নিচেরডাল ধরে লাফিয়ে সবে একডালে চড়েছে,নিচ থেকে বিনুনিতে টান পরলো ওর। সবেই তো দেখলো কেউ নেই,হঠাৎ করে ওর বিনুনি টানবে কে? প্রশ্নের উত্তরের খোজে ঘাড় নামিয়ে নিচে তাকাতেই চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম খইয়ের। ওর বিনুনি একহাতের আঙুলে পেঁচিয়ে আরেকহাতে মোবাইল স্ক্রলিংয়ে ব্যস্ত মানুষটা অন্য কেউ নয়,আগেররাতে ওর কাছে জ্বী’ন সম্বোধন পাওয়া সে মানুষটা। রাকীন!

#চলবে…
#চলবে…

[ রিচেইক হয়নি আজও। ক্ষমাপ্রার্থী ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here