প্রেমময়নেশা 💙 পর্ব ৪৯(The story of a psycho lover)

#প্রেমময়নেশা( The story of a psycho lover)
#পর্ব-৪৯( রহস্যে উন্মোচনের পথে)
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
অয়ন কিছু ফাইল ঘাটছিলো।আজ অফিসের তার প্রথম দিন। তখনি তার ফোন বেঁজে উঠে। এই সময় আবার কে ফোন করলো।অয়ন কিছু না ভেবে ফোনটা রিসিভ করে নিলো।
ফোনে রিসিভ করার সাথে সাথেই অয়ন খানিক্টা কেঁপে উঠলো। রাগে তার শরীর কেঁপে যাচ্ছে।
হাত দিয়ে সে কাঁচের গ্লাস টা চেপে ধরলো।
গ্লাসের ফেটে কাঁচগুলো অয়নের হাতে ঢুকে রক্তাক্ত করে দিচ্ছে। কিন্তু তাতে তার ভ্রুক্ষেপ নেই।
সে শুধু প্লান সাঁজাতে ব্যস্ত!!

সে ফোনটা আচাড় মেরে ফেলে দিলো।

তার ঠোটজোড়াও বড্ড কাঁপছে।

সে যেনো সবকিছু ভষ্ম করে দিবে। দিবে সব ছারখার করে।

তার কলিজায় আঘাত করা হয়েছে সে কি এতো সহজে ছেড়ে দিবে??

অয়ন দ্রুত বেড়িয়ে পড়ে।

অয়নকে এইভাবে হন্তদন্ত হয়ে ছুটতে দেখে অফিসের প্রায় সবাই অবাক!!

অনেক্ষন হয়ে গেলো। এখনি বাস ছেড়ে দিবে।
কিন্তু রিমির কোনো দেখা নেই।
সেই যে একটা চার্জার আনতে গিয়েছিলো এখনো ফিরেনি।

সবাই বিরক্ত।

টিনাঃ এই রিমি কিছু না কিছু করে আমাদের মাটি করেই দেয়।

সায়াঃ একদম। ওর জন্য আমরা একটু ঘুরতেও পারিনা। এখনো আমাফের কনফারেন্স টা ও শেষ করতে পারি না একটা না একটা ঝামালা করার জন্য রেডি হয়েই থাকে।

লিসাঃ এইভাবে বলছিস কেন???
ও তো আর ইচ্ছে করে করেনা।

নিশ্চই কোনো না কোনো প্রব্লেম আছে।

এমনও হতে পারে কোনো বিপদে পড়েছে।

টিনা মুখ বাঁকা করে বলে উঠে—
সবসময় আমাদের প্লেন বেস্তে দেওয়ার জন্যই উনাকে বিপদে পড়তে হয়।

অন্যদিকে আমানের বিষন চিন্তা হচ্ছে।
তার রিমিপাখির কোনো বিপদ হলো না তোহ??

বড্ড চিন্তা হচ্ছে আমানের। নাহ এইভাবে বসে থাকলে চলবে নাহ।

আমান উঠে পড়ে যাওয়ার জন্য তখনি আরেকজন

প্রফেসর এসে বলে উঠে–

কোথায় যাচ্ছেন??? আমান স্যার্??

আমানঃ আমাকে যেতে দিন নিশ্চই রিমির কোনো ক্ষতি হয়েছে। আমাকে যেতে হবে।

টিনাঃ তাহলে আজকেও আমাদের ঘুরতে যাওয়ার প্লেন কেন্সাল???

সায়েরিঃ এই রিমি মেয়েটার জন্য কি আমরা একটু ঘুরতেও পারবো নাহ।

এদের কথা শুনে আমাদের কীরকম রিয়েক্ট করার উচিৎ বুঝতে পারছেনা।

আমানঃ একটা মানুষের থেকে ঘুরতে যাওয়া বেশি ইম্পোর্টেন্ট। বাহ
( চিৎকার করে)

আমানের চিৎকারে সবাই কেঁপে উঠে।
আমান প্রচন্ড রেগে আছে।
আমানকে এইভাবে আগে কখনো কেউ দেখেনি।

আমাম আবারও ধমক দিয়ে বলে উঠে–

আপনাদের মনষ্যত্ব দেখে সত্যি আমি অবাক! এই মনষ্যত্ব নিয়ে আপ্নারা ডক্টর হবেন??

আরেকজন প্রফেসর বলে উঠেন–

আমান স্যার আপনি শান্ত হোন।

আমান এখনো রাগে ফুসছে। এম্নিতেই তার রিমিপাখি কোনো বিপদে আছে কিনা সে জানে না।
তার মধ্যে এইসব কথাতে তার মাথাটাই হ্যাং হয়ে গেছে।

আমান বলে উঠে–
কাউকে যেতে হবেনা
আমার রিমিপাখিকে আমিই খুঁজে নিবো।

সবাই নিজেদের মতোই ঘুরোক। কাউকে চিন্তা করতে হবেনা।

আমান গটগট করে বেড়িয়ে যায়।

সবাই অবাক!! কি হলো এ কোন আমান???

টিনাঃ আমার রিমিপাখি??মানে

লিসাঃ এইটা কি বলতে হয় নাকি??

আমান স্যার সেই কবে থেকে রিমিকে ভালোবাসে।

টিনাঃ কিহ??

সায়েরিঃ স্যারের আচরনেই তা প্রকাশ পেয়ে যায়।

আমান গাড়িতে উঠতে যাবে তখনি খেয়াল করে টকোপি দৌড়ে চলে আসে তার কাছে।

আমানঃ কিরে তুইও যাবি রিমিপাখিকে খুঁজতে??

টকোপি এমনভাবে ইশারা করে যার মানে সেও রিমির জন্য বড্ড চিন্তিত।

আমানের টকোপির ভাষা বুঝতে দেরী হয়না।

আমানঃ আমিতো জানি তুই রিমিপাখিকে কত্ত ভালোবাসিস!!
আয় টকোপি!!

.
🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿

এদিকে চারিদিকে নিস্তবতা। আমার কপালের রক্ত বেয়েই পড়ে যাচ্ছে। শরীর দুর্বল লাগছে।
ঠোটের কিনারার রক্ত খানিক্টা শুকিয়ে গেছে।
পায়ে এখনো কাঁচের টুকরো ঢুকে রয়েছে।
আমি আর সহ্য করতে পারছিনা।

মনে হচ্ছে এখনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলবো।

আচ্ছা উনি কি আসবেন নাহ?
নাহ আমি জানি উনি আসবেনই
।।।।
বড্ড পানির খেতে ইচ্ছে করছে। আমার যে শরীরে আর জোড় নেই।

আমি আশেপাশে তাঁকিয়ে দেখলাম কোথা ও পানি আছে কিনা না কোথাও নেই।

আমি চেয়ারের কিনারে হেলে পড়লাম।

অয়ন গাড়ি জোড়ে ব্রেক করে একটা বাংলোর সামনে থামালো।

তার হাত-পা রাগে কাঁপছে।

বাইরে ইশানের চ্যালারা ছিলো যারা বাংলোর বাইরে পাহাড়া দিচ্ছিলো।

অয়নকে দেখে তারা প্রত্যেকে ভয় পেয়ে গেলো।

একজন তাড়াতাড়ি ইশান কে কল করে।

ইশান আর পায়েল বিয়ার খেয়ে যাচ্ছে।

তখনি ইশানের ফোনে কল আসে।

ইশান ফোনটা রিসিভ করে বলে উঠে–

ওয়াট??
ওকে তোরা ওকে আটকে রাখ!

পায়েলঃ কি হলো ইশান???

ইশানঃ অয়ন এসেছে।

পায়েলঃ মানে কি এইসব এর?
অয়ন এইখানে কীভাবে আসতে পারে??

ইশানঃ আমি নিজেও বুঝতে পারছিনা।

অয়ন সামনে যাবে তার আগেই

কিছু লোক অয়নকে আটকিয়ে দেয়।

—আপ্নি কোথায় যাচ্ছেন???
আমাদের বসের পারমিশন৷ ছাড়া ভিতরে যাওয়া নিষেধ।

অয়নঃ আমাকে যেতে দে
নাহলে তোদের এমন অবস্হা করবো
বুঝতেও পারবিনা।
(শান্ত গলায়)

—-আবে কে রে তুই???
যে তোকে ভয় পেতে হবে

অয়নঃ তাহলে তোরা আমাকে যেতে দিবিনা তাই তো??

—নাহ আমাদের বসের পারমিশন ছাড়া কোথাও যেতে

অয়ন বাঁকা হেঁসে বলে উঠে–
ওকে লেটস স্টার্ট!!
ফর গেম।

এই বলে অয়ন তার শার্টের হাত ফ্লোড করতে থাকে।

অয়নঃ দেখি এইবার আমাকে কে আটকায়।

ইশানের লোকেরা অয়নকে মারতে গেলো

অয়ন সবকটাকে একসাথে মেরেই যাচ্ছে।

একজন অয়নকে আঘাত করতে নিলে

অয়ন তাকে কনুই দিয়ে সজোড়ে আঘাত করে।

সে ছিটকে পড়ে যায়। আরেকজন কে সজোড়ে লাথি মেরে দেয়।

আরেকজন কে বুকে আঘাত করলো।

আরেকজন অয়নকে পিস্তল দিয়ে পিছনে ভারি দিতে যাবে৷ তার আগেই

অয়ন পিছন দিয়ে পিস্তল টা নিয়ে নেয় তার কাছে
তার হাত মোচড় করে
পিস্তল দিয়ে মাথায় সজোড়ে আঘাত করে।

জিম করা বডি তার। মারপিট এ সবসময়ই অয়ন একটু বেশিই এক্সপার্ট।

সবাইকে মেরে প্রায় আধমরা করে দিয়েছে অয়ন।

সবাই মাটিতে পড়ে আছে।

অয়নঃ ইশান খান সাহস থাকলে বেড়িয়ে
আয়।কিসব দুধের শিশুদের
আমার কাছে পাঠাচ্ছি। শেষমেষ অয়ন চৌধুরীকে মারার জন্য এইসব চ্যালাদের পাঠাচ্ছিস???
যারা আমার একটু টাচ ও করতে পারলো নাহ।

হুহ!!

তখনি এক্টক বুলেট আসে।
অয়ন নীচে নেমে যায়।

বুলেট টা গিয়ে গাছে বেধ করে সোজা গাড়ির কাঁচে লাগে।

অয়ন পকেটে হাত রেখে বলে উঠে–

বাহ কেয়া শুট হে।

সামনে থেকে মারারও সাহস নেই।

তখনি বেড়িয়ে আসে ইশান ও পায়েল।

পায়েল দেখে যে অয়ন একটুও অবাক হয়নি তা তার চোখ-মুখে স্পষ্ট।

ইশানঃ তাহলে অয়ন তোর সব তাহলে মনে পড়ে গেছে???

অয়নঃ আমি সব কিছু ভুলে গিয়েছিলাম কখন??

(কিছুটা ভাবার ভান করে)

ইশানঃ মানে?মি.মি.

অয়নঃ আমি জাস্ট সবকিছু ভুলে যাওয়ার নাটক করেছি।

আর এইসব এর পিছনে যে তোমরাই আছো
সব জেনে গিয়েছি আমি।
আমি শুধু আয়ুশের খুনিকে ধরার জন্য
এখানে রয়ে গিয়েছিলাম এবং কারা বা কে??
আমাকে আর রিমিপরীকে আলাদা করতে চেয়েছে তাদের ধরতে চেয়েছিলাম।

পায়েলঃ আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা।

অয়নঃ আমাকে একটু এক্সপ্লেন করতে দাও!!

পায়েল অসুস্হার নাটক করে আমাদের বাড়িতে আসে। কার কথার তোর কথায়???
যাতে আমার আর রিমিপরীর মাঝে সুচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেড়োতে পারে।

তারপর যখন পায়েল বুঝে গেলো ওর গেম আমি ধরে ফেলেছি তখন একটা ইমোশোনাল লেটার পাঠিয়ে
চলে গেলো। তারপর বিয়ের দিন আমাকে হসপিটাল থেকে বলা হলো আর্জেন্ট ওটি আছে।আমি সেখানে চলে গেলাম। গিয়ে জানতে পারলাম সেটা ফর্লস।
সেইটা ডক্টর সৈকত এর কারসাজি ছিলো।
টাকার লোভে এই কাজ করেছিলো সে। আর তাকে এই কাজ করতে টাকা দিয়েছিস তুই।
আমার গাড়ির ব্রেকফেলও করিয়েছিলি তুই।
সেদিন বাংলাদেশ শুধু আয়ুশ আসিনি তুইও এসেছিলি।

ইশান হাত তালি দিয়ে বলে উঠে–।বাহ তোকে মানতে হবে অয়ন।
সবকিছুই জেনে গেলি।

অয়নঃ আচ্ছা কেন?? তুই আমাকে আর রিমিপরীকে আলাদা করতে চাইছিস??
তুই নিজের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য
পায়েল আর তুই একটা মিথ্যে খেলা খেলিছিলি।
তাহলে কেন আবার।

( আসলে পায়েল ছিলো ইশানের জিএফ। অয়নের থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পায়েল অয়নের সাথে মিথ্যে ভালোবাসার নাটক করে। যেদিন মিসেস কলি পায়েলের বাসায় বিয়ের সমন্ধ নিয়ে আসে সেদিন পায়েল ইশানের সাথে পালিয়ে যায়। যাতে পায়েলের শোকে অয়ন ধীরে ধীরে নিশ্বেষ হয়ে যায়)

ইশানঃ হা হা হা??? কারন রিমি এসে পড়েছিলো তোর জীবনে। তুই আবারও সুখের মুখ দেখছিলি যা আমার সহ্য হয়নি। বুঝেছিস হয়নি সহ্য। আমি চেয়েছিলাম অয়ন চৌধুরী একাকীত্বতে নিশ্বেষ হয়ে যাক। তাই পায়েলকে তোর থেকে কেড়ে নিয়েছিলাম।
কিন্তু আবার সেই রিমি তোর জীবনে চলে এলো।
এই পৃথিবীতে যদি আমি কাউকে সব থেকে বেশি ঘৃণা করি সেইটা হলো তোকে। আমরা তো ফ্রেন্ড ছিলাম অয়ন। তুই কীভাবে?? আমার লাইফ টা শেষ করে দিলি??

বলতে বলতেই ইশানের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো।

( অয়ন, আমান ও ইশান লন্ডনের একি মেডিকালে পড়তো। ভালো ফ্রেন্ডস ছিলো তারা)

অয়নঃ আমি একজন রেপিস্টকে তার যোগ্য শাস্তি দিয়েছি।

ইশান একটা তাচ্ছিল্যের হাঁসি দিলো।






।#লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি

#দ্বিতীয়_অধ্যায়
চলবে কি???
(ফাইটিং সম্পর্কে আমি তেমন জানি। কি যে লিখছি আল্লাহ জানে)
( আশা করি একটু হলেও এইবার রহস্য খুলেছে)
(আজকের পর্ব কেমন হয়েছে জানাবেন কিন্তু)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here