প্রেমাঙ্গনা পর্ব -০১

‘আশ্চর্য, মরার জন্য আপনি এই জায়গাটাই পেলেন?’

চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্র দেখতে ছেলেটির এমন অভদ্র কথা শুনে পৃথা বেশ ক্ষেপে গেল। মানে একটা মানুষ কতটা জ্ঞানহীন হলে, আরেকটা বিপদে পড়া মানুষের সাথে এভাবে কথা বলতে পারে। পৃথা রাগে চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে। এখন যদি তার সাহায্য না প্রয়োজন হত তবে এই ছেলেকে এক্ষুণি সে জঘন্য কিছু গালি দিত। তবে এখন তার সাহায্যের প্রয়োজন।
তাই সে তার সমস্ত রাগ সাময়িক সময়ের জন্য বর্জন করে, ভোলাভালা ভাব নিয়ে একটা হাসি দিল। অনুরোধের সুরে বলল,

‘আমাকে সাহায্য করুন, ভাইয়া। আমার হাত ছুটলেই আমি পড়ে যাব। প্লিজ, আমায় টেনে তুলুন।’

ছেলেটির এতক্ষণে হুঁশ এল। মেয়েটা কি পাহাড় থেকে পড়ে যাচ্ছিল? সে দ্রুত উঁবু হয়ে বসে পৃথার হাত দু’টো চেপে ধরে বলল,

‘আপনি আগে বলবেন না, আপনি পড়ে যাচ্ছিলেন। আমি আরো ভাবলাম আপনি বোধহয় সুইসাইড করতে এসেছেন।’

‘আপনি যে আহাম্মক, সেটা আমি প্রথমেই বুঝেছি। নয়তো এভাবে একটা মেয়েকে ঝুলে থাকতে দেখে তাকে না বাঁচিয়ে আলতু ফালতু কথা বলতেন না। আপনার মাথায় বুঝি এইটুকুও আসেনা, সুইসাইড করতে আসলে বুঝি এভাবে আমি এতক্ষণ ঝুলে থাকতাম? কবেই তো পড়ে যেতাম।’

ছেলেটি বিরক্ত হয়ে বলল,

‘শুনুন, বাজে বকা বন্ধ করুন। আপনাকে যে আমি সাহায্য করছি সেটাই বেশি, আর একটা উল্টা পাল্টা কথা বললে একদম ছেড়ে দিব। তখন এই বিশ ফুট নিচে পড়ে আপনার আর কোনো হাড়গোড় অবশিষ্ট থাকবে না, বুঝেছেন?’

পৃথা ঘাবড়ে গেল। এমনিতেই তখন থেকে ঝুলে থেকে বেচারির অবস্থা খারাপ। শরীরে এখন আর এইটুকুও শক্তি নেই যে, এভাবে আর ঝুলে থাকবে। ছেলেটা এবার হাত ছাড়লে সত্যি সত্যিই সে নিচে পড়ে যাবে। সে শুকনো গলায় বলল,

‘আমার ভুল হয়েছে, ভাইয়া। প্লিজ, আমায় উপরে তুলে নিন।’

‘ঠিক আছে ঠিক আছে। আমার হাতটা শক্ত করে ধরুন।’

পৃথা তাই করল। নিজের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে সে ছেলেটার হাত চেপে ধরল। ছেলেটাও তখন পুরো শক্তি নিয়ে তাকে টেনে তুলতে লাগল।

বেশ কষ্ট করে ছেলেটা পৃথাকে উপরে তুলে। পৃথা উপরে উঠেই মাটিতে শুয়ে পড়ে। আর ছেলেটা তার দুই হাঁটুতে হাত রেখে হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,

‘উফফ, এত ভার কেন আপনি?’

পৃথা এবার তার সমস্ত রাগ উগরে দিল। চেঁচিয়ে উঠে বলল,

‘ভারি অভদ্র ছেলে তো আপনি, একটা মেয়ের সাথে কীভাবে কথা বলতে হয় সেটাও দেখছি জানেন না। নেহাতই আমাকে সাহায্য করেছেন নয়তো আমি এখনই আপনাকে ভালোভাবে ভদ্রতা শিখিয়ে দিতাম।’

ছেলেটাও ক্ষেপল এবার। সাহায্য করেছে, কই একটু বিনয় বিনয়ের সুরে কথা বলবে তা না, মেয়ে এখানে তার তেজ দেখাচ্ছে। রাগে টগবগ করতে করতে সে বলল,

‘আপনার মধ্যে যেন সভ্যতা উপচে পড়ছে। একটা মানুষ আপনাকে প্রাণে বাঁচাল অথচ আপনি তার সাথে কী বাজে ব্যবহার করছেন। আমারই ভুল হয়েছে, আপনার মতো দু’চার টা তার ছেঁড়া মেয়ে মানুষ মরে গেলে দেশের খুব একটা ক্ষতি হতো না, বরং জনসংখ্যা কমে গিয়ে দেশের উপকারই হতো।’

পৃথা ফট করে উঠে বসল। না এভাবে শুয়ে শুয়ে আর ঝগড়া করা যাচ্ছে না। এবার ছেলেটাকে একটা কড়া কথা শুনাতেই হবে। সে ছেলেটার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দাঁতে দাঁত পিষে বলল,

‘এই যে মি. এবার কিন্তু খুব বেশি বলে ফেলছেন। সাহায্য করেছেন বলেই এতক্ষণ যাবত কিছু বলিনি। ভালোই ভালোই এখান থেকে কেটে পড়ুন, নয়তো এমন হাল করব যে আর পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে পারবেন না।’

পৃথার কথা শুনে ছেলেটা শব্দ করে হেসে ফেলল। তার হাসির শব্দে পৃথা যেন আরো বেশি জ্বলে উঠল। নাক মুখ কুঁচকে বলল,

‘হাসছেন কেন?’

ছেলেটা সেই প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পৃথার দিকে দু কদম এগুলো। পৃথা তৎক্ষণাৎ পিছিয়ে গেল। ছেলেটা আবারও এগিয়ে গেল। পৃথা আর পেছনে পা বাড়ালেই নিচে পড়ে যাবে। তার অতি নিকটে ছেলেটার উপস্থিতি টের পেয়ে হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেল যেন। সন্ধ্যা নামবে, আশে পাশে কেউ নেই। ছেলেটা আবার তার সাথে খারাপ কিছু করবে না তো? নিমিষেই সব সাহস তার উবে গেল। চোখে মুখে ছেয়ে এল বিরল ভয়। তার অসহায়ত্ব ছেলেটাও টের পেল। তাই সে মুচকি হেসে দু কদম পিছিয়ে গিয়ে বলল,

‘তেজি সিংহি মিনিটেই ভেজা বেড়াল হয়ে গেল? দেখেছেন পুরুষের কী ক্ষমতা! সবসময় সব জায়গায় তেজ দেখাতে হয় না, নয়তো পরে এই তেজই আপনার বিপদ ডেকে আনবে, বুঝতে পেরেছেন?’

পৃথা জবাব দিল না। ছেলেটা পেছন ফিরে হাঁটতে আরম্ভ করল। পৃথা কিছু না ভেবেই ছেলেটাকে ডেকে বলল,

‘শুনুন।’

আগন্তুক ফিরে চাইল। ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল,

‘কী?’

‘আমাকেও আপনার সাথে নিয়ে চলুন। আমি এখানের কিছু চিনি না।’

সে ঠোঁট ছড়িয়ে হেসে বলল,

‘এই কিছুক্ষণেই আপনি আমাকে বিশ্বাস করে ফেললেন?’

‘তাছাড়া আর উপায় কোথায়? আমি আমার গ্রুপকে হারিয়ে ফেলেছি। সাথে ফোন ব্যাগ কিছুই নেই। আশেপাশের কিছু চিনিও না। এখন আপনাকে বিশ্বাস করা ছাড়া আমার হাতে দ্বিতীয় কোনো উপায় নেই।’

‘হু, তাও ঠিক। ঠিক আছে, চলুন।’

ছেলেটা আবারও হাঁটা ধরল। পৃথা তার পেছন পেছন এগুতে লাগল। পাহাড়ের আঁকা বাঁকা পথ। তার মাঝে চারদিকের আলোও কমে আসছে। সূর্যও হয়তো ইতিমধ্যে ডুবে গিয়েছে। ছেলেটা লাফিয়ে লাফিয়ে নেমে চলছে। হয়তো পাহাড় চড়ার অভিজ্ঞতা আছে তার। কিন্তু পৃথা, সে তো ভয়ে আড়ষ্ট, পা ফেললেই মনে হয় এই বুঝি স্লিপ খেয়ে পড়ে যাবে। রাগ হচ্ছে খুব। ছেলেটা কতটা দায়িত্বহীন, তার পেছনে যে একটা মেয়ে আছে, সে ঠিক মতো নামতে পারছে কিনা, সে একবার সেটা দেখবে না? একবারের জন্যও পেছন ফিরে দেখছে না সে। পৃথা মাঝপথে এসে আটকে গেল। এবার সে যেন আর কিছুই দেখছে না। ঝাপসা চোখে কেবল তার থেকে কিছুটা দূরত্বে একটা কালো রঙের টি শার্ট গায়ে সেই ছেলেটাকেই তার দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। তার গলা কেন যেন শুকিয়ে উঠেছে। ভয়ও হচ্ছে। ছেলেটা তো দিব্যি হেঁটে চলছে তবে সে কেন পারছে না? উপায়ান্তর না পেয়ে সে আবারও ছেলেটাকে ডাকল,

‘শুনুন।’

ছেলেটা ফিরে তাকিয়ে বলল,

‘আবার কী?’

পৃথা রাগ দেখিয়ে বলল,

‘আজব লোক তো আপনি! আপনার পেছন পেছন একটা মেয়ে আসছে, অথচ আপনি একবারের জন্যও তাকে ফিরে তাকিয়ে দেখছেন না, মেয়েটা ঠিক মতো নামতে পারছে কিনা, কিংবা তার কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা? নিজের মতো করে লাফিয়ে নেমে চলছেন। আমি কি পারি আপনার মতো করে নেমে যেতে? তার উপর অন্ধকারে কিছু দেখছিও না ভালো করে। আপনার কাছে কি ফোন নেই? একটু তো ফ্ল্যাশ লাইট’টাও জ্বালাতে পারেন।’

ছেলেটা গভীর নিশ্বাস ছেড়ে বলল,

‘ফোনে যদি চার্জ থাকত তবে এভাবে আর অন্ধকারে কানার মতো নামতাম না। ফোনে চার্জ নেই।’

‘উফফ, কাজের সময় কিছুই থাকে না।’

‘হ্যাঁ, এখন আর এত কথা না বলে তাড়াতাড়ি চলুন। রাত বাড়লে বিপদও বাড়বে।’

পৃথা অস্থির হয়ে বলল,

‘আরে, আমি তো নামতে পারছি না। আমায় প্লিজ একটু হেল্প করুন।’

ছেলেটা পৃথার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,

‘সাহায্য লাগলেই কথার স্বর পাল্টে যায়। আসুন..’

এই বলে সে তার ডান হাতটা পৃথার দিকে এগিয়ে দিল। পৃথা হাতটা জড়িয়ে ধরে বলল,

‘কাউকে সাহায্য করলে এত কথা শুনাতে হয় না, তাহলে সেই উপকারের কোনো মর্ম থাকে না, বুঝেছেন?’

ছেলেটা প্রত্যুত্তর করল না। পৃথা তার হাত ধরেই নামতে লাগল।

চারদিক তখন একেবারেই নিরব। অনেক দূরে ছিটে ফোটা আলো দেখা যাচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চলের যেন ছমছম এক পরিবেশ। পাহাড়ের গা ঘেষে উঠা বাঁশ গাছগুলোতে খসখস শব্দ হচ্ছে। কোনো ভূতুড়ে পরিবেশের চেয়ে কম কিছু না জায়গাটা। তারমাঝেই দুজন তরুণ তরুণী উচু নিচু মাটির রাস্তা বয়ে হেঁটে চলছে। তাদের মুষ্টিবদ্ধ হাতের জোড়া যেন কোনো গভীর প্রণয়ের অঙ্গীকারনামা। অথচ মানুষ দুজন অপরিচিত অপরিচিতা। প্রবৃত্ত এক পথের যাত্রা যেন ক্ষীণ সুরে এটাই জানান দিচ্ছে যে, এই যাত্রা এখানেই ক্ষান্ত নয়, এই পথ সুদীর্ঘ। হয়তো এখানেই তাদের নির্বাহের পথের সূচনা ঘটল। কী জানি তার অন্তে কী আছে? শেষটা কি তাদের আদৌ সুন্দর হবে?

_______________________

অনেকটা পথ আসার পর পৃথা থামল। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,

‘আচ্ছা, রংধনু রিসোর্ট’টা এখান থেকে কতদূর?’

‘বেশি দূর না, সামনেই। কেন, আপনি কি সেখানেই উঠেছেন?’

‘হ্যাঁ।’

‘তো, এখানে আসলেন কী করে? আর এই পাহাড়েই বা ঝুলছিলেন কেন?’

পৃথা দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

‘আমি ঝুলছিলাম না, পড়ে যাচ্ছিলাম।(তারপর স্বাভাবিক হয়ে বলল) আসলে, এখানে আমি আমার বন্ধুদের সাথে একটা ট্রিপে এসেছি, আজকে দুপুরেই। হয়েছে কী, এতটা পথ জার্নি করে আসায় সবাই বিকেলে পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিল, কিন্তু এমন একটা জায়গায় ঘুরতে এসে কারোর কি ঘুমাতে ভালো লাগে, বলুন? তাই আমি একাই বেরিয়ে যায় ঘুরতে, কাউকে না জানিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে এই পাহাড়ে চলে আসি। ছোট পাহাড়, চারদিক শুনশান বলে ভালো লাগছিল। কিন্তু বিপত্তি ঘটল তখন যখন আমি বেশি আবেগ দেখাতে গিয়ে আনন্দে ঘুরতে ঘুরতে একেবারে পাহাড়ের কিনারায় চলে যাই। তখন আর বেলেন্স রাখতে পারিনি। পড়ে যাই। তবে আল্লাহ সহায় ছিলেন বলে, কোনোরকমে ঝুলে থাকতে পারি। নয়তো এখান থেকে পড়লে আজ আর আমাকে উপরে যাওয়ার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারত না। আর আপনাকেও ধন্যবাদ, আপনি সাহায্য না করলে হয়তো সত্যি সত্যিই আমার জীবন আজই শেষ ছিল।’

ছেলেটা নিশ্বাস নিল। বিরক্ত সুরে বলল,

‘এখন আপনার জন্য নির্ঘাত আপনার বন্ধুরা টেনশন করতে করতে অস্থির হয়ে পড়েছে। বেশি লাফাতে গিয়ে তাদের আনন্দটাও আপনি মাটি করলেন। রংধনু রিসোর্ট এখান থেকে তো বেশি দূরে না, আর আসার সময় তো একাই এসেছিলেন, এখন যেতে পারছেন না কেন?’

‘এখন তো অন্ধকার হয়ে গিয়েছে, আমি তো ভালো মতো কিছু দেখছিই না, যাব কী করে?’

‘রিসোর্টের আশে পাশে এত জায়গা থাকতে আপনাকে এখানেই আসতে হলো? এই জায়গাটা তো দিনের বেলাতেই একেবারে শুনশান থাকে আর রাত হলে তো একেবারে ভূতুড়ে পরিবেশ হয়ে যায়।’

‘তাহলে আপনি কেন এখানে এসছিলেন?’

পৃথার প্রশ্নে ছেলেটা রেগে যায়। বলে,

‘আপনার সাথে মরতে। একা মরতে ভয় করছিল, তাই আপনার মতো উদ্ভট এক মহিলাকে খুঁজছিলাম, একসাথে মরব বলে।’

‘এই দেখুন..’

‘আমাকে কিছু না দেখিয়ে আপনি সামনে দেখুন, একটা গাড়ি আসছে মনে হচ্ছে। লুকাতে হবে।’

‘কেন, লুকাব কেন?’

‘এমন সময় এই রাস্তায় কোনো ভদ্র লোকের গাড়ি আসে না। ওরা ডাকাতের দল হতে পারে।’

পৃথা যেন এবার ভয়ে আরো চুপসে গেল। ছেলেটার হাত সে আরো শক্ত করে চেপে ধরে বলল,

‘আমাকে বাঁচান প্লিজ, আমি এই ডাকাতের হাতে পড়তে চাই না। শুনেছি পাহাড়ি এলাকার ডাকাতরা নাকি খুব খারাপ হয়, ওরা যদি আমাকে কিছু করে বসে তবে আমার মা বাবাও আমাকে ছাড়া মরে যাবে। প্লিজ, বাঁচান আমাকে।’

পৃথা বড়ো বড়ো নখ দিয়ে ছেলেটার হাত এমন ভাবে খামছে ধরে আছে, যেন এক্ষুণি হাতের সব মাংস সে তুলে ফেলবে। ছেলেটা তার হাতের উপর হাত রেখে বলল,

‘অস্থির হবেন না, চলুন।’

সে পৃথাকে নিয়ে একটা ঝোপের আড়ালে গিয়ে লুকাল। ঐদিকে গাড়ি যত এগুচ্ছে, পৃথার মনের ভয়ও তরতর করে বাড়ছে। কপাল বেয়ে ঘাম পড়ছে তার। ছেলেটার একদম গা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে, এতে অস্বস্তি হচ্ছে দুজনেরই। কিন্তু নড়ার সাহসও পাচ্ছে না। নিজের জন্য পৃথার খুব কষ্ট হচ্ছে। কেন যে এখানে আসতে গেল, মা বাবাকে বুঝি আর শেষ দেখা হবে না তার। এখানেই বুঝি তার জীবনের সমাপ্তি ঘটবে।

চলবে…

#প্রেমাঙ্গনা
#জান্নাতুল_ফারিয়া_প্রত্যাশা
#সূচনা_পর্ব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here