প্রেম পড়শী পর্ব -২১+২২ ও শেষ

#প্রেম_পড়শী
#পর্ব_২১
#লেখনীতে_নবনীতা_শেখ
[প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত]

“অন্যসব নারীর মতো আমার হয়তো উচিত ছিল ঘটনাটা ঘটার আগেই লাগাম টেনে নেওয়া, আটকানো। কিন্তু, কার লাগাম টানব? মাহফুজের? যেই পুরুষ নিজেকে শুদ্ধ রাখতে পারে না, সেই পুরুষকে কতটা বেঁধে রাখা যায়?
অথচ সে ভুলেই গেছে, যা আমার তা আমারই; তাতে বিন্দুমাত্র অন্যের ছোঁয়া পেলে আমার আগ্রহ উঠে যায়। মাহফুজকে আমি ভালোবেসেছি। ভালোবাসা ফুরোয় না, মরে যায়। আমার আগ্রহের সাথে ভালোবাসাটাও পুরোপুরি উঠে গিয়েছে। যে অন্যমুখো একবার হয়েই গিয়েছে, তাকে এমুখো করার ইচ্ছেটা আমার নেই। শুধু একটাই চাওয়া থাকে সর্বদা, কোনো মেয়েই যেন কাউকে সর্বস্ব দিয়ে ভালো না বাসে। অপাত্রে পড়ে গেলে, ভালোবাসা মন্দবাসা হয়ে যায়।”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
৭ জানুয়ারি, ২০১৭

“মেয়েটা নির্লিপ্ত থাকে সবসময়। সবের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ছেলেটাও হৈ-হুল্লোড়ে মেতে থাকে সারাটাক্ষণ। আমি লক্ষ্য করেছি, দুটো মানুষ হয়েছে একে অন্যের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। মোহ নিরামিষভোজী, মেজবাহর খাবারের পাতে আমিষের ছোঁয়া না হলে চলেই না। মোহ শান্ত, কোমল! মেজবাহ রণচণ্ডী, অশান্ত। মোহ ইন্ট্রোভার্ট, মেজবাহ এক্সট্রোভার্ট। মোহ পড়াশোনায় তুমুল আগ্রহী, মেজবাহ নিজস্ব কার পাওয়ার লোভে পড়ে ইঞ্জিনিয়ারিংটা কম্পলিট করল। মোহর বন্ধু নেই, মেজবাহ যেখানেই যায়—বন্ধু বানিয়ে ফেলে পলক ফেলতেই। মোহ নিম্নস্বরে কথা বলতে পছন্দ করে, হাসে কম। মেজবাহ সবচেয়ে নিচু আওয়াজে কথা বললেও অন্য রুম থেকে শোনা যায়।
এদের মধ্যে কেবল একটা জিনিসই সম্ভব। তা হচ্ছে নেগেটিভ অ্যাট্রাকশন। সবচেয়ে ক্ষতিকর, সবচেয়ে শক্তিশালী। আমি অপেক্ষায় আছি।”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

“আজ মাহফুজ সিঙ্গাপুর থেকে ফিরল। ওকে না জিজ্ঞেস করেই, স্বভাববশত ওর ব্যাগ খুলেছিলাম। দেখতে পেলাম কিছু চকোলেট আর কিছু খেলনা আলাদাভাবে রাখা। দ্বিতীয়বার ওদিকে না তাকিয়ে ব্যাগটা আটকিয়ে ফেললাম। আমার জিনিসে ভাগ বসেছে, ১০ বছর হলো। কে বলবে—শেফা হিংসুটে? কে বলবে—শেফা শেয়ার করে না কোনোকিছুই?”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
২৭ মার্চ, ২০১৭
পুনশ্চঃ বললেও সমস্যা নেই। শেফা আসলেই শেয়ার করে না। সম্পূর্ণ দান করে দেয়।

“মেজবাহ জানাল, ও পারিবারিক ব্যবসায় আসতে চায়। অবাক হলাম প্রায় সকলেই। সঙ্গে খুশিও হলাম ভীষণ। সে নিজ দায়িত্ব বুঝতে শিখছে।”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
৯ নভেম্বর, ২০১৮

“আজ হুট করে মোহ আমাকে জানায়, সে বিয়ে করতে চায়! মেজবাহকে! এটা হওয়ারই ছিল, এজন্য অবাক হইনি। অবাক হয়েছি ঘটনার আকস্মিকতায়। মেয়েটার মাঝে আমি দৃঢ়তা দেখেছি। কী সুন্দর!”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
১৩ মার্চ, ২০১৯

“সময় বদলায়, অনুভূতিরাও বদলায়। শুধু থেমে থাকে মানুষ। ঠিক সেইখানেই, যেখানে তার অনুভূতিদের হত্যা হয়েছিল। ইশ! সাক্ষী নেই, শাস্তি নেই।”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
১১ আগস্ট, ২০২০

“মাহফুজ রাতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। কান্না করে। ক্ষমা চাইতে চায় বোধহয়। ফিসফিসিয়ে মাঝে মাঝে কেঁদে কেঁদে সরি বলে ওঠে। ওর জানামতে আমি রাতে ঘুমের ওষুধ নিয়ে ঘুমাই, তাই এত কিছুতেও জাগি না। ওর জানায় কিঞ্চিৎ ভুল আছে। ঘুমের ওষুধেও আমার ঘুম আসে না। ওর প্রতিটা পদক্ষেপ আমি বন্ধরত চোখে অনুভব করতে পারি।
মাহফুজ, আমায় যদি তুমি ক্ষণিকের জন্যও ভালোবেসে থাকো, তবে তুমি আমৃত্যু কাঁদবে। তোমার চোখের জল শুকোবে তোমার আত্মার দেহত্যাগের কয়েক ক্ষণ পরে। অভিশাপ নয়, অভিশাপ নয়! এটা ভালোবাসা। ভালোবাসা কাছে আসতে শেখায়, ভালোবাসা এক হতে শেখায়। তেমনই ভালোবাসা নরকসম যন্ত্রণা শেখায়। আমায় ভালোবেসেও এমন অন্যায় করে থাকলে, তুমি সব শিখবে।”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
২ ডিসেম্বর, ২০২০

“শাশুড়িমা আমাদের সাথে এসে থাকা শুরু করেছে। সে পরিবর্তন লক্ষ করেছে। আমাকে আড়ালে শুধাল,
-‘কী হইছে?’

আমি দোষ লুকোলাম না, বরঞ্চ অনুভূতি লুকিয়ে বলে ফেললাম,
-‘তোমার ছেলেকে তোমার চেয়ে বেশি অবশ্যই আমার বোঝার কথা নয়, মা। বুঝে নাও, কী হয়েছে!’

মা বোঝেনি বোধহয়। বুঝলেও, এটা বোঝেনি—আমি জানি। ভেবেছেন, তার ব্যস্ততার উপকারার্থে মনের ভেতর অভিমান পুষে রেখেছি। আর কিছু নয়। কিন্তু ঘটনা অনেক বড়ো। ঘটনাটা ঘটার সময়সীমা এক যুগ পেরিয়েছে।”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
১৮ ডিসেম্বর, ২০২০

“ইদানিং শরীরটা কেমন যেন করে। আমি খুব করে অনুভব করছি, আমার বেঁচে থাকার সময়গুলো ফুরিয়ে এসেছে। মানুষ মৃত্যুর আগে টের পায়, খেয়াল করে না। আমি খেয়াল করেছি। খেয়াল করেছি—আমার অনেক কাজ বাকি আছে।
ভাবতে বসলাম, কী কী কাজ বাকি আছে। খুঁজতে খুঁজতে একটা কাজই পেলাম, তা হলো মোহর স্থায়ী সুখের ব্যবস্থা করা। মেয়েটার নিজের দুনিয়া বলতে, বাবা-মা-স্বামী আছে। আমি না থাকলে, বাবাকেও যে হারিয়ে ফেলবে না, এর গ্যারান্টি আমি দিতে পারছি না। শেষে মেজবাহ! মেজবাহর সাথে আলোচনা করে বিয়ের আয়োজনের ব্যবস্থা করে ফেলব।”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

“মেয়েটার দিকে আজ অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। কী সুন্দর দেখতে আমার মেয়েটা, মাশাআল্লাহ!”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
৮ মার্চ, ২০২১

“আজ মেজবাহর সাথে বিয়ে বিষয়ক কথা বলেছি। আমার খুব প্রিয় একটা তারিখ হচ্ছে অক্টোবরের ২১ তারিখটা। অকারণেই প্রিয়। আমি চাই, এই তারিখেই ওদের বিয়ের অনুষ্ঠান করতে। মেজবাহ আমার সাথে একমত। বিষয়টা নিয়ে পরে বিস্তর আলাপ হবে।”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
১৫ মে, ২০২১

“মাহফুজ, আমি কেন যেন তৃপ্তি পাচ্ছি না। তোমার অনুতপ্ততা আমায় স্বস্তি দিচ্ছে না। আজ কেন যেন খুব কান্না পাচ্ছে। আমি তোমায় কত ভালোবেসেছিলাম! কত! মাহফুজ! এ তুমি কী করলে?
যদি জন্মান্তর সম্ভব হতো, আমি পরের জন্মে পুরুষ মানুষ হতে চাইতাম। আমিও দেখিয়ে দিতাম, এক নারীকে কীভাবে ভালোবাসা যায়! আফসোস, তা হবে না!”

স্বর্ণশেফা হাওলাদার
৭ জুন, ২০২১

এরপরের পৃষ্ঠাগুলো খালি। আর কোনো শব্দ লেখা নেই। তবে আছে হাহাকার। মোহর অন্তরটা ছিঁড়ে যাচ্ছে। ডায়েরিটা বুকে জড়িয়ে দেয়ালে মাথা হেলে দিয়ে বসে আছে। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়া পানিগুলো শুকিয়ে গেছে।

ভোর ছ’টা বাজে। বাইরে তুমুল বৃষ্টি। মোহ উঠে ফ্রেশ হয়ে নিল। এলোমেলো করে রাখা সকল জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখল। তারপর এক কাপ কফি হাতে করে বারান্দায় গিয়ে বসল। শেফার শেষ লেখাটা ৭ তারিখের, আর সে মারা গেছে ৯ তারিখেই। ঠিক এ-কারণেই এরপর আর কিছু লিখতে পারেনি।

মোহ এক ধ্যানে বৃষ্টি দেখে। বৃষ্টির দিকে নিবদ্ধ চোখে পাতায় ভেসে উঠছে সে সময়কার সকল সংঘর্ষ। এত এত ভালোবাসাও মরে যায়! মোহকে যদি কেউ একটা নিয়ম তৈরি করতে দিত, তবে সে ‘ভালো না বাসা’-র নিয়ম তৈরি করত। যে যাকে ভালোবাসে, সে যেন তার হয়ে থেকে যায় আমৃত্যু, নয়তো ভালোবাসা শব্দটা পৃথিবীর বুক থেকে মুছে যাক।

_____
ক’টা দিন পেরোল। রঙ্গন দেশে ফিরল বৃহস্পতিবার ভোর ৪ টায়; যেখানে ফেরার কথা পরদিন। সোজা এ বাড়িতে চলে এলো, নাফসিনকে বলে রেখেছিল সবাই ঘুমিয়ে গেলে দরজাটা খুলে রাখতে, নাফসিন খুলে রেখেছে।

রঙ্গন শব্দহীন পায়ে মোহর রুমের সামনে চলে এলো, এক্সট্রা কী দিয়ে দরজা খুলতেই বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে পড়ল। সময় নিয়ে দেখল। পুনরায় হাতঘড়িতে সময় দেখল। ৪টা ১৫ বাজে।

দরজার আওয়াজ পেয়ে মোহ আঁচল ঠিক করে পিছে মুড়ল। পরনে লাল সুতির শাড়ি, কৃষ্ণাভ নীল ব্লাউজ। হাঁটু লম্বা চুলগুলো বিনুনি পাঁকানো। প্রসাধনবিহীন ছোটো মুখটায় ঘাম চিকচিক করছে, জ্বলজ্বল করছে সরু নাক, ঠোঁটের কিছুটা নিচে থুতনি সংলগ্ন ভাঁজ, গলা। মাঝ সিঁথি করা, ছোটো-ছোটো চুলগুলো সামনে এলোমেলো অবস্থায়। শ্বেতাঙ্গ স্কন্ধে আঁচড়ের পুরোনো দাগ, যার দায়ী ছিল রঙ্গন! রঙ্গনের চোখের পলক পড়ছে না। কোনো শিল্পীর আঁকা নিঁখুত কোনো প্রতিমার মতো দেখাচ্ছে মোহকে!

রঙ্গনকে ঘোরাচ্ছন্ন হয়ে যেতে দেখে মোহ অধর বাঁকিয়ে হাসল। বড়োই সামান্য হাসি। সূক্ষ্ম নজরে না দেখলে তা কেউ টের পাবে না। রঙ্গনের সংবিৎশক্তি ফিরল। সে ত্বরিতে বলে উঠল,
-“এই অসময়ে সেজেছ, কেন?”

মোহ আঁচলের শেষাংশ দিয়ে গলার ঘাম মুছে আবারও ক্যানভাসে মন দিলো। রঙ্গন তখন খেয়াল করল মোহর সামনের ক্যানভাসটি। মোহ একটা পেন্সিল স্কেচ আঁকছে। বোঝা যাচ্ছে না কী এঁকেছে! রঙ্গন গভীর দৃষ্টিতে মোহর আঁকা ছবিটি দেখতে পেল। একটা বাচ্চা ছেলের কোলে একটা সদ্যজাত শিশু। ছেলেটি হা করে ছোটো বাচ্চাটির দিকে তাকিয়ে আছে। আর বাচ্চাটা কাঁদছে। ছেলেটি এতে বিভ্রান্ত নয়, সে হা হয়ে দেখতে ব্যস্ত। রঙ্গন এটুকুই বুঝল।

মোহ ঠিক তখন রঙ্গনের আগের প্রশ্নটির উত্তর দিলো,
-“সাজার আবার সময়-অসময় আছে নাকি? নিজের স্বামীর জন্য মধ্য রাতে ঘুম থেকে উঠেও সাজা যায়! ক্ষণিকেই সাজ নষ্ট হয়ে যাবে জেনেও সাজা যায়।”

শেষ বাক্যটি বলার সময় মোহর ঠোঁটের কোণ ঘেঁষে হাসি ছড়াল। রঙ্গন হতভম্ব হয়ে উঠল। ভেতরে আসতে আসতে শুধাল,
-“আমি আজ আসব, জানতে?”
-“হ্যাঁ, জানতাম।”
-“কীভাবে?”
-“তোমাকে বলব না।”

মোহ আবার হাসল। মোহ এত হাসে না, অকারণে তো একদমই নয়। আর ঠিক এতেই রঙ্গনের ঘাম ঝরছে। মোহর স্কেচ কম্পলিট। এখন রঙ করা বাকি। পরে রঙ করা যাবে। একপাশে গুছিয়ে রেখে মোহ রঙ্গনকে খাটে বসাল। জানালার পর্দা সব খুলে দিলো। এসি নষ্ট হয়েছে গতদিন, ঠিক করানো হয়নি। তাই ফ্যানটা অন করল। আঁচল দিয়ে রঙ্গনের কপাল মুছে দিতে দিতে বলল,
-“ইশ! কী ঘেমে গেছ!”

রঙ্গন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মোহর দিকে। কিছু বলছে না দেখে মোহ মিটমিটিয়ে হাসল। রঙ্গন অনেকটা সময় চুপ থেকে শুধাল,
-“সত্যিটা বলবে? কী হয়েছে? এত রাতে ঘুমোওনি কেন?”

মোহ রঙ্গনের কাঁধে হাত ঝুলিয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ডান হাত দিয়ে চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বলল,
-“তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।”
-“তোমাকে কে বলল, আমি আসব? নাফসিন?”
-“না।”
-“তবে?”
-“ঘুমোচ্ছিলাম ৮টা-১টা অবধি। একটা স্বপ্ন দেখে জেগে উঠি। স্বপ্নে দেখলাম, তুমি আমাকে সারপ্রাইজ দিতে জলদি ফিরে এসেছ। কিন্তু আমি কেন যেন খুশি হলাম না! সারপ্রাইজ দেবে ভালো কথা, জানিয়ে দেওয়া উচিত। যাতে আমি চমকে যাওয়ার অ্যাক্ট করতে পারি! এজন্য উলটো রেগে গেছিলাম। স্বপ্নটা সুন্দর, তাই-না, রঙ্গন?”
-“হুঁ?”

মোহ হেসে উঠল,
-“ভাবলাম, তোমার সারপ্রাইজটা বিফলে দেওয়া যায় না। এপাশ থেকেও সারপ্রাইজড হতে কেমন লাগল?”
-“খুবই ভয়াবহ! ভয় পেয়ে গেছিলাম!”
-“আমিও মজা পেয়েছি।”

মোহ হাসল। হাসির দমকে ছোট্ট শরীরটা কেঁপে কেঁপে উঠল। রঙ্গন শার্টের ওপরের বোতামটা খুলে মোহর কোমরে টান দিয়ে নিজের উরুর ওপর নিয়ে এলো। অস্থির আওয়াজে বলল,
-“ভীষণ জ্বালাচ্ছ! আজ একদম মেরে দেবো।”

চলবে..#প্রেম_পড়শী
#পর্ব_২২
#লেখনীতে_নবনীতা_শেখ
[প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত]

মাস তিনেক পর, শেফার পছন্দের দিনটিতে মোহ-রঙ্গনের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা করা হলো। এই তিনমাসে কিছুই বদলায়নি। মোহর তার বাবার প্রতি রাগটা একই আছে, নাফসিন-নুরশীন থেকে একই দূরত্ব স্থির আছে, নাজমাকে একইভাবে ঘৃণা করে! মোহ সবকিছু গোছগাছ করে রঙ্গনের বাড়িতে পাকাপোক্তভাবে শিফট হয়ে গেছে। ও-বাড়িতে এখন নাফসিন-নুরশীন, নাজমা থাকে; জয়তুননেসাও চলে এসে এখানে রয়ে গেছেন।

শেষ যেদিন নাজমার সাথে মোহর কথা হলো, মোহ সেদিন অকপটে বলে উঠেছিল,
-“আপনার স্বামীর অঢেল সম্পত্তি নেই। যথেষ্ট শিক্ষিত আপনি, স্বামীর ব্যবসার হাল ধরুন।”

নাজমা নিজেকে সেরূপ প্রস্তুত করে নিয়েছে। মেয়েটা ভুল বলেনি। প্রতিটা নারীকেই নিজেকে পরিচালনা করার মতো উপযুক্ত হতে হয়, কোনো পুরুষের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা নারীরা কোনায় পড়ে গুমরে মরে। নাজমা শক্ত হয়েছে।

বিদায়ের আগেরদিন মোহ লাইব্রেরি রুমে গিয়েছিল। সেখানে মাহফুজ সাহেবের একটি ডায়েরি পায়। তার বাবা-মা উভয়ই ভীষণ সৌখিন মানুষ ছিলেন। এরকম বেশ ধরনের শখ আছে তাদের। মোহ সে ডায়েরিটা পড়ল না। ডায়েরির সঙ্গে যত রকমের লেখা ছিল মাহফুজ শিকদারের পক্ষ থেকে, সব আগুনে পুড়িয়ে ফেলল। মায়ায় মরে না গিয়ে, মায়া কাটাতে জানলে, জীবনের পথ মসৃণ হয়।

মোহর জীবনের পথ মসৃণ হচ্ছে। সে রঙ্গনকে পুরোপুরিভাবে নিজের করে পেয়েছে। রঙ্গন মোহর সব প্রয়োজনের খেয়াল রাখে। সব চাওয়া পূরণের দায়িত্ব নিয়ে রেখেছে। মোহ চোখের পলক ফেলার মুহূর্তেই তার প্রয়োজনীয় সবকিছু রঙ্গন টের পেয়ে যায়।

সকালে ঘুম থেকে উঠে মোহ রঙ্গনকে দেখতে পেল তার পেটের ওপর মাথা রেখে ঘুমোতে। মিহি হেসে রঙ্গনের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে দিতে লাগল। ঠিক সেই ক্ষণে রঙ্গন বলে উঠল,
-“সুপ্রভাত, ম্যাডাম!”

ঘুম জড়ানো আওয়াজ! মোহ হেসে উঠল শব্দ করে। পালটা জবাব দিলো,
-“শুভ সকাল। বালিশে ঘুমাও, পেটে লাগছে।”

রঙ্গন সরে এসে বালিশে শুয়ে পড়ল। একহাতে মোহকে জড়িয়ে নিল। মোহ এগিয়ে গিয়ে রঙ্গনের বুকে মাথা রাখল। জীবনটা খুব ছোটো! যখন যখন পারা যায়, তখন তখন সুখ কুড়িয়ে নেওয়া উচিত। কালকের আশায় বসে থাকার মতো বোকামি দ্বিতীয়টা হয় না। জীবনের শেষদিনটা যদি আজ হয়, তবে কাল-এর অপেক্ষায় কে থাকবে?
জীবনকে তাই প্রতি পদে সুযোগ দেওয়া উচিত। সেই সুযোগগুলোর সঠিক ব্যবহার যদি না জানা থাকে, তবেই দেওয়া উচিত। অন্যথা হিতে বিপরীত হয়ে যায়। হতে পারত সুখগুলো হয়ে যায় অসুখ। দু’দিনের জীবনে স্বেচ্ছায় কে অসুখে জড়ায়? যে জড়ায়, সে স্মার্ট নয়! সে নির্বোধ!

____
ভার্সিটির ক্যান্টিনে বসে মোহ চিপস খাচ্ছিল। এমন সময় এক ছেলে এসে হুট করেই তার পাশে বসে পড়ে। গম্ভীরমুখখানাকে হাহা-হিহি টাইপের বানিয়ে মোহকে জিজ্ঞেস করল,
-“কোন ইয়ার?”

মোহ ভ্রু কুঁচকে একবার তাকাল তার দিকে। বেশ অগোছালো একটা লোক। ইনফরমাল ওয়েতে পরা একটা কালো শার্ট, এলোমেলো চুল-দাড়ি! কেমন যেন অদ্ভুত! মোহ এক দেখায় এতটুকু দেখে চোখ ফিরিয়ে নিল। প্রশ্ন করেছে—কোন ইয়ার!
সময় নিল, টেবিল থেকে কোকাকোলার বোতলটা তুলে, তাতে চুমুক দিয়ে বলল,
-“ফার্স্ট ইয়ার।”

মোহ জানে, এখানেই স্টপ না। তার জানার গল্পটাতে বিস্তার ঘটিয়ে ছেলেটা বলে উঠল,
-“বাচ্চা মানুষ! কোন ডিপার্টমেন্ট?”

মোহ ডিপার্টমেন্টের নাম বলল। ছেলেটা জিজ্ঞেস করল,
-“নাম কী?”
-“মোহনা আফরিন।”

নাম বলার পর থামল। এবার পালটা প্রশ্ন করল,
-“আপনার?”

এবার যেন ছেলেটা ঘাবড়ে গেল। এটা তো কথা নয়! কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেগুলোও হকচকিয়ে গেল। এগিয়ে আসতে যাবে যখন, তখন বসে থাকা ছেলেটা হাতের ইশারায় থামতে বলল। তারপর নিজের নাম বলল,
-“স্যাইফ!”

মোহর হাসি পেল, অথচ হাসল না। জিজ্ঞেস করল,
-“পুরো নাম?”
-“মো. সাইফুল্লাহ হানিফুর রসিদ ইকবাল।”

মোহ তবুও হাসি আটকে রাখল। আবার জিজ্ঞেস করল,
-“কোন ইয়ার?”
-“ফাইনাল ইয়ার।”
-“কোন ডিপার্টমেন্ট?”
-“পলিটিকাল সাইন্স।”
-“তো মো. সাইফুল্লাহ হানিফুর রসিদ ইকবাল ভাই, আপনার বন্ধু-সাথীদের ডাকেন! সামনে তিনটা চেয়ার খালি আছে, ওপাশ থেকে আর দুইটা নিয়ে এড হতে বলেন।”

ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পাঁচজন বন্ধুদেরই মোহ খেয়াল করেছে! সাইফুল আশ্চর্য হলো! বন্ধুরা কথা শুনে নিজ দায়িত্বে এগিয়ে এলো। চেয়ার টেনে বসে পড়ল। সবার বসা হতেই, মোহ বলল,
-“ভাইয়ারা, ভালো আছেন?”

সবাই একে-অপরের দিকে তাকাল। সাইফুল বোকার মতো তাকিয়ে আছে। সে কদিন ধরে মোহকে দেখছিল, ভালো লাগার বিষয়টা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতেই, বন্ধুরা উপদেশ দিলো নাম-পরিচয় জেনে একটু ভয় দেখাতে। এভাবে নাকি সিনিয়রদের সাথে প্রেম হয়! এদিকে মেয়েটা ভয় তো দূর, পাত্তাও দিলো না! সাইফুল খুব হতাশ।

কেউ ভালো আছে কি না নেই, মোহকে জানাল না। মোহ নিজ দায়িত্বে আবার বলা শুরু করল,
-“আজ থেকে আপনাদের কোনো বন্ধুকে মেয়ে পটানোর ট্রিক্স সাজেস্ট করার আগে, জেনে নিতে বলবেন—মেয়ে বিবাহিত কি না, বাচ্চা-কাচ্চা কয়টা। কেমন?”

সবার চোখ কোটরগত! সাইফুলের আশ্চর্যের মাত্রা নিচের দিকে এলে, সে অত্যন্ত দুঃখী গলায় জিজ্ঞেস করল,
-“তুমি ম্যারিড?”

মোহ হেসে বলল,
-“তিন বছর হবে সামনে।”

সাইফুলের ফুলের মতো ভালোবাসাটার অকাল পতনে সকলের দুঃখ প্রকাশ করা উচিত হলেও, বন্ধুরা হাসতে লাগল; সেই সঙ্গে মজা ওড়াতে লাগল। একে তো প্রেমের শুরুর আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা, তার ওপর বন্ধুদের খোঁচামার্কা কথা, সব মিলিয়ে সাইফুল পারে না মেঝেতে গড়াগড়ি খেয়ে কাঁদতে।

মোহর ফোনে একটা ম্যাসেজ এলো। ম্যাসেজটা দেখে সে বিল দিয়ে উঠে দাঁড়াল, টেবিলে গোল হয়ে বসে থাকা ৬ জন মানবের উদ্দেশ্যে বলল,
-“আসি, ভাইয়া! নেক্সট ডে আড্ডা হবে।”

মোহ চলে গেল কথাটা বলেই। ক্যাম্পাসের গেটের সামনে দাঁড়াতেই রঙ্গনের গাড়ি দেখতে পেল। মোহ সেদিকটায় এগিয়ে গেল। রঙ্গন ড্রাইভিং সিটে বসে আছে। মোহ পাশের সিটে বসে পড়ল।

রঙ্গন পানির বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল,
-“দেরি করে ফেললাম? অনেক অপেক্ষা করালাম, তাই-না?”

মোহ পানিটা খেয়ে বলল,
-“সমস্যা নেই।”
-“দিনটা কেমন কাটল?”
-“এডভেঞ্চারাস!”

শব্দটা উচ্চারণ করেই মোহ হেসে দিলো। তারপর ঘটনা বর্ণনা করল। তাল মিলিয়ে রঙ্গন নিজেও হাসল। এরপর মোহকে অপরিকল্পিত যাত্রা শুরু করল। এটা নিত্যনৈমিত্তিক কাজ তার। অফিস থেকে বেরিয়ে মোহকে নিয়ে ড্রাইভে যায়, বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত।

আজ যখন বাড়ি ফিরল, তখন সময় ছিল গভীররাত। বারোটা ছুঁইছুঁই। রঙ্গন মোহকে ভেতরে যেতে বলে, পার্কিংয়ে চলে এলো। মোহ অন্ধকারে ফোনের ফ্ল্যাশ অন করল। স্ট্রিটলাইটের আলোতে যা দেখা যায়, ততটাই দেখা যাচ্ছে। অথচ বাড়ির ভেতরের সব অন্ধকার। এমনটা এর আগে হয়নি। অন্তত বাগানের লাইটটা জ্বালানো থাকে! আজ সেটাও নেভানো।
মোহ ধীরপায়ে ভেতরে প্রবেশ করল। অন্ধকারের মাত্রা ক্রমেই গাঢ় হয়ে যাচ্ছে। ঠিক এমন সময় কানের কাছে টিকটিক আওয়াজ আসছে; খুব জোড়াল! কিছুক্ষণ যেতেই কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেল। মোহ থমকে গিয়ে দু’পা পিছে চলে এলো। কোনো শক্তপোক্ত কিছু একটার সাথে তার পিঠ ঠেকে গেল। শক্ত-সামর্থ্য বুকটা যে তার সাধের পুরুষের, ব্যাপারটা ধরতে সেকেন্ডও লাগল না। মিলিসেকেন্ডের ভেতর তার দুবাহুতে রঙ্গনের হাত চলে এলো। মোহকে ব্যালেন্স রাখতে সহায়তা করার জন্য এগোনো হয়েছে সেই হাত।

৪..৩..২..১..
আর সমস্বরে চিৎকারের সাথে ভেসে এলো একটা আওয়াজ, “হ্যাপি বার্থডে, মোহনা!”

লাইট জ্বলে উঠল। পুরো বাড়ির বসার ঘরটা সাজানো হয়েছে চমকপ্রদভাবে। মোহ জানে, আজ তার জন্মদিন। প্রতিবছর তার মা-বাবা এই দিনটায় তার জন্য স্পেশ্যাল কিছু করে। আজ তারা দু’জন নেই দেখে, মোহ কোনোরূপ আগ্রহ দেখায়নি। তারপরও সব পাচ্ছে!

মোহকে রঙ্গন বাদে একে-একে সবাই এসে জন্মদিনের শুভ কামনা জানাচ্ছে। সামনে অনেক মানুষ। শফিক সাহেব, রুমা, রূশী, নাফসিন, রেনু, জয়তুননেসাসহ আরও অনেকে। মোহর কানে কারও কথা প্রবেশ করছে না। সে মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় সবার হৈ-হুল্লোড় দেখছে। আবছা চোখে ভেসে উঠছে শেফা। এই তো! এই তো শেফা এলো! পরনে হালকা রঙের সুতির শাড়ি, ঝুলোনো খোঁপা, কপালে ছোট্ট কালো টিপ, দু-হাতে দুটো বালা! সে এগিয়ে এসে মোহর সামনে দাঁড়ায়। দু’হাতে মোহর ছোট্ট মুখটা আঁজলা করে ধরে চুমু খায়, চমৎকার করে হেসে বলে ওঠে,
-“আমার সোনাই! অনেক বড়ো হও। মা তোমায় ভালোবাসে। মা তোমায় হারিয়ে ফেলা সুখের মতো ভালোবাসে, বুকভরা যন্ত্রণার মতো বুকের মাঝে আগলে রাখে।”

মোহর বুকটা কেঁপে উঠল। মোহর দুনিয়াটা কেঁপে উঠল। তার মা নেই! ‘মা নেই’—ছোট্ট দুটো শব্দ, অথচ কত ভারি! কত ব্যথা লুকোনো।
ড্রয়িং স্পেসের এক দেয়ালে বেশ বড়োসড়ো একটা আয়না আছে। মোহ সে আয়নায় দেখল। ছোটো থেকেই শুনেছে, সে নাকি তার মায়ের মতো দেখতে হয়েছে। মোহ নিজের মাঝে নিজের মাকে খুঁজল। খুব খুঁজেও যখন পেল না, তখন চোখ গেল তার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষটির দিকে। হালকা রঙের একটি শার্ট ইন করে পরা। বুকের কাছের দুটো বোতাম খোলা। ফুল স্লিভস কনুই অবধি ফোল্ড করা, বাঁ-হাতে ব্ল্যাক ওয়াচ। হাতদুটো পকেটে পুড়ে নেওয়া। চুলগুলো কপালের ঘামের সাথে লেপটে আছে।
কথায় আছে, মেয়েরা নিজের পুরুষের মাঝে নিজের বাবাকে দেখতে চায়। মোহ চায় না, তবুও কেন যেন চেষ্টা করল। অতঃপর খুঁজে পেল দুটি কথা।

ভালোবাসার বিপরীতে ততক্ষণই সমপরিমাণ ভালোবাসা পাওয়া যায়, যতক্ষণ বিপরীত পুরুষটার চোখে মুগ্ধতা স্থির থাকে। মোহ নিজেকে শতরূপে নিজের পুরুষের কাছে প্রকাশ করবে। প্রতিরূপে মুগ্ধতা বাড়া বই কমবে না। রঙ্গনের চোখ তার নারীতে স্থির থাকবে মৃত্যুর সেকেন্ড আগ অবধিও। মোহ এরূপভাবেই নিজেকে তার নিকট প্রকাশ্যে রাখবে।

আর দ্বিতীয়ত, পুরুষ মানুষ দু ধরনের। এক ধরনের পুরুষ মানুষ মাহফুজ শিকদারের মতো, অন্য ধরনের পুরুষটা ওয়াজিহ্ মেজবাহ রঙ্গনের মতো। স্বর্ণশেফা জীবদ্দশায় ঠকেছে। এখন দেখার পালা, মোহনা আফরিন কতদূর জেতে!

মোহ দ্বিতীয়বার ওই শীতল চাহনিতে তাকাল! নাহ! লোকটা তাকে হারতে দেবে না। ওই চোখের মাঝে আছে আকাশসমান ভালোবাসা। ওই চাহনিতে আছে আস্থা, বিশ্বস্ততা। মোহ মনে মনে ফরিয়াদ করে উঠল,
-“সবাই হারে না! প্রিয় পুরুষ, প্রমাণ করে দাও—সবাই হারে না।”

রঙ্গনের চোখ হাসল হঠাৎ করে, আশ্বস্ত করা হাসি সেটা! প্রশান্তিতে মোহর হৃদয় শীতল হয়ে উঠল। আশে-পাশে অনেকেই আছে। অথচ মোহ ব্যস্ত তার পুরুষকে দেখতে। রঙ্গন দু’কদম এগিয়ে ভারি ফিসফিসিয়ে বলল,
-“পড়শী! মনে আছে? আমি আগে তোমাকে পড়শী বলে ডাকতাম?”

মোহর মনে আছে। সে যখন অভিমানে গা ঢেকে রুমের ভেতরে চুপটি করে থাকত, রঙ্গন বারান্দায় এসে ডেকে উঠত,
-‘প্রিয় পড়শী! দেখা দিন!’

মোহ সেই ডাক উপেক্ষা করতে পারত না। সবটা মনে পড়ল ক্ষণিকেই। রঙ্গন একই ভঙ্গিমায় ফের ফিসফিসিয়ে উঠল,
-“আমাদের প্রেম পাশাপাশি দুটো বাড়িতে, পাশাপাশি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হয়নি কেবল। আমাদের প্রেম হয়েছিল পাশাঘেঁষে অবস্থিত দুটো মনের সন্ধিতে। মনে মন ছুঁলে প্রেম হয়। বুঝলে কিছু?”

মোহ বুঝে ওঠার আগেই ফের পুরো বাড়ি একবার অন্ধকার হয়ে উঠল। রঙ্গন আরও নিকটবর্তী হয়ে মোহকে জড়িয়ে নিয়ে ঘোর লাগানো আওয়াজে বলে উঠল,
-“প্রেম-পড়শী!”

অন্ধকারাচ্ছন্ন বাড়ি থেকে মোহর হাত ধরে বের হয়ে গেল রঙ্গন; উদ্দেশ্য ‘আস টাইম’। এরপর বাড়ির সবাই ওদের খুঁজবে, খুঁজতে খুঁজতে অস্থির হবে। মোহ আর রঙ্গনের খেয়াল সেদিকে নেই। তারা দুজন এখন একে-অপরে মত্ত হয়ে পুরো শহরের গায়ে প্রেম বিলাবে। সুখ সর্বাঙ্গে মেখে, প্রেম প্রেম খেলবে।

~সমাপ্ত~

[মোহ-রঙ্গন আমার ভীষণ প্রিয় একটি জুটি; ওদের নিয়ে আমার লেখা থামবে না। আবারও আসবে ওরা। তবে ভিন্ন কোনো গল্পে, ভিন্নরূপে। এতদিন পাশে থাকার জন্য সবাই ভালোবাসা নেবেন। গল্পটা কেমন লেগেছে, তার মন্তব্য করবেন! ❤️]

2 COMMENTS

  1. Acha Apnar moton writers der ata mone hoy na,, apnader ai 2nd marriage concept ta vison kharap..ar sefa character ta amr sob theke osojjo lageche ,, amon manus ke ki valobasa jay na tar sathe thaka jay !! Mahfuj r character ta to practical..purus ra to hoy i amon ,, kintu tar asolei ki kono sasti holo afsos kora chara .. othocho tar jonno ato gulo manuser khoti holo.. obosso apnar golper concept i seita .. bou thakteo jodi kono purush onno meyer proti mugdho hoy ,, sei khetre tar character i kintu kharap.. nature kharap ,, kono nipat valo manus amon korbe na,, kono meyeke bipod theke bachate biye korte hoy na .. ar sefa ki kore baktitosomponno nari holo ami ta bujhlam na,,se to sob jeneo tar sathei theke gache ,, abr tar Swami ke kichu bujhte obdi deyni.. aka meye je aka i sontan manus korte pare seita dekhalei take asole prokito nari bojhano jeto..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here