“ফেমাস_বর🙈(বিবাহ পর্ব) পার্ট_২০

#ফেমাস_বর🙈(বিবাহ পর্ব)
#পার্ট_২০
#লেখিকা_রামিসা_মালিয়াত_তমা

স্যার,আজকে একটু অফিস থেকে আগে আগে বের হবো!

কথাটা বলল পিউ!

আদনান ল্যাপটপে কাজ করছিল।ল্যাপটপ থেকে মুখ উঠিয়ে বলল,

আদনান-কেন?

পিউ-ইয়ে স্যার,আমার বাসায় আজকে ছোট করে একটা কিটি পার্টি আছে।ফ্রেন্ডসরা ইনভাইটেড!তাই একটু আগে আগে যেতো হবে!

আদনান-কখন যেতে চাও?

পিউ-এই ধরুন স্যার,৪ টার দিকে!

আদনান-ওকে!যেও!

পিউ-থ্যাংকইউ স্যার!

আদনান কিছু না হলে আবার কাজে মন দিল।কিন্তু পিউ পারমিশন পাওয়ার পরও আদনানের কেবিন থেকে বের হলো না।দাঁড়িয়ে রইল।

এদিকে আদনান এখনো পিউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খুবই বিরক্ত হলো।

আদনান-কী হলো?এখনো দাঁড়িয়ে আছো কেন?(ধমকের সুরে)

পিউ-নো স্যার,ইয়ে মানে সরি স্যার!
উফ,আজকেও আমার ড্রেস দেখিয়ে এই হাবাটাকে পটাতো পারলাম না।ধুর!(মনে মনে)

এই বলে পিউ আদনানের কেবিন থেকে বের হয়ে গেল।

অন্যদিকে,
অনেক চিন্তাভাবনার পর তমা হলুদে কী পড়বে সেটা ঠিক হল।আদনান বলেছে যে তার বউ হলুদ,বিয়ে,বৌভাত সব ওকেশনেই শাড়ি পড়বে।তাই তমার সব ওকেশনের জন্য আউটফিট মানে শাড়ি রেডি করা হয়েছে।

অরিত্রি-মম,এই মম!

অরিত্রির মা অর্থাৎ আবরারের চাচি হচ্ছে মিসেস লোপা হাসিব!

লোপা হাসিব-কী হইসে অরু?এভাবে চেঁচাচ্ছ কেন?

অরিত্রি-শোনো মম,আমি তমা আর ভাইজানের বিয়েতে যাবোনা।

মিসেস লোপা হাসিব অরিত্রির কথা শুনে আকাশ থেকে পরলেন।এই মেয়ে বলে কী?নিজের আপন চাচাতো ভাইয়ের বিয়েতে যাবেনা?

লোপা হাসিব-এই?কী বলছো কী এইসব তুমি?আদি তোমার চাচাতো ভাই আর তমা ফুফাতো বোন।তাদের বিয়েতে তুমি যাবেনা?পাগল হয়ে গেসো নাকি?

অরিত্রি-নাহ,পাগল হবো কেন?পাগল হবো কেন?আমার ইচ্ছা হইসে তাই যাবোনা।আর তাছাড়া…(অরিত্রি কিছু একটা বলতে গিয়েও বলল না)

লোপা হাসিব-আর তাছাড়া কী?

অরিত্রি-কিছুনা।মোটা কথা,আমি বিয়েতে যাবোনা ব্যস!

এই বলে অরিত্রি মিসেস লোপা হাসিবকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রুম থেকে চলে গেল।

অরিত্রি বের হওয়ার পরক্ষনেই আবরার ঘরে ঢুকল।

আবরার-কী হয়েছে গো ছোট মম?অরুটা এমন গাল ফুলিয়ে বের হতে গেল ঘর থেকে!কারণটা কী?

লোপা হাসিব-কী জানি,কী হয়েছে।দেখনা,আমাকে বলছিল যে আদি আর তমার বিয়েতে নাকি সে যাবেনা।জিজ্ঞাসা করাতে বলল,যাবেনা তো যাবেনা।

আবরার নিজেও বুঝতে পারলনা যে অরিত্রি কেন এমন করছে।এমন কি হলো যে অরিত্রি আদনান আর তমার বিয়েতে অবধি যাবেনা বলছে!

আবরার-আচ্ছা,ছোট মম!দাঁড়াও,আমি দেখছি।কী করা যায়!

এই বলে আবরার রুম থেকে বের হয়ে গেল।আর অরিত্রিকে খুঁজতে লাগল।খুঁজতে খুঁজতে আবরার দেখলো অরিত্রি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।আবরার আস্তে আস্তে অরিত্রির পিছে দাঁড়াল।

অরিত্রি কারোর একটু আওয়াজ অথবা আভাস পেয়েই বুঝতে পারল যে কে এসেছে।তাই সে সামনে থাকা অবস্থাতেই বলল,

অরিত্রি-কে?

আবরার অনেক অবাক হলো এটা ভেবে অরিত্রি বুঝে ফেলেছে যে কেউ একজন এসেছে।

আবরার কিছু না বলে চুপচাপ অরিত্রির পিছে দাঁড়িয়ে থাকলো এটা দেখার জন্য যে অরিত্রি বুঝতে পারে কিনা যে কে এসেছে।

কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে অরিত্রি বুঝতে পারল যে কে এসেছে!তাই অরিত্রি সামনে ঘুরেই বলল,

অরিত্রি-বলো আবরার ভাই!কী চাও?

আবরারকে তুমি করে বলায় আবরার আরো অবাক হলো।

আবরার-আমাকে তুমি করে বলছিস কেন?

অরিত্রি-তুমি তো বলেছ যেন ভদ্র হই,আদব-কায়দা কিছু শিখি।তাই সেটা করারই চেষ্টা করছি।তবে একেবারে তো আপনি বলতো পারছিনা তাই তুমি করেই বলা শুরু করলাম।আশা রাখি,সপ্তাহখানেকের মাঝে তোমাকে আপনি বলে ডাকতে পারবো!

এই বলে অরিত্রি সেখান থেকে চলে যেতে নিলে আবরার পিছন থেকে বলে উঠল,

আবরার-ভাইয়া আর তমার বিয়েতে যাবিনা কেন?

অরিত্রি-সেটা আমার ব্যাপার।তোমাকে বলতে বাধ্য নই।আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই যাবোনা।

আবরার এবার অরিত্রির হাত ধরে আটকালো।আর বলল,

আবরার-তোর রাগ যে আমার উপর তা আমি ভালোই বুঝেছি।তবে কেন তা বুঝতে পারছিনা।

অরিত্রি-বুঝে তোমার কাজ নেই।আর আমি তোমার উপর রেগে নেই মোটেও।শুধু শুধু ভুল বুঝোনা।

আবরার-ভুল তো বুঝছিস তুই!তাও আবার আমাকে।আর তার জন্যই কথা বলছিস না।কিন্তু আমি বুঝতে পারছিনা যে তোর আমার উপর রাগ হলো কেন!তোকে তুই করে না ডাকতে বলাটা একটা সামান্য মজা ছিল সেটা কী তুই বুঝিসনি?

অরিত্রি-আমি তার জন্য তোমার উপর রেগে নেই।ভুল বুঝছি তুমি!

আবরার-তার মানে তুই আমার উপর কোনো কারনে রেগে আছিস?

অরিত্রি-নাহ,আমি কখন…

অরিত্রি কথা শেষ করতে পারলনা!এর আগেই আবরার বলল,

আবরার-তুই আমার উপর রাগ করে আছিস।তা না হলে বলতি না যে এই কারণে আমার উপর রেগে নেই।তাহলে তুই বলতি যে আমার উপরই তুই রেগে নেই।সে যাগ্গে,তবে শোন তুই যার উপরই রাগ করে থাকিস না কেন!তার রাগের বোঝা তুই তমা আর ভাইয়ার বিয়ের মধ্যে ফেলিস না।

অরিত্রি-আমি আগেও বলেছি আর এখনো বলছি যে আমি ভাইজান আর তমার বিয়েতে যাবোনা কারণ সেটা আমার ইচ্ছে।বুঝেছ?

আবরার-তুই এতো গাধা কেন রে?রাগের বশে এতো বড় একটা মজার ফাংশান তুই মিস করবি?মানে একটা গাধাও তো এতো ডাম্প না তুই যতোটা না ডাম্প!

অরিত্রির এবার ভীষন খারাপ লাগলো।এমনিতেই অরিত্রির খুবই মন খারাপ ছিল।এসব শোনার পর তার আরো মন খারাপ হয়ে গেল।অরিত্রির খুব কান্না আসছে।তাই সে ওখানে আর না থেকে সোজা ওখান থেকে বের হয়ে গেলো।

আবরার হঠাৎ খেয়াল করলো যে অরিত্রি নেই।আবরার আরো খেয়াল করলো যে সে অরিত্রিকে কী কী বলেছে মাত্র!

আবরার-ওহ,শিট ম্যান।আমি এটা কী করলাম!এমনিতেই ওর মন খারাপ,দিলাম তো আরো ঘেটে!উফ!

এই বলে আবরারও ওখান থেকে বের হয়ে গেলো!

অন্যদিকে,
আজকে তমা অনেকদিন পর তার বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে বের হয়েছে।

তমা-উফ,কতোদিন পর যে ঘুরতে বের হলাম তোদের সাথে।আমার যে কী ভালো লাগছে কী বলবো।

ঊরি-হুম,এখন আমাদের সাথে ঘুরতে ভাল্লাগছে।দুদিন পর যখন আদনান জিজুর সাথে বিয়ে হবে তখন তো ঘুরতে তোর খুশি আর ধরবেনা।(চোখ মেরে বলল)

এই বলে সবাই হাই-ফাইভ দিলো।

তমা-ধ্যাৎ ত্যারি।(রেগে লজ্জ্বা পেয়ে)

তমার রাগ আর লজ্জ্বা পাওয়া দেখে ওরা আরো হাসল।

ওরা সবাই মিলে সামনের একটা পার্কে ঘুরতে এলো।তবে তমা বাদে।তমাকে ওরা বলেছিল তবে তমা আর ঘুরতে চাইনি হলে ওরাও আর জোর করেনি।

তাই তমা বাসায় চলে আসার জন্য হাঁটা দিল।

তমা-আজকে ভালোই মজা হলো!(মনে মনে)

হঠাৎ করে তমা রাস্তার পাশে অজ্ঞান হয়ে পরে গেল।
নেক্সট পর্ব পড়তে পেইজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন
চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here