বড্ড ভালোবাসি পর্ব ২৩+২৪

গল্প :- বড্ড ভালোবাসি
পর্ব :- ২৩ এবং ২৪
Writer :- Labiba Islam Roja
:
:
:
এখনও উনাকে জড়িয়ে কেঁদে যাচ্ছি।ঠিক কতক্ষণ এভাবে আছি জানা নেই তবে অনেক্ষণ হবে সেটা বুঝতে পারছি।কাঁদছি আর উনার বুকের ধুকধুকনির শব্দে হারিয়ে যাচ্ছি।উনি বললেন…..
.
এই রোজ এবার থামো আর কত কাঁদবে বলে আমাকে ছাড়াতে গেলে আমি উমম বলে থামিয়ে দিলাম।উনার বুক থেকে মাথা তুললে এখনই সেই সুরটার ছন্দপতন হবে আর আমি সেটা চাই না।আমি যে এই সুরেতেই ডুব দিয়ে গভীর অতলে তলিয়ে যেতে চাই।
.
উনি বিরক্তি নিয়েই বললেন রোজ তুমি কি আজ আমার শার্টকে টিস্যুর কাজে ব্যবহার করবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছো?
.
অবাক হয়ে উনার বুক থেকে মাথা তুলতে তুলতে কেন কি করেছি আমি।(নাক টেনে)
.
এই দেখ আমার শার্টের কি অবস্থা(বুকের পাশটা দেখিয়ে) করেছো।এখন এটাকে আমার শার্ট বলে মনে হচ্ছে না।একটা টিস্যুই মনে হচ্ছে যেখানে তুমি ইচ্ছা মতো নাক ঘষে আবার ফেলে দিবে।
.
উনার শার্টের দিকে তাকিয়ে দেখলাম বেহাল অবস্থা চোঁখের জলে আর নাকের জলে পুরো শার্ট ভিজে একাকার।আমি করুন দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।কি বলবো তবুও নাক টেনে টেনে বললাম…. তো কি হয়েছে একটা শার্টই তো নোংরা হয়েছে তাতেই এতো রাগ দেখাচ্ছেন(ঠোঁট উল্টে)।এত রাগার কি আছে বুঝি না।
.
তো রাগবো না তো কি তোমায় মাথায় নিয়ে নাচবো।(ধমক দিয়ে)কান্না থামাও আর এটা বলো এখন এই অবস্থায় আমি বাড়িতে যাব কি করে।
.
সরি (মুখ কালো করে বসে আছি)এখন আরো কান্না পাচ্ছে এই একটু শার্টই তো নষ্ট করেছি তার জন্য এভাবে বললেন।আর কথা বলবো না আপনার সাথে। কখনো আপনাকে ধরবো না।
.
আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি মুচকি হেসে বললেন…. এই পাগলি ঘাবড়ে যাচ্ছ কেন?আমি তো তোমার কান্না থামাতে এসব বলেছি।আর তুমি এখন আবার কাঁদতে বসলে।এই বুকেই তো তোমার বসবাস এখানে যদি তুমিই না থাকো তাহলে আমি কেমন করে থাকবো(বুকে টেনে নিয়ে)।তোমাকে বুকে নিয়ে যতটা সুখ পাই আর কোন কিছুতে এত সুখ নাই।পাগলি এবার থামো নাহলে কিন্তু খুব বকবো।
.
.
.
এক ঘন্টা ধরে নদীর পাড়ে বসে আছি আর উনি আমার কোলে উপর মাথা রেখে কোমড় জড়িয়ে শুয়ে আছেন।আর আমি উনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি এটা তার অর্ডার।উনি স্ট্রীট বলে দিয়েছে তার অর্ডার অমান্য করলে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।কি দরকার আজকের দিনে শাস্তি ভোগ করার যাক না দিনটা আজ উনার মতো করে।
.
শোন তোমাকে একটা কথা বলছি(শুয়ে শুয়ে) আর কখনও শাওনের সাথে মিশবে না।ওকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলবে।
.
কেন?ও তো আমাদের বন্ধু হয় আর আমি তো যেচে কখনও কথা বলি না তাহলে।
.
এই তোমার মাথায় কি সত্যি গোবর ছাড়া আর কিছু নেই(মাথায় টোকা দিয়ে) আল্লাহ মাথা দিয়েছেন কাজে লাগানোর জন্য। তোমার কি মনে হয়না তুমি সেটাকে কাজের চেয়ে বেশি অকাজে ব্যবহার করছো।
.
আপনি সবসময় আমাকে এত বকেন কেন?আপনি এমনভাবে বলেন যেন সত্যি আমার মাথায় গোবর ছাড়া কিছু নেই।কিন্তু একদম তা নয় আমি যথেষ্ট বুদ্ধিমতী হুহ(ভাব নিয়ে)
.
এহহ এসেছেন আমার বুদ্ধিমতী।এতই যখন বুদ্ধিমতী তাহলে শাওনের কাছ থেকে কেন দূরে থাকতে বলছি সেটা বুঝতে পারছো না।যেটা আমি অনেক দূরে থেকে বুঝতে পারি সেটা তুমি কাছে থেকেও কেন বুঝো না।
.
কেন আবার আমি অন্য কারো সাথে মিশলে আপনি জেলাস হন।হা হা
.
চুপপ(ধমক দিয়ে)এমন পেত্নী মার্কা হাসি বন্ধ করো।আচ্ছা তুমি কি বুঝতে পারো না ও তোমাকে শুধু বন্ধু নয় সবসময় অন্য নজরে দেখে।আজকেও তো তোমাকে কুনজরে দেখছিলো শুধু পারছিলো না তোমার সাথে মিশে যেতে যদি পারতো তাহলে তাই করতো।আর এটা দেখেই আমার রাগ লাগছিলো যতটা না শাওনের উপর তার চেয়ে বেশি তোমার উপর।ইচ্ছা করছিলো ওই শাওনের বাচ্চাকে ওখানে মেরে পুতে দেই।আমার জিনিসে নজর দেওয়া এর পরে এরকম কিছু হলে ওকে আমি খুন করে ফেলবো।(রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে)
.
আপনার জিনিস মানে?হোয়াট ডু ইু মিন।আপনি কি আমাকে দোকানের আলু পটল মনে করেন।
.
না না আসলে এটা কথার কথা মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে।তুমি তো আমার কলিজ্বা।তুমি আছো বলেই আমি এখনও বেঁচে আছি।নিশ্বাস ছাড়া যেমন মানুষ বাঁচে না তেমনি তোমাকে ছাড়াও আমি বাঁচতে পারবো না।
.
.
দুজনে হাত ধরে হাঁটছি। উনি আমার হাতটা এমন ভাবে শক্ত করে ধরে আছেন যেন ছাড়লেই পালিয়ে যাব।নিজের প্রিয়জনের সাথে থাকার ফিলিংসটাই অন্য রকম যা পৃথিবীর কাউকে বুঝানো যাবে না।আমি এই হাতটাকেই সারাজীবন চাই।আমাকে আগলে রাখবে পাশে থাকবে কখনও হারাতে চাই না।
.
আচ্ছা এখানে এত সুন্দর একটা জায়গা থাকতে আপনি আমাকে গাড়িতে লক করে রেখেছিলেন কেন?
.
হুহ তোমাকে আমি চিনিনা তুমি যেই বিচ্ছু মেয়ে আমার একটা কথাও তুমি শুনতে না।তার আগেই এখান থেকে পালাতে তাই বাধ্য হয়েই গাড়িতে লক করে রেখেছিলাম যাতে আমার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুমি আমার সামনেই থাকো বুঝলে পেত্নী।
.
মোটেও আমি বিচ্ছু না আর এরকম করতাম না।আপনি একটা নিরামিষ রাক্ষস নাহলে কেউ এরকম একটা জায়গা থাকতে গাড়িতে বসে থাকে।ধুর শেষ পর্যন্ত একটা নিরামিষ কে ভালোবাসলাম হায় কপাল!(কপাল চাপড়ে)
.
আমি রাক্ষস, নিরামিষ তাই না দাঁড়াও এক্ষুণি বুঝাচ্ছি আমি নিরামিষ না আমিষ।(দুহাত চেপে ধরে উনার দিকে ঘুরিয়ে)
.
মানে!ককি করবেন ছাড়ুন!
.
নো মিস রোজ আজ আপনাকো ছাড়া যাবে না।(ডেবিল হাসি দিয়ে)
.
ছা….
.
হুশশশ (ঠোঁটে আঙুল চেপে)কোনো কথা নয়।আমার দিকে এগুতে এগুতে
.
উনার দৃষ্টি আমার ঠোঁটের উপর স্থির মুখে বাকাঁ হাসি বুঝতে বাকি নেই উনি কি করতে চাইছেন।হাত পা কাপঁছে চোঁখ বন্ধ করে দাড়িঁয়ে আছি।উনার আর আমার মধ্যে মাএ কয়েক ইঞ্চি দূরত্ব তখনি বলে উঠলাম আআমি বাড়ি যাব আম্মু চিন্তা করবেন
….
.
উফফ দিলে তো আমার রোমান্সের বারোটা বাজিয়ে(কিছুটা পিছিয়ে)এই আমি তোমার কাছে আসলেই কি তোমার বাড়ি যাওয়ার কথা মনে পড়ে।এতক্ষণ ধরে তো এখানে আছি একবারও বললে না বাড়ি যাবে যেই আমি কাছে যাব অমনি বাড়ি ফিরার কথা মনে হয়ে গেলো।বাহহ অসাধারন।ধুর মুডটাই নষ্ট করে দিলে।
.
ভেংচি কেটে বললাম বেশ করেছি বলেই এক দৌড়।
.
অনেক্ষণ হলো বাসায় এসেছি উনি নামিয়ে দিয়ে গেছেন। ব্যালকোনিতে দাড়িয়ে আকাশ দেখছি।আকাশে আজ বিশাল একটা চাঁদ উঠেছে।চাঁদ দেখছি আর উনার কথা ভাবছি।আজ চোঁখে ঘুম নেই।আমার জন্য কতরাত উনি নির্ঘুম কাটিয়েছেন।আমিও না হয় একটা রাত উনার জন্য নির্ঘুম কাটালাম।
.
রিহান তার মায়াবতীকে নিয়ে কল্পনার জগতে ভাসছে।তার এতদিনের অপেক্ষা আজ ঘুচেছে।মায়াবতীও তাকে ভালোবাসে এটাই তার সবথেকে বড় পাওয়া।মায়াবতী আজীবন তোমার হাত ধরেই চলতে চাই।সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসতে চাই।মায়াবতী তোমাকে বড্ড ভালোবাসি।
.
পরেরদিন
.
সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভাংলো।বেলা বারোটা এতক্ষণ ধরে মরার মতো ঘুমাচ্ছিলাম।উফফ আম্মু তুমি আমাকে আরো আগে ডাকলে না কেন? এখন কলেজ যাব কি করে?
.
শোনো মেয়ের কথা রাহাত আর তোর আব্বু অফিস যাওয়ার সময় ডেকে গেল কিন্তু তোর কোনো সাড়াই নাই।তিশাকেও না করতে হলো।আর এত চিন্তা করিস না আজকে কলেজ যেতে হবে না ।
.
তুমি কি বুঝবে আম্মু আজ কলেজ যাইনি বলে কাল আমার সাথে কি কি হতে পারে।যেই মেজাজ হয়তো রাক্ষস টা কালকে কলেজ গেলে আমায় গিলে খাবে আল্লাহ তুমি একটু দেখো।
.
.
জানি আজকের পর্বটা তেমন ভালো হয়নি।মাথা ব্যাথার মধ্যে লিখতে বসে ছিলাম।গুছিয়ে লিখতে পারিনি।
অনেকে রেগুলার গল্প দেওয়ার জন্য রিকুয়েস্ট করেছেন তাই কালকে থেকে রেগুলার গল্প দেওয়ার চেষ্টা করবো…..
:
:
Part :- 24
:
:
রাতে রুমে পায়চারী করছি আর বার বার মোবাইল চেক করছি।না রাক্ষসের না আছে কোনো ফোন কলস না আছে ম্যাসেজ।আরে বাহ এই তার ভালোবাসা এক দিনেই হাপিস।আমি যে আজ কলেজ যাইনি সেই খেয়াল কি তার আছে। বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি সেটা জানার প্রয়োজন বোধও করলো না।বাহ বাহ কি অসাধারন!এমন সময় ভাইয়া এসে হাজির।কিরে পরী এমন সময় না ঘুমিয়ে রুমের মধ্যে পায়চারী করছিস কেন?কিছু কি ভাবছিস।
.
কই না তো ভাইয়া কিছু না তুমি এখনও ঘুমাওনি।
.
নাহ ঘুম আসছে না তুইও তো ঘুমাসনি
.
হুম আমারও ঘুম আসছেনা।আচ্ছা ভাইয়া ভাবিকে তোমার কেমন লেগেছে।আমার কিন্তু ভালোই মনে হয়েছে।আজ কালকার দিনে এমন মেয়ে পাওয়া দুষ্কর।
.
বাহ এইকদিনেই দেখছি রাহার একদম ফ্যান হয়ে গেছিস। রাহা খুব ভালো মেয়ে আর তোর ভাই কি ফেলনা।
.
এ বাবা নিজের বউ সরি উডবি বউকেও হিংষে কর তুমি সিরিয়াসলি হা হা।আমার ভাইয়া ফেলনা হবে কেন আমার ভাইয়া হলো হিরের টুকরা।আমার ভাইয়ের মতো মানুষ লাখে না কোটিতে একটা হয় বুঝলে।রাহা ভাবি খুব লাকি তোমার মতো কাউকে পাশে পাবে।
.
ঠিক আছে আর ভাইয়ের গুণগান করতে হবে না।রাত অনেক হয়ে ঘুমিয়ে পর।
.
গুণগান কোথায় করলাম যা সত্যি তাই বললাম। ঠিক আছে তুমিও ঘুমিয়ে পরো।
.
ওকে গুড নাইট পরী।
.
ভাইয়া চলে যাওয়ার পর ঘুমাতে যাওয়ার আগে ড্রেস চেঞ্জ করতে ওয়াশরুমে গেলাম।ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে বিছানায় মনে হলো ভূত দেখলাম দুহাত দিয়ে চোঁখ ডলে আমারও তাকিয়ে দেখলাম না ঠিক দেখছি রিহান ভাইয়া এই মাঝ রাতে আমার বিছানায় শুয়ে পায়ের উপর পা তুলে মোবাইল গুতাচ্ছেন। উনাকে এখন এখানে দেখে আমি ফ্রিজড মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না।আমি যে এখানে রোবটের মতো দাড়িঁয়ে আছি তা দেখেও উনি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে মোবাইলে ডুবে আছেন।উনার এই এ্যাটিটিউড দেখে ইচ্ছে করছে এক ধাক্কা দিয়ে মোবাইলের ভিতরে ডুকিয়ে দিই।
.
এই তুমি কি রোবট হয়ে গেলে।নড়াচড়া করছো না এখনও সেই এক জায়গাতেই স্থির।অবশ্য রোবট হলে ভালোই হয় কখনও আমার কথার উপর কথা বলবে না হাহাহা।(মোবাইলে তাকিয়ে)
.
উনার কথা যেন কানেই ঢুকছে না।এটা কি করে সম্ভব উনি এখানে এলেন কি করে।সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
.
অহহ (বিরক্তি নিয়ে) আর কতক্ষণ এভাবে আমাকে দেখবে গো আমার যে লজ্জা লাগছে(দু হাত দিয়ে মুখ ডেকে)
.
উনার কথা শুনে চোঁখ বড় বড় করে তাকালাম।উনারও লজ্জা লাগে আমার জানা ছিলো না।যে সবসময় বেফাঁস কথা বলে অন্যদের লজ্জায় ফেলে এখন নাকি তার লজ্জা লাগছে নির্লজ্জ লোক কোথাকার।
.
আপনি আপনি এখানে কি করে এলেন! এত রাতে আমার ঘরে কি করছেন আর কেন এসেছেন।
.
রিলাক্স রোজ বেবি এতগুলো প্রশ্নের উওর কি এক সাথে দেওয়া যায়।তুমি একটা একটা করে কুয়েশ্চন করো আমি উওর দিচ্ছি।(মোবাইল রেখে আড়চোখে তাকিয়ে)
.
উনার মুখে রোজ বেবি শুনে কেঁপে উঠলাম আমি।উনিও এসব ওয়ার্ড ইউজ করেন কই কখনও তো শুনিনি।
.
আমি ব্যালকোনি দিয়ে তোমার রুমে ডুকেছি। এসে দেখি তুমি রুমে নেই ব্যালকোনি দিয়ে আসায় হাত পায়ে একটু ব্যাথা করছে তাই তোমার বিছানায় শুয়ে ছিলাম আর তোমার তৃতীয় প্রশ্নের উওর তোমাকে দেখতে এসেছি।
.
দেখতে মানে! আপনি কোনো দিন আমায় দেখেন নি বুঝি। এই মাঝ রাতে আসতে হলো।কেন কাল সকালে দেখলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত(উওেজিত হয়ে)
.
দেখেছি কিন্তু আজ সারাদিনে একবারও দেখিনি।আর কাল দেখলে মহাভারত অশুদ্ধ হতো কি না আমি জানি না তবে আমার খুব কষ্ট হতো তাই দেরি না করে ফটাফট চলে এসেছি।আর হ্যাঁ মহাভারত অশুদ্ধ হলেও আমার কোনো সমস্যা ছিলো না।কারন কোথায় মহাভারত আর কোথায় আমি ওই মহাভারতের সাথে আমার কোনো কানেকশন নেই।আমার কানেকশন তো সাথে তোমার সাথে তুমি ঠিক থাকলেই হলো।আর কোথায় কার কি হলো তাতে আমার কি এলো গেলো।
.
এক দিক দিয়ে স্বার্থপরের মতো কথা কিন্তু আবার আমার জন্য অসম্ভব ভালো লাগা।হুহ সারাদিনে একটা খোঁজ না নিয়ে এখন এসেছেন ভালোবাসা দেখাতে।কই সারাদিনে তো একবারও একটা কল বা ম্যাসেজ দিলেন না।আর এখন মাঝরাতে এসেছেন ভালোবাসা দেখাতে।
.
তুমিও তো খোঁজ নাওনি রোজ বেবি।তুমি কলেজ যাবে না সেটা আমায় বলে দিলে আমি এত কষ্ট করে কলেজ যেতাম না।আর আমি তোমায় কল করিনি কিন্তু তোমার খোঁজ নেই নি এমন বলনা।
.
অহহ দারুন আমার খোঁজ নিয়েছেন আর আমি জানি না।
.
না জানো না কারন তোমার খবর তিশার কাছ থেকে নিয়েছি ওকে একা দেখে জিজ্ঞেস করেছিলাম…. যে তিশা তুমি একা কেন আমার পেত্নী কোথায় তখন ও বলল তুমি পরে পরে ঘুমাচ্ছ।কারো ডাকও তোমার কানে যাচ্ছে না।সেই জন্য কল বা ম্যাসেজ দেইনি।(চোঁখ বন্ধ করে)
.
কেন আমি থাকতে তিশা কেন?আমার খবর আমার কাছ থেকে নেবেন তিশার থেকে কেন?ও তিশা কি আমার থেকে বেশি জানবে।
.
উফফ রোজ চুপ করো তো। আমি এত রাতে তোমার সাথে তিশাকে নিয়ে ঝগড়া করতে আসিনি।এত বকবক না করে আমার পাশে এসে বস আমি ঘুমাবো।(বিরক্তি নিয়ে)
.
কিহহ
.
এই তুমি কি ইদানিং কানেও শুনো না।কি মছিবতে পরলাম খোদা একে তো বাচ্চা তার উপর বয়রা একে নিয়ে আমি এখন কি করবো।
.
আপনি আমাকে বয়রা বললেন?
.
কই না তো…. আর শোন অর্না পরার হলে পরে নাও আর যদি তোমার প্রবলেম না হয় তাহলে এভাবেও থাকতে পারো কারন এভাবে আমি তোমাকে এই প্রথম নয় আর অনেকবার দেখেছি।( অন্য দিকে ফিরে)
.
নিজের দেখি তাকিয়ে দেখি পরনে ঢিলা প্লাজু আর টি শার্ট।লজ্জায় মরে যাচ্ছি উনার সামনে আমি এতক্ষণ ধরে অর্না ছাড়া আছি।তাড়াতাড়ি করে অর্না পরে নিলাম।
.
এবার ঠিক আছে তাড়াতাড়ি বিছানায় এসে বসো আমার খুব মাথা ব্যাথা করছে একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দাও না প্লিজ(করুন সুরে)।
.
লোকটার জন্য বড্ড মায়া হচ্ছে।বিছানায় গিয়ে বসতেই উনি টুপ করে আমার কোলে শুয়ে পরলেন কি হলো আপনি আমার কোলে শুয়ে আছেন কেন?
.
আমি তো তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাবো বলেই এত তোমার কাছে ছুটে এসেছি।তুমিই তো আমার ঘুম+ মাথা ব্যাথার ঔষধ।তুমি দেখ তুমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে আমার মাথা ব্যাথা সেরে যাবে আর এক্ষুণি ঘুমিয়ে পরবো।
.
আশ্চর্য আমি আপনার ঘুম আর মাথা ব্যাথার ঔষধ।একজন মানুষ কারো ঘুম+মাথা ব্যাথার মেডিসিন হতে পারে এনাকে না দেখলে জানতেই পারতাম না।লোকটা আমাকে সবসময় বাচ্চা বলে আর এখন উনাকেই আমার কাছে বাচ্চা মনে হচ্ছে কি অদ্ভুদ আবদার।
.
আচ্ছা আপনার নিজের বাড়ি নেই।আপনি আমার বাড়িতে তাও আবার আমার রুমে থাকবেন?সকালে কি হবে ভাবতে পারছেন?
.
আছে কিন্তু সেই বাড়িতে রোজ নেই।তাই এখানে থাকবো।সকালে তোমাকে আর আমাকে এক রুমে দেখলে কি আর হবে বেশি কিছু না।(চিন্তিত হয়ে)
.
বেশি কিছু না মানে!আপনি কি ভাবতে পারছেন না কি হতে পারে?
.
হুম ভাবতে পারছি তো…. তোমাকে আর আমাকে এক সাথে বেশি না মাএ একটা রাত কাটানোর অপরাধে আরো হাজারটা রাত একসাথে কাটানোর সুযোগ করে দেওয়া হবে।মানে তোমার আর আমার বিয়ে দিয়ে দেবে।বেশ হবে তাই না রোজ বেবি।(শয়তানি হাসি দিয়ে)
.
কিহ বলছেন এসব খালি বাজে কথা।আপনি কি একটু সিরিয়াস হতে পারেন না।আর এবার বাসায় যান।কেউ দেখলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
.
চাপ নিও না মাই পেত্নী কেউ দেখবে না। সকাল হওয়ার আগেই আমি চলে যাব।।আমার জন্য কেউ আমার পেত্নীর দিকে আঙ্গুল তুলবে আমি তা হতে দেব না।আর কোনো কথা না বলে মাথায় হাত বুলাতে থাকো আর আমি ঘুমিয়ে গেলে তুমিও আমার পাশে শুয়ে পরো বিশ্বাস রাখতে পারো আমি কিছু করবো না।কিন্তু দেখ আমি ঘুমিয়ে পরেছি দেখে তুমি আবার আমার সুযোগ নিও না(ইনোসেন্ট লুক নিয়ে)
.
উনার কথা শুনে আমার চোঁখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম।কি বলছেন এসব সত্যি এসব কথা উনার দ্বারাই পসিবল। আপনি ঘুমিয়ে পড়লে আমিও যদি ঘুমিয়ে পড়ি তাহলে আপনাকে ডাকবে কে?
.
ডাকার প্রয়োজন পরবে না আমার নিজেরই সকালের আগে ঘুম ভেঙে যাবে।আর তুমি জেগে থাকলে তোমার শরীর খারাপ করবে তাই ঘুমিয়ে পরো নো ফাঁকিবাজি ওকে।
.
এতো কনফিডেন্টলি কথাগুলো বলছেন যেন ঘুমও উনার কথা শুনে।থাক আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।উনাকে এখন বাড়িতে পাঠানো ইম্পসিবল।ওকে এবার আপনার ননস্টপ কথা বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
.
হুমম (মুচকি হেসে)
.
যে আমাকে সারাক্ষণ বাচ্চা বলে সে আজ নিজেই বাচ্চা ভনে গেছে।বাচ্চাদের মতো সব আবদার।ঘুমন্ত মুখটাকেও কি কিউট লাগছে।কপালে কয়েকটা চুল আছড়ে পরেছে এতে যেন কিউটনেস আরও বাড়িয়ে দিয়ছে। এই কিউট ছেলেটা আমাকে ভালোবাসে।আনমনেই কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলাম।যাক বাব ঘুমিয়ে পরেছেন নাহলে এতক্ষণে আমাকে হাজারটা কথা বলে লজ্জায় ফেলে দিতেন।
.
উনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে কখন ঘুমিয়েছি জানি না।সকালে মায়ের চেঁচামেচির আওয়াজে ঘুম ভাংলো।মায়ের চেঁচামেচি শুনে ভয়ে আমার হাত পা রীতিমতো কাঁপছে।
.
.
চলবে….

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here