বাইজি কন্যা পর্ব ৯+১০

#বাইজি_কন্যা
#লেখা_জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_সংখ্যা_৯
[১৫]
পাঁচফোড়ন গৃহে বড়োসড়ো ঝড় বয়ে যাচ্ছে। বাগানে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর পরই প্রেশার বেড়ে যায় প্রেরণার। খবর পেয়ে পাঁচ পুত্রই ছুটে আসে। গৃহের সবচেয়ে বড়ো কক্ষের রাজকীয় বিছানায় শয্যায়িত রয়েছে প্রেরণা। তার পাশে বসে আছে অরুণা আর শবনম। জেবা, রোমানা দু’জনই মাথার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। মুনতাহা শারিরীক ভাবে এতোটাই অসুস্থ যে শাশুড়ির কক্ষে আসারও সাধ্য হয়নি তার। স্বাদ করে ভাইয়ের মেয়েটা’কে মেজো ছেলের বউ করে এনেছিলো প্রেরণা। কিন্তু ছেলে দ্বারা ভাতিজির এমন দুর্দশা হবে কল্পনারও বাইরে ছিলো। এই গৃহে প্রণয়ের পর প্রেরণা যদি নিখুঁতভাবে কারো প্রতি দুর্বল হয়ে থাকে সে হলো মুনতাহা। তাই তার অসুস্থতায় মুনতাহা তাকে দেখতে এলেও যতোটা আদরের থাকবে না এলেও ঠিক ততোটাই আদরের থাকবে। পল্লব,পলাশ কক্ষের ভিতরেই অত্যন্ত রাগান্বিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অঙ্গন বেশ বিচলিত হয়ে বসে আছে প্রণয়ের পাশে। বার বার জিজ্ঞেস করছে,
-‘ ভাই, মা’য়ের কিছু হবে না তো? ‘
উত্তরে প্রণয় বললো,
-‘ না কিচ্ছু হবে না। আমি আছি তো। ‘
প্রণয়ের কথা শুনে সকলেই স্বস্তি পেলো রঙ্গন এসে বাচ্চা দের মতো মা’কে বললো,
-‘ আম্মা আপনি অসুস্থ হলে আমার খুব কষ্ট হয়। ‘
প্রণয় রঙ্গনের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
-‘ ঠিক হয়ে যাবে তোরা এতো টেনশন নিস না। আম্মা’কে একটু ঘুমাতে দে এখন যা বাইরে যা। ‘
ধীরে ধীরে কক্ষ খালি হতে শুরু করলো। পলাশ কক্ষ হতে বেরোতে বেরোতে পল্লব’কে বললো,
-‘ ঐ বেশ্যার ঝি’র আজ এমন অবস্থা করবো না…। ‘
এটুকু শুনতে পাওয়া মাত্রই সকলের অন্তর আত্মা কেঁপে ওঠলো৷ কক্ষের বাইরে রোমানা অঙ্গনের দিকে কাঁদো কাঁদো দৃষ্টিতে তাকালো। অঙ্গন তার পাশে এসে মৃদু কন্ঠে বললো,
-‘ রোমানা তুমি এতো পেনিক হইয়োনা বাদ দাওনা। আমরা এসব নিয়ে হাজার পেনিক হলেও লাভ নেই তো। ‘
শবনম রোমানার হাত চেপে ধরে সরে গেলো সেখান থেকে। অঙ্গনও মাথা নিচু করে চলে গেলো। জেবা পল্লবের পিছু পিছু যেতে যেতে বললো,
-‘ এই শুনুন না আজ কিন্তু আমি আপনার অপেক্ষায় থাকবো। ‘
পলাশ মুখটা বিকৃত করে জেবার দিকে তাকিয়ে সদর দরজার দিকে পা বাড়ালো। বিরবির করে বললো,
-‘ এই ন্যাকার ঘরে ন্যাকা’কে ভাই ক্যামনে সহ্য করে! আমি হলে এক রাতে ওর ন্যাকামি ঘুচিয়ে দিতাম। বড়ো ভাই’য়ের বউ বলে দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতে হচ্ছে এটাকে। আপাতত খুকিকে শায়েস্তা করা যাক!’
সকলেই চলে যাওয়ার পর ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইলো শুধু প্রণয় আর রঙ্গন। রঙ্গনের মুখটা ভীষণ থমথমে হয়ে আছে আর প্রণয়ের চোয়ালজোড়া ক্রমাগত দৃঢ় থেকেও দৃঢ় হচ্ছে। কারণ সকালবেলা ঘটে যাওয়া ঘটনার পুরোটাই সে জানতে পেরেছে রোমানার কাছে। সবটায় অবগত রঙ্গন নিজেও। আর এ মূহুর্তে দু’ভাই একই বিষয়ে সুক্ষ্ম এক চিন্তায় বিভোর। কয়েক পল পিনপতন নীরবতা পালন করে দু’ভাই’ই দু’জনের দিকে তাকালো। দৃষ্টিতে দৃষ্টি মিলন হতেই অত্যন্ত গম্ভীর কন্ঠে প্রণয় বললো,
-‘ আমি যা ভাবছি তুইও কি তাই ভাবছিস রঙ্গন? ‘
-‘ ভাই আমি নুর’কে মেজো ভাইয়ার থেকে বাঁচাতে চাইছি। মেয়েটা নিরপরাধ। ‘
স্বস্তির শ্বাস ছাড়লো প্রণয়। তার মানে ঐ বাইজি কন্যা’র প্রতি অন্যায় হবে এই ভাবনা শুধু তার একার নয় রঙ্গনও একই কথা ভাবছে। যাক তার এক ভাই অন্তত ন্যায়ের কথা ভাবছে… রঙ্গন’কে ইশারা করে আবারও মা’য়ের কক্ষে প্রবেশ করলো প্রণয়। সেখানে অরুনাও ছিলো। দুই মায়ের সঙ্গে দু’ভাই বেশ অনেকটা সময় আলোচনা করে এক ভৃত্য’কে দিয়ে পলাশ’কে ডেকে পাঠালো। তারপর মা’য়ের কঠোরতায় দমে যেতে বাধ্য হলো পলাশ। কিন্তু এসবের পেছনে যে প্রণয় এবং রঙ্গন রয়েছে ঘুণাক্ষরেও টের পেলো না। কারণ প্রণয় ইতিমধ্যেই হাসপাতালে চলে গেছে, রঙ্গনও নিশ্চিন্ত মনে গৃহের বাইরে চলে গেছে। মা’য়ের ঘর থেকে বেরোনের সময় পলাশের সামনে পড়লো শবনম। তাকে দেখেই পলাশ বললো,
-‘ ভাবিজান, এ যাত্রায় ঐ বেশ্যার বাচ্চা বাঁইচা গেলো। কিন্তু চিন্তা করবেন না ওর সঙ্গে আমি জবরদাস্ত ফাইট করেই ছাড়বো। নারী’জাত কে কীভাবে শায়েস্তা করতে হয় তা এই পলাশ খুব ভালো করেই জানে।’
মাথায় দেওয়া ঘোমটা আরো লম্বা করে সামনে টেনে নিলো শবনম। পলাশের কথায় বিন্দু শব্দও উচ্চারণ করলো না সে। বরং তাকে পাশ কাটিয়ে নিঃশব্দে চলে গেলো। পলাশ ঘাড় বাঁকিয়ে শবনমের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। ওষ্ঠকোণে দুর্বৃত্ত হাসি ফুটিয়ে বিরবির করে আওড়ালো,
-‘ জমিদার বাড়ির বড়ো বউ, তোমার দেমাক আছে বটে।’
শবনম রোমানার কক্ষে গিয়ে পলাশের বলা কথাগুলো বলতেই রোমানা শবনম’কে জড়িয়ে ধরলো। কাঁদতে কাঁদতে বললো,
-‘ বড়ো ভাবি, ভাইয়ারা এতো নিষ্ঠুর কেন? ‘
-‘ যতোদিন অর্থ আছে, যতোদিন ক্ষমতা আছে, যতোদিন ওদের শরীরে দম আছে ততোদিন ওরা নিষ্ঠুরতা করবেই। জানো আমি খুব করে চাই হয় ওরা এ দুনিয়া থেকে নিঃশেষ হয়ে যাক, নয়তো ওদের এমন পরিণতি হোক যে স্বয়ং ইবলিশও ওদের পরিণতি দেখে ভয় পাবে। ‘
রোমানা আঁতকে ওঠলো। নিজ হস্ত দ্বারা শবনের মুখ চেপে ধরে বললো,
-‘ এমন কথা বলো না বড়ো ভাবি ওরা যে আমাদের আপনজন। ‘
-‘ তুমি বুঝবে না বোন, আমার যন্ত্রণাটা তুমি বুঝবে না। ঐ পল্লব চৌধুরী আমার স্বামী তবুও আমি চাই ওর বিনাশ হোক। আত্মহত্যা যদি পাপ না হতো অনেক আগেই আত্মহত্যা করতাম। মানুষ’কে হত্যা করা যদি পাপ না হতো আমার স্বামী’কে নিজ হাতে খুন করতাম। আফসোস দু’টোই মহাপাপ। তাই অপেক্ষায় আছি ওদের বিনাশ ঘটার। অপেক্ষায় আছি আমার স্বামী’কে ধ্বংস হতে দেখার। ইহকাল না হোক পরকালে যেনো চোখের সামনে ওকে শাস্তি পেতে দেখতে পারি। ‘
[১৬]
বাইজি গৃহঃ
মান্নাত’কে জড়িয়ে ধরে নিঃশব্দে কাঁদছে শারমিন বাইজি। এ প্রথম শাহিনুরের কোমল মসৃণ দেহে হাত তুলেছে সে। একের পর এক কাঁচা কঞ্চির করাঘাতে মেয়েটার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তিম দাগ পড়ে গেছে। ফুলেফেঁপেও ওঠেছে একেকটা দাগ। পা থেকে মাথা অবদি একনাগাড়ে আঘাত পেতে পেতে যখন মেয়েটা শরীর ছেড়ে দিয়ে ভূমি’তে লুটিয়ে পড়লো তৎক্ষনাৎ থেমে গেলো শারমিন। দু’হাতে নিজের মুখ চেপে ধরে দৌড়ে চলে গেলো নিজ কক্ষে। যাওয়ার আগে ভৃত্য রেশমা’কে আদেশ করে গেলো শাহিনুর’কে যেনো সর্বোচ্চ গহীন কক্ষটাতে তালা বন্ধ করে রাখা হয়। না এক গ্লাস পানি আর না কোন ওষুধ, একটাও যেনো না দেওয়া হয় তাকে। শারমিন বাইজির এই কাঠিন্যতা সকলের বক্ষঃস্থলে ভয়ংকর কম্পন ধরিয়ে দিলো। নিজ মেয়ের প্রতি এ প্রথম এইরূপ কঠিন্যতা দেখে সকলের অন্তর আত্মা কেঁপে ওঠলো। কোন সাড়া শব্দ না করে ঠাঁই হয়ে এক জায়গায় কেউ দাঁড়িয়ে আবার কেউ বসে রইলো। রেশমা আর সখিনা মিলে নুর’কে গোপন কক্ষে রেখে এলো। সখিনা ঠিক গোপনে এক গ্লাস পানি দিয়েছিলো শাহিনুর’কে। কিন্তু সে আহত কন্ঠে বলেছে,
-‘ আমার আম্মা আমাকে পানি দিতে না করেছে সখী, এই পানি আমি খাবো না৷ চলে যা তুই আমার আম্মা যে পর্যন্ত আমাকে ক্ষমা না করবে সে পর্যন্ত আমি পানিও স্পর্শ করবো না। ‘
পলাশ চৌধুরী’র ক্ষিপ্ত মনোভাব সম্পর্কে ঠিক জেনে গেছে শারমিন৷ তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব অলিওর চৌধুরী’র সঙ্গে কথা বলবে এবং তার মেয়ে’কে নিরাপত্তা দিয়ে এই অভিশপ্ত গৃহ থেকে মুক্ত করবে। অলিওর চৌধুরী ব্যবসার কাজে ঢাকা গিয়েছে তাই একটি চিঠি লিখতে বসলো শারমিন। পাঁচফোড়ন গৃহে টেলিফোন ব্যবস্থা থাকলেও বাইজি গৃহে তা নেই। তাই যোগাযোগ করার মাধ্যম হিসেবে রয়েছে চিঠি। চিঠি লেখা শেষ করে সবুর উদ্দিন’কে দিয়ে সেই চিঠি পাঠিয়ে দিলো শারমিন। তারপর শুষ্ক মুখে গিয়ে বসলো মান্নাতের পাশে। বললো,
-‘ সখী যা না মেয়েটা’কে একটু দেখে আয়। এই বাটিতে ওষুধ বেটে দিছি যেখানে যেখানে আঘাতের চিহ্ন দেখবি সেখানে সেখানে লাগিয়ে দিবি। ‘
শারমিনের ক্রন্দনরত কন্ঠস্বর শুনতে পেয়ে তার দিকে তাকালো মান্নাত। বললো,
-‘ তুমিও চলো যাই মেয়েটা’কে দেখে আসি।তোমাকে পেলে একটু শান্তি পাবে। শরীরটা নিশ্চিত খারাপ করেছে এইভাবে আঘাত কি আর ও সহ্য করতে পারে? এতোটা কঠোর না হলেও পারতে। ‘
চোয়ালজোড়া শক্ত হয়ে ওঠলো শারমিনের। বললো,
-‘ যে সাহসটা আজ ও দেখিয়েছে তার জন্য কতো ভয়ংকর পরিণতি অপেক্ষা করছে জানিস? ওর ভুলটা কোথায় জানিস? এ গৃহ থেকে একা একা বের হওয়াটাই ওর বড়ো ভুল সেটার শাস্তিই দিয়েছি। আর রইলো জমিদার গিন্নি’কে না বুঝে সঠিক জুতো মারা…এটার জন্য তো আমি গর্বিত। ‘
-‘ তাহলে চলো যাই নুরের কাছে। ‘
-‘ আমি সহ্য করতে পারবোনা ওর আঘাতের চিহ্নগুলো। তুই যা মেয়েটার সঙ্গেই থাক আজ গিয়ে। আমি একটু পর আসছি দ্বারের বাইরে বসেই রাতটা কাটিয়ে দেবো। ওকে যেনো বলিস না আমি ওখানে আছি তাহলে ওর অভিযোগ গুলো শুনতে পারবোনা কিন্তু।’
-‘ কি অদ্ভুত তাইনা নিজ হাতে আঘাত করেছো অথচ নিজ চোখে সে আঘাতের চিহ্ন দেখলে সহ্য করতে পারবে না। ‘
-‘মা’য়েরা হয়তো এমনই হয়। ‘
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মান্নাত বললো,
-‘ আচ্ছা আমি কাপড়টা পাল্টেই যাচ্ছি। ‘
বিদঘুটে অন্ধকার কক্ষের মেঝেতে শুয়ে ছিলো শাহিনুর। এমন সময় জানালায় কে যেনো ঠকঠক শব্দ করলো। ফিসফিস কন্ঠে দু’বার উচ্চারণ করলো,
-‘নুর,নুর। ‘
সচকিত হয়ে দুর্বল দেহে ওঠে দাঁড়ালো শাহিনুর। ব্যথায় শরীরটা জ্বালা করছিল, টনটন করছিলো তবুও কয়েক কদম এগিয়ে জানালা খুলে ভয়কাতুরে স্বরে বললো,
-‘ তুমি কে? ‘
-‘ আমি,আমি রঙ্গন, তোমার বাঁশিওয়ালা! ‘
অকস্মাৎ কেঁদে ফেললো শাহিনুর অস্থির চিত্তে ক্রন্দনরত কন্ঠে বললো,
-‘ বাঁশিওয়ালা তুমি! তুমি এসেছো? ‘
পরোক্ষণেই কি যেনো ভেবে শিউরে ওঠলো শাহিনুর। অকস্মাৎ জানালা বন্ধ করে দিয়ে সমানে আয়াতুল কুরসী পাঠ করতে শুরু করলো। একবার আয়াতুল কুরসী পাঠ শেষ করে কাঁপা কন্ঠে অনবরত বলতে লাগলো,
-‘ তুমি শয়তান! তুমি শয়তান! বাঁশিওয়ালা এখানে কখনো আসেনা। তুমি আমাকে ফাঁকি দিতে এসেছো। আমি সব বুঝে গেছি তুমি শয়তান ভালো মানুষ’দের শুধু ভয় দেখাও তুমি শয়তান। ‘
মুখের সামনে এভাবে জানালা বন্ধ করায় কিঞ্চিৎ অপমান বোধ হলেও শাহিনুরের বোকা বোকা কথা শুনে হেসে ফেললো রঙ্গন৷ বির বির করে বললো,
-‘ হায় কপাল! এই মেয়ে তো আমাকে সোজা শয়তান বানিয়ে দিলো। ‘
তারপর গলা খাঁকারি দিয়ে শাহিনুর’কে শুনিয়ে শুনিয়ে বললো,
-‘ নুর তুমি আমার মতো শান্তশিষ্ট, ভদ্র ছেলেটা’কে শয়তান বলতে পারলে? ‘
শাহিনুর এবার ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে মেঝেতে বসে পড়লো৷ কম্পিত গলায় বেশ শব্দ করে আরো দু’বার আয়াতুল কুরসী পাঠ করলো। রঙ্গন কপট রাগ দেখিয়ে বললো,
-‘ আরে নির্বোধ বালিকা শয়তান এতোবার আয়াতুল কুরসী শোনার জন্য এখানে দাঁড়িয়ে থাকে না। আমি নিষ্পাপ ফেরেশতার ন্যায় একজন সুবোধ্য যুবক। তোমার বাঁশিওয়ালা আমি, ট্রাস্ট মি। মানে বিশ্বাস করতে পারো আমাকে। ‘
ওপাশ থেকে নুর বললো,
-‘ শয়তান’রাই তো অনেক লম্বা হয় তুমি যদি বাঁশিওয়ালা হও কীভাবে এতো উঁচু জানালা নাগাল পেলে? ‘
-‘ কি জ্বালায় পড়লাম নুর, আমি কতো কাঠখড় পোহিয়ে একটি মই সংগ্রহ করে তোমার কাছে এলাম। আর তুমি এইভাবে আমাকে সন্দেহ করছো! না হয় তুমি আহামরি সুন্দরী তাই বলে এতো দেমাক দেখাতে হবে? শুনো বালিকা আমিও কিন্তু কম সুন্দর নই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রঙঢঙ মাখা মাইয়াগোর ক্রাশ আমি। ‘
রঙ্গনের কথা শুনে ধড়ফড়িয়ে ওঠে জানালা খুলে দিলো শাহিনুর। ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে অবাকান্বিত কন্ঠে বললো,
-‘ সত্যি তুমি এসেছো? ‘,
-‘ সত্যি এই তোমাকে ছুঁয়ে বললাম। ‘
শাহিনুরের হাতে হাত ছুঁয়ে দিতেই আঁতকে ওঠে হাত সরিয়ে নিলো শাহিনুর৷ বললো,
-‘ আমাকে ছুঁইয়ো না বাঁশিওয়ালা, বুকের ভিতর ভয় করে। ‘
বুকের ভিতর আবার কীভাবে ভয় করে? ভাবতেই আশ্চর্য হয়ে হেসে ফেললো রঙ্গন। বললো,
-‘ ভয় নেই নুর, তুমি ভয় পেয়ো না। তুমি আমার সঙ্গে চলো, হাসপাতালে নিয়ে যাবো তোমাকে। আমি সবুর উদ্দিনের কাছে সবটা শুনেছি। ‘
-‘ কি শুনেছো? ‘
-‘ তোমাকে তোমার আম্মা আজ খুব মেরেছে তাই শুনেছি। চলো নুর ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাবো তোমাকে। এই আমার হাত ধরে নিচে নেমে এসো। ‘
-‘ আমি যাব না আম্মা আবার আমাকে মারবে আমি যাবো না। ‘
-‘ তোমার আম্মা জানবে না নুর এই এখনি যাবো এখনি আসবো। ‘
অদ্ভুত এক আত্মবিশ্বাস থেকে রঙ্গনের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো শাহিনুর। তারপর অতি সাবধানে নেমে গেলো। রঙ্গন শাহিনুরের হাতটা সযত্নে মুঠো ধরে এগোতে লাগলো। শাহিনুর বললো,
-‘ আমার খুব ভয় করছে বাঁশিওয়ালা। ‘
মুচকি হেসে রঙ্গন বললো,
-‘ ভয় নেই নুর আমার ভাইয়ার কাছে নিয়ে যাচ্ছি। অনেক বড়ো ডাক্তার সে। তোমার আঘাতের জায়গায় ওষুধ লাগিয়ে দেবে। সব আঘাত সেরে যাবে দেখো। ‘
ঘন অন্ধকারে রঙ্গনের সাথে চলতে চলতে মিলিয়ে গেলো শাহিনুর৷ এদিকে মান্নাত হারিক্যানের আলো জ্বেলে নুর, নুর ডাকতে ডাকতে কক্ষে প্রবেশ করলো। পুরে কক্ষে নুরের কোন অস্তিত্ব না পেয়ে ভয়ে শিউরে ওঠলো সে। ধপ করে বসে কেঁদে দিলো। দিশেহারা হয়ে বললো,
-‘ সখী’কে কি জবাব দিব আমি, কোথায় চলে গেলো নুর! ‘

রাতের খাবার সেরে গায়ে জড়ানো শার্ট’টা খোলার সময় শার্টের পকেট থেকে শিউলি আর বকুল ফুলের সংমিশ্রণের অদ্ভুত এক ঘ্রাণ নাকে এলো প্রণয়ের। বক্ষঃস্থলে তৈরি হলো সুক্ষ্ম এক ব্যথা। যে ব্যথার অন্ত ঠিক কোথায় জানা নেই তার। ধীরগতিতে পকেট থেকে একমুঠো ফুল বের করলো। তারপর সে ফুলগুলো’তে নাক ছুঁইয়ে লম্বা এক শ্বাস নিলো। তাচ্ছিল্য সহকারে বিরবির করে বললো,
-‘ এই ফুলগুলোয় এক বাইজি কন্যার হাতের স্পর্শ রয়েছে । এই ফুলগুলোয় এক বাইজির সন্তানের পা’য়ের স্পর্শ রয়েছে। সবটা জেনেও তুমি এই ফুল’কে তোমার বক্ষে স্থান দিয়েছো। সবটা জেনে বুঝে তুমি এগুলো স্পর্শ করছো, তৃপ্ত চোখে দেখছো,প্রশান্তি নিয়ে ঘ্রাণ নিচ্ছো। ছিঃ কতোবড়ো অধঃপতন তোমার জনাব.প্রণয় চৌধুরী! ‘
#বাইজি_কন্যা
#লেখা_জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_সংখ্যা_১০
নিজেই নিজেকে তাচ্ছিল্য করা…অদ্ভুত তাইনা? প্রণয় চৌধুরী মানুষটাই অদ্ভুত চরিত্রের। তার স্বভাবে
কখনো মন বলবে, ইশ মানুষ’টার চরিত্র কি অপরূপ! আবার কখনো মন বলবে, ছিঃ মানুষ’টা এতো নির্দয় কেন? মানুষ’টা এতো স্বার্থপর কেন? তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দেখে অনেকে ভুলেই যাবে, স্বার্থের এই পৃথিবীতে নিঃস্বার্থতাই বড়ো আশ্চর্যান্বিত।পাঁচফোড়ন গৃহ থেকে ফেরার সময় ফুলগুলো চোখে পড়ে প্রণয়ের। অন্তঃকোণে কঠিন ব্যামো ধরেছে তার। ডাক্তারি বিদ্যা থাকায় অতিসহজেই মস্তিষ্ক ধরে ফেলেছে ব্যামোর উৎসর্গ ঠিক কোথায়। তাই তো কোনদিক দ্বিধা না করে ভূমিতল থেকে ফুলগুলো তুলে নিয়ে এসেছে। প্রেমে দ্বিধা না থাকলেও দ্বন্দ্ব থাকবে। তাই প্রণয় দ্বিধা না রেখে দ্বন্দ্বের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছে। দীর্ঘ সময় ফুলগুলো হাতে নিয়ে নিশ্চুপ হয়ে বিছানায় বসে আছে প্রণয়। কেমন একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে সে। চারদিকে যেনো ঘুটঘুটে অন্ধকার এক টুকরো আলোর খোঁজে বিভোর সে। সে আলোর নেশায় বক্ষঃস্থল এতোটাই বেপরোয়া হয়ে ওঠলো যে অস্ফুট স্বরে ওষ্ঠাধরে উচ্চারিত হলো, ‘নুর!’ তারপরই অকস্মাৎ দ্বারে করাঘাতের শব্দ শুনতে পেলো। হুঁশে ফিরে ত্বরিতগতিতে ফুলগুলো লুকিয়ে ফেললো প্রণয়।একটা ঢিলেঢালা ফতুয়া পড়তে পড়তে দ্বারের বাইরে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বললো,
-‘ কে? ‘
-‘ ভাই আমি তাড়াতাড়ি দরজা খোল একজন রোগি নিয়ে এসেছি তোমার কাছে। ‘
ভ্রুদ্বয় কুঁচকে দরজা খুললো প্রণয়। সঙ্গে সঙ্গেই ভেসে ওঠলো দু’টো মুখ। নুরের নিষ্পাপ, শুভ্র মুখুশ্রী দৃষ্টি’তে অকস্মাৎ সূর্যের তেজস্বী রশ্মির ন্যায় আঘাত হানলো। সুঠাম দেহের শ্যামবর্ণীয় গুরুগম্ভীর মুখটা দেখা মাত্রই রঙ্গনের পিছনে লুকালো শাহিনুর। প্রণয়ের দৃষ্টি এবার রঙ্গনের দিকে চলে গেলো। চোয়ালজোড়া হয়ে ওঠলো দৃঢ়। প্রচণ্ড ক্ষোভের সঙ্গে প্রশ্ন করলো,
-‘ এসবের অর্থ কী? ‘
-‘ সব’টা বলছি ভাই আগে তো ভিতরে যেতে দাও। ‘
এটুকু বলে রঙ্গন পিছন ঘুরে নুরে’র হাত চেপে ধরলো। বললো,
-‘নুর ভয় পেওনা ভাইয়া খুব ভালো। ভিতরে চলো। ‘
রঙ্গনের কথা শুনে শাহিনুর ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে রঙ্গনের হাতের আঙুলের ফাঁকে আঙুল গুঁজে দিয়ে শক্ত করে ধরলো। প্রণয়ের দৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য বারেবার রঙ্গনের পিছনে থাকার চেষ্টা করতে লাগলো। প্রণয়ের দৃষ্টি দু’টো হাতের এক হয়ে যাওয়া দৃশ্য’তেই আঁটকে রয়েছে। তার নয়নজোড়ায় বিস্ফোরণের বিন্দু চিহ্নও পাওয়া গেলো না। তবে বক্ষঃস্থলে প্রলয় শুরু হয়ে গেলো। ক্ষণকাল বাকরুদ্ধ থেকে বললো,
-‘ ভিতরে আয়। ‘
প্রশস্ত হেসে শাহিনুর’কে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো রঙ্গন। শাহিনুরের ধীরতা,নম্রতায় প্রণয়ের মুগ্ধতা কতোটুকু এলো জানা নেই। কিন্তু ভীতিগ্রস্ত একজোড়া চোখে রঙ্গনের প্রতি অগাধ ভরসার পুরোটাই আঁচ করতে পারলো। বিনিময়ে ওষ্ঠকোণে ফুটে ওঠলো বাঁকা হাসি। যে হাসিটুকু আড়াল করে শাহিনুরের দিকে দৃঢ় দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। দৃষ্টি তার দিকে আবদ্ধ করে রঙ্গন’কে প্রশ্ন করলো,
-‘ সমস্যা কি? ‘
রঙ্গন শাহিনুর’কে ডিভানে বসালো। তারপর শাহিনুর’কে শারমিনের আঘাতের কথা ব্যক্ত করে চিকিৎসা দিতে বললো। প্রণয় ধীরগতিতে বারকয়েক পায়চারি করলো। তারপর ওদের মুখোমুখি চেয়ার টেনে এক পায়ের ওপর আরেক পা তুলে বসলো। রঙ্গন’কে আদেশ করলো,
-‘ ও’ঘরে চিকিৎসা বাক্স রয়েছে নিয়ে আয়।’
রঙ্গন ওঠতে নিলেই শাহিনুর রঙ্গনের একটি হাত চেপে ধরলো। চোয়ালজোড়া কঠিন থেকেও কঠিনতর হয়ে ওঠলো প্রণয়ের। রঙ্গন আমতা আমতা করে প্রণয়’কে বললো,
-‘ মেয়েটা ভীষণ ভয়কাতুরে ভাইয়া। ‘
চোখ বুজে লম্বা শ্বাস ছাড়লো প্রণয়। বললো,
-‘ ও’কে বল এখানে কোন বাঘ, ভাল্লুক নেই। ‘
শাহিনুর’কে বুঝিয়ে রঙ্গন ভিতরের রুমে চলে গেলো। রঙ্গন যাওয়ার সাথে সাথেই ওঠে দাঁড়ালো প্রণয়। ক্রোধে শরীর রিরি করছে তার । কোনক্রমেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে শাহিনুরের সম্মুখেই এক লাথিতে এপাশ থেকে চেয়ারটা ওপাশে নিয়ে ফেললো। তীব্র ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে বসে কেঁদে ফেললো শাহিনুর। রঙ্গন চিকিৎসা বাক্স নিয়ে ছুটে এলো৷ বললো,
-‘ কি হয়েছে ভাই? ‘
-‘ কি হয়েছে মানে এই মেয়ে’কে কীভাবে চিকিৎসা দেবো আমি? জমের মতো ভয় পাচ্ছে আমাকে। তুই ওকে স্বাভাবিক কর আমি আসছি। ‘
এটুকু বলেই বেডরুমে চলে গেলো প্রণয়। রঙ্গন জানে তার এই ভাই কতোটা বদমেজাজি। তাই তেমন কোন সন্দেহ করলোনা বরং শাহিনুর’কেই বোঝাতে লাগলো৷ কয়েক মিনিটের মধ্যে ফিরে এলো প্রণয়। হাতে এক কাপ দুধ চা, আর এক গ্লাস পানি। রঙ্গনের দুধ চা প্রিয় তাই রঙ্গন’কে বললো,
-‘ তোর চা। তুই বরং ওখানে গিয়ে রিল্যাক্স হয়ে চা খা। আমি রোগির অবস্থা দেখি। ‘
রঙ্গনের হাতে চা’য়ের কাপ দিয়ে পানির গ্লাস শাহিনুরের দিকে ধরলো। বললো,
-‘ এই মেয়ে খুব ভয় পাচ্ছো, পানিটা খেয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে নাও। ‘
রঙ্গন স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে চেয়ারে গিয়ে বসলো। প্রণয় গিয়ে শাহিনুরের পাশে বসে শাহিনুর’কে পানি খেতে বললো। শাহিনুর সত্যি ঢকঢক করে পানি পান করলো। প্রণয় পানির গ্লাস নিজ হাতে নিয়ে ট্রি টেবিলে রেখে শাহিনুরের দিকে চেপে বসে শাহিনুরের কাঁধে হাত রাখলো। সঙ্গে সঙ্গেই ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিলো শাহিনুর। প্রণয় বললো,
-‘ আমি একজন ডক্টর। আর ডক্টরের কাছে কোন রোগিরই লজ্জা রাখা উচিত নয়। সো লজ্জা শরম বিসর্জন দিয়ে আমার কাছে আসতে হবে। ‘
প্রণয়ের দিকে দুর্বল দৃষ্টিতে তাকালো শাহিনুর৷ অগাধ ভয়ের সঙ্গে খানিকটা লজ্জিত হয়ে আরেকটু সরে গেলো। কেমন যেনো দুর্বল লাগছে তার। মাথাটা ঝিমঝিম করছে,শরীরের ভার ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করছে। বাঁশিওয়ালা’কে কি বলবে তাকে বাইজি গৃহে নিয়ে যেতে? এটুকু ভেবে রঙ্গনের দিকে তাকালো। কিন্তু রঙ্গন কোথায় সে তো এখানে নেই! নেতিয়ে পড়া দৃষ্টিতে এবার প্রণয়ের দিকে তাকালো শাহিনুর। প্রণয়ের অধরে দুর্বৃত্ত হাসির ঢল নেমেছে যেনো। এটুকু দেখেই ডিভানে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে পড়লো শাহিনুর। তলিয়ে গেলো নিবিড় তন্দ্রায়। প্রণয় স্বল্প পরিমাণ সময়ও নষ্ট করলো না। ত্বরিত গতিতে শাহিনুর’কে কোলে তুলে নিজের বেডরুমে গিয়ে দরজা লক করে দিলো। বদ্ধ ঘরে একজন ডাক্তার হিসাবে নিজের পুরো দায়িত্ব পালন শেষে বড্ড মুশকিলে পড়ে গেলো প্রণয়৷ জমিদারের চার পুত্র’দের যেমন নারী শরীর মুখস্থ তেমনি নারী’দের সকল বিষয়েই বেশ ভালো মতোন অবগতও। কিন্তু প্রণয় চৌধুরী নারীদের সকল বিষয়ে একেবারেই জ্ঞাত নয়৷ যেমনটা সে এ মূহুর্তে বুঝতে পারছে না কিছুক্ষণ পূর্বে শাহিনুরের দেহচ্যুত করা শাড়িটি পুনরায় পরাবে কি করে! উপায় অন্তর না পেয়ে কোনরকম শাড়িটা শাহিনুরের গায়ে পেঁচিয়ে দিলো। যদিও নিষিদ্ধ চাওয়া’তে মন, মস্তিষ্ক অবশ হয়ে আসছিলো কিন্তু ফুলের মতো পবিত্র মুখশ্রী, তুলোর অধিক নির্মল শরীর’টার প্রতি সীমাহীন সম্মান, স্নেহের বশিভূত হয়ে কিছুই পারলো না সে। ঠিক এই একটা জায়গাতেই হয়তো নিপুণ ভাবে প্রমাণিত হয় সে জমিদারের বাকি পুত্রদের চেয়ে আলাদা ভীষণ আলাদা। শাড়িতে পেঁচানো ঘুমন্ত শাহিনুর’কে দেখে প্রণয়ের দুর্বৃত্ত হৃদয়ে বেজে ওঠলো,
-‘ বাহ প্রণয় চৌধুরী বাহ জীবনে প্রথমবার কোন নারী’র কাপড় খুললে অথচ পরাতে সক্ষম হলে না৷ যাক জমিদার বংশের অন্তত এই একটি ধারা বজায় রাখলে। জমিদার পুত্র’রা শুধু নারী’দের কাপড় খুলতেই জানে পরাতে জানে না।’
আপনমনেই হেসে ফেললো প্রণয়। শাহিনুর’কে আবারো পাঁজা কোল করে নিয়ে রুম ছেড়ে বেরিয়ে পাশের ঘরে উঁকি দিলো। যে ঘরে বেঘোরে পড়ে ঘুমাচ্ছে রঙ্গন৷ অতিকৌশলে তখন চা আর পানির মধ্য ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ছিলো যার ফলশ্রুতিতে দু’জনই বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। ভাবতেই বাঁকা হেসে বিরবির করে প্রণয় বললো,
-‘ ডিয়ার ব্রাদার বারো ঘন্টার আগে তোমার এ ঘুম কাটছে না। ‘
তারপর শাহিনুরের পবিত্র মুখশ্রী’তে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,
-‘ তুমি শুধু অতিসুদর্শিনীই নও তুমি এক মায়াবিনীও বাইজি কন্যা। কেউ তোমার রূপে দগ্ধ হচ্ছে, কেউ বা তোমার মায়া’য় জড়িয়ে যাচ্ছে, কারো হৃদয়ে তোলপাড় সৃষ্টি করছে তোমার সরলতা, কারো মস্তিষ্ক বিগড়ে দিয়েছে তোমার অবুঝ প্রতিবাদী স্বর। এক তুমি’র অগণিত প্রার্থী’দের এক আমিই পরাজিত করবো মনোহারিণী! ‘

চলবে…
[হবেন না। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here