বিষাক্ত প্রেম পর্ব ১

#বিষাক্ত প্রেম ২

Urme prema (sajiana monir)

পার্ট: ১

জ্ঞান ফিরতেই দেখি এক অন্ধকার রুমে কেউ আমার হাত পা বেধেঁ আটকিয়ে রেখেছে চারপাশে অন্ধকারে আচ্ছন্ন ধবধবা সাদা পর্দার ফাকেঁ আসা হালকা আলো তে কিছুটা দেখা যাচ্ছে ।চিৎকার করবো সেই সুযোগটাও নেই কারন মুখ বাধা !
তারাতারি করে নিজের দিকে তাকাই , দেখি আমার জামা -কাপড় ঠি ক আছে কিন্তু কুর্তির হাতা ছেড়া পুরো শরীর মূহুর্তেই ভয়ে কাপঁতে শুরু করে ।আমার অচেতন অবস্থার সুযোগে কেউ আমার সাথে খারাপ কিছু করেনি তো ?
বুক ফেটে কান্না আসছে শব্দ করে কান্না করতে চাইছি কিন্তু তা পারছিনা কারন মুখ বাধাঁ শুধু টপটপ করে চোখ থেকে নোনা জল ঝোড়ছে ।
আমার সাথে এসব কি হচ্ছে কে করছে আমার জানা নেই ।
হঠাৎই দরজা খোলার শব্দ কানে আসে ঘাঁড় ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখি কেউ একজন ভিতরে প্রবেশ করছে তার পড়নে কালো হুডি আর মুখ মাস্ক দিয়ে ডাকা চেহারা দেখা যাচ্ছেনা শুধু তার চোখ জোড়া দেখা যাচ্ছে তার পিছন পিছনেই আরো কতগুলো লোক ঘরে প্রবেশ করে তারা রুমে মোমবাতি গুলো জ্বালিয়ে চলে যায় ।মোমবাতির আলোর কারনে মুহুর্তেই অন্ধকার ঘর আলোকিত হয়ে যায় ।মোমবাতীর হালকা আলোতে পুরো ঘর জুড়ে আমার পেন্টিং দেখে আমার চোখজোড়া বড় বড় হয়ে যায় !আলিশান রুম পুরো রুমে আমার শত ভঙ্গিতে আকাঁ ছবি ।

.

আমি সেহের বাবা মায়ের বড় মেয়ে আজ পাচঁ বছর পর কানাডা থেকে নিজের দেশে ফিরেছি আমার অতীত যা কোন এক দুর্ঘটনায় আমার স্মৃতি থেকে মুছে গেছে পাচঁ বছর আগে আমার জীবনের কোন কিছুই আমার মনে নেই ।কি ছিলো আমার অতীত আমার তা জানা নেই ।আজ পাচঁ বছর পর পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দেশে ফিরেছি সবাইকে সার্প্রাইজ দেওয়ার জন্য কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে পার্কিং এরিয়াতে আসতেই কেউ একজন আমার মুখে রোমাল চেপে ধরে তার পর আর কিছু মনে নেই জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে এই রুমে পাই !
আমার অতীত কি ছিলো আমি জানি না যখন কানাডায় ছিলাম খালামনি থেকে শুনেছি আমার অতীত আর পাচঁটা মেয়ের মতই সাধারন ছিলো ।কিন্তু যতবার ফোনে বাবা মা কে দেশে ফিরার কথা বলেছি তাদের চেহারায় প্রতিবারই ছিলো ভয়ের ছায়া তার কারন জিগাসা করতেই উত্তরে বলতো “কিছুনা “তাই আজ তাদের না জানিয়েই দেশে ফিরে আসি কিন্তু দেশে ফিরে এমন কিছু ঘটবে তা আমার কল্পনার বাহিরে ছিলো ।

.

দরজা বন্ধ করে লোকটি আস্তে আস্তে আমার দিকে এক পা করে এগিয়ে আসতে তার চোখে কেমন যেন এক নেশা ।লোকটি যত কাছে আসছে আমার ভয়টাও ততটা বাড়ছে আমি আস্তে আস্তে পিছনের দিকে চাপতে লাগে এক সময় আমি বেডের সাথে আটকিয়ে যাই লোকটি আমার সামনে বিছানায় বসে আমার দিকে তার হাত বাড়িয়ে দেয় আমি ভয়ে মুখ ফিরিয়ে নেই নিজেকে আরো গুটিয়ে বসি আমার চোখ থেকে অনবরত পানি জোড়ছে ।লোকটি আমার কাছে এসে আমার মুখ থেতে টেপ খুলে ফেলে আমি ভয়ে হাউমাউ করে কান্না করতে করতে বলি
-“আমার এত বড় ক্ষতি করবেন না আমাকে ছেড়ে দিন প্লিস !
আমাকে আমার বাবা মায়ের কাছে যেতে দিন আপনার যতটাকার প্রয়োজন আমার বাবা আপনাকে দিবে কিন্তু আমাকে ছেড়ে দিন আমার এত বড় ক্ষতি করবেন না দয়া করে ।”
বলেই আবার হাউমাউ করে কান্না করতে লাগি এক সময় হ্যচকি উঠে যায় ।হঠাৎই লোকটা আমার ঠোঁটে তার আঙ্গুল রেখে শান্ত গলায় বলতে শুরু করে
-“হুসসসস !
আমি তোমার সাথে কিছু করিনি
না আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো !
ডোন্ট ক্রাই ,আমি তোমার কান্না সয্য করতে পারিনা ।”
তার মুখে এমন কথা শুনে আমি মূহুর্তেই স্থব্দ হয়ে যাই ফ্যাল ফ্যাল করে তার দিকে তাকিয়ে থাকি ।লোকটি আমার চোখের জল মুছে দিয়ে আলতো করে আমার চুল গুলো কানের পিছনে গুজেঁ দিয়ে হাতের পায়ের দড়ি খুলতে খুলতে বলল
-“হাতে পায়ে খুব ব্যথা করছে তাই না জান ?”
হাতের পায়ের লাল হয়ে ফুলে যাওয়া জায়গায় মাস্ক পড়া অবস্থায় বার বার তার চোখ মুখে ছোঁয়াচ্ছে অস্বাভাবীক কন্ঠে বলতে লাগে
-“খুব কষ্ট হয়েছে তাই না !
খুব লেগেছে ।
আমার একদম তোমাকে এভাবে কষ্ট দেওয়া উচিত হয়নি ।
কিন্তু কি করবো বলো তোমাকে কাছে রাখার জন্য আমার এসব করতে হয়েছে !
কি…কি ন্তু তোমাকে কষ্ট দেওয়ার শাস্তি তো আমাকে পেতে হবেই তাই না !”
বলেই আসে পাশে কি জানো খুজঁতে শুরু করে তার কাজ কর্ম কোন কিছুই আমার স্বাভাবীক মনে হচ্ছিলোনা লোকটির প্রত্যেকটি কাজ কেমন জানো অস্বাভাবীক সাইকোদের মত ।এসব দেখে আমার ভয় আরো বেড়ে যায় শরীর আরো বেশি কাপঁতে লাগে ।আমি নিজেকে আরো বেডের সাথে চেপে গুটিয়ে বসি ।লোকটি হঠাৎ পাশের কাবার্ড থেকে বড় ধারালো ছুড়ি বের করে নিজের হাতে কয়েকবার আঘাত করে মুহূর্তেই হাত থেকে টপটপ করে রক্ত নিচে পড়ছে তারপর সেকেন্ডেই আমার কাছে এসে আমার ঘাড়ের চুল সরিয়ে সেখানে নিজের মাথা রেখে বেশ বড় বড় শ্বাস নেয় যেন এবার তার শান্তি মিলেছে ।
আমি ভয়ে মুখে হাত নিয়ে কান্না করছি লোকটিকে নিজের থেকে সরাতেও পারছিনা আমার প্রচন্ড ভয় করছে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে ।লোকটি বড় একটি শ্বাস নিজের মধ্যে টেনে নিয়ে মাতাল কন্ঠে বলে
-“উফফফ সেই পাগল করা মাতাল ঘ্রান !
যার জন্য আজ পাচঁটি বছর অপেক্ষা করেছি তোমার এই নেশাযুক্ত মাতাল করা ঘ্রান আমাকে কতটা অগোছালো করে দেয় ইউ হ্যাব এনি আইডিয়া ?
আই নিড ইউ !
আই ব্যাডলি নিড ইউ ।”
বলেই আবার আমার চুলে মুখ ডুবিয়ে ঘ্রান নিতে ব্যস্থ হয়ে পড়ে ।ধীরে ধীরে আমার ঘাড়ে নিজের আঙ্গুল গুলো ছুঁয়িয়ে দিচ্ছে বার বারের মত আমার শরীর ভয়ে কেপেঁ উঠছে নিজের সাথে কি হচ্ছে কিছুই মাথায় কাজ করছিলোনা অন্যদিকে তার অন্য হাত থেকে রক্ত পড়ে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে সেদিকেও তার কোন ধ্যান নেই তার পুরো ধ্যান যেন আমাতে মগ্ন !
এই অচেনা লোকটির এতটা কাছে আসায় আমার গাঁ ঘিনঘিন করছে আমি আর তার এই কাছে থাকাটা সয্য করতে পারছিনা তাকে নিজের সর্বস্র শক্তি ধাক্কা দেই লোকটি প্রস্তুত না থাকায় বেশ দূরে সরে যায় আর আমি এই সুযোগে পালানোর জন্য দরজার দিকে দৌড় দেই হঠাই তার পেন্টিং বোর্ডের স্টি-কের সাথে পা বেজে দেয়ালের সাথে আঘাত পেয়ে নিচে পড়ে যাই কপালে হাত দিয়ে দেখি কপাল থেকে রক্ত ঝোড়ছে লোকটি তারাতারি করে আমার কাছে এসে আমাকে কোলে তুলে নেয় কি জানো বলছে যা আমার কান অব্দি পৌছাচ্ছে না আস্তে আস্তে আমার সামনে সব ঝাপসা হয়ে আসছে চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে যায় ।

আস্তে আস্তে নিজের চোখ খোলার চেষ্টা করি চোখজোড়া খুলতে পারছিনা ভার হয়ে আছে মাথায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করছি হঠাৎ সব কিছু মনে পড়তেই ব্যথাকে উপেক্ষা করে ভয়ে চট করে চোখ জোড়া খুলে ফেলি চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি আমার চারপাশে আমার পুরো পরিবার বাবা মা ভাই বোন চাচি মায়েরা চাচ্চুরা সবাই আমাকে ঘিরে আছে ।আমার কাছে সবটা স্বপ্নের মত লাগছে তারাতারি করে উঠে বসে মা কে নিজের শরীরের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে জরিয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না করতে লাগি সবাইকে দেখে যেন আমার দেখে প্রান ফিরে আসে মা ও আমাকে এই অবস্থায় দেখে কান্না করতে শুরু করে ।বেশ কিছুসময় এভাবে কাটার পর শান্ত হতেই আম্মু আমাকে জিগাসা করে
-“আমাদের কাউকে কোন কিছু না জানিয়ে তুমি দেশে ফিরেছো কেন ?
এমনকি তুমি তোমার খালামনিকেও কিছু না জানিয়ে চলে এসেছো !
তুমি জানো এই ৩ দিন আমাদের কি অবস্থা হয়েছিলো ?”

মায়ের কথা শুনে আমি বেশ অবাক হই কানাডা থেকে বাংলাদেশে ২২ ঘন্টায় ফিরেছি তাহলে বাকি দুদিন আমি কোথায় ছিলাম ?
তবে কি ২ দিন আমি ঐ লোকের কাছে ছিলাম !
মুহূর্তেই ভয়ে গায়েঁর পশম দাড়িয়ে যায় ।
কাপাঁকাপাঁ গলায় মাকে প্রশ্ন করি
-“মা আমাকে তো কিডন্যাপ করা হয়েছিলো
আমি কি করে বাড়ি আসলাম আমাকে কে নিয়ে এসেছে ?”
মা কিছু বলতে যাবে তার আগেই বাবা মাকে থামিয়ে দিয়ে বলতে লাগে
-“এসব কথা পরে হবে এখন তুমি রেস্ট নেও ।
তুমি এখনো পুরোপুরি সুস্থ হও নি !”
বলেই বাবা রুম থেকে বেরিয়ে পড়ে যাওয়ার সময় মাকে ও উনার সাথে আসতে বলে ।বাবা আমার কথা গুলো এক প্রকার এরিয়ে গেল ।
আমি এক এক করে বাড়ির সবার সাথে কথা বলতে লাগি এতবছর পর দেশে ফিরে নিজের পরিবারকে দেখে বেশ খুশি লাগছে ।যদিও সবার সাথে ফোনে কথা হয়েছে কিন্তু আমার তাদের সবার সাথে এই প্রথম দেখা কারন কারন আমার যে নতুন জনম হয়েছে জীবন আমার প্রথম থেকে শুরু হয়েছে ।জানিনা অতীত কি ছিলো আমি আমার অতীত ভুলে গেছি কিন্তু আমি আমার বর্তমান আর ভবিষ্যতকে সুন্দর করে সাজাতে চাই নিজের পরিবারের সাথে কাটাতে চাই ।

ঘড়ির কাটায় রাত বারটা বাজতে চলছে চারদিক ঘিটঘিটে অন্ধকার ।শীতের রাত বাহিরের চারদিক একদম স্থব্দ পরিবেশ কোন সাড়া শব্দ নেই ।
সেহের তখনো পুরোপুরি ঘুমে আচ্ছন্ন কেউ আস্তে আস্তে সেহেরের রুমের দিকে আসছে তার চোখে মুখে ভয়ংকর রাগ যেন এই রাগের আগুনে যে কেউ দগ্ধ হয়ে যাবে একই সাথে তার চেহারায় ভয়ংকর পাগলামি কাউকে খুন করার নেশা ।আস্তে আস্তে সেহেরের বিছানার কাছে এগিয়ে আসছে যেই ছুড়িটা নিয়ে সেহেরের বুকের উপর আঘাত করবে এমন সময় হঠাৎ রুমে কারো প্রবেশের শব্দ তার কানে ভেসে আসে তারাতারি করে কালো কাপড় পড়া ব্যক্তিটা সড়ে যায় বারান্ধা দিয়ে চলে যায় ।
আস্তে আস্তে ধীর পায়ে সেহেরের বাবা আশিস আহমেদ রুমে প্রবেশ করে মেয়ের দিকে বেশ কিছুসময় তাকিয়ে থেকে গায়েঁ চাদর টেনে দেয় ।বারান্ধার দরজা আটকিয়ে রুম থেকে চলে যায় ।
কালো কাপড় পড়া ব্যক্তিটা রাগে ফুসতে লাগে ।রাগি কন্ঠে বলে
-“তোমাকে তো মরতেই হবে সেহের তোমার মৃত্যুই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় লক্ষ ।
আজ হোক কাল হোক তোমার মৃত্যু তো আমার হাতেই !”

অন্যদিকে আশিস আহমেদ বারান্ধায় পাইচারী করছে বেশ দূর থেকেই বেগম মিহি আহমেদ স্বামীর এই অস্থীরতা লক্ষ করতে পারছে তিনি স্বামীর কাছে যেয়ে তার কাধেঁ হাত রেখে জিগাসা করে
-“আপনি কি নিয়ে এতটা চিন্তিতো !”
আশিস আহমেদ দির্ঘ্য নিশ্বাস নিয়ে উত্তর দেয়
-“তার কারন তোমার অজানা নয় ।”
-“মেয়েটা এতদিন পর দেশে ফিরেছে আপনি কি এতে খুশি হননি ?”
-“পৃথিবীর সব বাবাই চায় তার সন্তান সবসময় তার কাছে থাকুক আমি তাদের থেকে ব্যতিক্রম নই ।
আমিও চাই আমার মেয়েটা আমার চোখের সামনে থাকুক কিন্তু ভয় হয় তার অতীত নিয়ে যাতে লুকিয়ে আছে ভয়ংকর সত্য যেই সত্যের জন্য আমি আমার মেয়েকে এতটা বছর দেশের বাহিরে রেখেছি ।আমার এই রাজনীতি জীবনের জন্য আমার পরিবার সবসময় আতঙ্কে থাকে ।আমার মেয়েটার জীবনে এমন এক কালো অতীত আছে যা আমি চাইলেও তাকে কিছু বলতে পারছিনা আমার মত হতভাগা বাবা আর কে আছে ।”
বলেই আশিস আহমেদ একটা দির্ঘ্যনিশ্বাস নেয় ।পাশ থেকেই তার স্ত্রী মিহি আহমেদ ভীত ভীত কন্ঠে বলে
-“আমার মনে হয় আমাদের সেহের কে সবটা জানানো উচিত ।সে অন্তত নিজেকে তার ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে পারবে ।”
আশিস আহমেদ স্ত্রীর কথায় হুংকার দিয়ে উঠে তার পর বলল
-“তোমার কি মনে হয় সবটা বলে দিলেই সব ঠি ক হয়ে যাবে ?
তুমি ভুলে গেছ সেহেরের জীবন কার জীবনের সাথে জড়িত !
সে যেকোন মূল্যেই হোক না কেন সেহেরকে আদায় করে নিবে ।
আর হ্যা ভুলেও যেন সেহের জানতে না পারে যে আমার তাকে ২ দিন পর কি করে পেয়েছি সে কার কাছে ছিলো ।
সেহের এই নিয়ে কিছু জিগাসা করলে বলবে তুমি এই বিষয়ে কিছু জানোনা আর বাকি সবাইকেও সাবধান করে দেও !”
বলেই আশিস আহমেদ হুরহুর করে রুম থেকে বের হয়ে যায় ।মিহি আহমেদ স্বামী যাওয়ার দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে সে স্বামীর কথা রাখতে গিয়ে মেয়েকে কি জবাব দিবে ।সে মেয়ের চোখ জোড়ার দিকে তাকালে দেখতে পায় সেখানে যে হাজারো প্রশ্ন ভিড় করছে যার উত্তর জানা শর্তে ও তিনি দিতে পারবে না !
স্বামীর কাছে যে ওয়াদাবদ্ধ সে ।

শীতের সকাল বাহিরে হালকা আলো ফুটেছে পর্দার আড়াল থেকে সকালের আবছা আলোয় অন্ধকার আচ্ছন্ন রুমে আলোর প্রকাশ পেয়েছে ।
জলন্ত মোমবাতিটা ও শেষের দিকে কিছু সময় পড়েই তা নিবে যাবে এদিকে অগোছালো হয়ে আপন মনে লোকটি তার প্রিয়তমার ছবি একেঁ যাচ্ছে আসে পাশে কোন কিছুরই তার খেয়াল নেই বেশ অগোছালো হয়ে আছে ।মানুষ মাদকের নেশায় যেমন আসক্ত হয় লোকটি ঠি ক তেমন আসক্তি নিয়ে নিজের প্রিয়তমার ছবি একেঁ যাচ্ছে এটা যেন তার জুনুন হয়ে গেছে ।এলোমেলো ভাবে ফ্লোরে রঙ এর কৌউটো গুলো পরে আছে লোকটির হাতে রঙতুলি টা খুব দ্রুত পেন্টিং বোর্ডের উপর চলছে তার স্থীর চোখ জোড়া অস্থির হয়ে আছে ।সারারাত জেগে তার প্রিয়তমার ছবি আকঁছে ।
ছবি টা আকাঁ শেষ করে মাতাল কন্ঠে ফিসফিস আওয়াজে তার প্রিয়সীর পেন্টিংটার দিকে তাকিয়ে বলে
-“আমার সেহেররররররররর……”
এমন সময় হঠাৎই দরজায় নক পড়ে লোকটি কড়া গলায় বলল
-“ভিতরে আসো “
কালো পোশাকে চার-পাচঁজন একটা রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলে রুমের ভিতর বস্তার মত টেনে হিচড়ে নিয়ে আসে ।মূহুর্তেই হুডি পড়া লোকটির সুন্দর গোলামি ঠোঁট জোড়ার কোনায় বাকাঁ হাসি ফুটে উঠে আর চোখে হিংস্রতা !
লোকটি একপা দুপা করে রক্তাক্ত ছেলেটির দিকে এগিয়ে যায় তার পিঠের উপর ধপ করে পা রেখে জোড়ে চাপ দেয় ফলে ছেলেটি ব্যথায় চিৎকার করে উঠে যার শব্দে মনে হচ্ছে রুমের দেয়ালগুলো কেপেঁ উঠেছে ।
লোকটি দাতেঁ দাতঁ চেপে বলে
-“তোর সাহস কি করে হয় আমার সেহেরের দিকে নজর দেওয়ার তাকে উত্তাক্ত করার তাকে চেকআউট করার ?”
ছেলেটি কান্না জড়িত কন্ঠে নিজের প্রানের ভিক্ষা চাইতে চাইতে বলতে লাগে
-“স্যা …স্যার আমাকে ক্ষমা করে দিন আমি জানতাম না
আমি এয়ার পোর্টে শুধুই মেয়েটার সাথে মজা করছিলাম আমি জানতাম না এমন ভুল আর কখনো হবেনান
এবারের মত আমাকে ক্ষমা করে দিন স্যার !”
ছেলের আকুতি মিনুতি কোনটাই লোকটি কান পর্যন্ত নিলোনা পাশ থেকেই হুডি স্টি-ক হাতে নিয়ে সজোরে ছেলেটির শরীরের জয়েন্টে জয়েন্টে বারি দেয় তারপর ছেলেটি কে কয়েকটা লাথ্থি দিয়ে হকি স্টি-ক মাটিতে ফেলে রেগে চিৎকার করে বলে
-“আমার সেহেরের দিকে যে বাজে নজর দিবে তার এই অবস্থাই হবে তাকে যে স্পর্শ করার সাহস করবে তার হাত পা ভেঙ্গে গুড়োগুড়ো করে দিবো !”
বলেই গার্ড গুলোকে ছেলেটাকে নিয়ে যেতে বলে ছেলেটার আদমরা দেহটা গার্ড রা নিয়ে যায় ।
গার্ড রা যেতেই লোকটি শাওয়া নিতে চলে যায় ।শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে দুদিন সেহেরের সাথে কাটানো মূহুর্ত গুলো ভাবতে লাগে শাওয়ারের পানি অঝোড়ে ঝড়ছে তার জিম করা বর্ডি প্রতিটা শিরাশিরা স্পর্শ করছে লোকটি অন্য এক দুনিয়ায় হারিয়ে গেছে সেহেরের এতটা কাছে থাকা যেন তার প্রতি নেশা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে এবার তাকে না পাওয়া পর্যন্ত তার সস্থীর নেই !
শাওয়ার নিয়েই রুমে আসে চোখ চলে যায় সেহেরের পেন্টিং এর দিকে ।পেন্টিং এর দিকে এগিয়ে তার দিকে হাত বাড়িয়ে নিজের আলতো হাতের স্পর্শ পেন্টিং এ সেহেরের গালে রাখে সেহের যেন তার কাছে কোন মদকের মত নাশকীয় লোকটি মাতাল কন্ঠে বলে

“আমার আসক্তি আমার প্রেম
আমার ভালোবাসা আমার নেশা
সবটা জুড়েই শুধু তুমি !
আমার ভালোবাসা ও তুমি আমার প্রতিশোধও তোমাতে ।
তুমি যতটা ঘৃনা কর তার চেয়ে হাজার গুন বেশি ভালোবাসি !
আমার ভালোবাসাটাই আমার প্রতিশোধ !
হাজার পালাও আমার থেকে কিন্তু যেখানেই যাবে শুধু আমাকেই পাবে ।
আমার হিংস্রতার রঙে তোমায়ও রঙিন হতে হবে
আমার #বিষাক্ত প্রেমে তোমায়ও ডুবতে হবে”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here