ভালোবাসার ভেজা সন্ধ্যে পর্ব ২৬

#ভালোবাসায়_ভেজা_সন্ধ্যে
#রোকসানা_রাহমান

পর্ব (২৬)

রিপ্তি মাথা নিচু করে ফেললো। মহসীন স্যার কিছুক্ষণ গভীরদৃষ্টি রাখলেন রিপ্তির মুখে। তারপর ওর মধ্যমা আঙুলটা টেনে নিলেন নিজের দিকে। বুক পকেটে থাকা কলম দিয়ে লিখলেন,,

“”কাল থেকে রোজ শাড়ী পড়বে!””

মহসীন স্যার আর একদন্ডও বসলেন না। দ্রুত পায়ে রিপ্তিদের বাসা ত্যাগ করলেন। রিপ্তি তখনো থম মেরে চেয়ারটায় বসে আছে। একবার হাতের আঙুলে লেখা গুটিগুটি অক্ষরের ছোট লাইনটায় চোখ রাখছে তো আরেকবার মহসীন স্যারের ফেলে যাওয়া পথপানে। এই মানুষটা হঠাৎ হঠাৎ কিসের আভাস দেয়? কোন পরশ পাথরের অদৃশ্য ওজন ঢেলে দিয়ে যায় তার অন্তরে? যার ভার বয়তে গিয়ে রিপ্তির ছোট মনে চলে হাজারও প্রশ্নের আকিবুকি আর না জানা,না বুঝা অনুভূতির তুমুল ঝড়। সাথে ঘুমটাও তো উধাও। চোখে তখন চলে রঙিন স্বপ্ন,রঙিন কিছু ঝাপসা আলো! আর থমকা থমকা লাজুক হাঁসি।

রিপ্তি চেয়ার ছেড়েই সোজা চলে গেলো কাঠের আলমারীর কাছে। শুরু হলো নতন উদ্যম। নানির হাতের গুছিয়ে রাখা সকল জিনিস ঘাটাঘাটি করে শাড়ীকাপড় বের করছে। একটার পর আরেকটা তারপর আরেকটা। কিন্তু কোনোটায় সে পড়তে পারছেনা। তবে কি সে শাড়ীর তুলনায় ছোট হয়ে গেলো? শাড়ীর নিচটাতো মাটিতে পড়ে আছে অর্ধেক। উফ! সে কেন আরেকটু লম্বা হলোনা? এতো এতো প্যাচ দিয়েও শাড়ীর আঁচল গুটাতে না পেরে ভাবছে,উফ! কেন আরেকটু মোটা হলাম না? কবে বড় হবো আমি? কবে পাগুলো লম্বা হবে? আর কবে মোটা হবো? একরাতের মধ্যে কি বড় হওয়া সম্ভব?

রিপ্তি একটু ভাবে তো আরেকটু শাড়ী পড়ে। একটা শাড়ীর সাথে আরেকটা শাড়ীর মাপ নেয়। লম্বায় যেটা একটু ছোট হয় সেটা নিয়েই চলে আবার প্যাচানো! সারা রাত তার কাটলো শাড়ী গবেষণায়। ঘুম তার শাড়ীতেই আটকালো। নানি বুঝি বাদ যাবে? উহু! নানির ঘুমটাও তো নাতনির উপরেই আটকালো।

পরেরদিন সন্ধ্যায় মহসীন স্যার উপস্থিত হলেন দশ মিনিট লেটে। অন্যদিনের মতো আজ দরজায় উকি দিচ্ছেনা রিপ্তি। তবে কি সে আজ বাসায় নেই? মহসীন চলে যাবে ভাবতে গিয়েও থমকে গেলো। ভেতরে আলো জ্বলছে। নিশ্চুপতা খুব বেশিই নয় কি? সামান্য সংকোচ নিয়েই মহসীন ভেতরে পা রাখে। ভেতরে পা ফেলতেই কপাল তার কুঁচকিয়ে গেলো। ভ্রুজোড়া একে অপরের সাথে মিলে গিয়েছে। চোখে সরু দৃষ্টি। চেয়ার টেনে বসতেই মহসীন শব্দ করে হেঁসে উঠলো। শরীর দুলিয়ে চেয়ারের সাথে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। কিছুতেই হাঁসি থামছেনা। বহুকষ্টে হাঁসিটাকে নিয়ন্ত্রণে এনে বললো,,

“” তুমি তো ছুরি থেকে বুড়ি হয়ে গিয়েছো,রিপ্তি!””

রিপ্তি এবার লজ্জার শেষ সীমানায়। সীমানা অতিক্রম হলেই বুঝি আত্মদান করবে। যাকে বলে লজ্জামৃত্যু! নিজেকে আড়াল করার উপায় খুজছে। সে কি উঠে যাবে? লুকিয়ে পড়বে আলমারির পেছনে নাহয় দরজার আড়ালে নাকি বাড়ি ছেড়ে কোনো নির্জন জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে থাকবে?

রিপ্তির উপায় খোজার মধ্যেই মহসীন হাঁসি থামালো। গম্ভীর কন্ঠে বললো,,

“”পড়া শুরু করি?””

রিপ্তি চটপট বই খুলে ফেললো। খাতা খুলে কলমটাও আকড়ে ধরলো। আজ সে সব লজ্জা কলমের কালি দিয়েই শেষ করবে।

পড়ানোর মাঝেই রিপ্তির অকস্মাৎ চিৎকার,,

“” বৃষ্টি নেমে গেলো তো! আমি তো কাপড় তুলিনি। নানি বকবে!””

মহসীন জানালা দিয়ে এক ঝলক বাইরে তাকালো। এখনো বৃষ্টি নামেনি। তবে আকাশের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এই নামলো বলে। মহসীনের থেকে কোনো পারমিশন না নিয়েই রিপ্তি দৌড় দিয়েছে। তাড়াহুড়োই পায়ে শাড়ী পেচিয়ে গেলো। পড়তে গিয়ে পড়েনি তবে কুঁচি খুলে মাটিতে! সেদিকে কোনো ধ্যান নেই তার। সে তো এখন দুশ্চিন্তার মহারানি। বাইরে পা ফেলতেই ঝপঝপ করে বৃষ্টি! বৃষ্টিতে ভিজছে আর কাপড় কুড়াচ্ছে। দৌড়ে রুমে ঢুকলো কাকভেজা হয়ে। শুকনো কাপড় আবার ভিজে গিয়েছে। এখানে এটা নাড়ে ওখানে ওটা নাড়ে। যাহ! জানালগুলোও তো খোলা,বিছানা ভিজে যাবে তো। রিপ্তি আবার দৌড় লাগায় জানালা লাগাতে। একটা লাগিয়ে আরেকটার দিকে দৌড়াচ্ছে। ইশ! আজ নানির হাতে বকুনি খেতে খেতে রাত পার করতে হবে। কতবার করে বলে গিয়েছিলো,আযান পড়ার আগেই যেন কাপড় তুলে রাখে,জানালা লাগিয়ে রাখে,উঠোনটা ঝাড় দিয়ে রাখে। পাশের রুমের লাইটটাও তো দেওয়া হয়নি। উফ! সব এখনি মনে পড়ছে,আগে কেন পড়লোনা?

মহসীন চেয়ারটা ঘুরিয়ে নিয়েছে অনেক্ষণ। হেলান দিয়ে বসেছে। গভীর মনোযোগী রিপ্তির উপর। ছুটন্ত রিপ্তির দিক থেকে একবারের জন্যও চোখ সরাচ্ছেনা। পলকটাও ফেলছেনা। যেন পলক ফেললেই হঠাৎ পাওয়া সুন্দর মুহুর্ত হারিয়ে ফেলবে। ছুটন্ত আর দুশ্চিন্তার মহারানিকে দেখতে দেখতে একটু বাকা হলো মহসীন। বা’হাতে কনুইটা টেবিলে ঠেকালো। আঙুলগুলো আধোভাজ করে কপাল ছুয়েছে। আজ সে মনভরে এই মেয়েটিকে দেখবে। ছোট্ট মেয়েটি। আসলেই কি ছোট্ট? কই এখন তো ছোট লাগছেনা। কিশোরী মেয়েটা কি হঠাৎ করেই বড় হয়ে গেলো? মনে হচ্ছে যৌবনার প্রথম সিড়িতে দাড়িয়ে আছে। একটু ছুয়ে দিলে সিড়ির আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে! এটা কিশোরী মেয়ে হতেই পারেনা। মনে হচ্ছে নতুন বউ সবেই বিয়ে হয়েছে। নতুন সংসারের নতুন কাজগুলো তার অজানা। হঠাৎ করেই সংসারবাধনে বাধুনীতে পড়ে সব তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে। কোনটা রেখে কোনটা করবে বুঝতে পারছেনা। তবে হাল ছাড়ছেনা। চেষ্টা করে যাচ্ছে।

রিপ্তি সবকাজ শেষে নিজের ভেজা চুলের পানি ঝড়াচ্ছে। মাথাটা ডানদিকে একটু ঝুকতেই ব্লাউজের কাধের অংশটা টুপ করে পড়ে গেলো। মহসীন হালকা হেঁসে উঠলো। ঘোরলাগা কন্ঠেই বিড়বিড় করলো,কল্পনায় বড় বানাতে চাইলাম তাও বাধা দিলে? নানির ব্লাউজ যে তোমার হবেনা এইটুকু বুঝও কি তোমার হয়নি?

দৌড়াদৌড়িতে শাড়ীর সিংহভাগ মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে রিপ্তির। যৎসামান্য বুকের দিকটায় পড়ে আছে। তাও কুচঁকিয়ে দলা পেকে। সেটাও সম্ভব হয়েছে বৃষ্টির পানির জন্য। কিন্তু এতে যেন প্রসন্ন হতে পারছেনা সাদা রঙের শাড়ীটি। সে যেন আজ পণ করেছে রিপ্তির শরীরে থাকবেইনা। রিপ্তি ভেজা চুলে দু’হাতে ঘন বারি দিতেই শাড়ীর পণ সম্পূর্ণ হলো। সাথে সাথে মহসীন দাড়িয়ে গেলো। দরজার দিকে পা ফেলতে ফেলতে বললো,,

“” কাল থেকে নানিকে সাথে নিয়ে পড়তে বসবে!””

রিপ্তি পড়ে যাওয়া শাড়ী তুলছিলো। দ্রুত কয়েক প্যাচ দিয়ে বললো,,

“” কোথায় যাচ্ছেন?””

মহসীনের চলতি পথের উত্তর,,

“” বাসায়।””

রিপ্তি দৌড়ে মহসীনের পেছনে এসে দাড়ালো। আড়ষ্ট কন্ঠে বললো,,

“” আমার একা একা ভয় লাগবে।””

মহসীন দাড়ালো। রিপ্তির দিকে চোখ রাখতেই সামান্য হাসলো। বিড়বিড় করে বললো,যতটা ছোট ভেবেছিলাম ততটা না। একটু বেখেয়ালি তবে অতটাও না। নিজের জিনিস আড়াল করতে শিখেছে।

“”আরেকটু থাকুন না। আমার পড়া তো শেষ হয়নি। পড়তে পড়তে নানি চলে আসবে।””

মহসীন থাকবে কি থাকবে না ভাবছে। এমনি রাত হয়ে গিয়েছে। বাসায় তারা দুজন ছাড়া আর কেউ নেই তারমধ্যে সর্বনাশী আবহাওয়া। আর সামনেরজনতো..

মহসীনের ভাবনার মাঝেই কারেন্ট চলে গেলো। সাথে সাথে উষ্ণ গরম স্পর্শ। মহসীন হতভম্ব,বিস্ময়ের শেষ কোঠরে দাড়িয়ে আছে স্থিরমূর্তি হয়ে। রিপ্তি মহসীনের বুকে মুখ লুকিয়ে বললো,,

“” ওমা কি অন্ধকার! মোমবাতিটা জ্বালান।””

মহসীনের মনে হলো সে নিজেই মোমবাতি আর কিছুক্ষণ এভাবে থাকলে তার শরীরেই দাউদাউ করে অগ্নিশিখা জ্বলবে। আচ্ছা এই মোমবাতির নামটা কি দেওয়া উচিত?

রিপ্তি ধীরে ধীরে মহসীনের মধ্যে মিশে যাচ্ছে। কন্ঠে এখন আর জোর নেই। মৃদু স্বরে বললো,,

“” মোম আর ম্যাচ একসাথেই টেবিলে…””

হঠাৎ করেই রিপ্তি চুপ। কিছু শুনতে পারছে। ডিপডিপ শব্দ! কিন্তু কোথায়? কিসের শব্দ এটা? শব্দের উৎস খুজতে লেগে পড়েছে রিপ্তি। গালটা আরেকটু মিশিয়ে নিলো মহসীনের বুকের সাথে। হালকা সরে এলো বা’পাশটাতে। মনোযোগি শ্রোতা হয়ে শুনছে সে হৃদস্পন্দন। এতো ভালো,এতো মধুর,এতো শীতল,হীমপড়া শব্দতো এর আগে শুনেনি সে। কেমন মাতোয়ারা অনুভূতি। রিপ্তির হাতদুটো মহসীনের শার্ট খামচে ধরে থাকলেও এখন আর নেই। হাতদুটো হঠাৎই চঞ্চলতার রূপ নিয়েছে। বুক ছেড়ে পিঠে আচড় পড়তেই মহসীন নরমগলায় বললো,,

“” রিপ্তি,কারেন্ট চলে এসেছে।””

রিপ্তির দিক থেকে কোনো সাড়া নেই। নতুন কিছুর সাথে পরিচয় হওয়ার জন্য প্রায় মরিয়া অবস্থা তার। মহসীন রিপ্তিকে নিজের কাছ থেকে সারালো। রিপ্তির চোখ তখনো বন্ধ।

“” তোমার নানি কোথায় গেছে, তুমি জানো?””

রিপ্তি চুপ। মহসীন বুক পকেট থেকে কলমটা নিলো। রিপ্তির মুঠো হয়ে থাকা হাতটা খুলে অনামিকা আঙুলে লিখলো,,

“”অসময়ে নয়,সুসময়ে, নবরূপে,পবিত্র বন্ধনে,দেখবো তোমায়! আখি ভরে,সময় পুড়িয়ে!!

আঙুলে কলমের খোঁচায় রিপ্তির মোহচ্ছেদ ঘটলো। লেখা এতো ছোট যে খালি চোখে পড়া বেশ কষ্টকর! রিপ্তি আঙুলটা চোখের নিকটে নিতেই মহসীন আবারও নিরব হাসলো। হাসির রেশ ধরেই বললো,,

“” নানি কোথায় গিয়েছে?””

রিপ্তি আঙুলে চোখ রেখেই বললো,,

“” খোঁচানানির বাসায়।””
“” খোঁচা নানি?””

রিপ্তি আমতা আমতা করে বললো,,

“”ঐতো,পাঁকারাস্তার ওপারে।””
“” চলো তোমাকে দিয়ে আসি।””
“” কেন?””
“” আমি বাসায় যাবো। জরুরী কাজ আছে। তুমি যদি একা থাকতে চাও তাহলে থাকো। আমি যাই।””

রিপ্তি দ্রুততাসহিত বললো,,

“” আমিও যাবো।””
“” কোথায়?””
“” নানির কাছে। চলুন!””

মহসীন হাঁটা ধরতে গিয়েও পিছু ঘুরলো। রিপ্তির আপাদমস্তকে দ্রুত চোখ বুলিয়ে বললো,,

“”নানির শাড়ীর বারোটা বাজিয়ে ফেলেছো সাথে অন্যকারোও। যাও চেন্জ করে আসো। আমি বাইরে অপেক্ষা করছি।””

~~~
উঠোনে পা রেখেই রিপ্তির শাসনীকন্ঠ,,

“” আমার কাছে ছাতা থাকতেও আপনি ভিজছেন কেন? ছাতার নিচে আসুন।””
“” সমস্যা নেই।””
“” দাড়ান আসছি।””

মহসীন কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রিপ্তি দৌড়ে বাড়ির পেছন দিকে গেলো। কিছু সময় পর এক বিশাল সাইজের কচুপাতা নিয়ে হাজির। মহসীনের মাথায় দিয়ে বললো,,

“”ভালো করে ধরুন। মাথায় পানি পড়লে জ্বর আসবে তো। আমি আপনার ছাত্রী দেখে এক ছাতায় আসা নিষেধ তাইনা? আমি বুঝতে পেরেছি।””

মহসীন পাতাটা মাথায় ধরে বললো,

“” আমার জ্বর আসলে কি হবে?””
“” আপনার কষ্ট হবে।””
“” আমার কষ্ট হলে কি হবে?”‘
“” আমারও কষ্ট হবে।””

মহসীন যেন এমনি এক উত্তরের অপেক্ষায় ছিলো। উৎসাহ নিয়ে বললো,,

“” তোমার কষ্ট হবে কেন?””

রিপ্তি হাঁটা থামিয়ে দিলো। কিছুক্ষণ ভেবে বললো,,

“” জানিনাতো!””

মহসীনের উৎসাহ মিইয়ে গেলো। নিরব পায়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। তন্মধ্যেই মহসীন পুনরায় কথা তুললো,,

“” তোমার আমার ব্যাপারে কিছু জানতে ইচ্ছে করেনা?””
“” কেমন ব্যাপার?””
“”নানা ব্যাপার।””
“” কেমন নানা?””
“” আচ্ছা ছাড়ো। অন্যকিছু বলি।””
“” আচ্ছা।””

মহসীন আর কি বলবে খুজে পাচ্ছেনা। কিন্তু তার কথা বলতে ইচ্ছে করছে। মেয়েটার মধ্যে অনেক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু ঠিকঠাকভাবে পরিবর্তনগুলো প্রকাশ পাচ্ছেনা। প্রকাশ যে পেতে হবে। নাহলে নিজের অনুভূতির রূপ কি করে দিবে সে? রিপ্তি হঠাৎ থমকে দাড়ালো। মহসীনের উদ্দেশ্যে বললো,,

“” জানতে ইচ্ছে করে তো।””

এমন আগাগোড়া ছাড়া মাঝপথের বাক্যে কিছুটা চমকালো মহসীন। কথাটার মানে বুঝতে বেশ সময় লাগলো। সময় শেষে বললো,,

“” অল্প নাকি বেশি?””
“” অনেক। জিজ্ঞেস করবো?””
“” না।””
“” কেন?””
“”কারণ আমরা চলে এসেছি।””
“” কোথায়?””
“” তোমার নানির কাছে। ঐ যে দোকানের ছাউনিতে দাড়িয়ে আছেন। হয় তো অনেক আগেই আসতে চেয়েছিলেন। বৃষ্টির জন্য আটকা পড়েছেন। আমি আর এগুবো না। তুমি যাও আমি আসছি।””

রিপ্তি মন খারাপ করে সামনে এক পা ফেলে সতর্কীকন্ঠে বললো,,

“” সাবধানে যাবেন!””

মহসীন থেমে গেলো। দ্রুতকদমে রিপ্তির দিকে এগিয়ে এলো। রিপ্তির বা’হাতটা টেনে নিয়ে বৃদ্ধাঙুলে লিখলো,,

“” আপনি নয় তুমি করে বলবে!””

ফিরতে পথে পা বাড়িয়ে বললো,,

“” তোমার যা জানার আছে সবগুলো ক্রমিক নং য়ে খাতায় সাজিয়ো। কাল আমি এসে দেখবো। সবসময় তুমি উত্তর লিখ কাল নাহয় আমি লেখবো!””

~~~

পরেরদিন সন্ধ্যাবেলা,

নানিকে সাথে নিয়েই পড়তে বসেছে রিপ্তি। তবে তিনি ঝিমুচ্ছেন। তসবিহ পাঠ করছেন একমনে। সেদিকে মহসীনের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। তার চমকানো দৃষ্টি দুইপৃষ্ঠার কাগজে। তার ধারণা ছিলো পেজভর্তি প্রশ্নেভরা থাকবে। যার উত্তর লিখতে লিখতে তার কলমের কালি শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে শুধু একটা লাইন লিখেছে রিপ্তি। প্রথম পৃষ্ঠা ফাঁকা। তারপরেরও ফাঁকা তারপরেও ফাঁকা রেখে একদম নিচে অনেকটা পড়ে যাওয়ার মতো করে লিখেছে,

*আপনি এমন কেন?!!!

চলবে

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here