“ভালোবাসার_ভুল Part-01+02

#ভালোবাসার_ভুল
#Writter_Sp_sanjana_ (সাগরিকা)
Part-01+02
🍁🍁🍁
শীতের সকালে মায়ের অসম্ভব ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো; আমার এলার্ম দেওয়া সত্বেও আজি ই ঘড়িটা বাজলো না চটপট ওয়াশরুমে ঢুকলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য বের হয়ে আমি আমার প্রিয় রং নীল এর একটা থ্রিপিস পড়ে নিলাম সাথে ম্যাচিং কানের দুল আর হিল এতেই দেখি ঘড়িতে ৮ টা গেছে মায়ের ডাকে নীচে নেমে জলখাবারেবের জন্য বসে গেলাম বসেই বাবাইকে বললাম কলেজ এ আমি একাই যাবো আমি কোনো বডিগার্ড আর গাড়ি নিয়ে যাব না।😊😊😊
বাবাই(নীল চ্যাটার্জি):- ঠিক আছে মা আমি কি তোর কোনো ইচ্ছা আজ পর্যন্ত অপূর্ণ রেখেছি শুধু বলব নিজের খেয়াল রাখিস।
ও আপনাদের তো বলাই হয়নি আমি নিঝুম আজ আমার কলেজের প্রথম দিন আমি আমার বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে আচ্ছা এখন দেরি হয়ে যাচ্ছে তাই বাকি পরিচয় পরে ফোনের ভাইব্রেশন এর সাউন্ডে ফোন ধরে দেখি আমার বেস্টু মৌমিতা কখন থেকে ফোন করেই যাচ্ছে গেইটে এসে দেখি মৌ রিক্সা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কলেজ গেইট এ পৌঁছে মুগ্ধ নয়নে কলেজ দেখতে দেখতেই কোনো এক খাম্বার সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়েই যাচ্ছিলাম তারপর দেখি আমি হাওয়ায় ঝুলে আছি কেন?সামনে চোখ পড়তেই ফর্শা রঙের ব্লু জ্যাকেট ব্ল্যাক জিন্স ব্লু কেডস পড়া একটা ছেলে ক্রাশ খেলাম কিন্তু আমার কোমড় বারাবর হাত দেওয়া দেখে রাগ উঠে গেল কিন্তু নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করেও রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে একটা জোড়ে চর মেরে বকতে বকতে চলে গেলাম।
নিঝুম: চোখে দেখেন না নাকি চোখ কি হাতে নিয়ে চলা হয় মেয়ে দেখলেই গায়ে পড়তে ইচ্ছে করে বলেই সামনে এগিয়ে চলে গেলাম।
প্রহর: কলেজ গেইট দিয়ে একটু বাইরে যাচ্ছিলাম হঠাৎ একটি মেয়ে ঢাক্কা খেয়ে একদম আমার কোলে এসে পড়লো সামনে নজর পড়তেই মুগ্ধ নয়নে তাকেই দেখছিলাম নীল থ্রিপিস এ একদম নীল পরী লাগছিলো কথা বলতে ভুলে গেছিলাম কি ঘটল কিছুই বোঝলাম না যখন দেখলাম ততক্ষণে সে ওধাও হয়ে গেল।
নিঝুম:মৌমিতাকে আমি মৌ বলেই ডাকি সেই ছোট্টবেলা থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব।মৌ দেখ ঐ দিকে সিনিয়ারা র ্যাগ করছে চল তাড়াতাড়ি ডিপার্টমেন্ট এ যাই সামনেই Break এ দেখা করব বলে আমি Mathematics ডিপার্টমেন্ট এর দিকে গেলাম মৌ গেল Economics ডিপার্টমেন্ট এ।
একাই গেলাম ক্লাস রুমে মাঝের সারিতে একা বসা একটা মেয়ের সাথে বসে পড়লাম ওই প্রথম কথা শুরু করল আমিও বল্লাম। মেয়েটা খুবই মিশুক কিছু সময়েই কতটা আপন করে নিল ওর নাম নিকি।তার বড় ভাই আছে ফাইনাল ইয়ার এই কলেজেরই তার এর ভয় একটু কম। তারপর দুইটা ক্লাসের পর ব্রাক পড়ল তিনজন ই কেন্টিন এ গিয়ে বসলাম।কিছু স্নেক্স অর্ডার দেয়া হল এরপর জমে গল্প করতে লাগলাম গল্পের মাঝেই নিকির আরও তিনজন বন্ধু আসল।
নিকি:-নিঝুম এরা হল বিথী আমার স্কুল ফ্রেন্ড আর অনর্ব ও আকাশ আমার ভাইয়ের বন্ধু ফাইনাল ইয়ার। আকাশ আমার Feunce ও। আকাশ ওরা হল মৌ আর নিঝুম আমার নতুন ফ্রেন্ড।
মৌ:- বাহ নিকি তোর দেখছি বিয়ে ও ঠিক হয়ে আছে। মৌ এর কথায় নিকি একটু লজ্জা পেল।
হঠাৎ দেখি কেন্টিন এ কিছু সিনিয়র এর ভিড় সাথে সকালের ছেলেটাও আছে দেখছি।তাদের মধ্যেই একজন বলল এই মেয়ে এ দিকে এসো।
মৌ :- আমাকে বলছেন?😨
শিশির:-হ্যা তোমাকেই বলছি।মেয়েটিকে ডেকে এনে আমার হাতে থাকা সিকেরেটি তার হাতে দিয়ে এক টান দিতে বললাম।😂😂
নিঝুম:- এটা কি ধরনের র্্যাগ করেছেন আপনারা আমি প্রিন্সিপাল এর কাছে কমপ্লিন করব।কলেজের আপনারা র্্যাগ করতে পারেন না।এতটুকু বলতেই পেছন থেকে কেউ একজন বলে উঠলো কি হচ্ছে এখানে? তখনই পাশ থেকে নিকি ফিসফিস করে বলে উঠলো;
নিকি:- মেঘ ভাইয়া এসে গেছে একটুর জন্য বেঁচে গেলাম😣। নিঝুম এইটা আমাদের কলেজের ভিপি আমার ভাই।
সাথে সাথে আমাদের সবার চোখ গেল পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা চোখ রাগে লাল হওয়া শ্যাম বর্ণের ৫ফুট ৬” ব্ল্যাক জ্যাকেট ব্ল্যাক পেন্ট ব্ল্যাক কেডস্ পড়া ছেলেটির দিকে।সবাই চোখে ভয় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে যে মেঘ কি করবে।😨
মেঘ:- প্রহর এইটা কিন্তু ঠিক করছিস না ওদের ছেড়ে দে জানিস তো এ কলেজ এ র্্যাগিং Allow না তারপর ও র্্্যাগিং করছিস।😈👿
প্রহর:- তুই যা এখান থেকে সব ব্যাপারে নাক গলাতে আসিস না কি করবি তুই ভিপি বলে কলেজ কিনে রেখেছিস নাকি তুই?😈👿
এ মধ্যে ই মারপিট লেগে যাই দুই দলের মধ্যে কিন্তু প্রিন্সিপাল স্যার চলে আসায় প্রহরের দল পালিয়ে য়ায়।
মেঘ:- তোমার গিয়ে বসতে পারো কেউ বিরক্ত করবে না।কোনো প্রবলেম হলে আমাকে বলবেন।
মৌ:- নিকি তোর এতো হ্যান্ডসাম😍 একটা ভাই আছে আগে বলবি না আমি তো ক্রাশ খেলাম পটিয়ে দে না প্লিজ ।
নিকি:- তাই নাকি তবে তুই আমার ভাবি হলে মন্দ হবে না Deal done এতো কিউট একটা ভাবি পাওয়ার জন্য এইটুকু তো করতেই পাড়ি।
নিকি আর মৌ এর কথা শুনে সবাই একপ্রকার হেসেই দিল😂😂। হঠাৎ নিঝুম বলে উঠলো;
চলবে….
( আমার প্রথম গল্প লেখার চেষ্টা করলাম যখন গল্প পড়তাম কখনো ভাবিনী নিজে কখনো গল্প লিখব আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন নতুন লিখছি ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন )

Part-02

🍁🍁
হঠাৎ নিঝুম বলে উঠলো, নিঝুম:- আচ্ছা নিকি এই প্রহর ছেলেটা কে রে?
নিকি:- প্রহর হল কলেজের ভিপি এর opponant party সারাদিন মারপিট করে বেড়ায়।
এরমধ্যেই স্নেক্স চলে আসে, সবার খেতে খেতে গল্প করতে থাকে।আজ প্রথমদিন বলে সবার আর ক্লাস করে না বাসায় চলে আসে।
পরদিন সকাল সকাল উঠে গেলাম, আস্তে আস্তে ফ্রেশ হয়ে কফি নিয়ে বেলকনিতে আসলাম শীতের সকালে প্রথম সূর্যের কিরনে বেলকনিতে ফুলের গাছগুলো দেখছি আর কফি খাচ্ছি; হঠাৎ নজর গেল একটা সুন্দর সাদা লেস দিয়ে বাধা ঝুড়ির দিকে যাতে কিছু সাদা কাঠগোলাপ ফুল রাখা আর তাতে একটা ছোট্ট চিরকুট যাতে লেখা:-

বৃষ্টি বিলাসী তোমার কাজল কালো ,
চোখে আমি হারায়।
কাঠগোলাপের নিগ্ধতায়,
তোমায় দেখতে চাই।
পথ চেয়ে থাকব আমি,
তোমার অপেক্ষায়।

এটা আবার কে রাখলো? মাম্মামকে ডাকতে লাগলাম-নিঝুম:- মাম্মাম এই ফুলের ঝুড়ি কে রাখলো এখানে তুমি কি জানো?
মাম্মাম(নীলিমা চার্টাজী):- না তো আমি তো এইমাএ দেখলাম কোথায় পেলি এটা?
নিঝুম :- জানি না মা কিন্তু দেখ ফুলগুলো কত সুন্দর নিগ্ধ ফুলের গন্ধে চারিদিক মৌ মৌ করছে।
মাম্মাম:-আচ্ছা ছাড় তো এসব, ঘড়িতে কয়টা বাজে খেয়াল আছে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে খাবার টেবিলে আয়, আমি জলখাবারের ব্যবস্থা করছি।
নিঝুম ফ্রেশ হতে চলে গেল কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে পিংক রং এর থ্রিপিস পড়ে নিল সাথে ম্যাচিং কানের আর হিল পড়ে রেডি হয়ে মৌকে আমাদের বাসায় চলে আসতে বল্লাম।তারপর নিচে এসে Brakefast করে মৌ এর সাথে বের হয়ে গেল।
In কলেজ,
মৌকে সকালের ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে বলতে ভিতরে যাচ্ছিলাম এমন সময় কালকের ঐ ছেলেটা হঠাৎ সামনে এসে দাড়ালো।আমি অবাক হয়ে দেখলাম আজও তাকে অনেক সুন্দর লাগছে ব্লু শার্ট ব্ল্যাক জিন্স পড়েছে।
প্রহর:- নিঝুম তোমার সাথে একটু কথা বলতে পারি?
নিঝুম:- কি বলবেন বলুন।
প্রহর:- কালকের ঘটনার জন্য আমি খুব দুঃখিত আমাকে ক্ষমা করা যাবে কি?আসলে কালকে তুমি চড় মারায় রাগে উঠে গেল তাই র্্যাগ করতে গিয়েছিলাম আমার এইটা করা ঠিক হয়নি sorry।
নিঝুম:- it’s okk আমি কিছু মনে করিনি কিন্তু আমি বলব আপনি এসব মারপিট ছেড়ে দিন যদি সম্ভব হয়।
প্রহর :- আমি চেষ্টা করবো কিন্তু আপনিও কি আমার একটা কথা রাখবেন ?
মৌ:- ছাড় তো একে আবার কোনো ঝামেলায় পড়ব এর জন্য চল তো।
নিঝুম:- মৌ ওয়েট কেউ যখন তার ভুল বুঝতে পারে তখন তাকে একটা সুয়োগ দিতে হয়।আচ্ছা প্রহর আজ থেকে আমরা ও তোমার বন্ধু।
তারপরে যে যার ক্লাসে চলে গেল।
নিকি:- কিরে কি নিয়ে এতো ভাবছিস নিঝুম?
নিঝুম:- কিছুনা প্রহর ছেলেটা না আজ আমার কাছে মাফ চাইলো বন্ধু ও হতে চাইলো আমি হ্যাঁ করে দিয়েছি।আমার মনে হয় সকালে ফুলগুলি ও সে ই পাঠিয়েছিল।
নিকি:- কোন ফুলের কথা বলছিস? এ প্রহর হঠাৎ এতো ভালো হয়ে গেল । আচ্ছা বাদ দে যা হবে দেখা যাবে কিন্তু সাবধানে থাকিস।
নিঝুম:- দেখ স্যার চলে এসেছে কথা বলতে দেখলে আবার কথা শুনাবে।
নিকি:- হম চল বই বের করি।
কিছু সময়ের মধ্যে নিঝুম হারিয়ে গেল তার স্বপ্নের জগতে “প্রহর ছেলেটা দেখতে কত হ্যান্ডসাম প্রথম দেখাতেই ক্রাশ খেলাম তারপর অবশ্য রাগ হয়েছিল তার ব্যবহার এ। আজ অবশ্য কত সুন্দর মাফ চেয়ে নিল”। হঠাৎ নিকির ডাকে ভাবনার জগৎ থেকে বের হয়ে এল।২ টা ক্লাস করার পর Brake এ সবাই ক্যাম্পাসে দেখা করলাম।
প্রহর:- আমি কি তোমাদের সাথে জয়েন করতে পারি মিস?
নিঝুম:- অবশ্যই।
মৌ:- ফিসফিস করে এ এখানে কি করছে?
নিকি:- প্রহর ভাইয়া আজকে ও কি র্্যাগিং করতে আসেছো?
প্রহর:-আমি সকালেই নিঝুমকে sorry বলে দিয়েছি এখন তোমাদের ও বলছি প্লিজ কালকের ব্যবহার এরজন্য আমাকে মাফ করে দেও।
দূর থেকে মেঘ এতোক্ষন সব দেখছিল মাফ চাওয়ার কথা শুনে এগিয়ে এলো।
চলবে……
( যদি আপনাদের আমার গল্প পছন্দ না হয় আমি আর গল্প দেবো না। তাই Next পর্ব চাইলে comment করে জানান আর কিছু ভুল লিখে থাকলে comment এ বলবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here