“ভালোবাসার_ভুল Part-03+04

#ভালোবাসার_ভুল
#writer_Sp_sanjana_(সাগরিকা)
Part-03+04
🍁🍁🍁
দূর থেকে মেঘ সব দেখছিল মাফ চাওয়ার কথা শুনে এইদিকে এগিয়ে এলো।
মেঘ:- প্রহর তুই মাফ চাচ্ছিস তুই তো এতো সহজে মাফ চাওয়ার মানুষ না।🤔
প্রহর:- দেখ মেঘ আমি সত্যি ই পরিবর্তন হতে চাই সবার বন্ধু হতে তোর ও তাই প্লিজ এসব বলে আমায় আর লজ্জা দিস না।😔
মেঘ:-ঠিক আছে আমি তোকে মাফ করে দিলাম এখন থেকে আমারা ভালো বন্ধু।😊
মৌ:- মেঘ আমারা ও কি বন্ধু হতে পারি?😍
মেঘ:- ওইদিন দেখি নি ভালো করে মেয়েটাকে আজ দেখলাম কি মিষ্টি দেখতে ফর্সা গায়ের রং কিছুটা বেটে আর গালগুলো টমোটোর মতো লাল হয়ে আছে ঠিক কতক্ষন এই ভাবে চেয়েছিলাম মনে নেই।সবার আওয়াজে ধ্যান ভাঙলো চেয়ে দেখি সবাই আমাদের দিকে কিরকম ভাবে যেন দেখছে।অর্নব বিথিকে বলছে দেখ আমাদের মেঘ ও প্রেমে পড়ছে মনে ইচ্ছে।😜
এরমধ্যেই প্রহর বলে উঠলো তাহলে চলো আজ সবাইকে আমার পক্ষ থেকে আইসক্রীম ট্রিট। সাথে সবাই একসঙ্গে হ্যাঁ বলে উঠলো। আমারা কলেজের সামনের আইসক্রীম পার্লার এ গেলাম।সবাই সবার পছন্দের ফ্লেভারের আইসক্রীম নিল।
মেঘ:- তোমার নাম কি?প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল মৌকে উদ্দেশ্য করে।
মৌ:- আমার নাম মৌমিতা তবে যারা আমার ক্লোজ তারা মৌ বলেই ডাকে।
মেঘ:- তাহলে তো আমি মৌ বলে ই ডাকবো।
এমধ্যে দেখা গেল নিকি আর আকাশ একে অপরকে আইসক্রীম খাইয়ে দিচ্ছে।এইটা দেখে বিথি অর্নবকে বললো,
বিথি:- দেখো এদের দেখে কিছু শিখ তোমার মতো একটা অনরোমান্টিক মানুষ যে কিভাবে আমার কপালে জুটলো ভগবান জানে,😥😥
প্রহর কিছুক্ষন ধরেই নিঝুমের বাচ্চাদের মতো আইসক্রীম খাওয়া মুগ্ধ নয়নে দেখছিল। হঠাৎ প্রহর নিঝুমের গালে লেগে থাকা আইসক্রীম টুকো টিসু দিয়ে মুছে নেয়, হঠাৎ এরকম কিছু হওয়ায় দুজনেই কিছুটা অপ্রস্তুত হয়।ঠিক তখনই বিথির বলা কথাগুলো শুনে সবাই হেসে উঠে😂😂😂।তারপর সবাই আমরা কলেজে ফিরে এসে বাকি ক্লাসগুলো করে যার যার বাড়ি চলে যায়।
এভাবেই এক মাস চলে যায় কিন্তু ফুল আসা কখনো মিস হয় না রোদ, ঝড়,বৃষ্টি যা কিছুই হোক ফুল আসবেই আর সাথে মন ভোলানো চিরকুট। এমধ্যেই মেঘ প্রহর অনেক ভালো বন্ধু হয়ে গেছে আর নিঝুমের মনে ও প্রহর একটা বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে।রোজ কলেজ শেষে হাতে হাত রেখে কখনো পার্কে ঘুরতে কখনো রেস্টুরেন্ট এ খেতে যাওয়া রাত জেগে ফোন আলাপ সবটাই চলছে তাদের মধ্যে।
আজ ও সকালে নিঝুমের ঘুম ভাঙে বেলী ফুলের মিষ্টি মনমাতানো গন্ধে উঠেই রোজকার মত বেলকনিতে চেলে যায় সেখানে আজও ছিল একটা চিরকুট যাতে লেখাছিল-

“আজ তোমাকে দেখার ৩০ টি সকাল পূর্ণ হল। সে সকালের বৃষ্টিস্নাত তোমায় দেখার মুগ্ধতার রেশ আজো কাটে নি আসা করি জলদি ই আমারা সামনাসামনি হবো।”

নিঝুম ফুলগুলো নিয়ে বেডসাইড টেবিলে রেখে ফ্রেশ হতে চলে যায়।কিছুক্ষনপর রেডি হয়ে নেয় এবং মৌকে নিয়ে কলেজের জন্য বেরিয়ে যায়।আজ কলেজে ঢুকে বিথি, মৌ, নিকি আর নিঝুম একসঙ্গে বসে কিছুসময় আড্ডা দেয়। এরমধ্যেই মেঘ, আকাশ, অর্নব, প্রহর এসে হাজির হয়।
মেঘ:- তোমারা জানো তো কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠান হবে সামনের সপ্তাহে কিছুক্ষন পর ই প্রিন্সিপাল স্যার সবাইকে অডিটোরিয়ামে ডাকবে।আমি এরেন্জমেন্ট এ আছি তাই কে কি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে করবে বলো।
তখনই সবার অডিটোরিয়ামের স্পিকারে প্রিন্সিপালের ঘোষণা শুনতে পেয়ে সবাই অডিটোরিয়ামের দিকে গেল। অডিটোরিয়ামে ঢুকতেই চোখে পড়ল স্টেজে একটা মাইক্রোফোন নিয়ে প্রিন্সিপাল স্যার কিছু বলছেন।
প্রিন্সিপাল:- সবাই হয়তো জানো সামনের সপ্তাহে কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হবে। নতুন ছাত্রছাত্রীদের বলছি অনুষ্ঠানে সবাই অংশগ্রহণ করবে কে কি করতে চাও নাম জমা দেবে ক্যালচারাল ডিপার্টমেন্টের ম্যাম এর কাছে।আমি চাই প্রতিবারের মতো এবারও অনুষ্ঠানটা সুন্দর হোক।এখন তোমরা সবাই আসতে পারো আজ আর ক্লাস হবে না।
সবাই অডিটোরিয়াম থেকে বের হয়ে এলো শুধু মেঘ, আকাশ আর অর্নব রয়ে গেল এরেন্জমেন্ট দেখতে।
বিথি:- এখন বলো আমরা কে কি করবো।
মৌ:- আমরা সবাই মিলে কাপল ডান্স করলে কেমন হয়।
নিকি:- আমার কোনো সমস্যা নেই।আকাশ ও মানা করবে না মনে হয়।
নিঝুম:- হ্যাঁ করা যায় মৌ আর মেঘ, আকাশ আর নিকি, অর্নব আর বিথি, আমি কার সাথে করব?😔😟
মৌ আর নিকি একসাথে বলল:- আর কে প্রহর জিজো আমরা সব জানি আর নাটক করিস না ।কথাটা শুনে নিঝুম ব্লাস করতে লাগল।
সবাই মিলে আকাশ,মেঘ, অর্নব, প্রহরের সাথে কথা বলে নাম দিতে চলে গেল কিন্ত সমস্যা হল কাপল ডান্সে নাম দেওযার সময় প্রহরের সাথে নিশি নামের একটা মেয়ে আগেই নাম দিয়ে দিয়েছে তাই নিঝুম একাই একটা ডান্সে নাম দিয়ে আসে।
নিঝুম মন খারাপ করে প্রহরের কাছে যায় আর বলে,
চলবে………
( কিছু গঠনমূলক কমেন্ট করে যাবেন সবাই প্লিজ।)

Part-04

🍁🍁🍁🍁
নিঝুম মন খারাপ করে প্রহরের কাছে যায় আর বলে,😔
নিঝুম:- নিশি নামের মেয়েকে তুমি চিনো কে এই মেয়ে তোমার সাথে ডান্সে আমার জায়গায় নাম দিয়ে দিয়েছে।😡
প্রহর:- ও নিশি সে তো আমার ছোটবেলা থেকে বন্ধু আসলে তোমার সাথে পরিচয় করানো হয়নি তাই তুমি চেনো নি।আসলে নিশিই প্রতিবার আমার সাথে নাচ করে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে তাই নাম দিয়ে দিয়েছে এইবার ও প্লিজ রাগ করো না বেবী।😔
নিঝুম:- আচ্ছা ঠিক আছে আমি রাগ করিনি।
তারপর সবাই কলেজ থেকে বের হয়ে বাসায় চলে গেল। বিকালের দিকে সবাই কনফ্রান্স কল করল ডান্স প্রেকটিস এর ব্যাপারে কথা বলার জন্য তারপর সিদ্ধান্ত হল মেয়েরা সবাই নিঝুমের বাসায় আজ রাতে প্রেকটিস করবে।আর ছেলেরা করবে মেঘ এর বাসায় ।তারপর সন্ধ্যায় সব মেয়েরা নিঝুমের বাসায় চলে এল।
সবাই গল্প করছিল হঠাৎ নীলিমা (নিঝুমের মা) এসে সবার খাওয়ার জন্য হালকা খাবার যেমন পোকড়া,রোল দিয়ে গেল কিন্তু নিঝুমের কোনো জানি মন খারাপ হয়ে আছে সকালের ব্যাপার নিয়ে।তাই নিঝুম একাকী বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে আকাশের চাঁদ দেখতে থাকে হঠাৎ কিছুক্ষনের মধ্যেই একখন্ড মেঘ এসে চাঁদকে আড়াল করে নেয়।আর সাথে সাথে নিঝুমের মুখ থেকে বের হয়ে আসে অস্পষ্ট দুটি লাইন-
“সুখটাও আকাশের ঐ চাঁদের মতোই ক্ষনে দেখা দিয়ে মনটা প্রশান্তিতে ভরে দেয় ক্ষনে হারার মেঘের আড়ালে দুঃখের ঘনছটায়।”

তখনই মৌ আর নিকি চলে আসে নিঝুমের মনে খারাপ দেখে বলে
মৌ:- কিরে তোর আবার কি হল?
নিঝুম:- কিছুনা এমনেই দাঁড়িয়ে আছি।
নিকি:- চল তো আমাদের গান ও সিল্কেট করা হয়নি তারপর প্রাকটিস ও করতে হবে।
নিঝুম, নিকি, মৌ রুমে গেল।গিয়ে দেখল বিথি অর্নবের সাথে ফোন কথা বলেই যাচ্ছে।তা দেখে নিকি বলল- হায় রে বেচারা অর্নব কিভাবে যে তোর এতো বকবক সহ্য করে ভগবান জানে😂😂।
বিথি:- এভাবে বলতে পারলি আমায়?😕 আমি শুধু শুধু বকবক করি।
মৌ:- না গো সোনা তুমি তো কতো ভালো মেয়ে 🤣🤣চলো এখন আগে গান সিল্কেট করে ওদের জানাই আগে।
বিথি:- কি গান হবে কাপল ডান্সের জন্য?
সবাই কিছুক্ষন ধরে ভাবছিল তারপর হঠাৎ নিকি চিল্লিয়ে উঠে-
নিকি:- পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি
মৌ আর বিথি:- একসাথে বলে উঠে কি পেয়ে গেছিস?
নিকি:- গান পেয়ে গেছি গান।
মৌ:- ও তাই বল কি গান?
নিকি:-“Dil Mera chahe”
মৌ:- বাহ তাহলে আমি মেঘকে ফোন করে জানিয়ে দিচ্ছি ।
মৌ মেঘকে ফোন করে জানিয়ে দিল। কিন্তু এখনও একটা সমস্যা রয়ে গেল নিঝুম কি গানে নাচবেন।
বিথি বলল নিঝুমকে উদ্দেশ্য করে-কি রে বাবলি কি গানে নাচবি?
নিঝুম:-leja leja re
নিকি, বিথি, মৌ:- ও হো 😆
তারপর তারা কিছু খেয়ে কিছুক্ষন নাচ প্র্যাকটিস করছিল।তারপর মাম্মাম (নিলীমা) এসে সবাইকে বলল-
সবাই শুধু নাচলেই কি হবে কিছু খেতেও তো হবে ডিনার রেডি সবাই নীচে চলে এসো।
মৌ:- ওকে আন্টি তারাতাড়ি ই আসছি।
রাতের খাবার খেয়ে সবাই বেলকনিতে এসে বসলাম গল্প করতে, সন্ধ্যামালতির গন্ধে চারিদিকে কি সুন্দর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। তখনই মৌ বলে উঠল আচ্ছা নিঝুম প্রহরকে পেয়ে তুই তোর ক্রাশ কে দেখি ভুলে গেলি নাকি।
নিঝুম:- তা কখনো হতে পাড়ে নিঝুম রাতকে ভুলে যাবো The great rockstar রাত ব্যানার্জি তো আমার হৃদয় জুড়ে আছে।মন খারাপের সময় তার গাওয়া গান আমার মনের শান্তি খুঁজে দেয়।
নিকি:- এ কি শুনছি তুই রাত ব্যানার্জি র ফ্যান কি এতোদিন তো বলিস নি।
নিঝুম:- ইন্ডিয়াতে করা তার সব লাইভ কনসার্ট এ আমি গিয়েছি।
তারপর সবাই কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে ঘুমাতে চলে যায় মেঘ, অর্নব, আকাশ আর প্রহর সবার সাথে কথা বলে। এইভাবে প্রোগ্রামের রিহার্সেল করতে করতে চলে আসে নবীনবরনের দিন। নবীনবরন আনুষ্ঠানে নবীনদের জন্য ড্রেস কোড ব্ল্যাক আর সিনিয়রদের ব্লু দেওয়া হয়।
মৌ:- দেখ কত তাড়াতাড়ি চলে এল অনুষ্ঠানের দিন টা কাল আমরা সবাই ব্ল্যাক শাড়ি পড়ে আসব।
নিঝুম:- ডান্স শারি পড়ে করা যাবে না ।
নিকি :- নো প্রব্লেম আমরা পার্ফোমেন্সের আগে ড্রেস চেঞ্জ করে নেব ওকে।
In Paris,
প্যারিসের সবচেয়ে বড়ো হোটেল Pullman paries centre -Bercy এর সাত তালায় নিজের রুমের ব্যালকনিতে বসে ম্যানেজার এর সাথে কথা বলছে একজন।
চলবে……
(কে হতে পারে এইটা ? তোমাদের কি মনে হয় কমেন্ট এ জানাও😜😜)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here