ভালোবাসি প্রিয় পর্ব ১৬+১৭

#ভালোবাসি_প্রিয়
#পর্ব_১৬
#সুলতানা_সিমা

সেই সকাল থেকে হাঁটুতে মুখ গুঁজে কান্না করে যাচ্ছে লুপা। খুব কষ্ট হচ্ছে তার। নীলকে তার অসয্য লাগে ঠিক কিন্তু নীলের চরিত্র তার অনেক ভালো লাগে। তার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে ঠিক তবে কখনো খারাপ নজরে তাকায় নি। লুপা তাকে ঘৃণা করলেও নীল এভাবে অপমানিত হোক এটা সে কখনোই চায়নি। কি দরকার ছিলো চিল্লাচিল্লি করার? যদি সে না চিল্লাতো তাহলে এমনটা হতো না। দিহান যখন নীলকে ওই কথা গুলা বলছিল তখন লুপা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিল। কোনো কথা তার মুখ দিয়ে বের হচ্ছিল না। অদৃশ্য একটা হাত তার গলা টিপে ধরছিল। শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। ভেতরটা চিৎকার দিয়ে বার বার বলছিল “প্লিজ থামো বলছি নীল ভাইয়া এমন করেনি” কিন্তু বাহিরটা পাথর হয়ে গেছিল। তার একটা ভুলের জন্য এতোকিছু হলো। নিজেকে খুব নিকৃষ্ট মনে হচ্ছে। চোখের জলটা মুছে ঢোক গিলে নিজেকে শক্ত করল লুপা। তারপর ওঠে দাঁড়িয়ে পা বাড়াল দিহানের রুমের দিকে। দিহানের রুমে দিহান নেই বারান্দায় দেখল সেখানেও নেই দৌড়ে গেল ছাঁদে। ছাঁদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে দিহান। লুপা গিয়ে দিহানের পিছে দাঁড়িয়ে কিঞ্চিৎ স্বরে ডাক দিল”

_ভাইয়া।

হঠাৎ লুপার গলা কানে আসতেই তারাতাড়ি চোখের পানি মুছে পিছন ঘুরে তাকাল দিহান। চোখ দুটো লাল হয়ে আছে মুখটা একদম শুকনো দেখাচ্ছে। লুপার কলিজাটা মুচড় দিয়ে ওঠল। যে ভাই টা সব সময় হাসি খুশিতে মেতে থাকত সে কিনা এভাবে কাঁদছে? লুপা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে দিহানের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো।

_সরি ভাইয়া। আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ।” কেঁদে কেঁদে বলল লুপা। দিহান বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে ভেঁজা গলায় বলল”
_কাঁদিস কেন পাগলি? আর কিসের ক্ষমা চাস? ক্ষমা তো আমি চাইবো। আমিই মানুষ চিনতে ভুল করছি।
_ঠিকি বলেছ ভাইয়া তুমি সত্যিই মানুষ চিনতে ভুল করেছ। নীল ভাইয়ার মতো একটা মানুষ চিনতে অনেক বড় ভুল করেছ ভাইয়া। নীল ভাইয়াকে তুমি ভুল বুঝলে। চিনলে এভাবে ভুল বুঝতে না তুমি” বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে অরিন। দিহান নিজের বুক থেকে অরিনের মাথাটা তুলে জিজ্ঞাসুক চোখে তাকাল লুপার দিকে। লুপার মুখটা তুলে ধরে বলল”

_নী নী নীলকে চিনতে ভু ভু ভুল করেছি মানে?”

লুপা একে একে সব কিছু বলল। দিহানকে সব শুনে দিহানের মাথায় বাজ পড়লো। নীলকে থাপ্পড় মারা,গিটার নিয়ে তার দিকে তেড়ে যাওয়া,গালাগালি করা সব কিছু চোখের সামনে ভেসে ওঠছে। কিভাবে সে পারলো নীলকে এভাবে ভুল বুঝতে? কাঁপা কাঁপা গলায় বলল”

_তু তুই আমাকে আগে কিছু বলিস নি কেন?
_আমার জবান দিয়ে কথা বের হচ্ছিল না ভাইয়া। হ্যাঁ আমি নীল ভাইয়াকে সয্য করতে পারিনা। উনার সব কিছুতে আমি বিরক্ত হই। উনার নামটা শুনতেও আমার বিরক্ত লাগে। কিন্তু সত্যি এটাই যে নীল ভাইয়াকে আমার যতই খারাপ লাগুক উনি মানুষটা খারাপ নয় ভাইয়া। উনার সাথে যা হয়েছে সব অন্যায় হয়েছে আর এই অন্যায়টা আমার জন্য হয়েছে। আমি কেন কিছু বলতে পারিনি ভাইয়া বল?[কেঁদে কেঁদে ]

_আমি কেন বুঝিনি রে? ওকে তো আমি ছিনতাম তাহলে আমি কেন বুঝিনি বল? আ আমার [হাত দুটো সামনে তুলে ধরে ] এ এই হাত দিয়ে মেরেছি ওকে। অন্যদিনের মতো ও পাল্টা মারেনি আমায় চুপ করে ছিল আর আমি কিনা ওকে……এই টুকো বলেই ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে দিহান। পকেট থেকে ফোন বের করে নীলের নাম্বারে ডায়েল করল নীলের ফোন বন্ধ। শাওনের ফোনের ডায়েল করল কল গেল কিন্তু রিসিভ হলনা। শাওনকে কল দিচ্ছে তখন অরিনের নাম্বার থেকে কল এলো। দিহান কল কেটে দিতে চায় কিন্তু পারেনি সেই সকালে অরিনের সাথে কথা হয়েছিল আর হয়নি সারাদিন অপেক্ষা করতে করতে মেয়েটা তাকে ফোন দিল সে রিসিভ না করলে কষ্ট পাবে হয়তো। দিহান ফোন রিসিভ করা মাত্রই অরিনের ঝাড়ি”

_এই কই থাকেন আপনি? সারাদিনে কোনো খুঁজ খবর নাই কেন? সেই যে রাখছি বলে ফোন রাখলেন আর ফোন দিলেন না। টেনশন ও তো হতে পারে আমার তাইনা?

_অ….অরিন বলতে গিয়েও লুপার দিকে তাকিয়ে থেমে গেল দিহান।
_কি ব্যাপার কথা বলেন না কেন?
_আব আমি তোমাকে পরে ফোন দিচ্ছি।
_আপনার গলা এমন শুনাচ্ছে কেন আপনি ঠিক আছেন তো?
_হুম পরে সব বলব রাখছি।
_ ফোন দিয়েন প্লিজ আমি অপেক্ষা করব।
_হুম বাই।

দিহান ফোন কেটে দিলো। লুপা জিজ্ঞেস করলো ”
_কে ছিলো ভাইয়া?
_ত তন্দ্রা।
_অহ।” লুপা ছোট করে অহ বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকল। সে স্পষ্ট দেখেছে ফোনের স্কিনে বড় বড় অক্ষরে লেখা অরিন নামটা। বেশ কয়েকদিন ধরে সে অরিনের ফোনেও দিহানের নাম্বার থেকে কল যেতে দেখেছে। কে ফোন দিছে জিজ্ঞেস করলে এভাবেই ওমুক তমুক বলে কথা লুকিয়ে রাখতো। মনে অনেক প্রশ্ন জাগতেই ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল লুপা।

এদিকে দিহান লাগাতার কল দিয়েই যাচ্ছে শাওনকে। কল যেতে যেতে এক সময় শাওনের ফোনটাও বন্ধ দেখাল। দিহান লুপাকে বলে”

_ ওরা খুব রেগেছে আমার উপর। চল আমরা এক্ষুনি যাবো নীলের বাসায়। ওকে গিয়ে সরি বলব।
_না ভাইয়া তার আগে চল আমাদের বাসার সবাইকে সত্যিটা জানাই। ওরা ও তো নীল ভাইয়াকে ভুল বুঝে আছে।
_হ্যাঁ ঠিক বলেছিস চল।
_হুম চল।

লুপা ও দিহান ছাঁদ থেকে নেমে আসলো। সবার রুমে রুমে সবাইকে খুঁজে কাউকে না পেয়ে দুজন নিচে নামল। বাসার সবাই বসে কি নিয়ে যেন আলাপ করছে। দিহান লুপা একজন আরেকজনের দিকে তাকাল তারপর আবার সবার দিকে তাকাল। দিহানের বড় চাচ্চু গম্ভীর গলায় তাকে বললেন”

_দিহান বসো তোমার সাথে কথা আছে।” দিহান চুপচাপ বসে পড়ল। তার বড় চাচ্চুর সাথে সে স্বপ্নেও বেয়াদবি করেনা। লুপা দিহানের পিছে সোফা ঘেঁষে দাঁড়াল। তার মনে হচ্ছে এখানে হয়তো সকালের ঘটা ঘটনা অথবা জিহানকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দিহান একটু নড়েচড়ে বসে জিজ্ঞেস করল”

_কি কথা বড় চাচ্চু?
_তন্দ্রার মা ফোন দিছিলেন উনি এ সাপ্তাহে বিয়েটা সেরে নিতে চান। তাই আমি উনাকে বলে দিছি আগামী কাল তোমাদের এনগেজমেন্ট আর তার তিনপর তোমাদের বিয়ে।
#ভালোবাসি_প্রিয়
#পর্ব_১৭
#সুলতানা_সিমা

ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করবে শুনেও দিহান খুশি হতে পারল না। বরং কোনো এক অজানা কারণে তার মন খারাপ হয়ে গেল। যে তন্দ্রাকে বিয়ে করার জন্য পরিবারের সবাইকে বলেছিল এ সম্পর্ক মেনে না নিলে সে সুইসাইড করবে আজ তার সাথে বিয়ে হচ্ছে শুনে সে অখুশি। ছোট একটা নিশ্বাস ছেড়ে দিহান তার চাচ্চুকে বলল”

_কাল মানে একটু বেশি তারাতাড়ি হয়ে গেল না?
_তারা তো তুমি আমাদের দিয়েছ এতদিন। তোমার পাগলামির জন্য একটা খুনির পরিবার থেকে বিয়ে আনতে হচ্ছে।
_মানে আমি বলতে চাইছিলাম যে আমি আগে নিজের পায়ে দাঁড়াব তারপর বিয়ে করব।
_তুমি যেমন আমাদের পছন্দের বা মতামতের প্রয়োজন মনে করনি। আমরাও করছিনা। তোমার পাগলামি দেখে আমরা হ্যাঁ বলেছি মন থেকে নয়।
[একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ] যাইহোক আমি উনাকে কথা দিয়ে দিয়েছি কালই এনগেজমেন্ট হবে। যার যাকে ইনভাইট করার করে নাও। আমি ডেট পিছাতে পারব না।

কথাটা বলেই দিহানের বড় চাচ্চু সোফা ছেড়ে উঠে চলে গেলেন উপরে। দিহানের বাবা ও তার ছোট চাচ্চুরা উপরে চলে গেলেন। উনাদের পিছু পিছু উনাদের স্ত্রীরা যেতে লাগলেন দিহান বলল”

_দাঁড়াও সবাই।” দিহানের বড় মা লুপার মা ও তার মা দাঁড়িয়ে গেলেন। সবাই তার দিকে জিজ্ঞাসুক চোখে তাকালেন। দিহানের মা বললেন”
_ কি হয়েছে? কিছু বলবি?
_হুম।” দিহান ছোট করে হুম বলে লুপার দিকে তাকাল লুপা এসে সবার সামনে দাঁড়িয়ে দিহানের দিকে তাকাল। দিহান ইশারায় ভরষা দিল। লুপা সবাইকে একে একে সবকিছু খুলে বলল। সবাই লুপার কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেল।

লুপা নীলের উপর বিরক্ত হয়ে সে চিল্লাচ্ছিল আর সেজন্যই নীল মুখ চেপে ধরছিল ধস্তাধস্তিতে খাটে পড়ে যায় আর সেই দৃশ্য তারা দেখে। এই ছোট একটা কারণে সবাই নীলকে এভাবে অপমান করে বাসা থেকে বের করে দিল। দিহানের বড় মায়ের চোখ থেকে টুপ করে এক ফুটা জল গড়িয়ে পরল। উনার কানে বেজে উঠল “আমি কিছু করিনি আন্টি বিশ্বাস করুন”। উনি নীলকে থাপ্পড় দিয়েছিলেন সেই দৃশ্যটা চোখে ভেসে উঠল। থাপ্পড়ের শব্দ এসে কানে বিকট শব্দে বাজল। সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে দিলেন। শাওন নীলকে তিনি নিজের ছেলের মতো ভাবেন আলাদা একটা টান অনুভব করেন তাদের জন্য। আর তিনি কিনা এভাবে নীলকে মারলেন? কথা শুনালেন? চোখের পানিটা মুছে দিহানকে বললেন”

_নীলকে একটা ফোন দে। ওকে বল আমি ওকে ডাকছি।
_ওর ফোন বন্ধ বড় মা আর শাওন ও ফোন তুলছে না।”

দিহানের মা বললেন”আমরা সবাই মিলে নীলদের বাসায় যাই চল। মাত্র তো রাত আটটা বাজে। এখন যদি যাই বারোটা বাজার আগে চলে আসতে পারব। কাল দিহানের এনগেজমেন্ট আর নীল যদি না থাকে তাহলে শুধু দিহান নয় আমাদের সবারই খারাপ লাগবে।
_হুম সেটাই করি চল।[লুপার মা]

ইশি দিশা লুপা দিয়া রুহান ও দিহানের বাবা চাচ্চুরা বাদে সবাই বেরিয়ে গেল নীলদের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে। নীলেকে সাথে না নিয়ে কেউই বাসায় ফিরবেনা।

___________

জিহান মাত্র বাসায় ফিরেছে। আজকাল বাসায় তার মোটেও ভালো লাগেনা ভালো লাগবেই বা কি করে। বাসায় আসলে তাকে এমন একটা মানুষের সম্মুখীন হতে হয় যার জন্য তার ভালোবাসার মানুষটাকে পেতে পেতে গিয়ে হারালো।

বন্ধুর বার্থডে পার্টিতে একটু বেশিই গিলে ফেলছিল। মাতাল হয়ে পরেছিল একটা রুমে। পরেছিল নাকি অন্যকিছু করছিল সে কিছুতেই মনে করতে পারেনা। তার শুধু মনে হয় সে ঘুমিয়ে ছিল। যখন চোখ খুলে তখন তাকিয়ে দেখে সে একটা মেয়েকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে। মেয়েটাকে এমন ভাবে ধরে ঘুমাচ্ছে যেন মেয়েটা একটা কোল বালিশ।

গায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে তার গায়ে কোনো জামা নেই। শুধু তাই নয় মেয়েটার গায়েও কোনো জামা নেই বললেই চলে ছোট ছোট দুটো জামা আছে শুধু গায়ে। জিহান এমন দৃশ্য দেখে তৎক্ষনাৎ ছিটকে দূরে সরে গেছিল। মেয়েটা বাকা ঠোঁটে হেসে উঠে বলেছিল”

_গুড মর্নিং মাই লাভ। “জিহান শুকনো দুকয়েক ঢোক গিলে বলল”
_ক ক কে আপনি।
_লারা। তবে অনেকজন লাইলি বলেও ডাকে তুমি চাইলে সেটাও ডাকতে পারো।
_এ এ এ এখানে কি ক ক করেন আপনি।
_এখানে কি করি? (একটু এগিয়ে জিহানের বুকে আঙুল স্লাইড করতে করতে) এখন তো কিছু করছিনা। যা করার তো আগে তুমি করলে।” জিহান আঁতকে উঠল। জ্বিভ দিয়ে শুকনো ঠোঁট ভিজিয়ে বলল”

_ক ক কি ক ক করেছি আমি?” লারা ফোন বের করে জিহানের সামনে একটা ভিডিও তুলে ধরল। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে জিহান তার সামনে বসা মেয়েটাকে পাগলের মতো কিস করছে।

ভিডিওটা দেখে জিহানের দুনিয়া ওখানেই থমকে যায়। এই ভিডিও সোস্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সেদিন লারা তাকে বিয়ে করে।

জিহান ভেবেছিল লারার সাথে সে অন্যায় করেছে তাই লারা তাকে তাকে বিয়ে করতে এই ভয় দেখিয়েছে। কিন্তু এখন মনে হয় লারা তাকে বিয়ে করেছে এর পিছনে কোনো বড়সড় কারণ আছে। লারাকে বেশ সুবিধার মেয়ে বলে মনে হয়না তার কাছে তাই সে বিয়ে হয়েছে থেকে লারার থেকে আলাদা থাকে। এমনকি কোনো প্রয়োজন ছাড়া সে লারার সাথে কথাই বলেনা। আবার যখন বলে তখন খুব খারাপ ভাষা ব্যবহার করে।

_কবে আসলেন?” লারার কথায় ভাবাচ্ছেদ হয় জিহানের কপাল কুঁচকে লারার দিকে তাকায়। লারা একটা লাল শাড়ি পড়েছে লাল ব্লাউজ লাল চুড়ি। লাল রংটা তার অনেক প্রিয়। ছেলেদের নাকি লাল পড়তে নেই তাই সে তার পছন্দের রং দিয়ে তার জিএফ ঝিনুককে রাঙিয়ে রাখতো। লাল রংয়ে ঝিনুককে তার কাছে পরিদের মতো লাগতো। লারাকেও অনেক সুন্দর লাগছে লম্বা চুল গুলা অর্ধেক সামনে এনে রাখছে অর্ধেক পিঠ ছড়ানো। লারার ঠোঁটের পাশে একটা তিল যেটা তার গুলাকার ঠোঁটের সুন্দর্যটা আরও বারিয়ে দিছে। চোখের ঘন পাপড়ি গুলা চোখ দুটো টানাটানা করে রাখছে। জিহানের কপালের কুঁচকানো বিলিন হয়ে যায়। চোখে এক রাশ মুগ্ধতা নেমে আসে। লারা মেয়েটা এতো সুন্দর তার জানা ছিলনা হয়তো এভাবে খেয়াল করে দেখেনি বলেই সে জানতো না।

জিহানের এভাবে তাকানো দেখে লারা ইতস্তত হয়ে যায়। আচঁলে আঙুল পেছাতে পেছাতে এদিক ওদিক তাকায় আর আঁড়চোখে জিহানের দিকে তাকায়। এক সময় গলাটা একটু ঝেড়ে বলে উঠল”

_এভাবেই তাকিয়ে থাকবেন?

জিহান তৎক্ষনাৎ চোখ সরিয়ে নেয়। একটু অপ্রস্তুত হয়ে যায়। লারা আবারও বলে”

_আমি জিজ্ঞেস করছিলাম কবে আসলেন?
_একটু আগে। [বিরক্তি স্বরে]
_আপনার বাসা থেকে ফোন দিছিল আমাদের কাল যেতে বলল আপনার কোন ভাইয়ের নাকি এনগেজমেন্ট।
_কই আমাকে তো কেউ ফোন দেয়নি।
_আপনার ফোনটা বন্ধ আমিও দেয়েছি অনেকবার ফোন যায়নি।” জিহান পকেট থেকে ফোন বের করে দেখল আসলেই তার ফোন বন্ধ। লারা আবার বলল”

_আমি উনাদের বলেছি কাল আমরা যাব। আমার লাগেজ গুছিয়ে নিছি। আপনার টা আমি গুছিয়ে দিব নাকি আপনি গুছাবেন?

লারার কথা শুনে জিহানের রাগ উঠে যায়। ধমকের স্বরে বলে ”
_আমি বলেছি আমি যাবো? আর আমার অনুমতি ছাড়া তুমি তাদের যাবে বললে কেন?
_আপনার নিজের বাড়িতেই তো যাচ্ছি তাইনা? আপনার যেতে কোনো আগ্রহ নাই কেন?
_কারণ আমি আমার ফ্যামিলিকে সেফটি রাখতে চাই। কী মনে কর আমি বুঝিনা কিছু? আমাকে বিয়ে করার পেছনে যে অনেক বড় একটা কারণ আছে সেটা আমি খুব ভাল করে জানি। হতেও তো পারে তুমি আমার পরিবারের কাউকে মেরে দিলে?

_আপনি কিন্তু আমাকে ভুল বুঝছেন আপনি যা ভাবছেন আসলে তা নয়। বিশ্বাস করুন।
_তোমার মতো একটা প্রস্টিটিউটকে আমি বিশ্বাস করব? [লারার মুখ চেপে ধরে ] তুমি কাকে ফাসিয়ে বিয়ে করেছ জান? সি আই ডি পুলিশ জিহানকে। আমার মা একজন লইয়ার। অত সহজে তোমাকে ছেড়ে দিবনা আমরা। আগে খুঁজে বের করে নেই বিয়ে কেন করছ তারপর দেখবে কি শাস্তি দেই।

চলবে……।
চলবে……।

মাথা ব্যথা তাই ছোট হইছে সরি।❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here