ভালোবাসি হয়নি বলা পর্ব ৬

#ভালোবাসি হয়নি বলা
#সাদিয়া নওরিন

পর্ব— ৬

জেরিন আপু আমার ওপর প্রচন্ড রেগে আছে.. আর তার একটাই কারন.. সে বলেছিল আমাদেরকে তাদের বাসায় চলে যেতে আর আমরা এইখানেই রয়ে গেছি..
আমরা কিছুখন তাকে জ্বালিয়ে ফোনটা কেটে দিয় এরপর সবার অট্টহাসি…
হঠাৎ মেঝ মামি কোথা থেকে এসে বড় একটা থালা আর এক বাটি ময়দা এনে দিয়ে বলল– বসে বসে খালি হাতে গল্প করলে ভালো লাগবে না.. ধর চুটকি বানাও..
লাইক সিরিয়াসলি.. এখন কি আমাদের এই চুটকি বানায়তে হবে.. এই মহিলার মাথায় এইসব কূটনিতি বুদ্ধি দেয়কে. আমি সিউর সুযোগ পেলে এই মহিলা রাজনৈতিক নেত্রী হয়ে যেত.. আমি যখন এসব ভাবায় ব্যাস্ত তখন হঠাৎ কেউ পিঠে সজোরে থাপ্পড়…
—-ঘুমা,,, বিয়াদপ… মানুষেরে মারি পৈশাচিক আনন্দ পাওয়া থেকে দুরে থাকতে পারো না…
—- আমি মানুষকে মারি না.. আর তুই মানুষ না এলিয়েন…
—-তবে রে
এই বলে আমার ছোটাছোটি.. এ হলো আমার প্রানপ্রিয় খালা প্লাস বান্ধবী.. সুমা.. আমার ছয় মাসের বড়.. তাই ওরে আমি ঘুৃমা ডাকি. আমার নানা বুড়োবয়সে কি পরিমান রোমান্টিক ছিল তার প্রমান হলো এই ঘুমা…

সে ছোটতে ছোটতে হাপিয়ে গেল তারপর বলল– দুর,, শশুরবাড়ি থেকে আসছি কই একটু জড়িয়ে ধরবি তা না মারতেছস.. আহাম্মক…
তখন আমি জোরে জরিয়ে ধরলাম ওরে.. সত্যি অনেক মিস করছি.. তারপর ওরে আবার চেতানোর জন্য বললাম— তুইতো বিয়ে পরিক্ষা না দেওয়ার জন্য করছোস তাই না..
সে দাত কটমটিয়ে আমার দিকে তাকালো আমি দৌড়াতে গিয়ে সামনে দেখি নানা দাড়িয়ে..
নানা হেসে বলল– বড় আর হলি না.. আমি ফিক করে হেসে দিলাম।। তখন তিনি বসতে বসতে বলল– বাইরে জাস না আবার.. রাতের বেলা বাইরে মেয়েরা বের হলে জিনে ধরে..
সাথে সাথে আমার মাথায় এক চিন্তা এলো— যদি জিনটা ভালো হয়.. আমাকে ভালোবাসে ফেলে আর আমাকে বিয়ে করতে চায় তাহলে কতো ভাল হবে.. আমি জিনের বউ হবো আর হাসনাতের মাথা ফাটাই দিব.. এইসব ভাবতে ভাবতে বাইরে বেরিয়ে এলাম..
উঠানে সব ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে।। আলভী অনেক কিউট আমার সাথে পড়ে ও.. দেখতে সিরিয়েলের এহেম এর মতো.. তাই ওরে আমি এহেম ভাই ডাকি. ফর্সা গালগুলো লাল টমেটোর মতো হয়ে গিয়েছে ওর.. ওর দিকে তাকানোরর পর কিছু চিন্তা করে সবার গালগুলো খেয়াল করলাম.. আজব ভাইগুলোর এতো ফর্সা হওয়ার কি দরকার..সবগুলো টমেটো হয়ে আছে… হঠাৎ আরাফ,মেহেদী আর সাদাত এসে বলল– রোদেলা আপু আমরা দেখ মিনি পার্টি করছি.. চিপস, কোক আর আচার.. চলো তোমাকে ও ভাগ দি.. তার বদলে তুমি গানের কলি খেলবা আমাদের সাথে.. আর চোর ডাকাত বাবু পুলিশ.. কারন আমরা তিনজন তো আমাদের আরো একজন লাগবে..সাদাত হেসে বলল– চল টিপ-টপ-মাছ – পানি ও খেলব..
আমি আনমনে হেসে দিলাম.. এইপিচ্চি গুলো আমারে ও পিচ্ছি ভাবে অলওয়েজ. আমি ওদের নিয়ে চুপি চুপি ছাদে চলে এলাম.. তারপর খেতে খেতে গানের কলি খেললাম কিছুখন.. আমি একা আর ওরা সবাই তাও আমি ফার্ষ্ট… আমিতো খুশিতে আকাশে বাতাসে এখন.. খাওয়া শেষে ভাবলাম চোর ডাকাত খেলবো তখনই হিটলার হাসনাতের আগমন.. ধুপ করে আমার সামনে বসে বলল– আমিও খেলব..
মেহেদী মাথা দুলিয়ে বলল– ভাই আমরা তো চারজন হয়ে গেছি.. তখন সে আরো একটা কাগজ বানালো বাবুর ভাই ডাবু।। তখন ই ইফ্ফাত আসিগোমড়ামুখ করে বলল– আমারে ছাড়া খেলছো নট ফেয়ার..
তখন আমি দাড়িয়ে বললাম যা খেলবো না আমি তোরা খেল.. তখনই হিটলার হাত ধরে টেনে বসিয়ে দিল আমাকে. আমি হুমড়ি খেয়ে তার বুকের সাথে বাড়ি খেলাম..

সে আড়চোখে তাকালো আমার দিকে. আজব এভাবে তাকাচ্ছে কেন হার্ডফিল করাবে নাক আমি.. হার্ডে যেই হাতুড়ি পিটাচ্ছে তা বাইরে থেকে দৃষ্যমান মনে হচ্ছে আমার.. সে তাড়াতাড়ি আর একটা কাগজ কেটে স্মাগলার নামের একটা কাগজ বানিয়ে দিল.. ইফ্ফাত তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ আর আমি তার নামে গালিতে..
খেলা শুরু হলো। খেলা দেখে আমি পুরা বেকুপ হয়ে গেলাম.. এই বাবু টাবু কি নিজের রাস্তা ভুলে গেছে আমার দিকে আসে না কেন.. হাসনাত ভাই পয়েন্টের ওপর পয়েন্ট তুলছে আর আমি শুধু চোর ডাকাত হচ্ছি.. আজব নিজেকে চোর চোর লাগছে আমার এখন!! চোখ ফেটে পানি আসছে.. আমি ঠোট ওল্টে কান্না করতে চায়লাম হঠাৎ দেখলাম হাসনাত ভাই আমার হাতে একটা কাগজ গুজে দিল..
আমি অবাক হয়ে সেইটা খুলে দেখলাম আরে এইটা বাবু!!!!.. আমার খুশিতে জোম্বা ডান্স দিতে ইচ্ছে হচ্ছে এখন.. আমি পাশে বসা তার হাত জড়িয়ে ধরলাম খুশিতে.. সে অবাক চোখ আমার দিকে তাকিয়ে রইল..
হঠাৎ চেতনা এলো আমার.. তাড়াতাড়ি তার হাত ছেড়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম…
ইয়া আল্লাহ,, আমাকে কি মনে করেছে সে.. লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে গেলো আমার.. এরপর আবার চালা হলো এইবার পুলিশ আমার হাত.. আমি চিন্তা করার আগে সে চোখের ইশারাই আমাকে দেখিয়ে দিল ইফ্ফাতের দিকে.. আমি ব্রু কুচকে তাকালাম!! সে কি সত্যি বলছে নাকি দুষ্টমি.. শেষে দ্বিধাদন্ধ মিলিয়ে বলে দিলাম পরে দেখি এইটা সত্যি ইফ্ফাত!
অবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম আমি.. সে মৃদু হেসে অন্যদিকে তাকালো..
আমার পয়েন্ট এখন অনেক এগিয়ে.. আর তার বেশির ভাগ তার জন্যই… আর একটা খেলা তারপর মোট নাম্বারের যোগ.. আবার আমি পুলিশ আর এইবার আমি হাসনাত ভাইয়ের দিকে আবার তাকালাম…
আমাকে অবাক করে দিয়ে সে নিজের দিকে ইশারা করলো.. আমি চোখ বড় বড় করে ফেললাম.. ইয়া মাবুদ,, এখন কি আমার তার নাম ধরতে হবে.. আমার বুকের মাঝে চিনচিন করে ওঠলো.. আমি নিজেকে শক্ত করে সাদাতের নাম বলতে যেই মুখ খুললাম তিনি সজোরে আমার হাত চেপে ধরলো.. আমি বিস্ফোরিত চোখে তার দিকে তাকালাম..
সে মিষ্টি হেসে দিল আর আমি আনমনেই বললাম— হাসনাত..
সে অবাক হয়ে তাকালো.. আমি তার দিকে এক ঘোরে তাকিয়ে আছি.. তার গালের কাছের তিলটা অসম্ভব সুন্দর.. ইচ্ছে করে ছোয়ে দি.. হঠাৎ সে আমার কানে কানে বলল– তুমি আমার নাম ধরে ডেকেছো আজকে…
সাথে সাথে আমার চোখ রসগোল্লার মতো হয়ে গেল..পরপর কয়েকবার ঢুক গিলে বললাম– আমি নিচে গিয়ে গল্প করি..
তখন ইফ্ফাত অবাক হয়ে বলল– রাজা হয়েও খুশি না কেন তুমি..
আমি আবালের মতো তাকিয়ে বললাম— কে রাজা??
সে মুখ বাঁকিয়ে বলল– ধ্যান কোথায় থাকে.. তুমি রাজা আর ভাইয়া রানী হয়েছে..
আমার মুহুর্তেই হাসি চলে এলো.. তখন দেখলাম আপুর বহর লুডুর বোর্ড নিয়ে হাজির আর পিছু পিছু ভাইগুলো ও.. ইমা আপু হঠাৎ দৌড়ে নিচে নেমে গেল.. কাকলি আপু হেসে বলল– এইবার সহ নবম বার ওর.. এতো ঘনঘন ওয়াসরুমে যায় না জানি ভাইয়ার কি বিপদ হয়.. এইবলে দুজন দুজনকে চোখ মেয়ে হেসে দিল.. সাথে ভাইয়ারাও. আমি আহাম্মকের মতো তাকিয়ে বললাম— ও ওয়াসরুমে গেল ভাইয়ার ক্ষতি কি.. ওরা এলিয়েন দেখার মতো আমার দিকে তাকালো। তারপর আবার নিজেদের সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ এ হেসে দিল. আজব এই প্রানীগুলোর সমস্যা কি.. বললে একটু কি হয়..
হঠাৎ মেঘলা আপু ঘোষনা দিল ওরা কুতকুত খেলবে.. সাথে দড়ি লাফ.. আমি মুখগোমড়া করে বললাম— পারি না আমি.. ইফ্ফাত ও সাথে সাথে মাথা দোলাল.
হঠাৎ মেঘলা আপু মুখ ভেঙ্গিয়ে বলল– ফার্মের মুরগীরা এইসব পারে না…তারপর ওরা একজন অন্যজনের হাতে ক্ল্যাপ করে হেসে দিল.. তারপর বলল– হাসনাত ভাই সহ পারে.. তারপর ওরা খেলতে লাগলো আর আমরা দুধভাত..
কিছুখন খেলে টায়ার্ড বেচারীরা.. আমার বলতে ইচ্ছে হচ্চে দেখ এখন কে ফার্মের মুরগী.. কিন্তু আফসোস বলতে পারবো না কারন ওর কাছে জবাব রেডি থাকে আমি জানি.. হাজার হোক আমার ৪ বছর আগে দুনিয়ায় আসছে.. তাই নিজের নিজে বালতিভরা সমবেদনা জানিয়ে চুপ হয়ে বসে রইলাম.. হঠাৎ ইষা আপু দড়ি হাতে নিয়ে বলল– চল দড়ি লাফ খেলি..এই খেলাটা আমিও পাড়ি… আমি উৎফুল্ল হয়ে যেই আমিও বলবো.. তখন হিটলার গম্ভির মুখে বলে ওঠলো— রোদেলা খেলবে না.. তোমরা খেল..
হুয়াট দা ফুচকা,,, এর আবার কি হলো.. তারকথা শুনে আমি ফাটা বেলুনের মতো চুপসে গেলাম.. এই পোলারে সত্যি সত্যি একদিন জিঙ্গেস করবো আমি তারে সুতাক্রিমি কি বেশি জ্বালায়.. না হয় এমন পাল্টায় যায় কেন মিনিটে মিনিটে..
মেঘলা আপু ব্রু কুচকে বলল– কেন ও খেললে কি প্রবলেম. সাথে সাথে কাকলি আপুর ও সেইম লুক…
এই দুইটা আমাদের বংশের সিআইডি.. এই মেঘলা আপু তো চেহারার দিকে তাকাই ভিতরের খবর বের করে আনে আর কাকলি আপু এমন সব লুক দিবে মনে হয় এ সব জানে..শেষে সব বলার পর দেখা যাবে সে কিছুই জানতো না হোদাই বিব্রত করছে..
আমি মাথা নিচু করে অন্যদিকে তাকালাম. আপাতত এই দুই সিআইডির রোষালনে পড়ার ইচ্ছে নেয় আমার.. আমি আড়চোখে হাসনাত ভাইয়ের দিকে তাকালাম.. এই প্রথম তার চেহারায় ইতস্ততা দেখলাম আমি.. সে আমাতা আমাতা করে বলল– আরে ও তো ফার্মের মুরগী.. এখন যদি হাত পা ভাঙ্গি বসে থাকে.. তাহলে কালকে ইষার গায়ে হলুদে আমাদের ও মজা করতে দিবে না…
আমি নাক ফুলিয়ে তার দিকে তাকালাম…
এই পোলা এতো বদ কেন.. আমার চিন্তা না করি নিজেদের মজার চিন্তা করতেছে কেন ইতর.. শালা ইচ্ছা করতেছে তারে ছাদ থেকে ফেলে দি.. বিরবির করে এইসব বলতে লাগলাম আমি.. হঠাৎ মুনিরা ব্রু কুঁচকে বলল– কাকে ফেলবা ছাদ থেকে…
আমি মুখ ভেঙ্গচিয়ে বললাম— এই লাল বান্দরকে.. ইফ্ফাত হঠাৎ চিৎকার দিয়ে বলল– অবুক এইখানে লাল বান্দর কে…
আমি হতাশাজনক লুক দিয়ে তাকালাম তার দিকে.. এই মেয়ে একদিন ডোবাবে আমাকে.. মেঘলা আপা চোখ ছোট করে তাকিয়ে বলল– এইখানে কি চলে…
হঠাৎ তার মোবাইল বেজে ওঠলো.. টাইটানিক এর সুন্দর গানটা।।
আহা,,, নিশ্চয়ই জয়, ভাইয়া কল দিয়েছে.. ইচ্ছে হচ্ছে থেংকিও লিখা একটা কাগজ কবুতরের গলায় পেচিয়ে তারকাছে পৌছে দি।। তবে আফসোস.. এখন আমি কবুতর কই পাবো.. যদিও আশেপাশে অনেক কাক আছে কিন্তু এরা কি ঠিক জায়গায় যাবে কিনা সন্দেহ… তারপর ভাবলাম নানুর বাড়ির পুকুরের ব্যাঙ গুলো কেমন হয়.. কিন্তু ওরা আবার চিঠিটা ভিজিয়ে ফেলবে.. ইফ্ফাতকে হালকা ঝাঁকিয়ে আনমনে বললাম— এমন কি কাগজে চিঠি পাঠালে ভালো হবে.. যা ব্যাঙের গলায় থাকলে ও ভিজবে না.।
সে ব্রু কুচকে বলল– আপু,, আমরা আদিমযুগে না তো.. বাস্তবে ফিরি আস.. ফোনে পাঠাও না বেয়াক্কেল…
আমি কটমটিয়ে তাকিয়ে বললাম— ইউনিক বলতে কিছু আছে ভুলে গেছস নাকি..
মুনিরা হাসতে হাসতে বলল– হেই রোদবেবি,, তোমারে এখন রাক্ষসী রানী কটকটির মত লাগতেছে..
আমি রেগে মারতে গেলেই হাসনাত ভাই চিৎকার করে বলল– পিচ্ছিদের মতো করবি না রোদেলা চুপ করে বসে থাক..
আমি মুখ ভেঙ্গিয়ে বললাম— তোমাকে আলিফ লায়লার কিমাদেব এর মতো লাগে তা কি তুমি জান…
এই বলে আমি মুখে হাত দিয়ে দিলাম.. এখন কি হবে.. মনে হচ্ছে ষাড়ের সামনে লাল ড্রেস পড়ে দিলবার দিলবার ডান্স করেছি আমি ঠিক তেমন লুক দিচ্ছে সে..
আমি কাকলির আপুর গা ঘেসে দাঁড়িয়ে বললাম— আপু কতো দিন বোন বোন গল্প করিনা চলনা.. গল্প করি গা.. আপু অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল– কেন আর খেলবিনা..
আমি বিরবিরিয়ে বললাম— জিবনটাই যখন হাডুডু খেলা হয়ে গেছে সেইখানে বাকি সব খেলা ফাউ.. আমি কোনভাবে তার হাত ধরে বললাম— চলনা যায়.. এইবলে তার হাত ধরে টানতে টানতে নিচে নিয়ে গেলাম.. তখন হাসনাত ভাই নিজের ফোনটা কানে দিয়ে বলল– ইস্পা তুই বস আমার রুমে.. আমি এখন আসতেছি.. তোর সাথে অনেক কথা আছে আমার…

আমি সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে থমকে দাঁড়ালাম.. ইস্পাকে কি বলবে সে.. হঠাৎ পেটের ভিতর মোচড় দিতে আরম্ভ করেছে আমার.. ভাবলাম এইটা কিসের মোচড়… বদহজমির নাকি রাগের.. তবে আমার এই মুহুর্তে সত্যি মনে হচ্ছে রাক্ষসী রানী হয়ে ইস্পাকে টুপ করে গিলে ফেলে কয়েকবোতল স্প্রাইট খেতে যাতে তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায় এই বদ মেয়ে…

চলবে
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here