ভালোবাসি হয়নি বলা পর্ব ৫

#ভালোবাসি হয়নি বলা
#সাদিয়া নওরিন

পর্ব— ৫

আমি আস্তে আস্তে পিছনে তাকালাম দেখলাম হাসনাত ভাই চোখে হাত দিয়ে বসে আছে.. আমার নিজের ওপরই রাগ লাগলো.. ইশ আমার জন্য ওনি এতোটা ব্যাথা পেল.. আমি যেই ওনার কাছে যাব.. সানিয়া আর ইস্পা ওনার সেবাই লেগে গেল.. একজন ফু দিতে চায় তো অন্যজন গরম ভাব.. কতো দরদ তাদের…
আমি দাত কটমটিয়ে সেই দিকে তাকালাম.. এক কৃষ্ণের এতো গোপি থাকলে আমাকে আবার কি দরকার.. যেই আমি রেগে মেগে চলে যেতে চায়লাম হঠাৎ হাসনাত ভাই পিছন থেকে বলে ওঠলো— কই যাস তুই. মানুষকে ব্যাথা দিয়ে সরে যাওয়া কি তোর অভ্যাসে পরিনত হয়েছে??
তার কথায় রাগে পুরো শরীর জলে ওঠলো আমার.. মনে হলো মরিচের গুড়ো খুব আয়েশ করে ছিটিয়ে দিচ্ছে আমার গায়ে।।।

আমি পিছনে ঘুরে কিছু বলার আগে ইস্পা বলে ওঠলো— হাসনাত ও চলে যাক না.. আমি তোমাকে ভাপ দিয়ে দি..
সে ইস্পার দিকে না তাকিয়ে আমার দিকে স্হির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল– তুমি যাও ইস্পা.. যার দোষ সে করোক..
ইস্পা মুখ ভেঙ্গচিয়ে সরে গেল.. আর আমি ধুপ করে তার সামনে বসে পড়লাম.. তারপর দূরত্ব বজায় রেখে কাপড় দিয়ে ভাপ দিতে লাগলাম..
সে হালকা হেসে ফিসফিসিয়ে বলল– কাছে আস..
আমি তার কথায় কেপেঁ ওঠলাম.. তাড়াতাড়ি মাথা দুইপাশে দুলিয়ে বললাম— আমি ভাপ দিয়ে দিয়েছি.. আবার কাছে কেন..
সে আবার আহ্ করে ওঠলো.. আমি তাড়াতাড়ি তার কাছে গিয়ে বসলাম তারপর ফু দিতে লাগলাম তার চোখে.. ইশ হয়তো অনেকটা কষ্ট হচ্ছে…
সে মুচকি হেসে আমার দিকে তাকালো.. তার সেই তাকানোতে যেন আমি তার চোখে ডুবতে শুরু করলাম.. এতো মায়া কেন তার এই দুইটি চোখে!!! কেন এতো ভালোবাসা.. তার এই ভালোবাসা কি শুধু আমাকেই ঘিরে নাকি তা নিছক কল্পনা…

হঠাৎ ইফ্ফাত আমাকে হালকা ঝাকিয়ে বলল– কি এইভাবে থাকবা দুজন?? নাকি রান্না ও করবা..
আমার ইচ্ছা হলো লজ্জায় মাটির নিচে ডুকে বসে থাকি..কিন্তু এখানে মাটি পাব কোথায়.. চায়লেই আমি পানির ট্যাংকের ভিতর গিয়ে বসে থাকতে পারি.. কিন্তু আবার ডুবে গেলে তো মরে যাব.. আর আমি যেহেতু হাসনাত ভাইয়াকে ভালোবাসি.. আমার মৃত আত্না অতৃপ্ত হবে.. আর সেই আত্না হাসনাত ভাইয়াকে জ্বালাবে.. থাক আমার মরার কোন দরকার নেই তার থেকে বরং আমি রান্না করতে যায়…

আমি ইফ্ফাতের দিকে তাকিয়ে— তুই যা পেয়াজ কেটে দে.. আমি রান্না বসাবো..
হাসনাত ভাই হালকা ব্রু উচিয়ে বলল– বাহ বাহ,,, পুরো গৃহিণী হয়ে গেলি তুই…
আমি লজ্জায় লাল হয়ে ওঠলাম.. এইভাবে বলার মানেটা কি!! ইফ্ফাত মুখ কালো করে বলল– আমি পিয়াজ কাটতে পারি না.. চোখ থেকে পানি পড়ে..
আমি হেসে বললাম— তাহলে মাটির চুলাই রান্না কর আমি পিয়াজ কাটি..
সে তাড়াতাড়ি ডুক গিলে বলল– না না.. আমি আমার কাজে ঠিক আছি.. আমি মুখে রহস্যময় হাসি দিয়ে সবজি কাটতে বসলাম…

ইফ্ফাত পেয়াজ ছিলছে.. তার চোখ দিয়ে টুপ টুপ করে পানি পড়ছে.. হঠাৎ ইফতী ভাই ওর পাশে বসে আস্তে আস্তে পেয়াজ ছিলতে লাগলো.. হালকা নাক টানছে সে ও.. আমার হাসি পাচ্ছে.. যে নিজেও ছিলতে পারে না সে আসছে অন্যজনকে হেল্প করতে. ইফ্ফাত হালকা মুচকি হেসে তাকালো তার দিকে. ইফ্ফাতের এই ভালোলাগা চাচ্ছিলাম আমি তার কাছ থেকে. ইফতী ভাই সবগুলো পেয়াজ কাটতে লাগলো.. হঠাৎ ইশ করতেই ইফ্ফাত তার হাত ধরে ফেলল.. ওয়াহ.. হুয়াট আ সিন.. আমার ইচ্ছে করছে সময়টা ক্যামরা বন্ধি করতে.. আমি ঝটপট একটা ছবি তোলে নিলাম.. তারপর তরকারি কাটতে গিয়ে আমারই হাত কেটে গেল.. আমি আহ করে চিৎকার করতে গিয়ে থেমে গেলাম..
শুধু শুধু সবাই চিন্তা করবে.. আমি চুপচাপ বাকি কাজগুলো শেষ করলাম…

রহিমা খালা ছাদের ওপর মাটির পলেপ দিয়ে গিয়েছেন.. তারওপর ইট দিয়ে স্টেন্ড বানানো হয়েছে..
রান্না হবে চিকেন বিরিয়ানি, ভেজিটেবল আর ডিম.. সাধারন খাবার.. তবে আপাতত আমার কাছে তা অসাধারন খাবার মনে হচ্ছে.. কারন একটাই.. আমি এইসব কিছুই রান্না করতে পারি না.. যদিও আমি ইউটিউব থেকে শিখেছি.. কিম্তু আমার নিজের ওপর কন্ফিডেন্ট জিরো…

হাসনাত ভাই ত্রিকোয়াটার প্যান্ট আর সেন্ডু গেন্জি পড়ে এসেছে.. ওনার বাকি কাজিনরা ও আড়চোখে দেখছে তাকে.. আর দেখবে নাই বা কেন.. আমার নিজের ই চোখ সরছে না..এতো কিউট কেন সে..
পরক্ষনে আবার মেজাজ গরম হয়ে গেল.. এমন হিরো সেজে তাকে রান্না করতে আসতে কে বলেছে.. এই যে তার লম্বা লম্বা দৃষ্যমান পা দুটি যে আমার চুলাই দিয়ে নলা রান্না করতে ইচ্ছে করছে সে কি তা জানে. আর তার হাতের ওপর ন্যাটের একখানা বড় সোয়েটার পড়িয়ে দিতে মন চাচ্ছে আমার সেইটা ও হয়তো তার অজানা.. নিজের ওপর একবালতি সমবেদনা বলতে বলতে বেরিয়ে।গেলাম সেইখান থেকে..

হাসনাত ভাই রান্না করতে চুলার সামনে দাঁড়ালো.. সাথে আমিও!! আমি রান্না বসাচ্ছি সে আমাকে হালকা পাতলা হেল্প করছে…ওড়নাটা আন্গুলের ওপর দিয়ে দিলাম অল্প করে.. আবার দেখলে কি না কি বলবে.. হঠাৎ ব্রু কুঁচকে বলল– কি সমস্যা.. ওড়না ওইখানে দিয়ে রেখেছিস কেন.. তরকারি রান্নার সময় এইভাবে ওড়না পড়ে না.. তোকে সব শেখাতে হবে.. এইবলে সে আমার কথা না শোনেই অন্যদিকে ফিরে আসতে করে ওড়নাটা খুলে সুন্দর করে পেচিয়ে দিল.. আমার বিষয়টা ভাল লাগলো অনেক. আমি নিজেও অনেকটা ইতস্তত ছিলাম যদি আমার দিকে তাকিয়ে ওড়না ঠিক করে সেইটা নিয়ে..
আমি আড়চোখে অন্যদের দিকে তাকালাম. ভাগ্য ভালো সবাই সবার কাজে বিজি..
তারপর হঠাৎ সে আমার চুলগুলো ধরে হাত খোপা করে দিল.. নিজেকে সত্যি বৌ বৌ লাগছে এখন আমার.. হঠাৎ সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিপাত করে বলল– তোর আন্গুলে কি হয়েছে..
আমি পরপর কয়েকটা ঢুক গিললাম.. হায় আল্লাহ,, এই ছেলের এমন বাঝের নজর কেন… কি হবে আমার এখন…
আমি আমাতাআমাতা করে বললাম— আসলে ভাইয়া..
সে হঠাৎ ইফ্ফাতকে ডেকে বলল রান্না গুলো দেখতে সে এখন আসছে.. আবার হঠাৎ ইস্পার দিকে তাকিয়ে বলল– তুৃমি ইফ্ফাত কে হ্যাল্প কর আমি আসছি..
আমি অবাক হয়ে তারদিকে তাকিয়ে আছি.. এই ছেলে কি এখন আমাকে সবার সামনে নিয়ে গিয়ে ইন্সালট করবে তাই কি সে এখন সব কাজ থেকে আমাকে ছুটি দিয়ে দিচ্ছে.. আমার ইচ্ছা করছে এখন ঘুমের অসুধ খাই কিছুখন অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে.. শালার জিবনেও কখনো অজ্ঞান হলাম না আমি.. জিবনটা স্টার জলসার মতো বেদনাময়. হঠাৎ সে আলতো করে আমাকে ধরে নিচে নিয়ে যেতে লাগলো- আমি বিড়বিড়িয়ে বললাম— দেখুন ভাই,,, হাতা কাটা ড্রেস পড়া কোন কিউট ছেলে যদি সবার সামনে অবলা, শান্ত, পিচ্ছি একটা মেয়ের ইজ্জতের কাস্টার্ট বানায় আর তা চামচ ছাড়া চুক চুক করে খেয়ে ফেলতে চায়.. মেয়ে এইটা এইবার সত্যি সত্যি হলুদের লিপিস্টিকের মায়া কাটিয়ে আম গাছে সুইসাইড করবে””
সে শশশ্ করে আমার ঠোটের ওপর আন্গুল দিল.. আমি শিউরে ওঠলাম.. তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল– এতো বেশি কথা বলস কেন তুই,, সারাদিন কি মুরগীর পিছনের পার্টটা খাস..
আমি চোখ কটমটিয়ে বলল– আপনি হয়তো খান,, তাই অন্যকে বলেন.. সে আমার কথার কোন গুরুত্ব না দিয়ে নিজের রুমে নিয়ে গেল.. আমি অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম.. সে অসুধ, গজ আর তুলা নিয়ে আমাকে অসুধ লাগাতে লাগাতে বলল– ভেবেছিলামও তুই এমন অঘটন ঘটাবি তাই আমি পোড়ার আর কাটার অসুধ এনে রেখেছিলাম…কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি কাটবি কল্পনা ও করি নাই আমি.. এই বলে সে আবার অসুধ লাগাতে লাগলো…
আমি অবাক হয়ে ভাবলাম– এই পোলা এমন কেন?? সে জানি শুনি আমাকে এইসব কাজ দিয়ে আবার আমার জন্য মলম ও কিনে রেখেছে.. ইয়া মাবুদ,, এমন বদ পোলারে মানুষ কেমনে ভালোবাসে..
সে ব্যান্ডস করতে করতে বলল– এতো ভয় পাশ কেন আমাকে?? আমি কি খুব বকি তোরে… এইবলে আমার দিকে স্হির দৃষ্টিতে তাকালো..
এখন কেউ যদি গলায় ছুরি দিয়ে জিঙ্গেস করে সে আমারে বকে কিনা.. তাহলে আমার কি বলার উচিত.. অবশ্যই আমি তাই বললাম— আরে না না বকা দাওনা আমাকে তুমি এইবলে আমি হালকা ঢুক গিললাম.. সে দুঃখী মুখ করে বলল– তোকে আর বকব না আমি.. আমি লাফিয়ে দাড়িয়ে বললাম— সত্যি.. ওফ আপনার সৎবুদ্ধি হলো এতোদিনে.আপনাকে আমি একটা ২ টাকার লিচি কিনে খাওয়াব এই খুশিতে.. সে অবাক চোখে আমার দিকে তাকালো তারপর গটমটিয়ে বেরিয়ে গেল.. আমি তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলাম.. আজব আবার কি ভুল করলাম.. সহজ প্রশ্নের সহজ আন্সার দিলেই সবার অসুবিধে.. তাইতো বলি স্কুলে থাকতে সরল কর গুলো এমন ছিল কেন.. বলত সরল কর কিন্তু ভিতরে গরলের বস্তা.. এই ভাবতে ভাবতে আমি মামির রুমে গিয়ে গোসলের জন্য ড্রেস নিলাম… তারপর ওয়াসরুমে গিয়ে দেখি সব বুক.. আজব এতোক্ষন গল্প করি তিনবোন তিন ওয়াসরুমে একসাথে গোসল করতে গেছে.. এই মেয়েগুলো এতো শত্রুতামি করতেছে কেন। আমি হাটতে হাটতে গিয়ে হাসনাত ভাই এর ওয়াসরুমে গিয়ে ডুকে পড়লাম.. গোসল শেষে ড্রেস পড়তে গিয়ে আমার মাথায় পুরো ছাদটা ভেঙ্গে পড়লো.. আরে রিয়েলটা না আবার আমার কল্পনার টা.. আমার আম্মারে কি করতে মন চায়..ড্রেস সব একসাথে গোছাবে না.. সেমিসটা একসাথে দে নাই.. এই নেটের ড্রেস পড়ে কিভাবে বের হব আমি.. এই বলতে বলতে আমি যেই উকি দিব দেখলাম হাসনাত ভাই তার রুমে দাড়িয়ে ড্রেস খুলছে.. তার সুন্দর বডি দৃষ্যমান!! সুঠাম দেহ, স্লিম মেদহীন পেট, মার্সেলস. আমি পরপর কয়েকটা ঢুক গিললাম.. এতো সুন্দর হওয়ার দরকার কি ছিল তার.. এই যে এখন আমার হার্ডবিট বেড়ে গেছে মনে হচ্ছে ধপাস করে বেরিয়ে যাবে সেই দায় কে নিবে.. ওনি যেই ডুকতে যাবে.. আমি তাড়াতাড়ি দরজা লাগিয়ে দিলাম.. ইশ্ দরজা না লাগিয়ে আকাশ পাতাল ভাবছি আমি.. এখন কি হবে..সে কি আমাকে এই অবস্হায় দেখেছে।। আমার মনে হচ্ছে বালতির পানিতে ঢুব দিয়ে মরে যায়.. কিন্তু আপসোস সেইখানে আমি আটব না…
সে হঠাৎ বলে ওঠলো— দরজার লক লাগাই যে জানিস না.. নাকি খোলা রেখেই গোসল করিস..
কেউ দেখে ফেললে কি খুব ভালো লাগে তোর..
আমার রাগে দুঃখে কান্না আসছে.. এইটা কি বলে সে.. আমি কি এতো খারাপ।।
আমি নাক ফুলিয়ে বললাম— সানিয়া, মুনিরা অথবা ইফ্ফাতকে ঢেকে দিন একটু..
সে দরজায় হালকা টোকা দিয়ে বলল– ধর এই শার্টটা পড়ে বেরিয়ে আয়.. আর ড্রেসটা পাল্টে াঅন্যটা পড়বি.. এই ড্রেসে তোরে আর দেখলে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিব…
আমার এখন ইচ্ছে হচ্ছে সত্যি কলা গাছের সাথে ঝুলে পড়ি.. আমি চুপচাপ ড্রেসটা নিয়ে পড়ে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেলাম তার চোখের দিকে তাকানোর সাহস আমার নেয়…

রুমে এসে জোরে জোরে দম ফেলতে লাগলাম.. ইশ তার সামনে শ্বাস আটকে গিয়েছিল আমার..

হঠাৎ মুনিরা ব্রু কুচকে বলল– কুকুরের তাড়া খেয়েছো মনে হয়.. আমি আনমনে বললাম— হু.. কিন্তু এইটা হট এন্ড সেক্সি কুকুর..
সে অবাক হয়ে বলল– কুকুর আবার এইসব ও হয়.. তখন সানিয়া নাচতে নাচতে এসে বলল– ইস্পা আপুর গাউনটা দেখেছিস.. আমার খুব সুন্দর লাগছে.. চোখ ফেরানো দায়..
আমি ওর দিকে কটমটিয়ে তাকিয়ে বললাম— মানুষের টা বাদ দে.. তুই আমার সেমিস পড়ে বসে আছস কেন তা বল..
সে আমাতাআমাতা করে দৌড়.. আপাতত ওরে দুধভাত ভেবে ছেড়ে দিলাম তারপর নিজে রেডি হয়ে নিলাম…

মিষ্টি কালারের একটা গাউনপড়ে চুলগুলো ছেড়ে দিলাম.. কানে লম্বা পাথরের কানের দুল, হাতে একগুচ্ছ চুড়ি..আর হালকা সাজ দিয়ে ছাদে গেলাম.. হাসনাত ভাই রান্না শেষে চেয়ারে বসে আছে হঠাৎ দাড়িয়ে গেল.. পুলকিত দৃষ্টিতে তাকালো আমার দিকে তখনই হঠাৎ সুনান ভাই বলল– আজ থেকে তুই আমার নিউ ক্রাশ.. তখন বাকি গুলাও বলল– তোরে আজ অনেক কিউট লাগছে.. ইফতী ভাই হঠাৎ কাছে এসে বলল– সুন্দর লাগছে তোমাকে.. তবে থেংক্স চলে যাওয়ার জন্য.. আমি আর ইফ্ফাত রান্না করেছি কিছুখন সাথে অনেক গল্প ও.. আমি মিষ্টি হেসে তার দিকে তাকিয়ে বললাম— বাহবাহ,, গাড়ি দেখি চলতে ও শুরু করেছে..
হঠাৎ হাসনাত ভাই এক মগ পানি আবার ড্রেসে ঢেলে দিল.. আমি অবাক হয়ে তাকাতেই বলল– সরি জিনিস গুলো সরানোর সময় পানি ঐদিকে চলে গেছে..
আমি রাগে কটমটিয়ে তাকালাম আমি জানি সে ইচ্ছে করে করেছে.. শালা বদের হাড্ডি.. এইবলতে বলতে আবার নিচে গিয়ে একটা সুতির ড্রেস পড়ে চুল গুলো ঝুটি করে মাথায় কাপড় দিয়ে ওঠে এলাম রাগে সব কিছু খুলে ফেললাম.. দরকার নাই কিছুর.. এইসব ভাবতে ভাবতে যেই ওপরে এলাম দেখলাম হাসনাত ভাইয়ের মুখে সস্থির হাসি আর চোখে খুশির ঝিলিক..
এই মহাশয়ের আবার কি হলো..এতো খুশি কেন.. আমার ড্রেস ভেজাতে পেরে সে যেন সে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয় করেছে.. এমন মহাখুশি সে.. ফাজিল কুমির একটা..

হঠাৎ হাতে ভাতের প্লেট এনে বলল— এদিকে আয়.. আমি তোকে খাইয়ে দি.. সবার অঅঅ করে চেঁচিয়ে ওঠলো তখন সে চোখ কটমটিয়ে বলল– হাতে কেটেছে ও তাই আমি খাওয়াচ্ছি..
ইস্পা এসে বলল– আমাকে দাও আমি খাওয়ায়..
বাহবাহ, আমার জন্য দেখি আজ দরদ উতলিয়ে গড়িয়ে পড়ছে এই মহারানীর.. তখনই সে বলে ওঠলো— ইস্পা তুমি তোমারটা খাও..
ইস্পা হনহনিয়ে বেরিয়ে গেল.. আর হাসনাত ভাই পরম আদরে আমাকে খাওয়াতে লাগলো…
//

আপুদের বহর ডুকছে নানুর বাড়ির গেইট দিয়ে.. দুলাভাইরা আসে নি.. জাষ্ট আপুরা এসেছে.. ইফ্ফাতের আপু ইমা আর আমার মেঘলা আপু দুইজনেই তাদের স্কুল,ও কলেজের গল্প করতে লাগলো কারন দুজন ই টিচার একজন কলেজের অন্যজন স্কুলের.. সাথে দেশের নানা সমস্যার কথা নিয়ে তাদের আলোচনা..
অন্যদিকে মেঝ আন্টির মেয়ে কাকলি আপু তার ড্রেস চেন্জ করছে আর সেইখানে সানিয়া, মুনিরা আর ইফ্ফাত জুয়েলারি আর সাজ নিয়ে আলোচনা করছে।। কারন ওনি সাজগোছ একটু বেশি করেন আর সাথে তার ইউনিক জুয়েলারি.. আসলে সব নজরকাড়া.. সানিয়া এইজন্যই ওনার ফ্যান.

আমি ভাবলাম আমি কি করব.. কোন দলের কাছে যাব.. আমি তো দুইটার কোনটাই ইন্টারেস্টেট না.. তাই আমি ফোন বের করে বড় আন্টির মেয়ে জেরিন আপুকে কল দিয়ে দিলাম.. এতো মজা দেখে বেচারীর আফসুস দেখবো ভাবতেই হাসি চলে এলো আমার…

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here