ভিনদেশী পর্ব ৪+৫

#ভিনদেশী
#পার্ট ঃ৪
#আদ্রিয়ানা নিলা

–বাবা, আমি আমেরিকায় পড়তে যেতে।

কথা সবার কর্ণগোচর হতেই, সবাই বিস্মিত নয়নে শ্রুতির দিকে তাকিয়ে।যে মেয়ে কীনা বাবা মা ছাড়া থাকতে পারে না, সে কীনা বিদেশে পড়তে যাবে। কথাটা সবার কাছে মজার মনে হচ্ছে। তবুও সবাই অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে। শ্রুতির এখন বেশ অস্বস্তি বোধ করছে। সে নড়েচড়ে বসে সবার দিকে তাকিয়ে বলল,

–এরকম আমার দিকে সবাই তাকিয়ে আছো কেন?

শ্রুতির বাবা কিছুক্ষণ পর গলা খেঁকিয়ে জিজ্ঞেস করে,

–তুমি বিদেশে পড়তে চাও মানে কী? আগে তো কখনো এরকম কথা বলোনি? তুমি নাকি ইন্জিনিয়ার হতে চাও? তাহলে আবার কী?

শ্রুতির মাথা নিচু করে বলল,

–না, বাবা আমি বিজনেসম্যান হতে চাই। তাই আমি বিদেশে পড়তে যে চাই।

–হিম, ভালো কথা। কিন্তু বিদেশে কেন?ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএ আছে। সেখানে পড়ো।

পাশ থেকে শ্রুতির মা স্বগোতক্তি কন্ঠে বললেন,

–তোমার মেয়ের মাথায় কে যেনো ভুত ঢুকিয়েছে?ডাক্তার আছে, ইন্জিনিয়ার আছে, কত বড় বড় সরকারি চাকরি আছে। উনি নাকি বিজনেস করবে। আচ্ছা ভালো কথা, বিজনেস করবি। তো পড়ালেখা করার জন্য কী দেশে কী জায়গা নাই? দেশে কত বড় বড় খ্যাতনামা ভার্সিটি আছে তাতে পড়? দেশে কী এমন নাই যা বিদেশে আছে? আর তুই ভাবলি কী করে আমরা তোকে বিদেশে যেতে দেব?

শ্রুতির বাবা স্ত্রী দিকে তাকিয়ে শান্ত হতে বললেন।অতঃপর শ্রুতির দিকে তাকিয়ে বললেন,

–হঠাৎ বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ কী?

–বাবা, আমি বিজনেস করতে চাই। আর বাংলাদেশে একটা মেয়ের বিজনেস করা অনেক কঠিন। আর প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নেই। যা অন্যান্য দেশে পাওয়া যায়। তাই একেবারে ওখানে লেখাপড়াও করতে চাই।

শ্রুতি মাথা নিচু করেই কথা গুলো বলছে। কারণ মিথ্যার কথা মানুষ কোনো দিন চোখে চেখ রেখে বলতে পারে না। তার আসল লক্ষ্য সাদাফের থেকে দূরে যাওয়া।

সোহা এইসব শুনে ব্যঙ্গ করে বলল,

–যে মেয়ে বাবা -মা ছাড়া একা থেকেই কেদে কেটে ভাসিয়ে দেই। সে নাকি বিদেশে যাবে পড়তে? বিজনেস করতে। হাও ফানি।

শ্রুতি কটমট দৃষ্টিতে সোহার দিকে তাকায়। সোহা ঠোঁট কমড়ে হাসছে। শ্রুতি ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে,

–কোনো কিছুই অসম্ভব না। মানুষ চাইলে সব কিছুই করতে পারে। তাই তোমার এই লেইম জোকস বন্ধ রাখো।

সোহা একটা ভেংচি মারে। শ্রুতির বাবা সবাইকে চুপ করতে বলেন। তিনি শান্ত স্বভাবের মানুষ। তিনি শ্রুতির দিকে তাকিয়ে আবার বললেন,

–ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছো তো? বিদেশে পড়ালেখা করা এতো সহজ না।তার উপর তুমি একজন মেয়ে। বিদেশে গিয়ে পরিবার থেকে দূরে থাকবে কীভাবে? আদৌ কী পারবে তুমি?

–বাবা, আমি সব বুঝে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি পারবো।
আর আমেরিকায় আমার খালামণির বাসা আছেনা? সেখানে কিছুদিন থাকবে। তারপর নাহয় হোস্টেলে যাবো।

শ্রুতির সবার দিকে তাকালো, খালামণির বাসায় থাকবে। তাও এটা সবাই মানতে যেনো নারাজ।
এর মধ্যে শ্রুতির মা চেচিয়ে উঠে বললেন,

–তুই ভাবলি কি করে তুই বলবি আর আমরা তোকে বিদেশে যেতে দেবো। এতোই সোজা ভাবো সবকিছুকে। তুই বাইরে গেলেই টেনশনে মাথা খারাপ হয়ে যায় আর বিদেশ তো দূরে কথা।

দ্রুতি তিক্ত কন্ঠে বলল,

–সবার এতো সমস্যা কথাও আমি বুঝছি না। মেয়ে হয়েছি আমার কী কোনো ইচ্ছার প্রাধান্য নেই। তেমরা যা বলবা তাই করতে হবে। বিদেশে গিয়ে পড়া লেখা করলে কী সমস্যার সেটাই আমি বুঝছি না।আমি তো বলছি আমি পারবো।

শ্রুতির বাবা আশ্বস্ত কন্ঠে বলল,

–অবশ্যই তোমার ইচ্ছা আছে। কিন্তু সবার সব ইচ্ছা, স্বপ্ন তো পূরণ হয় না। কিন্তু একটা জিনিস ভাবো, তোমার দুই বোন। তোমরা বড় হয়েছো, তোমার নিয়ে এখন তোমার মা, আমার কতো চিন্তা। কিছু হয়ে গেলে? ঢাকার বাইরে তোমাকে একা যেতে দিতেই সাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় তুমি গেলে আমরাও তোমার সাথে যাই। কোথাও একা ছাড়ি না। যাতে তোমার কোনো ক্ষতি না হয়। কারণ তুমি এখনও তোমার বোনের মতো এতো ম্যাচিউর হও নি। তাই সেখানে ভিনদেশ অকল্পনীয় একটা কথা।

–বাবা আমি বুঝতে পারছি। তোমরা আমাদের বাবা মা। তাই চিন্তা করা স্বাভাবিক। কিন্তু আমার ইচ্ছারটার দিকেও তো লক্ষ্য রাখতে হবে।

শ্রুতির বাবা স্মিত হেসে বললেন,

–তোমার কী দেশের পাবলিক ভার্সিটিতে পড়তে সমস্যা? কতো হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়ে। তোমার সমস্যা কোথায়?

–বাবা আমি তো কোনো সমস্যার কথা বলি নি। আমার তীব্র ইচ্ছা আমেরিকা গিয়ে পড়াশুনা করার। সেখানে বিশ্বের নামকরা সব ভার্সিটি। তাই আমি তোমাদের কাছ থেকে আশা করবো তোমার আমার ইচ্ছা পূরণে সহায়তা করবা৷

–তাহলে তুমি তেমার সিদ্ধান্তেই অটল।

–হ্যাঁ, বাবা।

শ্রুতির বাবা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,

–আচ্ছা আমরা ভাবে দেখবো।

আবার শ্রুতির মা চেচিয়ে বললেন

–তুৃমিও এখন তাল মিলাচ্ছো?ছোট মেয়ে বলে মাথায় তুলেছো তাই এই অবস্থা। নাচ শিখতে চেয়েছে। শিখিয়েছো? বাস্কেট বল খেলতে চেয়েছো, বাস্কেট বল খেলার স্কুলে ভর্তি করেছো? গান শেখনোও বাদ রাখোনি।
এখন বিদেশে যেতে চাচ্ছে তাও তাল মিলাচ্ছো। এতো লাই দিয়েছো যে সব সীমা পার হয়ে গেছে।এতদিন তুমি যা বলছো তাই শুনেছি। আজকে আমার কথাই চলবে। ওকে আমি ভিনদেশে যেতে দেবো না। দেশে সে যা পড়ার পড়ুক।

শ্রুতির বাবা বিরক্তিকর কন্ঠে বললেন,

–তুমি চুপ করবে?

–হ্যাঁ, হ্যাঁ আমাকেই তো সব সময় চুপ থাকতে বলবে। আমার তো কোনো দাম নেই। আমি তো কিছুই না

বলেই কান্না জুড়ে দিলেন। শ্রুতির এতক্ষণ সবার কথা শুনতে শুনতে বেশ বিরক্ত এখন এই কান্না। এখানে আর থাকা উচিত হবে না। তাই খাবার অর্ধেক রেখেই উঠে গেল।

_____________________________________________

ঝিরিঝিরি বৃষ্টি এক মাতোয়ারা পরিবেশ। কখনো কখনো মেঘের তীব্র ঝংকার সকলকে কাপেয়ি তোলে। আষাঢ়ের ২৫দিন পার হয়ে গেছে। বর্ষাকালে প্রকৃতি যেনো সারাবেলা জীবনানন্দের পঙক্তি মেনে, কেবলই নতুন নতুন দৃশ্যের জন্ম দেয়। সকাল, বিকেল, সন্ধ্যা এক অন্যন্য সৌন্দর্যে সেজে ওঠে বর্ষায় প্রকৃতি। শ্রুতি বারান্ধায় দাড়িয়ে বিকালের বৃষ্টির এই মন মাতানো পরিবেশ টাকে উপভোগ করছে। বৃষ্টির স্নানে গাছের সবুজ পাতায় কদমের মিষ্টি ঘ্রাণে মুখরিত করে তুলেছে, বর্ষার বর্ষণময় দিন গুলো। শ্রুতির বাড়ির বাগানে একটা বিরাট কদমের গাছে আছে। সেখান থেকে মিষ্টি ঘ্রাণ শ্রুতির নাকে বার বার ধরা দিচ্ছি। বর্ষার পানিতে গাছের সবুজ স্নিগ্ধ পাতার মতো, ফুলগুলো মিষ্টি সুবাসের সাথে স্নিগ্ধতাও ছড়ায় চারপাশে। শ্রুতির সবচেয়ে প্রিয় ঋতুটাই হলো বর্ষা। ধরনীর অবিরাম বারিধারায় রোমাঞ্চিত হয় বৃক্ষরাজী।প্রকৃতির এই স্নিগ্ধতা বরাবরই তাকে মুগ্ধ করে।
হঠাৎ তার দরজায় ঠোকা পড়লো। তার বেশ বিরক্ত লাগলো। কী সুন্দর একটা পরিবেশ সে উপভোগ করছিল।গিয়ে দরজাটা খুলতেই সোহাকে দেখতে পেল।
এই সময় সোহাকে দেখে সে বেশে অবাক।
#ভিনদেশী
#পার্ট ঃ৫
#আদ্রিয়ানা নিলা

সোহাকে এই সময় রুমে আসতে দেখে শ্রুতি বেশ অবাক হলো। কিন্তু কিছু বললো না। দরজা খুলে সরে আসলো সে। সোহা বিছানায় বসতে বসতে বলল,

–কীরে কী করছিলি? দরজা আটকিয়ে? বয়ফ্রেন্ডের সাথে বুঝি কথা বলছিলি?

শ্রুতি রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,

–প্লিজ আপু, ফাজলামো করো না। আমি বারান্দায় ছিলাম। কী বলতে চাও বলো?

সোহা শীতল দৃষ্টিতে তাকিয়ে মৃদুস্বরে বলে,

–তুই কী বিদেশেই পড়তে চাস? দেশে থাকনা প্লিজ।

এতক্ষণের মুখের হাসিটা আমার মিলিয়ে যায়। সে সোহার দিকে তাকিয়ে দেখে, একরাশ আকুলতা নিয়ে বলছে দেশে থাকার জন্য। শ্রুতি সবার কষ্টই বুঝতেছে। কিন্তু তার যে কিছুই করার নেই। তাই কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,,

–আপু সরি, তোমার কথাটা রাখতে পারলাম না। আমি সত্যি বিদেশে গিয়ে পড়তে চাই। এটা আমার স্বপ্ন।

সোহা কথাটা শুনে বেশ আহত হলো। একটা বোন তার। কোনো ভাই নেই। কীভাবে থাকবে তাকে ছাড়া?সোহা এইসব আবেগ একপাশে ফেলে রেখে আবার জিজ্ঞেস করল,,

–তুই কী তো সিদ্ধান্তে অটল? আমাদের ছেড়ে থাকতে তোর কষ্ট হবে না।

— আপু তোমাদের ছাড়া থাকতে তো কষ্ট হবেই। কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল। জীবণে কষ্ট না করলে কিছুই পাওয়া যায় না।

সোহা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। তার বোন যে বড়ো জেদি। যা বলেছে তাই করবে। হাজার বললেও এখন লাভ হবে না। সোহা আবার বলল,

–আচ্ছা যদি তুই একা সেখানে থাকতে পারিস তো ভালো। বাবা -মার সাথে আমি কথা বলবো নে।তাদের রাজি করানোর দ্বায়িত্ব আমার।

শ্রুতি বিস্মিত নয়নে সোহার দিকে তাকালো। এতো সহজে রাজী হবে ও ভাবে নি৷ ও গিয়ে সোহাকে জড়িয়ে ধরে বলল,

–আপু থ্যাংক ইউ সো মাচ। আমি জানি তুমি বাবা মাকে রাজি করাতে পারবা। তুমি অনেক ভালো।

শ্রুতিকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে সোহা নরম কন্ঠে বলল,

–শ্রুতি তুই বন্ড স্বার্থপর হয়ে গেছিস রে।

আর এক মুহূর্ত দেরি না করে সোহা সেখান থেকে দ্রুত প্রস্থান করল। শ্রুতি হতবিহ্বল দৃষ্টিতে তাকিলো। চোখে কোণে বিন্দু বিন্দু অশ্রুর কণা জমেছে। হয়তো কিছুক্ষণ পড়েই গড়িয়ে পড়বে। শ্রুতি নিজের চোখে জলটা মুছতে মুছতে বলল,,

–আপু দুনিয়াটাই যে আমাদের স্বার্থপর হতে শেখায়। ক্ষমা করো আমাকে তোমরা।

_____________________________________________

পরেরদিন সকালে,
শ্রুতি নিচে ব্রেকফাস্ট করতে নামল। সবাই আগে থেকেই বসা ছিল। ওর জন্য অপেক্ষা করছিল। ও সোহার দিকে হাত নাড়িয়ে ইশারা করে বলল,,

–কী বাবা -মাকে বলেছিস?

সোহা মাথা নাড়িয়ে বলল,

–হিম।

তারপর সবাই খাওয়া শুরু করল। শ্রুতি হাসফাস করছে। বাবা যে কোনো কথা বলছে না? তাহলে কী মেনে নেয়নি? আমার কী আর যাওয়া হবে না?যাওয়া না হলে এখানে ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারো সাথে দেখবো কীভাবে?

–শ্রুতি খাচ্ছো না কেন?

বাবার ডাকে হুস ফিরল। শ্রুতি বাবাকে বলল,

–হ্যাঁ, বাবা খাচ্ছি তো।

তারপর শ্রুতি কতক্ষণ চুপ থেকে বলল,,

–বাবা তোমরা কী ভেবে দেখেছো?

শ্রুতির বাবা একবার শ্রুতির দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বললেন,,

–হিম, ভেবেছি। আমরা যদি তোমাকে না বলি তাও তুমি যাবে। তাই হ্যাঁ বলছি। আমরাও চাই তুমি ভালো কিছু করো জীবণে। আমাদের মুখটাও উজ্জ্বল করো। তাই রাজি হচ্ছি। বাট তুমি হোস্টেলে থাকতে পারবা না। তোমার খালামণির বাসায় থেকে পড়াশুনা করতে হবে।ভালো করে পড়াশুনা করো। আমেরিকার ভার্সিটিগুলোতে বাংলাদেশের খুব কম জনই চান্স পায়। তাই ভালো করে পড়ো।

শ্রুতি তার বাবার কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেল। এতো সহজে বাবা -মা রাজী হবে সে ভাবতে পারি নি?তার মানে সবই সোহা করেছে। সে সোহার প্রতি কৃতজ্ঞ।

সকলের অনুমতি পাওয়ার পরই শ্রুতি সোহাকে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে বলে। তাছাড়া সে টোফেল, আর স্যাট পরীক্ষা দেতে পারবে না। এবং প্রয়োজনীয় বই পত্র কিনতে বলে নীলক্ষেত থেকে । আর যদি সেখানে স্যাট এর বই না পায় তো বারিধারার আমেরিকান সেন্টারের লাইব্রেরি থেকে। শ্রুতি ইংরেজিতে আগে থেকেই ভালো হওয়ার কারণে টোফেল নিয়ে তার অতোটা চিন্তা নেই। বাসায় বসেই প্রস্তুতি নিলেই হবে। আর আমেরিকায় যেহেতু পড়তে চাচ্ছে, তাই কোকারিকুলার কার্যক্রমেও ভালো হতে হবে। শ্রুতির সে সব কিছু ঠিক আছে। সে যখন এইচএসসিতে সেকেন্ড ইয়ার এ পড়ে তখন সে ইন্টারনেশনাল বস্কেটবল প্লেয়ার এর খতাব পায়। আর গানেও তার অনেক বড় বড় এওয়ার্ড আছে। তার চিন্তা হচ্ছে স্যাট পরীক্ষা নিয়ে। তবে শ্রুতির আব্বু কোচিং করার জন্য বললে শ্রুতি মানা করে দেয়। বইপত্র সব কিছু ঠিকঠাক করার পর সে আরও বেশি সিরিয়াস হয়ে যায়। নিজেকে পড়ালেখার মধ্যেই গুটিয়ে রাখে। কোনো কাজ ছাড়া রুম থেকেও বের হয় না।

_____________________________________________

সকালের মিষ্টি সূর্যের আলোতে শ্রুতির ঘুম ভাঙ্গলো। চোখ, মুখ কুঁচকে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৮ঃ৩০বাজে। কয়েকদিন ধরে একটু বেশি বেশি ঘুমাচ্ছে। আর কয়েকদিন পড়েই সে পাড়ি জমাবে আমেরিকায়। আমেরিকার একটা বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়। সেটার বিজনেস স্কুল অলিন বিজনেস স্কুল। বিশ্বের সেরা ব্যবসা প্রশাসন ও পরিচালনা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ২য় অবস্হানে রয়েছে। এটি রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি এর একটা বিশ্ববিদ্যালয়। সিয়াটল শহরে অবস্হিত।টোফেল আর সেটে ভালো স্কোর করার কারণে সেখানে ফুল স্কলারশিপে সে পড়ার চান্স পেয়েছে। যা তার খালার বাসা থেকে কাছে। তার খালার একটা মেয়ে আছে, শ্রুতির চেয়ে ২বছরের সিনিয়র। সেও নাকি সেখানে পড়ে। শ্রুতি যখন এসএসসি দিয়েছিল তখন তারা বাংলাদেশে এসেছিল। শ্রুতি তখন দেখেছিল ওর খালাতো বোনকে। তার নাম লুসি। সে যখন তার বাসায় আরছিল তার সাথে শ্রুতির কয়েকদিনের মধ্যেই ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।তখন থেকে মাঝে মাঝে কথা হতো।কিন্তু যখন থেকে শুনেছে যে, শ্রুতি আমেরিকায় এসে তাদের বাসায় থেকে পড়াশুনা করবে ;সেদিন থেকে দিনে একবার হলেও কল দেয়। শ্রুতির ভাবনার মাঝেই ফোনটা বেঝে ওঠে। বালিসের নিচ থেকে ফোনটা হাতপ নিয়ে দেখে লুসি ফোন দিয়েছে। যার কথা ভাবছিলাম সেই ফোন দিল। মেয়েটার হায়াত আছে,, মনে মনে কথাটা বলে মৃদু হাসলো শ্রুতি। তারপর কলটা রিসিভ করে বলল,,

–Good morning, Lucy. How is everything?

–I am fine. But Sruty,, It is not morning. It is evening in Washington.

–ও সরি লুসি, মনে ছিল না।

–ইট’স ওকে। তুমি কবে আসবা। আমার শুধু তোমার কথা মনে পড়ছে।

শ্রুতি হাসলো,

–এই তো আর ৩দিন পর ই আসবো।

–আচ্ছা, রাখি তাহলে।

–হিম।

শ্রুতি ফোনটা রেখে বাথরুমে গেল ফ্রেস হতে। ফ্রেস হয়ে নিচে নামল। নিচে নেমে শোফায় যাদের বসে থাকতে দেখলো, তাদেরকে দেখে সে প্রচুর অবাক হলো।

,,(চলব)

[বিঃদ্রঃযদি কোনো ভুল ত্রুটি থাকে তো ক্ষমা করবেন ]
,,(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here