মিশে_আছি_তোমাতে পর্ব ১৬+১৭

#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Brisrty
#Part_16
.
.
.

প্রায় পনেরো দিন পর আবির হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায় ……এর মাঝে ইকবাল ইসলাম আর আবিরের মাঝের সব ভুলবুঝাবুঝি সব ঠিক হয়ে যায়…… ডাক্তার বলেছিল আর কয়েকদিন আবিরকে হাসপাতালে থাকার জন্য কিন্তু আবির হাসপাতালে থাকতে আর চায় না তাই আবিরকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিয়ে দেওয়া হয়…… আবির তিশা গাড়ির পিছনে বসে আছে গাড়ি ড্রাইভ করছে ড্রাইভার আর ড্রাইভার পাশেই নিরব বসে আছে……

তিশা : আপনার কোনো কষ্ট হচ্ছে না তো….

আবির ওন্য দিকে ফিরে মুচকি হাসি দেয়….

তিশা : কি হলো বলুন আপনার কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো???

আবির : না কোনো সমস্যা হচ্ছে না….

তিশা : আচ্ছা…. শুনুন বাড়িতে যাওয়ার পর আমি যা বলবো সেটাই কিন্তু আপনাকে শুনতে হবে….

আবির : কেন???

তিশা : কেন মানে??? আমি আপনার স্ত্রী তাই আমার কথা শুনতে হবে…..

আবির : ওওওওও( এতো পরির্বতন যদি আগে জানতাম যে আমি গুলি খেলে ও আমার জন্য এতটা চিন্তা করবে তাহলে গুলিটা আরও আগে খেতাম কিন্তু এখন যে তোমার এই কেয়ার আমি ইকনোর করবো সুইটর্হাট আমাকে খুব জ্বালিয়েছো তুমি তাই না এবার তোমার জ্বালার পালা)

আবির তিশা সবাই মিলে বাড়িতে আসে….. আবির গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে তিশা আবিরকে ধরতে যাবে সাথে সাথে আবির বলে ওঠে….

আবির : আমাকে ধরার দরকার নেই তোমার আমি এখন ঠিক আছি…..

তিশা তো আবিরের কথা শুনে পুরাই আবাক…. নিরব এসে আবিরকে ধরে…..

তিশা : ( আমি ধরলে কি ওনার গায়ে ফুসকা পড়ে যেতো নাকি….. নিরবকে তো ধরতে দিলো তাহলে আমাকে দিলো না কেন???যাই হোক এর প্রতিশোধ তো আমি পরে নিবো)

নিরব আবিরকে ঘরে নিয়ে যায়…… তিশা গাল ফুলিয়ে ঘরে ডুকে আবির তিশার দিকে তাকায়….

আবির : ( বাবারে মহারাণী তো দেখা যায় ভীষন রেগে আছে…)

নিরব : ভাইয়া তুমি ঠিক আছো তো…..

আবির : হে আমি ঠিক আছি…. এবার তরা যা আমি একটু বিশ্রাম করবো….

নিরব : ঠিক আছে আমি তাহলে এখন আসি আর সমস্যা হলে তো ভাবি আছেই….

তিশা : হে নিরব তুমি যাও আমি এখানেই আছি…..

নিরব চলে যায়….. আবির তিশার দিকে তাকিয়ে বলে…

আবির : তোমাকে কি এখন আলাদা করে বলতে হবে যাওয়ার জন্য ….

তিশা : মানে…..

আবির : মানে হলো আমি একটু একা বিশ্রাম করতে চাই তাই তুমিও এই ঘর থেকে আসতে পারো…

তিশা : মানে কি???

আবির : মানে এটা এখন তুমি যাও এই ঘর থেকে….

তিশা : যদি না যাই তাহলে…… ( আবিরের কাছে এসে)

আবির : তাহলে আমাকেই কিছু একটা করতে হবে…..

আবির বিছানা ছেড়ে উঠতে যাবে তিশা এটা দেখে চিৎকার করে বলে…..

তিশা : আরে আরে আপনি নামছেন কেন???

আবির : না হলে তোমাকে এই‌ ঘর থেকে বের করবো কি করে??

তিশা : ঠিক আছে ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি আপনাকে নামতে হবে তবে হে আমি কিছুক্ষন পরে আসবো খাবার খেয়ে ঔষধ খেতে হবে কিন্তু….

আবির : ঠিক‌ আছে তুমি এখন যাও……

তিশা আর কিছু না বলে ঘরে থেকে চলে যায়…..

তিশা : ঘর থেকে তাড়িয়ে দিলো আমাকে আমি থাকলে কি এমন ক্ষতি হতো যে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিতে হলো…

আবির উঠে দরজা লাগিয়ে দিলো……

আবির : সরি আমার আর কোনো উপায় ছিলো না আমি জানি তোমারা এখন আমাকে কেউ এই ঘর থেকে বের হতে দিবে না তাই এমনটা করতে হলো….

আবির তাড়াতাড়ি করে সোহেলকে ফোন করে…

আবির : সোহেল সব কিছু রেডি আছে তো…..

সোহেল : জি স্যার…..

আবির : সি সি ক্যামেরা বন্ধ করেছো আর গার্ডদের সব কিছু বুঝিয়ে দিয়েছো তো যাতে তিশা আর নিরব কিছু জানতে না পারে….

সোহেল : জি স্যার আমি সবকিছু রেডি করে রেখেছি……

আবির : ঠিক আছে তাহলে বেলকনিতে মইটা আনো….. আমি এখনেই যাবো ওর সাথে দেখে করতে…..

সোহেল : জি স্যার আমি আনছি…..

আমি সাদা শার্ট কালো প্যান্ট কালো কোর্ট হাতে ঘড়ি পড়ে বেলকনি গিয়ে মই দিয়ে নিচে নামে….

আবির : সোহেল চল….

সোহেল : জি স্যার…..

আবির : ওই দিক দিয়ে নয় পিছনের গেইট দিয়ে বের হবো তুমি সামনের গেইট দিয়ে বের হয়ে পিছনে গাড়ি নিয়ে আসো….

সোহেল : ওকে স্যার……

আবির পিছনের গেইট দিয়ে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে…..

সোহেল : স্যার ওরা যদি আপনাকে খুজে না পায় তাহলে তো ঝামেলা হয়ে যাবে….আর নিরব স্যার যদি বুঝে ফেলে আপনি কোথায় গেছেন তাহলে আর আপনার ক্ষতটা তো ঠিক মতো শুকাই নি

আবির : কিছু হবে না…. আর আমি একদম ঠিক আছি আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না……

সোহেল : ওকে স্যার……

আবির : ওর কি অবস্থা???

সোহেল : স্যার ওকে আমরা আটকেই রেখেছি অনেক দিন……

আবির : ওকে যে তোমরা এত দিন আটকে রেখেছো কেউ খুজ করছে না ওর……

সোহেল : স্যার সবাই জানে ও দেশের বাইরে গেছে তাই চিন্তা করার কোনো কারন নেই……

আবির : ঠিক আছে তাড়াতাড়ি চলো……
#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_17
.
.
.
.

আবির বসে আছে রবিনের মুখোমুখি….. চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে রবিনের দিকে আবিরের মুখের চোয়াল শক্ত করে আছে আর হাতে পিস্তল….

রবিন : তুই তাহলে বেচেই গেলি তাই তো…..

আবির : তুই কি ভেবেছিলি আমি মরে যাবো…..

রবিন : তর জানটা সত্যি কই মাছের জান দু দুটো গুলি খাওয়ার পরেও তুই বেচে গেলি……

আবির একটা হাসি দিয়ে বলে….

আবির : ঠিকেই বলেছিস আমার জান কই মাছের জান…… কিন্তু তর জানটা কি কই মাছের জান নাকি চিড়িং মাছের জান তুই যেটা বলবি আমি সেটাই মেনে নিবো…..

রবিন : হাতের বাধন তো খুলে দেখ আমার কই মাছের জান নাকি চিড়িং মাছের জান…..

আবির : তুই কি আমাকে বোকা ভাবছিস নাকি যে তর মতো একটা জানোয়ারের হাতের বাধন খুলে দিবো….. তুই কি করে আমার শশুড়ের গায়ে গুলি করতে চেয়েছিলি হুম( রবিনের গলাতে পিস্তলটা ধরে) ভ্যাগিস আমি ওই রেস্টুরেন্টে ছিলাম তাই গুলিটা আমার গায়ে লাগে কিন্তু আমি জানি যখন তুই‌জানতে পারিস গুলি আমার গায়ে লেগেছে তখন তুই‌ আবার আর্ডার করিস আমাকে আবার গুলি করার জন্য যাতে আমি মরে যাই…..

রবিন : হে আমি সেটাই চেয়েছিলাম যাতে তুই চিরতরে এই দুনিয়া থেকে চলে যাস কিন্তু তুই বেচে গেলি…… আমি জানি তুই হয়তো এখন আমাকে গুলি করবি…..

আবির : তর মতো জানোয়ারকে মেরে আমি আমার হাত নোংরা করবো না তাকে আমি বাচিয়ে রাখবো তবে তুই যাতে আর কিছু না করতে পারিস তার জন্য আমার কাছে অন্য ব্যবস্থা…. অবশ্য আমার গায়ে গুলিটা লেগে ভালোই হয়েছে আমার শশুর আমাকে মেনে নিয়েছে…..

রবিন : তিশাও কি তকে মেনে নিয়েছে ‌……

আবির : সেটা তকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না…. তকে বরং অন্য কিছু শুনাই

আবির ইশারা করে সব গার্ডদের ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে……

সোহেল : কিন্তু স্যার ও যদি কিছু করে বসে……

আবির : কিছু করার সুযোগ নেই ওর তাই তোমরা সবাই বাইরে গিয়ে গার্ড দাওও….

সোহেল : ওকে……

রবিন : সবাইকে ঘর থেকে বের করে দিলি কেন???

আবির : তর আর আমার মাঝে একটা গোপন কথা বলার আছে যেটা অন্য কেউ‌ শুনতে পারবে না…..

রবিন : গোপন কথা কিসের গোপন কথা??? তর আমার মাঝে কোনো গোপন কথা থাকতে পারে না….

আবির একটা তাচ্ছিল্য হাসি দেয়…..

আবির : আছে রে আছে সেই গোপন কথাটা শুধু আমিই জানি…. আচ্ছা তর মনে আছে এই এলাকার নাম করা সচিব ঈফরান খানের কথা ওর ছোট কিভাবে মারা গেছেন তর কথা …..

রবিন : হঠাৎ এই কথা বললি কেন??? ( গলা ধরে)

আবির : আরে ঈফরান খানের কথা শুনে তর গলা আটকে আসছে না জানি ওইটা দেখার পর তর কি অবস্থা হবে…..

রবিন : কি বলতে চাস তুই??? খুলে বল….

আবির : এসি চালিয়ে দিবো তুই দেখা যায় খুব ঘামচ্ছিস….

রবিন : তুই যা বলতে চাস সেটা বল…..

আবির : ঠিক আছে তাহলে তুই এই ভিডিওটা দেখ……

আবির একটা ভিডিও প্লে করে রবিনের সামনে ধরে রবিন ভিডিওটা দেখে ওর হালুয়া টাইট হয়ে যায় মাথার উপর মনে হচ্ছে যেন পুরা আকাশে ভেঙ্গে পড়েছে সারা শরীর ঘেমে যাচ্ছে ভয়ে রবিন ভাবতেই পারছে না আবিরের কাছে এই ধরনের ভিডিও কি করে আসতে পারে …..

আবির : কি??? এখন যদি এটা আমি ভাইরাল করে দেই তাহলে তর কি অবস্থা হবে বুঝতে পারছিস…..

রবিন : তুই‌এই ভিডিও কোথায় পেয়েছিস বল আমাকে????

আবির : এক বছর ধরে এই একটা কেস চলছে কিন্তু কেউ জানে না যে সচিব ঈফরান খানের ছোট মেয়েকে কে এভাবে মেরেছে?? কিন্তু সেটা আমি জানি কে করেছে…… আসলে তুই মার্চের ১ম দিকে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে গিয়েছিলি আর তখনেই তুই ঈফরান খানের ছোট মেয়েকে ধরে নিয়ে যাস কিন্তু গিয়েছিলি কোথায় জানিস আমার পুরাতন কারখানাতে যেখানে একটা সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিলো……. সেখানে গিয়ে তুই ফুলের মতো মেয়েটাকে নির্যাতন করিস আর যখন জ্ঞান ফিরে তখন কিছু বুঝে উঠতে পারিস নি তাই মেয়েটাকে মেরে জঙ্গলে ফেলেদিয়েছিস…..

রবিন : প্লিজ আবির তুই এমন কিছু করিস না তাহলে আমি শেষ…. আমি তর সব কথা শুনে চলবো কিন্তু তুই‌ প্লিজ এই ভিডিওটা কাউকে দেখাস না…..

আবির : ঠিক আছে দেখাবো না তার বদলে আমি পাবো…..

রবিন : যা চাস আমি তাই দিবো আমার সম্পত্তি আমি তর নামে লিখে…..

আবির : তর সম্পত্তির প্রতি আমার কোনো লোভ নেই আল্লাহর রহমতে তর থেকেও আমার অনেক আছে তবে এটা আমি তর কাছে চাই তিশার আশে পাশে তুই যাবি না যদি যাস তাহলে আমি

রবিন : না না আমি এমন কিছু করবো না কথা দিলাম তকে……

আবির : আমি তকে আজকে ছেড়ে দিলাম ছাড়া পাওয়ার পর কেউ যেন জানতে না পারে তুই এত দিন কোথায় ছিলি??? আর একজন ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করবি……

আবির ঘর থেকে বের হয়ে যায়……. রবিনে রাগে ফুসছে শুধু

রবিন : (কাজটা তুই ঠিক করলি না আবির রহমান এক দম ঠিক করলি না তকে আমি দেখে নিবো শুধু একবার ওই ভিডিও টা আমি হাতে পাই তারপর তর বারোটা আমি বাজাবো)

আবির : ওকে ছেড়ে দাও…..

সোহেল : কিন্তু স্যার…..

আবির : আমি যখন বলছি তার মানে ছেড়ে দিবে ওকে…..

সোহেল : ওকে তোমরা গিয়ে ছেড়ে দাও ( অন্য গার্ডদের বলে)

আবির : চলো এখন……..

অন্য দিকে তিশা বসে ভাবছে কি করে আবিরের কাছে যাওয়া যায়……

তিশা : শালা থুক্কু শালা হবে বজ্জাতটা আমাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে তাই তো ঠিক আছে এমন কিছু একটা করবো যেটা দেখে ওর চোখ কপালর উঠে যাবে…… কিন্তু কি করবো আমি????? হুম আইডিয়া পেয়েছি কিন্তু আমি তো এটা করতেই পারবো না একা একা নিসাকে বরং ফোন করে আসতে বলি…….

তিশা নিসাকে ফোন করে আসতে বলে….. নিসাও কিছুক্ষন পরে চলে আসে

নিসা : আপু এত তাড়াতাড়ি আসতে বললে কেন???

তিশা : তকে আমায় একটা হেল্প করতে হবে???

নিসা : কিসের হেল্প???

তিশা : আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিতে হবে…..

নিসা : কিহ???? তুমি শাড়ি পড়বে হঠাৎ কার জন্য ভাইয়ার জন্য তাই না বুঝতে পেরেছি সামথিং সামথিং……

তিশা : এই তুই চুপ করবি…… যেটার জন্য তকে আনা হয়েছে সেটার দিকে মন দে…….

নিসা : ঠিক আছে……

এই দিকে আবির আস্তে আস্তে করে মই ভেয়ে ঘরের ভিতরে ডুকে ফ্রেস হওয়ার জন্য ওয়াসরুমে যায়….. তিশা শাড়ী পড়ে আস্তে আস্তে করে আবিরের ঘরের দিকে যায়…..

তিশা : উফফ মনে হচ্ছে যেন শাড়িটা এখনেই খুলে যাবে ওই নিসাটা একটু ভালো করে পড়াতে পড়লো না ধুর ওর কি দোষ ও শাড়ি ঠিক করেই পড়িয়েছে আমি সামলাতে পড়ছি না শাড়ি তার জন্য এই‌ অবস্থা……

তিশা আস্তে আস্তে দরজাটা ধাক্কা দিয়ে ঘরে ভিতরে উকি দিয়ে দেখে আবির‌ নেই…… তিশা ঘরের ভিতরে ডুকে

তিশা : গেলো‌ কই বজ্জাতটা?????

আবির ফ্রেস হয়ে বের হয়ে তিশাকে দেখে বড় ধরনের একটা ক্রাস খায়……

নীল কাতান শাড়িতে তিশাকে খুব সুন্দর লাগছে চুল গুলো বাতাসে উড়ছে….. হাত ভরতি নীল চুড়ি চোখে কালো কাজল ঠোটে গাঢ় লাল লিপস্টিক মুখে হালকা মেকাপ….. আবির তো তিশার কাছ থেকে চোখ ফিরাতেই পারছে না…,

#চলবে
#চলবে

বসায় অনেক প্রবলেম হয়েছে যার জন্য গল্প লিখতেই পারছি না তাই ছোট হয়ে গেছে প্লিজ কেউ রাগ করবেন না ,,,, আজকে গল্প দেওয়ার কথা দিয়েছি আমি তাই গল্প দিতে হলো,,,, না হলে গল্প লেখার পরিস্থিত পাচ্ছি না বাসায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here