মেঘবিলাসী পর্ব ১৪+১৫+১৬

#মেঘবিলাসী
#israt_jahan_arina
#part_14

এতগুলো কথা বলে তিন্নি আবার একটা দীর্ঘনিশ্বাস নিলো। তার গলা শুকিয়ে গেছে। পানি খেতে পারলে মনে হয় ভালো লাগতো। স্তব্ধতা কাটিয়ে জিসান তিন্নির দিকে একটা পানির গ্লাস বাড়িয়ে দিলো। আর বললো

“তিন্নি প্লিজ তুমি আগে শান্ত হও। নাও পানি টুকু খেয়ে নাও।”

তিন্নি যেন এবার আরো রেগে ফেটে পড়ছে। এমন কাজ করে কিভাবে একটা মানুষ এতো শান্ত থাকতে পারে? অথচ এই লোকটাই তার স্বামী! ছি!
তিন্নি গ্লাসটা এক ধাক্কায় ফেলে দিলো। আর বলতে শুরু করলো “আপনি ভাবলেন কিভাবে আপনার মত মানুষের হাতে আমি পানি খাবো? এই হাত দিয়ে না জানি আপনি কত মানুষের রক্ত ঝরিয়েছেন।”

জিসানের মনে হচ্ছে কেউ তার ভেতরটাকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলছে। তার হৃদয় হরণকারী নারীসত্তা টি তার দিকে কেমন ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আচ্ছা তিন্নি তাকে এতোটা ভুল বুঝে কেন? সে তিন্নির এই কঠিন দৃষ্টি সহ্য করতে পারছে না। এই মানুষটার চোখে তো সে শুধু ভালোবাসা দেখতে চেয়েছিলো।

জিসান নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলোনা। হঠাৎ সে তিন্নিকে জড়িয়ে ধরলো।ইসস!! ভালোবাসার মানুষকে এভাবে নিজের মধ্যে আবদ্ধ করে কেমন যেন শান্তি অনুভব হয়।
জিসান তিন্নিকে বলতে শুরু করলো
“তিন্নি তুমি আমাকে ভুল বুঝছো। একটাবার পরিস্থিতিটাকে বোঝার চেষ্টা করো।”

হঠাৎ জিসানের এভাবে জড়িয়ে ধরায় তিন্নি হতভম্ব হয়ে গেলো। তিন্নি জিসানকে এক ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলো। আর বললো
“আপনি প্লিজ আমার কাছে আসবেন না। আমি আর কিছু শুনতে চাই না। আমি বাসায় যাব।”

কথাটা বলেই সে বিছানা থেকে উঠে দাড়ালো।
পরিস্থিতিটাকে কিভাবে সামাল দেবে জিসান ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। তিনি এই মুহূর্তে প্রচন্ড রেগে আছে। সে এই মুহূর্তে কিছুই বুঝবে না। তাই সে তিন্নিকে বললো “তুমি এমনিতেই মাথায় ব্যথা পেয়েছ। প্লিজ এত উত্তেজিত হাওয়া তোমার জন্য ঠিক হবে না। আমি তোমাকে বাসায় পৌছে দেবো।”
তিন্নি চিৎকার করে বললো
“আপনাকে আমি এই মুহূর্তে একদম সহ্য করতে পারছিনা। আমি একাই যেতে পারবো।”
কথাটা বলে তিন্নি আর এক মুহূর্ত দেরি করলো না। সে জিসানের ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে আসলো।

তিন্নির যাওয়ার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জিসান। মানুষটা তাকে এভাবে ভুল বুঝে চলে গেলো। জিসান ধপ করে খাটে বসে পড়লো। সবকিছু কেমন এলোমেলো মনে হচ্ছে তার কাছে। তিন্নিকে কিভাবে সেই পরিস্থিতি এক্সপ্লেইন করবে সে বুঝতে পারছে না।

দুই হাত দিয়ে মাথার চুল গুলো কে টেনে ধরলো সে। তার সাথে দু ফোটা চোখের পানি গড়িয়ে পরলো।

অবণী রহমান ড্রইংরুমে পায়চারি করছে। রাত দশটা বেজে গেল অথচ এখনও তিন্নি বাসায় পৌঁছলো না। পাশের একটা সোফায় বসে আছেন আনিসুর রহমান। এই মুহূর্তে তারও কিছুটা চিন্তা হচ্ছে। বারবার কল করে যাচ্ছে তিন্নিকে কিন্তু সে কল রিসিভ করছে না।

হঠাৎ বাসার ডোর বেলটা বেজে উঠলো। অবনী রহমান দ্রুত দরজা খুলে দিলেন। তিন্নির দিকে তাকিয়ে অনেকটা আঁতকে উঠলেন। তিনি অস্থির হয়ে বলে উঠলেন “তোর মাথায় কি হয়েছে, ব্যান্ডেজ কেন?

তিন্নির মায়ের কথা শুনে আনিসুর রহমান এগিয়ে আসলেন। তিন্নি তার বাবার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো। তিন্নি বাবা আর কোন কথা না বলে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিলেন। আনিসুর রহমান তার স্ত্রীকে শান্ত হতে বলেন। আর তিন্নিকে আগে ফ্রেশ হতে বললেন।

শাওয়ারের নিচে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে তিন্নি। কপালের ব্যান্ডেজ টা ভিজে হালকা রক্ত পড়ছে। তিন্নি কিছুতেই সে দৃশ্যটাকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছে না।জিসানকে খুব শান্ত বলেই জানত সে। কিন্তু এই মানুষটা এত হিংস্র হতে পারে সেটা সে জানতো না।
তিন্নি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো তার ফোনটা অনবরত বেজে চলছে। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো জিসান কল করছে। তিন্নি কলটা কেটে ফোনটা বন্ধ করে ফেললো। এই মুহূর্তে সে জিসানের সাথে কথা বলতে চাচ্ছে না। তার প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে তার এখন ঘুমের প্রয়োজন।

জীবনে সুখের মুহূর্তগুলো এতো ক্ষণস্থায়ী হয় কেন?
অনেকগুলো বছর পর একটু সুখের অনুভূতিগুলো পেয়েছিলো জিসান। হঠাৎই মনে হচ্ছে ঝড়ো হাওয়ায় সব লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে। নিজে অর্ধাঙ্গিনীর চোখে যে ঘৃণা দেখেছে সে তা সহ্য করার ক্ষমতা তার নেই। তিন্নি তো যথেষ্ট ম্যাচিওর একটা মেয়ে। তাহলে কেন সে বিষয়টা বুঝতে পারছে না।

বুক ফেটে কান্না আসছে তার। মায়ের মৃত্যুর পর সে নিজেকে অনেক স্ট্রং করে নিয়েছিলো। কারন সে বুঝে গিয়েছিল এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হবে কঠোর হতে হবে। তার প্রফেশনে ও সে একজন স্ট্রিক অফিসার। তবে তিন্নির সামনে সে কখনোই তার কঠোরতা ধরে রাখতে পারেনি। এই জায়গাটায় এসে সে কোমল হৃদয়ের মানুষ হয়ে যায়। তিন্নির ব্যক্তিত্বের সামনে সে কখনো কঠোরতা দেখাতে পারেনি।

অনেকেই বলে সংসারে একজন গরম হলে অন্যজনকে হতে হয় নরম। তিন্নির ব্যক্তিত্বের সাথে পরিচিত হয়ে সে বুঝে গিয়েছিল তাকে নরম হওয়ার জায়গাটা নিতে হবে।
তার মেঘলা আকাশে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে এসেছিল তিন্নি। কেমন সুখ সুখ অনুভুতি হতো তার। কিন্তু এখন সবকিছু এলোমেলো লাগছে।

দুটো দিন কেটে গেলো। এরমধ্যে তিন্নিকে আর কেউ কোনো প্রশ্ন করে নি। আনিসুর রহমান ও আর কিছু ঘাটায় নি। কারণ তিনি জানেন কিছু বলার হলে তিন্নি নিজেই তার কাছে বলতো। যেহেতু তিন্নি নিজে থেকে কিছু বলেনি তার মানে সে কাউকে সেটা বলতে চায় না। আর আনিসুর রহমান ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তিনি বরাবরই তার সন্তানদের স্বাধীনতা দিয়ে এসেছেন।

বিকেলের দিকে তিনি সোফায় বসে টিভি দেখছিলো। এমন সময় বাসার ডোর বেল বেজে উঠলো। বিরক্ত নিয়ে সে দরজা খুলতে গেলো। কিন্তু সামনের মানুষটাকে দেখে সে বেশ অবাক হলো।

তিন্নির রুমটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলো সূচনা। তিন্নি যে বেশ গোছানো মেয়ে তা রুম দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সূচনা মুচকি হেসে তিন্নিকে তার পাশে বসলো। সূচনা বলতে লাগলো
“আমাকে এখানে দেখে বেশ অবাক হয়েছো তাই না?

তিনি মুচকি হেসে বললো

“না তেমন কিছু না। বরং আপনাকে দেখে আমার খুব ভাল লাগছে।”

-“জানো তিন্নি একজন এসিপির ওয়াইফ হওয়া অনেক টাফ। কারণ তারা টুয়েন্টি ফোর আওয়ারস দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকে। সাধারন মানুষগুলো যেনো আরাম করে রাতে ঘুমাতে পারে, রাস্তায় যাতে মানুষজন স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারে, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এরা ব্যস্ত থাকে। জানো এমন অনেক রাত যায় বাসায় আসছি আসছি বলেও আসতে পারে না। কারন সবার আগেই তাদের ডিউটি বড়। তুমি ঠিকই বলো ওদের হাতে অনেকেরই রক্ত লেগে আছে। কিন্তু কাদের রক্ত লেগে আছে জানো? যারা এই সমাজকে কলুষিত করে। যারা অন্যায় ভাবে মানুষের রক্ত ঝরায়। মানুষরূপী অমানুষ গুলো কে দমন না করলে সমাজটা বিষাক্ত হয়ে যাবে। এই অমানুষগুলোর রক্তই যদি জিসানের মত ছেলেদের হাতে লেগে যায় তাহলে অন্যায় কোথায়?

আমি অনেকবারই রিয়াজকে দেখেছি বিভিন্ন আঘাত নিয়ে রক্তাক্ত হয়ে বাসায় ফিরতো। দু-দুবার তার গায়ে গুলি লেগেছিলো। মৃত্যুর পথ থেকে ফিরে এসেছে সে। প্রথম প্রথম আমিও অনেক ভয় পেতাম। কিন্তু আস্তে আস্তে নিজেকে শক্ত করে নিয়েছি। একজন এসিপির ওয়াইফ হয়ে যদি নিজেকে সামলাতে না পারি তাহলে তো তার ওয়াইফ হওয়ার যোগ্যতাই রাখি না।

ঐদিন জিসান যাঁকে গুলি করেছিলো, সে একজন মার্ডারার। আবার ড্রাগ সাপ্লাইয়ার। ওই লোকটার জন্য কত ছেলে মেয়ে ড্রাগ এর নেশায় তলিয়ে গেছে জানো?
ঐদিন অবশ্য তারা তাকে মারতে চাই নি। বরং এই লোকটাই আগে জিসান দের উপর গুলি করেছে। সেই জায়গায় যে রক্তাক্ত দেহ গুলো দেখেছ, তার মধ্যে একটা ছেলে ছিল জিসানদের টিমের। ওদের প্রফেশনে এমন সিচুয়েশন অনেকবারই আসে।
তোমার তো তোমার স্বামী ওপর প্রাউড হওয়া উচিত। সেতো সমাজের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছে। কয়জন পারে এমন করতে।

ছেলেটাকে প্রচন্ড কষ্ট দিয়ে ফেলেছ তুমি। জানো কতগুলি বছর পর ছেলেটাকে আমি এতটা হ্যাপি থাকতে দেখেছি। সে তোমার প্রতি প্রচণ্ড দুর্বল।আর এটা তুমিও খুব ভালো করে জানো। তুমি যদি তাকে সাপোর্ট না করতে পারো এটা তোমার সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হবে।

একজন এসিপির ওয়াইফ তুমি। তুমি কি অনেক কঠিন হতে হবে। এত বিপদের মধ্যে কাজ করে ওরা। দিন শেষে আপন মানুষগুলো কাছ থেকে একটু সাপোর্ট আশা করে ওরা।
যে ছেলেটা এই কয়েক বছরে একদিন অফিস বন্ধ দেয়নি, সেই ছেলেটা আজ দুই দিন ধরে অফিসে আসছে না। নিজেকে বাসার ভিতরে বন্দী করে ফেলেছে। এই পর্যন্ত পৌঁছাতে এই ছেলেটাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। ওর কোন পরিবার ছিল না না ছিল কারো সাপোর্ট।

অনেক কথা বলে ফেলেছি তোমাকে। আমার কোন কথায় খারাপ লাগলে প্লীজ বড় বোন হিসেবে মাফ করে দিও।

শরীরটা কেমন অসার মনে হচ্ছে তিন্নির। তার হার্টবিট টা কেমন অস্বাভাবিক ভাবে লাফাচ্ছে। কোথাও মনে হয় চিনচিন ব্যথা হচ্ছে। সে তখন স্তব্ধ হয়ে সূচনার কথাগুলো শুনছিলো। তার মত একটা বুদ্ধিমতি মেয়ে কেন এই বিষয়গুলো বুঝতে পারল না। মানুষটাকে খুব বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছে সে। সে তো কখনই এমন ছিলনা। কত কিছুই না বলে এসেছে সেই লোকটাকে। ওর দুচোখে অশ্রু জমা হলো।
তিন্নির অশ্রুসিক্ত নয়ন দেখে সূচনা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। অতি সুন্দরী মেয়েদের চোখে কি আর জল মানায়?
সূচনা তিন্নিকে উদ্দেশ্য করে বললো

-“আরে বোকা মেয়ে কাঁদছে কেন? তোমাকে এভাবে দেখে কিন্তু আমার মোটেও ভালো লাগছে না। জিসান যদি জানতে পারে আমি তার অতি সুন্দরী বউকে এত কথা বলেছি আর কান্না করিয়েছি তাহলে কিন্তু আমার খবর করে ছাড়বে। এমনিই বউ পাগল মানুষ সে।”

তিন্নি এবার কিছুটা লজ্জা পেলো। আর বললো
-“আপু আসলে আমি বিষয়টা বুঝতে পারিনি। হঠাৎ চোখের সামনে এমন একটা ঘটনা ঘটে গেল আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না।”
-“আমি জানি। তুমি চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে।#মেঘবিলাসী
#israt_jahan_arina
#part_15

আজ হসপিটাল থেকে একটু তারাতারি বের হয়েছেন আনিসুর রহমান। মেয়েটা মনমরা হয়ে আছে দুদিন ধরে। তাই তিনি মেয়ের মন খুশি করতে মেয়ের ফেভারিট আইসক্রিম নিয়ে বাড়িতে এসেছেন।

বাবা আর মেয়ে একসাথে বারান্দায় বসে আইসক্রিম খাচ্ছে। তিন্নির সাথে তার বাবার বন্ডিংটা খুবই মজবুত। এই পুরো পৃথিবীতে তিন্নিকে তার বাবাই সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারে। না বলা কথাগুলো বাবা কেমন করে যেন বুঝে যায়।
আইসক্রিম খেতে খেতে তিনি তার মেয়ের দিকে তাকালেন।তার মেয়েটা এতো রূপবতী কেন? আনিসুর রহমানের প্রায়শই মনে হয় মেয়েটা এত রূপবতী না হলেই ভালো হতো। মেয়েকে নিয়ে তার হাজারো চিন্তা।
প্রত্যেক মেয়ের বাবাদের মনে হয় ঠিক একই চিন্তা।
মেয়ের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন

-“আমার মামনির মনটা কি এখন একটু ভালো হয়েছে?”

-“হুমম পাপা! কিছুটা ভালো হয়েছে।”

কিছুক্ষণ ভেবে তিন্নি তার বাবাকে প্রশ্ন করলো

-“আচ্ছা পাপা, যদি কখনও আমরা ভুল বুঝে কারো মনে কষ্ট দিয়ে ফেলি কিন্তু পরবর্তীতে যদি আমাদের ভুলটা বুঝতে পারি তাহলে কি করা উচিত?”

-“তাহলে তো অবশ্যই আমাদের তার কাছে মাফ চাওয়া উচিত?”

-“ধরো দুজনের মাঝে কোনো ইগো প্রবলেম থাকলে?”

আনিসুর রহমান যা সন্দেহ করেছিলেন ঠিক তাই। তিনি আগেই বুঝে গিয়েছিলেন জিসানের সাথে তিন্নির কোনো সমস্যা হয়েছে। আর তার মেয়ের মাঝে কতটা ইগো প্রবলেম আছে, সেটা তো তিনি ভালো করেই জানেন।

-“সম্পর্কের মাঝে কোন ইগো থাকতে হয়না মা। প্রত্যেকটা সম্পর্কেই স্বচ্ছলতা অনেক বেশি প্রয়োজন। যেকোনো সম্পর্কের ভিত্তি কিন্তু বিশ্বাস। আর স্বামী স্ত্রী সম্পর্কে তো বিশ্বাস অনেক বেশি প্রয়োজন।”

এবার তিনি কিছুটা লজ্জা পেলো।তার পাপা বুঝে গেছে সে জিসানের বিষয়ে কথা বলছে।ইসস! পাপা সব কিছু বুজে যায় কেনো?

সন্ধ্যা থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি বরাবরই জিসান পছন্দ করে। কিন্তু সে কিছুতেই বৃষ্টিটাকে ইনজয় করতে পারছে না। বারান্দার গ্লাসটা খোলা। সেখান থেকে এলোমেলো বাতাস রুমজুড়ে বিচরণ করছে। বৃষ্টির ফোটায় ফ্লোরটাও ভিজে গেছে। তার এখন মোটেও ইচ্ছে করছে না উঠে বারান্দায় গ্লাসটা লাগাতে। দুদিন ধরে তার রুটিন বদ্ধ জীবনের রফাদফা হয়ে গেছে। এই দুদিনে না সে অফিসে গিয়েছে আর না রুম থেকে বের হয়েছে। রোজিনা খালা এসে রান্না করে দিয়ে গেছেন কিন্তু সে তেমন একটা খাই নি। আসলে খাবার গুলো ঠিক গলা দিয়ে নামেনি তার।

কলেজ জীবনে এসে অনেক বন্ধুদের এই প্রেম করে ছ্যাকা খেয়ে ব্যাকা হতে দেখেছে। তিন্নির প্রতি তার ভালোবাসা তো এক তরফা। তবুও নিজেকে কেমন ব্যাঁকা ব্যাঁকা মনে হচ্ছে। কিন্তু তিন্নি তো তাকে ছ্যাকা দেয় নি। মেয়েটা ছ্যাকা দিবে কিভাবে? সেতো কখনও তাকে ভালোই বাসেনি।

বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আছে জিসান। অনেকক্ষণ শুয়ে আছে বলেই চোখে কেমন ঘুম ঘুম ভাব চলে এসেছে তার। ঠিক এমন সময় বাসার ডোর বেলটা বেজে উঠলো। জিসান একবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল সন্ধ্যা সাতটা বাজে। এই সময় কি আসতে পারে তার বাসায়? ক্লান্ত শরীর নিয়ে সে দরজা খুলতে গলো।
দরজা খুলেই সে প্রচন্ড অবাক হলো। ক্লান্তি ভাবটা যেন নিমিষেই উড়ে গেলো। সে অবাক চোখে তিন্নির দিকে তাকিয়ে আছে।

জিসানের এভাবে তাকানো দেখে তিন্নি কিছুটা বিব্রত হলো। জিসানের দিকে তাকিয়ে তিন্নির অনুশোচনা আরেকটু বৃদ্ধি পেলো। দুই দিনে চেহারার কি হাল করেছে এই লোক। আমি কি প্রেম করে ছ্যাকা দিয়েছি নাকি যে এই দেবদাস লুক নিয়ে আছে।সে বলে উঠলো

-“কি সমস্যা! এইরকম আয়রনম্যান স্টাইলে দাড়িয়ে আছেন কেন? আপনার বাসা বলে কি ভিতরে আসতে দেবেন না?”

জিসান যেন তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তার মায়াবতী এখন তার সামনে। আর কিছু না ভেবে সে তিন্নিকে ভেতরে আসতে বললো।
ভিতরে এসে তিন্নি জিসানের ফ্ল্যাটে একবার চোখ বুলিয়ে নিল। সেদিন সে কিছুই খেয়াল করার পরিস্থিতিতে ছিল না।

চোখ বুলিয়ে আগে ডাইনিং টেবিলের সামনে গেলো। হাতে রাখা ব্যাগটা টেবিলের ওপরে রাখলো। বৃষ্টিতে তিন্নি কিছুটা ভিজে গেছে।
জিসান তিন্নির দিকে একবার চোখ বোলালো। একটা ব্ল্যাক ফতুয়া আর লেডিস জিন্স। বৃষ্টিতে ভেজার কারনে ফতুয়াটা তার শরীরের সাথে কিছুটা লেপ্টে আছে।জিসান তার চোখ নামিয়ে নিলো।
জিসান কিছুই বুঝতে পারছে না তিন্নি এ সময় তার বাসায় কেন?
জিসানের কিছু না ভেবেই তার রুমের দিকে ছুটে গেলো। ক্লোজেট থেকে একটা তোয়ালে নিয়ে ছুটে আসলো আবার।
জিসানের হাতে তোয়ালে দেখে তিনি কিছুটা রিলিফ পেলো। তিন্নি তো ভেবেছিল জিসান রাগ করে মনে হয় রুমে চলে গিয়েছে।#মেঘবিলাসী
#israt_jahan_arina
#part_16

মুষুলধারে বৃষ্টি সন্ধ্যাটাকে স্নিগ্ধময় করে তুলেছে। কিন্তু এই সকল স্নিগ্ধতা তার সামনে দাঁড়ানো রমণীর তুলনায় বড় তুচ্ছ। এই যে তিন্নি তোয়ালে দিয়ে তার ভেজা চুল মুছে দিচ্ছে এতেও একটা আর্ট আছে। স্মার্টনেসের তুলনা আসলে তার বউ হান্ড্রেটে হান্ড্রেড। তিন্নিকে দেখে কখনোই তার লজ্জাবতী বউ বলে মনে হয়নি। তাই বলে তার বউ যে বর্তমান যুগের মেয়েদের মত মেকআপে মোড়ানো তাও নয়। বিয়ের দিন ছাড়া সে কখনো তিন্নিকে মেকআপ এ দেখিনি। এই যে সামনে এখন দাঁড়িয়ে আছে। মুখের কোথাও মেকাপের ছিটেফোঁটাও নেই। তবু কত সুন্দর লাগছে তার বউকে।

তিন্নি বারবার আড়চোখে জিসানের দিকে তাকাচ্ছে। আসলে সে কিভাবে কথা শুরু করবে বুঝে উঠতে পারছে না। তিন্নি আর কিছু না ভেবেই টেবিলে রাখা ব্যাগ থেকে বক্স বের করতে শুরু করলো। আর জিসানকে উদ্দেশ্য করে বললো
-“ঝটপট টেবিল আসুন। আমি আজকে নিজের হাতে ভুনা খিচুড়ি আর গরুর মাংস করেছি।”
জিসান আরেকদফা অবাক হলো। আজকের দিন টা মনে হয় শুধু তার অবাক হওয়ার দিন। তিন্নি নিজের হাতে জিসানের জন্য কিছু রান্না করেছে এটা তো সে ভাবতেই পারছে না। কিছুদিন আগেও যেখানে তিন্নি দেখা করতে চাইতো না, আর আজ এসব। সবকিছুই তাঁর স্বপ্ন মনে হচ্ছে। কোনভাবে আমি কি তিন্নিকে হ্যালুসিনেশন করছি?
তিন্নি আবারো বলে উঠলো

-“কি হলো আসছে না কেন? ভয় পাবার কিছু নেই অতো খারাপ মনে হয় হয়নি। খেয়ে দেখতে পারেন।”

জিসান এবার টেবিলে এসে বসলো।তিন্নি জিসানকে খাবার বেড়ে দিলো।জিসানকে খাবার দিতে দিতে তার আজ বিকেলের কথা মনে পড়ে গেলো।

বাবার সাথে কথা বলা শেষ করে সে সোজা চলে গেলো রান্না ঘরে। বাইরে মেঘলা আকাশ দেখে সেদিনের কথা মনে পড়ে গেল। বৃষ্টির দিনে মানুষটা খিচুড়ি আর গরুর মাংস খেতে পছন্দ করে। সরি বলার এর চেয়ে সুন্দর উপায় তিন্নির মাথা এখন আর আসছে না।
রান্নাঘর থেকে টুকটাক শব্দ শুনে তিন্নির মা এগিয়ে আসলেন। এসে দেখেন তিন্নি ইউটিউব দেখে রান্না করছে।তিন্নিকে রান্না করতে দেখে তার মামনি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছেন।
মেয়েটার আজ হলোটা কি?তিন্নি কে তিনি প্রশ্ন করলেন

-“কীরে তোর আজ হলোটা কি? যেই মেয়েকে সারাদিন বলে একবার রান্না ঘরে ঢুকাতে পারি না সে কিনা আজ সোজা রান্না করছে?শরীর ঠিক আছে তো?”

-“কখনও রান্না ঘরে আসিনা বলে জীবনেও আসবো না এমন তো না।”

-“তো আজ কি উপলক্ষে আসা হলো?”

-“কোন উপলক্ষ নেই মামনি। এমনি মন চাইছে তোমাদের রান্না করে খাওয়াতে।”

রান্না শেষ করে সে সবার আগে তার পাপা আর মামনিকে টেস্ট করিয়েছে।মেয়ের হাতের রান্না প্রথম খেয়ে তিনি অনেক প্রশংসা করলেন।
তামিম বলতে শুরু করলো

-“আপু আমি কিন্তু কেমন রহস্য রহস্য গন্ধ পাচ্ছি। কিছু একটা উদ্দেশ্য তো অবশ্যই আছে।”

তিন্নি নিজেকে অনেক বুদ্ধিমান ভাবলেও মাঝে মাঝে তামিম এর কাছে নিজেকে অনেক ছোট মনে হয়।এই বয়সেও তামিমের সেন্সওফ হিউমার অনেক ভালো।
সবাইকে খাইয়ে সে দ্রুত একটা বক্স এ বাকি খাবার ভরতে শুরু করলো।তিন্নির মা দূর থেকে মেয়ের কান্ড দেখছে আর মুচকি মুচকি হাসছে।

যেই মেয়ে দুই দিন মনমরা হয়ে আছে।সেই মেয়ে আজ হঠাৎ এতো খুশি মনে কেনো এতো কিছু করছে তা তিনি মাত্র বুজলেন।তার ছেলে পর্যন্ত বুজলো আর তিনি কিনা বুজলেন না।মাকে হাসতে দেখে তখন তিন্নি খুব লজ্জা পেয়েছিলো।
জিসান পাশের চেয়ারে তিন্নিকে বসতে ইশারা করলো।জিসানের মনটা যেনো আজ দূর আকাশে উড়ছে। এতো ভালো লাগছে যা বলে বুঝাতে পারবে না। দুজনেই খেতে শুরু করলো।

খাবার কমন হয়েছে তা তিন্নি জানতে চাইছে না।সে জানে জিসানের মায়ের মতো ওতো টেস্টি হয়তো হবে না।আর তিন্নি তার মৃত শাশুড়ির সাথে কোনো প্রতিযোগিতায় নামতে চায়না।তবে তার মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে সে পছন্দ করেছে।
বহুদিন পর মনে হয় জিসান আজ তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছে।হয়তো খাবারে আপন জনের নিখুঁত প্রচেষ্টা আর ভালোবাসা ছিলো।তবে তিন্নি যে এতটা ভালো রান্না করবে তা সে ভাবেনি।ইসস!! এই মেয়ে কি সব কিছুতেই এতো পারফেক্ট।
বাহিরে এখন বৃষ্টির সাথে ঝর শুরু হয়েছে।তিন্নি জিসানের রুমে একবার চোখ বোলালো।ঘরটা কমন এলোমেলো হয়ে আছে।কিন্তু ওই দিন এমন ছিলো না।তিন্নি অতটা খেয়াল না করলেও বুঝতে পারছে সেদিন অনেক গুছানো ছিলো রুমটা।বারান্দার গ্লাস খোলা।এই ঝর বৃষ্টিতে এই ভাবে গ্লাস খোলার মানে বুজলো না।

পুরো বাসাটা কেমন নিরব হয়ে আছে।তিন্নি ভাবছে এই বাসায় লোকটা একা থাকে কিভাবে?এই মানুষটা আসলেই বড্ডো একা।জিসানের জন্য কেমন যেনো একটা মায়া কাজ করলো।নিজেকে কেমন ছোট মনে হতে লাগলো তার।
কিছুক্ষন পর জিসান রুমে প্রবেশ করলো।তিন্নি খাটের সাইডে বসে আছে।জিসান অন্য পাশে বসলো।জিসানকে দেখে তিন্নি এবার বললো

-“ওই দিন আপনাদের একজন অফিসার আহত হয়েছিলো,তিনি কেমন আছে?”

জিসান মনে মনে হাসছে।সে বুঝতে পারছে তিন্নি কেনো এসেছে।সে বললো

-“ফয়সাল এখন ভালো আছে।”

-“আর বাকি দুই জন?”

-“স্পর্টদেথ। এখন ময়না তদন্ত চলছে।”

জিসানের হঠাৎ চোখ গেলো তিন্নির হাতের দিকে। হাতে ফোস্কা পরে গেছে।সে উঠে দ্রুত তিন্নির কাছে আসলো।জিসানকে এভাবে আসতে দেখে তিন্নি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো।লোকটা কোনো ভাবে তিন্নির এই ভাবে হুট করে আসাকে পজেটিভ সাইন ভেবে নিলোনা তো? কোনো অসভ্যতামী করবেনা তো?
জিসান এসেই তিন্নির তার ধরে দেখতে লাগলো।আর বললো

-“তোমাকে কে বলেছে এইসব রান্না করতে? হাতে কেমন ফোস্কা পড়ে গেছে।”

-“এটা এমনই সেরে যাবে।”

জিসান আর তিন্নির কোনো কথা শুনলো না। ফার্স্টএইড বক্স থেকে বার্নসিল ক্রিম বের করে তিন্নির হাতে দিতে লাগলো।সে মনে মনে ভাবে তিন্নিকে দিয়ে সে কখনো রান্না করবে না।দেখা যাবে মেয়েটা হাত পুড়িয়ে ছাই বানিয়ে ফেলেছে।
তিন্নি বার বার অবাক হচ্ছে জিসানের কেয়ারিং ব্যাবহার দেখে।সে তো জিসানের সাথে অনেক খারাপ ব্যাবহার করেছিলো।তবে লোকটা কেনো তার প্রতি এতো কেয়ারিং?
হঠাৎ তিন্নি জিসান কে বললো

-“বৃষ্টি এখন অনেকটাই কমে গেছে, আমি বরং আজ উঠি।”

জিসান মনে মনে ভাবছে, মেয়েটা সারাক্ষণ পালাতে চায় কেন? জিসানের তো মন চায়ছে তিন্নিকে জাপ্টে ধরে বলতে তুমি কোথাও যেতে পারবেনা। তোমাকে আমার বড্ড প্রয়োজন। এইযে বুকের বাঁ পাশটা কেমন তীব্র ব্যথা হচ্ছিলো, তোমাকে দেখা মাত্রই নিমিষেই দূর হয়ে গেছে।
তবে জিসান তেমন কিছুই বললো না। সে তিন্নিকে বললো

-“চলো আমি তোমাকে দিয়ে আসি বাসায়।”

-“সমস্যা নেই আমি কিন্তু একাই চলে যেতে পারবো?”

-“আমি গাড়ি বের করছি তুমি আসো।”

তিন্নিকে তাঁর বাসায় পৌঁছে দিয়ে জিসান আবার বাসায় ফিরে আসলো। সে মনে মনে ভাবছে, তার বউটা আজ তাকে সরি বলতে এসেছিলো। তবে জিসান এটা আগেই জানতো তিন্নি তাকে সরাসরি সরি বলতে পারবে না। তার বউ যে এত সহজে নিজের ইগো বিসর্জন দিতে পারবে না তা সে জানে। জিসানের খুব ভালো লাগছে এই মুহূর্তটা।
___________________
আজকের দিনটা তিন্নির জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। অনেকটা টেনসনে আছে তিন্নি।আজ মেডিকেল রেজাল্ট দিবে। সকালের নাস্তা সে ঠিকভাবে খেতে পারেনি। তিন্নির এই অবস্থা দেখে তামিম অনেকটা মজা নিচ্ছে। সে তিন্নিকে বললো
-” আপু তুই যদি মেডিকেলে চান্স না পাস তাহলে জিসান ভাইয়ের সামনে তোর এই ভাব এক মিনিটে ফুটুস হয়ে যাবে।”
তিন্নি এক ধমক দিলো তামিমকে। আর বললো

-“আমি কবে ওই লোকের সামনে ভাব দেখিয়েছি? ফালতু বকিস নাতো?”

-“তুই তো সারাক্ষণ ওত পেতে থাকে ভাইয়া কে জব্দ করার জন্য। আর ওই বেচারা ও তোর প্রেমে পড়ে বোধশক্তি হারিয়ে ফেলছে। আমি বুঝিনা তার কাছে তো একটা বন্দুক আছে। ওইটা দিয়ে তোর হাতে শুট করে দিলেই তো পারে।আমিতো আমার বউ কে সারাক্ষণ দৌড় এর উপর রাখবো।”

তিন্নি ভাবছে তার ভাইটা বেশি পেকে গেসে।

-“তোর কি মনে হয় আমি ওই এসিপির বন্দুককে ভয় পাই? তোদের ওই এসিপি উল্টা আমাকে ভয় পায়?”

তিন্নির মা দুইজনকে থামালো। বয়সের এত পার্থক্য দুইটার মধ্যে তারপরও সারাক্ষণ লেগেই থাকে।
দুপুরের দিকে বাসার ডোর বেল বেজে উঠলো।তিন্নি দরজা খুলে সামনে তাকিয়ে দেখে তার পাপা আর জিসান দাড়িয়ে আছে।জিসানের দুই হাত ভর্তি মিষ্টির প্যাকেট।তিন্নি খুব একটা অবাক হলো না।কিছুক্ষণ আগেই সে জানতে পেরেছে সে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে।
তিন্নির পাপা এসেই মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিলেন।তিন্নির বাবার চোখ খুশিতে ভিজে এসেছে।বাবা মেয়ের এই বন্ডিংটা জিসানের চমৎকার লাগে।
জিসান তিন্নির রুমে বসে আছে।ঠিক তখনই তিন্নি রুমে প্রবেশ করলো।তিন্নিকে দেখে জিসান বললো

-“তো আজ থেকে তোমাকে ডক্টর তিন্নি ডাকার অভ্যাস করে দেই?”

-“আমিতো এখনো ডক্টর হয়নি।আগে ডক্টর হই তখন ডাকবেন।আর আপনি এতো মিষ্টি এনেছেন কেন? কে খাবে এতো মিষ্টি?এই ভাবে পুরো এলাকা জুড়ে মিষ্টি বিলানোর কোনো মানে হয়?”

-“আরে আমার বউ মেডিকেলে চান্স পেয়েছে।আর আমি পুরো এলাকা মিষ্টি খাওয়াবো না তা কি করে হয়?

তিন্নি ভাবছে, “জানিতো সব আমাকে ইমপ্রেস করার ধান্দা।”
জিসান আর তিন্নি বারান্দায় বসে কফি খাচ্ছে।জিসানকে দেখলে আজকাল তিন্নির চোখ জ্বালা করে।দিন দিন লোকটা কেমন অসহ্য রকমের হ্যান্ডসাম হয়ে যাচ্ছে।কিন্তু তিন্নি নিজেকে বলছে, সে মোটেও ইমপ্রেস হবেনা।

(আজ কিন্তু কেউ ছোট বলবেন না। সবার কাছে প্রশ্ন কোন চরিত্রটি আপনাদের কাছে বেশি ভালো লাগে?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here