মেঘের পালক চাঁদের নোলক পর্ব -০৬

#মেঘের_পালক_চাঁদের_নোলক
#পর্ব_০৬
#অধির_রায়

শাওন নিধিকে আইডিয়াল গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি করে দেয়৷ নিধির ছোট থেকেই ইচ্ছা সে ডাক্তার হবে৷ সেজন্য নিধিকে নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করে দেয়৷ শাওনের প্রতি যতটা রাগ ছিল সব উধাও হয়ে যায়৷ তবুও চোখের সামনে ভেসে উঠে শাওন একজন চরিত্রহীন লোক৷ মন থেকে কিছুতেই সিংহের মতো ঝাঁপিয়ে পড়া রুপ যাচ্ছে না। তার থেকে সব সময় দূরে থাকতে হবে৷ নিধি চরিত্রহীন লোকদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে৷ এসব চরিত্রহীন লোকের জন্য সমাজে মেয়েদের সম্মান নেই৷ অথচও যার কারণে মেয়েরা সম্মান হারালো তাকে সমাজের মানুষ মাথায় তুলে থাকে৷ সমাজের মানুষের দোষ দেওয়া রসিকতা। মূলত সমাজটাই বেহায়া। ছেলেদের দোষ দেখে না৷ সব দোস নারী জাতির৷

শাওন বই, খাতা, কলম, লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজনী সামগ্রী, স্কুল ব্যাগ, স্কুল ড্রেস কিনে দিল৷ নিধি মুগ্ধ নয়নে সবকিছু দেখে যাচ্ছে৷ চোখের কোণায় জল চিকচিক করছে৷ এই দিনটার জন্য কত অপেক্ষা করেছে! শাওন মুগ্ধ নয়নে নিধির দিকে তাকায়৷ এসব হাতে পেয়ে যেন বাচ্চাদের মতো লাফাচ্ছে৷ মনের চিলেকোঠারে আনন্দের উল্লাস বাসা বেঁধেছে। যা শাওনের দৃষ্টিকে আটকে রেখেছে৷ শাওন ডান হাত বুকের পা পাশে রেখে বিরবির করে বলল,

“পিচ্চি নিধি আমার মনে রয়ে গেছো৷ তোমাকে আমার মনের রানী করে রাখব৷ খোলা হওয়ায় মুগ্ধ নয়নে তোমায় দেখে তৃষ্ণা মেটাব৷ তুমিময় সঙ্গী হয়ে সারাজীবন কাটাব৷ সৃষ্টিকর্তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। উনি নিজ হাতে আমায় কাছে তোমাকে পাঠিয়েছেন৷”

নিধি একে একে সবকিছু বুঝে নিল৷ এত পরিমাণে উত্তেজিত কথা বলতে পারছে না৷ তবুও আনন্দের সাথে ধীর গলায় বলে উঠল,

“আমি কি আজ থেকেই ক্লাস করব?”

শাওন প্যান্টের পকেটে হাত গুছে ছোট করে জবাব দিল,

“না। কাল থেকে ক্লাস করবে৷ আমি তোমাকে বাড়িতে ছেড়ে অফিসে যাব৷ আর হ্যাঁ কাল থেকে সকাল আটটার আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে৷”

নিধি কিঞ্চিৎ রাগ নিয়ে বলল,

“আমার কর্ণে মুয়াজ্জিনের কন্ঠের পবিত্র ধ্বনি আযান আসতেই ওঠে পড়ি৷ সালাত আদায় করি৷ কুরআন তেলওয়াত করি৷ আল্লাহকে স্মরণ করে নতুন দিনে পা রাখি। কাজ ছিল না সেজন্য ঘুমিয়ে ছিলাম৷ এখন আর ঘুমাব না৷ পড়তে বসব৷”

শাওন চৌধুরী মুচকি হেঁসে জবাব দিল,

“আচ্চা বাবা যাওয়া যাক৷ অফিসে অনেক কাজ আছে৷”

শাওন নিধিকে বাড়ির গেইটে পৌঁছে দেয়৷ নিধি চোখের আড়াল না হওয়া অব্দি তার দিকে অবাধ্য নেত্রদ্বয় নিবন্ধ করে রাখে৷ নিধি সদর দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে৷ মুগ্ধ শিস বাজিয়ে নামছে৷ চোখে চশমা, হাতে গোলাপ ফুলের তোরা৷ নিধিকে সামনে পেয়ে শিস বাজানো বন্ধ করে৷ মুচকি হেঁসে বলল,

“তোমার ভাবির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি৷ যাবে আমার সাথে?”

নিধি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল সে যাবে না৷ মুগ্ধ নিধিকে প্রদক্ষিণ করে বলল,

“লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী হতে হবে৷ আমার মতো হলেই চলবে৷ আমি সব সময় শাওনের টা দেখে লিখতাম৷ আমার লেখাপড়া ভালো লাগে না৷ কাজও তেমন ভালো লাগে না৷ শাওন সারাদিন কাজ করে আর রাত হলে…”

মুগ্ধ বলতে গিয়েও থেমে গেল৷ নিধি পরেরটুকু জানার জন্য অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকে মুগ্ধর দিকে৷ নিধি ঠোঁট প্রসারিত করে বলল,

“শাওন চৌধুরী রাত হলেই কি করে ভাইয়া? উনি কি রাতের বেলাও কাজ করেন?”

মুগ্ধ নিধির প্রশ্নেই উত্তর পেয়ে গেল৷ নিধির কাঁধে হাতে দিয়ে সোফায় বসিয়ে দিল৷ মিহি কন্ঠে বলল,

“অনেক কাজ করে৷ তুমি ধীরে ধীরে সব জানতে পারবে৷ আমি চললাম৷ তোমার ভাবী রাগ করবে দেরি হলে৷”

মুগ্ধ আর এক মুহুর্ত দাঁড়াল না৷ দ্রুত পায়ে চলে গেল৷ নিধি সোফায় বলে ভাবতে থাকল,

“মুগ্ধ ভাইয়া কি বুঝাতে চেয়েছেন? আমি কি জানতে পারব?”
________________________

নিধি গরম তেল নিয়ে চলে আসল শায়লা চৌধুরীর রুমে৷ নিধি নিজের কাজ ভুলে যায়নি৷ নিধির বর্তমানে উদ্দেশ্য হলো শায়লা চৌধুরীকে সুস্থ করা৷ একজন সঙ্গীর অভাবে তিনি পা ফেলতে পারেন না৷ ডাক্তার উনাকে বলেছেন হাঁটার চেষ্টা করতে৷ কিন্তু হাঁটার জন্য কাউকে পাননি৷ যার উপর নির্ভর করে হাঁটবেন৷ নিধি গরম তেল পায়ে মালিশ করে বলল,

“ম্যাম আপনাকে হাঁটার চেষ্টা করবে হবে৷ আপনি নিজে থেকে চেষ্টা না করলে হেরে যাবেন৷ সবার আগে নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে৷”

শায়লা চৌধুরী নিধির মাথায় হাত রেখে উৎফুল্ল কন্ঠে বললেন,

“আমার এত খেয়াল রেখে তোমার কি হবে? তোমার এখন লেখাপড়া করা, স্কুলে, খেলার মাঠে ছুটাছুটি করার বয়স৷ কিন্তু তুমি আমার সেবা করছো কেন?”

শায়লা চৌধুরীর কথা শুনে চুপসে যায় নিধি৷ তবুও পিছপা হয়নি৷ মলিন কন্ঠে জবাব দিল,

“আমার কর্তব্য আপনাকে সুস্থ করা৷ আমি মুগ্ধ ভাইয়াকে কথা দিয়েছি, আপনাকে নিজ পায়ে হাঁটাব। সেজন্য আপনার সকল ওষুধ বুঝিয়ে নিছি৷ কখন কি লাগবে? যারা আমাকে এতকিছু দিচ্ছে তার কাছে এটা তুচ্ছ মাত্র। বোনের মতো ভালোবাসা পাচ্ছি৷ আজ বড় ভাই থাকলে নিশ্চয় এভাবে ভালো বাসত৷”

শায়লা চৌধুরী নিধির কথা শুনে খুশী হলেন৷ নিধি শায়লা চৌধুরীর হাত ধরে বলল,

“আমাকে ধরে উঠার চেষ্টা করেন৷ আর কত এভাবে শুয়ে থাকবেন৷ সার্ভেন্টের উপর নির্ভর করে আর কত চলবেন৷ যারা মেরুদন্ডহীন তারা অন্যের উপর নির্ভর করে৷”

শায়লা চৌধুরী আফসোসের সহিত বললেন,

“এভাবে ভেবে দেখিনি। কেউ আমাকে হাঁটার জন্য উৎসাহ করেনি৷ প্রতিটি সার্ভেন্টের চাওয়া আমি যেন এভাবে সারা জীবন শুয়ে থাকি৷ আমি উঠে দাঁড়ালেই তাদের মহাবিপদ৷ কাজে ফাঁকি দিতে পারবে না৷ এখন মন যা চাচ্ছে তাই করতে পারছে৷”

“এখন কথা না বাড়িয়ে উঠার চেষ্টা করেন৷”

শায়লা চৌধুরী নিধির হাত ধরে অনেক কষ্টে উঠে বসল। কষ্টে মাটিতে পা রাখে৷ কিন্তু পায়ে শক্তি দিতে পারছে না৷ মনের জোড়ের কাছে পায়ের জোড় হেরে যাচ্ছে৷ পায়ে একটু শক্তি পেতেই চিৎকার করে উঠল৷ সাথে সাথে বিছানায় শুয়ে পড়ল৷ নিধি সযত্নে পা বিছানায় তুলে বলল,

“এভাবে হেরে গেলে চলবে না৷ আজ থেকে আপনাকে রেগুলার চেষ্ঠা করতে হবে৷ তার আগে আপনার পা রেগুলার নাড়াতে হবে৷ যার ফলে পায়ের পেশিগুলো সতেজ হবে৷ ক্রমে ক্রমে শক্তি পাবে৷”

শায়লা চৌধুরীর চোখে পানি টলমল করছে৷ তবুও ঠোঁটের কোণে হাসি৷ তার জন্য কেউ এত ভাবতে পারে কোনদিন ভাবেনি৷ মনে মনে বললেন,

“আমার শাওন হিরা চিনতে ভুল করেনি৷ লক্ষী একটা মেয়ে৷ সবার জন্য কত চিন্তা। আমার ঘর আলোয় আলোকিত করে রাখবে৷”
___________________

নিধি টেবিলেই মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে৷ বই যেখানে সেখানে ছড়িয়ে রাখা৷ শাওন নিধিকে জাগানোর চেষ্টা করছে৷ ঘুমে অনেক বিভোর থাকায় শাওনের ধ্বনি নিধির কর্ণধারে যাচ্ছে না৷ মুগ্ধ রুমে প্রবেশ করতে করতে বলল,

“নিধিকে ছেড়ে দাও৷ আর হ্যাঁ তুমি ডিনার করে শুয়ে পড়ো৷ আমি বাহির থেকে ডিনার করেই এসেছি৷ তিথির কাছ থেকে জানতে পেরেছি নিধি ডিনার করেনি৷ যদি জাগাতে পারো রাতে খেয়ে নিতে বলবে৷”

শাওন নিধির দিকে তাকিয়ে বলল,

“এভাবে ঘুমাবে পিচ্চিটা৷ আর সে খাইনি৷ না খেয়ে ঘুমালে মাঝ রাতে জেগে ক্ষুধায় ছটফট করবে৷ নিজেও খাবে না৷ কাউকে কিছু বলতেও পারবে না।”

“হুম তুমি ঠিক বলেছো। আমি জাগানোর চেষ্টা করি৷ এভাবে ডাকলে উঠবে না৷ কোন চিন্তা নেই৷ সেজন্য তার ঘুম গভীর৷”

মুগ্ধ আরও কিছু বলতে যাবে তার আগেই মুগ্ধর ফোনে বেজে উঠে৷ মুচকি হেঁসে সেখান থেকে চলে যায়৷ শাওন বুঝে যায় এখন গার্লফ্রেন্ড সময় দিবে৷ শাওন ছোট করেই নিধির গালে থাপ্পড় দিল৷ নিধি ঘুম ঘুম নয়নে একবার তাকিয়ে আবার চোখ বুঝে নিল৷ শাওন নিধির গালে দুই হাতে রেখে উঁচু স্বরে বলল,

“নিধি! নিধি!”

শাওনকে সামনে দেখতে পেয়ে চট করেই উঠে পড়ল৷ আমতা আমতা করে বলল,

“আপনাকে বলছি আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না৷ কারণে অকারণে আমায় স্পর্শ করা আমি মোটেও পছন্দ করিনা৷”

শাওন অপরাধী কন্ঠে বলল,

“যার জন্য করলাম চু/রি সে বলে চো/র। রাতে খেয়ে তারপর ঘুমাও৷ টেবিলে কেউ ঘুমায় না৷ আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি৷”

শাওনের কথা নিধি বুঝতে পারল না৷ নিধি ওয়াসরুম থেকে মুখে পানির ছিঁটা দিয়ে বের হয়৷ শাওন নিধির জন্য খাবার নিয়ে বসে আছে৷ নিধির দিকে এক পলক তাকিয়ে ক্ষোভ নিয়ে বলল,

“দাঁড়িয়ে না থেকে খেতে আসো৷ আমি পিচ্চিকে নিজ হাতে খাইয়ে দিব৷”

নিধি অবাক দৃষ্টিতে শাওনের দিকে তাকায়৷ মিহি কন্ঠে বলল,

“আমার হাত আছে। আমি অন্যের হাতে মানে শাওন চৌধুরীর হাতে খাব না৷”

শাওন রাগ নিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

“আমি অন্ধ নয়৷ আমি দেখতে পারছি তোমার হাত আছে৷ তবে আমার হাতেই রাতে খেয়ে হবে৷ এই বাড়িতে থাকতে হলে আমার কথা মেনে চলতে হবে৷”

নিধি কথা বাড়াল না৷ চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে। শাওন এখনও অফিসের পোশাক পড়ে আছে৷ একবার বলতে ইচ্ছা করল আপনি খেয়েছেন৷ কিন্তু অদৃশ্য বাঁধার জন্য বলা হলো না৷ কথা না বলে থাকা যায়৷ ভয়ে ভয়ে বলল,

“আপনি কি রাতে বের হবেন? না মানে এখনও এসব পোশাক পড়ে আছেন?”

শাওন কোন জবাব দিল না৷ নিধি অধীর আগ্রহে জবাবের আশায় বসেছিল৷ শাওন ঘরে থেকে প্রস্থানের সময় বলল,

“আমি কোথাও যাব না৷ এখন আমার ঘরেই পূর্ণিমার চাঁদ আছে৷ পূর্ণিমার জ্যােংসায় আমার ঘর আলোকিত। বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই৷”

শাওন চৌধুরী চলে যেতেই নিধি ঘৃণার সাথে বিরবির করে বলল,

“ছি! শাওন চৌধুরী এত খারাপ। এখন বাড়িতে মেয়ে মানুষ নিয়ে আসেন৷ চরিত্রহীন ছেলে।
_______________________

শাওনের প্রতিদিনের রুটিন হলো নিধিকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়া৷ স্কুল থেকে নিয়ে আসে বাড়ির অন্য গাড়ি৷ কিন্তু কেউ তাকে স্কুলে দিয়ে আসতে পারবে না৷ শাওন চৌধুরী কড়া গলায় সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন৷ মানুষটা চরিত্রহীন হলেও নিধিকে অনেক সম্মান করে৷ নিধির ভালো মন্দ সব বিষয়ে খেয়াল রাখে৷ প্রায় পনেরো দিন হয়ে গেল নিধি শাওনের পূর্ণিমার চাঁদের সন্ধান পেল না৷ অফিস থেকে আসার পর পূর্নিমার চাঁদের কথা জানতে চাইলে এড়িয়ে যান শাওন চৌধুরী। নিধি আজ ঠিক করেছে সে জেনেই ছাড়বে৷ মেয়ে মানুষ বাড়িতে নিয়ে আসা নিধি কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না৷ একজন মানুষ এত নিচ কিভাবে হতে পারে৷

সবায় যখন গভীর তন্দ্রায় তখন নিধি চুপি চুপি শাওন চৌধুরীর ঘরের সামনে আসে৷ কিন্তু শাওন চৌধুরীর ঘর ভিতর থেকে লক করা৷ নিধি জানবে কিভাবে ঘরে কে আছে? হঠাৎ কাঁধে কারোর হাতের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠল৷ পিছনে তাকিয়ে মুগ্ধকে দেখতে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল৷ মুগ্ধর হাত ধরে টানতে টানতে ছাঁদে নিয়ে আসে৷ রাতের বেলা ছাঁদে একা আসতে ভয় লাগে৷ কিন্তু মুগ্ধ ভাইয়া ছাঁদে বসে অনেকক্ষণ কথা বলে৷ নিধি ফিসফিস করে বলল,

“ভাইয়া আপনাকে একটা কথা বলার আছে৷ আপনার চক্ষুর আড়ালে অনেক কিছু হচ্ছে৷”

মুগ্ধ কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে নিল৷ এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল,

“এখানে কেউ নেই৷ এভাবে ফিসফিস করে কথা বলতে হবে না৷ আমার চক্ষুর আড়ালে কি হচ্ছে?”

“শাওন চৌধুরীর চরিত্র ভালো নয়৷”

নিধির কথা শুনে মুগ্ধর গলায় যেন কাটা গেঁথে গেল৷ বিস্ময়ে ভাবতে থাকল নিধি কি সব জেনে গেছে? ভয়ে ভয়ে প্রশ্ন করল?

“তুমি শাওনের নামে কি কি জানো?”

“প্রতি রাতে বাসায় কেউ না কেউ আসে৷ এখন শাওন চৌধুরী রাতে বাহিরে যান না৷ কারণ জানতে চাইলে উনির উত্তর দেন পূর্ণিমার চাঁদ উনার ঘরে আছে৷ মানে পূর্ণিমার নামের মেয়ের সাথে রাত কাটায়৷”

নিধির কথা শুনে খিলখিল করে হেঁসে উঠল মুগ্ধ। হাসি থামিয়ে বলল,

“শাওন বাহিরে যায় না৷ তার পিছনে অন্য কারণ আছে৷ শাওন পিচ্চি মেয়ের প্রেমে পড়েছে৷ সেজন্য বাহিরে রাত কাটানো, ড্রিংক্স করা বন্ধ করে দিছে৷”

নিধি ভেংচি কেটে বলল,

“এমন অসভ্য ছেলের সাথে কোন মেয়ে প্রেম করতে যাবে৷ নিধি গোয়েন্দা ফেল করে গেছে৷ নিধির ঘুম পাচ্ছে৷ কাল ক্লাস আছে৷ ঘুম ভাঙতে দেরি হলেই শাওন চৌধুরী অগ্নিমূর্তি ধারণ করবে৷”

নিধি নিজের বোকামির জন্য লজ্জা পেল। কথা না বাড়িয়ে চলে আসল৷ মুগ্ধ নিধির যাওয়ার পথে তাকিয়ে বিরবির করে বলল,

“নিধি যেদিন তুমি জানবে শাওন তোমার প্রেমে পড়ছে৷ সেদিন তুমি কি তাকে তাড়িয়ে দিবে?”

মুগ্ধ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে রুমে চলে যায়৷ নিধি নিজের রুমের দরজা খুলে লাইট অন করতেই শাওনকে দেখতে পেল৷ ভয়ে নিধির প্রাণ যায় যায় অবস্থা৷ এত রাতে শাওন চৌধুরী নিধির ঘরে কি করছে? এভাবে অগ্নিমূর্তির ন্যায় বসে আছে কেন? নিধিকে দেখে ধীরে পায়ে শাওন চৌধুরী নিধির দিকে এগিয়ে আসতে থাকে।

চলবে….

এরপর থেকে কাহিনি এগিয়ে যাবে৷ কোথাও কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here