মেঘের ভেলায় চড়ে পর্ব -১৬+১৭

#মেঘের_ভেলায়_চড়ে
#Part_16
#Ariyana_Nur

মুনিয়া বেগম কিচেনে দাড়িয়ে রান্না করছে।সাথে রাই আর ফাইজা হাতে হাতে তাকে কাজে সাহায্য করছে।ফাইজার নাম ধরে তিহান এর গলা ফাটানো আওয়াজে ডাক শুনতেই রাই মিটমিট করে হাসতে লাগলো।ফাইজা, মুনিয়া বেগম এর দিকে কাদো কাদো ফেস করে তাকাতেই মুনিয়া বেগম নিজের কাজ করতে করতে বলল,

—যা মা দেখে আয় কি লাগবে।

রাইও চেহারায় হাসির রেখা ঝুলিয়ে রেখে শুর টেনে বলল,

—যা ফাইজু তাড়াতাড়ি যা দেখে আয় ভাইয়া কেন ডাকছে।

ফাইজা রাই এর দিকে রাগি চোখে তাকাতেই রাই ফাইজাকে দাত কেলিয়ে একটা হাসি উপহার দিল।ফাইজা রাই কে চোখ রাঙিয়ে দরজার দিকে পা বাড়াতেই তীব্রর কন্ঠে ভেসে এল,

—ছোট মা!তোমার বউ মাকে তাড়াতাড়ি রুমে পাঠাও।জরুরি কাজ আছে।

তীব্রর গলা ফাটানো আওয়াজের কথা শুনে রাই এর হাতের কাজ থেমে গেলো।ফাইজা সামনে পা না বাড়িয়ে ঘাড় ঘুড়িয়ে রাই এর দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হেসে বলল,

—রাইজু!খাম্বার মত দাড়িয়ে আছিস কেন?ভাইয়া ডাকছে তাড়াতাড়ি যা।

রাই ফাইজার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই ফাইজা একটা শয়তানি হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো।

রাই কে চুপ করে থাকতে দেখে মুনিয়া বেগম বলল,

—যাও মা দেখে এসো কেন ডাকছে।

রাই কথা না বাড়িয়ে বিনা বাক‍্যে সেখান থেকে চলে গেলো।

_________

তীব্র বেডের উপর বসে পায়ের উপর পা রেখে মনের সুখে ফোন স্ক্রল করছে।তীব্রর কাজে মুনিয়া বেগম এর সামনে বিব্রত অবস্থায় পরাতে রাই এমনিতেই একটু রেগে রয়েছে তার উপরে রুমে ঢুকে তীব্রকে এভাবে চিল মুডে বসে থাকতে দেখেই রাই এর রাগটা আরো বেড়ে গেলো।তারপরেও রাগটাকে দমিয়ে রেখে তীব্রর সামনে এসে গম্ভীর গলায় বলল,

—কেন ডেকেছেন?

তীব্র পাশের থেকে টাইটা হাতে নিয়ে রাই এর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

—এটা বেধে দাও।

রাই,তীব্রর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল,

—এটাই আপনার জরুরি কাজ?

তীব্র উঠে দাড়িয়ে শার্ট ঠিক করতে করতে বলল,

—হুম।এটাই আমার জরুরি কাজ।

রাই রাগ দেখিয়ে বলল,

—এটা তো আপনিই করতে পারেন।এর জন‍্য আমায় ডাকলেন কেন?

—আগে পারতাম তোমায় পেয়ে এখন ভূলে গেছি।

তীব্রর সোজাসাপ্টা কথা শুনে রাই দাতে দাত চেপে বলল,

—তাহলে আপনি টাই না বেধেই অফিসে যান।কেননা আমি টাই বাধতে পারি না।

রাই এর কথাটা যেন তীব্রর বিশ্বাস হল না।তীব্র কিছুক্ষন রাই এর দিকে সন্দেহর চোখে তাকিয়ে থেকে বলল,

—সত‍্যি তুমি টাই বাধতে পারো না?

রাই গম্ভীর কন্ঠে বলল,

—না পারি না।

তীব্র কিছু একটা ভেবে বলল,

—ওকে সমস‍্যা নেই।আমি তোমায় শিখিয়ে দিচ্ছি।ভালো করে আমার হাতের দিকে লক্ষ কর।টাই বাধা একদম সহজ।

তীব্র নিজের গলায় টাই বাধতে লাগলো রাই,তীব্রর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইল।তীব্রর টাই বাধা শেষ হতেই বলল,

—দেখেছো কিভাবে বাধতে হয়?

রাই কপালে ভাজ ফেলে বলল,

—আপনি নাকি টাই বাধতে পারেন না তাহলে বাধলেন কিভাবে?

তীব্র মাথা চুলকে বোকা হেসে বলল,

—ঐ তোমাকে শিখাতে গিয়ে মনে পরে গিয়েছিলো।

—ভালোই হয়েছে।আমার শিখাও হয়েছে আপনার টাই ও বাধা হয়ে গেছে।এবার ভাগেন।

কথাটা বলেই রাই চলে যেতে নিলেই তীব্র রাই এর হাত ধরে গম্ভীর গলায় বলল,

—কোথায় যাচ্ছ?

রাই এতোক্ষন যতটুকু সাহস দেখিয়ে তীব্রর সাথে কথা বলতে পেরেছিলো তীব্রর গম্ভীর গলার কথা শুনে না ফুস হয়ে গেলো।রাই কাচুমাচু করে বলল,

—আপনার টাই বাধা তো শেষ।

রাই এর কথা শুনে তীব্র অপর হাত দিয়ে টাইটা খুলে রাই এর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

—এবার বেধে দাও।

রাই কপট রাগ দেখিয়ে বলল,

—ফাজলামো পেয়েছেন বাধা টাই খুলে ন‍্যাকা সেজে এখন আমায় বলছেন টাই বেধে দিতে।আমি পারবো না।

তীব্র,রাই এর দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই রাই শুকনো ঢোক গিলে তুতলিয়ে বলল,

—দিচ্ছি তো এভাবে তাকানোর কি আছে।

রাই এর কাজে তীব্র মনে মনে হাসতে লাগলো।রাই কাপাকাপা হাতে সুন্দর করে তীব্রর গলায় টাই বেধে দিতে লাগলো।রাই এর টাই বাধা শেষ হতেই তীব্র রাই এর কপালে আদর দিয়ে আয়নায় একবার নিজেকে দেখে নিয়ে অফিস ব‍্যাগটা হাতে নিয়ে বলল,

—প্রতিদিন এ কাজের কথা যেন আমার বলতে না হয়।ভালো বউ এর মত নিজের কাজ করে বকশিস নিয়ে নিবে।মনে থাকে যেন।

কথাটা বলেই তীব্র একটা বাকা হাসি দিয়ে চলে গেলো।রাই,তীব্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে তীব্রকে বকে উদ্ধার করতে লাগল।

_________

—বাহ্ অন্যের অধিকার ভাগ বসিয়ে বেশ ভালোই তো সুখে আছো দেখছি?

রাই সোফার উপর পা তুলে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে গল্পের বই পড়ছিলো।হঠাৎ কারো কথা কানে যেতেই বই থেকে চোখ তুলে দরজার দিকে তাকাতেই দেখে রুমা দরজায় দাড়িয়ে আছে।রুমাকে এই সময় এখানে দেখে রাই কিছুটা অবাক হল।তারপরে মুখের মাঝে হাসির রেখা টেনে বইটা বন্ধ করে সোফার রেখে উঠে দাড়িয়ে মিষ্টি শুরে বলল,

—আসসালামু আলাইকুম।কেমন আছেন আপু?

রুমা,রাই এর কথার উওর না দিয়ে রুমে ঢুকে পুরোরুমে চোখ বুলিয়ে দেখতে লাগলো।বেডের সাথে হেলান দিয়ে পা ঝুলিয়ে কুশন কোলে নিয়ে আরাম করে বসে বলল,

—তুমি তো খুব চালাক একটা মেয়ে।হুট করে আমার তীব্রর জীবনে ঊড়ে এসে ঘাপটি মেরে বসে রয়েছো? লোভী মেয়ে,লজ্জা শরম বলতে কি তোমার কিছু নেই নাকি?আমার আর তীব্রর ব‍্যাপারে সব তো জানো তার পরেও কেন এখানে পরে রয়েছো?বিয়ের দিন তো খুব বড় গলায় বলেছিলে আমাদের জীবন থেকে চলে যাবে।তাহলে এখনো এখানে পরে রয়েছো কেন?বড় লোক দেখে ইচ্ছা পাল্টে গেছে নাকি?

রুমার কথা শুনে রাই এর মাথা গরম হয়ে গেলে।তারপরেও মুখের মধ‍্যে লম্বা হাসির রেখা ঝুলিয়ে বলল,

—কি নিবেন আপু চা না কফি?

রাই এর কথা শুনে রুমা তাস‍্যিল‍্য হেসে বলল,

—কথা এড়িয়ে যাচ্ছ?আসলে তোমার মত লোভী মেয়ে বলবেই বা কি।কথা বলার মুখ আছে নাকি?

রাই মুচকি হেসে বলল,

—কি যে বলেন না আপু।আপনার মত মহান ব‍্যাক্তির কথা এড়িয়ে যাওয়ার মত সাহস আমার আছে বলুন।আচ্ছা একটা কথা না আমার ছোট মাথায় ঢুকছে না।আমি না হয় বড় লোক দেখে ছলচাতুড়ি করে এখানে পরে রয়েছি।তাহলে আপনি কেন তার জীবনে আসতে চাচ্ছেন?না মানে বুঝতেই পারছেন যেভাবেই হোক বিয়ে তো হয়ে গেছে। সেকেন্ড হেন্ড হয়ে গেছে।দুনিয়াতে এতো ছেলে থাকতে কেনই বা সেকেন্ড হেন্ড ছেলের দিকে নজর দিচ্ছেন?

রাই এর কথা শুনে রুমা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল।রাগি গলায় বলল,

—তুমি জানো আমি কে?আমাকে এসব বলার সাহস হল কিভাবে?ছোট লোক কোথাকার যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা।

রুমার কথাগুলো রাই এর শরীরে তীর এর মত বিধছে।ইচ্ছে করছে রুমাকে ইচ্ছেমত ঝেড়ে দিতে।কিন্তু রাই নিজের রাগটাকে কন্টোল করে অবাক হওয়ার ভান করে বলল,

—কি যে বলেন না আপু।আপনাকে চিনবো না কেন। আপনি হলের আমার উনির প‍্যাচের প‍্যাচ বোন।মানে আমার ননদ।তাই তো আপনাকে এতো সম্মান দিয়ে কথা বলছি।আমার চাচি কি বলে জানেন আপু?শশুর বাড়ির কুত্তাটাকেও নাকি আসতে যেতে সম্মান দিতে হয়।সেখানে তো আপনি একটা জলয‍্যান্ত মানুষ।(শেষের কথাটা রাই দাতে দাত চেপে বলল)আর কি যে বলছিলে🤔ওহ মনে পরেছে।আমার মুখ বড় দেখেই তো এমন বড় এক শোল মাছ গিলেছি।মুখ ছোট হলে তো কোন চুনোপুটি বেছে নিতাম বলুন।

রাই এর হাসি মুখের অপমানে রুমা রাগে রি রি করতে লাগলো।হাতের কুশনটা রাই এর দিকে ছুড়ে মেরে বলল,

—তোমাকে আমি দেখে নিব।

রাই লজ্জা পাওয়ার ভান করে বলল,

—সত‍্যি আপু আমি আপনার এতোই পছন্দ হয়ে গেছি আমায় আবার দেখতে আসবেন।কোন ব‍্যাপার না যখন দেখতে ইচ্ছে হবে তখন আবার চলে আসবেন কেমন।আমি আমার এই সুন্দর চেহারাটা নিয়ে আপনার সামনে উপস্থিত হয়ে যাব।

রুমা কিছু বলার মত কথা খুজে না পেয়ে রেগে মেগে ধুপধাপ পা ফেলে সেখান থেকে চলে গেলো।রাই,রুমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভেঙচি কেটে বলল,

—হুহ আসছে আমার সাথে লাগতে।আমি ভালোর ভালো খারাপের জম।এমন ভাবে ডিটারজেন ছাড়া ধুয়ে দিমু জীবনে দ্বিতীয় বার লাগতে আসার সাহসও পাবে না।

__________

ফরিদ খান নিজের কেবিনে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে অফিসের কাজ করছে।একটু পর পর বাম হাতের সাহায্যে চশমাটা ঠিক করে নিচ্ছে।তীব্র দরজায় নক করে ভিতরে প্রবেশ করে বলল,

—বাবা আমায় ডেকেছেন?

ফরিদ খান ফাইল থেকে চোখ উঠিয়ে তীব্রর দিকে তাকালো।ইশারায় তীব্রকে বসতে বলে চোখের থেকে চশমাটা খুলে টেবিলের উপর রাখলো।তীব্র বিনা বাক‍্যে চেয়ার টেনে টেবিলে বসে পরল।তীব্র বসতেই ফরিদ খান তীব্রর দিকে প্রশ্ন ছুড়লো,

—তুমি নাকি বউ মায়ের ভার্সিটি চেঞ্জ করতে চাচ্ছো?

ফরিদ খানের প্রশ্নে তীব্র ছোট করে উওর দিল,

—হুম চাচ্ছি।

—কারন জানতে পারি?

—কারনটা তোমার অজানা নয় বাবা।

তীব্রর সোজাসাপ্টা জবাবে ফরিদ খান একটু চুপ করে থেকে গম্ভীর হয়ে বলল,

—বউ মা এই ব‍্যাপারে কিছু জানে?

—না।ওকে কিছু জিগ্যেস করিনি।

—তাকে না জানিয়ে কাজটা করা কি ঠিক হবে?

তীব্র কিছু বলার আগেই তিহান কেবিনে ঢুকে ফোড়ন কেটে বলল,

—বুঝলে বড় বাবা তোমার ছেলে অনেক বুদ্ধিমান।বউ এর পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ আছে কিনা সেটা জানতে ফেক ভর্তি ফরম বানিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো।

তিহান এর কথা শুনে ফরিদ খান তিহান দিকে তাকিয়ে আগ্রহ নিয়ে বলল,

—তারপর?

তিহান,তীব্রর পাশে চেয়ার টেনে বসে বলল,

—তারপর আবার কি?ভাবি তো ভাইয়াকে জমের মত ভয় পায়।আসলে ভয় পাবারই কথা যা ব‍্যবহার করে ভাবির সাথে।সারাক্ষন শুধু ধমকায়।আমার ভাবি বেচারিও না দেখেই বিনা বাক‍্যে সাইন করে দিয়েছে।যখন জানতে চেয়েছে এটা কিসের পেপার তখন তোমার ছেলে কি বলেছে জানো?

ফরিদ খান কপালে ভাজ ফেলে তীব্রর দিকে তাকিয়ে বলল,

—কি বলেছে ও?

তিহান আফসোসের সুরে বলল,

—আর বলো না বড় বাবা!বলেছে এটা ডিভোর্স পেপার।তাতেই তো আমার ইনোসেন্ট ভাবি কান্না কাটি করে অর্ধেক হয়ে গেছে।

তিহানের কথা শেষ হতে না হতেই ফরিদ খান গম্ভীর গলায় বলল,

—তীব্র!তিহান যা বলছে সব কি সত‍্যি?

তীব্র, তিহানের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলল,

—আসলে বাবা…..।

তীব্রর কথার মাঝেই ফরিদ খান গর্জে উঠে বলল,

—তোমায় দ্বারা এটা আশা করি নি তীব্র।বিয়ের মত একটা পবিত্র সম্পর্ক নিয়ে এসব মজা ঠিক না।বিয়েটা কোন পুতুল খেলা না।ইচ্ছে হলে খেলবে তো ইচ্ছে হলে দূরে ছুড়ে ফেলবে।

তীব্র,তিহান কে চোখ দিয়ে শাষিয়ে নিচু আওয়াজে বলল,

—সরি বাবা আর এমন হবে না।

ফরিদ খান পাশে রাখা পানি ভর্তি গ্লাসের উপর থেকে ঢাকনা সরিয়ে গ্লাস হাতে তুলে নিল।ঢকঢক করে পানি পান করে গলা ভিজিয়ে বড় করে নিশ্বাস ফেলে নিজেকে কিছুটা শান্ত করে নিয়ে বলল,

—যার জন‍্য ডেকেছিলাম,কয়েক মাস পরেই বউ মার ফাইনাল পরিক্ষা।আমার মতে এই কয় মাসের জন‍্য ভার্সিটি চেঞ্জ না করাই বেটার।কেমন স্বামী হয়েছে তুমি যে শক্রর ভয়ে নিজের স্ত্রীকে লুকিয়ে রাখবে।ভয় কে জয় করতে শিখ।নিজে বউ মাকে আসস্থ দেও তুমি তাকে সেফ রাখবে।বউ মায়ের মনে নিজের জন‍্য সেই বিশ্বাস ভরসার স্থান তৈরি কর।তাছাড়া এমন তো নয় ভার্সিটিতে প্রতিদিনই যেতে হবে।যে দুদিন যাবে তুমি সাথে করে নিয়ে যাবে আবার নিয়ে আসবে।তিহানের বউ আর বউ মাকে এক সাথে ভালো কোন টিউশন রেখে দাও।তাহলেই তো হয়।মনে রাখবে শক্রর ভয়ে লুকিয়ে থাকার মাঝে কোন কল‍্যান নেই।ভয় কে জয় করে বাচতে পারাটাই বড় বাচা।আমার যেটা ভালো মনে হয়েছে সেটা আমি জানালাম।বাকিটা তোমার ইচ্ছে।

___________

মদ খেয়ে মাতাল হয়ে এলোমেলো পা ফেলে রাতের বেলা রাস্তা দিয়ে হাটছে ফাহাদ।প্রতিদিন নিজের লোকদের জন‍্য ভালো করে নেশা করতে না পারার কারনে আজ তাদের না জানিয়ে একাই বের হয়েছে সে।ফাহাদ এলোমেলো পা ফেলছে আর বিরবির করে বলছে,

—পাখি!আমার রাই পাখি!কোথায় ঊড়ে গেলে তুমি?একবার শুধু একবার আমার কাছে ধরা দাও।দেখবে এবার আর তোমায় কষ্ট দিবো না।খুব যতনে মনের খাচায় বন্দি করে রাখবো।যাতে ঊড়ে যেতে না পারো।তুমি কেন আমার ভালোবাসা বুঝলে না পাখি?কেন বুঝলে না।আমি যে পারছিনা পাখি তোমায় না দেখে তোমার কথা না শুনে থাকতে।আমার যে ভীষন কষ্ট হচ্ছে।তোমার কি একটুও আমার প্রতি মায়া হয় না?একবারো কি আমার কথা মনে পরে না?চলে আসো পাখি প্লিজ চলে আসো।একবার এসে দেখে যাও তোমার বিরহে আমি কেমন তিলে তিলে মরছি।তোমা….।

ফাহাদ আর কিছু বলার আগেই পিছন থেকে একটা গাড়ি এসে ফাহাদকে ধাক্কা দিয়েই ছুটে চলে গেলো।নির্জন রাতে রাস্তায় পরে রইল ফাহাদ এর নিথর দেহ।
#মেঘের_ভেলায়_চড়ে
#Part_17
#Ariyana_Nur

বেডের মধ‍্যে জড়সড় হয়ে ঘুমিয়ে রয়েছে রাই।হঠাৎ ঘুমের মধ‍্যে চোখের উপর লাইটের আলো পরতেই রাই এর ঘুম ছুটে গেলে।রাই পিট পিট করে চোখ খুলে সামনে তাকাতেই দেখলো তীব্র কাবার্ডের সামনে দাড়িয়ে কিছু একটা করছে।তীব্র কাবার্ড থেকে টিশার্ট,টাউজার বের করে কাবার্ড লাগিয়ে ঘুড়ে দাড়াতেই দেখে রাই চোখের উপর হাত রেখে কপালে ভাজ ফেলে শুয়ে রয়েছে।লাইটের কারনে যে রাই এর কাচা ঘুম ভেঙে গেছে সেটা বুঝতে তীব্রর দেড়ি হল না।

—সরি আমার কারনে তোমার কাচা ঘুমটা ভেঙে গেলে।আসলে বুঝতে পারিনি আলোতে তোমার সমস‍্যা হবে।আমি এখনি লাইট টা বন্ধ করে দিচ্ছি।

তীব্রর কথা শুনে রাই ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে উঠল,

—সমস‍্যা নেই।আপনি আপনার কাজ করুন।লাইট অফ করতে হবে না।আমি…..।

কথাটা শেষ করার আগেই তীব্রর দিকে চোখ পরতেই রাই এর চোখ থেকে ঘুম উধাও হয়ে গেলো।তড়িঘড়ি বেড থেকে নেমে তীব্রর সামনে এসে উওেজিত হয়ে বলল,

—কি হয়েছে আপনার?আপনার শার্টে এতো রক্ত কেন?আপনি ঠিক আছেন তো?

রাই কে উওেজিত হতে দেখে তীব্র সান্ত্বনা দিয়ে বলল,

—রিলেক্স।উওেজিত হওয়ার কিছুই নেই।আমি ঠিক আছি।আমার কিছুই হইনি।

তীব্রর কথায় ও যেন রাই নিজেকে শান্ত করতে পারলো না।পূনরায় উওেজিত কন্ঠে বলে উঠল,

—কিছু না হলে শার্টে এতো রক্ত লাগলো কিভাবে?

তীব্র নিজের শার্ট দেখিয়ে বলল,

—এতো হাইপার হওয়ার কিছু নেই।এগুলো আমার রক্ত না।আসার সময় দেখি রাস্তায় একজন লোক এক্সিডেন্ট করে পরে রয়েছে।তাকে সাহায্য করতে গিয়েই রক্ত লেগেছে।

এক্সিডেন্টের কথা শুনে রাই এর মুখটা মলিন হয়ে গেলো।নিচু কন্ঠে বলল,

—ওহ।আমি ভাবলাম আপনার কিছু….।

কথাটা সম্পূর্ণ না করে রাই চুপ হয়ে গেলো।

—আমাকে এভাবে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলে?

তীব্রর কথা শুনে রাই,তীব্রর দিকে তাকাতেই দেখলো তীব্র ঠোটের কোনে হাসির রেখা টেনে তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।রাই আমতা আমতা করে বলল,

—অনেক রাত হয়ে গেছে।আপনি ফ্রেস হয়ে আসুন।

কথাটা বলেই রাই সরে গেলো।তীব্রও কথা না বাড়িয়ে ফ্রেস হতে চলে গেলে।তীব্র ফ্রেস হয়ে এসে দেখে রাই বেডের সাথে হেলান দিয়ে চোখের উপর হাত রেখে বসে রয়েছে।তীব্র কোন কথা না বলে রাই এর সামনে বসে রাই এর ওড়নার কোনা দিয়ে মাথা মুছতে লাগলো।তীব্রর কাজে রাই বিরক্ত হয়ে বলল,

—কি করছেন কি?গলায় তোয়ালে ঝুলিয়ে রেখেও আমার ওড়না দিয়ে মাথা মুছতে হবে?

তীব্র একটা ভূবন ভূলানো হাসি দিয়ে বলল,

—তোমার ওড়না দিয়ে মাথা না মুছলে মনে হয় মাথাই মোছা হয়নি।তাই তো তোয়ালে রেখে তোমার ওড়না দিয়েই তোয়ালের কাজ চালাই।

রাই দাতে দাত চেপে বলল,

—এর পর থেকে ওড়না দিয়ে নাক মুছে রাখবো।তখন দেখবো কিভাবে মাথা মুছেন।

—তো তাতে কি হয়েছে।নাকই তো মুছবে।তখন না হয় এক কাজে দু’কাজ হয়ে যাবে।মাথা মোছাও হবে সাথে জেল ও লাগানো হয়ে যাবে।কষ্ট করে আর জেল লাগা….. ।

রাই,তীব্রকে পুরো কথা শেষ করতে না দিয়েই বলল,

—ইয়াক ছি।আপনি এতো খবিশ কেন?কি সব কথা বলছেন?

—যাহ বাবা শুরু করলে তুমি আর খবিশ হয়ে গেলাম আমি?

রাই কিছু না বলে চোখ মুখ কুচকে বসে রইল।তীব্র কিছুক্ষন তীক্ষ্ম চোখে রাই কে পর্যবেক্ষণ করে রাই এর গালে হাত রেখে শীতল কন্ঠে বলল,

—কি হয়েছে তোমার?চেহারা এমন দেখা যাচ্ছে কেন?শরীর খারাপ?

হঠাৎ করে তীব্রর ঠান্ডা হাতের স্পর্স গালে পেতেই রাই কেপে উঠল।তীব্র দিকে তাকাতেই দেখে তীব্র তার দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে রয়েছে।রাই মিনমিনে বলল,

—কিছু হয়নি।আমি ঠিক আছি?

—ঠিক আছো কিনা সেটা জানতে চাইনি কি হয়েছে সেটা বল।

রাই জানে তীব্র তার পেটের কথা বের করেই ছাড়বে তাই কথা না বাড়িয়ে বলল,

—ওই একটু মাথা ব‍্যাথা করছে।

—মেডিসিন নিয়েছো?

—না ঘুমিয়ে ছিলাম।

তীব্র রাই এর দিকে তীক্ষ্ম চোখে তাকিয়ে বলল,

—ডিনার করেছো?

রাই এর মাথা ব‍্যাথা কারনে সে এশার এর নামাজ পরেই ঘুমিয়ে পরেছিলো।ফাইজা, মুনিয়া বেগম খাবার খাওয়ার জন‍্য ডাকাডাকি করলে সে জানায় পরে খাবে।
তীব্রর কথা এড়িয়ে যাওয়ার জন‍্য রাই আমতা আমতা করে বলল,

—ঘুমোলেই ঠিক হয়ে যাবে।

রাই এর কথা শুনে তীব্র যা বোঝার বুঝে গেছে।তীব্র কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।একটু পর হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে রুমে ঢুকে দেখলো রাই চোখের উপর হাত রেখে সুয়ে রয়েছে।তীব্র খাবারের প্লেটটা বেড সাইড টেবিলের উপর রেখে রাই এর সামনে বসল।তীব্রকে নিজের পাশে বসতে দেখেই রাই সোয়া থেকে উঠে বসল।কিছু বলার আগেই তীব্র গম্ভীর কন্ঠে বলল,

—কোন কথা না।চুপচাপ খাবার টা খেয়ে মেডিসিন নিবে।

রাই যতই তীব্রর সাথে সাহস দেখাতে যাক না কেন তীব্রর গম্ভীর গলার কথা শুনলেই সে চুপসে যায়।রাই অসহায় ফেস করে তীব্রর দিকে তাকিয়ে রইল।তীব্র সেটা উপেক্ষা করে নিজের হাতে খাবারের প্লেট তুলে নিল।রাই মিনমিনে গলায় বলল,

—আমি খাব ন…..।

কথাটা শেষ করার আগেই তীব্র চোখ রাঙিয়ে রাই এর দিকে তাকাতেই রাই চুপসে গেল।ভালো মেয়ের মত তীব্রর হাতে খেতে লাগল।রাই তীব্রর হাতে খাবার খেয়ে মেডিসিন নিয়ে তীব্রর কথা মত শুয়ে পরল।তীব্র রুমের লাইট অফ করে দিয়ে রাই এর মাথার সামনে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,

—ঘুমাও আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।

তীব্র কথা মত রাই চোখ বন্ধ করতেই চোখ দিয়ে এক ফোটা জল গড়িয়ে পরল।তীব্র দেখার রাই চোখের জল মুছে নিল।তীব্রর সকল ব‍্যবহারেই রাই তীব্রর প্রতি মুগ্ধ।রাই এর প্রতি তীব্র অধিকার খাটানো,ছোট ছোট কেয়ার,খুনশুটি সব কিছুতেই রাই এর মাঝে আলাদা ভালোলাগা কাজ করে।
রাই আস্তে আস্তে তীব্র নামক মানুষটির প্রতি দূর্বল হয়ে যে পরছে সেটা সে বুঝেও মুখে স্বীকার করতে নারাজ।

__________

হাসপাতের সাদা ধবধবে বেডের উপর শুয়ে রয়েছে ফাহাদ।শরীরের বিভিন্ন যায়গায় রয়েছে জখমের চিহ্ন। মাথায় মোটা করে বেন্ডেজ করা।পিটপিট করে চোখ খুলতেই ফাহাদ নিজেকে বেডে আবিস্কার করল।আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিজের অবস্থান বুঝার চেষ্টা করতে লাগলো।হাত নাড়াতেই হাতে টান লাগল।হাতের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো হাতে ক‍্যানুলা লাগানো।ফাহাদ এর মাথাটা কেমন ভাড় ভাড় লাগছে।এখানে কিভাবে এল কিছুই তার মাথায় ডুকছে না।সে তো রাতের বেলা ড্রিস করে এটা বের হয়েছিলো।তারপরের কিছুই তার মনে নেই।

—উঠে গেছো!

একটা মিষ্টি কন্ঠের গলার আওয়াজ কানে আসতেই ফাহাদ ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকাতেই দেখতে পেলো সেদিনের সেই মেয়েটা মলিন একটা হাসি দিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছে।মেয়েটি তার সামনে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে মিষ্টি কন্ঠে বলল,

—এখন কেমন লাগছে?

মেয়েটির কথার উওর না দিয়ে ফাহাদ রক্ত চক্ষু করে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলল,

—আমি এখানে কেন?

—মাঝরাতে টাল হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুড়ে বেড়ালে এখানে থাকবে না তো কোথায় থাকবে শুনি?তোমার ভাগ‍্য ভালো এই যাত্রায় আমার জন‍্য বেচে গেছো।আমি না থাকলে এতোক্ষনে…।

কথাগুলো বলতে বলতে মেয়েটি ফুপিয়ে কেদে উঠল।ফাহাদ ধমক দিয়ে বলল,

—এই মেয়ে!একদম এই সব ন‍্যাকামি আমার সামনে করতে আসবে না।ভালোয় ভালোয় বল আমি এখানে কি করে এলাম।

মেয়েটি ফাহাদের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বলল,

—আমার এই কান্না তোমার কাছে ন‍্যাকামি মনে হচ্ছে?

ফাহাদ বিরক্ত হয়ে কিছু বলার আগেই একজন নার্স দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করে বলল,

—বাচা গেলো পেশেন্টের জ্ঞান ফিরেছে।ম‍্যাম বলেছিলাম না স‍্যার ঠিক হয়ে যাবে।দেখলেন তো আমার কথাই ঠিক হল।স‍্যার আপনি খুব লাকি আপনি ম‍্যাম এর মত জীবনসঙ্গী পেয়েছেন।কালকের রাত থেকে ম‍্যাম আপনার জন‍্য আমাদের অবস্থা নাজেহাল করে দিয়েছে।আপনি ঠিক আছেন কিনা আপনার কখন জ্ঞান ফিরবে এ সব জিগ্গেস করতে করতে আমাদের কান ব‍্যাথা করে ফেলেছে।সাথে কান্না কাটি করে নিজের কি অবস্থা করেছে দেখুন একবার।

ফাহাদ নার্সটির দিকে তীক্ষ্ম চোখে তাকিয়ে বলল,

—গুনগানটা একটু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে না?

ফাহাদ এর কথা শুনে নার্সটি ভ‍্যাবাচ‍্যাকা খেয়ে গেলো।মেয়েটি নাক টেনে বলল,

—কি যে বলেন না সিস্টার!যার কাছে আমার ভালোবাসারই কোন দাম নেই সে আবার আমার কেয়ারের কি দাম দিবে।

মেয়েটি চোখ মুছে কন্দনরত গলায় বলল,

—ভালো থেকো জান। নিজের খেয়াল রেখ।একটা জরুরি কাজ আছে তাই যাচ্ছি।একটু পর চলে আসবো।

নার্স এর দিকে ঘুড়ে নরম সুরে বলল,

—একে দেখে রাখবেন।এর সেবায় যেন বিন্দুমাত্র ভূলক্রটি না হয়।তাহলে কিন্তু….।বুঝতেই তো পারছেন।মনে থাকবে?

মেয়েটি কথাটা নরম গলায় বললেও মেয়েটির কথা শুনে নার্স এর শরীর কাপুনি দিয়ে উঠল।মুখে কিছু বলতে না পেরে মাথা নাড়িয়ে হ‍্যা বলল।মেয়েটির নার্স এর দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে সেখান থেকে চলে গেলো।

_________

অজ্ঞান অবস্থায় চেয়ারের সাথে বাধা অবস্থায় রয়েছে একজন লোক।লোকটি হল সেই ড্রাইভার যে ফাহাদকে মাঝরাস্তায় এক্সিডেন্ট করেছিলো।তার মুখোমুখি পায়ের উপর পা তুলে বসে হাতের থাকা ছুড়িটা ঘুড়িয়ে চলেছে একজন মেয়ে।মেয়েটির ইশারা করতেই পাশের একজন লোক কার ড্রাইভারের উপর পানি ছুড়ে মারল।পানির ঝাপটা লাগাতেই লোকটার জ্ঞান ফিরে এল।চোখ মেলতেই সামনে মেয়েটাকে বসে থাকতে দেখে উওেজিত কন্ঠে বলল,

—ম‍্যাম আপনি এসেছেন।দেখুন না ম‍্যাম!আমি আমার প‍্যামেন্ট নিতে এসেছি আপনার লোকেরা আমার ধরে বেধে রেখেছে।

মেয়েটি হাতের ছুড়ি ঘুড়াতে ঘুড়াতে শীতল কন্ঠে বলল,

—কিসের প‍্যামেন্ট?

মেয়েটির কথা শুনে লোকটি ভ‍্যাবাচ‍্যাকা খেয়ে গেল।অবাক কন্ঠে বলল,

—কিসের প‍্যামেন্ট মানে?আপনি ভূলে গেছেন ম‍্যাম?আপনার কথা মতই তো ঐ স‍্যারকে এক্সিডেন্ট করালাম।যার জন‍্য আপনি আমায় মোটা অংকের টাকা দিবেন বলেছিলেন।

—কিভাবে এক্সিডেন্ট করাতে বলেছিলাম?

মেয়েটির এমন ব‍্যবহারে লোকটি তরতর করে ঘামতে লাগলো।ঘাবরে যাওয়া গলায় বলল,

—বলিছেল এমন পিছন থেকে হালকার উপর ধাক্কা দিতে।বেশি আঘাত যাতে না পায়।

মেয়েটি লোকটার দিকে রক্ত চক্ষু করে তাকিয়ে বলল,

—তাহলে ও এতো বেশি আঘাত পেল কেন? হাত পায়ে এতো জখম হল কেন?

—ম‍্যাম আমি তো আস্তের উপরই ধাক্কা দিয়েছিলাম স‍্যারকে।স‍্যার মাতাল ছিলো তার উপরে মাথায় চোট লাগাতে সাথে সাথেই অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলো।যেখানে পরেছে সেখানে গাড়ির কাচ ভাঙা থাকায় সেগুলো শরীরে ফুটে গেছে।আমি তো অতো কিছু খেয়ার করে তখন ধাক্কা দেই নি।

—খেয়াল করা দরকার ছিল?

লোকটা শুকনো ঢোক গিলে বলল,

—ভূল হয়ে গেছে ম‍্যাম।

মেয়েটি হাতের ছুড়িটি লোকটা দিকে ছুড়ে মারল।যা লোকটার উপর দিয়ে গিয়ে দেয়ারের সাথে বারি লেগে নিচে পরে গেল।মেয়েটি চেচিয়ে বলল,

—ভূল মাই ফুট।তোমার এই একটা ভূলের কারনে জানো আমার জান কত কষ্ট পাচ্ছে?ওর ঐ জখম ভরা শরীর দেখে আমার কতটা কষ্ট হচ্ছে?ওর ঐ ক্ষতর কারনে ও যতটা কষ্ট পাচ্ছে তোমাকে ততটা কষ্ট না দিয়ে তো আমি শান্তি পাবো না।গার্ডস(চেচিয়ে) তোমাদের স‍্যারের শরীরে যতগুলো ক্ষত হয়েছে এর শরীরে আমি ঠিক ততগুলো ক্ষত দেখতে চাই।

কথাগুলো বলেই মেয়েটা গটগট করে চলে গেলো।মেয়েটি যাওয়ার দিকে তাকিয়ে লোকটা অনমনে বলে উঠল,

—এ কোন পাগলের খপ্পরে পরলাম?নিজেই এক্সিডেন্ট করিয়ে নিজেই এখন দরদ দেখাচ্ছে?

#চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here