রংধনুর মিল পর্ব -০৫

#রংধনুর_মিল
#পর্বঃ০৫
#মাহিয়া_মুন

“শ্যামাজ্ঞী,,,,”
পুরুষ নালী ঠান্ডা শীতল নেশা মিশ্রিত কণ্ঠে শ্যামাজ্ঞী নামটি শুনতেই যেন শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল নুজহাতের। ওড়নার মুঠো শক্ত করে চেপে ধরলো। এই নামটি শুনলেই কি যেন হয়ে যায় তার। নিজের উপর নিজেরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। নাম না জানা কোনো এক অচিনপুরে যেন হারিয়ে যায়। শত শত অনুভূতিতে রাঙানো প্রজাপতি গুলো আশেপাশে উড়ে বেড়ায়। নিজেদের মুক্ত করতে পেরে তারা যেন আজ স্বাধীন।
“কি হলো শ্যামাজ্ঞী, পিছনে তাকাও।”
আবারও সেই নেশা মিশ্রিত কণ্ঠ। আসলেই কি নেশা মিশ্রিত নাকি নুজহাতের কাছেই এরকম মনে হয়। পরপর কয়েকবার ঢোক গিলে পিছনে ফিরতেই নজরে আসলো ফর্সা গায়ের মানব টিকে। ইসস, এই পুরুষটাকে নুজহাতের কাছে এতো ভালো লাগে কেন। আর লাগবে নাই বা কেন। একজন সুপুরুষের প্রায় সকল বৈশিষ্ট্যই যে এই ছেলেটির মাঝে বিদ্যমান। নাহ্ নাহ্, একটু বেশিই বৈশিষ্ট্য নুজহাতের চোখে পড়ে। এরকমটা কি সবার সাথে হয় নাকি নুজহাতের সাথেই হচ্ছে।
ভাবনার মাঝেই চোখের সামনে কারো চুটকি বাজানোর ফলে কিছুটা চমকে উঠলো। চোখ বড় বড় করে সামনে তাকাতেই দেখলো সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানবটি মিটিমিটি হেসে যাচ্ছে। এভাবে হাসার কি হলো। সে নাহয় একটু ভাবনা জগতে পাড়ি জমিয়েছিল। কিন্তু তাও তো এই ছেলে টাকে নিয়েই। ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলো,
“”রাফি ভাইয়া আপনি এভাবে হাসছেন কেন?”

হ্যা, ছেলেটির নাম রাফি। এই কলেজেরই তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সেই সাথে ডানপিঠে দলের লিডারও বলা যায়। বেশ ভালো গানও করে। যার কারণে কম বেশি অনেকের কাছেই রয়েছে তার জনপ্রিয়তা। দেখতেও মাশা আল্লাহ। হাজারো মেয়েদের ক্রাশ খাওয়ানোর মতোই। বেশ হাসিখুশি একটি ছেলে। সহজেই যে কারো মন জয় করে নিতে সক্ষম। তবে সে যার মনের মাঝে একটি ছোটো কুটির বানাতে চায়, সেই তাকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরায়। তাই ভেবে নিয়েছে, আজ এর একটা বিহিত করেই ছাড়বে।

রাফি নিজের হাসি থামিয়ে নুজহাতের দিকে কিছুটা ঝুঁকে বলে উঠলো,
“বাহ্ রে, হাসবো নাহ বুঝি। এখন তো আমারি হাসার সময়। আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রমণী যেভাবে আমাকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। আমার তো খুব লজ্জা লাগছে। আমার না লজ্জা লাগলেই হাসি পায়।”
রাফির বলার ধরন দেখে নুজহাতের ভীষণ লজ্জা লাগলো। ছেলেটা কিভাবে তাকে এখন লজ্জায় ফেলছে। ইসস কেন যে আসতে গেল।
আমতা আমতা করে বলে উঠলো,
“মো,,,, মোটেই নাহ। আমিতো ভাবছিলাম। হ্যা ভাবছিলাম একটি বিষয় নিয়ে। ভাবনার মাঝেই হয়তো আপনার দিকে চোখ চলে গেছে।”
রাফি পুনরায় হেসে নুজহাতের দিকে আগাতে আগাতে বলে উঠলো,
“আচ্ছা ভাবছিলে। কি ভাবছিলে আমার দিকে তাকিয়ে। ওহহো বুঝেছি, আমাকে নিয়েই ভাবছিলে তাইনা তাইনা। কি ভাবছিলে আমাকে নিয়ে শ্যামাজ্ঞী।”
নুজহাত পিছাতে পিছাতে বলে উঠলো,
“মো,,, মোটেই আপনাকে নিয়ে ভাবছিলাম নাহ। আপনি আমাকে এখানে কেন ডেকে পাঠালেন। আর এভাবে আগাচ্ছেন কেন?”
“তুমি বুঝো নাহ কেন ডেকে পাঠিয়েছি। আর তুমি পিছনে যাচ্ছো কেন, তাইতো আমাকে আগাতে হচ্ছে।”
নুজহাত কিছু বলতে নিবে তার আগেই বুঝতে পারলো পিছনে থাকা আলমারির সাথে তার পিঠ ঠেকে গেছে।
রাফি মুচকি হেসে যথেষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে নুজহাতের সামনে দাঁড়ালো। পিছনে থাকা ডান হাত সামনে আনতেই নুজহাত লক্ষ্য করলো রাফির হাতে একটি লাল গোলাপ। বুঝতে অসুবিধা হয় নি যে এই গোলাপ টিই তবে কুড়ি নম্বর গোলাপ। ভাবনার মাঝেই ফুটে উঠলো গত পরশু কলেজে ঢুকার সময়ের ঘটনাটি।
******
এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর ঢাকা নিজের নানু বাড়িতে কিছুদিনের জন্যে বেড়াতে গিয়েছিল নুজহাত। সেখানে তিন দিনের মাথায় এক বিকেলে নিজের খালাতো বোনের সাথে হাঁটতে হাঁটতে পাশের ফুটবল খেলার মাঠে গিয়ে দাড়িয়েছিল। তখন মাঠ টিতে অনেক ছেলেরা ফুটবল খেলছিল।
নুজহাত এবং তার খালাতো বোন দিনা মাঠের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিল। তখনি একটি বল ঠিক এসে নুজহাতের মাথায় লাগে। খুব ব্যাথা পায়। মাথা ধরে নিচে বসে পরে। ততক্ষনে ছেলেগুলো নুজহাতের কাছে এসে বসে পরে। কয়েকটি ছেলে খুব দুঃখী কণ্ঠে বলে উঠলো,
“আমরা খুব দুঃখিত আপু। আমরা আসলে খেলার মাঝে খেয়াল করি নি।”
নুজহাত মাথা থেকে হাত সরিয়ে ছেলেগুলোর দিকে তাকিয়ে মেকি হেসে বলে উঠলো,
“নাহ্ নাহ ঠিক আছে। আসলে আমরাই আপনাদের খেলার কাছাকাছি চলে এসেছিলাম।”
এই বলে নুজহাত উঠতে নিতেই ভীড়ের মাঝে একটি ছেলে নুজহাতের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল।
নিজের সামনে হঠাৎ কারো হাত দেখতে পেয়ে অনেকটাই চমকে ঊঠে নুজহাত। দ্রুত সামনে তাকাতেই দেখতে পায় একটি সুদর্শন ছেলে তার দিকে হাত বাড়িয়ে রেখেছে। নুজহাতের তাকানোর ফলে ছেলেটি মুচকি হেসে বলে উঠলো,
“হাত টা ধরে উঠে পরুন শ্যামাজ্ঞী। নাহলে আবার ঘুরে টুরে পরেও যেতে পারেন।”
শ্যামাজ্ঞী নামটা শুনতেই ভ্রু কুঁচকে গেল নুজহাতের। তার নাম কি শ্যামাজ্ঞী নাকি। তবে নামটা খুব একটা খারাপও লাগলো নাহ নুজহাতের কাছে।
নুজহাত কিছু না বলে দিনার হাত ধরে বসা থেকে উঠে পরলো। সেখানে আর না দাড়িয়ে দিনাকে নিয়েই বাসায় চলে আসলো।
এভাবেই প্রায় বিকেলে দেখা হয়ে যেত ছেলেটির সাথে। ছেলেটি হাসি মুখেই তাকে শ্যামাজ্ঞী বলে ডেকে উঠতো। নুজহাতের কাছে এই বিষয়টা ভালো ও লাগতো নাহ আবার খারাপ ও লাগতো নাহ এবং ছেলেটা আর কেউ নয় বরং রাফিই ছিলো।
এতক্ষন পর্যন্ত নুজহাত কথাগুলো বলছিল তাসমিয়া কে। তাসমিয়া তাদের নতুন কলেজ ফ্রেন্ড। আজ প্রায় দু মাস এর সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে তার, আবিদ এবং তাকিয়ার। রাফির বিষয়ে উক্ত ঘটনা তাসমিয়া কে কিছুতেই বলতো নাহ নুজহাত। তবে এই দু মাসে এই ঘটনা পুরো কলেজ ছড়িয়ে পড়েছে। পুরো কলেজের জুনিয়র সিনিয়র সকলে জানে যে প্রথম বর্ষে পড়ুয়া নুজহাত নামের একটি মেয়েকে ডানপিঠে দলের লিডার রাফি ভালোবাসে। এবং এই ঘটনা স্বয়ং রাফিই পুরো কলেজ করেছে। বিষয়টাতে আবিদ ভীষন রেগে গিয়েছিল। তবে সিনিয়র দের সাথে বেয়াদবি হবে ভেবে আর কিছু বলে নি। তবে নুজহাত কে ভীষন বকেছে, সেই সাথে সাবধানও করে দিয়েছে যাতে ভুলেও দ্বিতীয় বার এসব প্রেমের নাম মুখে না নেয়। নুজহাতও তখন সম্মতি জানিয়েছিল আবিদের কথায়। তবে এই দু মাসে মন একেবারেই ঘুরে গেছে রাফির পাগলামো কর্মকাণ্ডে।
“তারপর তুই চলে আসার আগে বলে আসিস নি রাফি ভাইয়াকে?”
নুজহাত কপাল কুঁচকে বলে উঠলো,
“আমি কেনো তাকে বলতে যাবো। তার সাথে কি আমার কোনো সম্পর্ক ছিল নাকি? আমি আসার আগের দিন বিকেলেও দেখা হয়েছিল। তবে কেন যেন সেদিন আর কিছু বলে নি। কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে চলে গেছে। আর তার পর দিনই তো চলে আসছি। নবীন বরণ এর দিনই আবার দেখা হলো ওনার সাথে। আর তারপর থেকেই তো দেখছিস কি হয়ে আসছে। পুরো কলেজ জেনে গেছে। সিনিয়র আপু ভাইয়ারা দেখা হলেই এখন ভাবি বলে ডাক দেয়। কেমন লাগে বলতো।”
তাসমিয়া মুচকি হেসে গলা খাঁকারি দিয়ে বলে উঠলো,
“কেমন লাগে সেটা তো তুমি তোমার কথার মধ্যেই প্রকাশ করে দিয়েছো ভাবি……”
নুজহাত সরু চোখে তাসমিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
“মানি,,,”
“এইযে কথার মাঝে তুই রাফি ভাইয়াকে উনি সম্বোধন করলি। আহহারে কি ভালুপাসা। আজ আমারি একটা উনি নেই।”
নুজহাত কিছু বলতে গিয়ে সামনে একটি ছেলের উপস্থিতি নজরে আসতেই থেমে গেল। দুজন কথা বলতে বলতে কখন যে কলেজের মধ্যে ঢুকে পড়েছে খেয়াল করে নি। আজ আবিদ এবং তাকিয়া দুজনের একজনও কলেজে আসে নি। আবিদ আজ দু দিন টানা অসুস্থ্য। ছেলেটা একটু ঠান্ডা পেলেই অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। যদিও এই অভ্যাসটা নুজহাতেরও আছে। তাকিয়া আজ সকালে জানিয়েছে সে আসতে পারবে নাহ। নুজহাতও আসতে চায় নি। তবে কি মনে করে যেন আসলো। আসলে সে কেন এসেছে সেটা নিজেও জানেনা। যেই মেয়ে কিনা আবিদ তাকিয়া ব্যাতিত স্কুল অথবা কলেজের আঙিনায়ও পা রাখতো নাহ। সেই মেয়ে আজ তাদের ছাড়া কলেজ এসেছে।
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটি চুপচাপ নুজহাতের দিকে একটি তাজা লাল গোলাপ বাড়িয়ে দিল। নুজহাত অবাক চোখে ছেলেটির দিকে তাকিয়ে রইলো।
নুজহাতের অবাক চাহনি পরখ করে ছেলেটি দ্রুত কণ্ঠে বলে উঠলো,
“আপু গোলাপ টি নিয়ে কিছুটা সামনে আগান দয়া করে।”
এই বলে ছেলেটি জোর করেই নুজহাতের হাতে ফুলটি গুঁজে দিয়ে সেখান থেকে চলে গেল। নুজহাত যেন পুরোপুরি বোকা বনে গিয়েছে। বলা নেই কওয়া নেই, একটি ফুল দিয়ে এসে কিনা বলে সামনে আগাতে।
“ছেলেটি যেহেতু বলেছে সামনে আগাতে তাহলে সামনে এগিয়েই দেখ নুজু।”
তাসমিয়ার কথায় নুজহাত সম্মতি জানিয়ে আরও কিছুটা সামনে আগাতেই পুনরায় একজন ছেলে এসে একটি গোলাপ হাতে ধরিয়ে দিয়ে ওই ছেলেটির মতোই বলে উঠলো সামনে আগাতে।
এভাবেই করিডোর পেড়িয়ে ক্লাস রুমের কাছাকাছি আসতে আসতে মোট আঠেরো টি ফুল পেল নুজহাত। ক্লাস রুমের সামনে আসতেই আরও একজন ছেলে এসে একটি ফুল নুজহাতের হাতে গুঁজে দিয়ে বলে উঠলো,
“আপু শেষ ফুলটি নিতে আমার সাথে আসুন।”
ছেলেটার কথায় নুজহাত কিছুটা চমকালো। বুঝতে বাকি নেই যে এই সব রাফির কাজ। শেষ ফুল তার মানি রাফিই দিবে তাকে। ভাবতেই যেন গলা শুকিয়ে আসছে। যদি রাফি তাকে প্রপোজ করে বসে তাহলে সে কি বলবে। না বললে যদি থাপ্পড় মেরে বসে। সবার মুখে শুনেছিল যে ছেলেটা হুটহাট রেগে যায়। আবার হ্যা বলতেও তো লজ্জা লাগছে। এতদিনে সেও অনেকটাই দূর্বল হয়ে পড়েছে রাফির উপর।
ভাবতে ভাবতেই একটি ক্লাস রুমের সামনে এসে দাড়িয়ে পড়লো। ছেলেটি নুজহাতকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
“ভাবি ভাইয়া ভিতরে আছে। আপনি ভিতরে যান। না গেলে কিন্তু ভাইয়া বলেছে যে সকলের সামনে এসে জোর করে নিয়ে যাবে।”
কথা শেষ করেই ছেলেটি সেখান থেকে চলে গেল। নুজহাত রাগি চোখে ছেলেটির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। এমনিতেই সে ভয়ে অস্থির হয়ে আছে। তার মধ্যে আরো ভয় বাড়িয়ে দিয়ে গেল ছেলেটি। ইচ্ছে করছে ছেলেটির মাথা ফাটিয়ে ফেলতে। ছেলেটি রাফির বন্ধু।
নুজহাত বুকে সাহস সঞ্চয় করে রুমের দরজায় হাত রাখতেই খুব জোরে কারও সাথে ধাক্কা খেল। পরতে পরতে বেঁচে গিয়েছে। কি থেকে কি হলো কিছুই বুঝতে পারলো নাহ। অবাক চোখে আশেপাশে তাকাতেই দেখলো কিছুটা দূরে রাফিকে দেখতে পেলো। রাফি দৌঁড়ে কোথাও যাচ্ছে। দেখতে দেখতে রাফি বাইক নিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে গেল। এই মাত্র তার মানি রাফির সাথেই ধাক্কা খেয়েছে। তবে এখন তো রাফির এই রুমে থাকার কথা ছিল। এমন কি হলো যে তাকে ধাক্কা দিয়ে এভাবে চলে গিয়েছে।
অবশ্য পরে এর উত্তর জানতে পেরেছিল নুজহাত। রাফির সব থেকে প্রিয় বন্ধু তন্ময়ের বাইক অ্যাকসিডেন্ট হয়েছিল।
******
কানে কারও স্পর্শ পেয়ে ভাবনা জগত থেকে বেরিয়ে আসলো নুজহাত। সামনে তাকাতেই নজরে আসলো, রাফি তার কানে কুড়ি নম্বর গোলাপ টি গুঁজে দিচ্ছে। রাফির হালকা স্পর্শেও যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে নুজহাতের। রাফিকে এতো কাছে দেখে দ্রুত নিজের চোখ বন্ধ করে ফেললো।
রাফি মুগ্ধ চোখে নিস্পলক তাকিয়ে রইলো নুজহাতের দিকে। এই দেখার যেন শেষ নেই। ইসস সময়টা যদি এখানেই থেমে যেত তাহলে খুব কি ক্ষতি হয়ে যেত।
নুজহাতের দিকে আরও একটু ঝুঁকে কানের কাছে গিয়ে শীতল কণ্ঠে গেয়ে উঠলো,

তোকে একারে…দেখার….
লুকিয়ে কি মজা……..
সেতো আমি ছাড়া….
কেউ জানে না…… ”

*
*
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here