রোদ বৃষ্টির প্রেম পর্ব -১২

#রোদ_বৃষ্টির_প্রেম
#Nishi_khatun
#part_12

(নিচে নোট পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলো)

প্রেম- ভালোবাসা কারো জীবনে আগমনের আগে তাকে জানিয়ে আসে না। তবে যখন যার জীবনে আগমন করে সেই জানে তার মনের গভীর অনুভূতির মানে কি?

রোদের ব্যবহার দেখে বৃষ্টি বুঝতে পেরেছে ডাক্তার বাবু তার প্রতি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি নিজের রুমেে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলছে,” ডাক্তার রোদ আপনি আমাকে ভালোবাসতেই পারেন এতে দোষের কিছু নেই। তবে এটাই আপনার দোয় আপনি আমাকে নিজের করে পেতে চাইছেন সারাজীবনের জন্য। কিন্তু আপনি জানেন না- যে আমি আপনার জীবনে যদি প্রবেশ করি। তাহলে আপনি সুখি হবেন তবে আপনার আপনজনের জীবনের গল্পটা আমার জন্য বদলে যাবে। তাতে আমার কিছুই না। আমাকে সবাই নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছে আমি না হয় আপনাকে একটু ব্যবহার করতে পারি। আমি তো যেচে যায়নি আপনার জীবনে? আপনি নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মেরেছেন। আপনার প্রতি আমার কোনো অনুভাবী নেই। না কোনোদিন সৃষ্টি হবে। তবে আপনার মনের অনুভূতি গুলো আমার কাজে লাগবে। আর শোনো আয়নার মেয়ে কেউ যেচে মরতে আসলে আমার কি? আমাকে তাকে আমন্ত্রণ করি নাই? সে নিজেই আমাকে তার জীবনে জড়াতে চাইছে। আমি কেনো এই সুযোগের সৎ ব্যবহার করবো না? আমি কেনো এই অন্ধকার জীবনে কষ্ট ভোগ করবো? আমারো সুখ থাকার অধিকার আছে। মানুষের স্বার্থের জন্য আজ আমার এই নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। আমিও না হয় নিজের মুক্তির ব্যবস্থা করবো। মিস্টার রোদ আপনি অপেক্ষা করেন। আপনার জীবনে রোদ- বৃষ্টির প্রেম হয়ে আমি আসছি।”

রোদ বৃষ্টিকে যতোই দেখে ততো মুগ্ধ হয়ে যায়। মেয়েটার মাঝে কিছু তো আছে যার জন্য ওর প্রতিটা কাজে মুগ্ধতা কাজ করে। মেয়েটা যতোটা না সুন্দরি তার থেকে বেশি মায়াবী। কখনো রাগের খনি,তো কখনো মায়াবতী,কখনো কঠোর রমনী, তো কখনো শান্ত নদীর পানির মতো নিরব। বৃষ্টির ব্যবহার একদম অন্যরকম। যে যেমন তার সাথে তেমন ব্যবহার করে। যে ভালো তার সাথে ভালো ব্যবহার, যে খারাপ তাকে সঠিক পথে আনার ব্যবস্থা সে জানে। এই জন্য তো আমি তার রুপে নয় তার গুনে মুগ্ধ হয়েছে। এবার তার মনের ঘরে আমার জন্য সুক্ষ্ম অনুভূতির সৃষ্টি করতে চাই-।

রিয়ানা আগের মতো আর রোদের আশেপাশে আসে না। কারণ রিয়ানার উদ্দেশ্য কোনোদিন ও রোদ ছিলো না। রোদ একটা মোহ ছিল! যাকে সে কোনোদিন ও ভালোবাসতে পারে নাই। রোদ কে সে নিজের সম্পত্তিরূপে পেতে চাইতো। আসলে রিয়ানার মনটা একটু অন্যরকম। একটা ছেলেকে বেশিদিন মনে ধরে না। কিছুদিন পর পর সে ড্রেস চেঞ্জড করার মতো বন্ধু পরিবর্তন করতো। বিদেশে রিয়ানার কিছুদিন পর পর নতুন বন্ধুদের আগমনের তার পরিবারের মানুষেরা বিরক্ত হয়ে যায়। সেই জন্য তারা রোদকে বলে রিয়ানা কে সঠিক পথে আনতে। তবে রোদ- ব্যর্থ হয়। রিয়ানার সাথে যে থাকবে সে পাগল হয়ে যাবে। মেয়েটা কে রোদ রিলেশনশিপে আনে তারপর এতো ভাবে বোঝাতে চেষ্টা করে। কিন্তু রিয়ানা অবুঝ বাচ্চাদের মতো কোনো কিছু বুঝতে নারাজ। রোদ বেচারা শেষ পর্যন্ত রিয়ানা কে সঠিক পথে আনতে না পেরে তাকে দেশে পাঠানোর কথা বলে তার ফুফির কাছে। তারা রোদের কথা শুনে রিয়ানা কে দেশে নিয়ে চলে আসে। যতো যাই হোক কোনো বাবা-মা চাইবে না তার মেয়ে বিপথগামী হোক।

আজকাল রিয়ানা আয়নার সামনে দাঁড়াতে পারে না। নিজের দিকে তাকেই কেমন জানি লাগে। এতো দিন কতো ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করেছি তা বে-হিসাব! এমনকি রোদকে তো বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে গেছিলাম। রোদের কোনো কথা কখনো কানে তুলি নাই। সব সময় নিজেকে বিদেশি ভাবতাম। নিজের দেশের সংস্কৃতি থেকে অপরিচিত এক বাঙালি ছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত আমার এই পাগলামির বসে আমি সাদিকের সাথে অন্যায় করেছি। জানি না এ পাপের শাস্তি কি হবে। আমি যেহেতু পাপ করেছি। সেহেতু আমার এই মুখ দেখানোর আর সাহস নেই। আমি দ্রূত বিদেশে চলে যাবো। তবে তার আগে আমাকে আমার কাজ কমপ্লিট করতে হবে।

সাদিকের আজকাল কেনো জানি কোনো কিছুই ভালো লাগে না। সেই কালোরাতের পর থেকে তার আর রিয়ানার সম্পর্কটা কেমন জানি তিক্ত হয়ে গেছে। রিয়ানাকে ভালো মেয়ে ভেবেছিলাম তবে।সে যে এতোটা খারাপ হবে ভাবতেই পারি নাই। লোকেরা ঠিকি বলে, “বিদেশি কালচারে বড় হওয়া মেয়েরা কখনো ভালো হতে পারে না। খুব কম মানুষেরা ভালো থাকে।বাবা-মা’র চোখের আড়ালে ছেলে-মেয়ে কি করে তারা তো জানে না। এই সুযোগটা তারা কাজে লাগিয়ে বিপথগামী হয়ে যায়। আর যতো দোষ হয় বাবা-মা’র।”

রিনি আর বিহানের রোজ নানারকম ঝগড়াফসাদের জন্য সকল প্রকারের ভোগান্তি রিনিকে ভোগ করতে হচ্ছে। রিনির ভার্সিটির জীবনটা জাহান্নাম বানিয়ে দিয়েছে বিহান। রিনির কোনো প্লানিং কাজে আসে না।এইভাবে চলতে থাকার কারণে রিনির মান-সম্মান সব পানি পানি হয়ে গেছে। এখন তো রিনি লজ্জায় ভার্সিটিতে যেতে পারে না। কারণ সবাই তার দিকে যে ভাবে তাকিয়ে থাকে তাতে মনে হয় সে বড় কোনো অপরাধী। খুব খারাপ একটা মেয়ে নয়তো বড় গুনাগার বান্দি। সবার এমন তৃক্ষ দৃষ্টির সামনে যেতে মন চাই না। তবে সে না পারছে এই বিষয়ে কাউরে কিছু বলতে না পারছে সহ্য করতে। তবে এভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে অবশেষে রিনিকে হয়তো সুইসাইড করতে হবে নয়তো ভার্সিটিতে যাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। যদি ভার্সিটিতে যাওয়া বন্ধ করে দেয় তাহলে তাকে সোজা বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হবে। তবে বিয়েতে তার আপত্তি নেই। সমস্যা একটায় বাবা-মা কার না কার সাথে বিয়ে দিয়ে দেয় বলা তো যায় না।
সে ভয়ে রিনি লেখাপড়া বাদ দিতে পারে না। যারে তারে যদি বিয়ে করার হতো তাহলে ত দুই বছর আগেই বিয়ে করে সংসার করতে পারতো। দুই বছর আগে যে কাজ করি নাই তা এখন কেন করতে যাবো?

(
‘চলবে??????

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here