শত্রু শত্রু খেলা পর্ব -২৯+৩০

#শত্রু_শত্রু_খেলা
#পর্ব_২৯ (বিয়ে স্পেশাল পর্ব)
#মেঘা_সুবাশ্রী (লেখিকা)

আলিশবা গুটিশুটি মেরে গৌরবের বুকে লেপ্টে আছে। গৌরব নিভৃতে নিজের বউকে দেখছে। আলিশবা মাঝে মাঝে চোখ তুলে স্বামীর কাজ দেখে যাচ্ছে আর মিট মিট করে হাসছে। গৌরব আলিশবার থুতনিতে হাত রেখে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে আমার স্নো হোয়াইটের। এভাবে মিট মিট করে কেনো হাসছো? আমাকে কি নতুন দেখছো? গত তিন বছর ধরেই তো দেখে আসছো?

আলিশবা টলমল আঁখিতে স্বামীর মুখ পানে তাকালো। আচমকা ঝর ঝর করে তার নেত্রকোনা থেকে জল পড়া শুরু হলো। গৌরব তার স্নো হোয়াইটকে আরও আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরলো। মুখে আলতো করে চুমু দিয়ে বলল কি হয়েছে এভাবে কেনো কাঁদছো? তোমার আধা-পাগল বর সব সময় তোমার পাশে থাকবে তো কোত্থাও যাবে না। যতই ঝড় আসুক না কেনো সব সয়ে যাবো তবুও তোমার কিছু হবে না। কেঁদোনা প্লিজ।

ক্রন্দনরত আলিশবা কম্পিত গলায় বলল জানো কখনো ভাবিনি আমি এতো সুখী হবো? গৌরব আলিশবার চোখের জল মুছে দিয়ে মাত্রই কিছু বলতে যাবে তখন খট করে দরজায় করাঘাত হলো। ওপাশের ব্যক্তির কথা না শুনেও বুঝে গেছে কে হতে পারে? তাই দরজা খুলে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসা ছোট্ট বাবুটাকে খপ করে ধরলো সে। বুকের মধ্যে মিশিয়ে নিলো তার কলিজার টুকরোকে। আরাভকে কোলে নিয়ে তার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,

এভাবে রাতদুপুরে এসে যে পাপাকে ডিষ্টার্ব করেন আপনার কি আর ভাই-বোন লাগবে না আব্বাজান। ঐদিকে আপনার চাচ্চুরও বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। কয়দিন পর আপনার চাচ্চুর বাচ্চা-কাচ্চা এসে তো আপনার দাদা-দাদুর উপর ভাগ বসাবে।

আরাভ কি বুঝলো কি জানে? সে খিলখিল করে হেসে উঠল। আধো আধো বুলিতে আওড়ালো,

দা,,দা বা,,ঘ।
____________________

দো’তলা ঘরের সুবিশাল হলে বসেছে প্রিয়াদের পরিবারের মিলনমেলা। আনোয়ার কোনোরূপ ভণিতা ছাড়াই সবার উদ্দেশ্য বললেন,

আমি প্রিয়ার বিয়ে ঠিক করেছি। বিয়েটা পারিবারিকভাবে আজই সম্পন্ন হবে। বিয়ে হলেও প্রিয়া আমার কাছেই থাকবে। সন্ধ্যায় বরপক্ষ আসবে। তাই এখন যা করার দরকার বাজার থেকে শুরু করে রান্না-বান্না সব করা হবে। খুব বেশি আত্নীয়-স্বজন জানানো হবে না। বরপক্ষ তাদের নিজেদের পরিবার নিয়ে আসবে এই যা। পরবর্তী অনুষ্ঠান প্রিয়ার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হলে তারপর অনুষ্ঠিত হবে।

এক বাক্যে কথাগুলো বলে দম নিলেন আনোয়ার। তারপর সবার উদ্দেশ্য আবারো বললেন, কারো কোনো দ্বিমত থাকলে বলতে পারো। কিন্তু বিয়ে সম্পর্কিত আমি কিছু শুনবো না। তবে আয়োজন সম্পর্কে কোনো পরামর্শ থাকলে বলতে পারো।

বাকিদের চোখে বিস্ময় আচমকা প্রিয়ার বিয়ে। কিন্তু মুখে কোনো রা’ নেই। হয়তো আনোয়ার ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাই কেউ কোনো প্রশ্ন তুললো না। তবে আর্দ্রর মায়ের চোখে-মুখে আকুতি। তার ছেলেটা আবারও বিপথে চলে যাবে। যদি এসে দেখে প্রিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে। তিনি অনেক সাহস সঞ্চার করে বললেন,

ভাইজান, আমার ছেলেটার কথা একবারো ভাব্বেন না। আর্দ্র ফিরে আসলে কি জবাব দিবো?

আনোয়ার তাচ্ছিল্যের হাসি দিলেন। তিনি আর্দ্রর মায়ের প্রতিত্তোরে বললেন,

সেই কথা দু’বছর আগে ভাবলে হয়তো আজকের এই দৃশ্যের জন্মই হতো না। না ছেলেটা বিপথে যেতো, না আমাদের মাঝে তিক্ততার সম্পর্কের দেয়াল হতো। যাই হোক যেটা হওয়ার নয় সেটা নিয়ে আমি আর ভাবতে চাই না। যেভাবে সবাই ভালো থাকতে পারে সেই ব্যবস্থাই করছি। আশা করছি আপনি আর ভাইজান প্রিয়ার বিয়েতে থাকবেন।

আর্দ্রর মা মুখে আঁচল গুজে দিল। কান্নার আওয়াজ যাতে অন্যেরা শুনতে না পায়।

আনোয়ারের ছোট ভাই উঠে দাঁড়ালো। তার কাছে এসে বললো,

মেঝো ভাইয়া, বিয়েটা ছোট্ট পরিসরে হলেও সমাজের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে দাওয়াত তো দিতে হবে। আনোয়ার ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে কপাল কুঁচকালেন। তোমাদের তাহলে কি জন্য ডাকলাম আর? আয়োজন কিভাবে করতে হবে এজন্যই তো। যাও তুমি গিয়ে দাওয়াত দিয়ে আসো তাদেরকে।

পারিবারিক আলোচনা শেষে আনোয়ার উঠে দাঁড়ালেন। তাকে যে আসল ব্যক্তির সাথে কথা বলতে হবে। তিনি প্রিয়ার রুমে আসলেন।

প্রিয়া বিছানায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। আনোয়ারকে দেখে দ্রুতই উঠে বসলো। বাবাকে এইসময় নিজের রুমে দেখে চমকালো সে। কোমল স্বরে বলল,

আব্বু কিছু বলবে?

আনোয়ার মেকি হাসলেন। আজকের পর থেকে তার মেয়ে অন্যের আমানত হয়ে যাবে। তার জন্য হবে অতিথি মাত্র। বক্ষস্থলে সূক্ষ্ম চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করলো। কিন্তু তবুও নিরুপায় সে। সব মেয়েরাই একদিন বাবার বাড়ি ছেড়ে চলে যায় স্বামীর ঘরে। এটাই তো নিয়তি। আনোয়ার মেয়ের হাত দুটো আঁকড়ে ধরলেন। মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

জানো মা’ আমি কখনই আমার মেয়েটার খারাপ চাইনি। সব সময় ভালোই’টা দেওয়ার চেষ্টা করে এসেছি। আজো তার ব্যতিক্রম নয়। আমি অনেক ভেবে চিন্তে তোমার বিয়ে ঠিক করেছি। বিয়ের কথা শুনে প্রিয়ার বক্ষস্থল কেঁপে উঠলো। তার বিয়ে আচমকাই। সে কিছু বলার আগেই আনোয়ারই বলল আমি জানি তুমি আতংকিত হয়ে পড়ছো আচমকা কেনো তোমার বিয়ে ঠিক করেছি? জানো, মাঝে মাঝে কিছু সিদ্ধান্ত নিজের হাতে থাকে না পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। মনে করো আজকের বিষয়টাও সেইরূপ। তবে চিন্তা করো না, আমি তোমাকে সুপাত্রেই দান করছি। সে তোমার জন্য সবচেয়ে বেশি যোগ্য।

আব্বু আমি জিজ্ঞেস করবো না ছেলেটা কে বা কেনো আচমকা বিয়ে ঠিক করলে। কিন্তু কারন’টা কি আর্দ্র ভাইয়া।

আনোয়ার ছোট্ট করে বললেন, আর্দ্রও একটা কারন মাত্র তবে প্রধান কারন নয়। তুমি পাত্র কে জানতে চাইবে না। প্রিয়া অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছে পাত্র কে জানার জন্য কিন্তু লজ্জায় জিজ্ঞেস করতে পারছে না। আনোয়ার মেয়ের মনোভাব বুঝতে পারলেন। তাই রগড় গলায় বললেন তুমি কি জানো তোমার পাত্র একজন খুবই শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রেমিক। যে প্রেমিকাকে নিজের মনের কথা বলার আগেই প্রেমিকার বাবাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তাই আমিও সুযোগ বুঝে শর্ত দিয়েছি আমার মেয়ের সাথে প্রেম করা যাবে না। এমনকি তাকে মনের কথাও বলা যাবে না। তার থেকে দুই’শ হাত দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তখন তোমার ঐ পাগলা প্রেমিক কি বলেছে জানো, তাহলে আপনার মেয়ে যদি অন্য কাউকে মন দিয়ে বসে থাকে। তাহলে আমার কি হবে? তোমার পাগলা প্রেমিক কে তখন বললাম ঠিক আছে তুমি তাকে নজরে রাখতে পারো তবে প্রেম নয়।

প্রিয়া তার বাবার কথা হা’ হয়ে শুনছিলো। মনে মনে বেশ চমকালো। কিন্তু হিসাব মিলাতে পারছেনা। একজনের মুখ তার চোখের সামনে ভাসছে। তাহলে কি সেই লোকটাই?

আনোয়েরের মুখে সূক্ষ্ম হাসির রেখা দিলো। মেয়েকে ভালো করে পরখ করে বললেন। আমি যদি ভুল না হয় এখন যাকে নিয়ে ভাবছো সেই তোমার পাত্র। প্রিয়া বাবার কথায় চমকে উঠলো। তার বাবা তাহলে,, আর কিছু ভাবতে পারলো না। আনোয়ার প্রিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। একদম ভয় পেয়ো না। তুমি সুখী হবে সেইরকম একটা পাত্র এনেছি।

সামান্তার চোখের কোণে জল জমলো। সে জানে তার ভাই প্রিয়াকে কেমন ভালোবাসে। কিন্তু কিছু ঘৃণ্য জিনিস মনে করে চোখের জল মুছলো। প্রিয়ার অধিকার আছে সুখে থাকার। তাই সেও মনে মনে দোয়া করলো প্রিয়া যেনো সুখী হয়।

ঘড়ির কাটায় মধ্যাহ্ন।

প্রীতি হুড়মুড় করে প্রিয়ার রুমে আসলো। বোন কম বান্ধুবীকে জড়িয়ে ধরলো সে। অভিবাদন জানিয়ে বলল, শেষ পর্যন্ত নিজের শত্রুটাকে বেছে নিলি নিজের বর হিসেবে। প্রিয়া ভ্রু কুঁচকালো। মনে মনে শ’খানেক গালি দিলো প্রীতিকে। সে কখনই তাকে শত্রু ভাবতো না। কিন্তু প্রীতি তার মজা উড়ালো বেশ কিছুক্ষণ।

সবাই প্রিয়াকে হলুদ মাখিয়ে তারপর গোসল করালো। গোসল শেষে কাপড় পড়িয়ে তাকে রুমে বসানো হলো। সামান্তা, প্রীতি বসে প্রিয়াকে হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিলো। প্রীতি শুধু প্রিয়াকে বার বার খোঁচাচ্ছে তার জামাইয়ের কথা বলে।

বাড়ির সবাই ব্যস্ত প্রিয়ার বিয়ে নিয়ে। মোটামুটি স্বল্প পরিসরে হলেও খাবার আয়োজন কিন্তু বেশ বড়ো আকারে করা হয়েছে। উঠোনে চুলা বানানো হয়েছে। সেখানে বড়ো বড়ো হাড়িতে রান্না বসানো হয়েছে। সামান্তার বিয়ের পর এই দ্বিতীয়বার এই বাড়িতে বিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সন্ধ্যার আলো ঘনীভূত হওয়ার কিছুক্ষণ পর বরযাত্রী আসলো প্রিয়াদের বাড়িতে।

আনোয়ারসহ সবাই তাদের বরণ করে নিলেন। প্রীতিরা কিন্তু বরের জন্য ছাদে ফুল দিয়ে আলাদা করে স্টেজ সাজিয়ে রেখেছেন। বরের গাড়ি থেকে একজন নয় দু’জন বর দেখে প্রিয়ার চাচা-চাচীরা বেশ অবাক হলেন। এ’কি রকম দেখতে দু’জন বর? তাহলে কোনটা আসল? দু’জন বর একসাথে স্টেজে গিয়ে বসলো? সবাই বলাবলি করলো জামাইয়ের কি জমজ ভাই আছে? আনোয়ার এদের কথা শুনে হাসলেন। গৌরব ছেলেটা এতো ফাজিল। দু’ভাই ইচ্ছে করে সবাইকে বোকা বানাচ্ছে।

আনোয়ার গিয়ে গৌরবকে কান মলে দিলেন। গৌরব মনে মনে লজ্জা পেলেন। সে আনোয়ারের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো আঙ্কেল প্রেস্টিজের একটা ব্যাপার স্যাপার আছে। এভাবে কান ধরলে সবাই আপনার মেয়ের ভাসুরের মজা উড়াবে না। ছেড়ে দেন আমাকে। বাকিদেরকে খুঁজে নিতে বলেন কোনটা আসল বর? আনোয়ার কান ছেড়ে হেসে উঠলেন।

আলিশবা, শোভা, আরাভ সবাই প্রিয়ার রুমে আসলো। তখন প্রিয়াকে সাজানো শেষ হয়েছে মাত্র। প্রিয়ার বিয়ের পোশাক বিকেলেই পাঠানো হয়েছিলো পরশকে দিয়ে। গোল্ডেন-খয়েরী মিশ্রণের লেহেঙ্গা, গলায় গোল্ড আর পাথরের গহনা, মাথায় লম্বা ওড়না দিয়ে পুরো মস্তক ঢাকা। প্রিয়াকে দেখে তারা বেশ চমকালো। শোভা হা’ হয়ে প্রিয়াকে দেখছে। তার ভাই তো আজ ফিদা হয়ে যাবে প্রিয়ারানীর এই রূপ দেখে।

প্রিয়া এদের কে দেখে লজ্জায় কাঁচুমাচু করছিল। আরাভ গিয়ে প্রিয়ার কোলে উঠতে চাইলো। কিন্তু আলিশবা দিলো না। সে কোলে নিয়ে প্রিয়ার কাছাকাছি নিয়ে গেলো শুধু। প্রিয়াকে দেখে বলল

ও,য়া,,হ ‘মা’ বা,,হ।

সবাই আরাভের আধো আধো কথা শুনে হাসলো।

মারিয়া আসলো নাজমাকে বরণ করতে। নাজমা তো থম মেরে বসে আছে। অথচ সবার থেকে বেশি সেই খুশি ছিলো এই বিয়েতে। কিন্ত আনোয়ার তার সব খুশি একবারে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। তাই তার মুখের হাসি উবে গেছে। কিন্তু মনে মনে ভীষণ খুশি। মারিয়া নাজমাকে ভিতরে নিয়ে গেলেন। তার জা’দের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।

প্রত্যুষের মাথাব্যথা নেই দুলাভাইকে নিয়ে। সে তো আগে থেকে চিনে। তাই সে সৌরভের পাশে গিয়ে বসলো। প্রীতি আর প্রিয়ার কাজিনগুষ্টিরা বরকে মালা পরাতে আসলে দ্বিধায় পড়ে যায়। কোনটা বর? গৌরব গা দুলিয়ে হাসে। ভাইয়ের কানের কাছে গিয়ে বলে মালাটা আমি পরি। শুধু বিয়েটা তুই করিস। সৌরভও হাসলো ভাইয়ের কথা শুনে। সে প্রীতিদের ডাকলো,

গার্লস তোমাদের দুলাভাইকে মালা পরিয়ে দাও। প্রীতি এসে গৌরবকে মালা পরিয়ে দেয়।
সৌরভ ভাইয়ের কানে কানে ফিসফিস করে বলে এবার খুশি তুই। গৌরবও হ্যাঁ বলে মাথা নাড়ায়। প্রীতিরা নজরের জন্য আবদার করলে দু’ভাই একসাথে তাদেরকে নজর দিয়ে দেয়। প্রীতি অবাক হলেও কিছু বললো না। তার তো লাভ হয়েছে দু’জন থেকে নজর পেয়েছে।

পরশ বেচারা হাবাগোবার মত বসে আছে। তার সাথে সৌরভের আরো দুজন বন্ধু আসছে সানি আর রকি। সানি প্রীতির সাথে মজা করছে। বেয়াইন দেখি সুন্দর আছে। বিয়ে-শাদী হয়ছে না’কি প্রস্তাব দেবো। প্রীতি মুখ ভেংচি দিয়ে বললো সেটা আপনার জানার দরকার আছে।

প্রীতি যাওয়ার পর সানি সৌরভকে খোঁচা দিলো। তোর শালী আমাকে গাল ভেংচি দিছে কেনো? বিয়ের প্রস্তাবই দিলাম উঠাই তো নিয়ে যাই নাই। রকি আর পরশ হাসলো। সৌরভ তাদের সাথে সেও হাসলো। পারলে উঠাই নিয়ে যা, দেখি তোর কতো জোর? রকি খোঁচালো সৌরভকে তোর বউ কখন আসবে ইয়ার। তর সইছে না আর ভাবীকে দেখার জন্য। পরশ দুইজনের দিকে তাকালো। অবাক হয়ে বললো বউ সৌরভের, তোর কেনো রে তর সইছে না।

কাজি আসলেন সন্ধ্যা ৭টার পর।

কাজি আসার পর পরই বিয়ে পড়ানো শুরু হয়। কাজিও প্রথমে দ্বিধায় পড়ে যান কোনটা বর? কিন্তু বর মহাশয় তাকে নিশ্চিন্তে থাকতে বলেন।

বিয়ে পড়ানো শেষে সবাইকে খাবার দেওয়া হয়। খাবারের পর্ব শেষ হলে আলিশবা, শোভা, প্রীতিরা মিলে প্রিয়াকে স্টেজে নিয়ে আসে। সেখানে সৌরভ আগে থেকেই বসে থাকে। প্রিয়া স্টেজে উঠতে গিয়ে আচমকা কয়েক সেকেন্ডের জন্য সৌরভের সাথে তার চোখাচোখি হয়। সে মনে মনে ভীষণ লজ্জা পায়। কিন্তু স্টেজে বসার পর আচমকা তার চোখ চলে যায় তার যৎসামান্য দূরে থাকা আরেকটা অবয়বের দিকে। তখন তার হৃদ স্পন্দনের কম্পন অতি মাত্রায় বেড়ে গেলো। মনে মনে হেসে উঠে ফাজিল কোথাকার।

শোভা প্রিয়ার হাতে একটা মালা দেয় সৌরভকে পরানোর জন্য। প্রিয়া সেই মালা সৌরভকে না পরিয়ে উল্টো ফিক করে হেসে দেয়। তারপর লজ্জায় নিজেই মুখে হাত দিয়ে বসে থাকে। সৌরভের বন্ধুরা তার মজা নিচ্ছে। কি ব্যাপার বন্ধু তোর বউ এত হাসে ক্যা?

চলবে,,,,,,,,,,,,

তো সৌরভ-প্রিয়ার বিয়ে হয়েই গেলো। কেউ গ্রিফট দিলেন না। খুব দুক্ষু পাইলাম।

“ব্যাই দ্যা ওয়ে বলেন তো আমাদের প্রিয়ারানী কেনো হাসতেছে?”

সঠিক উত্তর পারলে গ্রিফট মাফ করে দেবো।#শত্রু_শত্রু_খেলা
#পর্ব_৩০
#মেঘা_সুবাশ্রী (লেখিকা)

গৌরব পুরাই ‘থ’ হয়ে বসে আছে। সে প্রিয়ার দিকে এক ভ্রু উঁচিয়ে বলল তুমি কি করে চিনলে আমাকে?

প্রিয়া লাজুক হাসলো। মনে মনে বলল না চিনার কি আছে? একি রকম দুটি মানুষ যেমন হয়, তেমনি অনূভুতিও আলাদা হয়। কিন্তু মুখে হাত দিয়ে সে তার লজ্জা ঢাকছে। গৌরব মাথায় হাত দিয়ে হায় হায় করতে করতে নিচে নামলো। সৌরভ তার ভাইকে দেখে লাজুক হাসছে। কিন্তু মনে মনে ভীষণ খুশি তার প্রিয়ারানী তো তাকে খুব ভালো ভাবেই চিনে তাহলে।

সৌরভ নিজ থেকে উঠে স্টেজে প্রিয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। এদিকে পুরো বিয়ে বাড়ির লোকজন অবাক হয়ে দু’ভাইয়ের কান্ড দেখছে। কেউ অবাক আবার কেউ হতবাক। আসল বর কে? এই নিয়ে এখনো দো’টানায় আছে সবাই।

গৌরব এবার সবার উদ্দেশ্য বলল,

দেখুন আঙ্কেল-আন্টি, ভাই-বোনেরা আপনারা বর কে না চিনলেও যার বর সে কিন্তু ঠিকই চিনে ফেলেছে। আর এই যে আমাকে দেখছেন আমি আপনাদের বরের থেকে গুণে গুণে নয় মিনিট ৫৮ সেকেন্ড আগে পৃথিবীতে আসছি। সেদিক থেকে আমি আপনাদের বরের বড়ো ভাই। তাই আমিই প্রিয়ার একমাত্র ভাসুর। আর আমার পাশে যে একটা পরী দেখছেন ঐটা আমার একমাত্র বউ। তার পাশে যে ছোট্ট দুষ্ট মিষ্টি একটা বাচ্চা দেখছেন সেটা আমারই ছেলে। গৌরবের কথায় আলিশবা ভীষণ লজ্জায় পড়ে গেলো। এ লোকটা এত ঠোঁটকাটা কেনো?

গৌরবের কথা শুনে উপস্থিত সবার মধ্যে হাসির রোল পড়ে গেলো।

প্রীতি, সামান্তা আর প্রিয়ার কাজিনগুষ্টি মিলে হৈ চৈ করা শুরু করলো। তারা গৌরবের সামনে গিয়ে বলল সত্যি করে বলেন তো মালা কি আমরা আপনাকে পরিয়েছি। গৌরব দাঁত কেলিয়ে হাসলো। মাথা নাড়িয়ে বলল হুম। এবার তো এদের চোখ কপালে উঠলো। এভাবে ধোঁকা দিলো। গৌরব এদেরকে বলল দেখো আমার কোনো দোষ নাই। সব দোষ তোমাদের দুলাভাইয়ের সেই বলছে আমাকে মালা পরতে। তো আমি কি করবো?

প্রীতি ভ্রু কুঁচকালো। এই দুই ভাই বদের হাড্ডি।
সে যেতে নিলে সানি বলে উঠল বেয়াইন আপনি ভ্রু কুঁচকালে রাক্ষুসি রানী কটকটির মত লাগে। প্রীতি আলতো করে হাসলো। তাই না’কি! আর আপনাকে সাদা ভূত ডংকারের মত লাগে। প্রীতির কথা শুনে পরশ আর রকি হো হো করে হেসে উঠে।

সানি বেচারা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসে আছে। এই মেয়ে তার একটা কথাও মাটিতে পড়তে দেয় না। সব কথার পিঠে উত্তর দিয়ে দেয়।

প্রিয়ার হাতে মালা সে এখনো চেপে ধরে আছে। সৌরভ নিজের মালা প্রিয়ার সামনে এগিয়ে গিয়ে পরিয়ে দিয়েছে। প্রিয়াকে মালা পরাতে বলছে সবাই। সে তো লজ্জায় মুখই তুলতেই পারছে না। মালা পরাবে কিভাবে? মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে সে। সৌরভ বুঝলো এই মেয়ে তাকে সারাদিনেও মালা পরাবে না। তাকেই কিছু করতে হবে। সে মাথা নিচু করে প্রিয়ার একদম মুখের সামনে গিয়ে বলল এই যে রানী সাহেবা এবার পরান। দেখতি পাচ্ছি আপনার অনেক কষ্ট হচ্ছে।

প্রিয়া তো সৌরভকে তার এত কাছে দেখে ভূত দেখার মত চমকে উঠলো। লজ্জায় কাচুমাচু করছিলো। শেষে সৌরভ নিজেই প্রিয়ার দু’হাত ধরে মালা পরে নিলো।

প্রীতি প্রিয়ার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো হাও রোমান্টিক! প্রিয়া আরো অস্বস্তিতে পড়ে গেলো। প্রিয়ার সামনে আচমকা পরশ এসে দাঁড়ায়। কিন্তু সে অবাক হয় পরশের সাথে রাঢ়ীকে দেখে। সে বেনারসী শাড়ি পরে নববধূ সেজে পরশের সাথে এসেছে। সে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই পরশ বলল,

মিট মাই ওয়াইফ।

প্রিয়া বিস্মিত নয়নে তাকালো রাঢ়ীর দিকে। সে তো তখন লজ্জা ঢাকতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু প্রিয়ার দৃষ্টি স্থির হয়ে আছে রাঢ়ীর উপর। রাঢ়ী তখন আমতা আমতা করছিল। কিন্তু সেও প্রিয়াকে লজ্জা দিতে ভুললো না। তুই সৌরবিদ্যুৎ কে বিয়ে করলি কিভাবে? প্রিয়া অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো তার দিকে। সুযোগ পেলে এই মেয়েকে সে নালার পানিতে চুবাবে।

মালাবদল শেষে প্রিয়ার চাচা-চাচীরা সবাই এসে তাদের মিষ্টিমুখ করিয়ে যাই। আনোয়ার, মারিয়া এসে প্রিয়ার হাত সৌরভের হাতে তুলে দেয়। প্রিয়া নিশব্দে কেঁদে উঠে। আনোয়ার মেয়েকে বুকে চেপে ধরেন। প্রিয়াকে এভাবে কাঁদতে দেখে গৌরব মাঝখান থেকে বলে উঠে,

আরে থাকবে তো বাবার বাড়ি। মাঝে মধ্যে জামাইয়ের কথা মনে পড়লে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যেতে পারো। তাও কাঁদছো কেনো?

গৌরবের কথায় প্রিয়া লজ্জায় কাঁদতেও পারে না।

প্রিয়া আর সৌরভকে তার দাদার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। তার দাদা দু’জনের সাথে একান্তে কিছু কথা বলেন। সৌরভকে কাছে নিয়ে ডেকে বলেন আমার পাগলিটাকে দেখো। সৌরভ মৃদুহেসে জবাব দিলো। খুব ভালো যত্ন নিবো তার, একদম চিন্তা করবেন না। সৌরভের হাতে প্রিয়ার হাত রাখে ওর দাদা। বিড়বিড় করে বলে উঠল সুখী হও তোমরা।

রাত ১০টা।

সৌরভের পরিবারের কাউকে বাড়িতে যেতে দেননি। সবাই রাতে এ বাড়িতেই থাকবে। গৌরব আর আলিশবাকে আলাদা রুম দেওয়া হয়েছে। গৌরব রুমে যাওয়ার আগে সৌরভের মজা উড়াচ্ছে। ভাই তুই তো হলরুমে থাকবি তাই না। সৌরভ ভাইয়ের উত্তর দিলো না। সানি বলল না সে তো আমাদের সাথেই থাকবে। রাতে তারা গুনবে। সৌরভ নিশ্চুপ এদের কথা শুনে যাচ্ছে। আজকে কিছু বলা মানে বিপদ।

আনোয়ার এসে সৌরভের সাথে আলাদা কিছু কথা বললেন। আমি বাবা হিসেবে তোমাকে অনেক শর্ত দিলেও পুরুষ হিসেবে বলতে পারি তুমি সেই শর্তগুলো পূরণ করতে পারবে না। সৌরভ কপাল কুঁচকে শ্বশুরকে দেখলেন। শ্বশুর তার ক্লাশ নিচ্ছে। বউয়ের সাথে সে কি করবে না করবে সব কি এখন অন্যেরা ঠিক করবে নাকি? অবশ্যই না। এটা একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবুও শ্বশুরের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো।

আনোয়ার বললেন তুমি আজকের জন্য অনুমতি পেতে পারো। সৌরভ কুটিল হাসলো মনে মনে। সেও শ্বশুরের পালটা জবাব দিলো অনুমতি দিতে হবে কেনো? আমি নিজেই এখন যেতে পারি। আনোয়ারও হাসলেন সৌরভের কথায়। মাথায় আলতো হাত রেখে বললেন তাও আজকের জন্য। সৌরভ মৃদু হাসলেন মুখে কিছু বললো না।

সৌরভ আর প্রিয়াকে রুমে নিয়ে আসা হলো। প্রিয়াকে ভিতরে বসিয়ে সৌরভকে দরজার সামনে সবাই ঘিরে ধরলো। সৌরভ তাদের দাবি অনুযায়ী দিয়ে তাড়াতাড়ি বিদেয় করলো। রকি সৌরভকে টিপ্পনী মেরে বললো কিরে তোর দেখি আজ বড্ড তাড়া ভিতরে যাওয়ার। আস্তে ধীরে গেলেই তো পারতি। সৌরভও ফিস ফিস করে বললো বউয়ের সাথে অনেক পুরনো হিসেব বাকি আছে তাই এত তাড়াহুড়ো করছি বুঝলি। সানিও অবাক হয়ে বললো কিসের পুরনো হিসেব তোর? সৌরভ হাসলো শুধু উত্তর দিলো না।

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে সৌরভ বউয়ের কাছে এসে পৌঁছেছে। দরজায় সামনে দাঁড়ানো সে। ঘরের মৃদু আলোয় স্পষ্টত দেখা যাচ্ছে তার কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিকে। সে বিছানার একপাশে গুটিশুটি মেরে বসে আছে। সৌরভ ধীরে ধীরে আগালো। তারপর তার সামনে গিয়ে বললো,

কি ব্যাপার জামাইকে সালাম করবে না।

প্রিয়া লজ্জায় অস্থির হয়ে উঠলো। নিশব্দে তার প্রতিটি শ্বাস নিচ্ছিলো। সৌরভকে সামনে দেখে তার দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম। আর কথা তো অনেক দূরে।

সৌরভ আরেকটু কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। জামাইকে পা ধরে সালাম করতে হয় আগে। মুখে আমি সালাম নিবো না। প্রিয়া এখনো মাথা নিচু করে আছে। তার হৃদস্পন্দন এত দ্রুতই কম্পিত হচ্ছে যে সে হার্ট এট্যাক করেই আজ মারা যাবেই। কণ্ঠনালী দিয়ে একটা কথাও উচ্চারণ হচ্ছে না তার। সৌরভ হতাশ হলো প্রিয়ার আচরণে। সে ফের বলল সালাম তো চোখ বন্ধ করেও করা যায়। ঠিক আছে সালাম না করলে আর কি করা। কাউকে তো জোর করে সালাম করানো যায় না। এমনিতেও আমি জানি তুমি আমাকে দু’পয়সার সম্মানও দাও না। সৌরভ দুই হাত বগলদাবা করে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকলো। প্রিয়া কি করে দেখার জন্য।

প্রিয়া অনেক কষ্টে সাহস সঞ্চার করে কম্পিত হাতে সৌরভকে সালাম করলো। সৌরভ প্রিয়ার মাথায় হাত রেখে বললো,

বেঁচে থাকো বউ। জামাই-সন্তানকে নিয়ে সুখী হও।

প্রিয়াকে দাঁড় করালো সৌরভ। তারপর কুঠিল হাসলো মনে মনে। প্রিয়ার উদ্দেশ্য বলে উঠল,

তুমি কি জানো না জামাইকে সালাম করার পর কোলাকুলিও করতে হয়।

প্রিয়ার এবার হাত-পা ছুঁড়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। এই বজ্জাত আজ তাকে লজ্জা দিয়ে দিয়েই মারবে। সে হাত দিয়ে নখ খুঁড়ছিল বার বার। তা দেখে সৌরভ বললো ঠিক আছে যাও কোলাকুলি মাফ করে দিলাম। এবার জলদি পোশাক চেইঞ্জ করে এসো। তোমার সাথে কথা আছে। আসার সময় ওযু করে আসবে। সময় কিন্তু খুব কম আমার কাছে। দশমিনিটে ফ্রেশ হয়ে আসবে কিন্তু।

প্রিয়া চলে গেলে সে নিজেও গায়ের কাপড় খুলে রাখে। তাকেও ফ্রেশ হতে হবে।

সৌরভের কথামত সে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে আসে। গাড় লাল পাড়ের মধ্যে কালো রঙের জামদানী শাড়ি জড়ানো প্রিয়া। সৌরভ অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে আছে প্রিয়ার দিকে। এই অপূর্ব রমণী তার বউ তার হৃদয়শ্বেরী। তার একান্ত প্রিয় ব্যক্তি।

এবার সে নিজেও দ্রুত ফ্রেশ হয়ে আসে।

দু’জনে জায়নামাজ বিছিয়ে দু’রাকাত শোকরানার নামাজ পড়ে নতুন জীবনের জন্য দোয়া করে।

সৌরভ প্রিয়াকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড় করালো। মাথার ঘোমটা সরিয়ে তার পকেট থেকে SP লিখা একটা হার পরিয়ে দেয়। প্রিয়া আয়নায় আঁড়চোখে দেখছিলো সৌরভ কি করছে? সৌরভ প্রিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলল চাইলে সরাসরি দেখতে পারো। কেউ কিছু বলবে না। প্রিয়া লজ্জায় আর তাকালো না।

সৌরভ প্রিয়ার হাতে একটা চেকবই আর ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দিলো। এটাতে তোমার মোহরানার সম্পূর্ণ টাকায় আছে। আমার ইনকামের টাকায় তোমাকে মোহরানার টাকা দিয়েছি। তবে বিয়ের পোশাক থেকে শুরু করে সব কেনাকাটা গৌরব করেছে আর বিয়ের গহনা বাবা দিয়েছে। কিন্তু মোহরানা সম্পূর্ণ আমার টাকায়। আর তোমার গলার এই হার উপহার হিসেবে আমিই কিনেছি।

প্রিয়া চুপচাপ সৌরভের কথা শুনছিলো।

সৌরভ প্রিয়াকে তার মুখোমুখি দাঁড় করালো। তার থুতনি ধরে বলল মাশা আল্লাহ আমার বউটাকে কি সুন্দর লাগছে। এবার কিন্তু আমার উপহার পাওয়ার পালা। জলদি করে আমার উপহারটা দিয়ে দাও তো বউ। প্রিয়ার কোনো নড়চড় নেই সে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। সৌরভ প্রিয়াকে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের বুকের মাঝে জড়িয়ে বলল একটা উষ্ণ আলিঙ্গন তো আমি তোমার কাছে পেতেই পারি তাই না বউ। প্রিয়াকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে তার কানের কাছে ফিসফিস করে বলল তবে তুমি কিন্তু একটা রিটার্ন গ্রিফট পাও। মনে আছে সেই কামড়টা।

প্রিয়া কেঁপে উঠলো সৌরভের কথায়। লজ্জায় তার বুকেই মুখ লুকিয়ে রাখলো। কিন্ত পরক্ষণেই অনুভব করলো তার গ্রীবাদেশে সৌরভের উষ্ণ ছোঁয়া। জায়গাটা ভীষণ জ্বলছে।

প্রিয়া বিড়ালছানার মত সৌরভের বুকের মাঝে লেপ্টে আছে। সৌরভের কাছে আজকের রাতটা অনেক স্পেশাল ও অনেক কষ্টের। কারণ আগামী এক বছর এই একরাতের স্মৃতি নিয়েই তাকে বউ ছাড়া থাকতে হবে।

চলবে,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here