শুধু তুই ৩ পর্ব -২৮+২৯

#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ২৮
#Tanisha Sultana

আদি ঢোক গিলে।
নিধি লজ্জা পাওয়ার একটিং শুরু করে দেয়। আদি হা করে তাকিয়ে আছে। আদিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নিধি রেগে গাল ফুলায়।
“কি বললাম? কানে যাচ্ছে না?
চেঁচিয়ে বলে নিধি। আদি ভরকে যায়। এদিক সেদিক চোখ ফেরায়।
” ককি যেনো বললছিলে? থেমে থেমে বলে আদি।
“ওহহ তার মানে আপনি শুনেন নাই? মন কোথায়,থাকে?
ঝাঁঝালো গলায় বলে নিধি।
আদি আমতা আমতা করে। মন বলছে নিধিকে ঠাটিয়ে একটা ধমক দিতে কিন্তু পারছে না। মুখের দিকে তাকালেই কথা হাওয়া হয়ে যাচ্ছে।
” আবার বলছি। আমি কফির মগটা এগিয়ে দেবো আপনি মগ ধরার বাহানায় আমার হাত ছুঁয়ে দেবেন। আর আমি লজ্জা পেয়ে “যাহহহ” বলবে। ওকে
“কিন্তু কেনো? রিনরিনিয়ে বলে আদি।
নিধি চোখ গরম করে তাকায়।
” ঠিক আছে
আদি ঢোক গিলে বলে।
“ওকে
নিধি গিয়ে কেমেরা অন করে মোবাইল টেবিলে রেখে আছে।
” রেডি
আদি মাথা নারায়।
নিধি চুল ঠিক ঠাক করে এসে বসে। লজ্জা পেয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে কফির মগটা এগিয়ে দেয়। আদি মগটা ধরতে গিয়ে নিধির হাত ছুঁয়ে দেয়। নিধি লজ্জা পেয়ে অন্য হাত দিয়ে মুখ ঢেকে লজ্জা মাখা হাসি দেয়।
“যাহহহহ দুষ্টু”
বলে নিধি হাত ছুঁটিয়ে এক দৌড় দেয়।
আদি হো হো করে হেসে ওঠে।
দীর্ঘ আট বছর পরে আদি হাসলো। এতোদিন কখনোই আদির হাসি পায় নি। হাসতে ভুলেই গেছিলো আদি।
নিধি দরজার সাইডে দাঁড়িয়ে আদির হাসি দেখছে। এতো মিষ্টি কারো হাসি হতে পারে? হাসির জন্য চোখ দুটো ছোট ছোট হয়ে গেছে। ঠোঁটের বা পাশে সুন্দর একটা টোল পড়ে। সিল্কি চুল গুলো মুখের মধ্যে পড়েছে।
এক দৃষ্টিতে আদির হাসি দেখছে নিধি।
আদির হাসি থাকছেই না। এরকমও ইডিয়েট হয় বুঝি?
“এভাবেই সারাজীবন হাসাবো আপনাকে। কথা দিলাম। আমি বুঝে গেছি রাগ করলে অভিমান করলে শুধু দুরত্ব সৃষ্টি হবে। আর পাগলামি করলে জোর করলে ভালোবাসা।

হাসতে হাসতে আদি ওয়াশরুমে চলে যায়। নিধি রুমে এসে ভিডিওটা সেভ করে। খুব সুন্দর হয়েছে। তারপর তোয়ালে নিয়ে অপেক্ষা করে আদি বেরোনোর।

চুল ছাড়তে ছাড়তে আদি বের হয়। নিধি এগিয়ে এসে চুল মোছাতে যায়। কিন্তু হায় এতো এতো উঁচু জুতো পড়েও আদির চুলের নাগাল পায় না।
“তুমি হঠাৎ এতো লম্বা হয়ে গেলে কি করে?
আদি নিধির পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে বলে।
” নিধি শাড়ি উঁচু করে জুতো দেখায়।
“এতো উঁচু জুতো পড়েও আপনার চুলে নাগাল পেলাম না। ধুর
নিধি মুখ কালো করে বলে।
নিধিকে অবাক করে দিয়ে আদি মাথাটা নিচু করে দেয়। নিধি চমকে উঠে আবার হাসি ফুটে ওঠে। যত্ন করে আদির চুল মুছিয়ে দেয়।
আদিও মুচকি হাসে।
চুল মোছানো হয়ে গেলে আদি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করতে থাকে।
” শুনো
নিধি বিছানা গোটাচ্ছিলো। আদির ডাকে পেছনে ফেরে।
“হুমম বলুন
” শাড়িটা পাল্টে ফেলো।
“কেনো?
” জঘন্য লাগছে তোমাকে। একদম পেত্নীর মতো।
নিধি মুখটা কালো করে ফেলে। মনের মধ্যে পাহাড় সমান অভিমান জমা হয় কিন্তু সেটা মুখে প্রকাশ করে না। কারণ নিধি নিজেও জানে এজকে ওকে কতোটা সুন্দর লাগছে৷ আদি মিথ্যে বলছে এটা নিধি বেশ ভালোই বুঝতে পারছে।
“লাগুক না পেত্নী। আমি এভাবেই থাকবো। আমাকে পেত্নী লাগলে আপনার কি? অবশ্য আপনার কাছ থেকে এর বেশি কিছু আমি এক্সেপ্টও করি নি।
মুচকি হেসে বলে নিধি।
আদি চোয়াল শক্ত করে। চিরুনি খট করে নামায়।
” বললাম তো শাড়ি চেঞ্জ করে নাও।
“সরি
নিধি ভাব দেখিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নেয়। আদি খপ করে হাত ধরে ফেলে।
” এই এই ছাড়ুন না প্লিজ কেমেরা টা অন করে আসি। কি সুন্দর রোমান্টিক মোমেন্ট। ইসসস ভিডিও না করলে মিছ করবো।
নিধি হাসি হাসি মুখ করে বলে।
আদি দাঁত কটমট করে।
“এভাবে দাঁত কটমট করলে তো দাঁত ভেঙে যাবে। তারপর আমার ফিউচার বেবিরা বলবে মামনি আমার পাপার দাঁত কই? তুমি কি ঘুসি মেরে ভেঙে দিয়েছো না কি? তখন আমি কি করে ওদের বলবো? তোমাদের পাপা আমার সাথে দাঁত কটমট করতে করতে ওনার দাঁত ভেঙে গেছে।
নিধির এরকম কথা শুনে আদি বোকা বোনে যায়।
এক টান দিয়ে নিধিকে কাছে টেনে নেয়। নিধির কোমরে হাত রাখে। আদির বুকের কাছে এসে ঠেকে নিধির মুখ। বুকের মধ্যে টিপটিপ করছে নিধি। এবার সত্যি সত্যি লজ্জা করছে। হাত পা অবশ হয়ে আসছে।
” কি বলেছি আমি?
আদি চোয়াল শক্ত করে বলে।
“ককিছু তো বনলেন নাই। শশুধু দাঁত কটমট করেছেন।
নিধি রিনরিনিয়ে বলে।
” বলছি না শাড়ি চেন্জ করো।
“প্লিজ না করলাম কতো কষ্ট করে পড়লাম🥺🥺
কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে নিধি।
আদি কিছু বলে না। নিধিকে ছেড়ে দেয়।
নিধি হাফ ছেড়ে বাঁচে।
” উনি কাছে আসলে আমার একম কেনো লাগে? মন টা ধক ধক কেনো করে?
নিধি মনে মনে বলে।
” তুমি ছুঁয়ে দিলে হায়
আমার কি যে হয়ে যায়”
এই গানটা যে লিখেছে ভালোই লিখেছে। সত্যিই আপনি ছুঁয়ে দিলে ভালোই লাগে।
চোখ টিপ দিয়ে বলে নিধি।
আদি চোখ পাকিয়ে তাকায়। নিধি ঠোঁটে আঙুল দেয়।
আদি ড্রেসিং টেবিলের ওপর থেকে সিবটিপিন এনে নিধির সামনে হাঁটু মুরে বসে। নিধি এক দৌড়ে চলে যায়। আদি ভ্রু কুচকে বলে।
“জাস্ট এক মিনিট কেমেরা টা অন করে আসি।
আদি বিরক্ত হয়।
” ইডিয়েট একটা
নিধি কেমেরা অন করে আদির সামনে এসে দাঁড়ায়।
আদি নিধির কোমরে সিবটিপিন লাগাতে যায়। নিধি চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়। ভালো করে পেট ঢেকে দেয় আদি। তারপর উঠে দাঁড়ায়।
” পারফেক্ট
নিধি চোখ খুলে তাকায়।
“একটু নিচু হন
নিধি বলে।
” কেনো?
“হন না
” বলবে তো কেনো?
“খেয়ে ফেলবো না আপনাকে।
আদি নিচু হয়।
নিধি আদির চুলের ভাজে হাত দিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে নেয়। আদি চমকে চোখ বড় বড় করে তাকায়। এরকম টা কখনোই ভাবে নি আদি। এই মেয়েটা মারাক্তক ডেন্জারাস। এক ধাক্কায় নিধিকে দুরে সরিয়ে দেয়।
” ধুর দশ সেকেন্ড ও হতে দিলেন না।
বলেই নিধি ফোন নিয়ে শাড়ি উঁচু করে এক দৌড় দেয়।

আদি স্টাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এটা কি হলো বুঝতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে আদির। তারপর ঠোঁটে হাত ছুোয়ায়।
” পাগল একটা
বিরবির করে বলে আদি।

বিয়ে বাড়ির তোর জোর শুরু হয়ে যায়। ইভার শপিং করা হয় নি। তাই সবাই মিলে ঠিক করেছে সকাল সকাই শপিং করতে বেরিয়ে যাবে।
আদি ব্রেকফাস্ট করছে। নিধি এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে। আদি সাফ সাফ বলে দিয়েছে নিধি শপিং এ যাবে না এখন আদি নিধিকে নিয়ে বাড়ি ফিরবে। সমনে নিঅির এক্সাম। পড়তে হবে। গায়ে হলুদের দিন আসবে ওরা। তাই নিধি মন খারাপ করে আছে৷ খেতেও বসলো না।
কতো ভেবেছিলো এখানে থেকে মজা করবে। হই হই করবে। তা না এখন বাড়ি যেতে হবে।
ভাবলেই কান্না পাচ্ছে নিধির।
“যাবো না আমি বলে দিলাম।
নিধি কেঁদে ওঠে বলে।
আদি খাওয়া ছেড়ে নিধির দিকে তাকায়।
” কাঁদা শেষ হলে আমাকে বলো। এখন রুমে গিয়ে কাঁদো। খেতে পবলেম হচ্ছে।
আদি গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলে
#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ২৯
#Tanisha Sultana

লাফাতে লাফাতে নিধির পা ব্যাথাহয়ে গেছে। উঁচু জুতোর ফলে পায়ে ফোসকা পড়ে গেছে কয়েকটা।
আদি লাগেজে জামাকাপড় ভরছে। কালকে নিধি এলোমেলো করে জামাকাপড় বের করেছিলো। আর লাগেজে ঢুকায় নি৷
আদি খাওয়া শেষ করেই জামাকাপড় গোছানোর কাজে লেগে পড়েছে। নিধি এক পাশে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে। কিন্তু নিধির চোখের পানি আদির মন গলাতে পারছে না। আদি কিছুতেই এখানে থাকবে না। অফিসের প্রচুর কাজ। তারওপর নিধির এক্সাম সামনে। নিধিকে তো পড়তে হবে।
“স্টুপিট কান্না কাটি না করে জুতো খুলে গাড়িতে গিয়ে বসো।
আদি বিরক্তি নিয়ে বলে।
নিধি তবুও দাঁড়িয়ে থাকে।
” যাওয়ার জন্য পালকি এনে দিতে হবে না কি?
নিধি কোনো কথা না বলে হনহনিয়ে চলে যায়।
আদি লাগেজ হাতে নিয়ে নিধির পেছন পেছন যায়।
নিধি আর আদি চলে যাওয়াতে সবারই মন খারাপ। ইভা মুখ ভার করে নিধিদের বাই বলে। সৌরভ বাসায় নেই। ও বন্ধুদের দাওয়াত দিতে গেছে।

আদি এক মনে ড্রাইভ করে যাচ্ছে। নিধি জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে৷ টমকে পেছনের ছিটে বসিয়েছে। ছিটের সাথে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে আছে টম।
আদি এক বার আড়চোখে নিধির দিকে তাকায়। কান্নার ফলে চোখের কাজল লেপ্টে গেছে। লিপস্টিক খানিকটা মুছে গেছে। চুল গুলো এলোমেলো হয়ে গেছে। তবুও সুন্দর লাগছে।
” শোক সভা শেষ হয়েছে? না কি আটও কাঁদতে চাও?
আদি আড় চোখে নিধির দিকে তাকিয়ে বলে।
নিধি এবার ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে ফেলে।
“আপনি এমন কেনো? কতোদিন কারো বিয়ে খায় নি। কতো আনন্দ করবো। সাজুগুজু করবো। আপনার জন্য কিছুই হয় নি। ইসসসস কখন কোন শাড়ি পড়বো কিভাবে সাজবো সব প্লানিং করা শেষ করছিলাম।
কাঁদতে কাঁদতে বলে নিধি।
আদি মুখ চেপে হাসে। মেয়েটা সত্যিই বাচ্চা।
” এই তুমি নিজেকে বড় বলো? সামান্য কারণে যে কেঁদে ভাষায় সে কি করে বড় হতে পারে? প্রুফ করে দিলে তুমি বাচ্চা।
পিঞ্চ মেরে বলে আদি।
নিধি ভরকে যায়। কান্না থামিয়ে দেয়। সত্যিই তো বড়রা এভাবে কাঁদে না কি?
চটপট চোখের পানি মুছে ফেলে।
“আআমি কাঁদছি না।
একটু হাসার চেষ্টা করে বলে নিধি।
” ওহহহ তাই
সুর টেনে বলে আদি।
নিধি রেগে যায়। আদির পিঠে কয়েকটা কিল থাপ্পড় মারে।
“আপনি খুব খারাপ
আদি নিধির হাত ধরে টেনে নিধিকে কাছে টেনে আনে। নিধির মাথাটা বুকের মধ্যে রাখে। নিধি আদির শার্ট খামচে ধরে মুচকি হাসে।
আদি এক হাতে নিধিকে জড়িয়ে ধরে আরেক হাতে ডাইভ করছে।
” আপনি এমন কেনো বলেন তো? ভালোবাসেন কিন্তু স্বীকার করেন না। এটা ঠিক না।
নিধি আদির বুকে আঙুল দিয়ে আঁকিবুঁকি করে বলে।
আদি সাথে সাথে নিধিকে সরিয়ে দেয়। নিধি খানিকটা চমকে যায়।
“কি হলো?
নিধি ভ্রু কুচকে বলে।
” এটা ভালোবাসা না। ভালোবাসা কি তুমি বুঝো না। তুমি খুব ছোট। তোমার বয়সী মেয়েদের পড়াশোনা খেলাধুলা করার বয়স এখন। এই বয়সেই যে করেই হোক তোমার বিয়েটাহয়ে গেছে। আর তুমি একটা ফালতু টপিক নিয়ে পড়ে আছো। এটা ঠিক না।
তোমার এখন পড়াশোনার ওপর ফোকাস করতে হবে। এসব ভালোবাসা টালোবাসা নিয়ে ভাববা না।
নিধির হাতের ওপর নিজের হাতটা রেখে বলে আদি।
আদির কথাগুলো মন দিয়ে শুনে নিধি। তারপর মুচকি হেসে আদির আঙুলের ভাজে নিজের আঙুল রাখে।
“ভালোবাসা” টালোবাসা বলতে কিছু নেই। আমি যথেষ্ট বড় হয়েছি। ভালোবাসা বুঝি আমি। আমি ফিল করতে পারি। এই যে আপনি আমাকে ছুঁয়েছেন এটা আমি ফিল করছি।
নিধি বলে।
আদি নিজের ওপর বিরক্ত হয়। কা কে কি বলছে? এসব বুঝবে না। তাই আদি চুপ করে থাকে।
নিধি আদির দিকে একটু চেপে বসে।
“আমি যেমন আপনাকে ফিল করতে পারি। মন খালি আপনার সাথে থাকতে চায়। আপনি দুরে গেলে খারাপ লাগে। খুব তারাতাড়ি আপনারও এমন হবে। বুঝলেন মিস্টার গোমড়ামুখো।
” এই দিনটা কখনো আসবে না।
আদি মুখে বলে। কিন্তু ভেতরে নিধির কথাটা বাঁজতে থাকে।
“খুব তারাতাড়ি আসবে। দেখে নিয়েন
আদিকে চোখ টিপ দিয়ে বলে নিধি।
আদিও মুচকি হাসে।

ইভাদের বাসা থেকে আদিদের বাসায় আসতে বিশ মিনিট সময় লাগে।
গাড়ি থেকে নেমেই নিধি জুতো হাতে নিয়ে শাড়ি উঁচু করে এক দৌড়ে বাড়ির মেইন দরজার কাছে চলে যায়। আদি টমকে নামিয়ে লাগেজ নামিয়ে পেছনে পেছনে আসে।
কলিং বেল চাপতেই একটা মেয়ে এসে দরজা খুলে দেয়। মেয়েটাকে নিধি চেনে না। তাই কপালে দুটো ভাজ ফেলে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকে।
” কাকে চাই? মেয়েটা পেছনের চুল গুলো সামনে এনে ভাব দেখিয়ে বলে।
“আমার জামাইকে
নিধি ভেংচি কেটে মেয়েটাকে পাশ কাটিয়ে ভেতরে ঢুকে। মেয়েটা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদির দিকে নজর পড়ে৷ মেয়েটা এক দৌড়ে গিয়ে আদিকে জড়িয়ে ধরে। আদি টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায়। ফুল গাছ গুলোতে কিছুখন আগেই পানি দেওয়া হয়েছে। কাঁদা হয়ে আছে। সেই কাঁদার মধ্যে পড়ে। আদি নিচে আর মেয়েটা উপরে। কোমরে বেশ ব্যাথা পায় আদি। মেয়েটাও সাংঘাতিক ব্যাথা পায়।

কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দে নিধি থেমে যায়৷ দরজার দিকে উঁকি মেরে ওদের এভাবে পড়ে থাকতে দেখে মাথায় রক্ত চেপে যায় নিধির।

” আহহহহহ আমার কোমর
আদি কিছুটা আর্তনাদ করে বলে।
তোহা তারাতাড়ি করে আদির ওপর থেকে উঠে।
“তোমার লাগে নি তো কোথায়? সরি। আমি আসলে ভেবেছিলাম সিনেমার হিরোদের মতো তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরবে। তাই তো শাহরুখ খানের কাজলের মতো দৌড়ে আসলাম।
আমি কি করেন জানবো তুমি হিরো আলমের মতো পড়ে যাবে।
অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে রিনরিনিয়ে বলে তোহা।
আদি উঠে বসে।
” এখানে কি সিনেমা হচ্ছে?
আদি রেগে বলে।
“না আমি শাহরুখ আর না তুমি কাজল। তো এভাবে হাতির মতো দৌড়ে আসার কোনো মানেই হয় না। স্টুপিটট হলে তবুও চলতো পাতলা আর ছোটমট ছিলো। কিন্তু তুমি তো বড়সর হাতির ছোটমট বাচ্চা।
আদি বলতে বলতে উঠে দাঁড়ায়। কাঁদায় মাখামাখি হয়ো গেছে। তোহাও উঠে দাঁড়ায়।
” কতোদিন পরে দেখলাম তোমায় আদি।
তোহা গলে হাত দিয়ে এক দৃষ্টিতে আদির দিকে তাকিয়ে বলে।
“কেনো যে বাড়িতে আসলাম? ওখানে থেকে গেলেই ভলাো হতো। নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলাম
আদি মনে মনে বিরবির করে বলে।
” আসছি
আদি কোনোরকমে বলে হাঁটা শুরু করে।

নিধি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে সিনেমা দেখছিলো।
আদি লাগেজ নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ভেতরে যায়। তোহাও পেছন পেছন আসে।
” এই যে শাহরুখ বেবি, আমার প্রাণের স্বামী
নিধি ডাকে আদিকে। আদি দাঁড়িয়ে যায়। ভেবেছিলো নিধি কিছু দেখে নি। কিন্তু এখন?
“আদি তুই এবার শেষ। হাতির বাচ্চার থেকে বাঁচলেও এখন এই বিন্দু মরিচের থেকে তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
আদি মনে মনে বলে

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here